Tell me who I am part 34 (4)

Tell me who I am part 34 (4)
আয়সা ইসলাম মনি

কারান বিস্মিত কণ্ঠে বলল, “এটা কি সত্যিই আমার মিরা?”
মিরা মৃদু হাসিতে জবাব দিল, “কারান চৌধুরীর একমাত্র বউ।”
কারানের চোখ যেন এসব কিছুই বিশ্বাস করতে চাইছে না। মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, “মিরা, আমি কী বলব বুঝতে পারছি না। তুমি কুংফু জানো কীভাবে?”
মিরা হালকা হেসে কারানের গলা দু-হাতে আঁকড়ে ধরে বলল, “তোমার স্ত্রী অনেক কিছুই জানে, কারান।”
“দেখো, মিরা… তুমি… এটা… কীভাবে?”
মিরা স্নিগ্ধ স্বরে বলল, “এত ভাবনার কিছু নেই। বলছি। যখন তোমাকে ঘরের সব কাজ করতে বলেছিলাম, তুমি তো প্রতিদিন সেসব করেই অফিসে যেতে। তখন আমার হাতে অনেকটা সময় ছিল। তাই সেল্ফ ডিফেন্সের জন্য ইউটিউবে দেখে দেখে কুংফু শিখে নিয়েছি।”

কারান সন্দেহমিশ্রিত দৃষ্টিতে মিরার মুখের প্রতিটি খুঁটিনাটি পরখ করে বলল, “শুধুই কি সেল্ফ ডিফেন্সের জন্য?”
মিরা ভ্রূ কুঁচকে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, “হ্যাঁ, কেন?”
কারান গভীর কণ্ঠে বলল, “আর কি জানো?”
“ক্যারাটে একটু শিখেছিলাম।”
এবার কারান হাসি চেপে ধরে গম্ভীর স্বরে বলল, “তাহলে আমার ধারণা ভুল ছিল। তোমার সম্পর্কে সব কিছু জানি না আমি। আর?”
মিরা কারানের এমন অভিব্যক্তি দেখে অপ্রস্তুত হয়ে বলল,
“এমন কিছু নয়, কারান। প্রতিটি মানুষের মধ্যে লুকানো কিছু দক্ষতা থাকে, যা সময়ের সঙ্গে প্রকাশ পায়। ব্যস, এতটুকুই। আমি সাধারণই আছি।”
কারান মোহিত কণ্ঠে বলল, “তুমি অসাধারণ। আমি কখনো ভাবিনি, আমার স্ত্রী এমন কিছু করতে পারে। রিভলভার চালাতে জানো?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

এবার মিরা হতভম্ব হয়ে বলে উঠল, “এটা তুমি কি বলছো? তোমার কি আমাকে সন্দেহ হয়?”
কারান হেসে মিরাকে আলতো করে কাছে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে বলল, “তুমি সবকিছুতে দু কলম বেশি বুঝো কেন? সেল্ফ ডিফেন্সের জন্য রিভলভার চালানো শেখাটা গুরুত্বপূর্ণ, তাই বলেছি।”
কিন্তু কারানের হাসির পেছনে একটা অজানা ইঙ্গিত লুকিয়ে ছিল। এটা মিরা লক্ষ্য করে তাকে আর জড়িয়ে ধরল না। কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে কারান মিরার চোখে চোখ রেখে বলল, “আর কী কী জানো, আমার বেগম?”
মিরা একটু দ্বিধা করে বলল, “কার ড্রাইভিং।”
কারানের চোখে বিস্ময়ের ছাপ, “ওয়াও! কিছুদিন পর তোমার ড্রাইভিং স্কিল চেক করে দেখতে হবে।”
সে ঘর থেকে বের হতে উদ্যত হয়। তৎক্ষণাৎ মিরা পেছন থেকে বলে উঠল, “আমাদের একটা গাড়ি ছিল। বাবার খুব শখের ছিল। বাবা-ই আমাকে ড্রাইভিং শিখিয়েছিলেন। যদিও একটা কারণে গাড়িটা অনেক আগেই বিক্রি করে দিতে হয়েছিল।”

কারান থেমে ফিরে তাকাল। তার চোখে রহস্যময় দৃষ্টি নিয়ে বলল, “আমি জানতে চাইনি তুমি কীভাবে ড্রাইভিং শিখেছো। আমি জানতে চেয়েছি আমার বউ কতটা ট্যালেন্টেড।”
সে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যায়। অথচ মিরা ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। তার কপালে চিন্তার ভাঁজ। মৃদু শ্বাস ফেলে বলল, “আমি মনে হয় সত্যের খোঁজ করতে গিয়ে আসল রহস্যের আড়ালেই হারিয়ে যাচ্ছি। কারান, তুমি আমার কাছে সবচেয়ে বড় রহস্যময় হয়ে উঠেছো।”

শেষ দুই মাস ধরে ইলিজা একনিষ্ঠভাবে একটি কাজই করে চলেছে—গাড়িতে বসে পার্কের দিকে নজর রাখা। তার এই নিরবচ্ছিন্ন মনোযোগের পেছনে দুটি প্রধান উদ্দেশ্য ছিল। প্রথমত, স্নেহা যেহেতু এখান থেকেই হারিয়ে গিয়েছিল, হয়ত এখানেই সে ফিরে আসতে পারে। দ্বিতীয়ত, কাব্যকে খুঁজে পাওয়া। কিন্তু এতদিনেও কেউই তার চোখে ধরা দেয়নি।
আজও ইলিজা গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছে। হঠাৎই তার নজর পড়ল কাব্যের উপর। সে রাস্তার পাশে বসে একটা ছেলের সঙ্গে কথা বলছে। ইলিজা উদ্বিগ্ন কণ্ঠে ড্রাইভারকে বলল, “ড্রাইভার আঙ্কেল, দাঁড়ান।”
ওদিকে কাব্য ছেলেটিকে বলে, “ছেলে হয়েও ভিক্ষা করতে লজ্জা করে না তোর? কেন কাজ করিস না?”
ছেলেটি মাথা নীচু করে মৃদুস্বরে উত্তর দিল, “সবাই তাড়াইয়া দেয়। বলে আমি নাকি চুরি করুম তাগো জিনিসপত্র।”
ছেলেটির কথা শুনে কাব্যের মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। তবে নিজেকে সামলে নিয়ে সে জিজ্ঞেস করল, “তোর বাসায় কে কে আছে?”

“আম্মা বাড়ি বাড়ি কাম করে। আর আব্বা মদ খাইয়া আইসা আম্মারে মারে। বড় বইনের বিয়া দিতে পারি না, তাই টাহার অভাবে ভিক্ষা করতে আইছি।”
কাব্য ছেলেটির মাথায় স্নেহের হাত রেখে বলল, “চা বানাতে পারিস?”
“হ, পারি।”
“তাইলে আইজকা থেইকা আমাদের মেসে তুই চা বানাবি। সবার টাকা পাওয়ার পর মাঝে মাঝে তোর মাসিক টাকাটা বাড়িয়ে দেব। চলবে?”
এই প্রস্তাব শুনে ছেলেটির মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সে খুশিতে কাব্যকে জড়িয়ে ধরে। দূর থেকে এই দৃশ্য দেখছিল ইলিজা, হালকা হাসিতে তার ঠোঁট বেয়ে মৃদু আনন্দ ফুটে ওঠে।
তারপর একটু দ্বিধা নিয়ে সে গাড়ি থেকে নেমে পিছন থেকে বলল, “কাব্য।”
ইলিজার পরিচিত সুর শুনে কাব্য দ্রুত পিছনে ফিরে তাকাল। কাব্যের মুখজুড়ে প্রশস্ত হাসি ফুটে উঠল। এরপর ছেলেটিকে বলল, “এখন বাড়ি যা তাইলে। কাইল আমার মেসে আসবি।”
ছেলেটি বলল, “আইচ্ছা।”
তারপর সে উঠে চলে গেল। কাব্য এবার ইলিজার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল, “চা খাবেন?”
ইলিজা মিষ্টি হেসে সাড়া দিল, “হুম।”

কিছুক্ষণ পর কাব্য দুটো চায়ের কাপ নিয়ে পার্কের এক কোণে বেঞ্চে বসে। ইলিজাও তার পাশে তফাতে বসে আলতো করে কাপ হাতে তুলে চায়ে চুমুক দেয়। কাব্য তার দিকে তাকিয়ে থেকে এই মুহূর্তের গভীরতা অনুভব করতে চায়। সে আপন মনে বলল, “এক কাপ চায়ে আমি তোমাকে চাই।”
কাব্যের নজর এতটাই গভীর ছিল যে, ইলিজা একটু অস্বস্তি অনুভব করে। সে একটু নড়ে বসে, চায়ের কাপ হাতে ধরে বলে, “আপনার চা তো ঠান্ডা হয়ে যাবে।”
কাব্য মুচকি হাসি দিয়ে চায়ে চুমুক নিয়ে বলল, “এখানে কেন এসেছেন? আপনার এভাবে বের হওয়া উচিত হয়নি।”
ইলিজা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে। তার চোখে কিছুটা চিন্তা, কিছুটা বিষণ্নতা ফুটে উঠে।
“জানি, কিন্তু আপনাকে দেখে গাড়ি থেকে নেমেছি। নাহলে নামতাম না।”
কাব্য এবার হেসে বলে, “তাহলে বলুন, আপনার খবর কী?”
ইলিজা চোখ নামিয়ে নিরুত্তর রইলো। তারপর দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বলল, “আজ দুই মাস হলো সেনুকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।”

বলার সময় তার থুতনি কাঁপতে থাকে, চোখে অশ্রু জমে ওঠে। কাব্য তা দেখেও কিছু বলেনি, শুধু নিজের রুমাল বের করে ইলিজার হাতে দিয়ে বলল, “এটা রাখুন।”
ইলিজা একটু হাসার চেষ্টা করে, রুমাল দিয়ে চোখ মুছে নেয়। এবার হালকা গলা চড়িয়ে বলল, “একটা কথা বলুন তো, আপনি ওইদিন ওখানে কী করছিলেন?”
“প্রতিদিন টিউশন করে অন্য পথ দিয়ে বাসায় ফিরতাম। কিন্তু ওইদিন আমাদের মেসের একজন ছেলে অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল, তাই তাড়াতাড়ি যেতে বাধ্য হয়ে ওই পথটা ধরেছিলাম। আর তখনই আপনাকে দেখি।”
ইলিজার চোখের কোণে অশ্রু জমে ওঠে। সে ঈষৎ হাসি দিয়ে বলে, “ভাগ্যিস আপনি ছিলেন। বাসায় সবার মন খারাপ। মিরু আপুকে কিছুই জানানো হয়নি। জানেন, আমার এখনো মনে আছে শেষবার সেনু বলেছিল, ‘উফফ, ভয় দেখাস না তো। পার্কে দাঁড়ালাম তো, কই পেলাম?’ হ্যাঁ, ঠিকই, পেলাম না আর তোকে।”
এই চিন্তাগুলোর মধ্যে ইলিজার মন ভারী হয়ে উঠে, মাথা নীচু করে রাখা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। কাব্যও বুঝতে পারছে না কীভাবে তাকে শান্ত করবে। হাত ধরার কোনো অধিকার নেই। তাছাড়া একে অপরের মধ্যে সম্পর্কের এত দূরত্ব যে, শুধু নীরবতা ছাড়া কিছুই করার নেই। দুইজনই চুপচাপ মাথা নীচু করে থাকে। এমন সময় এক পরিচিত পুরুষালি কণ্ঠস্বর ভেসে আসে, “মিস ক্যালিস্তা।”

ইলিজা দ্রুত মাথা তুলে তাকায়। শুভ্র হেসে বলল, “অনেকদিন ধরে তোমার খোঁজ করছি, কিন্তু কোথাও দেখতে পাইনি। আর আমি এটাও ঠিক করে রেখেছি,
লোকে পাগল বলুক, মাতাল বলুক, আমিইইই
তোমার পিছু ছাড়বো না।”
এদিকে শুভ্রকে দেখেই কাব্য দাঁড়িয়ে যায়। যদিও কাব্য শুভ্রের এই আগমনকে মোটেও ভালোভাবে নেয় না, তবুও বন্ধুত্বের খাতিরে কিছু বলার সুযোগ মেলে না।
অথচ শুভ্রকে দেখতেই ইলিজার চোখে ক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে। তার হাত স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুষ্টিবদ্ধ হয়ে যায়। সে ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বলে, “কেন এসেছেন আপনি এখানে?”
শুভ্র কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে বলল, “মানে? আর তুমি এভাবে রেগে যাচ্ছ কেন?”
ইলিজা নিজের ক্রোধের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। চোখে জল আর কণ্ঠে ঝাঁঝ নিয়ে বলে, “শুধু আপনার জন্য সেনুকে হারিয়ে ফেলেছি। আপনিই এর জন্য দায়ী। যদি আপনি ভালোই না বাসতেন, তাহলে কেন সেদিন ওকে আসতে বলেছিলেন? (থেমে) আপনি চলে যান আমার চোখের সামনে থেকে।”

এ কথাগুলো শুনে শুভ্র কিছু বুঝতে না পেরে কাব্যের পানে তাকায়। এদিকে আশেপাশে কিছু মানুষ রেগে যাওয়া ইলিজার দিকে তাকিয়ে থাকে। আর এই পরিস্থিতি তাদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। কাব্য বুঝতে পারে, পরিস্থিতি এখন অগ্নিশর্মা হয়ে উঠেছে। তাই কাব্য দ্রুত বলে, “শুভ্র, তুই এদিকে আয়। তোকে সব কিছু বলছি।”
তারপর ইলিজার দিকে তাকিয়ে কোমল কণ্ঠে বলে, “আপনি এখন বাসায় ফিরে যান।”
ইলিজার চোখে গভীর রাগ আর অবিশ্বাসের ঝলক, যেন এখনই শুভ্রকে তছনছ করে ফেলবে। কাব্য তার পাশে দাঁড়িয়ে আবারও বলল, “মিস ইলি, আপনি বাসায় যান।”
তবে ইলিজা কাব্যের কথাকে পুরোপুরি উপেক্ষা করে, আগুন দৃষ্টিতে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে থাকে। অথচ এই দৃশ্য দেখে আশেপাশের মানুষজন অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে, একে অপরের সাথে কানাকানি করতে থাকে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দেখে, কাব্য আর কোনো পথ না পেয়ে ইলিজার হাত ধরে শীতলভাবে বলে, “চলুন।”

কিন্তু ইলিজার সেদিকে হুঁশ নেই। ভ্রূ কুঁচকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দাঁতে দাঁত চেপে শুভ্রের পানে অপলক তাকিয়ে থাকে। এবার কাব্য শক্ত হাতের জোরে ইলিজাকে টেনে নিয়ে সামনে চলতে থাকে। কাব্য হাত ধরেছে, কিন্তু ইলিজা কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না, এটা দেখে শুভ্রের মন মুহূর্তেই বিষাদে ভরে ওঠে। শুভ্র বুঝে নেয়—কাব্য আর ইলিজা নিশ্চয়ই প্রেমিকযুগল। কিন্তু ইলিজাকে কাব্য টেনে নিয়ে গেলেও ইলিজা পিছনে ফিরেও শুভ্রকে রাগান্বিত চেহারায় দেখতে থাকে।
একটু পর কাব্য ইলিজাকে গাড়ির সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দেয়। ঠান্ডা গলায় বলে, “শান্ত হন।”
ইলিজা উত্তেজনায় ফুঁসতে ফুঁসতে বলে, “আমি শান্ত হতে পারব না। ওকে ওই তিনজন ধরে নিয়ে গেলেও, এখানে আসল দোষী আপনার বন্ধু। বুঝেছেন?”
কাব্য কিছুক্ষণ চুপচাপ মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর ঠান্ডা গলায় বলে, “পাপের শাস্তি থেকে কেউ পার পায় না, মিস ইলি। নয় এপারে, নয় ওপারে—শাস্তি পাবেই।”
ইলিজার চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা পানি ঝরে পড়ে। সে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে কাঁপানো কণ্ঠে বলে, “আপনার ফোন নম্বরটি দিন, পুলিশ চেয়েছিল।”

কাব্য দ্রুত ব্যাগ থেকে এক টুকরো কাগজ বের করে, নিজের নাম্বার লিখে তার হাতে ধরিয়ে দেয়। ইলিজার চোখের জল দেখে কাব্য সামান্য হাত উঁচু করে। অর্থাৎ হাত দিয়ে জল মুছে দিতে চায়। তবে ঠিক তক্ষুনি সে নিজেকে আটকে নিয়ে হাত নামিয়ে ফেলে। দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বলে,
“এখন চলে যান, মিস ইলি। সাবধানে যাবেন।”
“আল্লাহ হাফেজ,” বলে ইলিজা গাড়িতে উঠে বসে।
গাড়ি আপন গতিতে চলে যায়। কাব্য অপলক দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে থাকে। তার সমস্ত মনোযোগ গাড়ির পথের দিকে। কিছুক্ষণ পর শুভ্র এসে কাব্যের কাঁধে হাত রেখে বলল, “তুই তো আমাকে বলিসনি, মিস ক্যালিস্তা তোর গার্লফ্রেন্ড।”

কাব্য এক পলক শুভ্রর দিকে তাকিয়ে ঠান্ডা গলায় বলে, “তোকে কে বলেছে, মিস ইলি আমার জিএফ?”
শুভ্র একটু ঠাট্টার সুরে উত্তর দেয়, “কেউ বলেনি। দেখে বুঝে নিয়েছি।”
কাব্য এবার গম্ভীর হয়ে উঠে, “এসব বাদ দে। আগে বল, তুই এমনটা কেন করলি? যেখানে তুই স্নেহাকে ভালোবাসিস না, তাও কেন মাইয়াটারে আসতে বললি?”
শুভ্র হাসতে হাসতে বলে, “ওয়েট ওয়েট, কাহিনিটা কী ভাই? আমি তো একবারও বলিনি, স্নেহাকে ভালোবাসি। তাহলে হয়েছেটা কি?”
কাব্য খানিকটা উত্তেজিত হয়ে বলে, “তাহলে আসতে কেন বললি মাইয়াটারে? ওই মাইয়া হারাইয়া গেছে, ভাই। লাস্ট দুই মাসে তার কোনো খবর নাই।”
এটা শুনে শুভ্র হতভম্ব হয়ে বলে, “কি কইলি, ভাই? আমি তো এসব কিছুই জানতাম না।”
তবে কাব্য কোনো উত্তর না দিয়ে দ্রুত সেখান থেকে চলে গেল।

রাত ১০ টার কাছাকাছি। অনেকক্ষণ হাঁটার পরও রিকশার দেখা মেলেনি। ক্লান্তি, দুশ্চিন্তা আর শীতের তীব্রতা মিলে মহিলাটির শরীর বেয়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম পড়ছে। বয়সটা হয়ত ৪৫ অতিক্রম করেছে। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বাজারের ব্যাগ নিয়ে হাঁটতে, তার কষ্ট দ্বিগুণ বেড়ে যাচ্ছে।
“হে খোদা! এভাবে কতক্ষণ হাঁটবো?” বলে সে শ্বাস ছেড়ে আবারও এক পা সামনে বাড়ায়। শীতের কনকনে বাতাস তার শরীরকে আরও শুষে নিচ্ছে।
এমন সময় একটা ছেলে এসে তার ব্যাগটা হাতে নিয়ে হেসে বলল, “দিন, আন্টি। আমি পৌঁছে দিচ্ছি।”
মহিলা ছেলেটিকে চিনতে পেরে তৃপ্তির হাসি হেসে বলল, “আরে বাবা তুমি? এখান থেকে কোথায় যাচ্ছ?”
“এই তো, বাসায়। তবে এই অবস্থায় আপনার এগুলো টানা একদমই উচিত হয়নি,” ছেলেটি মিষ্টি হাসি দিয়ে উত্তর দেয়।

“কি করবো বলো? জানোই তো, তোমার আঙ্কেল রাশিয়া। আর কাজের মেয়েটা অসুস্থ বলে আসেনি। তাই নিজে বয়ে নিতে হচ্ছে।”
ছেলেটি আরেকটু হেসে বলে, “আমার গাড়িতে চলুন। আপনাকে ঠিক জায়গা মতো পৌঁছে দিচ্ছি।”
ক্লান্তি সাথে এতক্ষণ হাঁটার কারণে শরীরও আর এক পা চলতে চাইছে না। তাই কিছু না ভেবেই, তিনি ছেলেটির প্রস্তাবে সম্মতি জানান।
গাড়িতে ওঠার পর মহিলাটি আশ্চর্য হয়ে দেখল, এই ছেলেটি ছাড়াও পাশে আরেকজন ছেলে বসে। তিনি একটু অবাক হয়ে বলে উঠলেন, “তুমি কে?”
সেই ছেলেটা তার কাঁধে হাত রেখে হালকা হাসি ফুটিয়ে বলে, “ও আমার ফ্রেন্ড, আন্টি। চিন্তা করবেন না, আজকের পর আর কখনো আপনার কষ্ট হবে না।”
কথাটা এতটা গভীর ও ভয়াবহভাবে বলা হয়েছে যে মহিলার শিরদাঁড়া দিয়ে হিমশীতল শিহরন বয়ে গেল। মহিলার মনে একটা অজানা সন্দেহ জাগল। মুহূর্তের মধ্যে তার দেহ অবশ হয়ে যায়। সে শ্বাস নিতে পারছে না।
তাই তীব্র আতঙ্কের মধ্যে, তিনি কাঁপতে কাঁপতে বললেন, “বাবা, গাড়ি থামাও। আমি একা যেতে পারবো।”
গাড়ি চালাতে চালাতে ডার্ক গম্ভীর গলায় বলল, “এই গাড়িতে কেউ একবার উঠলে, তাদের গন্তব্য শেষ হয় OWL এর নিষিদ্ধ শাশ্বত বনে।”

OWL—এই শব্দটি শোনামাত্র মহিলার বুকের ভেতর অন্ধকার শূন্যতা খেলে গেল। তার পা একেবারে অসাড় হয়ে যায়, চোখের সামনে অন্ধকার ঢেকে যেতে লাগল। তার বুকের ভিতর কলিজাটা যেন ছিঁড়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি হলো। নিশ্বাস আটকে যেতে লাগলো। তার পাশেই যাকে তিনি এতক্ষণ ভরসা করেছিল, সেই ছেলেটির মুখাবয়ব এখন ভয়াবহ রূপে বদলে গেছে। যা মহিলার সমস্ত দৃঢ়তা আর সাহসকে মুহূর্তেই চুরমার করে দিল।
হঠাৎ মহিলাটি উপায়হীন হয়ে হাত-পা ছোটাছুটি করতে লাগলেন। চিৎকার করে বললেন, “হেল্প! হেল্প! কেউ বাঁচাও! আউল…”
কিন্তু এর আগে কিছু বলার সুযোগ পেলেন না। মুহূর্তেই তার মুখে অজ্ঞান করার পদার্থ প্রয়োগ করা হলো। সামান্য সময়ের মধ্যে তার চোখে ঘোর আসতে লাগল, আর সবকিছু অন্ধকারে ঢেকে গেল। কিয়ৎক্ষণের মধ্যে সে জ্ঞান হারালো।

বেশ কিছু সময় পর তাকে নিয়ে যাওয়া হলো সেই ভয়ংকর বনের বেসমেন্টে। সেখানে কঠোরভাবে তার হাত-পা, মুখ বাঁধা হলো। তারপর বরফ ভেজানো অতিরিক্ত ঠান্ডা পানির মিশ্রণ তার মুখে ঢেলে দেওয়া হলো।
শীতের মধ্যে সেই ঠান্ডা পানির আঘাত মহিলার সমস্ত শরীরের সঞ্চিত শক্তি এক নিমিষেই শেষ করে দিল। তার দেহটি তীব্র শীতে কাঁপতে শুরু করল। সে এক লাফে উঠে পড়ে। কিন্তু তার মুখ বাঁধা থাকায়, চিৎকার করার কোনো সুযোগই পেল না।
চোখ খুলতেই তার সামনে তিনটি ন*গ্ন দেহ ভেসে উঠল। ভয়ে সন্ত্রস্ত হয়ে সে চিৎকার করতে চাইল, কিন্তু গলা থেকে শব্দ বের হলো না। অশ্রুতে তার চোখ ভরে উঠে।
এদিকে অবস্কিউর এসে তার মুখের বাঁধন খুলে দিল। সে নীচু হয়ে মহিলাটির মুখমণ্ডলের কাছে মাথা নত করে গম্ভীর কণ্ঠে বলে, “হুম। প্লিজ বলুন। একটু পর তো এমনিতেও সব কথা বন্ধ হয়ে যাবে। এখন বলুন।”
কিন্তু মহিলাটি চুপ করে থাকে। তার চোখে জীবন্ত অন্ধকার ভর করেছে। চোখের কোণ থেকে গড়িয়ে পড়া অশ্রু শুকাতে না শুকাতেই সে অবস্কিউরের মুখে থু থু দিয়ে অভিশপ্ত কণ্ঠে বলল, “তোরা জানো*য়ারের বাচ্চা। তোরা কি বুঝবি?”

একটুপর থেমে কান্নাভেজা কণ্ঠে পুনরায় বলে, “আমার সন্তানকে পৃথিবীতে আনতে দাও। আমি বিশ বছর অপেক্ষা করেছি তার জন্য। পায়ে পড়ি, ওকে পৃথিবীতে আনতে দাও…”
তার বুক থেকে ওঠা কষ্টের গর্জন কেঁদে কেঁদে বের হতে লাগলো। কিন্তু যখন সে থু থু দেওয়ার সাহস দেখাল, অবস্কিউরের মাথায় দুর্বৃত্ত আগুন শিরায় শিরায় প্রবাহিত হতে শুরু করল। তাই ক্রোধে তেতে উঠে তার স্ত*দ্বয়কে জোরে চেপে ধরল, আর সেই চাপের মধ্যে আঙুলের নখ গভীর থেকে গভীরতর হয়ে শূলের মতো ভেদ করে চলে তার বু*কের মাংসে। মহিলার ভিতর থেকে যন্ত্রণার বিস্ফোরণ বেরিয়ে আসে। তার চিৎকারে বেসমেন্টের দেয়াল, সিলিং সবকিছু একসঙ্গে কেঁপে ওঠে। তার বু*কের কাপড় র*ক্তাবৃত হয়ে উঠে। এরপর অমানবিক ধর্ষ* শুরু হলো। তিনজন একে একে তাকে শিকার বানাতে থাকে। তার মুখের আর্তনাদগুলো বেসমেন্টের গাঢ় দেয়াল দিয়ে শোষিত হয়ে যায়।

কয়েক ঘণ্টা ধ*র্ষণের পর ডার্ক হাসতে হাসতে বলে, “আগে ওর বাচ্চাটাকেই শেষ করা যাক।”
মহিলাটি যন্ত্রণায় ডুবে, তার নিস্তেজ শরীরে শক্তি সঞ্চয় করে বলে, “তোমরা আমাকে শেষ করো, তবুও বাচ্চাটাকে পৃথিবীতে আসার সুযোগ দাও। আমি শুধু দু’মাস বাঁচতে চাই, দুইমাস পর ও আসলে আমাকে শেষ করে দিও।”
এই কথা শুনে OWL ভয়ানকভাবে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে। একটু পর ডার্ক ঠান্ডা গলায় উত্তর দেয়, “যে পৃথিবীতে আউল রয়েছে, সে পৃথিবীতে এই শিশুর আসা অপরাধ। আর যদি সে মেয়ে হয়, তো তার শেষটা আউলই করবে।”
এরপর পাষণ্ডের মতো ছু*রি দিয়ে তার পেট কেটে চি*রে ফেলে। তাজা র*ক্তের স্রোত প্রবাহিত হতে থাকে। মাং*সের কাটা অংশের ভেতর থেকে শিশুটির প্রাণহীন শরীর বের করে আনা হয়। তার ছোট্ট হৃদপিণ্ডের প্রতিটি ধ্বনি শেষবারের মতো পৃথিবীটিকে আঘাত করে।
মহিলার চোখ থেকে অশ্রু ঝরে পড়লেও, এই অবর্ণনীয় যন্ত্রণায় সে কোনো শব্দ করতে পারে না-শুধু, “আমার সোনাআআআ…” বলে চিৎকার করে থেমে যায়।

তবে এতেও শেষ হয়নি তার অভিশপ্ত নিয়তি। তার চোখের সামনে, শিশুটির নিস্তেজ দেহের মা*থাটি টেনে ছিঁ*ড়ে ফেলা হয়, আর তার কচি মস্তিষ্কের ভেতর থেকে র*ক্ত ঝরে পড়ে। এই দৃশ্য দেখে মহিলার সমস্ত শরীরে নিঃসঙ্গ হাহাকার তৈরি করে। তারপর শুরু হলো নির্মমতার অকল্পনীয় উন্মাদনা। শিশুটির ছোট্ট হাত-পা নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত রূপে টেনে ছিঁ*ড়ে ফেলা হলো। একেকটি অঙ্গ ছিন্ন হতে থাকল, আর র*ক্তের গরম ফোয়ারা ছিটকে পড়ল চারপাশে। শিশুটির দেহ একের পর এক টুকরো করে কে*টে ফেলা হলো।
তারপর সেই র*ক্তমাখা টুকরোগুলো একটি প্যানে বসানো হলো। আগুনের লেলিহান শিখায় ধীরে ধীরে মাংসগুলো সিদ্ধ হতে লাগল। মাংস থেকে ভেসে আসা ঘ্রাণ কোনো সাধারণ খাবারের মতো ছিল না, এই মাংস তাদের কাছে অমৃত। এরপর সেই মাংস প্লেটে তুলে নেওয়া হলো ।

আর তাদের জন্য পানীয় হিসেবে প্রস্তুত ছিল শিশুটির গরম র*ক্ত। ডার্ক ও অবস্কিউর সেই র*ক্ত তৃপ্তি নিয়ে পান করতে লাগল। একটুপর একটা সিদ্ধ করা মাং*সের টুকরো মায়ের দিকে ছুড়ে দিল। মাংসটি তার মুখের উপর পড়তেই এক তীব্র চিৎকার দিয়ে মহিলাটি অবচেতন হয়ে গেল।
এরপর শুরু হয় নৃ*শংসতার চূড়ান্ত খেলা। ব্লাডশেড ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে মহিলার স্ত* দুটো অর্ধেক কে*টে এমন পৈশাচিক শক্তিতে টেনে ছিঁ*ড়ে ফেলে যে, র*ক্তের গরম স্রোত ফিনকি দিয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সেই র*ক্ত তাদের মুখ বেয়ে গড়িয়ে পড়তে থাকে, আর তাদের চোখে ফুটে ওঠে বিকৃত আনন্দের ঝিলিক। মহিলার যন্ত্রণাবিদ্ধ চিৎকারে চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে, কিন্তু তা কেবল তাদের পৈশাচিক আনন্দে আরও ইন্ধন জোগায়।
একটুপর ডার্ক এসে মহিলার মুখে তার পু*রুষা* ঢুকিয়ে দেয়। প্রতিটি ধাক্কায় তার নিষ্ঠুরতা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। মহিলার শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসে, তার চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে নোনা জল, কিন্তু ডার্ক থামে না। অবশেষে ডার্ক যখন নিজেকে সরিয়ে নেয়, মহিলার দেহ কাঁপতে কাঁপতে বমি করে ফেলে। অবস্কিউর এই বমির ছিটেফোঁটা হাতে তুলে নিয়ে তার যৌ*ঙ্গে ঠেলে দেয়। মহিলার চিৎকারও তখন নিস্তেজ হয়ে আসে।
এরপর ব্লাডশেড সামনে এসে নিজের ইউরিন মহিলার মুখে ঢেলে দেয়। সে হিংস্র হাসিতে বলে ওঠে, “কেমন লাগছে পানীয়?”

তার কণ্ঠে বিদ্রুপের ঠান্ডা ছোঁয়া, যা মহিলার দেহে আরও ভয় ঢুকিয়ে দেয়।
এরপর ডার্ক এগিয়ে এসে মহিলার কোমর বরাবর পায়ের বুট দিয়ে হাজারবার আ*ঘাত হানতে থাকে। প্রতিটি আ*ঘাতে হাড় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে বেরিয়ে আসে, মহিলার গোঙানির শব্দে তার জীবনের শেষ প্রতিধ্বনি ভেসে ওঠে।
ডার্ক তার মাথার কাছে এসে চুল মুঠো করে ধরে টেনে ছি*ড়ে ফেলে। তার ঠোঁটে পৈশাচিক হাসি খেলে যায়। সে বলে, “OWL কে দেখেও যে মেয়ের চোখ থেকে পানি পড়বে না, একমাত্র সেই মেয়েই বাঁচতে পারবে। বাকিদের স্থান বাঁশবাগানেই হবে।”

পরবর্তীতে ডার্ক, ব্লাডশেড, আর অবস্কিউর মিলে মহিলার দেহকে একটা খেলনার মতো ব্যবহার করতে লাগল।
প্রথমে ডার্ক তার হাতের ভারী চা*পাতি দিয়ে তার এক হাত কেটে ফেলল। র*ক্তের স্রোত ভলভলিয়ে বেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ল মেঝেতে। এরপর ব্লাডশেড ছু*রি নিয়ে মহিলার পায়ের প্রতিটি আঙুল কে*টে ফেলল। প্রতিটি আঙুল হলো তার জন্য নতুন এক ট্রফি। পরে সেই কা*টা আ*ঙুলগুলো একসঙ্গে আঠা দিয়ে জোড়া লাগানো হলো। আর সেই বীভৎস মালাটি তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হলো।
তিনি তখনও জীবিত, তার চোখে ফুটে উঠেছে য*ন্ত্রণার অসীম গভীরতা। কিন্তু তারা থামল না। অবস্কিউর রা*ম দা তুলে মহিলাটির অন্য হাতটিও কে*টে ফেলল। তার কাঁপা কণ্ঠে শোনা গেল অভিশপ্ত উচ্চারণ, “আমি..আমি অভিশাপ দিলাম… তোদ.. তোদের মৃ*ত্যু এত…এত যন্ত্রণাদায়ক হবে…পৃথি.. পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণী মনে রাখবে…”
এই কথা শুনে ডার্ক, ব্লাডশেড, আর অবস্কিউর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। ডার্ক ভারী চাপা*তি দিয়ে এক কো*পে মহিলাটির গ*লা কে*টে ফেলল, ব্লাডশেড ছু*রি দিয়ে তার যৌ*না* ছিন্ন করল, আর অবস্কিউর তার পেট কে*টে ভিতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ টেনে বের করে আনল। প্রতিটি কো*পে র*ক্তের স্রোত তাদের মুখে ছিটকে পড়ল, আর তারা সেই র*ক্ত মেখে বিকৃত উল্লাসে মেতে উঠল।

শেষবার মহিলার চোখের কোটর থেকে একটা র*ক্তবিন্দু গড়িয়ে পড়ল। এই র*ক্তবিন্দুতে লিখিত হলো, ‘আমার অভিশাপ খুব তাড়াতাড়িই সত্যি হবে।’
এরপর তার দেহকে টেনে নিয়ে যাওয়া হলো এসিডের পাত্রে। এসিডে তার দেহ ডুবিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার চা*মড়া গলে যেতে লাগল, আর সেই গলিত মাং*সের দুর্গন্ধে ভরে উঠল চারপাশ।
তার যৌ*ঙ্গের উপর সেই বিষাক্ত চিহ্নসহ লেখা হলো ‘OWL’। মহিলাটির গল্প এখানেই শেষ হলো, কিন্তু OWL-এর এই পৈশাচিক অধ্যায়ের শেষ কি কখনো হবে, নাকি এই অন্ধকার আরও বহু প্রাণকে গ্রাস করবে?

কারান অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। সাদা শার্ট আর কালো কোট, প্যান্ট পরিধান করে, বরাবরের মতো মশলাদার আর ফুলের গন্ধ মিশে থাকা পারফিউমের ঝিলিক তার ব্যক্তিত্বকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। আর মিরা এতক্ষণ ধরে দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে, চুপচাপ তীক্ষ্ণ নজরে তার সমস্ত প্রস্তুতি অবলোকন করছে।
একটুপর কারান মিরার দৃষ্টি অনুভব করে, হালকা হাসি দিয়ে হাতে ঘড়ি পরতে পরতে বলে, “ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন? চুমু খাবে?”
মিরা তার দিকে অগ্নি চোখে তাকিয়ে কারানের কাছে গিয়ে তার চুল এলোমেলো করে দেয়। পরে মন্থর গম্ভীরতায় বলে, “কার জন্য এত সেজে যাচ্ছ?”
কারান হেসে বলে, “এটা কি করলে, সুইটহার্ট?”
মিরা কটু ভাষায় প্রতিত্ত্যুর করে, “অফিসেই তো যাবে। এত গুছিয়ে যাওয়ার কী দরকার? আমি চাই না, আমার জামাইয়ের ওপর কোনো মেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ুক।”
কারান মিরার কোমর আঁকড়ে ধরে তাকে কাছে টেনে নিয়ে আসে। স্নিগ্ধভাবে হেসে বলে, “এত জেলাস?”
“জিপ খুলে দেখাই? ভিতর থেকে জ্বলতে জ্বলতে পুড়ে যাচ্ছি।”
কারান মিরার ঠোঁটের কাছে এসে নেশালু স্বরে বলে, “বিলিভ মি, জান। তুমি যদি উপরেরটা খুলো, তবে আমি নিচেরটাও খুলে ফেলব, তারপর ভার মে যাক অফিস।”
মিরা হেসে কারানের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,

“আজ সন্ধ্যায় তাড়াতাড়ি আসবে।”
কারানের সাদা শার্টের কলারে চুমু খেয়ে রেখে গেল গভীর লিপস্টিকের দাগ। কারান অবাক হয়ে মিরার দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকাল। মিরা মিষ্টি হেসে বিদ্রূপের সঙ্গে বলল, “কি, রেগে গেছেন কি কারান চৌধুরি?”
কারান কিঞ্চিৎ হেসে মিরার ঠোঁটকে কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্পর্শ করে বলল, “তুমি এখনো তোমার হাসবেন্ডকে চিনতে পারোনি, সোনা। আজকে আমি এভাবেই বউয়ের লিপস্টিকের সিগনেচার নিয়ে অফিসে যাব।”
মিরা আশ্চর্য হয়ে বলে, “পাগল তুমি? মানুষ কি ভাববে? আমি তো মজা করে দিয়েছি। শার্ট পরিবর্তন করে এসো, হানি।”
কারান মিরার কোমর ধরে মিরাকে নিজের বুকে মিশিয়ে দিয়ে বলল, “এভাবে ডেক না, জান। কামড় দিয়ে খেয়ে ফেলব তোমাকে।”
মিরা ঠোঁট উঁচিয়ে বলল, “হুম, শুরু করো।”
কারান আর নিজেকে সামলাতে না পেরে এগিয়ে আসতে থাকলে, মিরা দু’কদম পিছিয়ে সরে গিয়ে বলল, “অফিসে যাও।”

কিন্তু কারান এক ঝটকায় মিরাকে কাছে টেনে নিয়ে, তার গলার নরম ত্বকের উপর দাঁত বসিয়ে দিলো। ব্যথায় মিরার মুখ কুঁচকে গেল। মিরা গলায় হাত দিয়ে বলল, “আহ! এটা কেন করলে?”
কারান সম্মোহনী হাসি দিয়ে, তার গলার সেই স্থানে ঠোঁট ছুঁয়ে মৃদু স্বরে বলল, “যেন সারাদিনে এক মুহূর্তের জন্যও আমাকে না ভুলো। ব্যথার কারণে বারবার গলায় হাত যাবে, আর তখনই আমাকে মনে পড়বে।”
তারপর মিরার কপালে এক নরম চুম্বন রেখে ফিসফিস করে বলল, “লাভ ইউ, বউ। সাবধানে থেকো।”
এবার প্রস্থান করলো সে।
কারান চলে যাওয়ার পর, মিরা দেয়ালে হেলান দিয়ে বুকে দুই হাত বেঁধে হেসে বলল, “আজকের সন্ধ্যার সারপ্রাইজের জন্য প্রস্তুত থাকো, আমার ডার্ক রোমান্সের প্রেমিক স্বামীজি।”

রাত প্রায় সাড়ে আটটার কাছাকাছি। কারান অফিসের সব কাজ শেষ করে গাড়ি চালিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছে। এই সময়েই ফারহানের কল আসে। গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে, ব্লুটুথ ইয়ারপিস দিয়ে কথোপকথন শুরু করে কারান।
গম্ভীর কণ্ঠে বলে, “হুম।”
ফারহান কটমট করে বলে, “কোথায় ফাঁসিয়ে দিলি, ভাই?”
“কেন, কি হয়েছে?”
“বা*লেরজি, মা*লে এখন আমার সাথে ইন্টিমেট হতে চায়, ব্রো।”
এটা শুনে কারান হালকা কাশির শব্দ তুলে, মুখ চেপে হাসি চাপতে থাকে।
“আমি জানি তুই হাসছিস।”
কারান এবার গম্ভীর কণ্ঠে বলে, “না, হাসছি না। আর যাই করিস, এই পারমিশনটা আমি তোকে দিব না। আগে যা করেছিস করেছিস, এখন করলে তারান্নুমকে ভুলে যেতে হবে।”
“ভাই, এভাবে বলিস না প্লিজ। তুই তো জানিস, ওকে আমি কতটা ভালোবাসি। আগের কোনো মেয়েকেই এক উইকের বেশি রাখিনি আমি। একমাত্র গোবরচারিনীকেই আমার সবটা দিয়ে ভালোবাসি।”
“এর জন্যই তোকে বারণ করছি। কোনোভাবে নূরকে সামলে নে।”
“আর এমেকা কোথায়?”
“ও অন্য কাজে আছে। দুবাই থেকে আসার আগে আমি ওকে বাচ্চাদের মাথার খুলি গুলো দিয়ে এসেছি, ও সেগুলো নিয়ে রিসার্চ করছে।”
“আচ্ছা শোন, মেইন কথাই তো ভুলে গেছি। এই নূর কিন্তু ইব্রাহিমের দ্বিতীয় বউ। মানে এখানেও কাহিনি আছে ব্রো। আর নারী পাচারের ঘটনাও মনে হয় যুক্ত আছে। কারণ আয়লা ওদের গোপন কিছু কথা শুনেছে।”
কারানের চেহারা মুহূর্তে গম্ভীর হয়ে ওঠে। সে গাড়ি চালাতে চালাতে ভাবনার গভীরে হারিয়ে যায়। একটু পর ফারহান আবার বলল, “ওকে ব্রো। রাখছি। কিন্তু এই শালিকে আটকাবো কীভাবে, আল্লাহ জানে।”
সে ফোন কেটে দিল। এদিকে কারানের মস্তিষ্কে চিন্তার তরঙ্গ ভেসে উঠল, “এই ইব্রাহীমকে যেমনটা দেখায়, এ এমন নয়। জেহের নাকি ইব্রাহীম, মেইন মাথাটা কে?”

সকালবেলা কারান ধীরে ধীরে চোখ মেলতেই বুঝতে পারল, মিরা পাশে নেই। এটা দেখে কারান অস্থির হয়ে দ্রুত ট্রাউজার পড়ে, মিরাকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়ল।
“বউ, কোথায় তুমি?”
কিছুক্ষণ পর বাইরে এসে দেখে মিরা সুইমিং স্যুটে পুলে, গভীর জলে নিজেকে ভাসিয়ে গোসল করছে। তার কোমল হাসি বাতাসের মতো এসে কারানের হৃদয়ের প্রান্তে শীতলতা মিশিয়ে ছড়িয়ে পড়ল।
“কালকের সারপ্রাইজ কেমন ছিল, কারান চৌধুরি?”
কারান আড়মোড়া ভেঙে, শরীরের ক্লান্তি ঘোচাতে একপাশ থেকে অন্যপাশে মাথা কাত করে এক ঝলক হেসে বলে, “এ রকম সারপ্রাইজ আমি প্রতিদিন চাই।”
মিরা হেসে পানির নিচে শরীর ডুবিয়ে নিঃশব্দে শ্বাস নেয়।
কারান পুলের কিনারে দাঁড়িয়ে মিরার দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে বলে, “কালকে একটু বেশিই হয়ে গেছে, সুইটহার্ট। আমার পুরো শরীরে পেইন হচ্ছে।”
মিরা দৃষ্টি তীক্ষ্ণ করে, কারানের পায়ের কাছে এসে পুলের কিনারে দুই হাত রেখে বলে, “কেন, তুমি তো আরো চাচ্ছিলে।”

“তখন তো তেমন কিছু মনে হয়নি। কিন্তু আমার বউ সত্যিই অনেক স্ট্রং।”
মিরা হেসে কারানের পা ধরে এক লহমায় তাকে পুলে টেনে নেয়। কারান হঠাৎ পুলের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে যায়। এরপর মিরা কারানের পেছনে এসে জড়িয়ে ধরে মিষ্টি গলায় বলে,
“হানি, এতটা হটনেস! উফফ!”
কারান মিরাকে টেনে সামনে এনে গলা জড়িয়ে ধরে বলে,
“আমি সেই দেড় বছর আগের মিরার সাথে এই মিরার কোনো মিল পাচ্ছি না, সুইটহার্ট।”
মিরা কারানের বুকে হাত চালাতে চালাতে কিঞ্চিৎ পরিমাণে হেসে বলে, “ডোন্ট ইউ লাইক ইট?”
কারান মৃদু হেসে তার কোমর আঁকড়ে ধরে আরো কাছে টেনে বলে, “আই লাভ ইট।”
বলেই মিরার গলায় চুমুর ছোঁয়া ছড়িয়ে দেয়।

আরিয়ান সোফায় বসে, টিভির স্ক্রিনে চোখ রেখে নির্বিকারভাবে খেলা দেখছিল। কিন্তু হঠাৎ এক স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি তার ধ্যান ভাঙল। রোমানা মুচকি হাসি নিয়ে এসে আরিয়ানের কোলে বসল।
রোমানা হেসে বলে, “চলো জান, আজকে খেলা যাক।” আরিয়ান রোমানার ঘাড় চেপে ধরে বলে, “কয়েক রাউন্ড পরেই তো তুমি নেতিয়ে যাবে, সোনা।”
রোমানা তার গালে একটি শক্ত থাপ্পড় মেরে উঠে দাঁড়িয়ে বলে, “শালার পুত, চেস খেলার কথা বলছি।”
অথচ আরিয়ান হেসে আড়মোড়া ভেঙে বলে, “কিন্তু আমি তো অন্য কিছু খেলার মুডে আছি।”
রোমানা তার কথাকে অগ্রাহ্য করে দাবা কোড নিয়ে আসে। তাদের মধ্যে খেলা শুরু হয়ে যায়। ক্ষণকাল পর খেলার মাঝে আরিয়ান বুঝতে পারে, রোমানা তার চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই সে তাড়াহুড়ো করে সব কিছু এলোমেলো করে দিয়ে রোমানার ঠোঁটে চুম্বন দিতে শুরু করে।

এদিকে রোমানা ক্ষিপ্ত হয়ে আরিয়ানকে সরাতে চাইলে, আরিয়ান এবার রোমানার কোমর থেকে শাড়ির কুঁচি খুলে দিয়ে দুর্বোধ্য হাসি দিয়ে বলে, “আজ অন্তত তোমার সামনে আমার ভালো রূপটা দেখাতে দাও, প্রিয়দর্শিনী।”
রোমানা একটু বিরক্ত হেসে বলে, “কেন, তোমার তো আমাকে বোঝা মনে হয়। তাহলে এতো প্রেমের উদ্দেশ্য কি?”
আরিয়ান রোমানার দুই গাল চেপে ধরে, ঠোঁটটাকে মাছের ঠোঁটের মতো করে বলে, “বোঝাই তো, জলহস্তী একটা।”
এবার রোমানা কপাল কুঁচকে বলে, “তোর মতো হাতির বিশাল ভার যে আমি সামলাই, এটাই তোর ভাগ্য।”
আরিয়ান তখন রোমানার কোমরে কিছুটা চাপ দিয়ে মৃদু হেসে বলে, “রাক্ষুসি বউ আমার, কখনো কথায় কোনো রসকষ থাকে না।”

রোমানা ব্যথা পেয়ে তার চোখ সংকুচিত করে আরিয়ানকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। তারপর উঠে গিয়ে আরিয়ানের ট্রাউজার টান দিয়ে খুলে ফেলে খিলখিল করে হাসতে হাসতে দৌড়ে চলে যায়।
আরিয়ান হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে বলে, “হা’রামজাদি, তোর সবসময় আমার প্যান্টের দিকে নজর কেন?”
রোমানা দরজার কাছে এসে মাথা বের করে, ঠাট্টা করে বলে, “তোর ওই জিনিসটা আমার খুব পছন্দ, আরিয়ান।” হাঁটুতে ভর দিয়ে হাসতে থাকে সে। এদিকে রোমানার হাসির শব্দে আরিয়ানও হেসে ওঠে। একটু পর রোমানাকে কাঁধে তুলে বিছানায় নিক্ষেপ করে দেয়। রোমানা পিছিয়ে যেতে চাইলেও, আরিয়ান শক্ত করে তার পা ধরে কাছে টেনে নিয়ে বলে, “আজকে সামলে নে, রোমানা। বিগার সাইজ!”
বলেই রোমানার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিছু সময় পর, আরিয়ান ও রোমানা একে অপরের কাছে শিহরণিত হয়ে সঙ্গমে আবদ্ধ হয়। গাঢ় ভালোবাসার সেই মুহূর্তে, আরিয়ান রোমানার গলায় মুখ ডুবিয়ে প্রবেশ করতে থাকে।
কিন্তু ক্ষণকাল পর রোমানা চোখ খুলে ভারী শ্বাসে বলে,

“তুমি ওই ছেলেটাকে কেন মে*রে ফেললে, আরিয়ান?”
আরিয়ান চোখ বন্ধ রেখেই রোমানার গলায় জিভের স্পর্শে অদ্ভুত নেশা ছড়িয়ে দিয়ে বলে, “তুমিও তো মা*র্ডার করেছ, কই, আমি কখনো কিছু বলেছি?”
এটা শুনে রোমানা চমকে গিয়ে আরিয়ানের চুলগুলো ধরে তার মুখশ্রী নিজের মুখের কাছে এনে বলে, “তার মানে তুমি আমার অতীত সম্পর্কে সবকিছুই জানো।”
রোমানার কথা শুনে আরিয়ান অট্টহাসিতে মেতে উঠে। কিন্তু রোমানা ঢোক গিলে গভীর শ্বাস ফেলে শুধু আরিয়ানের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।

বিকেলের আকাশে সূর্য যখন সোনালি আলো ছড়িয়ে দিয়েছে, কারান মিরাকে নিয়ে তার ঘরের গেইম কক্ষে ঢুকে পড়লো। মিরা তার স্বামীর শার্ট পরেই এসেছে। আর কারান শুধু জিন্স প্যান্ট পরিহিত।
“এদিকে এসো,” বলে কারান মিরার হাতে হাত রেখে স্নুকার গেইমের টেবিলের দিকে নিয়ে যায়। মিরার পাঁচটি আঙুলের মধ্যে কারান তার পাঁচটি আঙুল প্রবেশ করিয়ে কিউ (লাঠি) ধরে। মিরা হেসে বলে, “খেলা শিখাচ্ছ?”
“না। কারণ আমি জানি, এটা তুমি পারো।”
মিরা একটা বলের দিকে তাকিয়ে বলে, “ওইটা টার্গেট।”
“ওকে।”
এরপর দুজনেই একসঙ্গে কিউয়ের সাহায্যে বলটিকে খোঁচা দেয়, বলটা সঙ্গে সঙ্গে টেবিলের কোনার ফাঁকে চলে যায়।
কারান গম্ভীর কণ্ঠে বলে, “ওয়েট, বেবি।”
এরপর কক্ষ থেকে বেরিয়ে গিয়ে একটু পর হাতে একটা ছুরি নিয়ে আসে। পরে ছুরিটার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে, “এবার এটা দিয়ে খেলা হবে।”
মিরা অবাক হয়ে বলে, “ছু*রি দিয়ে…মানে?”
কারান ঈষৎ হেসে বলে, “রিল্যাক্স, সুইটহার্ট।”
তারপর ছুরিটা এক হাতে নিয়ে, অন্য হাত টেবিলের উপর রাখে। এরপর প্রতিটি আঙুলের ফাঁকে ছুরিটা বারবার ঠুকতে থাকে। মিরা অবাক হয়ে তাকে দেখছে শুধু। একবারও ছুরিটা কারানের কোনো আঙুলে আঘাত করতে পারেনি।

এবার কারান ছুরিটা মিরার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, “নাও ইয়োর টার্ন, বেইবি।”
মিরা হেসে ছুরিটা হাতে নিয়ে কারানের দিকে তাকিয়ে ছুরিটা পিছনে দারুণভাবে ছোড়ে। ছুরিটা একদম সোজা গিয়ে ডার্টবোর্ডের বুলসআই অংশে ঠেকে। কারান তার ঘাড় সরিয়ে তাকায়, মিরার সফলতা দেখে বিস্মিত হয়। সে ভ্রূ উঁচিয়ে প্রশংসার সুরে বলে, “এই না হলে কারান চৌধুরির বউ, মিসেস মিরা চৌধুরি!”
মিরা আত্মবিশ্বাসী হাসিতে, কারানের কাছে চলে আসে। তার গলা জড়িয়ে ধরে ঠান্ডা গলায় বলে, “এবার তাহলে সমানে সমান। কি বলো, জান?”
কারান গভীর দৃষ্টিতে মিরার দিকে তাকিয়ে থাকে। কিছু মুহূর্ত পর কারান হঠাৎ প্যান্টের পিছনের পকেট থেকে বন্দুক বের করে মিরার বক্ষস্থলে ঠেকিয়ে ঠান্ডা গলায় প্রশ্ন করল, “ভয় পাচ্ছ?”
মিরা আশ্চর্য হয়ে তার চোখে তাকিয়ে রইল। তারপর ঠোঁটে মৃদু হাসি নিয়ে বলল, “আই ট্রাস্ট ইউ।”
কারানের ঠোঁটের কোণে তির্যক হাসি খেলে গেল। বন্দুকটা দেখিয়ে গভীর স্বরে বলল, “এতে বুলেট নেই।”
এরপর অকস্মাৎ বন্দুকটি লোড করে মিরার কপালে ঠেকিয়ে ঠোঁট কামড়ে আবার বলল, “এবার?”
অথচ মিরার চোখে কোনো ভীতি নেই। অর্থাৎ তার জীবন-মৃত্যুর সিদ্ধান্ত অনেক আগেই কারানের হাতে সমর্পণ করা। তার ঠোঁটের কোণে স্বচ্ছ হাসি দেখা দিল। সে শান্তভাবে বলল, “আমি জানি, তোমার আঙুল ট্রিগারে চাপবে না।”
কিন্তু কারান এক পলকও দেরি না করে বন্দুকটি একটু সরিয়ে নিয়ে ট্রিগারে চাপ দিল, আর মিরার মাথার পাশ দিয়ে গুলিটি বেরিয়ে গেলরপর মিরার দিকে ঝুঁকে ভারী কণ্ঠে বলে, “কাউকে বিশ্বাস করতে নেই, সুইটহার্ট।”
মিরা একটি দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে, রিভলভারটি হাতে নিয়ে কঠোর স্বরে বলল, “তোমার কাছে গান কি করে এলো?”
কারান কিঞ্চিৎ তীক্ষ্ণ হাসি দিয়ে বলল, “তুমি প্রশ্ন করলেও উত্তর পাবে না, জানোই তো। এখন থেকে এটা তোমার কাছে থাকবে।”

তবে মিরার মধ্যে কোনো দ্বিধা ছিল না। সে মুহূর্তে বন্দুকটি তুলে বন্দুকের নল কারানের পু*ষা*ঙ্গের উপর ধরে দৃঢ় কণ্ঠে বলল, “আমি কারণ জানতে চাই।”
কারান খটখট করে হাসতে থাকে। এরপর হঠাৎই মিরাকে ঘুরিয়ে দিয়ে, বন্দুকটি হাতে নিয়ে মিরার পায়ের শার্টের অংশ তুলে দিয়ে বলল, “আর কত আকৃষ্ট করবে আমাকে?”
কিন্তু মিরা এখনো কঠিন স্বরে বলল, “আমি তোমাকে সম্পূর্ণ চিনতে চাই, কারান।”
কারান মিরার কোমরের কাছাকাছি পিস্তলটি বারবার স্পর্শ করতে থাকলে, মিরার ঠোঁটে সূক্ষ্ম হাসি ফুটে ওঠে। মিরা চোখ বন্ধ করে তপ্ত শ্বাস ছেড়ে বলে, “উফফ…”
কারান মিরার গলায় চুম্বন রেখে, পিস্তলের নলটি মিরার শর্ট প্যান্টের মধ্যে রেখে তার কানে ফিসফিস করে বলল, “হাউ ডু ইউ ফিল?”
“হ*র্নি,” মিরা উষ্ণ কণ্ঠে জবাব দিল।
কারান মৃদু হাসি দিয়ে পিস্তলটি বের করে এনে পাশে টেবিলে রাখল। তারপর মিরাকে তুলে টেবিলের উপর বসিয়ে দিল। সেখানে ছড়িয়ে থাকা গেইমের সরঞ্জাম ছুড়ে ফেলে দিল। কারান মিরার দিকে ঝুঁকে এসে তার প্যান্টের বাটনটি খুলে গভীর অনুভূতির সাথে বলল, “I’m f*cking you so deeply, making your body burn with a desire, baby.”
মিরার কোমরের চারপাশে কারানের স্পর্শ মিরাকে গভীর আকর্ষণে ভরিয়ে তোলে। এরপর কারান একটা একটা করে মিরার শার্টের বোতামগুলো খুলে দেয়। মিরাও কারানের প্যান্টের জি*প খুলে কারানকে এক টানে নিজের কাছে নিয়ে আসে। দুজনে অ*ন্তরঙ্গতার স*ঙ্গমে হারিয়ে যায়।

লাল ড্রেসে মোড়া আর.এ অন্ধকারে মিশে যায়, তার মুখে গাঁই ফক্স মুখোশ। তার হিংস্র চোখের দৃষ্টি বলে দেয়, আজও এক সৌন্দর্যের শেষ দেখতে চায়। একটু পর একটা ঘরের ভেতর থেকে একজন মায়ের কণ্ঠস্বর ভেসে আসে, “বহুবার বলেছি, নিজের সৌন্দর্য ঢেকে রাখো। আজকালকার ছেলেরা ভালো নয়। তাদের নজর খুব খারাপ। কেন তুমি আমার কথা শুনতে চাও না?”
“উফফ, মা! এই এক কথা কতবার বলেছো। সুন্দরী হয়েছি কি নিজেকে লুকিয়ে রাখার জন্য? তুমি যাও তো। পাপা কোথায়?”
“সে আজ ফিরবে না। চলো, পড়তে বসো।”
এর মধ্যে হঠাৎ দরজায় কড়া নড়ার শব্দে মেয়েটি থমকে দাঁড়ায়।
“তুমি থাকো, আমি দেখে আসছি,” বলে মেয়েটি এগিয়ে যায়। তবে তার মা হাত ধরে থামিয়ে দেয়।
“থামো, আমি যাচ্ছি। দেখি এত রাতে কে এলো?”
এরপর এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলতেই তার মুখে চেতনানাশক স্প্রে দেওয়া হয়। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
“মাআআআ!” বলে মেয়েটি দৌড়ে আসে। কিন্তু এর মধ্যেই জুতোর হিল দিয়ে তার মাথায় আ*ঘাত করা হয়। সঙ্গে সঙ্গেই সে মেঝেতে পড়ে যায়, মাথা ফেটে র*ক্ত গড়িয়ে পড়ে মেঝে ভিজিয়ে তোলে। মুখোশধারী আর.এ ঝুঁকে ফোনের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে মেয়েটির মুখমণ্ডল দেখে গভীর কণ্ঠে ফিসফিসিয়ে বলে, “তোমার মা ঠিকই বলেছিলেন, তুমি সুন্দরী।”

এ কথা বলেই সে মেয়েটির মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেয়। মেয়েটি চিৎকার করে ওঠে, “মাআআ!”
কিন্তু আর.এ-র ধৈর্য দ্রুত ফুরিয়ে যায়। সে মেয়েটির মাথা শক্ত হাতে ধরে বারবার মেঝেতে আছড়ে মারে। রক্তে ভিজে যায় মেঝে, সাথে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ঘরের কোণায় কোণায়।
তবুও থেমে থাকে না সেই পৈশাচিক উন্মাদনা। এবার সে ঘরের কাচের একটা টেবিল তুলে আনে। প্রচণ্ড আক্রোশে টেবিলটি মেয়েটির মাথায় আঘাত করে। কাচের টুকরো ছিটকে গিয়ে মেয়েটির মুখ, চোখ, গলায় বি*দ্ধ হয়। প্রতিটি টুকরো তার সৌন্দর্যের মর্মমূলে আঘাত করে। মেয়েটি ছটফট করে, তার চিৎকারে বাড়ি প্রতিধ্বনিত হয়। আর.এ-র চোখে তখনও একই শীতল নির্মম দৃষ্টি। মেয়েটি দুই হাত জোড় করে, চোখে অশ্রু জমিয়ে বলল, “কেন? কেন আমাকে মা*রছ? আমি কি ভুল করেছি?”

“তুমি সুন্দরী। আর এটাই তোমার সবচেয়ে বড় ভুল,” সে কটাক্ষ করে বলল।
তারপর দ্রুত ব্লে*ড বের করে মেয়েটির গালের উপর প্রথম আঘাত করল। র*ক্তের ফোঁটা ছিটকে ছিটকে বেরিয়ে এল। মেয়েটির শরীরের প্রতিটি অংশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল।
তারপর ব্লেডটি আরও গভীরভাবে তার গ*লায়, পে*টে, স্ত* প্রবাহিত হল। আর.এ-র চোখে ধ্বংসের আঁচ। সে তার মুখের উপর ব্লেডের আঘাত চলমান রাখলো। তার সারা শরীরে র*ক্তের স্রোত ছড়িয়ে পড়ল। এরপর মেয়েটির পোশাকগুলো একে একে ছিঁ*ড়ে ফেলা হলো। ব্লে*ডের ধারে কে*টে কে*টে তার কাপড় টুকরো টুকরো করে ফেলল। মেয়েটির শ্বাস প্রশ্বাস থেমে থেমে চলল।
প্রতিটি আঘাত তার আত্মাকে ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলছে। সে আর চিৎকারও করছিল না–শুধু অসহায় ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস চালাতে থাকে। এরপর আর.এ একটি লেজার গান বের করে অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে মেয়েটার স্ত*বৃন্তে আ*ঘাত করে, যা তীব্র যন্ত্রণার সৃষ্টি করে। সাথে যৌ*ঙ্গেও লেজার লাইট দিয়ে ক্লি* জ্বালিয়ে দেয়। এরপর ফুলদানির টপ এনে মেয়েটির মাথায় মা*রতেই তা ভেঙে স্ফটিক কাচের খণ্ডগুলো র*ক্তের সঙ্গে মিশে তার ত্বক ভেদ করে ভিতরে ঢুকে পড়ে।
তার শরীরের প্রতিটি স্নায়ু শেষ মুহূর্তে তীব্র ব্যথায় কেঁপে ওঠে। সমস্ত শরীর শিথিল হয়ে পড়ে, তার শ্বাস রুদ্ধ হয়ে আসে। আর.এ, “আআআআআ…” শব্দে একটা তীব্র চিৎকারে চাপাতি বের করে মেয়েটার মাথা এক কো*পে আলাদা করে ফেলে। এরপর মেয়েটির হাতে একটি ব্রেসলেট পড়িয়ে দিয়ে চুলে ঝটকা দিয়ে সেখান থেকে প্রস্থান করে ।

রাত নয়টা পঁচিশ। কারান নিজ কক্ষে সোফায় বসে ল্যাপটপের স্ক্রিনে মনোনিবেশ করে কাজ করছে। অন্যদিকে মিরা বিছানায় বসে কফি খেতে খেতে নিঃশব্দে কারানকে গভীর দৃষ্টিতে দেখছে। তার দৃষ্টিতে মিশে আছে কৌতূহল সাথে গভীর আকর্ষণ। কল্পনার জগতে মিরা কারানের সঙ্গে কাটানো অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলোকে নতুন করে অনুভব করছে। সাথে কারানের শরীরকে নগ্নভাবে কল্পনা করতে থাকে। কারানের প্রতিটি স্পর্শ, প্রতিটি চুম্বন মিরা কল্পনায় অনুভব করে কিঞ্চিৎ পরিমাণে হাসতে থাকে। আবার কফির কাপে আলতো চুমুক দিতে দিতে নেশাভরা চোখে কারানের দিকে তাকিয়ে থাকে।
একসময় কারান মিরার এই নিবিড় দৃষ্টি টের পেয়ে মুচকি হেসে বলে, “Babe, stop imagining me n*aked; it’s turning me on even more.”
মিরা ধীরে ধীরে কফির কাপটি টেবিলে রেখে উঠে আসে। কারানের কোলে বসে তার চোখে চোখ রেখে, হালকা ঠান্ডা কণ্ঠে বলে, “Who told you that? I’m fu*cking you with my eyes, honey.”
কারান মিরাকে গলার কাছে টেনে এনে হাসি ধরে রেখে বলে, “You can’t. This is my job and it’s permanent.”
চোখ টিপ দিয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয়।
মিরা কারানের গলায় চুমুর মিষ্টি আভা ছড়িয়ে দিতে দিতে বলে, “Will you love me forever?”
“Yes, my love.”

তারপর মিরার শার্টের বোতাম একে একে খুলতে খুলতে চোখে গভীর আগ্রহ নিয়ে কারান বলে, “রেডি হয়ে এসো। আজকে আমি আমার বউয়ের স্কিল চেক করবো।”
মিরা হেসে বলে, “কি পড়বো?”
“আগেই বলেছি, আমার সামনে তুমি সারাদিন সারারাত নগ্ন হয়ে থাকলেও বাহিরে বোরকা ছাড়া এক পা ও দিতে পারবে না।”

Tell me who I am part 34 (3)

মিরা মৃদু হাসি দিয়ে পেছনে ফিরতে শুরু করলে, কারান তাকে এক ঝটকায় কাছে টেনে নিয়ে গাঢ় কণ্ঠে বলে, “তোমার থেকে এক মুহূর্তের জন্যও আলাদা হতে ইচ্ছে করছে না।”
মিরা তার কপালে একটা মিষ্টি চুমু দিয়ে বলে, “বাহিরে ওয়েট করো। আসছি, হানি।”
বলেই হেসে পা বাড়ায়, কিন্তু কারান চোখের কোণে গভীরতর আবেদন ছড়িয়ে দিয়ে মিরার চলে যাওয়া দেখতে থাকে

Tell me who I am last part