অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১১
সাদিয়া শওকত বাবলি
এরপর একটু ঝুঁকে মেয়েটার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
“সমস্যা হলো তুই আমার থেকে দূরে যেতে চাচ্ছিস আর আমি তোর কাছে।”
শিউরে উঠল ত্রয়ীর সম্পূর্ণ কায়া। হৃদ কম্পন গাঢ় হলো তড়িঘড়ি করে। বহুদিন পরে আবার সে এই পুরুষের সান্নিধ্যে, তার শক্তপোক্ত হাতের ছোঁয়া মেয়েটির শরীরে। ত্রয়ী ঢোক গিলল। এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে বলল,
“এভাবে ধরেছেন কেন? ছাড়ুন আমাকে।”
“ছাড়বো না। কি করবি?”
ত্রয়ী কটমট করে তাকাল শীর্ষের দিকে। অতঃপর তার বন্ধন থেকে নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে উঠল। কিন্তু হায়! ত্রয়ী শীর্ষকে এক চুল ও সরাতে পারল না নিজের থেকে। শীর্ষ বাঁকা হাসলো। আলতোভাবে ত্রয়ীর গালে হাত ছুঁয়ে দিতে দিতে বলল,
“এই টুকু তো চুনোপুঁটির মতো দেহ। তার কি তেজ? এখন কি তুই আমাকে শক্তি বাদ দিয়ে তেজ দিয়েই দূরে সরাতে চাইছিস নাকি?”
ত্রয়ী দাঁতে দাঁত পিষলো। রুক্ষ কণ্ঠে বলল,
“আজেবাজে কথা না বলে ছাড়ুন আমাকে।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“তোর কি মনে হয় ছাড়ার জন্য তোকে আমি এত কষ্ট করে খুঁজে বের করেছি? এই ছয় মাসে কম দৌড় করাসনি আমাকে। এই প্রতিটা মাসের হিসাব আমি তোর থেকে সুদে আসলে নেব।”
ত্রয়ী ভ্রু কোঁচকাল। শীর্ষের মা বোন তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে সে বেরিয়ে এসেছে। এখানে আবার হিসাব নিকাশ কিসের? ত্রয়ী ভ্রু জোড়া কুঁচকে রেখেই শুধাল,
“কিসের হিসেব নিকেশ?”
“আমাকে ছেড়ে আসার হিসেব নিকেশ।”
এই টুকু বলে থামল শীর্ষ। বাঁকা হেসে বলল,
“এই ছয় মাস আমার থেকে দূরে থাকা এবং আমাকে কষ্ট দেওয়ার অ’পরা’ধে আগামী ছয় বছর আমি তোর পেট খালি হতে দেব না।”
“মানে?”
শীর্ষ একটু ঝুঁকলো। ত্রয়ীর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
“ছয় বছরে ছয়টা বাচ্চা। ছয় মাসে তো আর ছয়টা সম্ভব না তাই বিষয়টা ছয় বছর পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেলাম। এই টুকু দয়া তোর উপরে আমি করলাম। তাছাড়া বিশ্রামেরও তো একটু দরকার আছে তাই না?”
ত্রয়ীর চমকাল, ভরকাল। ছয় বছরে ছয়টা বাচ্চা? সে মানুষ নাকি বাচ্চা তৈরির মেশিন? ত্রয়ী চোখ বড়ো বড়ো করল। হতবাক কণ্ঠে বলল,
“ছয় বছরে ছয়টা বাচ্চা!”
“কেন কম হয়ে গেল? চিন্তা করিস না। ভাগ্য ভালো থাকলে এই ছয় বছরের মধ্যে কোনো এক সময়ে যমজ বাচ্চাও হয়ে যেতে পারে। তখন বাচ্চার সংখ্যা বেড়ে যাবে।”
ত্রয়ী বিরস দৃষ্টিতে তাকাল শীর্ষের দিকে। বাচ্চা কি হাতের মোয়া নাকি যে যখন চাইবে আর হয়ে যাবে! কি বেলাজ পুরুষ মানুষ! আর তার কি বেলাজ কথাবার্তা। কি অবলীলায় সে বলে দিল কথা গুলো। একটু বাঁধলও না। ত্রয়ী নাক মুখ কোঁচকাল। কটমট করে বলল,
“অসভ্য, নির্লজ্জ পুরুষ মানুষ। কিসের বাচ্চা, কার বাচ্চা? দূরে সরুন আমার থেকে।”
“দূরে তো সরবোই না আরও কাছে আসবো। বছর বছর বাচ্চার জন্ম দেব। তুই যেমন ছয়টা মাস আমাকে শান্তিতে থাকতে দিসনি তেমন আমিও তোকে আগামী ছয় বছর শান্তিতে থাকতে দেব না।”
এই টুকু বলে থামল শীর্ষ। দম নিয়ে ফের বলল,
“একবার, শুধু একবার তোকে নিয়ে ঢাকায় ফিরতে দে তারপর দেখবি যেদিকে তাকাবি সেদিকে শুধু বাচ্চা আর বাচ্চা। আমি আমার বাচ্চাদের শিখিয়ে দেব তোর চুল ধরে সারাদিন ঝুলে থাকতে। তোর হাত, জামাকাপড় টেনে মাটিতে শুইয়ে দিতে। সারাদিন তোর কোলে উঠে বসে থাকতে। মোট কথা, তোর জীবনের সব শান্তি আমি কেড়ে নেব।”
“তাহলে আমি আপনাকে ছেড়ে দেব নাকি? আমি যদি সুখে থাকতে না পারি তাহলে আপনাকেও সুখে থাকতে দেব না। বাচ্চাদের শিখিয়ে দেব জনসম্মুখে আপনার লুঙ্গি টেনে মান ইজ্জত নিলামে তুলে দিতে।”
শীর্ষ ওষ্ঠ প্রসারিত করল। ত্রয়ীর মুখে হালকা ফু দিয়ে বলল,
“তার মানে শীঘ্রই আমার বাচ্চার মা হতে রাজি তুই। তাহলে দেরি করছিস কেন? চল আজই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। তারপর আগামীকাল থেকেই বাচ্চা জন্ম দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করি।”
ত্রয়ী অপ্রস্তুত হলো। কান দুটো উষ্ণ হয়ে উঠল আবার। কি নির্লজ্জ কথাবার্তা! আগামীকাল থেকেই নাকি বাচ্চা জন্ম দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে! শীর্ষকে প্রথম যখন ত্রয়ী দেখেছিল তখন সে ভাজা মাছটা উলটে খেতে জানে না, মেয়ে মানুষে যেন তার কঠিন এলার্জি। তারপরে গ্রামে গিয়ে শীর্ষের সাথে তার হঠাৎ বিয়ে হলো। ধীরে ধীরে লোকটার স্বরূপ প্রকাশ পেতে শুরু করল। কিন্তু তাতেও এতটাও নির্লজ্জ ছিল না। এখন তো একদম নির্লজ্জতায় ডিগ্রী লাভ করে এসেছে। ত্রয়ী হতবাক হয়ে তাকাল শীর্ষের দিকে। অবাক কণ্ঠে বলল,
“আপনি তো এমন ছিলেন না শীর্ষ ভাই।”
“কেমন ছিলাম না?”
“এতটা নির্লজ্জ।”
“এটা তোর ভুল ধারণা বালির বস্তা। আমি প্রথম থেকেই বেপরোয়া, নির্লজ্জ। শুধু তোকে দেখাতে পারিনি। তার আগেই তুই পালিয়ে এসেছিলি। সেদিন যদি পালিয়ে না আসতি তবে আজ দুই প্রেগন্যান্ট থাকতি।”
পালিয়ে এসেছিল? এ কথাটা যেন বি’ষে’র মতো ঠেকলো ত্রয়ীর কাছে। সে কখন পালিয়ে এলো? উলটো শীর্ষের মা বোন তাকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল। সে কতটা অনুনয় বিনয় করেছিল ঐ বাড়িতে তাকে একটু জায়গা দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা কেউ তার কথা শোনেনি। কু’কু’রে’র ন্যায় ওই সন্ধ্যা বেলা একা একটা মেয়েকে বের করে দিয়েছিল বাড়ি থেকে। আর শীর্ষ কিনা আজ এতদিন পর এসে বলছে সে পালিয়ে এসেছিল! ত্রয়ীর রাগ লাগলো। রুক্ষ কণ্ঠে সে বলল,
“আমি পালিয়ে আসিনি। আপনার মা বোন আমাকে জোর করে বের করে দিয়েছিল।”
“আমার মা বোন তোকে বাড়ি থেকে বের করে দিল আর তুইও চলে এলি? একটা বার, অন্তত একটা বার আমাকে কল করতে পারতি। আমাকে বলতে পারতি তোর উপরে হওয়া অত্যাচার গুলো কথা, তোকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার কথা।”
ত্রয়ী হাসলো। তাচ্ছিল্য করে বলল,
“আপনি হয়তো ভুলে গিয়েছেন ঐদিন দুপুর থেকেই আমি আপনাকে কলের পর কল করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আপনি আমার একটা কলও ধরেননি।”
“সে তো অন্য কারণে। আমি তোর উপর একটু রেগে ছিলাম তাই।”
“তাহলে বিকালে যখন আপনার মা বোন আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছিল তখন যে আপনি আমার কল ধরতেন তার নিশ্চয়তা কি ছিল? আপনি তখনও তো আমার উপর রেগেই ছিলেন। তাছাড়া আপনার সাথে আমার বিয়ে হয়েছিল কম দিন না। এর মধ্যে আপনি আপনার পরিবারের কাছে কিছুই জানাননি। আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা পর্যন্ত দেননি। অথচ দাবি করেছিলেন আপনি আমাকে ভালোবাসেন। আমি তো আপনাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে চাইনি। উলটো বিয়েটাকেও মানিনি। কিন্তু আপনিই আমাকে স্বপ্ন দেখালেন। বিয়েটা মানতে বাধ্য করলেন।”
এই টুকু বলে থামল ত্রয়ী। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে ফের বলল,
“যাইহোক, আপনি যদি আগে থেকেই আমাদের বিয়ের কথাটা আপনার বাড়ির লোকদের কাছে জানিয়ে দিতেন তাহলে সেদিন ওমন কোনো পরিস্থিতিই তৈরি হতো না। আর আপনার মা বোনও আমাকে অপমান করে বাড়ি থেকে বের করে দিতো না। আপাত দৃষ্টিতে আমাকে অপমান করা, বাড়ি থেকে বের করে দেওয়াটা আপনার মা-বোনের দোষ হলেও মূল দোষটা ছিল আপনার। আমাদের বিয়ের কথাটা সকলের থেকে লুকিয়ে রাখাটা ছিল আপনার দোষ।”
শীর্ষ এবার ত্রয়ীকে ছেড়ে দিল। দীর্ঘশ্বাস ফেলে আস্তে ধীরে বলে শুরু করল,
“দেখ, বালির বস্তা। সবকিছু বললেই করে ফেলা যায় না। সবকিছুর একটি নির্দিষ্ট সময় অসময় রয়েছে। তোর আর আমার বিয়েটা গ্রামে কিভাবে, কোন পরিস্থিতিতে হয়েছিল তা তোর অজানা নয়। তুই আমাকে নির্লজ্জ ভাবতে পারিস। আমিও মানছি আমি নির্লজ্জ কিন্তু তা শুধু তোর ক্ষেত্রে। আমার বাবা-মা, বোন কিংবা বাইরের লোকের সামনে তো না। সেখানে আমি হুট করে এসে তাদের সামনে কিভাবে বলতাম ‘আমি রাতের আঁধারে কট খেয়ে বিয়ে করেছি।’ বিষয়টা আমার কাছে অস্বস্তিদায়ক ছিল। তারপরেও আমি ভেবেছিলাম বাবা মায়ের কাছে সবটা বলব। কিন্তু মায়ের কাছে গিয়ে তার কথা শুনে আর আমার কথাগুলো বলা হয়ে ওঠেনি। আমার মায়ের আমার বিয়ে নিয়ে অনেক চিন্তা ভাবনা, অনেক শখ, অনেক স্বপ্ন। সব বাবা মায়েরই হয়তো এমন থাকে। আমিও তো আমার মায়ের একটাই ছেলে। আমি কিভাবে পারতাম তার স্বপ্নগুলো ভেঙে দিতে? আমি চেয়েছিলাম সবাইকে বুঝিয়ে শুনিয়ে মায়ের সব স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে তোর সাথে আবার বিয়েটা করতে। তাই আমাদের কট খেয়ে বিয়ের কথাটা বলিনি বাড়ির কাউকে।”
“আপনি….”
ত্রয়ী আর পুরো কথাটা আর বলতে পারল না। তার পূর্বেই ভেসে এলো তৃপ্তির কণ্ঠস্বর,
“আপু, আপু।”
মেয়েটা বোধ হয় এদিকেই আসছে। পায়ের শব্দ শোনা যাচ্ছে। ত্রয়ী ছাদে এসেছে কম সময় না। সে যখন ছাদে এসেছিল তখন চারদিকটা পরিস্কার ছিল। আর এখন আঁধার ঘনিয়েছে। একটু পর মাগরিবের আজানও পড়বে বোধহয়। ত্রয়ী আর কিছু বলল না শীর্ষকে। পিছন ঘুরে বাকি কাপড় গুলো তুলতে শুরু করল সে। ততক্ষণে তৃপ্তিও এসে দাঁড়াল ছাদে। কোমড়ে হাত দিয়ে বলল,
“সেই কখন ছাদে এসেছ, আপু। এখনো কি কাপড় তোলা হয়নি। ওদিকে মা তোমাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেছে।”
ত্রয়ী কাপড়গুলো সব হাতে নিয়ে তাকাল তৃপ্তির দিকে। ওষ্ঠদ্বয় ফাঁকা করে কিছু বলবে তার আগেই শীর্ষ বলল,
“তোমার আপু ছাদে এসে আমার সাথে গল্পে বসেছিল। তাই কাপড় তুলতে তুলতে দেরি হয়ে গেছে।”
শীর্ষ ছাদের এক কোনে দাঁড়িয়ে ছিল বিধায় এতক্ষণ তাকে খেয়াল করেনি তৃপ্তি। এবার তার কণ্ঠস্বর শুনেই তাকাল শীর্ষর দিকে। ভ্রু কুঁচকে শুধাল,
“আপনিও ছাদে ছিলেন?”
“হ্যা, গ্রাম্য প্রকৃতিটা উপভোগ করতে এসেছিলাম একটু।”
ত্রয়ী কপাল কোঁচকাল। ছাদের দরজার দিকে পা বাড়াতে বাড়াতে বলল,
“আমি নিচে যাচ্ছি। তুই আয়।”
ত্রয়ী নিচে চলে গেল। শীর্ষ আর তৃপ্তিও আর দাঁড়াল না ওখানে। ছাদ থেকে নেমে এলো ত্রয়ীর পিছু পিছুই।
চারদিকটা আঁধারের চাদরে ঢেকে যেতে শুরু করেছে একটু একটু করে। মাগরিবের নামাজের পরপরই ত্রয়ীদের বাড়ির বসার কক্ষে মজলিস বসেছে। আলেয়া বেগম এবং লুৎফা বেগম চা বানিয়েছেন সবার জন্য। এখন এই চা সবার কক্ষে কক্ষে দিয়ে আসবেন তার থেকে সবাইকে একসাথে এখানেই ডেকেছেন। তামিমও আজ এসে বসেছে বসার কক্ষে। আগের থেকে এখন অনেকটাই সুস্থ সে। একা একা হেঁটে চলে আসতে পারে।
আলেয়া বেগম এবং লুৎফা বেগম সবার জন্য চা এনে রাখলেন টি টেবিলে। এত গুলো চায়ের মধ্যে শুধু একটা কফি। শীর্ষ কফির মগটা হাতে তুলে নিল। মগে চুমুক দিতেই ওষ্ঠে হাসি ফুটে উঠল তার। সেই আগের স্বাদ। এই কফিটা আর দুধ চিনি দিয়ে বানানো হয়নি। একদম সে যেমন কফি পছন্দ করে তেমনভাবে বানানো। এ বাড়ির মানুষদের তো আর তার পছন্দ অপছন্দ সম্পর্কে জানার কথা নয়। এর মানে এই কফি ত্রয়ীর বানানো। যাক মেয়েটা তাকে ভুলে যায়নি। এখনো মনে রেখেছে তার সকল পছন্দ অপছন্দকে।
শীর্ষের ভাবনার মধ্যেই দেখলো ত্রয়ী হাতে এক কাপ চা নিয়ে নিজের কক্ষের দিকে যাচ্ছে। শীর্ষ আশেপাশে তাকাল একবার। সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত। তার দিকে কেউ খেয়াল করছে না। এই সুযোগে সে কফি রেখে উঠে গেল। লম্বা লম্বা পায়ে এলো ত্রয়ীর কক্ষের নিকটে। মেয়েটা দরজা আটকানোর পূর্বেই সে তাড়াহুড়ো করে ঢুকলো ভিতরে । ত্রয়ী ভ্রু কোঁচকাল। কপালে ভাঁজ ফেলে শুধাল,
“আপনি এখানে?”
“এলাম তোকে বাচ্চা তৈরির প্রক্রিয়াটা আগেভাগে একটু শিখিয়ে দিতে। নয়তো হঠাৎ করে ছয় ছয়টা বাচ্চা নিতে গেলে তুই ভয় পেয়ে যেতে পারিস।”
আবার সেই কথা! ত্রয়ী কটমট করল। দাঁতে দাঁত পিষে বলল,
“অসভ্য লোক। বের হন আমার রুম থেকে।”
শীর্ষ বেরুলো না। উলটো আঁটসাঁট বেঁধে বসলো বিছানার উপরে। চোখ ঘুরিয়ে আশপাশটা দেখতে দেখতে বলল,
“একা থাকিস এ কক্ষে?”
“না দশ বারোজন নিয়ে থাকি।”
শীর্ষ কপালে ভাঁজ ফেললো। চোখে মুখে চিন্তিত ভাব ফুটিয়ে তুলে বলল,
“দশ বারোজন নিয়ে থাকলে তো সমস্যা। আমি নির্লজ্জ তবে এতটা নির্লজ্জও নয় যে দশ বারোজনের সামনে তোকে বাচ্চা হওয়ার প্রক্রিয়া শেখাবো। আমার ভীষণ লজ্জা করবে।”
ত্রয়ী হতাশ হলো। লোকটা এতটা বদ, অসভ্য। আর একে কিছু বলেও লাভ নেই। কথায় শুধু কথা বাড়বে এ ব্যতীত আর কিছুই নয়। ত্রয়ী ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলল।
অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১০
অতঃপর গিয়ে বসলো পড়ার টেবিলে। টেবিলের উপর থেকে একটি বই টেনে নিয়ে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করল তাতে। শীর্ষও বসা থেকে উঠে দাঁড়াল এবার। এগিয়ে এসে ত্রয়ীর হাত থেকে টেনে নিল বইটি। অতঃপর নাক মুখ কুঁচকে বলল,
“কি সব বই পড়ছিল? তুই পড়বি জীববিদ্যা নয়তো শারীরিক শিক্ষা। তা না এসব ছাইপাশ পড়ছিস।”