The Silent Manor part 4
Dayna Imrose lucky
মীর তখন চিরকুট এর বলা বাক্যটি রাফিদ কে বলে। রাফিদ প্রত্যুত্তরে বলল “আশ্চর্য।আমরা কোন সত্য বের করব।’অদ্ভুদ।”
মীর বলল “চল ঐ অচেনা ব্যাক্তিটিকে জিজ্ঞেস করি। অচেনা মুখোশধারী ব্যাক্তিটির দিকে তাকাল। কিন্তু ততক্ষণে সে চলে যায়। চারদিকে কোথাও নেই। থাকলেও সন্ধ্যার ধোঁয়াশা আলো এবং নিরবিচ্ছিন্ন কুয়াশার জন্য দেখা যাচ্ছে না।
রাফিদ বিষয়টি এড়িয়ে বলল “ছেড়ে দে’ নিশ্চয়ই লোকটি পা’গল। কাদের ভেবে তীর ছুড়েছে কে জানে।চল এখন।”
মীর রাফিদ এর রেশ টেনে অশ্বের-পৃষ্ঠায় চেপে বসে। এরপর তাঁরা তাঁদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তাঁদের গন্তব্যে বাড়িতে পৌঁছানো। সন্ধ্যা নামায় আলিমনগর গ্রামের মানুষ ঘরে আলো ধরিয়েছে।কেউ আলোর জন্য ধরিয়েছে, হারিকেন তো কেউ মশাল।ঘরের বাহিরে মশাল দিয়েছে সকলে। গ্রামটি ইতিমধ্যে বেশ চমকপ্রদ ভাবে রুপ ধারণ করেছে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
গ্রামের সরু পথে এগোচ্ছে মীর ও রাফিদ।অশ্ব তার ধীর পায়ে চলছে। চৌধুরী নিবাসন আর মাত্র চার পাঁচ মাইল দূরে। রাস্তার দুই ধারে মাটির ঘর, খড়ের ঘর,তো কিছু টিনের দোতলা ঘর।যার থেকে আলো ছড়িয়ে পথ কিছুটা আলোকিত করায় মীর এবং রাফিদ সুবেদে মত পথে এগোতে পারছে।নীরব পথে চলতে চলতে হঠাৎ করে তাদের কানে ঘুঙুর এর শব্দ ভেসে আসে।মীর অশ্বের লাগাম টেনে দাঁড়িয়ে যায়। শব্দ লক্ষ্য করে সেদিকে তাকাল।বা দিকে বেশ কয়েক হাত দূরে একটা ছোট্ট কুঠুরি থেকে শব্দ টা আসছে। রাফিদ মীর এর অভিব্যক্তি দেখে বলল “হয়ত মেয়েরা নাচ করছে।”
“চল গিয়ে দেখি” মীর বলে অশ্ব থেকে নেমেও দাঁড়ায়।
রাফিদ বলে “আমিলনগর মেয়েদের অনেক সম্মান দেয়া হয়। এভাবে ওদের নাচ দেখতে যাওয়াটা অন্যায় হবে।”
“ধুর চলতো। থাইল্যান্ডে তো কখনো এরকম সুর ও শুনিনি,আর নাচ তো বিলাসিতা।”
বলে মীর ঘুঙুর এর শব্দ অনুকরণ করে যেতে থাকে। রাফিদ ও বাধ্য হয়ে মীর এর পেছন পেছন গেল।
একটি টিনের দোতলার পাশে ছোট্ট কুঠুরি।ছোট্ট কুঠুরিটার ভেতর মৃদু আলো। মোমবাতির দপদপে শিখায় দেয়ালে পড়ে নাচছে যেন ছায়ারা। বাতাসে কস্তুরীর গন্ধ, আর পায়েল ঝংকারের মিষ্টি সুর ভেসে আসছে চারদিক থেকে। চারজন মেয়ে নাচছে এক সুরে।হাতে রেশমের ওড়না, চোখে ঝিলিক, ঠোঁটে মিষ্টি হাসি।
সেই ভিড়ের মধ্যে এক চন্দ্রমুখী মেয়ের দিকে নজর পড়ে মীরের।তার গলায় নীল পাথরের হার, কপালে একফোঁটা লাল টিপ, আর চোখে এমন এক আলো যেন কুঠুরির আলো ম্লান করে দেয়। সে নাচছে, কিন্তু তার চোখে লুকানো আছে এক গভীর গল্প, এক অপূর্ণ আকুলতা।
জানালা থেকে মীর তাকিয়ে আছে। তার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে উঠেছে, কুঠুরির ঘ্রাণে যেন মিশে গেছে তার অজানা অনুভব। প্রতিটি তালে তাঁর সামনে চন্দ্রমুখী মেয়েটির চুড়ির শব্দ তার বুকের ভেতর প্রতিধ্বনিত তুলছে। বাইরে কুয়াশারা ঘনত্ব হয়েছে, কিন্তু কুঠুরির ভেতরে নাচ থামেনি।সেখানে শুধু চোখের ভাষায় চলছে এক অদেখা সংলাপ।
মীর এর পেছনে দাঁড়িয়ে আছে রাফিদ। রাফিদ মীর কে লক্ষ্য করে বলল “আমাদের গ্রামের স্কুল এর মাস্টার এর মেয়ে। জীবনে একবার ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাঁসি দিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত সেটা বাবা দেখে ফেলে,আর সেদিন বলেছিল ‘আমাদের গ্রামের মেয়েদের দিকে যেন কখনো চোখ তুলে না দেখি।ভারী সুন্দরী নাচনেওয়ালী। যাইহোক, এখন চল।”
মীর এবং রাফিদ পেছন ঘুরে যেতেই তাঁদের সামনে কিছু লোক পরে। তিনজন মধ্যবয়স্ক লোক। তখন তাঁদের মাঝে উপস্থিত হয় আব্দুল মোতালেব হোসেন। তিনি রাফিদ এবং মীর কে দেখে কিছুটা আকস্মিক হকচকিয়ে গেল।তাঁরা নিজেদের মধ্যে চাওয়াচাওয়ি করল।মীর এবং রাফিদ ও। এরপর আব্দুল মোতালেব মীর এবং রাফিদ এর উদ্দেশ্যে বলল “তোমরা তো জমিদার বাড়ির ছেলে।তা এত রাতে এখানে!কি ব্যাপার! কিছু হয়েছে?
রাফিদ তখন মীর কে ফিসফিস করে বলল “নাচনেওয়ালীর বাবা।”
মীর তখন বলল “আসলে’ মীর আসলে বলতেই রাফিদ তাঁর কথা মাঝ পথে থামিয়ে নিজে বলল “আসলে চাচা,ও হচ্ছে মীর। থাইল্যান্ড থাকে।গ্রামে নতুন। আশপাশ টা ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিলাম।আর হঠাৎ তখন আপনাদের কুঠুরি থেকে ঘুঙুর এর শব্দ শুনতে পায়। তখন ও জিজ্ঞেস করল এটা কোথা থেকে আসছে।আমি ওকে মুখে জবাব দেওয়ার পরেও ও স্বচোক্ষে দেখতে আসল।”
“ও আচ্ছা”
“আচ্ছা চাচা আসি।” বলে মীর ও রাফিদ চলে যায়।
সে-ই বিকেল থেকে শালুক এবং জয়ন্তন সহ বাড়ির সকলে অপেক্ষা করছে রাফিদ এবং মীর এর জন্য। তখন শালুক অনেকবার বারণ করেছে, আলিমনগর এর উত্তরে যাস না। দিনকাল ভালো নয়, কখন কি হয়ে যায় বলা যায় না। কিন্তু তাঁরা দুজন যেন বরাবরই অবাধ্য ছেলে। কখনো নিজেদের সখের বিরুদ্ধে যায়নি।শালুক বারবার ঘড়ির দিকে দেখছে’সময় বাড়ছে,কিন্তু তাঁদের যেন আসার নামগন্ধ নেই।ঠিক তখনই অশ্বের হ্রেষাধ্বনি ভেসে আসে ঘরের বাইরে থেকে। জয়ন্তন বলল “ওঁরা হয়ত চইলা আইছে।”
এরপর রাফিদ ও মীর ঘরের ভেতর উপস্থিত হয়।দেখল সবাই যেন তাদের অপেক্ষায় বসে আছে।রাফিদ তখন আগ বাড়িয়ে শালুক এর সম্মুখে গিয়ে বলল “যা বকার,ওকে বকো। আমার কোন দোষ নেই।” বলে উপরে চলে যায়।শালুক মীর কে লক্ষ্য করে বলল “সে-ই কখন থেকে অপেক্ষা করছি,আর তোদের আসার সময় হল এখন! কতটা চিন্তা হচ্ছিল আমার”
“ছোট মা’ এখন আর আমরা ছোট্ট নই।এত চিন্তা কর না তুমি। তুমি আমাদের খাবার দাও।আমি হাতমুখ ধুয়ে আসছি।” বলে হাস্যোজ্জ্বল মুখে উপরে নিজের ঘরে চলে যায়।
আজকের রাতটা অপূর্ব সুন্দর। আকাশজোড়া নীলের ওপর ছড়িয়ে আছে হাজারো তারার নরম ঝিলিক। চাঁদটা যেন এক নিঃশব্দ অভিমানী প্রেমিক।দূর থেকে তাকিয়ে আছে পৃথিবীর দিকে, তার আলো ছুঁয়ে যাচ্ছে গাছের পাতা,আর নিস্তব্ধ পথের ধুলো।
দূরে বাঁশঝাড়ে হালকা বাতাসে শোঁ শোঁ শব্দ, কখনও ঝিঁঝিঁ পোকার টানা ডাক। চারপাশে এমন এক নীরবতা, যেন সময়ও থেমে গেছে এই মুহূর্তে। ফুলের ঘ্রাণ মিশে আছে বাতাসে,নিশি জুঁই, রাতরানির মিষ্টি সুবাসে মন ভরে যায়।
এমন একটি রাত একেকজন একেক ভাবে উপভোগ করছে,কেউ এক কোণে নদীর ধারে দাঁড়িয়ে নদীর স্রোত উপভোগ করছে।নদীর স্রোতে যেন সে হারিয়ে গেছে কল্পনার জগতে, আবার কোথাও কোনো এক জানালার এক টুকরো আলো ঝলমল উপভোগ করছে কেউ।কে জানে, হয়তো কারও চোখে ঘুম আসেনি এত রাতেও!
রাতটা শুধু সুন্দর নয়, রহস্যময়ও যেন তার নীরবতার ভেতরে লুকিয়ে আছে কোনো গল্প, কোনো অজানা প্রতীক্ষা।
রাতটি একান্তই উপভোগ করছে মীর। ছাদের এক কোণে বসে সে।রাফিদ এতক্ষণ এখানেই ছিল। এরপর ক’জন অনুচারী এসে তাঁকে ডেকে নিয়ে যায়। গুরুত্বপূর্ণ দরকার বলে।মীর এর পরনে সাদা রঙের পাঞ্জাবি। সাদা পাজামা।তাঁর উপর শীত ঠেকাতে কালো রঙের শাল জড়ানো।ডান হাতে সিগারেট।
মীর উপলব্ধি করল তাঁর পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে।মীর সিগারেট এর ধোঁয়া ছেড়ে বলল “পেছনে কেন দাঁড়িয়ে, সামনে এসো।”
মায়া বেশ উশখুশ হয়ে মীর এর সামনে এলো। এরপর বেতের চেয়ারের উপর বসে পড়ল।
“আপনি আমার দিকে না দেখেই কিভাবে বুঝলেন আমি আপনার পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলাম?”
মীর এ্যাশট্রে তে সিগারেট নিভিয়ে বলল “তোমার উপস্থিতি তো খুব ছোট্ট বেলা থেকেই টের পেয়ে আসছি।আর এখন পাব না?”
মায়া মৃদু হেসে বলল “আজ কোথায় গিয়েছিলেন?
“আমিলনগর গ্রামটি শেষ বারের মত ঘুরে দেখছিলাম।”
“শেষ বারের মত,মানে? মায়ার কাছে বাক্যটি অস্বাভাবিক মনে হল।
“মানে হলো, কিছুদিন পর তো চলেই যাব। তারপর কবে না কবে আসা হবে ঠিক নেই।”
“এখানে থেকে গেলেই তো পারেন।মা আপনাকে খুব স্নেহ করেন। আপনি চলে গেলে সে কষ্ট পাবে।”
“আর তুমি? মীর চোখ টান করে প্রশ্ন করল মায়াকে।
মায়া ভ্রুকুঞ্চিত করল “আমি মানে!আমি বললেই কি আপনি এখানে থেকে যাবেন কি?আজিব।”
“একবার বলেই দেখো, থেকে যেতেই পারি।”
মায়া জবাব দেয়ার মত কোন ভাষা খুঁজে পেল না।মীর মজা করছে না সত্যি বলছে সে বুঝতে পারছে না। তখন তৃষ্ণার বলা একটি কথা তাঁর কানের কাছে ভেসে উঠে ‘বিদেশি ছেলে,সে দেশে না জানি কত প্রেমিক আছে তার। তাঁর আবার প্রেমে পড়িস না।’
মীর মায়ার ভাবনা ভাঙ্গিয়ে দেয়।বলল “এই রুপসী’ কি ভাবছো?”
মায়া তখন হন্তদন্ত হয়ে দাঁড়িয়ে যায়।বলল “আমি ঘরে যাই। অনেক রাত হয়েছে।”
“জবাবটা তো দিয়ে যাও।”
মায়া এবার কিছুটা উচ্চস্বরে বলল “আপনি থেকে গেলেও বা কি,না থাকলেও বা কি, আমার এতে কিছু যায় আসে না।” বলে মীর এর সামনে থেকে যেতেই রাফিদ হাজির হয়। রাফিদ মায়াকে দেখে বলল “তুই এত রাতে এখানে কি করছিস? মাঝরাতে মেয়েদের বাইরে বের হওয়া নিষেধ,ভুলে গেছিস?”
মায়া থতমত খেয়ে বলল “দাদা, তোকেই খুঁজতে আসছিলাম।”
“কিসের জন্য? রাফিদ এর যেন টানটান উত্তেজনা।মায়া রাফিদ এর অভিব্যক্তি দেখে ভয় পেল।মায়া নিরুত্তর। রাফিদ পুনরায় বলল “কিছু হয়েছে!কেউ কিছু কি বলেছে?
মায়া কিছু না বলেই ছাদ থেকে চলে যায়। রাফিদ বিড়বিড় করে বলল ‘অদ্ভুদ।’
রাফিদ বসে পড়ে মীর এর সামনে।একটা সিগারেট হাতে নেয়। সিগারেট ধরিয়ে বলল “মায়া হঠাৎ কেমন আচরণ করল।’
মীর হেসে বলল “ও কিছু নয়,আমি একটু কোমল আচরণ এর সাথে ঠাট্টা করছিলাম।”
রাফিদ ও ঠাট্টার ছলে বলল “শা’লা’ তোর স্বভাব গেল না।”
মীর রাফিদ এর রেশ টেনে বলল “ শা’লা বুঝেশুনে বলেছিস তো’?
“এই, আমার বোনের দিকে নজর দিস না।”
“তুই শা’লা ডেকে ফেলেছিস রাফিদ, কথা এড়ালে চলবে না।” বলে দুইজনে হাসিতে তলিয়ে যায়।
তাঁদের এমন দৃশ্যটি ছাদের ছোট্ট গাছের আড়াল থেকে দেখছে বাড়ির নতুন কাজের লোক বুলবুল।ও বেশ কিছুক্ষণ ধরে ছাদে উপস্থিত। বুলবুল এর বয়স আনুমানিক পঁয়ত্রিশ। উচ্চতা পাঁচ ফুট এর মত। শ্যামবর্ণের শরীর।মাথায় একটা শীতের টুপি।গায়ে মোটা সোয়েটার। কান পেতে মীর এবং মায়ার কথোপকথন এতক্ষণ শুনছিল। এখন রাফিদ এবং মীর এর হাঁসি যেন ওর সহ্য হচ্ছে না।
মীর এবং রাফিদ হাঁসি থামিয়ে দিল।
মীর ছাদের রেলিঙ ধরে রাফিদ কে লক্ষ্য করে জিজ্ঞেস করল “মাস্টার এর মেয়ের নাম টা কি?
“তুই জেনে কি করবি?
“কি করব বুঝতে পারছিস না? হেঁয়ালি না করে বল।”
রাফিদ মলিন কন্ঠে বলল “মোহিনী।’
মীর বলল “অসম্ভব সুন্দর নাম।ঠিক ওর মতই নামটি সুন্দর।” রাফিদ তখন বলল “তুই আসলেই একটা ন’ষ্ট শা’লা।”
বুলবুল সব কথা শুনে ফেলে তাঁদের। এরপর মনে মনে বলল “তখন মায়া আপামনির সাথে প্রেমালাপ করছিলো,আর এখন আবার আরেক মোহিনী।তুই বড় চালাক মীর।তুই গাছের ও খাবি তলার ও কুড়োবি, না এটা তো হতে দেওয়া যাবে না। আমাকে এর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
রাত বাড়লে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু চোখে ঘুম নেই মায়ার। মায়া ও তৃষ্ণার ঘরে একটা দোলনা আছে। দোলনা তে মায়া বসে ধীর স্থির ভাবে দোল খাচ্ছে।দু পা উঠিয়ে বসা দোলনায়।দোলনা চলার শব্দ পেলে তৃষ্ণা জেগে উঠে ঘুম থেকে।ঘরের আলো নেভানো। জানালা থেকে চাঁদের আলো এসে ঘরটি আলোকিত করেছে। তৃষ্ণা চোখ কচলে তাকাল পাশে।মায়া নেই। এরপর শোয়া থেকে উঠে বসে।দেখে মায়া না ঘুমিয়ে দোলনায় চেপে বসে আছে। খুবই উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে মায়াকে। তৃষ্ণা শান্ত ভাবে মায়াকে জিজ্ঞেস করল “তুই এখনো ঘুমোসনি কেন?রাত অনেক হল।”
মায়া দোল খাচ্ছেই খাচ্ছে। তাঁর চোখ ও পলকহীন। তৃষ্ণা বিছানা থেকে নেমে মায়ার কাছে গিয়ে তাঁর গায়ে হাত দিয়ে বলল “কি হয়েছে তোর?
মায়া তখন তৃষ্ণার কথা যেন শুনতে পেল। “কিছু নয়,ঘুম আসছে না।তুই যা ঘুমা।আমায় বিরক্ত করিস না।”
তৃষ্ণা বলল “কি ভাবছিস?আমায় বল।ভালো লাগবে।”
মায়া জবাব দিল না। দোলনা থেকে উঠে জানালার পাশে দাঁড়ায়। তৃষ্ণা তাঁর পেছন পেছন গেল। আবার প্রশ্ন করল “মীর এর কথা ভাবছিস!”
মায়া ঘুরে তাকাল তৃষ্ণার দিকে। এরপর দৃষ্টি সরিয়ে বাইরে নেয়। খোলা প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে বলল “একটুআধটু ভাবছি। কিন্তু আমার ভাবনার মূল কারণ হল অচেনা বাঁশির সুর। সেদিন কে বাঁশি বাজাচ্ছিল!”
তৃষ্ণা হাঁফ ছেড়ে বলল “মীর এর ভাবাটা বোকামি।আর এই অদৃশ্য বাঁশিওয়ালার কথা ভাবাটা আরো বড় বোকামি।তুই আজকের পর আর কখনো ভৌতিক গল্প, উপন্যাস কিছুই পড়বি না। এগুলো পড়েই তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে।” বলা শেষে তৃষ্ণা পুনরায় বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে।
মায়ার ভালো লাগছে না কিছু। বাড়িটা আজকে খুব নিস্তব্ধ এবং সুনসান মনে হচ্ছে। তাঁর মনে হচ্ছে অচেনা কেউ বাড়িতে উপস্থিত।সে এও জানে, আদৌও তার ভাবনা সঠিক কিনা এর প্রমাণ নেই। কিন্তু তাঁর মনে হচ্ছে।এটা কোন অসুখ নয়তো!
মায়া জল খাওয়ার জন্য বিছানার পাশে রাখা জগের দিকে গেল। কিন্তু জগ খালি।খুব জলতেষ্টাও পেয়েছে ।কি করবে ভেবে তৃষ্ণা কে একবার ডাকল “তৃষ্ণা,জগে জল নেই। আমার খুব জলতেষ্টা পেয়েছে। আমার সাথে চল, রান্নাঘর থেকে নিয়ে আসি।’
তৃষ্ণা কম্বল আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে বলল “তুই যা।আমি পারব না। বাচ্চামি করিস না।’
মায়া বাধ্য হয়ে ঘরের বাহির হয়। এরপর একবার চারদিকে দেখল। চারদিকে খন্ডিত আলো।এত রাতে কেউ জেগে নেই।মায়া ধীর স্থির পায়ে হাঁটতে লাগল। সে-ই মুহূর্তে মায়ার কানে বাঁশির সুর ভেসে আসে।মায়া থমকে গেল। মায়া ক্ষুদ্র জানালা থেকে সুর যেদিক থেকে আসছে সেদিকে তাকাল।ঠিক কিছুটা দূর থেকে সুরটি ভেসে আসছে। সে-ই অচেনা সুরটি।কিন্তু এত রাতে কে বাজাচ্ছে বাঁশি?নাকি এবারো ভুল শুনছে মায়া!” এক অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়ল মায়া। নিজের ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করে দ্রুত হেঁটে রান্নাঘরের দিকে চলে যায়। রান্নাঘর থেকে জগে জল ভরল। তখন চোখ পড়ে বৈঠকখানার দিকে।মীর কোথাও যাচ্ছে। মায়ার সন্দেহ হল।সে দ্রুত মীর এর পেছন হাজির হয়।মীর সদর দরজা খুলতেই মায়ার উৎকণ্ঠা ভেসে আসে পেছন থেকে।সে ঘুরে দেখল মায়া।
মায়া মীর এর মুখোমুখি হয়ে সন্দেহজনক প্রশ্ন করল “আপনি এত রাতে কোথায় যাচ্ছেন?
মীর কিছুটা বিব্রত বোধ করল।মাথা চুলকাল।মায়া মীর কে নিশ্চুপ দেখে বলল “কি হল,চুপ করে আছেন যে, কোথায় যাচ্ছেন?কারো সাথে দেখা করতে নিশ্চয়ই?”
মীর বলল “আসলেই একজনের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলাম।আর মাঝপথে এসে তুমি বাধা দিচ্ছ।”
“কার সাথে দেখা করবেন?আর এত রাতেই বা কেন।’
“ছোট্ট মা’ছোট্ট মায়ের জন্য সময়মতো দেখা করতে পারিনি।”
“কার সাথে দেখা করবেন?
মীর একটু রসিকতা করে বলল “ভালোবাসি একজনকে আমি খুব।প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়েছি যার।”
“কে সে? মায়ার কথা আটকে গেল।
মীর বলল “জগ টা রাখো।এসো আমার সাথে।’ মায়া কিছুটা ভয়ের স্বরে বলল “রাফিদ দাদা দেখলে আমাকে মেরে ফেলবে। এখানকার সংস্কার মেয়েরা রাতে বাইরে বের হতে পারবে না।”
মীর বলল ‘সংস্কার এর নিকুচী করেছি।চলো।’ বলে জগটা মায়ার থেকে নিয়ে পাশের সোফায় রেখে তাঁর হাত ধরে ঘরের বাইরে নিয়ে যায়। মায়া এই প্রথমবার মাঝরাতে পর পুরুষের সাথে চৌকাঠ পেরিয়েছে বাড়ির।সে জানে, এমনটা কারো কানে গেলে এর জন্য কঠিন শা’স্তি ভোগ করতে হবে। কিন্তু তারপরও সে ভয়কে উপেক্ষা করে ঘরের বাইরে বের হয়।
মীর মায়াকে নিয়ে তাঁর অশ্বের নিকট নিয়ে যায়।মায়ার হাত ছেড়ে দেয়। অশ্ব কে আদর করতে শুরু করে মীর।মীর বলল “আমি অগ্লিন কে খুব পছন্দ করি, এবং ভালোও বাসি।”
“অগ্লিন কে?
“দেখতে পাচ্ছ না।ওর নাম দিয়েছি আমি অগ্লিন।’
“তারমানে আপনি ওর জন্য এখানে এসেছেন?
“হ্যাঁ। তখন ছাদ থেকে ওর হ্রেষাধ্বনি পাই। ভাবলাম ওকে দেখে যাই।”
মায়া তখন হেসে উঠল। হাসতে হাসতে মায়ার চোখ পড়ে দোতলার বারান্দায়।মায়ার হাঁসি থেমে যায়। সেখানে দাঁড়িয়ে আছে জয়ন্তন বেগম।কন্ঠ শুকিয়ে গেল মায়ার। বুকের ভেতর নাড়া দিয়ে উঠে।সে আর রেহাই পাবে না নিশ্চিত।সে মাঝরাতে ঘরের বাইরে বের হয়েছে।সেটাও একজন পুরুষের সাথে।যে কিনা খালতো ভাই। সংস্কার অনুযায়ী, বিয়ের আগে নিজের বাবা,ভাই, এবং র’ক্তের সম্পর্ক ব্যতীত অন্য কোন পুরুষের সাথে বাড়ির মেয়েরা মিশতে পারবে না।মায়া নিশ্চিত, এরজন্য তাকে শা’স্তি পেতে হবে। কিন্তু মীর?সে তো নির্দোষ।মায়ার জন্য মীর শা’স্তি পাবে!মায়া ভয়ে আধমরা হয়ে গেল
মীর দেখল মায়া চুপচাপ। “কিছু হয়েছে তোমার?
“না। চলুন ঘরে যাই।কেউ দেখলে সমস্যা হবে’
“কারা দেখবে’অনুচারীরা তো দেখছেই। তাদের দেখায় কিছু যায় আসে না।”
মায়া মীর এর সাথে কথা না বাড়িয়ে দৌড়ে ঘরে চলে গেল।
আজ সোমবার। আমজাদ চৌধুরী এবং থমাস শন বাড়ি ফিরেছেন সকালেই মাত্র। সারারাত ট্রেনে ছিল।ফিরেছে ভোর ছয়টার দিকে। বুলবুল সংবাদ পেয়ে একজন ড্রাইভার কে পাঠিয়েছিল গাড়ি নিয়ে। তাঁদের নিতে।এখন বেলা এগারোটা।সকাল ছয়টা থেকে দশটা অবধি দুজনে একটু ঘুমিয়ে নিয়েছে। আমজাদ এবং থমাস শন পাশাপাশি বসা। তাঁদের সামনে শালুক, জয়ন্তন এবং শাহানারা বসা। মানুষ কর্মজীবন থেকে বিদায় নিলে অবসরে থাকতে হয়। আমজাদ দীর্ঘ সময় থাইল্যান্ডে ব্যবসা করেছে। এরপর দেশে ফিরেছে আজ দুই বছর হয়। এখন তিনি গ্রামের সবার দেখভাল এ ব্যস্ত। গ্রামের জমিদার তিনি, তাঁর একটা দায়িত্ব আছে। গ্রামকে তাঁর সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।যেমনি করে সরকার তার দেশের জন্য।এই বলে যেন আমজাদ আর অবসর পেল না। ব্যবসা থেকে মানুষ মূলত অবসর নেয় না। কিন্তু বিদেশে ব্যবসা করলে তাকে দেশে ফিরতেই হয়।গ্রামের কৃষকদের কৃষি কাজের জন্য অনুপ্রাণিত করছে আমজাদ।গরিব, মধ্যবিত্ত পরিবার যেন না খেয়ে থাকে, সে-ই চেষ্টা প্রচেষ্টা আগেও তিনি করেছেন।এখনো করছেন।
আজ সকালে ফিরে সবাইকে অবাক করে দিল আমজাদ ও থমাস। তাদের আসার কথা ছিল দু’দিন পরে। কিন্তু কাজ শেষ হওয়াতে চলে আসে। আমজাদ, ছোট্ট বেলার কথা তুলল। মজার ঘটনা গুলো। তাঁর রেশ টেনে জয়ন্তন ও তাঁর ছোট্ট বেলার কথা বলতে বলতে হাসিতে তলিয়ে গেল। তখন রাফিদ এসে সোফায় বসে। তাঁর মুখটা খুব গম্ভীর। সবাইকে হাসতে দেখে রাফিদ বলল “এত হাসছো কেন সকলে?
আমজাদ থেমে বলল “তুই হাসতে মানা করছিস’ জানিস হাসলে অনেক উপকার হয়। ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে হাসলে, শরীরে ইমিউন কোষ ও অ্যান্টিবডির কার্যক্ষমতা বাড়ে, ফলে অসুখ-বিসুখ কম হয়। হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে,হাসলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং স্ট্রেস কমায়।”
থেমে পুনরায় জিজ্ঞেস করল আমজাদ “শুনেছি মীর এসেছে,ও কোথায়?”
‘ও ঘুমাচ্ছে বোধহয়।’ বলল শালুক। তখন থমাস বলল “আমজাদ, আমি এসেছি অনেকদিন। আমাদের এখন চলে যাওয়া উচিত। একটা নির্দিষ্ট সময় দেখে সব গোছগাছ করে চলে যেতে হবে।”
শালুক একটু উতালা হয়ে প্রশ্ন করল থমাস কে “মীর কেও নিয়ে যাবেন?
থমাস একটু হেসে বলল “ওকে আর কই রেখে যাব,যত বড় হোক, আমার সন্তান আমার কাছে এখনো বাচ্চাটিই। ওকে রেখে তো আমি থাকতে পারবো না।”
‘মীর চলে যাবে।মীর কে নিয়ে যাবে’ কথাটি মোটেই ভালো লাগেনি শালুক এর। রাফিদ এর ও ভালো লাগছে না। তাঁর চলার পথে একজন সঙ্গী হয়েছিল সে। বন্ধু বলে ডেকেছে। এখন সে চলে যাবে! রাফিদ উদ্ভ্রান্ত হয়ে যায়।ও বেশ হন্তদন্ত হয়ে নিজের ঘরে চলে যায়। আমজাদ শালুক এর দিকে তাকাল। শালুক মীর কে নিজের গর্ভের সন্তান এর মতই ভালোবাসে।শালুক চায় মীর এখানেই থেকে যাক, কিন্তু থমাসের অধিকার বেশি নিজের সন্তানের প্রতি।
আমজাদ শালুক কে শান্তনা দেয়ার জন্য বলল “আহ, তুমি মন খারাপ কেন করছো’ মীর কি এখনই চলে যাচ্ছে,আরো কিছুদিন পর যাবে।”
বেলা বাড়ছে। মায়া সকাল থেকে ঘরের মধ্যে বসে আছে।সে ইতিমধ্যে খবর পেয়েছে, আমজাদ বাড়ি ফিরেছে।হয়ত জয়ন্তন গতকাল রাতের ঘটনা বলেও দিয়েছে আমজাদ কে। আমজাদ হয়ত ওত পেতে আছে তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য। শা’স্তি দেয়ার জন্য। তাঁকে শা’স্তি দিবে তাঁতে তাঁর আক্ষেপ নেই, কিন্তু তার জন্য মীর শা’স্তি পাবে।এটি মায়া যেন মানতে পারছে না। তখনই মায়ায় ঘরে শেফালী উপস্থিত হয়। “একি মেম সাহেব, আপনে ঘাপটি মাইরা বইসা আছেন যে” মায়া তখন কিছুটা রেগে বলল “তোকে না বলছি,আমায় মেম সাহেব ডাকবি না। শুধু আপা ডাক নয়ত,মায়া।”
“সে যা ডাকমু। আপনি যা কইবেন। কিন্তু ওদিকে মীর বাবু বোধদয় বিদেশ চইলা যাইবো।সেই কথাবার্তা চলতেছে।” কথাটি শোনামাত্রই মায়া উঠে দাঁড়ালো। তাঁর হৃদয়ে কিছুটা ধকধক শব্দ করল। এরপর বিছানা থেকে ওড়না টা নিয়ে এলোমেলো চুলেই বৈঠকখানায় চলে যায়। সেখানে উপস্থিত রাফিদ, মীর, জয়ন্তন। আমজাদ এবং থমাস। রাফিদ মীর কে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে এসেছে তখন। এতক্ষণ বেশ আড্ডা জমিয়েছিল তাঁরা।
মায়াকে দেখে আমজাদ কাছে ডেকে নেয়।মায়ার ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করে আমজাদ।মায়া কিছু না বলে আমজাদ এর কাদে মাথা রাখে। তখন জয়ন্তন আমজাদ কে লক্ষ্য করে নির্বিকার কন্ঠে বলল “আমি বলি কি বাপ,মায়া অহন বড় হইছে।বিয়ার উপযুক্ত হইছে।ওরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে দেওনের ব্যবস্থা কর।” তখন থমাস জয়ন্তন এর রেশ টেনে বলল “তা হলে আরো ভালো হবে।আমরা মায়ার বিয়েটা দেখেই যেতে পারব।কি বলিস মীর!”
মীর বেশ উৎফুল্ল হয়ে বলল “এটা দারুন সংবাদ।আমিও এটাই চাই। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেলেই ঝামেলা মুক্ত।”
আমজাদ কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে বলল “আমাকে ভাবতে হবে। বিয়ের ব্যাপার-স্যাপার তো।”
“এত ভাবন লাগবো না।যা করবি তাড়াতাড়ি।” বলে জয়ন্তন পান মুখে দিল।
মায়া কোন জবাব দিল না।সে বিয়ের জন্য অপ্রস্তুত। কিন্তু জয়ন্তন গতকাল রাতের ঘটনা কাউকে বলেনি,এটাও মায়ার কাছে অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। সে-ই ঘটনা ঘিরেই জয়ন্তন বিয়ের কথা বলেছে সে নিশ্চিত। কিন্তু গতকাল এর ঘটনা জেনে সকলের চুপ থাকার কথা নয়।
তাঁদের আলাপ আলোচনার মাঝেই তিনজন অনুচারী উপস্থিত হয়।এসে আমজাদ চৌধুরী কে লক্ষ্য করে বলল “সরদার’ দু’জন লোক আসছে। আপনার খোঁজ করছে।’
“কারা?’
“শহর থেকে আসছে।কারা জানি না।”
এরপর আমজাদ সহ বাকিরা ঘরের বাইরে বের হয়। রান্নাঘর থেকে শালুক এবং শাহানারা সহ সবাই ঘরের বাইরে উপস্থিত হয়।
তাঁদের সামনে একটি মার্সিডিজ গাড়ি থেকে দু’জন লোক নেমে আসে। একজন এর বয়স ত্রিশ থেকে তেত্রিশ বছর এর মধ্যে। লম্বাটে দেহবিন্যাস, মাঝারি কায়দা, সুশৃঙ্খল শরীর, অদ্ভুত আকর্ষণীয় ভঙ্গি।উজ্জ্বল ত্বক, তীক্ষ্ণ চোখ,যা মুহূর্তেই মানুষকে পর্যবেক্ষণ করতে পারে।সরু ও ধারালো নাক, হালকা দাড়ি যা তাকে বেশি গম্ভীর ও অভিজাত দেখায়।মাথায় একটি ফেডোরা পড়া।চোখের রঙ বাদামী।ফিটিং হালকা ধূসর সাদা শার্টের ওপর কালো গাঢ় নেকটাই দিয়ে। তাঁর উপর হালকা চারকোল গ্রে ব্লেজার।সাথে ফিটেড ট্রাউজার, সাধারণত ডার্ক কালার।পায়ে কালো চামড়ার ক্লাসিক লো-হিল বুট।
তাঁর সাথের জন ওনার সহকারী।দেখে বোঝা যাচ্ছে।
The Silent Manor part 3
আমজাদ সহ সবাই তাঁর দিকে এগিয়ে গেল। আমজাদ আগ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করল “আপনি কে?’
যুবকটি আমজাদ এর দিকে হাত বাড়িয়ে দিল। “আমি ডিটেকটিভ আহির মির্জা।গত চারদিন আগে পশ্চিম পাড়ায় একজন লোক কে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে মেরে ফেলেছে একদল লোক।আমি সে-ই খু’নের তদন্ত করতে এসেছি।”
