অনুভবে তুমি পর্ব ৫৬
লিজা মনি
ইয়ানা চিৎকার দিয়ে বলে,,,,
“” ও ছোট দুধের বাচ্চা। শরীরে ব্যথা পাবে হাড় ভেঙ্গে যেতে পারে”
কে শুনে কার কথা সাহিল ইয়াজকে ছুড়ে মারে রানবীরের উদ্দেশ্যে।
ইয়ানা এক গগন বিধায়ী চিৎকার দিয়ে বলে,,,,
“” ইয়াজ ”
ইয়ানার চিৎকার দেওয়ার সাথে সাথে এক বিকট শব্দ এসে কানে বারি খায়।
ইয়ানা শব্দ শুনে কলিজা কেঁপে উঠে। মনে হচ্ছে কেউ ওর হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছে। ওর ইয়াজের কিছু হই নিতো। হৃদয়টা হাহাকার করে উঠে। মনে হচ্ছে জীবন বের হয়ে যাচ্ছে কিন্তু নিশ্বাস প্রবাহমান। ইয়ানা সাহস করে একবার তাদের দিকে তাকায় দেখে ইউভি সাহিলের মুখ চেপে ধরে বন্ধুক ঠেকিয়ে রেখেছে। আর সাহিল গুলি খেয়ে ছটফট করছে। অন্যদিকে তাকাতেই দেখতে পায় আহানের কোলে ইয়াজ। আহান ইয়াজের মুখে অজস্র চুমু দিয়ে কান্না থামানোর চেষ্টা করছে। ইয়ানার প্রান ফিরে এসেছে সবাইকে দেখে। কিন্তু তারা এখানে আসলো কিভাবে? তারা কিভাবে জানলো আমি এখানে আছি। রানবীর, সাহিল তারা হয়ত কখনো।কল্পনা ও করে নি আহান এখানে চলে আসবে। আহানকে দেখে তাদের ভয়ে কাপাকাপি শুরু করে দেয়। জানালা দিয়ে উকি দিতেই দেখতে পায় তাদের সব গার্ড রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে। কিন্তু তাদের কে কখন মারলো শব্দ শুনতে পাই নি কেনো?
রায়ান রানবীরকে একাধারে মারতে থাকে। আহান তাড়াতাড়ি করে ইয়ানার কাছে যায়। কিন্তু ইয়ানা একদম শান্ত। আহান ইয়ানাকে বুকের সাথে জড়িয়ে বলে,,,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“” তুমি ঠিক আছো? কিছু হই নিতো তোমার। ”
ইয়ানা কিছু না বলে ইয়াজকে কোলে নিয়ে বুকের সাথে চেপে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠে। সারা মুখে অজশ্র চুমু দিতে থাকে। এই ছোট প্রানটার কিছু হলে ইয়ানা হয়ত নিজেকে শেষ করে দিত। ইয়ানার কান্না দেখে আহান বলে,,,,,
” কিছু হয় নি। আল্লাহ সাথে ছিলো তাই সময়মত পৌছাতে পেরেছি।
এরপর রায়ানকে ডাক দিয়ে বলে,,,,,
” রায়ান ইয়ানাকে নিয়ে বাড়িতে যা ওদেরকে আমি আর ইউভি দেখছি ”
রায়ান — সামলাতে পারবি তো।
আহান — এদের মত এমন হাজারটা চিনেপুটিকে আমি একা হাতে সামলেছি।
রায়ান আর কিছু বলে না আহানের কথা অনুযায়ী ইয়ানাকে নিয়ে বের হয়ে যায়।
ইয়ানা চলে যাওয়ার পড়ে আহান অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে হিংস্র হায়েনার ন্যায় তাকায়। এতক্ষনে ইউভি তাদের মারতে মারতে আধমরা করে দিয়েছে। আর লিনিয়াকে দড়ি দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে।
আহান একটা চেয়ারে বসে তাদের দিকে তাকায়। চোখ থেকে মনে হচ্ছে আগুনের শিখা বের হচ্ছে। চোখ বন্ধ করলেই মনে হয় রক্ত গড়িয়ে পরবে।
আহান সাহিল আর রানবীরের চুলের মুঠিতে ধরে গর্জন করে বলে,,,,
“” কি বলছিলি তোরা আমার সন্তানকে মেরে আমাকে তিলে তিলে শেষ করবি। আরে পাগলের দল আমার সাথে লাগতে গেলে আমার সম্পর্কে তো পুরোপুরি জেনে আসবি। না জেনেই আগুন নিয়ে খেলতে চলে এসেছিস। কিন্তু তোরা জলবি এমন জলা জলবি যে নিজের চেহারা দেখলে ও রুহ কেঁপে উঠবে।
সাহিল — তুই কিভাবে জেনেছিস আমরা এখানে আছি? এইটা তো জানার কথা না। আর এত কম সময়ে কিভাবে এত গার্ডদের শেষ করলি। তাদের একটা চিৎকার ও শুনতে পেলাম না।
আহান রহস্যময় হাসি দিয়ে বলে,,,,,
“” কি বোকা তুই সাহিল। আমি আমার বউকে নিয়ে বাহিরে বের হচ্ছি কোনো নিরাপত্তা ছাড়াই। যখন জানি আমার পিছনে তদের মত কুত্তা আছে। আমার বউ আর বাচ্চা যেখানে যাক না কেনো সবসময় অগ্নি চৌধুরির দৃষ্টির ভিতরে সীমাবদ্ধ থাকে। আমার বউয়ের শরীরের স্পর্শ করিস কোন সাহসে? হাউ ডিয়ার ইউ টাচ মাই ওইয়াইফ? তর খেলাই একটা ভুল করেছিস কোনো নেটওয়ার্ক এর বাহিরে না গিয়ে। নেটওয়ার্ক এর ভিতরে ছিলি তাই খুব সহজে খুজে নিয়েছি। ছোট একটা আঙটি ওর হাতে সবসময় থাকে যেটার মধ্যে ক্যামেরা ফিট করা। একটু তো খেয়াল করবি নাকি। না পেরেছিস বিয়ে করে আমাকে ধ্বংস করতে আর না পেরেছিস এখন আমার ছেলের শরীরে একটা আচর দিতে। হেরে গেছিস তুই সাহিল মুখ থুবরে পরেছিস আমার পায়ের সামনে।”
সাহিল — কিন্ত গার্ড গুলা কোনো শব্দ ছাড়াই কিভাবে মরেছে?
আহান বাকা হাসি দিয়ে বলে,,,,
” আমি কিছু করি নি তদের গার্ডদের ড্রিনংক্সে বিষ ছিলো যার কার্যকারিতা ছিলো বিশ মিনিটের ভিতরে তাদের মৃত্যু।
সাহিল — বিষ কিভাবে মিশিয়েছিস তুই?
আহান — আমি নয় অন্যজন মিশিয়েছে।
সাহিল — ক. কে?
আহান — তর আদরের আন্টি।
এরপর আহান লিনিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
“” কি মিসেস লিনিয়া বলব তাদের? আপনি আমাকে অনেক উপকার করেছেন ফলে আপনার মৃত্যুর কষ্টটা কম হবে।
লিনিয়া মেকি হাসি দিয়ে বলে,,,,,
“” জীবনে যত পাপ করেছি তার জন্য আমার মৃত্যু ও কম হবে। আমি এমন শাস্তি চায় যেখানে আমার বোনের আত্না শান্তি পাবে। এই লোকটার কথায় আমি অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু এই লোক কখনো আমাকে ভালোবাসে নি। তার টার্গেট ছিলো চৌধুরি বাড়ির সম্পত্তি। আমাকে আমার বোনের চেহারা বানিয়ে দিয়েছে। আমাকে অন্ধের দিকে পা বাড়াতে সাহায্য করেছে এই লোক। যখন আমাকে দেশের বাহিরে নিয়ে যায় তখন ও সম্পত্তির লোভ ছিলো কিন্তু যখন দেখেছে সব হাতের বাহিরে চলে গেছে তখন এই লোকের আসল চেহারা বের হতে থাকে। আমাকে একটা দাসী বানিয়ে রেখেছে। পর নারী নিয়ে তামাশা করেছে আমার সামনে দিনের পর দিন। আমার ছেলেটাকে ভুল পথে পা বাড়াতে সাহায্য করেছে। কিন্তু ওর মরে যাওয়াতে কষ্ট হয়েছে তবুও শান্তি পেয়েছি পাপের জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছে। আমি ও বাঁচতে চাই না নরক যন্ত্রনা দিয়ে মরতে চাই। কিন্তু আমার একটাই কথা এই নরখাদক কে ছাড়িস না আহান। ও সমাজের একট বিষ যেটা আমি পান করেছিলাম। ও আর ও বিষ ছড়ানোর আগে ওকে শেষ করে দে বাবা।
লিনিয়ার কথা শেষ করার আগেই রানবীর চেচিয়ে বলে উঠে,,,,,
“” কু*** বাচ্চা আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করিস। তকে আগেই মেরে ফেলা উচিত ছিলো এত দিন বাঁচিয়ে রাখা উচিৎ হই নি। সম্পত্তি তো আর এমনি ও পাই নি। ”
আহান রানবীরের গলায় ছুরি দিয়ে হালকা কেটে বলে,,,,
” জবান ছিড়ে ফেলব তর রানবীর। ”
গলা থেকে অনর্গল রক্ত বের হচ্ছে। আহান রহস্যময় হাসি দিয়ে সাহিলের দিকে ঘাড় কাত করে তাকায় এরপর একটা ধারালো ছুড়ি নিয়ে সামনে গিয়ে বসে,,,,
“” কোন হাত দিয়ে যেনো আমার ছেলেকে কষ্ট দিয়েছিস? নিশ্চয় দুই হাত দিয়ে ধরেছিলি তাই না। তাহলে তো দুই হাত কেটে ফেলা উচিৎ।
আহানের কথা শুনে সাহিল আৎকে উঠে। কিন্তু আহানের মুখে লেগে আছে পৈশাচিক হাসি।
ইউভি — আহান ওদেরকে আইনের হাতে ছেড়ে দে ফাঁসি দিয়ে দিবে। তুই আর এইসবে পা বাড়াস না।
আহান দাতে দাত চেপে বলে,,,,
“” ওরা আমার মা আর কাকা কাকিয়ার খুনি ওদেরকে ছেড়ে দেওয়া মানে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করা। ওদেরকে আমি নরকময় যন্ত্রনা দিব।
ইউভি চুপ হয়ে যায়। সে জানে এখন হাজার কিছু বলে ও আটকাতে পারবে না।
আহান সাহিলের মুখে একটা কাপড় বেধে দেয় যাতে চিৎকার করতে না পারে।
এরপর একটা বাকা হাসি দিয়ে বিরবির করে বলে,,,
“” এই হাত দিয়ে কষ্ট দিয়েছিস তাই না।
এরপর কেউ কিছু বুঝার আগেই এক এক করে হাতের সব গুলো আঙ্গুলের উপর কুপাতে থাকে। যেনো মনে হচ্ছে কাচা মরিচ কাটা হচ্ছে। সাহিল বাধা থাকার কারনে চিৎকার ও করতে পারছে না। এরপর সেই কাটা যায়গায় কিছুক্ষন চেয়ে আরিফের উদ্দ্যেশ্যে বলে,,,,
“” আরিফ আমার গাড়ির মধ্যে দেখ গুড়া মরিচ আছে নিয়ে আয়।
আরিফ আহানের কথা মত গুড়ো মরিচ নিয়ে আসে।
আহান সেই গুড়ো মরিচ হাতে নিয়ে সাহিলের কাটা হাতের উপর দিয়ে দেয়। সাহিল গলা কাটার মুরগির মত ছটফট করতে থাকে।
আহান এইটুকুতেই দমে যায় নি বাম হাতে এক কুপ দিয়ে দেহ থেকে হাত আলাদা করে নেয়।
আহান — এই হাত এর পেশি থেকে শক্তি এসেছে তাই না। আমি তর হাত ওই আর অক্ষত রাখব না। এই বলে ডান হাতকে ও আলাদা করে দেয়। সাহিলে ঙ্গান হারিয়ে ফেলে। আহান কাটা জায়গায় মরিচের গুড়ো দিয়ে এর মধ্যে ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দেয়। যেটা তাদের গুপ্ত রুমেই ছিলো। নিজের উপর ফুটিন্ত গরম পানি পড়তেই ছটফট করতে থাকে।
আহানের মারার স্টাইল দেখে সবাই আতঙ্কে নিজের মুখ ঢেকে ফেলে হাত দিয়ে।
আহান চেঁচিয়ে বলে,,,,
“” তর এই চোখ জোড়া দিয়ে আমার বউয়ের উপর নজর দিয়েছিলি তাই না।
এরপর চোখের ভিতর চা* পাতি ডুকিয়ে দুই চোখ উগরে ফেলে। রক্তে দিয়ে পুরো শরীর গোসল করার মত হয়ে গিয়েছে।
আহান চোখ দুইটাকে হাতের মাঝে নিয়ে বলে,,,,,
” এই চোখ দুইটা দিয়ে আমার বউয়ের দিকে তাকিয়েছিলি তাই না? কিন্তু দেখ এখন এই চোখ দুইটা তর সাথে নেই।
রানবীর নিজের চোখ খুলে সাহিলের এই অবস্থা দেখে ভয়ে আৎকে উঠে। ওকে তো এর চেয়ে ভয়ঙ্কর মৃত্যুর সাথে দেখা করাবে এইটা বুঝতে পেরেছে। কিন্তু যে করেই হোক পালাতে হবে। নিজের জীবন বাঁচিয়ে কোনো রকম পালাতে পারলেই হবে। সবাই তো নিজের চোখ বন্ধ করে রেখেছে এই সুযোগ।
রানবীর ধীরে ধীরে নিজের হাতের বাধন খুলে হাতে একটা ছুরি নেয়। এরপর পালাতে যাবে এমনি লিনিয়ে চিৎকার দিয়ে উঠে,,,,
” আহান শয়তানটা পালিয়ে যাচ্ছে ওকে ধর। ”
লিনিয়ার চিৎকার শুনে আহান বাকা হাসি দিয়ে বলে,,,,
” ও যখন নিজের বাধন খুলেছে তখন ওই আমি বুঝতে পেরেছি। কোথাও যেতে পারবে না ইউভি ধর ওকে। ”
ইউভি রানবীরের কাছে যেতেই রানবীর লিনিয়ার গলায় ছুরি ধরে বলে,,,
” এক পা বাড়ালে আমি ওকে শেষ করে দিব। ”
আহান — শেষ কর ওকে তো আমি এমনিতে ও শেষ করব। নিজের মায়ের প্রতিচ্ছবি দেখে ভাবিস না গলে যাব।
রানবীর — আমি সত্যি সত্যি মেরে দেব।
আহান — দেখি ছুরি চালা।
আহানের এমন খাপছাড়া কথা রানবীরকে পাগল করে দিচ্ছ। কথায় আছে না শয়তান যখন মৃত্যুর সম্মুখীন হয় তখন পাগল হয়ে যায়। রানবীরের ও ঠিক সেই অবস্থা হয়েছে।
রানবীরের ভাবনার মাঝে আকস্মিক এক ঘটনায় সবাই হতভম্ব হয়ে যায়। লিনিয়া রানবীরের হাতের ছুড়ি নিয়ে নিজের গলায় সজোরে বসিয়ে দেয়। সাথে সাথে ইউভি রানবীরকে ধরে ফেলে।
আহান সাহিল কে রেখে বসা থেকে উঠে লিনিয়ার কাছে যায়। কেনো জানি কষ্ট হচ্ছে। কেনো মায়ের প্রতিচ্ছবি বলে?
আহান — নিজেকে নিজে কেনো মেরেছেন মিসেস লিনিয়া?
লিনিয়া মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,,,
” নিজের পাপের সমাপ্তি ঘটাতে। তুই খুব সুন্দর হয়েছিস একদম তর মায়ের মত। তর ছেলে টা ও খুব মিষ্টি হয়েছে। আদর করতে চেয়েছিলাম একটু কিন্তু ওরা আমার কাছে দেই নি। আমাকে পারলে ক্ষমা করে দিস আহান। পরোপারে না হয় আমি আমার বোনটার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিব।”
ধীরে ধীরে লিনিয়া ঢলে পরে মৃত্যুর দরজায়। আহান হালকা গালে টাচ করে দেখে লিনিয়ার শ্বস বন্ধ।
আহান — মরে গেছ।
ইউভি –কিন্তু তর চোখে পানি কেনো?
আহান — মায়ের কথা মনে পড়ছে।
ইউভি —– নিজের কুকর্ম নিয়ে আফসোস করে গেছে। কিন্তু সমাপ্তি মৃত্যু দিয়ে ওই হলো।
আহান লিনিয়ার থেকে উঠে গিয়ে রানবীরের দিকে তাকায়। এরপর বলে,,,,,
“” সাহিলের চোখ উগরেছি আমি তর কলিজা ছিড়ে দেখব রানবীর শেখ। ”
আহান হুংকার দিয়ে বলে,,,,,
“” আরিফ ব*টি আর চা*পা*তি দে।
আহানের কথা অনুযায়ী আরিফ সব কিছু এনে রাখে। আহান হাতে প্রথমে একটা ছুড়ি নেয় এরপর ছুড়ি দিয়ে রানবিরের হাত দুইটা আলাদা করে যাতে ছটফট করতে না পারে। রানবীর চিৎকার করতে পারছে না ওর মুখে পট্টি বেধে রাখা। শুধু পশুদের মত ছটফট করছে। আহান একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে এর বুক বরাবর ছুড়ি বসিয়ে দেয় এরপর ভিতর থেকে বুক ছিড়ে কলিজা টেনে বের করে। কিন্তু তার আগেই রানবীর নিশ্বাস ত্যাগ করে।
আহান রানবীরের কলিজাটা নিয়ে তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,,
” এতদিন শুধু বলেছিলাম কলিজা ছিড়ব আজ সত্যি ওই তর কলিজা দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। কিন্ত এত ছোট কলিজা নিয়ে তুই আমার সাথে লাগতে এসেছিস ছেহহ। তর এই কলিজা আমি আমার টর্চার সেলের কুকুরদের খাওয়াব ”
কেউ না দেখা সত্ত্যে ও সামনে এমন একটা ঘটনা ঘটলে একটু হলে ও দেখতে হয়। ইউভি আর আরিফ এত বীভৎসর মৃত্যু দেখে একেকজনের গা গুলিয়ে এসেছে।
আহানের পুরো শরীর তাদের রক্ত দিয়ে রক্তাক্ত হয়ে গেছে।
আহান — এদেরকে টর্চার সেলে নিয়ে সালফিউরিক এসিডে ঢেলে দে ধীরে ধীরে নিশ্বেস হয়ে যাবে। আর রানবীরের কলিজাকে কুকুরকে খাওয়াবি আর সেই দৃশ্য ভিডিও করে আমাকে দিবি।
আরিফ — ও.. ওকে ভাই।
ইউভি — তর পুরো শরীর রক্তে লাল হয়ে গিয়েছে শহরের ভিতর দিয়ে যাবি কিভাবে?
আহান — তরা থাক আমি চেইনঞ্জ করে আসছি। এরপর এক গার্ডকে গাড়ির দিকে ইশারা করে। আহানের ইশারা পেয়ে গার্ড গাড়ি থেকে আহানে জন্য শার্ট আর প্যান্ট নিয়ে আসে।
আহান ইউভির দিকে তাকিয়ে বাকা হাসি দিয়ে কাপড়ের দিকে ইশারা করে।
ইউভি — হুম আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিস।
আহান কিছু সময়ের ব্যাবধানে ওয়াসরুম খুজে পায়। এরপর দ্রুত শাওয়ার নিয়ে কিছুক্ষনের মধ্যে বের হয়ে আসে।
এতক্ষনে সমস্ত লাশ সরিয়ে পুরো রুম পরিষ্কার করে দেয়। যেনো এখানে কিছুই হই নি। এই পরিত্যাক্ত বাড়ির এই রুমটা জানে কতটা নরক ময় মৃত্যু হয়েছে এখানে।
আহান আর ইউভি চৌধুরি ভিলায় ফিরে আসে। কিন্তু এসেই হতভাগ ইয়ানার হাতে কাপড়ের ব্যাগ আর কোলে ইয়াজ।
দাদুমনি লাঠিতে ভড় দিয়ে ইয়ানে বলছে,,,,
” চলে যাস না আমার দাদুভাই এতটাও খারাপ না। ও ছেড়ে দিবে সবকিছু।
আর আহিয়া কান্না করছে। দরজার সামনে আহনকে দেখে ইয়ানা কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যায়। কিন্তু তার পর ও সাহস সঞ্চয় করে পাস কাটিয়ে চলে যেতে নিবে এমন সময় আহান হাত ধরে ঠান্ডা গলায় জিজ্ঞাসা করে,,,,
” কোথায় যাচ্ছ? ”
ইয়ানার কাটকাট উত্তর,,,
” আপনার এই অন্ধকার রাজত্যকে বিদাই জানিয়ে একটু আলোর সন্ধানে যাচ্ছি”
আহান রেগে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে ফেলে। এরপর ও নিজের রাগ নিয়ন্ত্রন করে বলে,,,,,
” যেখানেই যাও আমার ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছ কেনো.?”
ইয়ানা তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,,
” হ্যা এইটাই সব চেয়ে বড় পাপ আপনার অস্তিত্ব থেকে ওর জন্ম হয়েছে। আর আজ সেকারনেই আমার ছেলেটা মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েছিলো। জানি না আপনার অস্তিত্ব হয়ে বাঁচার কারনে আর কতবার মৃত্যু তাকে আলিঙ্গন করবে। কিন্তু আমি তো ওকে জন্ম দিয়েছে সন্তানের কষ্ট সহ্য করতে পারব না। তাই এত দুরে যাব যেনো অগ্নি চৌধুরির ছায়াও না পড়ে। ”
আহান দাতে দাত চেপে বলে,,,,
” আরেকটা কথা বললা থাপ্পর খাবি বিয়াদপ। এই তদের কিছু করতে পেরেছে। পেরেছে বল? তদের প্রটেক্টের জন্য আমি এখন ও বেঁচে আছি মরে যাই নি।
ইয়ানা আহানের হাত নিজের থেকে ছাড়িয়ে চিৎকার দিয়ে বলে,,,,
ইয়ানা — হ্যা এইটাই পারবে কথায় কথায় থাপ্পর বসাতে আর ধমক দিতে। প্রতিটা সময় প্রতিটা সেকেন্ড আতঙ্কে থাকতে হয় কখন রেগে যাবেন। আমার কোন কথায় আপনি রেগে গিয়ে ভাংচুর শুরু করবেন। ভালোবাসেন তো না করছি না। এতটা বেইমান আমি নয় যে আপনার ভালোবাসা নিয়ে আঙ্গুল তুলব। কিন্তু আমি আর পারছি না আহান আজ আমাকে একদম ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। আজ মনে হচ্ছে আপনার জীবনের সাথে জড়িয়ে সবচেয়ে বড় পাপ করেছি। তার চেয়ে বড় পাপ করেছি আপনার অস্তিত্ব কে জন্ম দিয়ে।
ইয়ানার কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথে আহানের শক্ত থাপ্পরের সম্মুখীন হয়।
আহানের রাগের ফেলে টেবিলের চেয়ারটাকে সজোরে আছাড় মারে।
ইয়ানা কান্না করতে করতে বলে,,,,,
“” হ্যা শুধু এইটাই করতে পারবেন। কারন এইটাই আপনার পুরুষ্যত্ব মি, অগ্নি চৌধুরি।”
আহান — রায়ান ওকে থামতে বল আমি সহ্য করতে পারছি না।
আহানের কথা অনুযায়ী রায়ান ইয়ানার কাছে গিয়ে বলে,,,,
” দেখো ইয়ানা তুমি এখন নিজের মধ্যে নেই। ইয়াজকে এমন অবস্থা দেখে সব মায়ের ওই কষ্ট পাওয়ার কথা। কিন্তু এখানে আহানের দোষ কোথায়? পাগলামি করো না বোন।
ইয়ানা — আমি নিজের মধ্যেই আছি ভাইয়া। এখানে ওনার দোষ নেই কিন্তু দোষ একটাই ছিলো আমার সন্তান ওনার অস্তিত্ব আর এই কারনেই ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো। কি ভয়ঙ্কর কথা বলছিলো ওকে নিয়ে মনে হচ্ছিলো আমি নিজেকে শেষ করে দেয়।
আমি চলে যাব ভাইয়া অগ্নি চৌধুরির জীবন থেকে অনেক দুরে চলে যাব।
আহিয়া কান্না করতে করতে বলে,,,,,,
” কিন্তু তোমাকে আর বাবাইকে ছাড়া দাদাভাই কিভাবে থাকবে বউমনি? ”
ইয়ানা — থাকতে পারবে আহিয়া কারন ওনার হৃদয় অন্ধকারে ঢেকে গিয়েছে। যেদিন ওনি কালো দুনিয়া ছেড়ে দিয়ে ওনার হৃদয়ে আলোর রেখে মিলাতে পারবে ওইদিন ইয়ানা তার জীবনে আবার ফিরে আসবে তার আগে নয়।
ইউভি — এমন ছেলেমানুষি করো না এইসব থেক হুট করে চলে আসা যায় না। যদি আহান মাফিয়া জগৎ থেকে চলে আসে তাহলে শত্রুরা গিলে খাবে তখন অবস্থা আর ও খারাপ হয়ে যাবে।
অনুভবে তুমি পর্ব ৫৫
ইয়ানা — আমি ওনাকে একবারের জন্য চলে আসতে বলি নি। আমি শুধু চাই পাপাচার থেকে যেনো বেরিয়ে আসে। কাউকে মেরে ফেলা, খুন করা, কালো বাজার এইসব থেকে জেনো নিজেকে আড়াল করে ফেলে। ওনি মাফিয়ার শক্তি কাজে লাগিয়ে ভালো কাজ করুক মানা তো আর করছি না। সবাই বলে মাফিয়া মানেই খারাপ কিন্তু ওনি একজন লিডার হয়ে ভালো কাজ করুক। দেখিয়ে দিক যে সব মাফিয়ারা খারাপ হয় না। যেদিন কালো জগৎ থেকে নিজেকে বের করতে পারবে ওইদিন আমি ফিরব ওনার জীবনে এর আগে নয়। ভালো থাকবেন আপনারা সবাই।