অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ২১
লিজা মনি
ইয়ানা অগ্নির যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকে। এরপর নিজেও চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ায়। ধীর পায়ে ছাদ থেকে নিচে নামতে যাবে এমম সময় সামনে চোখ যায়। তাকিয়ে দেখে অনেকগুলো কালো কি যেনো দেখা যাচ্ছে তবে স্পষ্ট নয়। দুর থেকে কেমন এক বিশ্রি দৃশ্য। অগ্নি একবার জীনের কথা বলেছিলো সেটা ধীরে ধীরে মনে পড়তে থাকে। এইগুলো আবার কোনো জীন নয় তো? ইয়ানার পুরো শরীর কাঁপতে থাকে ভয়ে। নিজের শরীর সামান্য নাড়াতে ও ভয় হচ্ছে। মনে হচ্ছে কোনো কিছু জড়িয়ে ধরে রেখেছে।
পুরো শরীর অবশ হয়ে গিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সামান্য ক্ষমতা টুকু ও নেই। ইয়ানা সামান্য ঢুক গিলে চোখ বন্ধ করে আয়াতাল কুরসী পড়া শুরু করে। ধীরে ধীরে ভয়টাকে জয় করে সামনে এগিয়ে যায়। ছাদ থেকে নেমে সোজা বেড রুমে চলে যায়। ভয়ে এখন ও হাত পা কাঁপছে। ইয়ানা চারপাশে তাকিয়ে দেখে অগ্নি নেই। রুমের জানালার পর্দা তুলে রাখা তাই উকি দিলেই সেই কালো কাপড় পড়া অস্পষ্ট লোকগুলোকে দেখা যাচ্ছে। ইয়ানা অগ্নিকে খুজতে থাকে। ওয়াশরুমের পানির টিপ টিপ আওয়াজ শুনে বুঝতে পারে অগ্নি শাওয়ার নিচ্ছে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
ইয়ানা দরজার সামনে গিয়ে ওয়াশরুমের দরজা খোলা। ইয়ানা কোনো কিছু না দেখে একদম ওয়াশরুমে ডুকে অগ্নিকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে। অগ্নি দেয়ালে হাত দিয়ে শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলো। চোখ দুইটা অসম্ভব লাল হয়ে আছে। কিন্তু আকস্মিক ইয়ানাকে এখানে দেখে কিছুটা অবাক হয়ে যায়। শুধু অবাক নয় একদম স্তব্দ হয়ে যায়। এই মেয়ে এখানে কি করছে? ইয়ানা অগ্নির বাহু খামছে ধরে আছে চারদিকে তার কোনো খেয়াল নেই। শাওয়ারের পানিতে সে ও ভিজে একাকার অবস্থা। অগ্নি ইয়ানাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে সোজাভাবে দাড়া করায়।
এরপর ইয়ানার পুরো মুখের দিকে ভালোভাবে তাকিয়ে কপাল কুচকে প্রশ্ন করে,,,,,,
” কি হয়েছে? মাত্র ওইত ঠিক ছিলে এখন এত ভয় পাচ্ছ কেনো?
ইয়ানা মিহি সুরে বলে,,,,,
” বাহিরে ভ.. ভুত।
অগ্নি আশ্চর্য হয়ে বলে,,,,,,,
” হুয়াট! মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে তোমার? ভুত বলতে কিছু হয় না।
ইয়ানা — আরে আপনি বিশ্বাস করছেন না বীচের সামনেই অনেকজন কালো কাপড়ে আবৃত ছিলো।
অগ্নি — তা ভুতের কাপড় কি তুমি কিনে দিয়ে এসেছিলে?
ইয়ানা — মজা করছেন? বিশ্বাস না হলে আপনি নিজে দেখে যান।
অগ্নি ইয়ানার দিকে তাকিয়ে উপর থেকে নিচে পরখ করে ঠোঁট কামড়ে বলে,,,,,,
” সিডিউস করতে এসেছো জান ভুতের বাহানা দিয়ে হুম”
অগ্নির কথায় ইয়ানা অবাক হয়ে বলে,,,,,
” মানেহহ?
এরপর ইয়ানা অগ্নিকে লক্ষ করে। অগ্নির শরীরে শুধু টাওয়াল পেচানো। ভয়ের কারনে হুট করে এসে জড়িয়ে ধরার কারনে খেয়াল ওই করে নি এইটা ওয়াশরুম। আর ওয়াশরুমে যে কোনো অবস্থায় থাকতে পারে। নিজের কাজে এখন নিজের ওই মাথা ফাটাতে ইচ্ছে করছে। ইয়ানা চোখ বন্ধ করে বের হতে নিবে ঠিক তখনি অগ্নি ইয়ানাকে হেচকা টানে নিজের কাছে নিয়ে আসে। হঠাৎ এমন হওয়াতে ইয়ানা টাল সামলাতে না পেরে অগ্নির উন্মুক্ত বুকের উপর গিয়ে পড়ে। শাওয়ারের পানি এখন ও পড়ছে। ইয়ানার পড়নের কাপড়টা ভিজে একদম শরীরের সাথে মিলে গিয়েছে। অগ্নি এক দৃষ্টিতে ইয়ানার কাপা কাপা ঠোঁটের দিকে তাকায়। এরপর ইয়ানার কপাল ও মুখে আছড়ে পড়া চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে ফিসফিস করে বলে,,,,,,
” এখন যদি আমি কিছু একটা করে বসি কি করবে ইয়ানা? দোষ দিতে পারবে আমাকে?
ইয়ানা নিশ্চুপ। কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। এই মুহূর্তে নিজেকে বাক প্রতিবিন্ধী মনে হচ্ছে। অগ্নি ইয়ানার গলে আলতো ভাবে হাত রাখে এরপর ইয়ানার গলায় হালকা ভাবে আঙ্গুল ছুয়ে দেই। অগ্নির হাতের ঠান্ডা স্পর্শে ইয়ানা বার বার কেঁপে উঠে। মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে থাকে এখান থেকে রক্ষা করার জন্য।
অগ্নি ইয়ানার দিকে মোহিত নয়নে তাকিয়ে মিহি সুরে বলে,,,,
” যাস্ট গিভ মি এ কিস সুইটহার্ট?
অগ্নির কথায় ইয়ানা চোখ বড় বড় করে ফেলে। নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে অগ্নির বাধনে আর ও শক্তভাবে আবদ্ধ হয়ে যায়। ইয়ানা অগ্নির দিকে তাকায় । অগ্নির চোখগুলো তার কাছে অস্বাভাবিক লাগছে।
ইয়ানা নিজের ঠোঁট ভিজিয়ে ধীর কন্ঠে বলে,,,,,,
” ছাড়ুন আমাকে একদম ভিজে গিয়েছি। ঠান্ডা লাগছে প্রচন্ড। আপনি এখন নিজের মধ্যে নেই।
অগ্নি ইয়ানার কথা আঙ্গুল দিয়ে থামিয়ে দিয়ে বলে,,,,,
“””I don’t want words I want you. Just hold me and make the fire in my chest go still.”
“আমি এখন কথা চাই না… আমি চাই শুধু তোমাকে। আমায় জড়িয়ে ধরো, আর এই বুকে জ্বলতে থাকা আগুনটা নিভিয়ে দাও।)
ইয়ানা কিছু বলতে যাবে তার আগেই অগ্নি নিজের ঠোঁট দিয়ে ইয়ানার ঠোঁট চেপে ধরে একদম কোমলভাবে। ইয়ানা অপ্রস্তুত হয়ে ভড়কে যায়। যখন নিজেই সবকিছু করবে তখন অনুমতি নিতে গিয়েছিলো কেনো? অগ্নির আলিঙ্গন গভীর হতে থাকে। দেয়ালের সাথে এমন ভাবে চেপে ধরে যেনো সে নিজস্ব তার। ধীরে ধীরে চলা আবেগ একসময় রুপ নেয় এক উন্মাদনার।চুমুতে হিংস্রতা প্রকাশ করতে থাকে। ইয়ানা অগ্নিকে ধাক্কা দেই কিন্তু পুরুষনালী শক্তির সাথে পেরে উঠে না। ইয়ানা বাধা দেওয়াতে অগ্নি আর ও হিংস্র হয়ে উঠে। ইয়ানার ঠোঁটের কিনারায় শক্তভাবে দাঁত বসিয়ে দেয়। ইয়ানার শ্বাস আটকে আসে। চোখ দিয়ে কয়েক ফোটা নোনাজল গড়িয়ে পড়ে। এইটা ভালোবাসার আলিঙ্গন হতেই পারে না মনে হচ্ছে তাকে এক নিষ্ঠুরতার সাথে গ্রাস করছে। একসময় ইয়ানা শান্ত হয়ে যায়। যখন মনে হচ্ছে শ্বাস বন্ধ হয়ে কলিজা ছিড়ে যাচ্ছে ঠিক তখন ইয়ানাকে ছেড়ে দিয়ে নিজের সাথে চেপে ধরে। অগ্নিকে জড়িয়ে ধরে ইয়ানা নিশ্বঃব্দে কেঁদে উঠে। অগ্নি ইয়ানাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে চোখে চোখ রেখে ইয়ানার ঠোঁটে কাটাস্থানে নিজের আঙ্গুল দিয়ে চেপে ধরে বলে,,,,,,
” এই চোখের পানি আমি সহ্য করতে পারি না। তবে তুমি কাঁদবে শুধু আমার দেওয়া আঘাত আর ভালোবাসার জন্য। তোমার চোখে পানি আসবে শুধু আমাকে এক মুহূর্ত কাছে পাওয়ার জন্য।
এরপর ইয়ানার ঠোঁটে হালকা চুমু খেয়ে বলে,,,,,
” তোমার শরীরের এক একটা কোষ আমার। কেউ তোমাকে ছুতে আসলে তোমার প্রতিটা কোষ যাতে জানিয়ে দেয় তুমি সম্পর্ন আমার।
ইয়ানা এইবার অগ্নির দিকে তাকায়। অগ্নি ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
” চেইঞ্জ করো নাহলে ঠান্ডা লেগে যাবে। আর কখনো আমার সামনে এইভাবে আসবে না। আমার আলিঙ্গন গভীর হলে সেটা সহ্য করার ক্ষমতা তোমার নেই। ওয়াশরুম ত্যাগ করে রুমে যাও।
ইয়ানা মিহি সুরে বলে,,,,,,
” আপনি খুব ভয়ংকর। এইভাবে স্পর্শ করলে আমি সহ্য করব কিভাবে। তবে যদি একবার ভালোবেসে আলিঙ্গন করেন তাহলে আপনার হাজার টা হিংস্রতা ও আমি সহ্য করতে পারব। কিন্তু আপনি এমন কেনো?
ইয়ানার কথা শুনে অগ্নি হালকা হেসে । এরপর কিছুটা ধমক দিয়ে বলে,,,,,
” তোমাকে এখান থেকে যেতে বলেছি ইয়ানা। ড্রয়ারে দেখো তোমার সব প্রয়োজনী জিনিস রাখা আছে।
অগ্নির ধমক খেয়ে ইয়ানা বিনা শব্দে বের হয়ে আসে। আর এইদিকে ইয়ানা চলে যেতে অগ্নি আবার ও শাওয়ার অন করে দুই হাত দেয়ালে ভড় দিয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়ায়।
ইয়ানা রুমে আসে ঠিক কিন্তু পুরো ফ্লোর ভিজে যায়।সে ড্রয়ার থেকে একটা কালো কুর্তি আর সাদা পায়জামা বের করে অগ্নি আসার আগেই পড়ে ফেলে। কিন্ত এইটা ভেবে পাচ্ছে না কাপড় আসলো কিভাবে এখানে তাও আবার সম্পূর্ন তার সাইজের। উনি কি আগে থেকেই সব ঠিক করে রেখেছিলো? ইয়ানা এইসব ভাবতে ভাবতে ভেজা কাপড়গুলো এক পাশে রেখে আয়নার সামনে দাঁড়ায়।
আয়নায় নিজের ঠোঁট দেখে নিজেই আৎকে উঠে। পুরো ঠোঁট ফুলে দুই তিন জায়াগায় লাল হয়ে গিয়েছে। ইয়ানা ঠোঁটে হাত দিয়ে সেই সময়টা মনে করতে থাকে।আমি উনার চোখে কোনো আবেগ কেনো দেখতে পাই নি? উনার চোখে আমি এক হিংস্রতা অনুভব করলাম যেনো কোনো শিকার ধরেছে।কিন্তু কেনো?
ইয়ানা এইসব ভাবতে ভাবতে খাটে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ে। কিছু খাই ও নি। কেনো জানি খেতে ইচ্ছে করছে ন্স।
প্রায় চল্লিশ মিনিট পর অগ্নি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসে। বিছানায় তাকাতেই দেখতে পায় ইয়ানা ঘুমে বুদ হয়ে আছে। অগ্নি ইয়ানার কাছে এগিয়ে যায়। এরপর বিছানায় আধশোয়া হয়ে বসে ইয়ানার মাথাটাকে নিজের বক্ষের মাঝে রাখে একদম সাবধানে। যেনো ইয়ানা কোনো নিষ্পাপ বাচ্চা। ইয়ানার কাটা ঠোঁটগুলোর দিকে তাকিয়ে হালকা হাসে।
এরপর ফোনে কাউকে ফোন দিয়ে গম্ভীর গলায় বলে,,,,,,,
” কিসব কালো ড্রস পড়িস তরা। আমার বউ জীন ভেবে ভয় পেয়ে যায়। প্রত্যেকটা বডিগার্ড এর ড্রস চেইঞ্জ করা কালকের ভিতরে।
একদম শেষ রাত। রায়হান বসে আছে একটা বিলাশবহুল নিজস্ব বারে। একের পর এক ড্রিংক্স করতে থাকে। আর পাশেই মেয়েরা ভিবিন্ন বেহায়া অঙ্গভঙ্গি দিতে থাকে। রায়হান নেশালো দৃষ্টিতে মেয়েদের সাথে তাল মিলাচ্ছে।
কিছুক্ষনের মধ্যে রায়হানের এসিস্ট্যান্ট এসে ডাক দেই…..
“” স্যার কিছু কথা ছিলো?
রায়হান বিরক্তি হয়ে বলে,,,,
” দেখছিস না মুডে আছি বিরক্তি করছিস কেনো? যাহহ পরে শুনব।
লোকটা — স্যার অগ্নি চৌধুরির বউ নিয়ে লেক আন্টারিওতে হানিমুন করতে গিয়েছে।
রায়হান থেমে যায়। কপাল কুচকে লোকটার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,,
” কি বললি তুই? হানিমুন করতে গিয়েছে?
লোকটা — জি স্যার। শুনেছি বউয়ের জন্য পুরো হাউসবোট কিনে নিয়েছে। আপনি তো ভালো করেই জানেন উনি অন্যের জিনিসে হাত লাগাই না।
রায়হান ওয়াইনের গ্লাসটা ফেলে দিয়ে দাতে দাত চেপে বলে,,,,,,
” ও অন্যের জিনিসে হাত লাগায় না কিন্তু আমার সবকিছু নিয়ে নিয়েছে। গোল্ডেন অফ মাফিয়া গ্রুপের লিডার আমি হতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেই আসন পেয়ে গেলো ওই অগ্নি। সমস্ত ক্ষমতা টাকা পয়সা সব ওর। আর এইদিকে বসে আমি আঙ্গুল চুষছি। ওর চোখের পানি না দেখা পর্যন্ত আমি শান্তি পাব না। ওর দুর্বলতায় আঘাত করতে হবে। আর ওর দুর্বলতা হচ্ছে ওর বউ।
লোকটা — আপনি কি করতে চাইছেন?
রায়হান — কিছুই না। এখন কিছু করলে আমার বাপ আর চাচা আমাকে ছাড়বে না। কারন অগ্নি তাদের সোনার ডিম পাড়া হাঁস। যা করতে হবে একদম ধীরে সবার অজান্তেই। যা গিয়ে দেখ ওরা কি করছে। সব মুহূর্তের খবর আমাকে পাঠা।
লোকটা ভয়ে ভয়ে বলে,,,,,,
” স্যার অগ্নি চৌধুরি যদি একবার সন্দেহ ও করতে পারে যে আমি তাদের ফলো করছি তাহলে আমাকে মাটি খুঁড়ে বের করবে।
রায়ান রাগান্বিত হয়ে বলে,,,,,,
” আর যদি তুই না যাস তাহলে আমি তকে এখানেই পুঁতে দিব।
লোকটা ভয়ে পেয়ে বলে,,,,,
” যাচ্ছি স্যার সব খবর আপনাকে পাঠাব।
এরপর লোকটা চলে যায়। রায়হান একটা বিকৃত হাসি দিয়ে একটা মেয়ে নিয়ে রুমে ডুকে পরে। শুরু করে এক নিষিদ্ধ আদিম খেলা।
ধরনীতে ধীরে ধীরে আলো ফুটে উঠে। চারপাশে নিস্তব্ধতা আর পাখিদের হালকা ডাক মিলে এক আবেগময় পরিবেশ সৃষ্টি করে। সূর্য তখনো পুরোটা ওঠেনি, কিন্তু তার সোনালি আলো ধীরে ধীরে গলে পড়ছে পানির ওপর চিকচিক করছে ঢেউয়ের প্রতিটা রেখা।
ইয়ানার ঘুম ভেঙ্গে যায়। পাশে তাকিয়ে দেখে অগ্নি নেই। ইয়ানা চারপাশে তাকিয়ে ওয়াশুরুমের দিকে তাকায়। না সেখানে কোথাও নেই। ইয়ানা জানালার পর্দা গুলো সরিয়ে দেয়। বিছানা থেকে নেমে নিজের মাথায় ভালোভাবে উড়না চেপে দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়। প্রায় দশ মিনিট পর অগ্নিকে খুজতে খুজতে নৌকার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। যেখানে মুক্ত আকাশ বাহিরের সব কিছু দেখা যাচ্ছে। ঠান্ডা বাতাস তার মুখে স্পর্শ করে চলে যায়। ইয়ানা দাঁড়িয়ে আছে বোটের কিনারে। ইয়ানা তাকিয়ে দেখে বোটগুলো পানির উপর অলসভাবে ভাসছে একদম ধীর গতিতে। কেউ কেউ ধীরে ধীরে জেগে উঠছে। আবার অনেকে কেবিন থেকে মাত্র জোড়ায় জোড়ায় বের হচ্ছে। আবার কেউ দাঁড়িয়ে প্রাকৃতিক ভালোবাসাকে অনুভব করছে।
লেকের পাশ ঘেঁষে থাকা নারিকেল বা উইলো গাছগুলোর পাতায় বাতাস খেলে যায়। যেন কেউ আলতো করে চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। পাশেই ছোট ছোট কংক্রিট ঘাট, আর সেখানে বসে আছে দুজন প্রেমিক প্রেমিকা হাতে কফির কাপ।
আর এমন এক ভোরে যদি কারো প্রিয়জন পাশে থাকে তাহলে গোটা পৃথিবী যেন থেমে যায় কেবল সেই মুহূর্তের জন্য। সেই বাতাসে শুধু ভালোবাসার গন্ধ, শান্তির স্বাদ আর হৃদয়ের শব্দ বেজে উঠে।
ইয়ানা চারপাশে পর্যবেক্ষন করার মধ্যে হঠাৎ এক আপত্তিকর দৃশ্যে চোখ আটকে যায়। দুইজন দম্পত্তি বোটের বাহিরে চুম্বনরত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে এখানে তারা ছাড়া আশেপাশে কেউ নেই।
ইয়ানা সাথে সাথে নিজের চোখ সরিয়ে নেই। নাক মুখ খিচে বিরবির করে বলে,,,,,
” ছিহহ এদের কি লজ্জা – সরম বলতে কিছু নেই। জনসমাবেশে সবার সামনে কিভাবে চুমু খাচ্ছে। আর এদের ড্রেসের কি ছিড়ি। দেখলেই বমি আসছে। এতটা নির্লজ্জ কিভাবে হয় মানুষ যাস্ট বিকিনী পরে আছে। ওইটা পড়ার কি দরকার ছিলো সব তো দেখাই যাচ্ছে। নির্লজ্জ বেহায়া মেয়ে – ছেলে।
“” আপনার গালি দেওয়া শেষ হয়ে গিয়েছে ম্যাডাম? ”
হঠাৎ পিছনে কারোর আওয়াজ পেয়ে ইয়ানা ভয়ে কেঁপে উঠে।
পিছনে তাকিয়ে দেখে অগ্নি দাঁড়িয়ে আছে। ইয়ানা বুকে থু থু দিয়ে বলে,,,,,
” এইভাবে কেউ আসে। ইসস ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
অগ্নি সামনে এগিয়ে এসে বলে,,,,,,
” আমি তো এসেছি অনেক্ষন হলো কিন্তু তুমি তো ওদের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত দেখতে ব্যস্ত ছিলে তাই আমাকে খেয়াল করো নি।
ইয়ানা অগ্নির চোখে হাত দিয়ে বলে,,,,
” একদম ওইদিকে তাকাবেন না। আমি কখন এইসব দেখেছি। ভুলে চোখ চলে গিয়েছিলো। কিন্তু কথা হচ্ছে এরা এত নির্লজ্জ কেনো?
অগ্নি ইয়ানার হাত নিজের চোখ থেকে সরিয়ে বলে,,,,
” নির্লজ্জতার কি দেখলে তুমি? ওরা স্বামী স্ত্রী যা খুশি করার রাইট আছে।
ইয়ানা — তাই বলে জনসমাবেশে?
অগ্নি — ওদের ইচ্ছে। ওদের দেখে তোমার এত জলছে কেনো? আমি কিন্তু একদম জেন্টাল বয় ইয়ানা আমাকে এইসব কিছু করতে বলবে না।
ইয়ানা অগ্নির দিকে কটমট চোখে তাকায়। এরপর দাতে দাত চেপে বলে,,,,,
” জেন্টাল না ছাই নির্লজ্জ ঠোঁট কাটা লোক আপনি। রাতের কথা ভুলে যাই নি সরুন সামনে থেকে। আর খবরদার ওইদিকে তাকাবেন না।
এই বলে ইয়ানা এইখান থেকে চলে যায়। ইয়ানা চলে যাওয়ার পর অগ্নি হালকা হাসে। এরপর কপাল কুচকে সামনে তাকায়। দেখে একটা বাচ্চা খেলা করছে মাত্র আট বছরের হবে। অগ্নি বোট থেকে নেমে ছেলেটার কাছে যায়। সামনে কোনো ব্যাক্তির অস্তিত্ব টের পেয়ে সামনে তাকিয়ে অগ্নিকে দেখতে পায়। ছেলেটা চলে যেতে নিলে অগ্নি থামিয়ে দিয়ে বলে,,,,,,
” এই যে বোট টা দেখতে পেয়েছিস ওইখানে কিছুক্ষন আগে একটা মেয়ে ছিলো। তুই ওর দিকে এতক্ষন তাকিয়ে ছিলি কেনো?
ছেলেটা এক গাল হাসি দিয়ে বলে,,,,,
” ওই আপুটা খুব সুন্দর একদম সপ্নের রানীদের মত। তাই তাকিয়ে দেখছিলাম।
বাচ্চাটার কথা অগ্নির সহ্য হয় নি। রাগে ওর চোখ দুটি লাল হতে থাকে। অগ্নি নিজের বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে কপাল ঘেসে বলে,,,,,
” তুই জানিস এই কারনে তর কি করতে পারি? আমার সম্পত্তির দিকে তাকিয়েছিস কেনো?
ছেলেটা ভয় পেয়ে বলে,,,,
” সম্পত্তি নয় আঙ্কেল ওই আপুটার দিকে তাকিয়েছিলাম।
অগ্নি — হ্যা আর তর ওই আপুটাই আমার সম্পত্তি। এখন যদি তর চোখ দুটি তুলে ফেলি কেমন হবে বলতো?
অগ্নির এত শক্ত কঠিন ভাষা শুনে ছেলেটা ভয়ে বলে,,,,
” তাহলে তো আমি অনেক কষ্ট পাব। আমাকে কিছু করো না আঙ্কেল। আমার মাম্মাম অনেক কান্না করবে।
অগ্নি — দশ সেকেন্ড সময় দিলাম। এই দশ সেকেন্ডের ভিতরে তুই তর মাম্মামের কাছে যাবি। আর যদি যেতে না পারিস তাহলে তর চোখ দুটি তুলে ফেলব। আর আমি যা করি তাই করে দেখাই এইবার দৌড় দে।
ছেলেটা অগ্নির কথামত দৌড়াতে থাকে। অগ্নি কিছুক্ষন থেকে এখান থেকে চলে যায়।
শেষ বিকেলের কাছাকাছি। ইয়ানাকে রেখে অগ্নি দুই ঘন্টা যাবৎ নিখোঁজ। ইয়ানা একবার বাহিরে যাচ্ছে তো আরেকবার ভিতরে। বাহিরে তাকিয়ে দেখে রাতের মত কালো পোশাক পড়া কিছু বিশালদেহী লোক দাঁড়িয়ে আছে। রাতে বুঝা না গেলেও এখন স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। ইয়ানা নিজের মাথায় নিজে গাট্টা মেরে বলে,,,, ছিহহ ইয়ানা তুই এদেরকে দেখে এইভাবে ভুত ভুত বলে চেচাচ্ছিলি।
ইয়ানা আয়নার সামনে গিয়ে নিজের ঠোঁটগুলো আবার দেখছিলো আর অসহায় কন্ঠে বলে,,,,
” যদি ভয় পেয়ে উনাকে জড়িয়ে না ধরতি তাহলে তর ঠোঁটগুলো এইভাবে আহত হত। জানি না এই লোক তোর এত সুন্দর ঠোঁটগুলোকে কবে নিহত করে ফেলে।
ইয়ানা এইসব বলতে বলতে ড্রয়ার খুলে। হালকা ফ্রেশ হওয়া দরকার রাতে ভেজার পর আর শাওয়ার নেওয়া হয় নি। ইয়ানা কাপড় হাতে নিবে এমন সময় তাকিয়ে দেখে একটা শাড়ি। একদম সিম্পল কাজের মধ্যে পিঙ্ক কালারের। ইয়ানা শাড়িটা হাতে নিয়ে দেখে কিছুটা পাতলা তবে ভালোভাবে পড়লে কিছু বুঝা যাবে না। শাড়িটা কি উনি এনেছেন? ইয়ানার ঠোঁটে কিঞ্চিত হাসির রেখে ফুটে উঠে। শাড়িটা নিয়ে ইয়ানা ওয়াশরুমে চলে যায় । প্রায় বিশ মিনিট পর শাড়িটা পেচিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়ায়। শাড়ি ভালোভাবে পড়তে না জানলে ও হালকা পাতলা পড়ার ধারনা আছে। পাতলা শাড়ি হওয়ার কারনে পড়তে গিয়ে আর ও হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রায় চল্লিশ মিনিট শাড়ির সাথে যুদ্ধ করে কোনোমতে পড়ে ফেলে। কোমড় ছাড়িয়ে পড়া চুলগুলো ছেড়ে দেয়। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক আর চোখে গাঢ় কাজল ব্যাস এতেই সাজ কমপ্লিট। হলদে ফর্সা গায়ে বেবি পিঙ্ক কালারের শাড়িটা ইয়ানার সৌন্দর্যকে আর ও গভীরভাবে জানান দিচ্ছে।
ইয়ানা ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে বিছানার কাছে দেখতে পায় অগ্নি ভিতরে ডুকে কিন্তু একদম বিধ্বস্ত অবস্থা। চুলগুলো অগুছালো আর চোখগুলো লাল।
অগ্নি ইয়ানার দিকে না তাকিয়ে সোজা ওয়াশরুমে চলে যায়। ইয়ানা কিছুটা অবাক হয়ে অগ্নির যাএয়ার দিকে তাকায়।
প্রায় পনেরো মিনিট পর অগ্নি ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়। সামনে ইয়ানাকে দেখে কিছুটা কপাল কুচকে আসে। ইয়ানাকে সে কখনো শাড়ি পরতে দেখে না আর সাজতে। তাহলে মেয়েটা আজ সাজলো কেনো? ইয়ানার এই রুপ তার কাছে একদম নতুন। অগ্নি বিমোহিত নয়নে ইয়ানার দিকে তাকায়। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে শ্বাস ফেলছে ঘনঘন। ধীর পায়ে অগ্নি ইয়ানার দিকে এগিয়ে যায়।
অগ্নিকে এগিয়ে আসতে দেখে ইয়ানা কিছুটা ভড়কে গিয়ে মাথা নিচু করে ফেলে।
অগ্নি একদম ইয়ানার কাছে এসে বলে। ইয়ানা নিজের হাত কচলাতে থাকে।যখন অতিররিক্ত নার্ভাস থাকে তখন হাত কচলানো ওর স্বভাব। লোকটা এখন কি বলবে? ইয়ানা তোমাকে পরীর মত লাগছে।
অগ্নি ইয়ানার দিকে ভালোভাবে তাকিয়ে গলা খাকারি দিয়ে বলে,,,,,
” এইভাবে সং এর মত বসে আছো কেনো? বাহিরের সব কিছু দেখা শেষ? নাকি ঘুরার স্বাদ মিটে গিয়েছে কোনটা?
অগ্নির এমন সম্মোধনে ইয়ানা তব্দা লেগে বসে আছে। ও তো ভেবেছিলো তার প্রশংসা করবে। প্রথম সেজেছে বলে কথা। উনি প্রশংসার জায়গায় আমাকে বলছে সং এর মত বসে আছি কেনো?
ইয়ানার প্রতিক্রিয়া দেখে অগ্নি ঠোঁটে ঠোঁট চেপে হাসে। নির্ঘাত মেয়েটা তাকে এখন হাজারটা গালি দিচ্ছে। তোমার রুপের বাহ্যিক বর্ননা আমি করতে চাই না জান। তোমার এই আবেদনময়ী চেহারা আমাকে তোমার প্রতি আরও বাজে ভাবে আসক্ত করে ফেলেছে।
।
ইয়ানার অভিমান হলেও সেটা প্রকাশ করে নি। একটা প্রশংসা করলে কি এমন হত।
ইয়ানা নিজেকে স্বাভাবিক করে বলে,,,,,,
” ঘুরা শেষ নয় আপনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ওই যে দেখছেন সমতল জায়গায় সবুজ গাছে ঘেরা টিলা ওইখানে যাব। আর যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রয়োজন।
অগ্নি — তুমি যাবে সেখানে আমার প্রয়োজন কি?
ইয়ানার এইবার ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে যায়। নিজের অধম্য রাগটাকে কন্ট্রোল করতে না পেরে বলে,,,,,
” আপনাকে দিয়ে কাজ কি মানে? নাকি আমার সাথে যেতে ইচ্ছে হয় না। কেনো আমার সাথে গেলে কি আপনার ইগোতে লাগে। নিশ্চয় নিজের ব্যক্তিত্যে লাগে খুব । আমি আপনার অফিসের মেয়েদের মত মডার্ন না তাই আমাকে সাথে নিয়ে কোথাও ইচ্ছে হয় না তাই না? নাহলে আমাকে নিয়ে কোথাও যেতে চান না কেনো? আমাকে বিয়ে করার জন্য….
ইয়ানার কথায় মাঝেই অগ্নির এক ঝাঁঝালো রাম ধমকে ইয়ানা চুপ হয়ে যায়।
” সেট আপ ইডিয়েট। আর একটা লজিকবীহিন কথা বললে থাপরিয়ে অজ্ঞান করব বিয়াদপ।
অগ্নির ধমক খেয়ে ইয়ানা ধীর কন্ঠ বলে,,,,,
” ভুল কি বললাম। আমি তো সত্যি ওই বলেছি। আমি ওদের মত স্মার্ট না। বেহায়ার মত অর্ধ নগ্ন পোশাক পড়ি না। তাই আমকে নিয়ে কোথাও যেতে ইচ্ছে হয় না।
ইয়ানার কথা শেষ হতেই অগ্নি ধারালো কন্ঠে বলে,,,,,,,
” আর যদি কোনোদিন তুমি এইসব ড্রেস পড়ও তোমার অর্ধনগ্ন শরীরের এক কনা ও কেউ দেখে তাহলে মনে রেখো তাকে কি করব জানি না তবে তোমার পুরো অস্তিত্বকেই আমি নিশ্বেস করে দিব। খোদার কসম করে বলছি পুরো শরীর জালিয়ে দিব আই রিপিট পুরো শরীর জালিয়ে দিব। ট্রাস্ট মি, একবিন্দু ও হাত কাঁপবে না। তোমাকে এই অবস্থায় দেখার অধিকার শুধু আমার আর অগ্নি চৌধুরি নিজের অধিকার কাউকে দেই না।
অগ্নির কথা শুনে ইয়ানা মাথা উপরে তুলে তাকায়। এত বড় হুমকি মানুষ মানুষকে দেই। ইয়ানাকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অগ্নি বলে,,,,,
” আসো আমার সাথে।
এই বলে অগ্নি বড় বড় পা ফেলে বোট থেকে বের হয়ে যায়। ইয়ানার হয়েছে আরেক মুশকিল এই শাড়ি পড়ে হাটা যায় নাকি। আর এইদিকে উনি রকেটের মত হাটছে। আরে ভাই পিছনে ফিরে তো একবার আমার দিকে তাকা। কিন্তু উনি যাচ্ছে কোথায়? দেখে তো মনে হচ্ছে টিলার কাছে যাচ্ছে। ইয়ানা শাড়ির কুচি ধরে অগ্নিকে অনুসরন করতে থাকে। আকাশের অবস্থা ও বেশি ভালো না। কেমন যেনো অন্ধকার মেঘে আচ্ছন্ন। এতক্ষন তো ঠিক এই ছিলো। এখন এত বাতাস কেনো হচ্ছে? মনে হচ্ছে ঝড় হবে। যেহেতো খোলা সমতল জায়গা তাই বাতাসটা আর ও বাজেভাবে প্রদর্শন করতে পারছে। ইয়ানা শাড়ির আচল দিয়ে বার বার শরীর ডেকে দিচ্ছে। কিন্তু তীব্র বাতাসের ফলে হাত ফসকে গিয়ে আচল সরে যায়। আচলে সেপ্টিফিন লাগানো তাই বেশি একটা সরতে পারে নি। পাতলা শাড়ি তার উপর এত বাতাস যার ফলে শাড়ি বার বার নিজের জায়গা থেকে সরে যায়। পেট বার বার দৃশ্যমান হয়ে যাচ্ছে। ইয়ানা ধপ করে বসে পরে। একটু জোড়ে অগ্নিকে ডাক দেই,,,,,
” মি,, চৌধুরি যাব না আমি। আমি বোটে ফিরে যাচ্ছি।
কথাটার মধ্যে ছিলো এক তীব্র অভিমান। ওকে একা রেখে নিজের পিঠ বাঁচিয়ে চলে গেলো একবার ফিরে ও তাকালো না হাটছি নাকি মরেছি।
ইয়ানার কথা শুনে অগ্নির পা থেমে যায়। পিছনে তাকিয়ে দেখে ইয়ানা হাটু ভাজ করে বসে আছে তার দিকে তাকিয়ে। অগ্নি কিছুক্ষনের মধ্যে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে ইয়ানার কাছে গিয়ে এক ঝটকায় পাজা কোলে তোলে নেয়। কোলে তোলে সামান্য ধমক দিয়ে বলে,,,,,,
” এইসব বাল ছাল ছাতার মাথা কেনো পড়ো যেগুলো সামলাতে পারো না।
অগ্নির ধমকে ইয়ানা ছটফট করে বলে,,,,,,
” নামান বলছি যাব না আমি আপনার সাথে। আপনার থেকে তো রফিক ভাই ওই ভালো ছিলো অন্তত নরম সুরে ডাকটা দিত।
অগ্নির পা থেমে যায়। ভয়ানক দৃষ্টি ফেলে ইয়ানার দিকে তাকায়। কিন্তু ইয়ানা নির্বাক। কারন সে অগ্নির মুখের দিকে তাকাই নি। অগ্নি ইয়ানাকে শক্ত করে চেপে ধরে বলে,,,,,,
” কি বললে তুমি? কার কথা বললে?
ইয়ানা — যার কথাই বলি আপনার কি। আমাকে ভালোবাসেন নাকি আপনি। এইভাবে চেপে ধরেছেন কেনো ব্যাথা পাই না আমি?
অগ্নি — না বাসি না ভালো। তুমি কার কথা বললে সেটা বলো ইয়ানা?
ইয়ানা — আরে রফিক ভাই। আমাকে অনেক পছন্দ করত কিন্তু…. উনি বিয়ে করে ফেলে।
অগ্নি দাতে দাত চেপে বলে,,,,,,
” তাহলে তোমার এত কষ্ট লাগছে কেনো?
ইয়ানা — আরে কষ্ট লাগবে না কেউ তো একজন ছিলো যে আমাকে নরম সুরে ডাক দিত। আপনার মত রাম ধমক নয়।
ইয়ানার কথা শেষ হরেই অগ্নি ইয়ানাকে নিজের সাথে আর ও শক্ত করে চেপে ধরে। এরপর এক হাত দিয়ে ইয়ানার নিজের সর্বশক্তি দিয়ে ধরে বলে,,,,,,
অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ২০
” এই মুখ আর এই মনে যদি দ্বীতিয়বার আমি ব্যতিত অন্য পুরুষের কথা আসে খোদার কসম ইয়ানা সেই হৃদয় আমি আগুন লাগিয়ে দিব। এক মুহূর্ত ও আত্না কেঁপে উঠবে না লাস্ট ওয়ার্নিং দিচ্ছি। পরের বার ওয়ার্নিং নয় করে দেখাব।
এরপর অগ্নি সামনের দিকে অগ্রসর হয়।