অনুভবে তুমি পর্ব ২৬

অনুভবে তুমি পর্ব ২৬
লিজা মনি

রাত্রি শেষে ধরনীতে আগমন ঘটে প্রভাতের। সকালের আলো চোখে পরতেই ইয়ানা পিটপিট করে চোখ মেলে তাকায়। মাথাটা প্রচুর ব্যথা করছে। মনে হচ্ছে মাথায় কোনো শক্ত জিনিস রেখে দিয়েছে। একটু নড়তেই মনে হচ্ছে সাপের মতো কেউ পেচিয়ে রেখেছে। ইয়ানা ভালোভাবে চোখ মেলে তাকাতেই কাল বিকেলের ঘটনা মনে পরতে থাকে। রাগে আর ঘৃনায় চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। পাশ ফিরে আহানকে দেখে আরো বেশি তব্দা খায়। ইয়ানাকে বক্ষের সাথে পেচিয়ে আধশুয়া হয়ে ঘুমিয়ে আছে। ইয়ানা আহানের বাহু থেকে নিজেকে ছড়াতে উদ্ধত হয়ে পড়ে। এই ডেভিল মাফিয়ার সাথে আর থাকা যাবে না। সাহস কি করে হয় চরিত্র নিয়ে কথা বলার। ইয়ানার ছটফটের কারনে আহানের ও ঘুম ভেঙ্গে যায়। আহান ইয়ানার কপালে হাত দিয়ে বলে,,,,,

“” কেমন লাগছে এখন? বেশি কষ্ট হচ্ছে বলো আমাকে? এখনো কি জ্বর অনুভব হচ্ছে? ”
ইয়ানার কাছে কথাগুলো বিরক্ত লাগছে। লোকটা এমন ন্যাকামো করছে কেনো। মনে হচ্ছে কত খেয়াল রাখে আমার। কালকের কথা কি ভুলে গেছে। কি করেছেন ওনি। আজ দেখো কিভাবে যত্ন নিচ্ছে। চাই না আমার এমন যত্ন। প্রয়োজন নেই ওনাকে। ইয়ানা বিরক্ত নিয়ে নিজের শরীর থেকে আহানের হাত জারা মেরে ফেলে দেয়। তারপর বলে,,
” ছোবেন না একদম আমায়। আর এইসব ন্যাকমো করবেন না যাস্ট অসহ্য লাগে “”
আহান নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে আসলে ও আপাযত কিছু বলে না। কারন সে এখন রাগতে চাই না।
আহান ইয়ানাকে উদ্দেশ্য করে বলে,,,,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“” ফ্রেশ হয়ে নাও ডক্টর আসবে “”
ইয়ানার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না তবুও কপাল কুচকে বলে,,,
“” ডক্টর কেনো? “”
আহান ইয়ানার দিকে না তাকিয়ে বালে,,,
— “রাতে জ্বর যে এসেছিলো সেই জন্য। কয়েকটা থাপ্পর খেয়ে কারোর জ্বর চলে আসে সিরিয়াসলি। কি বিয়ে করলাম ভাই কয়েক থাপ্পরে বউ অজ্ঞান হয়ে জ্বর চলে এসেছে। ছেহহ অগ্নি চৌধুরির কপালে এই ছিলো।
ইয়ানা কিছু একটা বলতে যাবে তখন অনুভব করলো দুটি গাল ব্যাথায় টনটন করছে। তারপর আস্তে করে বলে,,
— নিজের হাতের দিকে একবার তাকিয়েছেন। দানব আকৃতির হাত। আল্লাহ যে বাঁচিয়ে রেখেছে এতেই আমি অনেক খুশি। তাছাড়া আমার জ্বর এসেছিলো কখন। আর আমার জ্বর আসোক বা মরে যাই তাতে আপনার কি? আপনাকে এত কিছু ভাবতে হবে না। ”

আহান নিজের রাগটাকে আর আটকাতে পারে নি
খাটের পাশে রাখা কাচের জগটা সজোরে ফেলে দিয়ে বলে,,,
” ঠিক বলেছিস তোকে মেরে ফেলা উচিৎ ছিলো। সারারাত জেগে জ্বর কমার জন্য সেবা না করে একদম গলা টিপে মেরে ফেলা দরকার ছিলো। এমনিতে আমি অনেক খুন করেছি। আর তোর মতো এমন একটা ঘার ত্যারাকে মারলে অগ্নি চৌধুরির কিছু যায় আসতো না “”
ইয়ানা আহানের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকায়। অগ্নি চৌধুরি রাত জেগে কাউকে সেবা করেছে তাও আবার আমাকে। এইটা কি সপ্ন নাকি বাস্তব কথা। হঠাৎ করে ইয়ানার অবাধ্য চোখ গুলো আহানের হাতের দিকে যায়। হঠাৎ করে বুকটা আতকে উঠে। হাত থেকে তাজা লাল রক্ত ফ্লুরে টিপ টিপ করে পড়ছে। ইয়ানা বিচলিত হয়ে আহানের হাত ধরতে গেলে আহান হাত সরিয়ে নিয়ে বলে,,,,

“” ছুবে না একদম আমায়। আমার থেকে দুরে যাওয়ার ইচ্ছে আছে তাই না ঠিক আছে এখনি মেরে দিচ্ছি।আমার থেকে দুরে যেতে পারবে একমাত্র মৃত্যুর মাধ্যমে। তাই এইসব এক্সট্রা কেয়ার দেখাতে হবে না। “”
ইয়ানা রাগী চোখে তাকিয়ে বলে,,,
“” বার বার মেরে দিবেন দিবেন বলেন কেনো? মারতে পারবেন কখনো আমায়। আপনি নিজে ও জানেন কখনো মারতে পারবেন না। তাই এখন এইসব কথা বাদ দেন মারার হলে মেরে দিয়েন কিছু বলবো না। আগে হাতটা দেখতে দিন “”
ইয়ানা আহানের হাতটা নিজের উরুর উপর নিয়ে বলে,,,
“ইসস কতক্ষানি কেটেছে। কিন্তু দেখে তো মনে হচ্ছে না এখন কেটেছে। এইটা তো ছোট ছোট ছুরির দাগ। সত্যি করে বলুন কিভাবে কেটেছেন? কাল তো ঠিক ছিলো।”
আহান ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,

“” কি করবো এই হাত দিয়ে কাল কতগুলো থাপ্পর দিয়েছি। খুব কষ্ট পেয়েছো তুমি। রাতে প্রচুর জর এসেছিলো। হাত তো আর কেটে ফেলতে পারবো না কেটে ফেললে তোমায় আদর করবো কিভাবে? তাই যতটুকু পেরেছে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছি। আর এইসব আঘাতে অগ্নি চৌধুরির কিছু হয় না ”
ইয়ানা—- “সত্যি আপনার মানুষিক সমস্যা আছে। নাহলে কোনো সুস্থ মানুষ এতটা ডেম্পারেট কিভাবে হয়। নিজেকে নিজে কেউ এইভাবে আঘাত করে। যখন আমাকে আঘাত করেন তখন মনে থাকে না। এখন তাই বলে নিজেকে আঘাত করবেন। ”
ইয়ানা এইসব বলতে বলতে হাতে মলম আর বেন্ডেজ করে দেয়।
আহান তারপর খাট থেকে উঠে ড্রায়ার থেকে একটা পেপার বের করে এনে ইয়ানার হাতে দিয়ে বলে,,,

— এই নাও এইটা তোমার জন্য।
ইয়ানা কপাল কুচকে কাগজটা হাতে নিয়ে খুলতেই মুখে একরাশ হাসির ঝিলিক প্রকাশ পায়। খুশিতে আত্নহারা হয়ে সমস্ত রাগ ভুলে গিয়ে আহানকে জরিয়ে ধরে বলে,,,
“” থ্যান্ক ইউ মি. চৌধুরি থ্যান্ক ইউ সো মাচ। আমাকে আবার ভার্সিটিতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য।”
আহান শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়েছে,,,
কে বলবে এই মেয়ে ভার্সিটি পড়ুয়া এডাল্ট মেয়ে। লাফালাফি করছে একদম বাচ্চাদের মতো। এখন যে আমাকে জড়িয়ে ধরলো যদি উলটা পাল্টা কিছু করে ফেলি সেই ধারনা আছে এই মেয়ের। নাহহ এই মেয়ে কখনো শান্তিতে থাকতে দিবে না। অসভ্য ঘার ত্যারা একটি মেয়ে। আমার অবাধ্য ইচ্ছেগুলোকে বার বার জাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
এরপর আহান ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,

“” এইভাবে জড়িয়ে ধরে রাখবে নাকি ছড়বে। দেখো বউয়ের সাথে রুমান্স করার একটু ও সময় নেই। রাতে আমি একদম ফ্রি থাকি তখন জড়িয়ে ধরবা। আর ভার্সিটিতে যেতে মানা করেছি কখনো। এতদিন আটকে রাখার জন্য উপযুক্ত কারন ছিলো। সময় হলে সেটা ও জানতে পারবে। কিন্তু আমি আজ ও জানতে পারলাম না বউ আমাকে কবে থেকে ভালোবাসতে শুরু করেছিলো।”
ইয়ানার প্রথমে আহানের কথা শুনে লজ্জা লাগলে ও লাস্টের কথায় অবাক হয়ে তাকায়।
আহান ইয়ানার তাকানো দেখে বলে,,,
” এইভাবে তাকাচ্ছো কেনো। বললাম না এখন রোমান্স করার সময় নেয়। ”
ইয়ানা আহানের কথা শুনে বিরক্তি নিয়ে বলে,,
“” অসভ্য মুখে কিছু আটকায় না। ভালোবাসি কখন বললাম আপনাকে। আপনার মতো এমন ক্যঙ্গারুকে কে ভালোবাসতে যাবে। “”

আহান ইয়ানাকে বিছানায় ফেলে দিয়ে দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে দাতে দাত চেপে বলে,,,,
“” হুয়াট রাবিশ কে কেঙ্গারু? সাহস কি করে হয় কেঙ্গারু বলার। অগ্নি চৌধুরির এক রাতের বেড পার্টনার হওয়ার জন্য কত মেয়ে লাইন লেগে থাকতো আর তোমার মতো এইতটুকু একটা মেয়ে আমায় ক্যাঙ্গারু বললছো। “”
ইয়ানা তো মজা করে বলছিলো। কিন্তু এই লোক এইভাবে রেগে যাবে কে জানতো। তবে বেড পার্টনার হতে চাইতো এই কথাটা একদম ভালো লাগে নি। ইয়ানা মন খারাপ করে বলে,,,,,
“” নিজের বডি যদি দেখিয়ে দেখিয়ে যদি হেঁটে চলেন তাহলে তো মেয়েরা চাইবেই। এখানে আহামরি কিছু নেই। সরুন আমার উপর থেকে যে মেয়েগুলো আপনাকে চাইতো তার কাছে যান। “”
আহান ইয়ানাকে আরেকটু জোরে চেপে ধরে দাত দিয়ে ঠোট কামড়ে বলে,,,,

“” আর ইউ জেলাস? “”
— আশ্চর্য এখানে জেলাসের কি আছে? ”
তাদের কথার মাঝেই দরজায় টুকা পড়ে। আহান বিছানা থেকে নামতে নামতে বলে,,,
“” মনে হয় ডক্তার চলে এসেছে। ”
— আপনি সত্যি সত্যি ডাক্তার ডেকেছে? আপনার ধানব মার্কা হাতের থাপ্পর খেয়ে সামান্য জ্বর এসেছিলো। এইটা তো এমনি ঠিক হয়ে যেতো।
—- বেশি বুঝো আমার থেকে। তোমাকে নিয়ে আমি কোনো রিক্স নিতে চাই না। সেটা জ্বর বা অন্য কিছু গট ইট।
ইয়ানা ও আর কথা বাড়ায় না। নিজের মাথায় বড় একটা ঘোমটা টানে যাই হোক মুখ দেখানো যাবে না। থাপ্পরের দাগ এখনো গালে দেখা যাচ্ছে। দেখতে পারলে ইজ্জত শেষ।
এর পর ডক্টর রুমে এসে ইয়ানার চেকআপ করে বলে,,,

“” হয়তো একটু মানসিক চাপের কারনে জর এসেছিলো
এখন আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ। ”
আহানের কাছে ডক্টরের কথাগুলো পছন্দ হয় নি। সারারাত ওর বউ জরে ছটফট করেছে আর ডক্টর ভালোভাবে চেক আপ না করেই বলে ঠিক আছে।
আহান ডক্টরের দিকে বিরক্তি নিয়ে বলে,,,
“” আপনার ডক্তারি নিয়ে আমার সন্দেহ হচ্ছে। কে বলেছে ঠিক আছে? আপনি ভালোভাবে দেখেছেন? ভালোভাবে দেখে বলেন ঠিক আছে কি না নাহলে আমি হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছি “”।

ডক্টর ভেবলার মতো তাকিয়ে আজ প্রথম বার কেউ তার পেশার উপর সন্দেহ করেছে। সে কারোর বাসায় যায় না আহানের বাবা ওনার ফ্রেন্ড তাই ওনি ফোন পাওয়া মাত্রই চলে আসে। নিজের পেশা দিয়ে অনেক সুনাম অর্জন করেছেন ওনি। আর আজ কি না একজন সুস্থ ব্যক্তিকে সুস্থ বলায় ওর পেশার দিকে আঙ্গুল তুলবে।
ইয়ানার আহানে কথা শুনে বিরক্তি লাগছে। লোকটা আসলেই সাইকো।
এর পর ইয়ানা ডক্টরের দিকে তাকিয়ে বলে,,,

“” ওহহ আঙ্কেল কিছু মনে করবেন না আমি এখন সুস্থ। আপনি এখন যেতে পারেন। “”
ডাক্তার চলে যাতেই আহান বিরক্তি নিয়ে বলে,,,
“” আজকাল যে কেউ ডাক্তার হয়ে যায়। চলো তোমাকে নিয়ে হসপিটালে যাই। ”
ইয়ানার বিরক্তি লাগলে ও কিছু করার নেই। ঠান্ডা মাথায় বলে,,,
“” আমার কিছু হয় নি আহান আমি একদম ঠিক আছি। ”
আহান কপাল কুচকে বলে,,,,
“” ঠিক তো?
—- হুম পাক্কা। আপনার তো অফিসে দেরি হয়ে যাচ্ছে আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন।
আহান চলে যেতেই ইয়ানা একটা শ্বাস নেয়। মনে মনে বির বির করে বলে,,,, সাইকো একটা।

ইয়ানা আহান আহিয়াকে বিদায় করে দিয়ে রুমে ডুকতেই চোখ যায় ড্রেসিং টেবিলের উপর বক্সটার দিকে। হাতে নিয়ে দেখতে পায় অনেক দামি একটা ফোন। সাথে রয়েছে একটা চিরকুট।
“” ফোন পেয়েছো ভালো কথা আজেবাজে নম্বর সেইভ করবে না। যদি এমন কিছু দেখি তাহলে মোবাইল কেড়ে নিতে ও সময় লাগবে না। আর আমি ফোন দিলে সাথে সাথে রিসিভ করবে। একটু ও যাতে দেরি না হয় । ভার্সিটিতে গেলে আমি পাশে থাকবো না তখন ফোন কাজে লাগবে।””
ইয়ানা তো শুধু অবাক হচ্ছে। এক সাথে এত গুলো ঠিক হজম হচ্ছে না।

আহান নিজের কেবিনে কিছু ফাইল চেক করছিলো। তখনি বাহির থেকে টুকা পরে,,,,
আরিফ — ভাই আসবো?
আহান ফাইলের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
“” আয় কি খবর পেয়েছিস ওইটা বল।
আরিফ —- ভাই রায়হানের মৃত্যুর খবর ওরা জেনে গিয়েছে। এখন ওর বাপ পাগলা কুকুরের মতো ক্ষেপে আছে। সময়ের অপেক্ষা করছে কখন প্রতিশোধ নিবে। রায়হানের মামা কানাডার জেল থেকে এখনো মুক্তি পায় নি। শুনেছে রায়হানের বাপ আর মা বাংলাদেশে ব্যাক করছে।
আহান —- জানি আমি এইসব। আমাকে হুমকি ও দিয়েছিলো। আমার বউকে নাকি মেরে দিয়ে আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিবে। কিন্তু ও জানে না আমি অগ্নি চৌধুরি বেঁচে থাকতে ওর বউয়ের উপর কেউ নজর ও দিতে পারবে না। তবুও বউটাকে কয়েকদিন সবার আড়ালে রেখেছি। বাড়ি থেকে বের হতে দেয় নি। কিন্তু এখন স্বাধীন আমার বউ ভার্সিটিতে যাবে দেখি কার কত কলিজা ওকে কিছু করার। আমি ও তার কলিজা ছিড়ে কুকুরের আহার বানাবো। “””

আরিফ মাঝে মাঝে ভেবে পাই না এমন হৃদয়হীন মানুষ ও কাউকে এত ভালোবাসতে পারে। অন্ধকার টর্চার সেলে যে খেলায় মেতে উঠে কতটা ভয়ংকর আকার ধারন করে সেটা শুধু আমরা জানি। কিভাবে তিলে তিলে মানুষের দেহ থেকে রুহ আলাদা করে। কিন্তু দেখো ভাবির জন্য কত ভালো বাসা। কিন্তু ভাবি তো ভাইয়ের আসল রুপ এখনো দেখেনি। সহ্য করতে পারবে তো ওনি? নাকি সময়ের ব্যবধানে সবকিছু পাল্টে যাবে। ছেয়ে যাবে কোনো এক অন্ধকার ভবিষ্যৎ।
আহান আরিফকে এইভবে ভাবলেশহীন ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কপাল কুচকে বলে,,,,
“” কি হয়েছে মাঝ রাস্তায় এইভাবে খাম্বার মতো দাড়িয়ে আছিস কেনো। “”
আরিফ ভাবনার মধ্যেই বলে,,,,
“” ভাবছি মানুষ এতটা ভালো কি করে বাসতে পারে। আর সে যদি হয় কোনো হৃদয়হীন মানুষ”
আহান—– মানে কি বলতে চাইছিস তুই।
আহানের ধমকে আরিফের হুশ আসে। সে এতখনে বুঝতে পারে কি বলতে যাচ্ছিলো। তারপর কথা ঘরিয়ে বলে,,,,
“” না না ভাই তেমন কিছু না। এমনি বলছিলাম আরকি।”
আহান চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে বলে,,,,

“” ঠিক আছে এখন বের হ রুম থেকে। আমার কিছু কাজ আছে। “”
আরিফ ও কোনো কথা ব্যয় না করে কেবিন থেকে বের হয়ে পড়ে।
আরিফ চলে যেতেই আহান নিজের ল্যাপটপ ওপেন করে ইয়ানার কান্ড দেখে বড়সড় ঝটকা খায়।
ইয়ানা আহানের শার্ট আর প্যান্ট পড়ে উরাধুরা ডান্স করছে। পুরো ঘরের অবস্থা খারাপ। মুহূর্তের মধ্যে যেনো রাগটা মাথায় চেপে বসে। নিজের জামা কাপড়ের এই অবস্থা দেখে চোয়াল শক্ত হয়ে যায় । এখন ইয়ানা সামনে থাকলে নির্ঘাত কয়েক ঘা থাপ্পর খেয়ে ফেলতো। সাহস কি করে হয় এই মেয়ের আমার জামা কাপড় ধরার।

অনুভবে তুমি পর্ব ২৫

অগ্নি চৌধুরির জিনিসপত্রে হাত দেওয়ার সাহস কারুর নেই। আর এই মেয়ে জামা কাপড় নিয়ে নাচানাচি করছে। তারপর আবার বিরক্তি নিয়ে ল্যাপটপ এর দিকে তাকায় এখন ইয়ানাকে ভালোভাবে পরখ করে ঠোটের কোনায় হালকা একটা চিলতে হাসি ফুটে উঠে। কারন আহানের শার্ট ইয়ানের হাটু বরাবর। পেন্ট পরার কারনে পা গুলো দেখা যাচ্ছে না। হঠাৎ করে আহানের পেট ফেটে হাসি পাচ্ছে ইয়ানার এই রুপ দেখে। কেমন জানি ভালো লাগা কাজ করছে। এই পোশাকে ও ইয়ানাকে নিজের কাছে হুরপরী লাগছে। ইয়ানার দিকে আর তাকাতে পারলো না নয়তো এই মেয়ের রুপে ঘায়েল হয়ে আজ আর মিটিং এ মন বসবে না।

অনুভবে তুমি পর্ব ২৭