অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ৮

অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ৮
লিজা মনি

সকালের উত্তপ্ত তেজ যেনো রুমে উকি দিতে চাচ্ছে কিন্ত পর্দার কারনে সম্ভব হয়ে উঠছে না।
চোখে আলো অনুভব করতেই ইয়ানা পিটপিট করে চোখ মেলে তাকায়। পাশে অগ্নিকে দেখতে না পেয়ে কপাল কুচকে আসে। হাত নাড়াতে বুঝতে পারে হাত কিছু একটার সাথে আটকানো। রাতের কথা মনে পড়তেই ইয়ানা রাগে ফুঁস করে উঠে। কি সাঙ্গাতিক লোক এখন ও হ্যান্ডকাফ খুলে দেই নি। সারা রাত শাস্তি দিয়ে ও খায়েশ মিটে নি এখন ও লাগিয়ে রেখেছে। ইয়ানা হাত ধরে টানাটানি করতেই হাতের বাধন আলগা হয়ে পড়ে। তার মানে হ্যান্ডকাফ খুলে আলগা করে দিয়ে গেছে। ইয়ানা নিজের হাত দুটি সামনে নিয়ে কয়েকটা চুমু খায়।
আর মনে মনে বলে,,,,,

” অবশেষে আমার হাত গুলো ওই দানবের খাঁচা থেকে মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু হাত নাড়াতে আমার কষ্ট হচ্ছে না কেনো? আমার তো হাতে ব্যাথা পাওয়ার কথা। এমন মনে হচ্ছে আমার হাত বেঁধে রাখে নি খুলা ছিলো।
ইয়ানা এইসব ভেবে রুমের চারদিকে দৃষ্টি মেলায়। অগ্নি কে কোথাও দেখতে না পেয়ে বুঝতে পারে অফিসে গেছে? আচ্ছা উনি এখানে কি করে? উনার পেশা কি?
ইয়ানা এইসব ভাবতে ভাবতে ওয়াশরুমে ডুকে পড়ে শাওয়ার নেওয়ার জন্য। শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে ভাবতে থাকে রাতের ঘটনার কথা।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ইয়ানা যখন ঘুমে ছিলো তখন বাহিরে অনেক শব্দ হচ্ছিলো। রুমের সমস্ত কাউচ খুলা ছিলো তাই শব্দ রুমে প্রবেশ করতে পেরেছে। শব্দগুলো যখন গভীর থেকে গভীর হতে থাকে আচমকা ইয়ানা চোখ মেলে তাকায়। কিন্তু এখন আর কোনো শব্দ নেই। ইয়ানা ভয়ের ছুটে পাশে ফিরে ও তাকাই নি অগ্নি আছে কি না? মনের ভুল ভেবে আবার ঘুমিয়ে পরে। পুনরায় সেই শব্দ। মনে হচ্ছে গুলির শব্দ আবার মনে হচ্ছে এক অদ্ভুত আওয়াজ। পুনরায় যখন সজাগ হয় তখন পাশে অগ্নিকে খুঁজে যে এই মুহূর্তে তার পাশেই শুয়ে আছে। অগ্নিকে নিজের পাশে দেখে একটু শান্তি অনুভব হয়। এরপর থেকে ইয়ানা আর ঘুমায় না । ফজরের আজানের একটু আগেই ঘুমটা চোখে লেগে যায়।
ইয়ানা শাওয়ার নেওয়া শেষে বুঝতে পারে চিন্তা করতে করতে কাপড় ছাড়াই ওয়াশরুমে ডুকে পড়েছে। এখন কি করব? সমস্যা কি স্যার তো নেই বাহিরে গেলেও সমস্যা কোথায়?

ইয়ানা কোনো কিছু না ভেবে একটা টাওয়াল পেচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়। এরপর সোজা চলে যায় কাবার্ডের কাছে কাপড় নেওয়ার জন্য। অতিরিক্ত উত্তেজনার ফলে তার খেয়াল ওই নেই বিছানায় একজন বসে আছে। আর সে মোহিত হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
ইয়ানা কাপড় নিয়ে ঘুরে ওয়াশরুমে যেতে নিবে এমনি কারোর শক্তপোক্ত বুকে ধাক্কা খায়। এহেন কান্ডে ইয়ানা ভড়কে যায়। সামনে অগ্নিকে দেখে চোখ বড় বড় হয়ে পড়ে। এই লোক এখানে কি করছে? নিজের অবস্থা অনুভব করে বিরক্তি আর লজ্জায় ওয়াশরুমের দিকে যেতে নেই। কিন্তু এক শক্তপোক্ত হাতের বেরাজালে আবদ্ধ হয়ে যায়। ইয়ানার এইবার রাগ হয়। রাতের শাস্তিটা মাথায় এসে রাগটা আর ও গাঢ় হয়ে পড়ে। অগ্নির দিকে তাকিয়ে কিঞ্চিত রাগ দেখিয়ে বলে,,,,,

” এইভাবে আটকাচ্ছেন কেনো? যেতে দিন আমাকে। ”
অগ্নি ইয়ানার চোখের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে।ইয়ানার কথা শুনে নেশালো কন্ঠে বলে ,,,,,,
” যদি না দেই? ”
ইয়ানা — এমন করছেন কেনো? আর চোখ বন্ধ করুন।
অগ্নি — যদি না করি?
ইয়ানা —ঠাডা পড়বে সেই চোখে।
অগ্নি — পড়তে দাও।
ইয়ানা —- আল্লাহ সহ্য করবে না স্যার। এমন এক অবলা মেয়েকে পেয়ে তার ফায়দা তুলছেন। আল্লাহ গজব ফেলবে কিন্তু বলে দিলাম।
অগ্নি — ফেলতে দাও।
ইয়ানা কিছু একটা করার জন্য হাত বাড়াতেই অগ্নি হাতটা খপ করে ধরে ফেলে। যেনো সে জানত এমন কিছুই হবে।
ইয়ানার হাতটাকে জোড়ে চাপ দিয়ে বলে,,,,,

“” এই ভুল আর দ্বিতীয়বার করো না বেইবি। প্রথমবার তো বেধে রেখেছিলাম বাট সেকেন্ড টাইম এমন হলে তোমাকে চিৎকার করাব।
ইয়ানা অগ্নির কথা শুনে চুপসে যায়। এই লোক এত চতুর কেনো? ইয়ানা মেকি হাসি দিয়ে বলে,,,,,
“‘ আ… আপনি ভুল বুঝছেন। আমি এমনি হাত নাড়িয়েছিলাম।
অগ্নি — মিথ্যা বলতে যোগ্যতা লাগে যা তোমার মধ্যে নেই গর্দব। যাও চেইঞ্জ করে আসো।
অগ্নি ইয়ানার মাথায় টুকা দিয়ে বেলকনিতে চলে যায়। ইয়ানা মাথা ঘেষে দ্রুত ওয়াশরুমে ডুকে পড়ে। ছিহহ কি এক অবস্থায় ছিলো ও অগ্নির সামনে।

অগ্নি বেলকনিতে এসে একটা রুমে ডুকে। যেটা সবসময় তালাবদ্ধ থাকে। অগ্নির ফিঙগার টাচ ছাড়া এই দরজা খুলা যায় না। অগ্নি রুমে ডুকে গটগট করে এক কাপ ওয়াইন খেয়ে ফেলে। গলা যেনো এতক্ষন শুকিয়ে কাট হয়ে যাচ্ছিলো? এত তীব্রতা কেনো ওই মেয়েটার প্রতি? এর চেয়ে ছোট ছোট ড্রেস পড়া মেয়ে ওর আশেপাশে ঘুরঘুর করে নানান ভাবে সিডিউস করার চেষ্টা করে কই তখন তো সে এমন হয়ে পরে না। বরং ইচ্ছে করে ওই মেয়েগুলোকে ইচ্ছেমত শায়েস্তা করি। কিন্তু ইয়ানা ওর মধ্যে কি আছে? ভেজাযুক্ত সামান্য টাওয়াল পরিহিতা একটা মেয়েকে দেখে কেনো এইভাবে কন্ট্রোললেস হয়ে পড়ি।
অগ্নি নিজের চুলগুলো শক্ত করে আকড়ে ধরে। মনে হচ্ছে নিজেকে নিয়ে নিজেই কনো এক সাগরে ডুবে যাচ্ছে যেখান থেকে ফিরে আসা অসম্ভব।

ইয়ানা ড্রস চেইঞ্জ করে দরজা ঠেলে রুমে প্রবেশ করে। চারদিকে তাকিয়ে দেখে অগ্নি নেই। কিছুক্ষন পর অগ্নি রুমে ডুকে দেখে ইয়ানাকে বিছানায় বসে রয়েছে। ইয়ানার দিকে এক পলক তাকিয়ে অফিসের জন্য তৈরি হতে থাকে।
ইয়ানা অগ্নিকে দেখে কিছুক্ষন আগে ঘটা মুহূর্তের কথা মনে পড়ে যায়। লজ্জায় পুরো মুখ লাল হয়ে পড়ে।
পরে নিজেকে নিজে শান্তনা দিয়ে শুধায়,,, যার সাথে সারাজীবন থাকতে হবে তার সামনে আবার কিসের লজ্জা? নো লজ্জা!
ইয়ানা সমস্ত লজ্জা এক পাশে রেখে অগ্নির উদ্দেশ্যে মিহি শুরে বলে,,,,,,

” এই যে শুনছেন? ”
“এই যে শুনছেন” এই ডাকটা অগ্নির কর্নে পৌছাতেই পুরো সর্বাঙ্গে কেঁপে উঠে। কি আছে এই ডাকটার মধ্যে? শুধুই কি অধিকার নাকি অন্যকিছু?
অগ্নি ইয়ানার দিকে বিমোহিত চোখে তাকায় এরপর নির্বিঘ্ন গলায় বলে,,,,
“” হুম ”
ইয়ানা — আমি পড়াশুনা রেখে এখানে চলে এসেছি এখন আমার পড়াশুনার কি হবে? আমাকে ভর্তি করাবেন না?
অগ্নি — না পড়লে কি হবে? পড়াতে চাই না আমি তোমাকে।
ইয়ানা আশ্চর্য হয়ে অগ্নির দিকে তাকায়। মানে কি এইসব কথার পড়াবে না মানে? ইয়ানার গলা কঁপছে।
ইয়ানা — ম,.. মানে কি পড়াবেন না? কিন্তু আমার তো এখন ও ভার্সিটি কমপ্লিট হয় নি।
ইয়ানার চোখে পানি টলমল করছে। অগ্নি ইয়ানার চোখের পানি দেখে ধমক দিয়ে বলে,,,,,,

” কিছু বলতে দেরী কিন্ত চোখের পানি ছাড়তে দেরী হয় না।
ইয়ানা — আমাকে কবে কাঁদতে দেখেছেন?
অগ্নি ইয়ানার দিকে ভ্রু উচিয়ে বলে,,,,
” এই যে দেখছি। ”
ইয়ানা চোখের পানি মুছে বলে,,,,
” তাহলে বললেন কেনো পড়াবেন না? ”
অগ্নি শরীরে পারফিউম লাগাতে লাগেতে বলে,,,,,
” এই কারনে কান্না করতে হবে তোমায়? মজা করে বলেছি আমি পড়াব না। আমি সব ঠিক করে রেখেছি কাল থেকে ভার্সিটি জয়েন হতে পারবে।
ইয়ানার চোখে হাসির ঝিলিক।

ইয়ানা — সত্যি বলছেন? ধন্যবাদ আপনাকে মি. চৌধুরি।
অগ্নি — এত খুশি হওয়ার কিছু নেই আমি শুধু পড়ানোর
জন্য পাঠিয়েছি অন্যকিছুর জন্য নয়।
এরপর ইয়ানার কাছে এসে বলে,,,,,,
” দেখো ইয়ানা ওইটা বাংলাদেশ ছিলো তাই বিশ্বাস রেখে যার সাথে ইচ্ছে মিলে যেতে পারতে বাট এইটা কানাডা। এখানকার রিচুয়াল সব আলাদা সাথে মানুষগুলো ও। তারা খুব ভালো হয় তবে যারা খারাপ তোমার ধারনা ও নেই তারা ঠিক কতটা হিংস্র। তাই অযথা যে কাউকে বন্ধু বানাবে না। আর সবচেয়ে বড় শর্ত কোনো ছেলদের যাতে তোমার আশে পাশে না দেখি। ছেলেদের থেকে একশত হাত দুরে থাকবে। বুঝতে পেরেছো আমার কথা?
ইয়ানা — হু।

অগ্নি বাহিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই ইয়ানার কথা শুনে থমকে যায়।
” আচ্ছা আপনি এখানে কি কাজ করেন? ”
অগ্নি পিছনে ফিরে ইয়ানার দিকে ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে বলে,,,,,
“” জানাটা কি খুব প্রয়োজন? ”
ইয়ানা — কেনো জানাটা কি খুব বেশি অন্যায়?
অগ্নি — ওহুম সম্পর্ন রাইট আছে তোমার জানার। এখানে আমাদের চৌধুরি ইন্ডাস্ট্রির আরেকটা অংশ। বাংলাদেশেরটা আব্বু দেখাশুনা করে আর এইটা আমি।
ইয়ানা — ওহহ আচ্ছা।

ইয়ানাকে আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই অগ্নির ফোন বেজে উঠে। ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে কপাল কুচকে আসে। ফোন রিসিভ করে ওইপাশের ব্যক্তির কথা শুনে রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। মুহূর্তের ভিতরে পুরো মুখ লাল হয়ে যায়। চোখ দুটি থেকে যেনো টপ করে রক্ত গড়িয়ে পড়বে ।
অগ্নির এইরকম রুপ দেখে ইয়ানা ভড়কে যায়। এই প্রথম অগ্নির এমন ভয়ংকর চেহারা সে দেখছে।
অগ্নি আর এক মুহূর্ত ও দেরী না করে এখান থেকে প্রস্থান করে। পুরো শরীরে ঘেমে যাচ্ছে।
ইয়ানা আতঙ্ক নয়নে অগ্নির যাওয়ার পানে চেয়ে থাকে। জিজ্ঞাসা করার সুযোগটি ও হয় নি,,, কি হয়েছে?

হাত পা বাধা অবস্থায় মুখ থুবরে পড়ে আছে চার জন যুবক। প্রত্যেকের চুলগুলো ঘার পর্যন্ত লম্বা। হাতে রয়েছে ছোট করে সিংহের মাথার ট্যাটু করা। এই একটা ট্যাটু যেনো তাদের পরিচয় চিনিয়ে দেয় তারা কার লোক।
লোকগুলোর সামনে এসে দাঁড়ায় এক বিশাল আগন্তুক ছায়া। তারা সেই আগন্তুক সম্পর্ক জানে। ভয়ে ছটফট শুরু করে ছোটার জন্য।
লোকগুলোর এমন বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে সামনে থাকা ব্যক্তিটির মুখে পৈশাচিক হাসি ফুটে উঠে। রুমটা অন্ধকারে ঘেরা সামান্য ল্যাম্পোস্ট জালানো। চারদিকে ফুটন্ত গরম পানি আর ভিবিন্ন অস্ত্র আর ভিবিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য। রুমে রয়েছে পচনশীল ভ্যাঁপশা গন্ধ।
সামনে থাকা ব্যক্তিটি সম্পূর্ন কালো হুডিতে আবৃত হওয়া।
হুডির আড়ালে এক রহস্যময় হাসি দিয়ে মাথায় রাখা হুডিটা ফেলে দেয়। মুখে রয়েছে কালো মাক্স আর চোখে রয়েছে হিংস্রতা। ভয়ানক দৃষ্টি ফেলে লোকগুলোর দিকে তাকায়। লোকগুলো আতঙ্কিত হয়ে ছটফট করতে থাকে যেনো কিছু বলতে চাই।

সামনে থাকা ব্যক্তিটি বাকা হাসি দিয়ে কাউকে ইশারা করে মুখের বাঁধন খুলে দেওয়ার জন্য। লোকগুলো আদেশ মোতাবেক লোকগুলোর মুখের বাঁধন খুলে দেয়।
লোকগুলো ছাড়া পেতেই সামনে থাকা ব্যক্তিটির কাছে মিনতি করতে থাকে,,,,,,,,
” ক্ষমা করে দিন স্যার আমাদের। আমরা লিডারের সামান্য পোষা লোক মাত্র। আমাদের যা বলা হয় আমরা তাই করি। বিশ্বাস করুন আমরা আর এইসব কাজ করব না। আমরা আপনার দলে যোগ হব।
সামবে থাকা ব্যক্তিটির দৃষ্টি ছিলো তীক্ষ্ণ। তীর্যক চাহনিতে নিজের হুডি ঠিক করতে করতে বলে,,,,,

” কতবার বলেছিস এই কথা? আমার কাছে সেকেন্ড কোনো অপশন নেই। কিন্তু তদের দিয়েছিলাম বাট তরা তো আমার সাথে ছলচাতুরি শুরু করলি।সাহস কি করে হলো আমাকে ডিঙ্গিয়ে এইসব কাজ করার। বলেছিলাম না এই বস্তির উপর যাতে একটা আচ ও না আসে। তাহলে তাদের থেকে তিন জন গৃহবধূ নিখোঁজ হলো কিভাবে? আর যখন তাদের পেয়েছে তখন তাদের বিধ্বস্ত মৃত অবস্থায়। কি ভেবেছিস ওরা মরে গেছে? নাহ ওদের মধ্যে দুইজন মরে গেলেও একজন এখন ও জীবিত। জানোয়ারের বাচ্চা তদের ছেড়ে দেওয়া ছিলো আমার জিবনের সবচেয়ে বড় ভুল। কি জানিস তো এইসব মেয়েদের আমার ও সহ্য হয় না কিন্তু যারা মেয়েদের দিকে নোংরা হাত বাড়ায় তাদের কলিজা মেপে দেখতে আমার অধম্য ইচ্ছে জেগে উঠে। বলতে পারিস এইটা আমার একটা শখ।
লোকটি রাগের কারনে থরথর করে কাপতে থাকে।
এরপর আবার ঠান্ডা গলায় বলে,,,,,

” তরা যে পুরুষত্যটা জাহির করেছিস সেটা আমার অনেক ভালো লেগেছে। এখন তরা তো জানিস যেটা আমার ভালো লাগে সেটা আমি আমার করে ছাড়ি। হোক আপুসে নয়ত ছিনিয়ে। এখন তদের ওইটা আমার চাই আমার টর্চার সেলের কুকুরদের খাওয়াব বলে।
লোকগুলো ভয়ে ছটফট করা শুরু করে। নিজেক বাঁচাতে একজন বলে উঠে,,,,,
“” স্যার আমি কিছু করি নি তিন জন মেয়ের সাথে ওরা তিন জন করেছে ”
লোকটার কথা শুনে বাকি তিনজন বলে,,,,
” একদম মিথ্যে বলবি না তুই ও সব কিছুর মধ্যে ছিলি। এমনকি একজনকে তুই নিজের হাতে শ্বাসরোধ করেছিস। এখন আমাদের উপর সব দোষ দিচ্ছিস?

সামনে থাকা ব্যক্তিটি নিজের কপালে অনামিকা আঙ্গুল ঘেসতে থাকে। এই অন্ধকারে লোকটির হিংশ্র চোখ গুলো স্পষ্ট। যা একজন অপরাধীর কলিজার পানি শুকানোর জন্য যথেষ্ট।
লোকগুলোর কথা শুনে সামনে হুডি পড়া লোকটি বলে,,,,
” উত্তেজনার জন্য তরা হয়ত ভুলে গিয়েছিস ওই বস্তিটার সমস্ত দায়িত্ব আমি নিয়েছিলাম তাও জন সমাবেশে। কিন্ত কত বড় কলিজা হলে তরা এই কাজ করেছিস।
লোকগুলো হুডি পড়া ব্যক্তিটির কাছে মিনতি সুরে বলে,,,,
” ক্ষমা করে দিন আমাকে স্যার।

ব্যাস এই ক্ষমা করে দিন শব্দটা কর্নপাত হতেই এতক্ষন ধরে রাখা ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে যায়। রুক্ষ হয়ে উঠে মেজাজ। শরীরের প্রতিটি শিরা উপশিরা রাগে টগবগ করে ফুটতে থাকে।
প্যান্টে গুজে রাখা বন্ধু দিয়ে পর পর চার জনের পায়ে আটটি শুট করে দেয়।
লোকগুলো ব্যাথায় চিৎকার করে উঠে। হাত বাঁধা থাকা অবস্থায় থাকার জন্য পায়ে স্পর্শ করতে পারছে না।
হুডি পড়া লোকটি বসা থেকে উঠে গর্জন করে উঠে,,,,,
” কু*ত্তার বাচ্চারা এখন ক্ষমা চাইতে এসেছিস? কলিজা কেঁপে উঠেনি মেয়েগুলোর দিকে যখন হাত বাড়িয়েছিস? এই জানের ভয় ছিলো না? একবার ও। ওদের আর্তনাদ কানে যায় নি। মনে হয় নি ওরা অসহায় নিস্পাপ। শো*** বাচ্চা এখন ক্ষমা চাইতে এসেছিস। তদেরকে শুধু,,,,,,
এই বলে হুডি পড়া লোকটি চার জন্য ব্যক্তির হাতে এক এক করে সুঁচ ডুকিয়ে দেয়। এক দুইটা সুঁচ না প্রত্যেকের হাতে বিশটা করে ডুকিয়েছে।

“” এই হাত দিয়ে স্পর্শ করেছিস তাই না। ঠিক সেই ভাবে আর্তনাদ কর যেভাবে ওরা করতে চেয়েছিলো কিন্তু তরা করতে দেস নি কিন্তু আমি তদের করতে দিচ্ছি।
লোকগুলোর আর্তনাদ আর চিৎকার বদ্ধ রুমটা ও গুমোট বেধে রয়েছে।
ওদের চিৎকার যেনো এখন বিরক্তি লাগছে তাই পুনরায় মুখ বেঁধে দেয়।
এরপর হাতে এক ছুরি নিয়ে সেই আগের জায়গায় বসে। ছুরিটার দিকে তাকিয়ে একটা রহস্যময় হাসি দেয়।
লোকগুলো শুধু মাথা দিয়ে না করতে থাকে।
হুডি পড়া লোকটি বলে,,,,

” জানিস আমি এমনিতে ও ভালো মানুষ নয়। মায়া বলতে আমার রক্তে নেই। শুধু জানি রক্তের খেলা। অন্যের রক্ত দেখলে নিজেএ ভিতরে পৈশাচিক শান্তি লাগে। লোকের এক একটা চিৎকার হৃদয়ে এক অজানা প্রশান্তি দেয়।”
হুডি পড়া লোকটা আকস্মিক লুটিয়ে পড়া লোকটির প্যান্টের ভিতর বিরথীনভাবে কু*পাতে থাকে। চার জনের রক্তে পুরো ফ্লোর লাল হয়ে যায়। ছটফট করতে থাকে। মনে হচ্ছে জীবন গলায় আটকে আছে কিন্তু রুহ আলাদা হচ্ছে না।
হুডি পড়া লোকটির এই পৈশাচিক রুপ সম্পর্কে সব বডিগার্ড অবগত। তারা সবাই ভয়ে মাথা নিচু করে রাখে।
তারা জানে তাদের বস এখানে থেমে যাবে না এর চেয়ে ভয়ংকর শাস্তি তাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
হুডি পরা লোকটি একজন গার্ডকে আদেশ করে বলে মরিচের গুঁড়ো নিয়ে আসো।
গার্ড সাথে সাথে লোকটির সামনে হাজির করে । লোকটিকে বর্তমানে হিংস্র হায়েনার থেকে কম লাগছে না। ঠোঁটের কোনে লেগে আছে রহস্যময় হাসি আর চোখে আছে হিংস্রতা।

লোকটা মরিচের গুোঁড়ো এক এক করে চার জনের প্যান্টের ভিতরে ডুকিয়ে দেয়।
কাটা জায়গায় আবার মরিচের গুঁড়ো পড়ায় এক একজন গলা কাটা মুরগির মত নড়তে থাকে।
হুডি পরা লোকটি — ছটফট কর.। আমি ও চাই তরা ছটফট করবি আর তদের ছটফট দেখে আমি উল্লাস করব।
হাতে তুলে নেয় একটা মাঝারি সাইজের শিষা। যেখানে রয়েছে তাদের শেষ শাস্থির অস্ত্র সালফিউরিক(H২So4) এসিড। এক মরনাঘাতিক তীব্র এসিড যা শরীরে দেওয়া মাত্রই মাংশ খসে যাবে। কর্পূরের মত নিশ্বেস হয়ে যাবে দেহ।

হুডি পড়া লোকটি এসিড টার দিকে তাকিয়ে অট্টহাসি দেয়। যেই হাসিতে নেই কোনো মায়া আছে শুধু বর্বরতা।
লোকটা চার জনের লোকের চারপাশে ঘুরতে থেক এরপর হঠাৎ একজনের প্যান্টের ভিতরে এসিড ঢেলে দেয়। এরপর পর পর চার জনের ও সেই অবস্থা করে।
ছট ফট করতে করতে মনে হচ্ছে একজনের চোখ উলটে চলে আসবে।
রক্তাক্ত হাতের উপর এসিড ঢেলে দেওয়া মাত্র দেহ থেকে মাংশ খসে পড়তে থেক। না আছে রক্ত আর না আছে অন্যকিছু মুহূর্তের মধ্যেই নিশ্বেস হয়ে যাচ্ছে। হাতের চামরা আর মাংশ গলে গলে পড়তে থাকে। আরেকটা এসিড পড়লেই হাড্ডিগুলোও ধ্বসে যাবে। লোকগুলো নরক যন্ত্রনা উপভোগ করে এক সময় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে।
লোকগুলোর মৃত লাশ দেখে হুংকার দিয়ে বলে,,,,,,

অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ৭

” এই জানোয়ারগুলোকে সালফিউরিক এসিডে ডুবিয়ে রাখ। এমনি উধাও হয়ে যাবে সাথে কুত্তার বাচ্চা গুলোর অস্তিত্বগুলো ও।”
হুডি পড়া লোকটা কপালের ঘাম মুছে দাড়াতেই পিছন থেকে কেউ বলে উঠে,,,

অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ৯