Violent love part 29
Mariam akter juthi
‘যাকে ভালোবাসেন না, তাকে বুকে নিয়ে শান্তি কেন পান?
আরিশ জুথির কথা শুনে মুখ টিপে হেসে গুরুতর কন্ঠে বললো,
‘ও ভালবাসি না বলে এই দূরত্ব? তাহলে চল তোকে একটু ভালোবাসি।
জুথি আরিশের এমন কথা শুনে ওর বুক থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য ছটফট করে বললো,
‘অসভ্য পুরুষ লোক,ছাড়ুন আমাকে!
‘এই তো বললি? আমি তোকে ভালোবাসি না! তাইতো একটু আদর ভালোবাসা করতে চাইছি। — বলে জুথি কে টেনে ওর মুখের কাছে তুলতে, জুথি আরিশের পরপর এমন কথায় ও কাজে,ওকে ঠেলে সরাতে চেয়ে ভয়াত কন্ঠে বললো,
‘আপনাকে কেমন,কেমন যেন লাগছে? আমি বরং এখন এখান থেকে যাই,আ
‘হুসসসসস! শুধু এতোটুকু শব্দ শোনা গেল, পরমুহূর্তেই আরিশ ওর ঠোঁট দুটো ওর ঠোঁটের সাথে মিশিয়ে জুথির হাত দুটো বিছানার দুইপাশে চেপে ধরে, নিজের কাজে ব্যস্ত হলো। জুথি আরিশের কর্ম বুঝতে পেরে, ছাড়া পেতে ছোটাছুটি করতে আরিশ গুনা দু তিন মিনিট চুমু খেয়ে ওকে ছেড়ে বুকের সাথে চেপে ধরতে দুজনই ঘনঘনই শেষ নিতে লাগলো। জুথি স্বাভাবিক হতে লজ্জায় আরিশের বুকে মুখ লুকালো, ঠিক ততটা,যতটা ঘনিষ্ঠ হলে একজন মানুষ আর একজন মানুষের ভিতরে ঢুকে যেতে চায়। আরিশ জুথি কে ওর বুকের সাথে এতটা মিশে যেতে দেখে কানের কাছে মুখ নিয়ে নেশাক্ত কন্ঠে বললো,
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
‘তুই যেভাবে আমাকে চেপে রেখেছিস, এখন আমি কিনা কন্ট্রোল হারিয়ে বাসর করে ফেলি। – আরিশ কথাটা বলতে, জুথি ঘন নিশ্বাস ফেলে, পিছন থেকে আরিশের টি-শার্টটা খামচে ধরে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো,
‘চু,চুপ করুন আ,আপনি! আ,আমি আপনার এমন ক,কথা নিতে পারছি না।
আরিশ জুথির কথায় তেমন পাত্তা দিল না, বরঞ্চ নিজের কাজে ব্যস্ত হতে, জুথির ঘাড় থেকে শুরু করে, মুখমন্ডলীতে শব্দহীন চুমু দিতে শুরু করলো, আস্তে আস্তে আরিশ জুথির নরম পেটে জামাটা সরিয়ে হাত রাখতে,জুথি ভয়ে কেঁপে উঠে নাড়াচাড়া করলো তবে,আরিশ ওর কোন কথাই থামছে না দেখে, পাশাপাশি এতটা ঘনিষ্ঠ হতে দেখে, জুথি ভয়ে ফুপিয়ে কেঁদে উঠতে আরিশ ওর মনোযোগ হারায়, অতঃপর মাথাটা ঝাকা মেরে উঠে বসে, কন্ট্রোল হারানোর মতো মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে শ্বাস নিতে নিতে গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
‘আমার কষ্ট হচ্ছে মৌ, হয়তো আমার হ! নয়তো আমার সামনে থেকে এক্ষুনি যা। — বলে ঘনঘন শ্বাস নিতে লাগলো নিজেকে কন্ট্রোলে ফিরিয়ে আনতে।
জুথি আরিশ কে ওর থেকে সরতে দেখে, উঠে বসে একই রকম ফুপিয়ে কাঁদতে লাগলো। এমন অনেকক্ষণ যেতে, আরিশের কোন সারা শব্দ না পেয়ে জুথি বিছানা থেকে নেমে চলে যেতে নিলে, আরিশ ওর হাত ধরে ওর পিট, ওর বুকের সাথে মিশিয়ে কোলের মধ্যে আবদ্ধ করে ওর দু হাতে ওকে জড়িয়ে নিয়ে, ঘাড়ে মুখ ঠেকিয়ে, কণ্ঠ খাদে নামিয়ে বললো,
‘চলে যাচ্ছো?
‘,,,,,,,,,,,,,,,,,।
আরিশ জুথি কে চুপ থাকতে দেখে, আরেকটু শক্ত করে ওর সাথে চেপে ধরে অসহায় কন্ঠে বললো,
‘মৌ তোকে একটু আদর কিংবা, ছুঁয়ে দিলে তুই কি বেশি ব্যথা পাবি? আমার ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে মৌ, মৃত্যু যন্ত্রণা অনেক কঠিন। তার চেয়েও অনেক বেশি যন্ত্রণা, তোকে হালাল ভাবে আমার করেও ছুঁতে না পারা। একটু অনুমতি দে তোকে ছোঁয়ার, তোকে আদর করার। আমি আর পারছিনা মৌ, এ দূরত্ব বয়ে চলতে।
জুথি তখনো আরিশের ভয়ে চুপ করে নিঃশব্দে চোখের জল বিসর্জন দিচ্ছে, বারবার আরিশ কে ফিরিয়ে দেওয়া মানে, আরিশ যদি জোর করে কোন কিছু করে বসে? এসব ভেবে ভয়ে আবারো জোরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। জুথির এমন ফুপানো কান্না দেখে আরিশের মেজাজ চঙ্গে উঠে। আরিশ যতবার এই মেয়ের সাথে বনিবনা করতে চায়, ঠিক ততবার এই মেয়ে ফ্যাত ফ্যাত কান্না করবে। আর নয় তার যেটা পছন্দ না সেটাই করবে। আরিশ ওর কান্না নিতে না পেরে, ওকে ওর থেকে ছাড়িয়ে ঠাটিয়ে বা’গালে থাপ্পর দিয়ে বাহু চেপে দাঁত কিড়মিড় করে বললো,
‘ঠাসসস — ‘সমস্যা কি তোর? তোকে মারসি? না কামড় দিছি? এভাবে মরার কান্না জুড়ে দিছ কে?
জুথি আরিশের ধাবাং মার্কা থাপ্পড় খেয়ে কান্না ভুলে, নিচের দিক তাকিয়ে ফুপাতে লাগলো। জুথি কে ফোপাতে দেখে আরিশের দাউদাউ করা রাগ যেন জ্বলন্ত আগুনে পরিণত হলো। কিছুতেই নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে, জুথির গায়ের ওড়নাটা টান দিয়ে খুলে, সেটা মুরিয়ে ওর হাত-পা দুটো, বেঁধে বিছানায় ধাক্কা দিয়ে উঠে বারান্দায় চলে গেল। আরিশ কে বারান্দায় চলে যেতে দেখে,জুথি বাধন খোলার চেষ্টা করল। তবে এত শক্ত বাধন কি আর এতটুকু মানুষ খুলতে পারে? না একদম পারেনা।
“পেরাই আধাঘন্টা সময় অতিবাহিত হতে, আরিশের মাথাটা একটু ঠান্ডা হতে রুমে এসে দেখে তার বাচ্চা বউ বাধা অবস্থায় ঘুমে গদগদু হয়ে হা করে শ্বাস করছে, আরেকটু ভালো করে তাকাতে খেয়াল করলো মুখ হা করে থাকায় মুখ থেকে লালা বেয়ে পড়ছে। জুথির এমন ঘুমানোর স্টাইল দেখে, আরিশ ঠোঁট কামড়ে হাসলো। কে বলবে? এই মেয়ে জাগন্ত অবস্থায় কতটা নেশাক্ত? একজন টগড়া যুবককে নাড়িয়ে তুলতে সক্ষম! আরিশ এটা ভেবে ওর কাছে গিয়ে হতে পায়ের বাধন খুলে ঠিকভাবে শুয়িয়ে দিয়ে মুখের দিকে তাকাতে ওর মনে হলো, —‘হয়তো তার কাছেই তার মৌ এতটা সুন্দরী? এতটা নিষ্পাপ! কারণ সে তো সেই ছোট্ট থেকে এক নারীকেই আসক্ত! দ্বিতীয় কোন নারীর দিক চোখ তুলে তাকাইনি, তাহলে সে বুঝবে কিভাবে অন্য রমণী দেখতে কেমন। হয়তো তার মৌ কে অন্য কারো কাছে ভালো নাও লাগতে পারে, কিন্তু তার কাছে তার মৌ সবথেকে সেরা, তার প্রিয় মানুষ, তার বক্ষ পিঞ্জিরার ভালোবাসা, তার শ্বাস-নিঃশ্বাস সবকিছুই তো এক নারীতই আটকে। — আরিশ এইসব ভেবে জুথির মুখের লালা মুছে দিয়ে গালে হাতটা ভুলিয়ে দিল, এইতো কিছুক্ষণ আগে এখানেই থাপ্পরটা মেরেছিল। অতঃপর আরিশ লালচে হয়ে থাকা গাল টায় চুমু খেয়ে, রুম থেকে বেরিয়ে গেল বাহির থেকে দরজাটা নক করে।
“সময়টা রাত্র ৯.৭ মিনিট, অফিস সেরে বাসায় ফিরলেন বাড়ির দুই কর্তা, ও রাদিফ। সাময়িক ছুটির জন্য, সবার কাজ যেন কাছেই না। যদিও বাইরের অফিসের কাজ গোছানো হয়ে গেছে, সেখানে আর ছমাসে না গেলেও সমস্যা নেই। কারণ সাইফুল খান সেখানে সব কাজ মোটামুটি দেখভাল করে আজকে ফ্লাইটে উঠেছেন। উনি ফ্লাইটে ওঠে ভাইদের জানিয়ে দিয়েছেন। উনার আশ্বাসে বাকি দুই ভাই সন্তুষ্ট হল। উনারা ক্লান্ত শরীর নিয়ে বসার ঘরে সোফায় শরীল এলিয়ে দিতে, উনাদের ঠান্ডা পানি খেতে দিলেন লিমা খান। সানজিদা খান ও মোমেনা খান খাবার টেবিল সাজাচ্ছেন। মেহজাবিন খান তরকারি গুলো একে একে বাটিতে বেড়ে নিচ্ছেন। এমন সময় আরিশ ও সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছিল, তখন সাফওয়ান খান, মাহামুদ খান ও রাদিফ কে এক জায়গায় দেখে, না দেখার মতো করে সানজিদা খানের কাছে গিয়ে বললো,
‘খিদে পেয়েছে আম্মু, খেতে দাও।
সানজিদা খান ছেলের দিক তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন,
‘খাবার সবার জন্য রেডি করছি, তোমার বাবা চাচ্চু এখন এলো তো উনারা ফ্রেস হয়ে এলেই দিয়ে দেব।
আরিশ ওর মায়ের কথায় দ্বিতীয় উত্তর না করে, একটা প্লেট নিয়ে তাতে খাবার বেড়ে সামান্য তরকারি নিয়ে, প্লেট হাতে চলে যেতে নিলে পিছন থেকে সাফওয়ান খান বললেন,
‘আরিশ বাবা তোমার সাথে আমার কথা ছিল?
আরিশ শুনলো তার বাবার কথা, তবে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে তৎক্ষণে বললো,
‘আপনার সাথে আমার কোন কথা নেই।
সাফওয়ান খান হতাশ হলেন, তবে হাল ছাড়লেন না। আরিশের যাওয়ার দিক তাকিয়ে করা কন্ঠে বললেন,
‘আমি তোমার বাবা হই? বাবার সাথে সেই সাত বছর আগে ধরে রাখা ইগো মানায় না বাপ। বাবা তো তোমাকে ভালোবাসি।
আরিশের পা তৎক্ষণে থমকায়, অতঃপর ঘাড় ঘুরিয়ে মায়ের দিক তাকালো। আরিশ সানজিদা খানের দিক তাকাতে উনি উপর নিচ মাথা নেড়ে আশ্বাস দিলেন বাবার সাথে কথা বলার। আরিশ মায়ের ইশারায় কিছুক্ষণ নিচের দিক তাকিয়ে, আবারো রুমের দিক চলে যেতে নিলে, সফওয়ান খান ক্লান্ত শরীর নিয়ে উঠে দাঁড়ালেন ছেলের ইগো ভাঙ্গানোর জন্য। কারণ তিনি জানেন তার ছেলে ভাঙবে তবু মচকাবে না। উনি নিজে গিয়ে ওনার ছেলেকে যতক্ষণ পর্যন্ত বুকে না জানাবেন ততক্ষণ পর্যন্ত উনার ছেলের ইগো কমার নয়। যদিও আরিশ এসব পছন্দ করে না, তবু একবার চেষ্টা করতে ক্ষতি কি? যত হোক বাবা তো? এসব ভেবে উনি আরিশের সামনে দ্রুত পায়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললেন,
‘তোমাকে কি বললাম?
সফয়ান খান সামনে দাঁড়াতে, আরিশ ভ্রু কুঁচকে পাস কাটিয়ে চলে যেতে নিলে ওনি আরিশ কে টেনে বুকের সাথে জড়িয়ে বাঁধ ভাঙ্গা কন্ঠে বললেন,
‘এত ইগো কোথায় রাখো বাবা? আজ দেশে ফিরলে দু’মাস শেষ হয়ে তিন মাস হতে চলল, কিন্তু বাবার সাথে একটা কথা বললে না? এতটুকু বলে থেমে আবার বললেন, —‘তোমার যেমন মৌ এর সাথে কথা না বললে ভালো লাগে না, তেমন তুমি আমার সাথে কথা না বললে, আমার ভালো লাগেনা। আমি মানছি সেদিন আমার পদক্ষেপটা ভুল ছিল, কিন্তু তোমার অন্যায় টাও তো তীব্র ছিল।
সাফওয়ান খান ছেলেকে জড়িয়ে এত কথা বলতেও উনি খেয়াল করলেন,আরিশ ঠিক আগের মত প্লেট হাতে গম্ভীর ভঙ্গিমা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। না ওনাকে সরিয়ে দিচ্ছে, আর না গম্ভীরতা ভেঙ্গে কিছু বলছে। এতে উনি বেশ হতাশ হন, ছেলেদের নাকি কাঁদতে নেই, কিন্তু সাফওয়ান খান যেন এই কথাটা উভরে ফেললেন। ছেলেকে এখনো একই ভাবে দেখে ওনার চোখ দুটোতে টলটল করে পানি জমল, অতঃপর ওনি ভাঙ্গা কন্ঠে বললেন,
‘তুমি দেশে ফিরে মৌ কে বিয়ে করবে, করে নিয়েছো। আমরা মেনে নিয়েছি, তুমি বলেছ মৌ তোমার রুমে থাকবে তুমি রেখেছো, আমরা মেনে নিয়েছি। তাহলে তুমি আমার সাথে কেন কথা বলছো না? তুমি যে আমার একমাত্র সন্তান, তুমি যে আমার সাথে কথা বলো না, এটা আমি মেনে নিতে পারি না বাবা।
সাফওয়ান খানের ভাঙ্গা কন্ঠ শুনে আরিশের মনটা কিছুটা হলেও গলে আসে, অতঃপর বাবার পিঠে হাত রেখে বললো,
‘কাঁদবে না আব্বু, আমি চলে এসেছি তো।
আজ সাত বছর, তিন মাস পর ছেলের মুখে আব্বু শুনে, সাফওয়ান খান আবেগ প্রফুল্ল হয়ে সবাইকে চিল্লিয়ে বললেন,
‘তোমরা শুনেছো? শুনেছো তোমরা? আমার আরিশ আমাকে আব্বু ডেকেছে? এর থেকে খুশি আর কি হতে পারে?
সাফয়ান খানের চিল্লানো কথায় নিচে সবার মুখেই মুচকি হাসি ফুটল, সবাই এটাই চেয়েছিল বাবা ছেলে যেন আগের মত এক হয়, সাফওয়ান খান নিচে সবাইকে একবার দেখে আরিশের বাহু ধরে কন্ঠে আত্মবিশ্বাস এনে বললেন,
‘বাবা ছেলে এক, তো করবি কি সমাজ?
‘হুম। – আরিশ আর দাঁড়ালো না, ব্যস্ত পায়ে হেঁটে রুমে চলে গেল। আরিশ চলে যেতে উনিও ফ্রেশ হতে রুমে চলে গেলেন।
Violent love part 28
সানজিদা খান,খাবার টেবিলে সবার খাবার দিতে, সেখানে ছোট বড় থেকে সবাই বসে পড়লো খাবার খেতে, সেখানে রোদও ছিল। রোদ সবার সাথে খাবার খেতে আসতে না চাইলে, সানজিদা খানের ডাকে সবার সাথে একসাথে খেতে বসে। লিমা খান, সবার খাবার খাওয়া শেষ হয়ে আসতে, হঠাৎ উনি রোদের দিক তাকালেন, অতঃপর কিছু একটা ভেবে রাদিফের দিক তাকিয়ে বললেন,
‘রাদিফ আব্বু তোমার সাথে আমার কথা আছে…।