অনুভবে তুমি পর্ব ২১

অনুভবে তুমি পর্ব ২১
লিজা মনি

সুমু নাক মুখ কুচকে বিরক্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পাশেই রায়ান এটা সেটা বলছে। কিন্তু সুমুর কোনো হেলদুল নেই।এক পর্যায়ে বিরক্তি নিয়ে বলে,,,,,
“” হয়েছে আপনার কথা বলা। আমি বলেছি আমাকে এতকিছু এক্সপ্লেইন করতে? বলেনিতো। আপনি পরিচয় লুকিয়েছেন সেটা আপনার ব্যপার। হ্যা হয়তো এত দিন একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিলো। এখন সেটা থাকবে না। “””
রায়ান হতাশা সুরে বলে,,,,

“” প্লিজ সুমু এইভাবে বলো না। আমরা পরিস্থিতির স্বীকার ছিলাম। আর আহান ইয়ানাকে খুব ভালোবাসে। হয়তো এইটা সে নিজে বুঝতে পারছে না কিন্তু আহান ইয়ানাকে নিজের জীবনের চেয়ে ও বেশি চায়। তুমি জানো না ইয়ানার নিখোজে ও কতটা উন্মাদ হয়ে গিয়েছিলো। ওর ভিতরের হাহাকার আর অতৃপ্ত চাওয়া আমরা বুঝতে পারি। দেখবে ইয়ানা ও একদিন আহানের মধ্যে এতটায় মগ্ন হবে যে মৃত্যুর শেষ প্রান্তে গিয়ে ও শুধু আহানকে চাইবে। “””
সুমু রায়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
“” সবকিছু ঠিক ছিলো রায়ান। কিন্তু আমরা মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান। ইয়ানা হয়তো স্ট্রং তাই সবকিছু সামলে নিচ্ছে। কিন্তু আহান ভাইয়ার এই ভয়ংকর রুপ না আবার তাদের বিচ্ছেদের কারন হয়। ওনি এইভাবে ছলনা না করলে ও পারতেন। জানি না ইয়ানা মেনে নিবে কি না। কিন্তু আল্লাহর কাছে দোয়া করি ওরা যাতে সুখে থাকে।””
সুমুর এই অন্ধকার মুখ দেখে রায়ান বলে,,,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“” আইস্ক্রিম খাবে””
সুমু রায়ানের না তাকিয়েই জাবাব দিলো,,,
” না ”
রায়ান ::: তাহলে ঘুরতে যাবে?
সুমু দাতে দাত চেপে বলে না,,,
“” না। আপনি থাকুন আমি যাচ্ছি।”
রায়ান ::: তাহলে চলুন আমি পৌছে দিচ্ছি।
সুমু বিরক্তি নিয়ে বলে,,,,
“” তার কোনো প্রয়োজন নেই। আমি রিক্সা করে চলে যেতে পারবো।”
তারপর সুমু একটা রিক্সা দাড় করিয়ে উঠে বসে।
সাথে সাথে রায়ান ও উঠে বসে।
সুমু রায়ানের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলে,,,,

‘” আপনি উঠেছেন কেনো। আপনার কোটি টাকার গড়ি কোথায়। নামুন বলছি এখনি।
রায়ান নিজের চুল ঠিক করতে করতে বলে,,,
“” গাড়িতো আছে মেডাম কিন্তু আজ একজনকে দেখে এক অতৃপ্ত ইচ্ছা জাগ্রত হয়েছে রিক্সায় উঠার জন্য। তাই আজ আর গাড়িতে যাবো না রিক্সা করে যাবো।””
সুমু দাত কটমট করে বলে,,,
“” হ্যা তো ঢাকা শহরে কি রিক্সার অভাব পরেছে। এই রিক্সা থেকে নেমে অন্য রিক্সা দিয়ে যান।””
রায়ান সুমুর কথা কানে না তুলে ড্রাইবারকে বলে,,,,

” মামা আপনি রিক্সা চালানতো “”
রায়ান এইবার সুমুর দিকে তাকায় দেখে সে অগ্নিলাল চোখে তাকিয়ে আছে।
” এইভাবে তাকাচ্ছো কেনো তোমাকে ভয় পাই নাকি হুম””
সুমু রাগান্বিত ভাবে বলে,,
“আপনাকে তো আমি…. এই মামা রিক্সা দাড়া করান আমি নেমে যাবো।”
— এই মামা একদম না। আর তুমি,,, তোমার এক রিক্সা দিয়ে কি তোমার জায়গা হচ্ছে না। এত মোটা কেনো তুমি?
সুমু রাগে ফুসফুস করতে বলে,,,
“” কি বললেন আপনি আমি মোটা “”
রায়ান দাত দিয়ে ঠোট চেপে হাসি সংবরন করে বলে,,,,
“”” তুমি মোটা হলে আমার কোনো সমস্যা নেই। তবে যেইভাবে বসেছে আজ রিক্সা থেকে পড়বে নিশ্চিত।কাছে এসে বসো””

রায়ান সুমুর কোনো রেসপন্স না পেয়ে নিজেই হেচকা টান দিয়ে কাছে এনে বসায়।
” সুমু রীতিমত কাপাকাপি শুরু করে দিয়েছে। যেনো নিশ্বাস আটকে যাচ্ছে। প্রচন্ড পানি পিপাসা লাগছে। রায়ানের পুরুষনালী শরীরের ঘ্রান সুমুর নাকে বার বার বারি খাচ্ছে। অস্থিরতায় কপাল দিয়ে ঘাম বের হচ্ছে।””
রায়ান সুমুর এই অবস্থা দেখে ঠোট চেপে হাসি আটকিয়ে বলে,,,
“” কি হলো তুমি এইভাবে কাপাকাপি করছো কেনো? তোমার কি শীত লাগছে? আবার দেখছি কপাল বেয়ে ঘাম ও হচ্ছে।””
সুমুর কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।
খুনশুটির মাধ্যমে এইভাবেই তাদের পথ এগোতে থাক।

ঘড়ির কাটার টিকটিক শব্দে জানান দিচ্ছে এখন রাত বারোটা বাজে। ইয়ানার বিয়ের প্রায় চার দিন কেটে গেলো। বিয়ের পরের দিন রাত থেকে আহানের কোনো খবর নেই। আর না নিতে পারছে নিজের বাবা মায়ের কোনো খোজ। রাগে দুঃখে ইয়ানার কান্না আসছে। ঠিক তখনি নিজের কোমরে ঠান্ডা কিছ অনুভব করলো। শারা শরীরে এক শীতল হাওয়া বয়ে গেলো। হাতের মালিক কে হতে পারে সেটা সম্পর্কে সে অবগত। রাগ দেখাতে গিয়ে ও থেমে গেলো। যা কিছু বলতে হবে সব ঠাণ্ডা মাথায়। এই সাইকো কে রাগ দেখিয়ে বললে হিতে বিপরীত হবে।
আহান আসতে আসতে ইয়ানা গলায় চলে আসে,,,
ইয়ানা দাতে দাত চেপে সহ্য করে। চোখে ছিলো একরাশ ঘৃনা কিন্তু কন্ঠ নরম করে বলে,,,,

“” আহান “”
আহান ইয়ানার পিঠ থেকে চুল সরাতে সরাতে বলে,,
“” হুম””
ইয়ানা একটা শ্বাস নিয়ে বলে,,,
“” আমি একবার বাড়ি যেতে চায় । বাবা মায়ের সাথে দেখা করতে চায়”””
ইয়ানার কথা শুনে আহান থেমে গেলো। মুখে হালকা রাগের আভাস দেখা যাচ্ছে। গলা থেকে মুখ উঠিয়ে বলে,,,
“” সময় হলে অবশ্যয় যাবে। এখন এত লাফালাফি করছো কেনো। তোমার বাবা এখন ঠিক আছে।””
ইয়ানা আহানের দিকে তাকিয়ে চিৎকার দিয়ে বলে,,,,
“” ঠিক আছে মানে? কি হয়েছিলো আমার আব্বুর? কি করেছেন আপনি ওনার সাথে সত্যি করে বলোন আহান?
আহান বিরক্ত নিয়ে বলে,,,

“” আজবতো আমি তোমার বাবাকে কিছু করতে যাবো কেনো? ওনি বিয়ের দিন রাতে হ্যার্ট আ্যাটাক করেছেন। আমার কথা মতো ওনাকে অন্যতম হ্যার্ট সার্জন চিকিৎসা করেছেন। এখন আলহামদুলিল্লাহ ঠিক আছে। আমি কি বলেছিলাম হ্যার্ট আ্যাটাক করতে ।””
ইয়ানা আহানের কথা শুনে থামকে যায় ওর আব্বু মৃত্যু পথযাত্রী ছিলো আর ওই জানতে পারলো না। বুকটা হু হু করে কেপে উঠলো। ইয়ানা আহানের দিকে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে বলে,,,,
“” আমার আর কতো ক্ষতি করবেন আহান। আজ আপনার কারনে আমার আব্বু হ্যার্ট আ্যটাক করেছে। রোগ আল্লাহ দান করেন কিন্তু আমরা তাকেই সুলে চরায় যার উছিলায় হয়ে থাকে। আপনার তো জাহান্নামে ও ঠাই হবে না। ফেরাউনের চেয়ে ও খারাপ আপনি। “”
আহান যথেষ্ট নিজের রাগ নিয়ন্ত্রনে রাখছে। যতই হোক বউ বলে কথা। আহান ইয়ানার দিকে তাকিয়ে ভাবলেশহীন ভাবে বলে,,,,

“”” আমি ফেরাউন হলে তুমি আছিয়া হয়ে যাও। ফেরাউন যা কিছুই করতো আছিয়া কিন্তু তা মাথা পেতে নিতো। এখন থেকে তুমি ও নেওয়া শুরু করো।””
ইয়ানার ইচ্ছে করছে এই সাইকোর মাথা ফাটাতে।
তারপর তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,,,
“” ফেরাউনের ও কিন্তু পাপের রাজ্যের পতন ঘটেছিলো এইটা ভুলে যাবেন না মি. চৌধুরি। “”
আহান ইয়ানার চোখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,
“” ফেরাউন ছিলো এক পাপী যে নিজের স্ত্রীকে সম্মান দিতে পারে নি ইসলামের জন্য শহীদ হয়েছে। নিজের পবিত্র স্ত্রীকে বার বার আঘাত করেছে। কিন্তু আমি আমার আছিয়ার উপর একটা আচ ও আসতে দিবো না।আমার আছিয়ার উপর যদি কেউ কিছু করতে আসে তাহলে অগ্নি চৌধুরি তার আছিয়াকে নিজের বক্ষের মাঝে আগলে রেখে সেই শক্তির মোকাবেলা করবে। তবুও এক টুকরো আচ পরতে দেবো না।”””

এই বলে আহান এক মুহূর্ত ও দেরি না করে এইখান থেকে প্রস্থান করে।
ইয়ানা আহানের কথা শুনে স্তব্দ হয়ে দারিয়ে থেকে বিরবির করে বলে,,,,
“” আপনাকে বুঝা খুব কঠিন মি, চৌধুরি। আপনি বলেন ভালোবাসেন না কিন্তু আপনার কথা গুলো হৃদয়ে গেথে যায়। কেনো এমন করছেন? আপনার দেওয়া এই কয়েকদিনে কষ্ট আমি কখনো ভুলতে পারবো না মি, অগ্নি চৌধুরি। কি নামে আপনাকে ডাকবো বলোনতো হিংস্রতায় গ্রাস করা অগ্নি চৌধুরি। নাকি আহান চৌধুরি।আহান নামক ব্যক্তিটা আমার খুব পছন্দ ছিলো। কিন্তু অগ্নি চৌধুরির হিংস্রতার বেরাজালে আহান নামক ব্যক্যিটা বিলীন হয়ে গেছে।””””

আসাদ হোসেন তারা হসপিটাল থেকে ঢাকা ব্যক করেন।হসপিটালের সবকিছু ইউভি একা হাতে সামলেছে। রুয়ানা আর তার বাবা মাকে আগলে রেখেছে। । বাবার অসুস্থতায় রুয়ানা প্রচুর ভেঙ্গে পরেছিলো। বাবা আর বোনের এইরকম অবস্থা হয়তো মেয়েটাকে নিস্তেজ করে দিয়েছে। যেই মেয়েটা কথা বলে সবাইকে মাতিয়ে রাখতো সে আজ নিশ্চুপ শুধু চোখের পানি ফেলেছে। রুয়ানার চোখের পানি ইউভির ভিতরাটা ছারখার করে দিচ্ছিলো।তবুও যথা সম্ভব নিজেকে আটকে রেখে সবাইকে আগলে রেখেছে।আর তার পিছনে ওও আহানের হাত।
আসাদ হোসেন এখন মোটামোটি সুস্থ। ইউভি ওনাকে দেখতে এসেছে।
আসাদ হোসেন :: কেমন আছো তুমি?
ইউভি : আলহামদুলিল্লাহ আংকেল। আপনার শরীর কেমন এখন?
আসাদ হোসেন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,,,,,

“”” যারা আমার সুখে থাকার মেডিসিন তারা হলো আমার মেয়ে। এখন যখন তারাই ঠিক নেই তখন আমি কিভাবে ঠিক থাকি বলো। আসাদ কিছু বলতে যাবে তার আগেই একজন বলে উঠলো,,,,,,,,,,,
“” আপনার আদরের দুলালী একদম ঠিক আছে আব্বাজান। একটা আচর ও লাগতে দেয় নি “”””
আসাদ হোসেন আর ইউভি পিছনে ফিরে তাকায় দেখে আহান দাঁড়িয়ে আছে।
আসাদ হোসেন বলে উঠে ,,,,,
“” তুমি! আমার মেয়ে কোথায়?
আহান ভিতরে ডুকতে ডুকতে বলে,,,,
“”” কি আব্বাজান বাড়ির বড় জামাই বিয়ের এই প্রথম শশুর বাড়িতে এসেছে কই একটু জামাই আপ্যায়ন করবেন তা না করে মেয়ে নিয়ে জ্যারা করছে বেরি বেড।
Did not expect that.

আহানের কথা শুনে আসাদ হোসেনের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে । আহানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
“” রসিকতা করতে নিশ্চয় আসো নি। নিজের কোনো সার্থের জন্যই এসেছো নিশ্চয়। কি জন্য এসেছো?
আহান আসাদ হোসেনের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই ইউভি আহানের দিকে তাকিয়ে ইশারা করে যাতে কোনো উল্টাপাল্টা কথা না বলে । এমনি উনি মেয়ের দুঃখে কাতর।
আহান ইউভির ইশারাকে উপেক্ষা করে বলে ,,, একদম ঠিক ধরেছেন আব্বাজান আমি স্বার্থের জন্যে এসেছি।
আসাদ হোসেন আহানের দিকে তাচ্ছিল্য ভাবে তাকিয়ে বলে,,,,
“” সেটা আমি বুঝতে পেরেছি। এখন কেনো এসেছো সেটা বলো?
আহানের সোজাসাপ্টা উত্তর,,,
“” আসলে কি বলোন তো বউ শুধু কান্না কাটি করে তার বাবা কেমন আছে? তাই আমার একমাত্র শশুর আব্বাজানকে দেখতে আসলাম। বউকে ও নিয়ে আসতে পারতাম কিন্তু ভয়ে আনে নি যদি রাস্তার ধুলোবালি ওর শরিরে লাগে।””

আসাদ হোসেন আহানের কথায় কপাট রাগ দেখিয়ে বলে,,,,,,,
“” রসিকতা করো তুমি আমার সাথে। এক সপ্তাহ হয়ে গেছে ওর সাথে কোনো খবর নেই। তুমি কিভাবে বুঝবে পিতৃেত্বের অনুভুতি আর চিন্তা। যেদিন নিজে সন্তানের বাবা হবে ওইদিন আমার অবস্থান বুঝতে পারবে।””
আহান তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,
“” সেই সুযোগ কখনো আসবে না। তাহলে বউকে গিয়ে বলবো তার বাবা একদম ঠিক আছে। বড় গলায় কথা বলতে পারে একদম সুস্থ। তাহলে এখন আসি।
ঠিক তখনি সেলিনা হোসেন এসে বলে,,,,
“” কি বলছো তোমরা চলে যাবে মানে। আর তুমি বাড়ির জামাই এই প্রথমবার এসেছো এইভাবে খালি মুখে ফিরে যাওয়া ঠিক না””
আহান ভিবান থেকে উঠতে উঠতে বলে,,,,

“” আপনার মেয়ের সাথে মারামারি করবো না কেনো জামাই আপ্যায়ন করলো না আমায়। তাই নিশ্চিন্তে থাকুন।””
এই বলে আহান এইভি চলে যায়।
সেলিনা হোসেন স্বামীর দিকে তাকিয়ে বলে,,,
“” বাড়ির জামাই এসেছে এই প্রথম। কিন্তু সে খালি মুখে ফিরতে হলো। সাথে ইউভি বাবা ও কিছো খেলো না।”
আসাদ হোসেন স্ত্রীর দিকে কপাল কুচকে তাকিয়ে বলে,,
“” কি হয়েছে বলোতো তোমার।,যেই ছেলেটার কারনে আজ আমাদের এই অবস্থা। মেয়েটার সাথে দেখা করতে পারছি না। সে খেয়ে যায় নি বলে এইভাবে আফসোস করছো।””
সেলিনা হোসেন স্বামীর সামনাসামনি বসে বলে,,,,

“” দেখো মানছি আহান অনেক ভুল করেছে। ইয়ানাক পাওয়ার উপায়টা ভুল ছিলো। কিন্তু তুমিই ভাবো সে যদি ইয়ানাকে ভালো না বাসতো তাহলে কি এত কিছু করতো। আর তাছাড়া আমার মেয়ে ওতো ঠিক আছে। হয়তো কোনো কারনে ও ইয়ানাকে বাহিরে আনছে না। তোমার অসুস্থতায় সমস্ত খেয়াল রেখেছে ইউভির মাধ্যমে। তাহলে ছেলেটা খারাপ কোন দিক দিয়ে। “””
আসাদ হোসেন অবাক চোখে তাকিয়ে বলে,,,
“” এই কথা তুমি বলছো সেলিনা “”
সেলিনা হোসেন কান্না করতে করতে বলে,,,,
“” আমি আর কি বলতে পারি। আমি তো মা সন্তানকে খুশি দেখলেই আমার খুশি। এখন আমরা যদি স্বাভাবিক না হয় তাহলে কি আমরা আমাদের মেয়েকে দেখতে পারবো না।””
বলেই ডুকরে কেদে দিলেন।

রায়ান আসামীর মতো বসে আছে। তার সামনে ইউভি আর আহান কপাল কুচকে তাকিয়ে আছে।
ইউভি নিজের হাসি নিয়ন্ত্রনে রেখে রায়ানকে ঠাট্টা করে বলল,,,,
ইউভি :: তুই একটা মেয়েকে নিয়ে রিক্সা ভ্রমন করলি রায়ান। তোর আবার নারী সঙ্গ কবে থেকে ভালো লাগতে শুরু করলো।
রায়ান ইউভির দিকে তাকিয়ে দাতে দাত চেপে বলে,,,
“” অনেকদিন ধরে রিক্সায় উঠি না তাই একটু উঠতে ইচ্ছে করেছিলো। এখন পাশে যদি মেয়ে থাকে এখন আমি কি করবো।”

আহান ::: পাশের মেয়েটা সম্ভাবত সুমু ছিলো তাই না?
রায়ান আহানের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকায়।তারপর আশ্চর্য হয়ে বলে,,,,
“” ও.ওইটা ও জানোস!””
আহান বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে বলে,,,
“” না জানবো কিভাবে তুই তো বোরকা পড়া ছিলি তাই দেখি নি। কিন্তু সুমুকে দেখেছি””
রায়ান আহানের কথা শুনে ভেবাচেকা খেয়ে যায়।
ইউভি ::: তুই যদি সুমুকে ভালোবাসিস তাহলে বলে দে।
রায়ান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,,,,,
“”” বলতে চাই কিন্তু ভয় হয় যদি ভুল বুঝে। ও আর পাচটা মেয়ের মতো না। “”””
আহান খাপছাড়া ভাব নয়ে বলে,,,,
“”” ভুল বুঝার কি আছে। ভালোবাসিস তাই বলেছিস। যদি এক্সেপ্ট না করে তাহলে জোর করে বিয়ে করে ফেলবি।
রায়ান আর ইউভি আহানের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকায়। রায়ান বলে,,,,,,
“” এইটা একমাত্র তোর ধারা সম্ভব শশুর শাশুরির মাথায় বন্ধুক ঠেকিয়ে বিয়ে করে নেওয়া। এইটা আমি পারবো না।”””

আহান মুখে বিরক্তি নিয়ে বলে,,,,,,,
“” তর মতো আহাম্মক কেনো ভালোবাসতে গেলি। যখন সামান্য একটা মেয়েকে নিজের ভালোবাসা কথা বলতে পারিস না। সেই জন্য এইসব ভালোবাসা আমি যাস্ট নিতে পারি না অসহ্য লাগে।”””
রায়ান আহানের দিকে ঠাট্টার সুরে বলে,,,,,
“” মামা তুমি ভালোবাসো কিন্তু বুঝতে পারছো না। জোর করে বিয়ে করে বাসর করে ফেলেছিস আর বলিস ভালোবাসিস না।””
আহান রায়ানের দিকে তাকিয়ে এক ভ্রু উচু করে বলে,,,,
“” বাসর রাতে তুই আমার রুমে ভিবানে বসে বসে বাসর দেখেছিলি বুঝি।,,
ইউভি আহানের দিকে তাকিয়ে আহত সুরে বলে,,,,,,

“” তার মানে তোর বাসর হয় নি। তুই পাক্কা ভার্জিন।”””
আহান মোবাইলে স্ক্রল করতে করতে উত্তর দেয়।
“” হুম “”
রায়ান কান্নার অভিনয় করে বলে,,,
“”” এত কিছু করে বিয়ে করে শেষে কিনা বাসর করতে পারলি না কি কষ্ট তোর ভাই। জোর করে বাসরটা ও করে ফেলতি।”””
আহান ইউভির দিকে তাকিয়ে বলে,,,

“” ওর নাটক বন্ধ করতে বল। মেজাজ গরম হচ্ছে। নয়তো এখানেই শুট করে দিয়ে যাবো।””””
রায়ান ও চুপ হয়ে যায় অনেক কষ্টে নিজের হাসি আটকিয়ে রাখছে। নারী বিদ্দেশী ছেলে এক নারীর মায়ায় জরিয়ে যাচ্ছে বুঝতে ও পারছে না।
তাদের কথার মাঝেই আহানের মোবাইলে ফোন আসে।
আরিফ ::: স্যার শরীফ আমিনের লোকেরা আপনার নির্দেশ করা সত্তেও মেয়ে গুলাকে পাচার করে দিচ্ছে। আর সাথে অনেক কিছু পাচার করছে।

অনুভবে তুমি পর্ব ২০

আহানের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। রাগে তার শরীর কাপা শুরে করে। অগ্নি চৌধুরির কথাকে অমান্য করার সাস্থি তো তোকে পেতে হবে শরীফ আমিন। ভালোভাবে বুঝিয়েছিলাম মেয়েগুলোকে ছেড়ে দিতে। মেয়েগুলোর জীবন নষ্ট না করতে। আজ তোর পাপের রাজত্যের সমাপ্তি ঘটাবো।

অনুভবে তুমি পর্ব ২২