Violent love part 9
Mariam akter juthi
‘বর্তমান’
“সাফওয়ান খান এগুলো ভেবে দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস ফেলেন, সেদিন যদি পুলিশকে টাকা দিয়ে ছেলেকে তাদের সাথে না পাঠাতো। সেদিন যদি আর একটাবার ছেলের কথা শুনতো তাহলে হয়তো তাদের বাবা ছেলের সম্পর্কটা এমন অবনতি হতো না। উনি এসব চিন্তা ভাবনা করে স্ত্রীর পানে তাকিয়ে বললেন —‘দুপুর হয়ে গেছে খেতে দাও।
সানজিদা খান স্বামীর কথায় আর কথা বাড়ালেন না মাথায় কাপড় দিয়ে খাবার টেবিলে এসে সবার জন্য খাবার বাড়লেন।
জুথি থাপ্পর দেওয়া গালে হাত ঢলতে ঢলতে খান বাড়ির গেট খুলে ভিতরে ঢুকে, কিছুটা ভিতরে আসতে ওর চোখ পড়ে সুইমিং পুলের উপর। সেখানে রোদ ইভা ফারি মনি একসাথে মজা করে গোসল করছে। এটা দেখে ওর চোখ তো কোঠায় ওঠার উপক্রম। গালের ব্যথা ভুলে দৌড়ে ওপরে নিজের রুমে গিয়ে জামা কাপড় চেঞ্জ করে আবারো একই রকম দৌড়ে নিচে সুইমিং পুলের সামনে এসে কোমরে দুই হাত গুজে বলল,
‘তোমরা আমাকে রেখে মজা করে গোসল করছো? আরেকটু ওয়েট করলে কি হত? আমিও তোমাদের সবার সাথে গোসল করতে পারতাম।
ইভা জুথি কে দেখে এক গাল হেসে বলল,
‘আমরা মাত্র কিছুক্ষণ হয় এসেছি, তুই ও নেমে পড়। আজকে অনেক মজা হবে।
ফারি ইভার সাথে তাল মিলিয়ে হেসে বলল,
‘হ্যাঁ হ্যাঁ তাড়াতাড়ি নাম, আর নয়তো বড়দের ডাক পড়বে তোমরা এক্ষুনি উঠে এসো।
জুথি নামতে নিলে রোদ সবার উদ্দেশ্যে বললো,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
‘আমার গোসল হয়ে গেছে আমি আর গোসল করব না, তোদের গোসল করার থাকলে তোরা কর আমি গেলাম। বলে রোদ উঠে চলে যায়। রোদকে চলে যেতে দেখে সবাই তেমন গায়ে মাখল না। যে যার মত জুথিকে নামতে বলে আবারো হইচই করা শুরু করল। একসময় অনেকক্ষণ অতিবাহিত হতে, ফারি সবার এটেনশন ওর দিক নিয়ে বললো,
‘আজকে একটা জিনিস করলে কেমন হয়?
ইভা জুথি কৌতুহল হয়ে একসাথে বলল,
‘কি?
‘এই যে আমরা সবাই এক জায়গায় অনেকক্ষণ মজা করে গোসল করলাম। এখন একটা প্রতিযোগিতা করলে কেমন হয়?
‘কি প্রতিযোগিতা?
‘কে কতক্ষণ পানিতে ডুব দিয়ে থাকতে পারে?
ইভা জুথি কি বলবে তার আগে মনি চিৎকার করে বলে উঠলো,
‘আইডিয়াটা তো দারুন।
সবাই ঠিক করল বড় থেকে ছোট কে কতক্ষণ পানিতে ডুব দিয়ে থাকতে পারবে। সেই অনুযায়ী এখানে ইভা সবার বড় তাই ওই ডুব দিল সবার আগে। সবাই গোনা শুরু করলো।১ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড হতে ইভা পানি থেকে উঠে দম নিতে নিতে বলল,
‘বাবাহহ,ওই কয় মিনিট হইছে রে?
‘১ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড।
‘ফারি এবার তোর পালা।
ফারিও ১ মিনিট হতে না হতেই পানি থেকে উঠে হাপাতে হাপাতে বললো,
‘ভাই আমি আর থাকতে পারি নাই শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে তাই উঠে আসছি। এবার এই জুইথার পালা।
সবার মত জুথিও মুখ ভেংচি মেরে পানিতে ডুব দিয়েছে, প্রায় ২ মিনিট এর কাছাকাছি হতে না হতেই ও পানি থেকে উঠে শ্বাস নিতে নিতে নিচের দিক তাকিয়ে বললো।
‘আমি নিজেরটা নিজেই গুনেছি, এবার তো আমিই জিতবো। বলে সামনে তাকাতে পানির ভিতরে দু পা পিছিয়ে যায়। কারণ তার সামনে স্বয়ং দাঁড়িয়ে আরিশ খান। ওকে দেখে জুথি আশেপাশে তাকিয়ে মিন মিন গলায় বললো,
‘ওমা,আপনি এখানে কিভাবে এলেন? এখানে তো ওরা সবাই ছিল? এটা বলে উঠে যেতে নিলে আরিশ জুথির বাহাত ওর পিঠের দিক ঘুরিয়ে চেপে ধরে একদম ওর কাছে নিয়ে আসে। এমনটা করায় জুথি অনেকটা ভয় পেয়ে যায়। ভয় ভয় চোখ নিয়ে আরিশের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে নিলে আরিশ হুট করেই জুথির ঠোট দুটোর সাথে ওর ঠোঁট দুটো জোরে চেপে ধরে।
জুথি আরিশের এমন কাণ্ডে, কিছুটা বোকা বনে যায়। ওর থেকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ছুটাছুটি করার চেষ্টা করে আরিশের বুক উম উম শব্দ করে থাপরা থাপড়ি করা শুরু করে দিল। কিন্তু আরিশ ওকে ছাড়েনি বরং, জুথির হাত ওভাবে চেপে রেখেই জুথির চুলের মুঠি পিছন থেকে শক্ত করে ধরে রাখে যাতে ও নাড়াচাড়া না করতে পারে। গুনে গুনে ৩.৪ মিনিট হতে আরিশ জুথির ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে ডান হাতের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁট মুছে আঙ্গুলটা সামনে এনে জুথির দিক নেশাক্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আঙ্গুলটায় চুমু দেয়। অতঃপর আবারও জুথিকে নিজের কাছে এনে, ঘাড়টা একটু নিচু করে জুথির ঘাড়ে গলায় একের পর এক চুম্বন করতে থাকে।আরিশের এমনটা করায় জুথি জোরে জোরে ঘনঘন নিশ্বাস নিতে নিতে আরিশ কে ঠেলে সরাতে চেয়ে বলল।
‘আ,আমাকে যেতে দিন, সহ্য করতে পারছি না। প্লিজ আমাকে যেতে দিন।
‘তোকে দেখলে আমি ও নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না *বাল। এখন একটু সহ্য করে নে। তারপরি ছেড়ে দিব।
জুথি আরিশের এমন অসভ্যের মতো কথা শুনে, গায়ের যত শক্তি ছিল ততটা প্রয়োগ করেই জোরে ধাক্কা দেয়।আরিশ সজ্ঞানে না থাকায় পানির ভিতর কিছুটা পিছিয়ে যায়। আরিশ নিজের কাজে সফল হতে না পেরে রাগি চোখ করে জুথির দিকে তাকিয়ে, ওর দিক তেরে জেতে নিলে ওর চোখ পড়ে সামনের দিকে। সাথে সাথে ও এক হাত দিয়ে জুথির মাথাটা পানির নিচে চেপে ধরে অন্য হাত দিয়ে মাথার চুল ঝারার ভান করে অন্যদিক তাকায়। ততক্ষণে রাদিফ তীক্ষ্ণ চোখে আরিশের দিকে তাকাতে তাকাতে বাড়ি থেকে বের হয় ,রাদিফ কে আড় চোখে বের হতে দেখে পানির নিচ থেকে জুথিকে টেনে ওর বুকের কাছে ওঠায়।
জুথি পানি খেয়ে কাশতে কাশতে, চোখ দুটো পুরাই লাল হয়ে যায়।আরিশ এটা দেখে অন্য দিক ফিরে মুখ চেপে হাসে। জুথির একসময় কাশি থেমে আসলে, ভেদ করে কান্না করে দিয়ে আরিশ বুকে রাগ কমাতে জোরে জোরে কিল ঘুসি দিতে শুরু করে। একসাথে কতগুলো কিল ঘুসি দিয়ে শান্ত হয়ে বললো,
‘অসভ্য লুচ্চা লোক। বলে আরিশকে ঠেলে দফ দফ পা ফেলে ওখান থেকে উঠে চলে আসে। আরিশ তার মৌকে চলে যেতে দেখে, এবার একটু শব্দ করেই হেসে দেয়।
তখন জুথি ওখান থেকে রেগে মেগে এসে, জামা কাপড় চেঞ্জ করে সোজা ফারির রুমে যায়।
গিয়ে দেখে ফারি হেসে হেসে ফোনে কথা বলছে এটা দেখে তো জুথি আরো ক্ষেপে যায়। তেড়ে গিয়ে কান থেকে ফোনটা নিয়ে ঠাস করে কেটে দিয়ে চোখ বড় করে তাকিয়ে বললো,
‘তখন তোরা আমাকে না বলে রেখে এসেছিলি কেন?
‘ভাইয়া তখন আমাদের ওখান থেকে চলে আসতে বলেছিল। তাইতো আমরা চলে এসেছি।
‘আমাকে নিয়ে আসবি না?
‘তোকে কিভাবে নিয়ে আসব তুই তো পানির নিচে ডুব দিয়েছিলি।
‘অসভ্য মাইয়া, জানো আমার সাথে ওই অসভ্য লোকটা কি করছে?
ফারি জুথির কথায় কৌতুহল নিয়ে, দুই হাত দুই গালে দিয়ে বললো,
‘কি করছে রে?
‘উনি আমাকে চু,, জুথি বলতে নিয়েও থেমে যায়,
জুথিকে অর্ধেক বলে বলে থেমে যেতে দেখে ফারি তারা দিয়ে বললো,
‘বাকিটুকু বল।
জুথি মাথা চুলকিয়ে আমতা আমতা করে বললো,
‘কিছু না, আমি যাই। বলে ভোদৌড়।
ফারি জুথি যেতে দেখে মুখ টিপে হাসলো।
সময়টা সূর্য ডুবে ঠিক সন্ধ্যা ৭টা, চারপাশ লালচা আবরণ কমে গিয়ে অন্ধকার হয়ে গেছে।ফারি জুথি এতক্ষণ ছাদে বসে আড্ডা দিয়ে সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে যে যার রুমে চলে যায়। রুমে যেতে রাদিফের ডাকে ওরা দুজনই নিচে আসে। জুথিকে আসতে দেখে রাদিফ মুচকি হেসে বললো,
‘তোর তো কালকে পরীক্ষা নেই তাই না?
‘হুম।
‘যেহেতু তোর কাকে পরীক্ষা নেই আমরা সবাই বাহিরে ঘুরতে গেলে কেমন হবে?
রাদিফের কোথায় রোদ ফারি ইভা মনি সবাই রাজি হয়ে যায়।জুথিও বাহিরে ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনে কোন কিছু না ভেবেই হ্যাঁ বলে দিল। ব্যাস সবার উত্তর হ্যাঁ হওয়াতে রাদিফ তো ভীষণ খুশি। তাই সবাই রাতের প্রকৃতি দেখতেই বের হবে ঠিক করল, যেই ভাবা সেই কাজ যে যার রুমে খুশি মনে রেডি হতে চলে যায়।
সবার অবস্থান গুলশান লেক পার্কে, সন্ধ্যাবেলায় মনমুগ্ধ হিমেল বাতাস সাথে রোমান্টিক পরিবেশ। চারদিকে ঝিলিক বাতির সংমিশ্রণ। যেটাকে পরিবেশের ভিউ কে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। আশেপাশে অনেক দোকান পাঠ ও রয়েছে। সবাই চারপাশের প্রকৃতির সৌন্দর্য অনুভব করতে ব্যস্ত।আর জুথি ত মহা খুশি। এই সাত বছরে ওর মনে হয় না কেউ ওকে রাতের বেলায় ঘুরতে নিয়ে এসেছে।
Violent love part 8
যদিও সে দিনে ঘুরতে বের হয়েছে তাও সব সময় আয়ান ওকে নিয়ে আসত। আবার কিছুক্ষণ ঘুরে সাথে করেই নিয়ে যেত। আজ সন্ধ্যা বেলায় আসতে পেরে তো কোন কথাই নেই। সবাইকে রেখে সে একলা একলা ঘুরতেই ব্যস্ত। প্রায় আধা ঘন্টা খানেক সময় যেতে না যেতেই কোথা থেকে আরিশ স্প্রিডে বাইক নিয়ে এসে জুথির সামনে দাঁড়াতে জুথি দু পা পিছিয়ে যায়।আরিশের রাগী চোখ দুটো দেখে জামার দুই সাইড শক্ত করে মুট করে ধরে। তখন ওর কানে আসে গম্ভীর কণ্ঠে বলা, কিছু বাক্য।
‘এক্ষনি বাইকে ওঠ,,,,