অনুভবে তুমি পর্ব ৮

অনুভবে তুমি পর্ব ৮
লিজা মনি

একটি বিশাল হোটেলে নারী নিয়ে মত্ত একজন প্রাপ্তবয়স্ক যুবক। খালি গায়ে মেতে উঠেছে নিষিদ্ধ এক আদিম খেলায়। বর্তমানে সে নিজের পিপাসা মিটাতে ব্যস্ত।
মেয়ে : রায়হান বেবি আমরা বিয়ে করছি কবে।
রায়হান নিজের মুখটাকে একটু বিরক্তি নিয়ে বলে,
তুই যে আমার সাথে আছিস এই ওই অনেক এত কথা কে বলতে বলেছে তোকে।
মেয়াটি : সরি রায়হান। আর বলবো না।
ঠিক তখনি রায়হানের একটি ফোন আসে –

ফোন :…………..
রায়হান : কে সে?
ফোন:…………………
রায়হান : ঠিক আছে গাড়ি বের কর আজই বাংলাদেশ ব্যাক করছি।
ফোন………….
রায়হান কথা শেষ করে একটা বাকা হাসি দেয়। তাহলে শেষ পর্যন্ত তোমার আসল পরিচয়টা যেনে গেলাম সৎ ভাই। আমি আসছি খেলেটা তাহলে সামনা সামনি ওই হোক বলেই রায়হান অট্টহাসিতে ফেটে পরল।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ইয়ানা আরু আর সুমু অগ্নি চৌধুরির বিলাশবহুল ড্রয়িংরুমে বসে আছে।
ঠিক তখনি অগ্নি তাদের সমনে এসে বসে। তাকে দেখেই সাবাই দাড়িয়ে যায়।
অগ্নি হাত দিয়ে তাদের বসতে বলে।
ইয়ানা : কিরে আরু তোদের এই ক্রাশ অগ্নি চৌধুরি রুমে ওকি মাক্স আর সানগ্লাস পরে থাকে ওনি কি কানা। নাকি দেখতে সুন্দর না।
আরু : চুপ থাক ছেরি ওনি খুব সুন্দর। অনেকে তাকে দেখেছে তারা সবাই নিজ মুখে বলছে।
অগ্নি এতক্ষণ ধরে ইয়ানার দিকেই তাকিয়ে আছে।ইয়ানাকে পরখ করছে শরীরে সাদা কালো রঙের হাটু পর্যন্ত টপ্স, কালো পেন্ট, মাথায় হিজাব করা। অগ্নির কাছে ইয়ানাকে কোনো পুতুলের চেয়ে কম লাগছে না।
ইয়ানাদের এইরকম ফিসফিস করতে দেখে অগ্নি কিছুটা গম্ভির হয়ে বলল,
-কি বলবে তারাতারি বলো। আমার হাতে বেশি সময় নেই।
ইয়ানা কিছুটা আমতা আমতা করে বলে,,,,

– আসলে স্যার আমাকে কয়েকদিন ধরে একটা ছেলে বিরক্ত করছে।
অগ্নি আড়ালে একটা মুচকি হাসি দেয়। যে তাকে বিরক্ত করছে তাকেই এসে কত সুন্দর করে বলছে।
অগ্নি : প্রথমে আমি স্যার নয়। আর দ্বীতিয়ত এইরকম একটা সামান্য কাজ অগ্নি চৌধুরি করে না। তার জন্য পুলিশ আছে। আর কোনো ছেলে এমনি এমনি আসে না নিশ্চই সিডিইউস করেছো।
ইয়ানা আহানের কথা শুনে অবাক হয়ে যায়। সিডিউস কথাটা মাথায় আসতেই কিছুটা রেগে দাতে দাত চেপে বলে,,,,
– জানি আমরা পলিশ আছে কিন্তু ছেলেটা হুমকি দিয়েছে যদি এইসব পুলিশকে জানায় তাহলে ও আমার পরিবারের ক্ষতি করে দিবে। আর সবচেয়ে বড় কথা ছেলেটাকে আমি চিনি না। যদি চিনতাম তাহলে পুলিশের প্রয়োজন পরতো না ওই গন্ডার, কুত্তা, লেজ কাটা হনুমান, লুচ্চার জন্য আমি ইয়ানাই যথেষ্ট ছিলাম। আর আমার এতটাও খারাপও দিন আসে নি যে রাস্তার বখাটেগুলাকে সিডিইউস করবো। তাদের বাবা মায়ের ওইতো ঠিক নেই। হয়তো মা জন্ম দিয়েই ফেলে চলে গিয়েছিলো।

আহান এইবার নিজের রাগকে সংযত করার জন্য হাত দুটো মুষ্টিবদ্ধ করে ফেলে। চোখ বন্দ্ধ করে বড় বড় শ্বাস টানে। কারন ইয়ানা আহানের বাবা মা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এইবার আহান ইয়ানার দিকে তাকিয়ে থেকে মনে মনে ভাবে,,,,, মেয়েটাকে যতটা বোকা ভেবেছিলাম ততোটা বোকা না যথেষ্ট স্ট্রং। নয়তো যার সামনে দাড়িঁয়ে বড় বড় মাফিয়ারা ও কথা বলতে ভয় পায় সেখানে এইটুকু একটা মেয়ে কিভাবে ওর নামেই এতগুলো কথা বলছে। রাগে আহানের হিতাহিত ঙ্গান হারিয়ে ফেলছে।
ইয়ানা এইবার বলে,,,,
– সরি স্যার আপনার মুল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য। আমি ভুলে গিয়েছিলাম মাফিয়ারা কখনো কারোর সাহায্য করতে পারে না। কারন তারা……. ইয়ানা আর বলল না।
আরুরা আর সুমাইয়ার হাত ধরে বাহিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় তখনি আহান পিছন থেকে ডাক দেয়,,,,
– দাড়াও।

ইয়ানা : কি বলবেন বলেন। আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চায় না।
আহান বসা থেকে পেন্টে দুহাত গুজে দাড়িঁয়ে বলে ,,,,,
– যে অগ্নি চৌধুরির সামনে দাড়িয়ে কথা বলতে সবার কলিজা কাঁপে। আর সেখানে তুমি এতগুলো কথা বলে গেলে আই ইম্প্রেস।
ইয়ানা : সরি মি, অগ্নি চৌধুরি আমার জানামতে আমিতো আপনাকে কিছু বলিনি। যা বলার সব ওই গুন্ডাটাকে বলছি তাতে আপনি এত রিয়েক্ট করছেন কেনো?
আহান ইয়ানার কথা শুনে থমথমে খেয়ে যায়।
ইয়ানা ও আর কোনো কথা বাড়ায় নি এইখান থেকে প্রস্থান করে। ঠিক তখনি তাদের সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত একজনের সাথে দেখা হয়।
সুমু : রায়ান আপনি এখানে?
রায়ানও তাদের দেখে ভুত দেখার মতো চমকে উঠে। কিছুটা আমতা আমতা করে বলে,,,,, আ. আসলে হয়েছে কি একটা কাজে এসেছিলাম। দেখো এসে তোমাদের সাথে দেখা হয়ে গেলো। কিন্তু তোমারা এইখানে কিসের জন্য?
ইয়ানা : আসলে ভাইয়া এখন কথা বলতে ইচ্ছা করছে না। অন্য একদিন কথা বলব এখন আসি।ইয়ানা তারা চলে যায়।

এইদিকে রায়ান ভিতরে গিয়ে যা দেখে তাতে ওর চোখ কপালে উঠে যায়। কারন পুরু ফ্লরে কাচের ছড়াছড়ি।আহানের হাত দিয়ে টিপটিপ রক্ত পরছে। পাশেই ইউভি শান্ত করার চেষ্টা করছে।রায়ান তাড়াতাড়ি করে আহানের কাছে গিয়ে বলে,,,,,
” কি হয়েছে এইভাবে রেগে আছিস কেনো? আর ইয়ানাকেও দেখলাম মন খারাপ করে বের হয়ে যেতে।”
আহান শুধু চোখ বন্ধ করে বড় বড় শ্বাস টানছে।
এইবার ইউভি সব কিছু খুলে বলে। রায়ান একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে,,,, আহান দেখ ইয়ানতো যানে না যে তুই ওই সেই ছেলেটা তাই না। ও তর মাকে বলেনি ওতো ওই ছেলের মাকে বলেছে।
আহান এইবার রায়ানের মুখ চেপে ধরে চিৎকার দিয়ে বলে,,, আমার মা নেই। আমি অগ্নি চৌধুরি নিজের জন্য নিজেই যথেষ্ট বুঝেছিস তুই।😡😡

ইউভি: আহান কি করছিস কি ছাড় ওকে। আহান ও মরে যাবে ছার।
আহান এইবার রায়ানের গলা ছেরে সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যায়।রায়ান ছাড়া পেয়ে কাশতে থাকে।
ইউভি : ইডিয়েট তুই জানিস না ওর মাকে নিয়ে কিছু বললে ও পাগল প্রায় হয়ে যায়। এমনি রেগে ছিলো এখন কোন বুদ্ধিতে বলতে গেলি।
রায়ান : সরি। আমিতো ওকে যাস্ট বুঝাতে চেয়েছিলাম।
এই উইভি আহান ইয়ানার সাথে কিছু করবে না তো। তর মনে নেই জাবিদ কে কিভাবে মেরেছিলো যাস্ট জন্ম পরিচয় নিয়ে কথা বলেছিলো বলে। ই. ইয়ানাকে কিছু করবেনাতো। যে ভাবে রেগে বের হয়ে গেছে ব্রো তাড়াতাড়ি আহানের কাছে চল।

ইয়ানা, সুমু, আরু তারা একটা কফি শপে যায়।
আরু : কিরে ইয়ানা তোকে এত অন্যমনস্ক লাগছে। কি ভাবছিস দেখ তুই যদি ওই মাফিয়ার কথাগুলো ভেবে থাকিস তাহলে ভুলে যা। আমাদের ওই ভুল হয়েছে ওইখানে যাওয়ার। ভুলে গিয়েছিলাম সে একজন মাফিয়া। শুধু লোক দেখানোর জন্য কয়েকটা ভালো কাজ করে। তাদের শিরায় শিরায় খারাপ কাজ বিদ্যামান। তাই ও যদি বলে কাউক্র সিডিউস করছিস কিছু যায় আসে না।
সুমু : একদম ঠিক বলেছিস কত কষ্ট করে ক্রাশ খাইছিলাম ধুর। এখন ভাব ওই ছেলেটাকে ধরবি কিভাবে?
ইয়ানা একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,
– ধরে ফেলেছি ওকে আমি শুধু সময়ের অপেক্ষা,,,,,
আরু আর সুমু আশ্চর্য হয়ে বলে,

– কি বললি ধরে ফেলেছিস মানে কি ইনু। কে সে? আর কোথায় থাকে কিভাবে বুঝলি?
ইয়ানা এইবার বসা থেকে উঠে বকে দুই হাত গুজে মুচকি হাসি দিয়ে বলে,
– কে কোথায় কিভাবে দেখেছি সেইটা না হয় পরে জানিস। আগে আমি সিউর হয়। আজ হবে আসল খেলা।
এখন চল বাড়ি ফেরা যাক। দেরিতে গেলে আবার আম্মু বকাবকি করবে। তাছাড়া সামনের মাসে আব্বু বাড়ি ফিরছে।
সুমু : হুম চল। তবে নিজের খেয়াল রাখিস।
ইয়ানা : ওকে বেবি। তোরা চিন্তা করিস না।
তারপর তারা যার যার মত বড়ি চলে যায়।

রায়ান আর ইউভি আহানকে খুজে চলছে কিন্তু আহানের কোনো খুজ নেই।
ইউভি : ব্রো ইয়ানাকে কিছু করবে না তো?
রায়ান : আমার মনে হয় না কিছু করবে। কারন মুখে যতই না বলোক ও কিন্তু ইয়ানাকে ভালোবাসে।
ইউভি : হুম তাই যেন হয়। ওর জিবনটা যাতে একটু আলোর সন্ধান পায়। এখন লাস্ট বারের মতো আরেকটা ফোন দেওয়া যাক।

অনুভবে তুমি পর্ব ৭

এইবার ফোন দিতেই রিসিভ হয়।
ইউভি : হে. হ্যালো আহান কোথায় তুই? আর ফোন দরছিস না কেনো?
আহান : বাড়িতে আসছি আমি। এই বলে ফোন কেটে দেয়।
রায়ান : যাক বাবা কেটে দিলো। কিছু বলতেও দিলো না।

অনুভবে তুমি পর্ব ৯