vilen part 34

vilen part 34
আনু

সকালে রোজির ঘুম ভাঙলে সে দেখে নিলয় তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে এটা দেখে রাগে শরীর তার ঘিন ঘিন করে ওঠে তাই সে নিলয়কে এক ধাক্কা দিয়ে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দেয় নিলয় ঘুমে থাকায় সে কিছুটা দূরে চলে যায় আর সাথে সাথে নিলয়ের তীক্ষ্ণ মস্তিষ্ক জাগ্রত হয়। চোখ খুলে রোজির কর্মকান্ড বুঝতে পেরে রাগে নিলয় রোজিকে বিছানায় চেপে ধরে,

নিলয় : এই কী সমস্যা তোর হ্যা?
রোজি রাগে রি রি করতে করতে বল্লো,
রোজি : সমস্যা আপনি নিজেই।
নিলয় : এই চুপ স্বামী হই তোর সাবধানে কথা বলবি!
রোজি : স্বামীর মতো কাজ করেছেন আদৌও?
নিলয় : রোজ ঝামেলা করো নাহ।
রোজি : কেনো চুপ করবো আমি কেনো শরীর ছাড়া কিছু বুঝেন আপনি?
নিলয় রাগে রোজির দুগাল চেপে ধরে বললো,
নিলয় : যখন তুই আমায় নিজের রুপ দেখিয়ে সিডিউস করে দেশে এনেছিলি সেটা মনে আছে?
রোজি আর সহ্য করতে না পেরে নিলয়কে থাপ্পর দিয়ে বসে তবে থাপ্পর খেয়ে নিলয়ের কিছুই হলো না কিন্তু রাগে ফেটে পরছে নিলয়। রোজি নিজের বুঝতে পারে নি সে এমনটা করবে। নিলয় রোজির গলা চেপে ধরে,
নিলয় : এই এই শালী যা বলছি তাই কর রোজ..

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

বলতে বলতে রোজির চোখে তাকাতে দেখলো পানি পরছে আবার নিলয় রোজির গলা ছেড়ে দিয়ে রোজির গলায় চুমু দিয়ে বলতে লাগলো,
নিলয় : সস সরি র রোজ আম সরি ভ ভুল হয়ে গেছে…..
বলতে বলতে রোজিকে ছেড়ে নিজের মাথার চুল চেপে ধরে। রোজি ভয় পাচ্ছে নিলয় কী পাগল হয়ে গেলো নাকি এমন করছে কেনো? রোজি আস্তে আস্তে জিজ্ঞেস করলো,
রোজি : আপনি ঠিক আছেন?
নিলয় কেমন করে যেন বললো,
নিলয় : না রোজ না আমি ঠিক নেই আমাকে মাফ করে দেও প্লিজ আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছি নাহ!!!
কিন্তু রোজির মন গল্লো নাহ সে চলে গেলো বাহিরে কাল রাত নিলয়কে রোজিকে আনতে দেখে রোহিদ ও রেদোয়ান ও নিজেদের বউকে নিয়ে এসেছে রোজি মূলত আসা এবং শিউলির কাছে যাচ্ছে। নিলয় পাথরের মতো তাকিয়ে থাকলো কিছু বললো নাহ আর।

এভাবেই কেটেগেলো ৩ মাস নিলয় এবং রোজির মাঝে কিছুই ঠিক হয় নি। নিলয় এবং রোজি এখন আলাদা থাকে রোজি এক রুমে এবং নিলয় আরেক রুমে। নিলয় এখন রোজি আশে পাশে আসে নাহ প্রেগনেন্সির ৯ মাস চলছে রোজির। হাঁটা-চলা করতে অসুবিধে হয় অনেক টাই তাই শিউলি রোজির সাথে ঘুমোয়।
—নিচে বসে শিউলি রোজির জন্য আপেল কাটছে আশা টিভি দেখছে। নিলয় অনেকটাই পাল্টে গেছে সকলের সাথে কথা বললেও রাগ দেখায় ছোটো ছোটো কারনে। অফিসে সকলে এখন ভয়ে টটস্ত থাকে কখন নিলয় এসে ঝেড়ে দেয় সেই ভয়ে থাকে। রোজির সাথে তো নিলয়ের কথা হয় ই না সামনাসমনি ও হয় নাহ। বেশিরভাগ বাহিরে থাকে এখন নিলয়।

হঠাৎ বেল বেজে ওঠে শিউলি দ্রুত দরজা খুলে দেয় তবে সামনের দৃশ্য দেখে অবাক রোজি চাকাতেই মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে। কেননা নিলয় একটি মেয়েকে কোমড় জরীয়ে আছে। কোনো বাঙালি মেয়ে এর পক্ষে এটা দেখা সম্ভব নয় রোজি আস্তে করে দাড়ালো আস্তে আস্তে পেটে হাত দিয়ে আর এক হাত কোমড়ে দিয়ে নিলয়ের কিছুটা নিকটে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
রোজি : ইনি কে?
নিলয় কোন প্রতি উত্তর করল না। তাই রোজি আবার জিজ্ঞেস করলো,
রোজি : ইনি কে বলুন?
নিলয় : আমাকে জিজ্ঞেস করেছ? কৈফিয়ত চাইছো আমার কাছে?
রোজি : অন্য মেয়েকে এভাবে ধরে রেখে আমাকে বলছেন এটা আপনি?
নিলয় : সরো সামনে থেকে। চলো সুইটি বেইবি!
বলেই রোজিকে এরিয়ে নিজের রুমে হাটা ধরলো। এটা দেখে রোজি তাড়াতাড়ি নিলয়ের সামনে গিয়ে বললো,
রোজি : রুমে যাচ্ছেন কেনো?
নিলয় : কাজ আছে।
রোজি : এখানেই করুন রুমে এই অচেনা মেয়ের সাথে কেনো?
নিলয় বিরক্ত হয়ে বললো,

নিলয় : উই নিড প্রাইভেসি সব কাজ সকলের সামনে করা যায় নাহ কিছু কাজ দুজনের মধ্যেই থাকে।
বলেই গট গট করে মেয়েটিকে নিয়ে উপরে যেতে লাগে। নিলয়ের কথা শুনে রোজির চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পরছে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে সে যা বুঝার বুঝে গেছে। তাই দ্রুত সে ও তাদের পিছু পিছু যেতে লাগলো কিন্তু তাদের সাথে পেরে উঠছে নাহ হেটে তাই গলা উচিয়ে ডাকলো,
রোজি : শুনুন একটু একটু শুনুন নিলয়।
নিলয় কোনো উওর দিল নাহ এগিয়ে যেতে লাগলো এটা দেখে রোজি কান্না মিশিত গলায় ডেকে চল্লো,
রোজি : নিলয় নিলয় শুনুন একটু আপনি এটা করতে পারেন নাহ আমি থাকতে অন্য মেয়ে?
বলতেই নিলয় পিছন ঘুরে বললো,
নিলয় : তুমি আছ মানে?

রোজি : আমি আপনার ওয়াইফ আমি থাকতে কেনো অন্য মেয়ে?(অঝরে কাদতে কাদতে)
নিলয় ঠাট্টা মিশিত গলায় বললো,
নিলয় : আমার ওয়াইফ দাবি করছো এখন, যখন আমি এমন গিরগির করেছিলাম শুনেছিলে?
রোজি কাদতেই থাকলো রোজিকে আর কিছু বলতে নাহ দেখে নিলয় মেয়েটিকে নিয়ে নিজের রুমে ডুকে দরজা লাগিয়ে দিল। দরজা আটকানের শব্দে রোজি চিৎকার করে ওঠে সে তাড়াতাড়ি নিলয়ের ঘরে যায় দরজায় করাঘাত করতে থাকে কিন্তু নিলয় সারা দেয় না।
এদিকে, নিলয় মেয়েটিকে রুমে নিয়ে ছেড়ে দেয়। তাড়পড় বলে,

নিলয় : কিছু শব্দ করো যেন মনে হয় তুমি আমি ইন্টি’মেট হচ্ছি আর টাকা পেয়ে যাবে বের হওয়ার সময়।
মেয়েটিও নিলয়ের কথা মতো শব্দ করতে লাগলো এই শব্দ শুনে রোজি,
রোজি : নাহহ নাহহহ আআ আপনি এটা করতে পারেন নাহ নিলয় প্লিজ।
হঠাৎ রোজি কিছু আওয়াজ শুনতে পায় যা শুনে রোজির মাথা ঘুরে ওঠে তার শরীর আর পারছে না সইতে না পেরে সে নিচে বসে দরজায় ঠেস দিয়ে বসে চোখ দিয়ে নোনাজল গড়িয়ে পরছে থামার নাম নেই কোনো। পেটে ব্যথা করছে তবে রোজি পাত্তা দিল নাহ। রোজি ভিতরের কথোপকথন আরও শুনতে পেলো যা শুনে রোজি জোরে জোরে কাদতে লাগলো,

রোজি : ন নিলয় প্লিজ বের হন পায়ে পরি আপনার এতো বড় শাস্তি আমায় দিয়েন নাহ আমি সইতে পারবো নাহ।
রোজি আরও বললো,
রোজি : ননিলয় আপনি এটা করতে পারেন নাহ আমাদের বাচ্চা আহহহহ আল্লাহ!!!!
~হঠাৎ রোজির পেটের ব্যথা এতোটাই বেড়ে যায় রোজির গলা দিয়ো শব্দ বের হয় নাহ কাওকে যে ডাকবে তার উপায় নেই শরীর নীল হয়ে আসে রোজির হাত পা শক্ত হয়ে আসে। পায়ের মাঝে ভেজা ভেজা অনুভব হয়। ব্যথা সহ্য করতে না পেরে কথার মাঝে চেচিয়ে ওঠে রোজি। রোজির চিৎকার শুনে শিউলি দূর থেকে দৌড়ে আসে। এসে রোজির মাথা নিজের কোলে তুলে,
শিউলি : রোজ এই এই কী হইছে লেভার পেইন শুরু হইছে?
শিউলি তাড়াতাড়ি রোজির তলপেটের একটু নিচে হাত দিয়ে দেখলো ভেজা তারমানে রোজির লেভার পেইন শুরি হয়েছে,

শিউলি : এই কই তোমরা রোজির লেভার পেইন শুরু হয়েছে তাড়াতাড়ি প্লিজ ও সহ্য করতে পারছে নাহ!!!!
সকলে ছুটে এলো তবে নিলয় শুনতে পেল নাহ কেমনে শুনবে সে তো মেয়েটাকে কাজ বুঝিয়ে বারান্দায় চলে গেছে। রোজির অভিমান তীব্র থেকে আরও তীব্র হলো। সকলে ছুটে এলো। রোহিদ নিলয়ের ঘরের দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বললো,
রোহিদ : ভাই এই ভাই দরজা খুলো ভাই!!!!
মেয়েটি এতো চিৎকার শুনে তাড়াতাড়ি নিলয়কে ডাকলো। নিলয় বিরক্ত হয়ে দরজা খুলে বললো,
নিলয় : কী হইছে এই মোমেন্টে ডাকিস কেনো?
বলতে বলতে রোহিদ চেচিয়ে বললো,
রোহিদ : ভাই চুপপপ তুমি এতো নিরদয়? মেয়ে মানুষ একটু অভিমান করবেই তাই বলে তুমি মুখ ফিরিয়ে নিবে? দেখ ভাবির লেভার পেইন শুরু কয়েছে।
নিলয় : কীীী!!!!

নিলয় তাড়াতাড়ি রোজির রুমে গেলো দেখলো রোজি চিৎকার করছে হাত পা কচলাচ্ছে নাক মুখ চোখ লাল হয়ে আছে গলা কাটা মুরগির মতো ছটফট করছে। নিলয় তাড়াতাড়ি এগিয়ে গেলো রোজিকে নিজের কাছে নিয়ে নিল। কিন্তু রোজি ব্যথার মাঝেও নিজেকে সরিয়ে নিতে চাইলো,
রোজি কাদতে কাদতে বললো,
রোজি : ছাড়ুন আমায় আহহহ আমার ব্যথা করছে।
নিলয় : রোজ সরি আমায় মাফ করে দেও তুমি চলো এখুনি হসপিটাল।
রোজি : আমি আপনার সাথে যাব নাহ আহহহ!!!

নিলয় রোজিকে কোলে তুলে নিলো রোজি ব্যথায় নিলয়ের ঘারে হাতে খামচি দিচ্ছে নিলয় সব সয়ে নিলো টু শব্দ ও করলো নাহ। নিলয় নিজের সবচেয়ে কম্ফোরটেবল গাড়িতে রোজিকে শুয়িয়ে রোজিকে নিজের কোলে অধশোয়া করলো। রোজির কিছুটা স্বস্তি লাগলো। রোজির মাথা নিজের বুকে রাখলো। নিলয়ের শরীরের সামনে রোজি বাচ্চা টাইপ নিলয়ের কোলে রোজিকে দেখাই যাবে নাহ। রোজিকে নিজের কোলে আধশেয়া করায় রোজির মাতৃ তরল অনেকটাই নিলয়ের শরীরে লেগে যাচ্ছে তাতে নিলয়ের কোনো খেয়াল নেই সে তো রোজির কষ্ট কমাতে ব্যস্ত। রোজির হতে রোজির কপালে পেটে চুমু দিতে লাগলো আর বললো,
নিলয় : এইতো একটু আর একটু সোনা।

রোজি : আমায় ছাড়ুন নিলয় আমি মরে যাব অনেক ব্যথা করছে।
নিলয় : এগোলো বলো নাহ রোজ প্লিজ আমার কাছ থেকে যেও নাহ আমায় মাফ করে দেও।
বলতে বলতে নিলয়ের চোখ থেকে দুফোটা পানি পরলো তা দেখে রোজি বললো,
রোজি : আপনি কাঁদছেন আমার জন্য?
নিলয় অনেক শক্ত মনমস্তিস্কের মানুষ সে সহজে ভেঙে পরে নাহ তার চোখ দিয়ে মনে হয় এই ২৬ বছরে একবার পানি বের হলো তাও নিজের অর্ধাঙ্গিনী এর জন্য। নিলয় নিজেকে ধরে রাখতে পারছে নাহ কেনো যেন ভেঙে পরছে। রোজির পেট ব্যথা বেড়েই চলছে সে দাঁতে দাঁত পিসে রেখেছে চোখ দিয়ে গড়িয়ে পরছে অগনিত অশ্রু ধারা। রোজির চোখগুলো বুঁজে এসেছে তা দেখে নিলয়,

নিলয় : রোজ ডন্ট ক্লোজ ইয়োর আই প্লিজ।
কিন্তু রোজি পারছে নাহ চোখ খুলে রাখতে। চোখ খুলে রাখা তার জন্য দায় হয়ে পরেছে। নিলয় হালকা হাতে আস্তে আস্তে রোজির গালে চাপর দিয়ে রোজির হুস ফেরাতে লাগলো। রোজির হুস ফেরলেও আবার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে,
নিলয় : এই গাড়ির স্পিড বাড়া নাহলে এক একটাকে কুত্তা দিয়ে খাওয়াব!!!!
নিলয়ের হুমকি শুনে গাড়ির স্পিড আরও বাড়িয়ে দিল ড্রাইবার। পেছনে বাড়ীর বাকিরা আসছে। শিউলি রেদোয়ান এর বুকে কেঁদেই যাচ্ছে মেয়েটা কথা বলতে পারছে নাহ ভয়ে। আশা নিজেও রোহিদের এক হাত জরীয়ে কান্না করছে। রোজির বাবা-মা আসছেন অন্য গাড়িতে মেয়ের জন্য ভয় হচ্ছে তাদের রোজির মা কেঁদে-কেটে এক করছেন।
কিছুক্ষণের মধ্যে নিলয়রা হসপিটালের সামনে আসলো। নিলয় কোনোদিক পরোয়া না করে রোজিকে কোলে তুলে নিল যে এখন আধহুসে আছে অজ্ঞান হওয়ার উপক্রম প্রায়। নিলয় দ্রুত রোজিকে নিয়ে হসপিটালের ভেতরে গেল।
নিলয় : ডক্টর!!!! ডক্টর!!!!!!!

এতো উচ্চস্বরে হাঁক শুনে ডক্টর ভেবেছিলেন বের হয়ে কিছু বলবেন কিন্তু যেই বের হয়ে মুখ খুলে কিছু বলবেন তার আগেই নিজের হাত দিয়েই নিজের মুখ বন্ধ করে ফেললেন কেননা সামনে জমমম দাড়ানো এদিক সেদিক হলে গর্দান যাবে। ডক্টর কে আসতে দেখে নিলয় তাড়াতাড়ি রোজিকে কোলে নিয়েই তার সামনে গেল,
নিলয় : ডক্টর আমার ওয়াইফ প্রেগনেন্ট তার এখনো কিছু দিন বাকি তবে তার কেনো যেন আজ লেভার পেইন স্টার্ট হয়েছে। প্লিজ কেন ইউ চেক হার?
ডক্টর নিলয়কে আস্বস্ত করার জন্য বললো,

ডক্টর : মি.নিলয় প্লিজ কামডাউন প্লিজ আই উইল চেক হার।
নিলয় : নো নো হেয়ার ইজ ইউর ফিমেইল ডক্টর?
ডক্টর সব বুঝতে পেরে বললেন,
ডক্টর : ওকে ওকে কামডাউন ওনাকে ফিমেইল ডক্টর ই ট্রিট করবেন!
নিলয় : ওর যেন কিছু নাহ হয় আপনারা যা চান তাই দিব বাট ওর যেন কিছু নাহ হয়। ওর কিছু হলে আপনাদের কী করবো তা আমি নিজেও জানি নাহ বি কেয়ারফুল!!!

ডক্টর আর কথা বাড়ালেন নাহ নিজের উপর এর পদের ফিমেইল ডক্টরকে সকল কিছু বুঝিয়ে ওটিতে পাঠিয়ে দিলেন। নিলয় সিটে বসে পরলো মাথা নিচু করে চোখে মুখে কোনো ভঙ্গিমা নেই নোহাত একটা পাথর।
বাকিরা পৌছে গেছে ৩০ আধঘন্টা হতে চললো। রোজির মা নামাজ এ দাড়িয়েছেন। বাকিরা ব্যস্ত সময় পার করছে। নিলয় এক মনে ফ্লোর এ তাকিয়ে আছে। হঠাৎ ডক্টর বের হয়ে এলেন। ডক্টরকে বের হতে দেখে সকলে অবাক হলো কেননা বেশি সময় হয় নি তাহলে তিনি এতটা দ্রুত কেন বের হলেন? সকলে ভয়ে ঢোক গিলল। নিলয় দ্রুত বসা থেকে উঠে ডক্টর এর কাছে গেল কিন্ত কিছু প্রকাশ করলো নাহ মুখে। চোখ মুখ শক্ত করে শক্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
নিলয় : কী হয়েছে সময়ের আগে কী বলতে এসেছেন?
ডক্টর : উনি কোনো কারন বশত মানসিক চাপে ছিলেন?

নিলয় : জি!
ডক্টর : উনাকে আনার আগে উনি বেশি চাপ নিয়ে ছিলেন?
নিলয় : জি!!
ডক্টর মুখে চিন্তার ছাপ এনে বলল,
ডক্টর : উনি বেবি প্রসব করছেন নাহ জটিলতা দেখা দিচ্ছে! তার পাশাপাশি মুখ দিয়ে কিছু বিরবির করছেন।
নিলয় কিছু একটা ভেবে গট গট করে ওটিতে ডুকে পরলো। পেছন থেকে ডক্টর ডেকে চললেন কিন্তু নিলয় কোনো বাঁধা মানলো নাহ তাই ডক্টর আর কীছু বললেন নাহ। নিলয় ভেতরে প্রবেশ করতেই ভেতরের সকলে বের হয়ে গেলো পুরো ওটি রুম ফাকা। সেখানে গিয়ে দেখলো রোজি সিটে শোয়া হাতে কেনেলার। নিলয় সামনে এগোলো গিয়ে দেখলো রোজি কী যেন বলছে সে আরও একটু কাছে একদম রোজির ঠোঁটের কাছে কান নিল। নিয়ে মৃদু স্বরে শুনতে পেল,

রোজি : ন নি…লয় আ..পনি এটা করতে প…রেন নাহ।
নিলয় যা বুঝার বুঝে গেছে সে আস্তে করে রোজির কানে কানে বললো,
নিলয় : জান ওটা একটা নাটক ছিল তুমি চাইলে আমি তোমায় সিসিটিভি দেখাব এই নিলয় চৌধুরী আজ পর্যন্ত তুমি ব্যতীত অন্য কোন নারীর দিকে তাকিয়েও দেখেনি ছুবে তো দূরের কথা!
বলে রোজির কপালে একটা চুমু খেল। তারপর আস্তে আস্তে ওটি থেকে বের হয়ে গেলো। নিলয় কে বের হতে দেখে সকলে ভেতরে চলে গেলেন তারপর যাথারীতি নিজেদের কাজে ব্যস্ত হয়ে পরলেন। নিলয় নিজের জায়গায় গিয়ে বসে পরলো।
এদিকে,

শিউলি কাদতে কাদতে অজ্ঞান হয়ে গেছে রেদোয়ান টেনশনে মরে যাচ্ছে সাথে রোহিদ নিজেও রোজিকে তারা নিজের ছোটো বোনের মতো দেখে। এর মধ্য এটা হওয়ায় রেদোয়ান প্রায় পাগল হয়ে যাচ্ছে। সে তারাতাড়ি ডক্টর এর কাছে নিয়ে গেলো কেননা শিউলি কিছুদিন ধরে কিছু খেতে পারে না বমি করে বমি বমি ভাব লাগে মাথা ঘুরায়। ডক্টর কে সকল কিছু বুঝিয়ে বলতেই সে চেকআপ শুরু করলেন। কিছু একটা বুঝতে পেরে সে হেসে জিজ্ঞেস করলেন,

ডক্টর : ওনার পিরিওড মিস হয় কয় মাস?
রেদোয়ান যেন এই প্রশ্নটার জন্য প্রস্তুত ছিল না। সে কিছুটা হকচকিয়ে আশেপাশে অগোছালো দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কিছুক্ষণ সময় নিয়ে বলল,
রেদোয়ান : আমি যানি নাহ মনে হয় ২ মাস ও বলতে পারে।
ডক্টর হেসে বললেন,
ডক্টর : গুড নিউস আপনি বাবা হতে চলেছেন!
রেদোয়ান এই কথা শুনে ভেবে ছ্যাকা খেয়ে গেল এ মুহূর্তে তার কেমন রিঅ্যাকশন দেওয়া উচিত সে বুঝতে পারছে না। তবে মনে মনে সে খুব খুশি। শিউলিকে সেখানে বিশ্রাম নিতে রেখে চলে গেলো রেদোয়ান। বাহিরে গিয়ে দেখল নিলয় ওটির সামনে দাড়ানো তারমানে সময় চলে এসেছে।
নিয়ল ওটির সামনে দাড়িয়ে আছে কিছুক্ষণ আগে নার্স বলে গেসেন সব কিছু নরমাল তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রায় ১ ঘন্টা পর ভেতর থেকে বের হলেন এক নার্স হাতে সাদা মখমলে কাপড়ে মোড়ানো এক নবজাতক। নিলয় তাকিয়ে থাকলো একধ্যনে। তবে বাচ্চা নেওয়ার আগে জিজ্ঞেস করলো,

নিলয় : আমার ওয়াইফ?
নার্স : তিনি একদম ঠিক আছেন তাকে কিছুখন পর বেডে দেওয়া হবে।
সকলে অবাক নিলয় এতোটা রোজকে ভালোবাসে সকলে মুগ্ধ নয়নে নিলয়ের দিক তাকিয়ে আছে। রোজির মায়ের চোখে পানি চলে এসেছে সে আজ সার্থক। নার্সটি বাচ্চাটিকে এগিয়ে দিলেন। ঠিক সেই সময় আরও একটি নার্স আরও একটি বাচ্চা নিয়ে এলেন তা দেখে সকলে অবাক। সকলকে অবাক হতে দেখে নিলয় বলল,
নিলয় : আমাদের দুইটা বেবি হবে তা আমি আগেই জানতাম পেনিক হবেন নাহ!
নার্সটি নিলয়ের হাতে বাচ্চাটি এগিয়ে দিল। নিলয় বাচ্চাটি কীভাবে হাতে নিবে বুঝতে নাহ পেরে রেদোয়ানকে জিজ্ঞেস করলো,
নিলয় : এই রেদু কীভাবে নিব ওকে আমি? ওতো অনেক ছেটো আমার শক্ত হাত দিয়ে ধরলে ব্যথা পাবে মনে হচ্ছে?
রেদোয়ান মুচকি হেসে বলল,
রেদোয়ান : আরে ভাই নেও ব্যথা পাবে নাহ আস্তে ধরবে।

নিলয় রেদোয়ানের কথা শুনে আস্তে আস্তে নবজাতকটি কি খুলে তুলল তুলে সাথে সাথে কপালে একটি চুমু খেলো। হুজুর নিয়ে এসেছে বাচ্চাটির কানে আযান দাওয়ালো। তরপর অপর বাচ্চাটি নিল নিলয় তাকেও চুমু ও আযান দিল কানে। নিলয় নার্স দুটোকে কয়েক হাজার টাকা দিল বকশিস হিসেবে।
রোজি ও নিলয়ের ২ টা বেবি হয়েছে একটা ছেলে একটা মেয়ে। দুই বাচ্চাকে আদর দিয়ে নিলয় সকলকে সুজক করে দিল দেখার সকলে দেখে অবাক মেয়েটা একদম নিলয়ের মতো আর ছেলেটা রোজির মতো দেখতে দুজনের কী মিল। যে কেও দেখেই বলবে ওরা এদের সন্তান। গায়ের রং পেয়েছে একদম রোজি মতো। চোখগুলো নিলয়ের মতো। মেয়েটার চুলগুলো রোজির চুলের মতো সোজা সিল্কি। ছেলেটার চুলগুলো জাকালো নিলয়ের মতো সিল্কি।
কিছুখন পর রোজিকে বেডে দেওয়া হলো। রোজি ঘুমে নিলয় রোজির কাছে গিয়ে ওর কপালে শব্দকরে সকলের সামনে চুমু খেল আর কানে কানে বলল,

নিলয় : রোজ-জান আজ আমি পরিপূর্ণ !!!!!
বলে রোহিদকে বললো,
নিলয় : হসপিটাল থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় রাস্তায় যতগুলো লোক থাকবে সবগুলোকে মিষ্টি খাওয়াবি। হসপিটালে মিষ্টির বন্যা বইয়ে দিবি। কেউ খেতে না চাইলে জোর করে খাওয়াবি। আমার সকল ক্লায়েন্ট এবং আমার সাথে যারা কাজ করেছে তাদের সকলের বাড়ি মিষ্টি পাঠিয়ে দিবি!
রোহিত নিলয়ের কথা মত নিজের কাজে এগিয়ে গেল।
নিলয় রোজির পাশে বসল। রোজির অপর পাশে তার দুই সন্তান ঘুমে। কিছুক্ষণ পর রোজির ঘুম ভাঙলো দেখলো নিলয় পাশে বসা ওর একহাত ধরে বসে আছে। রোজির হুস ফিরতে দেখে নিলয় রোজির হাতে চুমু খেয়ে বললো,
নিলয় : কোথাও কষ্ট হচ্ছে বলো আমায়?
রোজি আস্তে আস্তে বললো,
রোজি : নাহ আগে বলুন ও কোথায়?
নিলয় ওইপাশে ইশারা করলো রোজি তাকাল সেদিক দেখলো দুইটি বাচ্চা শুয়ে আছে এটা দেখে রোজি ভ্রু কুচকালো,

রোজি : নিলয় দুইটা বেইবি কেন?
নিলয় : কারন ওরা টুইন!
রোজি অবাক হয়ে তাকালো আর বললো,
রোজি : আপনি জানতেন তাই নাহ?
নিলয় : জি মেম!
রোজি : আমাকে বলেন নি কেন????
নিলয় : এমনি টেনশন করবে তাই বলি নি বলে এখন একটা সারপ্রাইজ পেলে নাহ?
রোজি : চুপপপ!! তাইতো শুধু শুধু পেট বেশি বড় বড় লাগতো।
নিলয় শব্দকরে হেসে ফেললো। নিলয় রোজির কোলে দুটো বাচ্চা কে রাখলো। রোজি দুটোকে চুমু দিতে লাগলো। কিছুখন পর পর চুমু দিতে লাগলো। নিলয় এক ধ্যনে তাকিয়ে থাকলো আজ সে পরিপূর্ণ!
রোজি : শুনুন?

vilen part 33

নিলয় : বলো।
রোজি : আমাদের মেয়ের নাম রোদুসি ও ছেলের নাম রোদ্র!
নিলয় এর চোখ চক চক করে উঠলো তার মানে রোজির এই কথা মনে আছে তারা যখন জেনেছে রোজি প্রেগনেন্ট আগেই ভেবে রেখেছিলো ওদের কী নাম রাখবে ছেলে হলে রোদ্র ও মেয়ে হলে রোদুসি। নিলয় উপর নিচ মাথা নাড়ালো মানে তার উওর হ্যা!

vilen last part 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here