Violent love part 12
Mariam akter juthi
“আরিশ আস্তে করে জুথিকে ওর বুকের কাছ থেকে সরিয়ে, বিছানায় শুয়িয়ে দেয়। অতঃপর চাদরটা টেনে ওর কোমর পর্যন্ত দিয়ে দেয়। ওকে সোয়ানো হয়ে গেলে যখন আরিশ ওর পাশে শুবে তখন ওর ফোনটা বেজে ওঠে। অসময়ে ফোন বেজে উঠতে আরিশের মেজাজটা আবারো গরম হয়। অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে আয়ান ফোন করেছে। এই টাইমে আয়ান কে ফোন করতে দেখে আরিশ কিছুটা কপাল কুঁচকিয়ে ফোনটা রিসিভ করে হুম বলার সাথে সাথে আয়ান অস্থির কন্ঠে বললো,
‘ঝামেলা হয়েছে ভাই,তুমি একটু লেকে তাড়াতাড়ি আসো।
আরিশ ততটুকু কথা শুনেই ফোনটা কেটে দেয়, অতঃপর তার ঘুমন্ত বউয়ের দিকে একবার তাকিয়ে ব্যস্ত পায়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। আরিশ কে বাহিরের দিক বের হতে দেখে সাফওয়ান খান বললেন,
‘এত রাত্রিবেলা তুমি কোথায় যাচ্ছ?
সাফওয়ান খান ও কিছুক্ষণ হয় বাড়ি ফিরেছেন। বাড়ি ফিরে উনাদের বাহিরের ব্যবসা নিয়ে মাহমুদ খান ও উনি দুই ভাই মিলে আলোচনা করছিলেন। ওনাদের আলোচনার মূল বিষয়, সাইফুল খান এ সপ্তাহের বাহিরে গেছেন, ওখানের কোম্পানির কতটা লাভ ক্ষতি সেটা নিয়ে ওনাদের আলোচনা। ওনাদের কথা বলার এক পর্যায়ে আরিশ কে তাড়াহুড়া করে বের হতে দেখে উনি উক্ত কথাটা বলেন। তবে ওনার কথায় উত্তর করল না আরিশ।
ব্যস্ত পায় হেঁটে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল। আরিশ কে কোন উত্তর করতে না দেখে সাফওয়ান খান মনে মনে কিছুটা অসন্তুষ্ট হন। সানজিদা খান স্বামীর মুখে ছেলে বাহিরে যাওয়ার কথা শুনে খাবার সার্ভ করা রেখে আরিশ কে কিছু বলবেন বলে এখানে এসে দেখে উনি আসার আগেই আরিশ চলে গেছে। উনি এসে আরিশ কে না পেয়ে নিঃশ্বাস ফেলে খাবার সার্ভ করতে চলে যায়।
আরিশ আয়ানের দেওয়া লোকেশন অনুযায়ী বাইক নিয়ে পৌঁছে যায়, আরিশ কে আসতে দেখে আয়ান এগিয়ে গিয়ে বললো,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
‘ভাই তুমি সেই আগের মত খুন করা শুরু করেছো?
আরিশের উপস্থিতিতে ওখানে থাকা তিনজন পুলিশ ওর দিকে এগিয়ে এসে বললেন,
‘আরিশ খান খুন করা চারজন ছেলের মধ্যে একজন সানভি মিজান খানের ছেলে। আর মিজান খান তো আপনার লোক তাহলে উনার ছেলেকে মারতে গেলেন কেন?
আরিশ পুলিশের কথায় বাঁকা চোখে ওনার দিক তাকিয়ে তেরা কন্ঠে বললো,
‘আমার বলতে আমি আমার বউ কে বুঝি। আর সবচেয়ে বড় কথা এই বউ জিনিসটা কে আমি সবকিছুর ঊর্ধ্বে ভালোবাসি। এক কথায় তার জন্য পুরো পৃথিবীর বিরুদ্ধে যেতে পারি। আর যেখানে আমার কলিজা’র হাত ছেলেগুলো ধরার সাহস করেছে ,সেখানে ছেলেগুলো পৃথিবীতে বাঁচার ওয়ে রাখে না।
আরিশের কথা শুনে পুলিশ তিনজনার ভিতর একজন বেসম খেয়ে মিনমিন কণ্ঠে বললেন,
‘সামান্য হাত ধরায় আপনি খুন করবেন? আ,,—ওনার বাকি কথা আরিশ শেষ করতে না দিয়ে আগুন চোখে তেরা কন্ঠে বললো,
‘আমি কারো কাছে কৈফত দিতে পছন্দ করি না। আপনার আজ প্রথম তাই ক্ষমা করে দিলাম। নেক্সট টাইম আর করবো না, কারণ ক্ষমা আমি বারবার আমার বউকেই করি অন্য কাউকে না। গট ইট?
আরিশের তেরা কন্ঠ শুনে পুলিশ লোকটা বেকুব বনে যায়। মনে মনে ভাবে কথার কি ড্যাস, রে বাবা। এমন ছেলেদের এক কথায় বউ খোর বলে। মনে মনে এসব ভেবে বললেন,
‘আসলে খুন,,
‘খুন করেছি আমি, এখন প্রমাণ মুছে ফেলা দায়িত্ব আপনাদের। বলে ওনাদের উত্তর না শুনেই আয়ান কে আসতে বলে ও চলে আসে।
আরিশ কে চলে যেতে দেখে, পুলিশগুলো ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে তামিম নামের একজন পুলিশ বললেন,
‘খুন করেছে আরিশ খান, প্রমাণ লুপাট করতে হবে আমাদের।
উনার কথা শুনে বিরক্ত চোখে তাকিয়ে অন্য একজন বললেন,
‘কথাটা আরিশ খানের সামনে বলতে পারবেন?
‘কেন আমার কি মরার পাখনা গজিয়েছে? যে তার সামনে এসব কথা বলতে যাব।
‘তাহলে চলেন যে কাজ দেওয়া হয়েছে সেটা করে ফেলি।
রুমে ফুল পাওয়ারে এসি ছাড়া থাকায়, প্রায় জুথির শরীরটা ঠান্ডা হয়ে গেছে। ঠান্ডাটা বেশি মনে হতে, ঘুম ঘুম চোখে উঠে বিছানায় বসলো ও। আশপাশটা তাকিয়ে মাথা চুলকে কখন ঘুমালো সেটা মনে করার চেষ্টা করল। দু এক মিনিট যেতে ওর সবটা মনে পড়তে লাফিয়ে বিছানা থেকে উঠে রুমের আশপাশটা ভালো করে তাকায়। না আরিশ ভাইয়া রুমে নেই। এটাই সুযোগ এখনই এখান থেকে কেটে পড়ার। জুথিও তাই করল। দরজা খোলা পেয়ে ছুটে রুম থেকে বের হতে নিলে কারো সাথে ঠাস করে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়তে নিলে, ও অনুভব করে ও নিচে পড়ে যায়নি। এটা মনে হতে পিটপিট করে চোখ খুলে দেখে রাদিফ ওর ডান হাত ধরে রেখেছে। আর ও নিচের দিক চিৎ হয়ে ভাসমান আছে।
‘ধন্যবাদ তোমাকে, তুমি না ধরলে হয়তো নিচেই পড়ে যেতাম।
‘তার জন্যই তো ধরলাম, যাতে তুমি পরে ব্যথা না পাও। যাই হোক আরিশ কি তোমাকে আঘাত করেছে?
‘না,— বলে চলে যেতে নিলে রাদিফ জুথির হাতটা ধরে ওর কাছে এনে, জুথির মাথাটা ওর বুকের সাথে হালকা চেপে ধরে বললো,
‘ভয় পাওয়ার কারণ নেই, সব ঠিক হয়ে যাবে।
‘হুম।
বৈশাখী সকালের রোদের তাপে মানুষ প্রায় অতিষ্ঠ। বেলা প্রায় ৯.৭ ঘরের দিকে। তানিশা রিক্সায় বসে জ্যামের কারণে। উদ্দেশ্য খান বাড়িতে জুথির কাছে যাওয়া। আজ পরীক্ষা নেই সেই সুবাদে দুজন আজ এক জায়গায় থাকবে তাদের সিদ্ধান্ত। তাছাড়া ICT নোট ওর কাছে নেই। দুজনে এক জায়গায় বসে পড়বে তাই এত সকাল সকাল বের হওয়া। কিন্তু আজ মনে হয় সব জ্যাম ওর কারনেই হয়েছে। না হয় কখন বেরিয়েছে। যেখানে আসতে আধা ঘন্টা সময় লাগে না সেখানে প্রায় এক ঘণ্টার বেশি হয়ে গেছে, এখন পর্যন্ত জ্যাম শেষ হচ্ছে না। তাই তানিশা বিরক্ত বেশ। সব ঝামেলা পেরিয়ে মাত্র খান বাড়ির সামনে এসে থামলো রিক্সা। তানিশা ভাড়া মিটিয়ে খান বাড়িতে ঢুকলো।
তখন খান বাড়ির সকল মানুষের সকালের খাবার খাওয়া প্রায় শেষ। জুথিও সবার খাওয়ার শেষে খাবার খেয়ে মাত্র টেবিল থেকে উঠছিল। তখন তানিশাকে আসতে দেখে দৌড়ে ওর কাছে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে, মুচকি হেসে বললো,
‘আমার জান পাখিটা তো চলে আসছে, কিন্তু তোর এত লেট হল কেন?
‘আরে জানু বলিস না, মেজাজটা তো আরেকটু হলে গরমই হয়ে যেত। যদিও এখনো গরম।
‘আরে এত গরম গরম না করে দেরি হয়েছে কেন সেটা বল।
‘আরে আমি তো সকালেই বেরিয়েছিলাম, কিন্তু জ্যামের কারণে এত লেট। তার ওপর এত কড়া রোদ্রে তো পুরো অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছিলাম। এখন একটু পানি খাওয়া বোন।
‘হ্যাঁ নিয়ে আসছি। বলে রান্নাঘরে ফ্রিজ থেকে পানি আনতে চলে যায়।
জুথি যেতে আরিশ ও ফুল রেডি হয়ে নিচে নামছিল শার্টের হাতা বটতে বটতে। তখন টেবিলের কাছে পিছন ঘুরে তানিশাকে দাঁড়াতে দেখে আশপাশটা আর চোখে দেখে বাঁকা হেসে কাছে গিয়ে বললো,
‘তোকে পিছন থেকে দেখলেও ছুতে ইচ্ছা করে।
পুরুষোয়ালি কন্ঠ এমন কথা শুনে তানিশা পিছন ঘুরে তাকায় কে বলেছে দেখার জন্য। তানিশা তাকাতে আরিশ দুই তিন পা পিছিয়ে অন্য দিক তাকিয়ে বললো।
‘আস্তাগফিরুল্লাহ, আমার মৌয়ের মত দেখতে এ চাচি কে?
আরিশের মুখে চাচি শব্দটা শুনে তানিশা কপাল কুঁচকে আরিশের দিকে তাকায়। তখন আয়ান ও নিচে নামছিল। আয়নের সাথে তানিশার চোখাচোখি হতে তানিশা অন্য দিক ঘুরে দাঁড়ায়। আয়ান ওদের কাছে এসে তানিশার উদ্দেশ্যে বললো,
Violent love part 11
‘তুমি কখন এসেছ?
আয়ানের মুখে তুমি শুনে, আরিশ আয়ানের দিক তাকিয়ে বললো,
‘কে এই চাচী?
‘আরে ভাই ও তানিশা,তোমার চাচি না।
‘কি বলো ও তানিশা?
‘হুম। — এবার আরিশ তানিশার দিক তাকায়, তাকিয়ে দেখে তার মৌয়ের সাথে এই মেয়ের সম্পূর্ণ মিল। তানিশাকে দেখা হলে আয়নের দিক তাকিয়ে বললো,
‘তোর পছন্দ খারাপ না,,,,