অনুভবে তুমি পর্ব ১২

অনুভবে তুমি পর্ব ১২
লিজা মনি

ইয়ানা ফ্রেশ হয়ে নিচে নামে। কিন্তু একজনের কথা শুনে সে থমকে যায়।
আসাদ হোসেন : তোমাকে বলেছিলাম না সেলিনা আমার ফ্রেন্ডের ছেলে বিদেশ থেকে ডাক্তারি ডিগ্রি নিয়ে মাত্র দেশে এসেছে। ইয়ানাকে নাকি কয়েকবার রাস্তায় দেখেছে। ইয়ানাকে ওর ভিষন পছন্দ হয়েছে। তাই সামনের সাপ্তাহ ওনারা এসে ইয়ানাকে আংটি পরিয়ে দিয়ে যাবে আর পরের মাসেই ওদের বিয়ে। আসলে কোনো এক কারনে তারা বিয়েটা তারাতারি করাতে চাই। ছেলে আমার খুব পছন্দ হয়েছে আশা করি তোমার ও পছন্দ হবে।

সেলিনা : সবই তো বুঝলাম আসাদ কিন্তু ইয়ানার যদি পছন্দ না হয়। ইয়ানাকে একবার জানানো দরকার।
আসাদ: হুম তুমি ওর সাথে কথা বলো। আমার মনে হয় না আমার পছন্দের ওপর না করবে।
তাদের কথার মাঝেই সেলিনা হোসেন তাকিয়ে দেখেন সিড়ির কাছে ইয়ানা দারিয়ে আছে,,,, উনি আমতা আমতা করে ইয়ানাকে ডাক দেয়।
“আরে ইনু তুই এইখানে? ভালো হয়েছে এসেছিস। তোর সাথে কথা আছে এদিকে আয়।”
সেলিনা হোসেনের কথা শুনে আসাদ হোসেন ও পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে ইয়ানা দাঁড়িয়ে আছে। উনি খুশিমনে নিজের কাছে ডাক দেয়।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ইয়ানা ও মাথা নিচু করে ওর বাবা মায়ের সামনে গিয়ে বসে।
এইবার আসাদ হোসেন নিজের মেয়ের মাথায় হাত রেখে বলেন,
” দেখ মা ছোট বেলা থেকে তরা দুই বোন যা চেয়েছিস তাই দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কোনো কিছুতে কোনোদিন বাধা দেয় নি। আমি চাইব আমার কথায় ও তুই কোনোদিন বাধা দিবি না। কারন বাবা হিসাবে আমি আমার মেয়ের জন্য বেস্ট টা ঠিক করবো।আমি চাই আমার বন্ধুর ছেলে সাহিল মির্জাকে তুই বিয়ে কর। ও বিদেশ ফেরত একজন ডাক্তার। তাছারা ছেলে হিসাবে সে খুব ভালো। বাবার উপর ভরসা আছেতো তোর।সামনের সপ্তাহে তারা আংটি পরিয়ে রেখে যাবে তার পর,, পরের মাসে বিয়ে। যদি তর কোনো ছেলেকে পছন্দ থাকে তাহলে বলতে পারিস বিয়ের কথা আর আগাবো না।””

ইয়ানা আর নিজের বাবার মুখের উপর না বলার উপায় নেই। সত্যি এইটাই যে ওর বাবা ওদের জন্য নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করে ওদেরর ভালো রাখার জন্য। আর তাছারা যদি বিয়ে হয়ে যায় তাহলে সে অগ্নি চৌধুরির যন্ত্রনা থেকে মক্তি পাবে সে তো তাকে ভালোবাসে না। ভবিষ্যতে কি হতে পারে তার এই সামান্য হে বলার জন্য কোনো কিছু না ভেবেই নিজের আব্বুর উদ্দেশ্যে বলে,
– তোমরা যাকে ঠিক করবে আমি তাকেই বিয়ে করবো। আর তাছারা আমার কোনো পছন্দ নেই।
আসাদ হোসেন মেয়ের কথায় খুবই সন্তুষ্টি হন। নিজের মেয়ের মাথায় সন্তুষ্টিজনক হাত বুলিয়ে দেয়। তারপর তারা সবাই ডিনার করে যে যার মতো রুমে চলে যায়।

আহান দারিয়ে আছে নিজের তৈরি করা বিশাল সম্রাজ্যের
বেলকনির রেলিং ধরে। হাতে তার ওয়াইনের গ্লাস ধরে রাখা প্রায় এক ঘন্টা হতে চলল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এখনো একটু ও খেতে পারেনি। যে মদ না খেলে ওর রাতের ঘুম হতো না আজ সে এইটা খেতে পারছে না। মুখের সামনে আনলেই এক মায়াবি মুখ ভেসে উঠে। গোলাপি ঠোঁট,,, একজোরা মাতাল করা চোখ,,। আহান এইবার বড় বড় শ্বাস নেই এটা যেনো এক অদ্ভুত নেশা যা সব নেশাকে হার মানায়,,, ওয়াইনের গ্লাসটা পাশে রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,,,,,,

“” আমার অনুভবের রানি কি করেছো আমার উপর। আমার এই হিংস্র মন যে শুধু তোমাকে চাই। কিছু করতে গেলেই শুধু তুমি মায়াবিনি অংকিত হও। কি জাদু আছে তোমার অস্তিত্বে যেটা অনুভব করলে আমি সব ভুলে যাই। খুবি ভয়ংকর নারি তুমি।তোমার অস্তিত্বে আমি পাগল হয়ে যায় বার বার। খুব কাছ থেকে ছুতে চাই তোমায়। ভালোবাসায় ডুব দিতে চায় তোমার মধ্যে। মেতে উঠতে চাই তোমার অস্তিত্বে । যে মদ খেয়ে মাতাল হয় আমি প্রতি রাতে আজ তোমার অনুভবে আমি মাতাল হচ্ছি বারংবার। আজ এই ওয়াইনের গ্লাস ও আমাকে কাবু করতে পারছে না আমার অনুভবের সেহজাদি। ভালোবাসি না আমি তোমায় কিন্তু আমি তোমাই চাই সেটা যেই মূল্যেই হোক না কেনো।””

রাতের আধার কে বিদাই জানিয়ে সূর্যি মামা উকি দেয়। চারদিক থেকে ভেসে আসা বাতাসের মিষ্টি গন্ধ।এমন মনোরম পরিবেশে শুকনো মুখে বসে আছে ইয়ানা। তার কিছুই ভালো লাগছে না। সারারাত ভাবতে ভাবতে কখন ভোর হয়ে গেলো বুঝতেই পারেনি। মাথায় হাজার চিন্তা নিয়ে কি আর ঘুম সম্ভব। সারারাত বার বার বেলকনির দিকে তাকিয়ে ছিলো কারোর অপেক্ষায়। কেনো বার বার মনটা এমন অশান্ত লাগছে। বিয়ে ঠিক হয়েছে আমারতো খুশি হওয়ার কথা,,,কিন্তু কেনো মনে হচ্ছে আমি কিছু একটা হারিয়ে ফেলছি। ইয়ানা এইবার সমস্ত চিন্তা দুরে ঠেলে দিয়ে নিজেই নিজেকে আস্বশ্ত করে বলে,,, কামন ইয়ানা কিসের এত চিন্তা করছিস। আর কার জন্যই বা চিন্তা করছিস। ওকি তোকে ভালোবাসে নাকি আর তুই ওতো ওকে ভালোবাসিস না তাহলে এত চিন্তা কিসের। তর জন্য তর বাবা বেস্ট একটা ছেলে চুস করেছে।ইয়ানা এইবার বড় বড় শ্বাস নিয়ে ফেশ হতে চলে যায়।

ইয়ানা অনেকক্ষন পর রুম থেকে বের হয় নইতো ওইদিনকার মতো আবার কথা শুনাতো। কি এক বিপদে আছি তারাতারি ঘুম থেকে উঠলে ও দোষ না উঠলে ও দোষ। ইয়ানা ডাইনিং টেবিলে বসে ব্রেডে জেল লাগাতে লাগাতে বলে,,,
” আম্মু আব্বু আর রুই কি চলে গেছে।”
সেলিনা হোসেন মেয়ের প্রশ্ন শুনে বলেন,,,,
“হ্যা এই মাত্র বের হয়েছে। তোকে রুই ডাক দিতে গিয়েছিলো তুই নাকি পড়তে বসেছিস,,, তাই আর ডিস্ট্রাব করে নি।”
ইয়ানা : ওহ।
আচ্ছা আম্মু শুনো আজ আমি একটু লাইব্রেরিতে যাবো আসতে একটু লেইট হবে।
সেলিনা হোসেন মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,,, ঠিক আছে। তবে বেশি দেরি যাতে না হয়।
ইয়ানা: ঠিক আছে আম্মু আমি এখন আসি,,, বাই।

ইয়ানা রাস্তায় বিরক্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রিক্সার জন্য। আজ সুমু কোচিং এ যাবে না তাই ইয়ানা একাই দাঁড়িয়ে আছে।
ইয়ানা এইবার কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বিরবির করে বলে,
“” আজ কি সমস্ত রিক্সার উপর ঠাডা পরছে একটা ও আসছে না। দুর এইদিকে কোচিংএর ও দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
ইয়ানার ভাবনার মাঝেই কালো সাদা একটা কার এসে থামে,, সে কিছুটা ঘাবরে যায়। গাড়ি থামার সাথে সাথে ওর মোবাইলে ফোন আসে।
ইয়ানা ফোন রিসিব করে হ্যালো বলেতেই,,,,
ওইপাশ থেকে: গড়ি পাঠিয়েছি চুপচাপ গাড়িতে উঠে ভার্সিটিতে যাও। একটা কাজে আটকে গেছি তাই আমি যেতে পারি নি।

ইয়ানা আর বুঝতে বাকি নেই ফোনের ওইপাশের ব্যক্তিটি কে।
ইয়ানা : দেখুন মি, অগ্নি চৌধুরি আমাদের মতো মধ্যবিত্ত মেয়েদের জন্য রিক্সাই ঠিক আছে,,, আপনার কোটি টাকার গাড়ির প্রয়োজন নেই।
আহানের রাগের পরিমান যেন তরতর করে বৃদ্ধি পাচ্ছে,,,
এই মেয়ে সোজা কথার মানুষ না। ভালোভাবে কথা বললে কানেই তোলে না।
আহান এইবার একটা ধমক দিয়ে বলে,,,,
“,just set up ইডিয়েট আমার থেকে বেশি বুঝ তুমি। চুপচাপ গাড়িতে উঠো ইনু,,, না হলে আই সয়ার আমি কি করবো নিজেও জানি না”
এই বলে আহান রেগে ফোন রেখে দেয়। ইয়ানা আ্‌হানকে গালি দিতে দিতে গিয়ে গাড়িতে বসে।

সমস্ত মিটিং শেষ করে আহান নিজের কেবিনে বসে আছে,,,, তার কিছুই ভালো লাগছে না সে তার অনুভবের সেহজাদিকে দেখতে পারে নি।
কেবিনের বাহির থেকে টোকা পরতেই আহান গম্ভির মুখে বলে,,,, কাম ইন।
ইউভি রায়ান আর আহানের এসিস্টেন্ট আরিফ হুরমুড়িয়ে রুমে ডুকে।
আহান তাদের দিকে বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে বলে,,,
” কি হয়েছে কোন পাগলা কুকুরে তাড়া করেছিল তোদের এইভাবে ডুকেছিস কেনো”?
আহানের কথা শুনে সবাই থমথমে খেয়ে যায়।
রায়ান এইবার সিরিয়াস হয়ে বলে,,,,,

” ভাই ফরিদ আমিনের ভাইগ্নাকে কানাডার পুলিশ গ্রেফতার করেছে । এখন ফরিদ পালিয়ে রয়েছে। হইতোবা দেশে আসতে পারে,,, তারপর মোটা অংকের টাকা ভেংগে ছেলের মতো ভাইগ্নাকে বাচিয়ে নিয়ে আসবে। তাছারা কানাডায় ফরিদের যত কালো ব্যবসা ছিলো ড্রাক্স থেকে শুরু করে সব পুলিশের আওতাদিন হয়ে গেছে। তাই বলছি ও দেশে আসাটা মারাত্নক ব্যাপার,,, আর আমাদের সাথে জাত সত্রুতা,,, দেশে এসে শুধু শুধু অশান্তি করবে। আর এইবার যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে আর প্রানে বাচতে পারবে না”।
আহানে যেনো এইসব সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত ছিলো। সে একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে বলে,,,,
,,, চাপ নিস না ও কানাডার ত্রিসিমানা থেকে বাহির হতে পারবে না,,,কিছুক্ষন পর ও ওইখানকার পুলিশের হেফাজতে চলে যাবে।

তারা অবাক হয়ে আহানের দিকে তাকিয়ে থাকে।ইউভি রাগান্বিত হয়ে আহানকে বলে,,,,,,,
“শালা তুই জানতি আগে থেকেই। আর আমরা এসেছি তোকে খবর দিতে”।
আহান তাদের কথা শুনে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,,
“ওইসব কথা বাদ দে আগে বল আমার আদরের সৎ ভাইয়ের কি খবর। আজ একটু দেখা করতে যাবো বুঝলি। অনেক দিন হলো আদরের ভাইটাকে দেখি না।”
আহান এইবার কিছুটা গম্ভির হয়ে বলে,,, আরিফ ঠিক মতো খাতির যত্ন করছিস তো।
আরিফ ভয়ে ভয়ে বলে,,,,, যি ভাই ওর অবস্থা খুবই খারাপ মনে হয় না বেশি দিন বাচবে।
আহান একটা বাকা হাসি দিয়ে বলে,,,, বাচতে তো হবেই ওকে। আজ দেখা করতে যাবো। আর এখন সবাই আমার কেবিন থেকে বের হ।

আরিফ: ভাই আমার একটা প্রশ্ন ছিলো।
আহান চেয়ারে বসতে বসতে বলে,,,,, কি প্রশ্ন করবি তারাতারি করে বিদায় হ।
আরিফ: আচ্ছা ভাই আপনার জন্মের সময় কি আপনারা গরিব ছিলেন।
আহান আরিফের দিকে কপাল কুচকে বলে,,,,, তোর হঠাৎ এই প্রশ্ন কেনো।
আরিফ : আহা ভাই বলেন না।
আহান : না।
আরিফ : হুম গরিব ছিলেন না আপনার বাবা দেশের সেরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন ছিলো। এইটা আমি আমার জন্মের পর থেকেই জানি। কিন্তু প্রশ্ন হলো এত বড়লোক হওয়া সত্ত্বেও আপনাকে মধু খাওয়াতে এত কিপটামি করলো কেনো।

রায়ান আর ইউভি এতক্ষন আরিফের দিকে তাকিয়ে ছিলো। আরিফের কথা শেষ হতেই তারা হু হু করে হেসে উঠে।
আহান নিচের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
“আমার বন্দুকে ৬ টা গুলি আছে তোরা যদি এখন আমার কেবিন থেকে না বের হয়েছিস তাহলে ৬ টা গুলি তোদের বুক বরাবর শুট করবো”।
আহানের বলতে দেরি তাদের কেবিন থেকে বের হতে দেরি হয় নি।

সুমু রাস্তায় একা একা হেটে যাচ্ছে,,,, আজ রিক্সা নেই নি । সে আনমনে কিছু একটা ভেবে চলছে,,, ঠিক ওই সময় ওর সামনে একটা গাড়ি এসে আচমকা ব্রেক কষে। তার ভাবনার এমন ভয়ংকর ছেদ পরায় থমথমে খেয়ে যায়। এই বুঝি অকালে জিবনটা গেলো,,,, এখনো না হওয়া জামাইটাকে দেখতে পেলাম না। আমার বাচ্চাকাচ্চা গুলোর কি হতো,,,, সুমু মনকে শান্ত করার জন্য কয়েকবার দোয়া ইউনুস পরে বুকে ফু দিয়ে গাড়িটির দিকে তেরে গিয়ে বলে,,,,,,
“এইযে বড়লোক বাবার বখাটে ছেলে দামি গাড়ি নিয়ে বের হলে কি রাস্তায় মানুষদের মানুষ মনে হয় না। নিজের কাধে কি আজরাইলের ক্ষমতা নিয়ে এসেছিস নাকি মানুষ মারার জন্য,, লেজ কাটা হনুমান, সয়তান অসভ্য এই বলে সুমু একটা ইট নিয়ে তেরে যায় গাড়ির কাছে। গাড়ির কাছে গিয়ে ওর চোখ চরক গাছ।
সুমু এইবার আমতা আমতা করে বলে,,,, আপনি ! সামনে এসে এইভাবে গাড়ি ব্রেক করেছেন কেনো তাইতো রেগে গিয়েছিলাম।

,,,,,, এইদিকে যচ্ছিলাম পরে দেখি আপনি,,,, তাই ব্রেক করে ছিলাম।কিন্তু এইভাবে ভয় পেয়ে যাবেন বুঝতে পারে নি। গাড়ির মালিক ছিলো সয়ং রায়ান।
সুমু অপ্রস্তুত হয়ে কিছুটা দাতে দাতচেপে বলে,,,,,
“মাঝপথে আমার মতো ইনোসেন্ট বাচ্চা মেয়ের সামনে হঠাৎ যদি কোনো দানব এসে ব্রেক কষে তাহলে তো ভয় পাবোই তাই না। ”
রায়ান আড়ালে একটা মুচকি হাসি দিয়ে মনে মনে বলে,,,,,

,,,যার উস্থতিতে দেশের নামকরা গোয়েন্দা অফিসারের বুকে ঘুর্নিঝড় শুরু হয়ে যায় সে নাকি ইনোসেন্ট।
রায়ান : তো মিস সুমু ভার্সিটিতে নিশ্চয় যাচ্ছেন,,, আমি এইদিকেই যাচ্ছি আপনি গাড়িতে উঠুন পৌছে দিচ্ছ। আবার ভাব্বেন না আপনাকে সিডিউস করছি,,,,,,,মানে বলতে চাইছি সবসময় এক লাইন বেশি বঝেন তো তাই।
রায়ানের কথা শুনে সুমুর কিছুটা খারাপ লাগলো। ওতো ওনেকবার ক্ষমা চেয়েছে ওইদিনকার জন্য। তারপরও ওকে কথা শুনাচ্ছে,,,,,, তবে সেটা মুখে আর প্রকাশ করলো না।

সুমু : না না আমি কোনো গাড়িতে যাবো না। আপনি আসতে পারেন মি, রায়ান।
রায়ান : আপনি আপনার ভাঙ্গা টেপ রেকর্ডটা বন্ধ করোন আর গাড়িতে উঠে বসুন। নইতো ওইযে দুরে কুকুরটা দেখতে পাচ্ছেন এক ডিল দিবো আজ সারাদিন আপনার পিছনে পড়ে থাকবে।so চুপচাপ গাড়িতে উঠে বসুন।
সুমু রায়ানের কথা শুনে ঘাবরে দিয়ে পিছুনে ফিরে তাকায় দেখে সত্যি সত্যি কয়েকটা কুকুর বসে আছে,,, ও কুকুরকে ভিষন ভায় পায়। তাই কোনোকিছু না ভেবেই গাড়িতে গিয়ে বসে।
রায়ান দাতে দাত চেপে বলে,,, আমাকে কি আপনার ড্রাইবার মনে হয়। ওইখানে বসেছেন কেনো সামনে এসে বসুন।
,,, সমু রায়ান সহ রায়ানের চৌদ্দগুষ্টিকে গালি দিতে দিতে গিয়ে সামনে বসে,,, নির্ঘাত আজ বিপদে পরছি দেইখা। নইতো তোর গাড়িতে উঠার কোনো ইচ্ছা নেই আমার।

সবাই ছুটির পর প্রতিদিনকার মতো আড্ডায় মেতে উঠেছে।
আকাশ : এই যে আমাদের সুমু সান্তির রানি আপনি এইভাবে সকাল থেকে কালনাগিনির মতো ফুস ফুস করছিস কেনো।
সুমু এমনিতে রেগে ছিলো আকাশের কথা শেষ হতেই আকাশের পিঠে এক কিল বসিয়ে দেয়,,, রেগে বলে,,,,,
” তুই আমাকে কালনাগিনি বলেছিস তোর বউ কালনাগিনি”।
আকাশ পিঠ ঘেসতে ঘেসতে বলে,,, হে তোরা তো জানিস ওই আমার বউ যে কালনাগিনি আবার বলতে হয় নাকি। কালনাগিনির উপরে যাদি কিছু থাকে তাহলে ওইটা বল।

আরু : কি হয়েছে আমাদের শান্তির মহারানি সুমু বেবি এইভাবে রেগে আছিস কেনো।
সুমু এইবার রাস্তার সমস্ত ঘটনা এক এক করে সব খুলে বলে।
ইয়ানা : এই জন্য ওইতো বলি যে আমাদের শান্ত দেবী এত রেগে কেনো। তুই যে রায়ান ভাইয়াকে ভুল করে একটা মেয়ের উড়না টেনে ধরা নিয়ে ভুল বুঝেছিস তার কাছে ক্ষমা চেয়েছিস।
সুমু : হুম এইটা অনেক আগেই শেষ। পিছনে অনেক ঘুর ঘুর করে তারপর ক্ষমা করেছে।
আয়াত : ওকে ঠিক আছে এইবার তাহলে আমরা উঠি।
ইয়ানা : নারে তোরা যা আমি একটু লাইব্রেরিতে যাবো কাজ আছে। ফিরতে একটু দেরি হবে বাসা থেকে বলে এসেছি।

অনুভবে তুমি পর্ব ১১

ইয়ানা লাইব্রেরির কাজ শেষ করতে করতে কখন বিকেল হয়ে গেলো বলতেই পারে নি। ভর্সিটির সামনে দাঁড়িয়ে আছে রিক্সার জন্য। আকাশের অবস্থা ও বেশি একটা ভালো না,,, মনে হয় ঝড় আসবে। পাশেই কয়েকটা বখাটে বার বার তাকাচ্ছে। সময় যাচ্ছে আর অস্বস্তি যেনো বেরেই চলেছে। কিন্তু একটা রিক্সা আসার কোনো নাম ওই নেই,,, হয়তো আবহাওয়া খারাপ এই জন্য।
তার ভাবনা প্রহর ঘনেই তার সামনে কালো রঙ্গের একটা গাড়ি থামে…..

অনুভবে তুমি পর্ব ১৩