অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৩
সাদিয়া শওকত বাবলি
নয়তো এতটাও এগুতো না। শিলা চোখ মুখ শক্ত করল। কণ্ঠে কাঠিন্য এটে বলল,
“আমি কাউকে কিছু বলতে পারব না।”
রিমা অবাক হলো। অবাক কণ্ঠেই শুধাল,
“কেন? তুই তো বলেছিলি তুই সাহেদ স্যারকে আমার কথা বলবি।”
“আমি বলেছিলাম তুই শীর্ষ ভাইকে আমাকে কথা বললে আমিও সাহেদ স্যারকে তোর কথা বলবো।”
“আমি শীর্ষ ভাইকে তোর কথা বলেছি তো।”
“কিন্তু শীর্ষ ভাই আমাকে মানেনি।”
“সে দোষ তো আমার না। শীর্ষ ভাই তোকে ভালোবাসে না, সে অন্য আরেকজনকে বিয়ে করেছে। এখানে আমার দোষ কি?”
“কার দোষ আর কার গুন ওসব আমি জানি না। আমি শুধু জানি তুই শীর্ষ ভাইকে আমার জন্য আনতে পারিসনি। সুতরাং আমিও তোর জন্য কিছু করতে পারব না।”
রিমা যেন আকাশ থেকে পড়ল। সে শিলার ভালোবাসার মানুষকে পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারেনি বিধায় সেও তাকে সাহায্য করবে না? এ কেমন বন্ধুত্বের পরিচয়? রিমা উঠে দাঁড়াল। হতবাক কণ্ঠে বলল,
“আমি শীর্ষ ভাইয়াকে তোকে পাইয়ে দিতে পারিনি বলে তুইও সাহেদ স্যারকে আমার কথা বলতে পারবি না? এই আমাদের বন্ধুত্ব?”
শিলা ওষ্ঠ বাঁকাল। তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল,
“কিসের বন্ধুত্ব? তোর সাথে আমি বন্ধুত্বই করেছি শীর্ষ ভাইয়ের জন্য, তাকে পাওয়ার জন্য। সেই যদি আমার না হয় তাহলে তোর মতো একটা অ’হংকা’রী, স্বা’র্থ’প’র মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব রেখে আমার কি লাভ? আর তাছাড়া কোনো শিক্ষকের সামনে প্রেম ভালোবাসা বিষয়ক কথা বলা মানেই তার চোখে খারাপ হওয়া। তোর জন্য আমি সাহেদ স্যারের চোখে খারাপ হতে যাব কেন?”
রিমা আহত হলো। নড়বড়ে কণ্ঠে শুধাল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“আমি অ’হংকা’রী, স্বা’র্থ’প’র?”
“অবশ্যই। তা না হলে ত্রয়ীর মতো একটা অসহায় মেয়েকে তুমি বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলি কিভাবে? আমি না হয় ওকে দেখতে পারতাম না কারণ শীর্ষ ভাই ওকে ভালোবাসাতো। কিন্তু তুই ওকে কোনো কারণ ছাড়াই দেখতে পারতি না। রোজ রোজ মেয়েটার উপরে অ’ত্যা’চার করার কারণ খুঁজতি।”
“আমি তো তোর জন্যই এসব করেছি।”
“আমি কি তোকে এসব করতে বলেছিলাম? এখন আমার দোষ দিবি না।”
রিমার হৃদয় ভারী হলো। সাথে রাগও লাগলো ভীষণ। যে বান্ধবীর জন্য এত কিছু করল, নিজের ভাইয়ের চোখে পর্যন্ত খারাপ হলো। সেই বান্ধবীই এখন তাকে বলছে অ’হংকা’রী, স্বার্থ’পর? বিষয়টা অনেকটা এমন হয়ে গেল না ‘যার জন্য করি চু’রি, সেই বলে চো’র।’ রিমা চোখ মুখ শক্ত করল। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“তুই একটা বে’ই’মা’ন। তোর জন্য এতকিছু করলাম আর আজ তুই আমাকে এসব কথা বলছিস? শীর্ষ ভাই ঠিকই করেছে তোকে না ভালোবেসে। তোর মতো মেয়ে যে সংসারে যাবে সেই সংসারই ধ্বং’স।”
“আর তুই যে সংসারে যাবি সে সংসারের বুঝি খুব ভালো হবে? তোর প্রকৃত রূপ জানলে কোনো ভালো ঘরের মানুষই তোকে বউ করে নিতে চাইবে না।”
“আমাকে ভালো ঘরের মানুষ বউ করে নিতে চাইবে নাকি খারাপ ঘরের তা আমি বুঝে নেব। তুই তোর নিজের চরকায় তেল দে। শীর্ষ ভাইকে তুই পাসনি, আর কখনো পাবিও না। অন্তত আমি পেতে দেব না।”
“তা দিবি কেন? অন্যের ভালো তো তোর সহ্য হয় না। অন্যের ভালো দেখলেই তোর জ্বলে।”
“তুই ও বা কম কিসে? এতদিন থেকেছি তো তোর সাথে। তোর সকল কুকীর্তি সম্পর্কে অবগত। একটা বাঁচাল, অসভ্য, নির্লজ্জ মেয়ে।”
এক কথা দুই কথায় বেশ গুরুতর ভাবেই ঝগড়া বেঁধে গেল রিমা এবং শিলার মধ্যে। ঝগড়ার তাড়নায় তারা নিজেদের কণ্ঠস্বর কিংবা ভাষা কোনোটাই সংযত রাখেনি। চারদিক থেকে শিক্ষার্থীরা জড় হতে লাগল তাদের ঝগড়া উপভোগ করতে। কেউ হাসছে তো কেউ আরও তাদের ঝগড়ার আ’গু’নে ঘি ঢালার চেষ্টা চালাচ্ছে। চারদিকে মানুষের ভীড় দেখে শিলা সবাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে একটু জোরে জোরেই বলল,
“সাহেদ স্যার এসেছে থেকে তার পিছনে পড়ে আছিস। লজ্জা করে না ছাত্রী হয়ে স্যারের পিছনে ঘুরতে? এখন আবার আমাকে বলছিস তোর হয়ে স্যারকে তোর ভালোবাসার কথা বলে দিতে।”
আশেপাশের সবাই শুনলো শিলার কথাগুলো। রিমা লজ্জিত হলো। এতক্ষণের ঝগড়া তাও একটা পর্যায়ে ছিল। এখন সবার সামনে তাকে একদম নিচু করে দিল। রিমা আশেপাশে তাকাল। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“আমি সাহেদ স্যারের পিছনে ঘুরি আর তুই কি করিস? এতদিন আমার ভাইয়ের পিছনে ঘুরেছিস। আমার পিছু পিছু আমাদের বাড়ি পর্যন্ত গিয়েছিস। যেই দেখলি আমার ভাই তোকে পাত্তা দেয় না। অমনি আমি ভালো না। আজকালকার মেয়ে মানুষ। এদের লাজ লজ্জা বলতে কিছু নেই। এরা নিজেরা ছেলেদের পিছনে ঘোরে। তাকে পাওয়ার জন্য আবার তার বোনকে সিঁড়ি হিসবেও ব্যবহার করে।”
এবার শিলাও লজ্জিত হলো। অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে তাকাল আশেপাশে। সবাই কেমন ঘৃণ্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকেই। শিলা দাঁতে দাঁত চাপলো। শুধু এই টুকু বলল,
“এই অপমানের বদলা আমি নেব। তুই কিভাবে সাহেদ স্যারকে পাস আমিও দেখে নেব।”
শিলা চলে গেল। রিমা ততটা পাত্তা দিল না তার কথায়। তবে তার খারাপ লাগলো ভীষণ। যাকে এতদিন নিজের বান্ধবী ভেবে এলো। যার জন্য ত্রয়ীর মতো একটা মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করল, ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করল, তাকেও বাড়ি ছাড়া করল সেই বান্ধবীই কিনা শেষ পর্যন্ত তার সাথে বে’ই’মা’নি করল? এই ভাবে বন্ধুত্বের প্রতিদান দিলে?
সকালের খাওয়া দাওয়ার পর্ব চলছে এখনো। সোহরাব হোসেন এবং সুমন হোসেন ইতোমধ্যে খাওয়া দাওয়া শেষ করে অফিসে চলে গেছেন। তবে শীর্ষ, আলভী, রবি এবং নয়ন এখনো খাবার টেবিলে। তাদের আজ খাবার খেতে বসতেই দেরি হয়েছে।
কিছুটা সময় নিয়ে খাওয়া শেষ করল শীর্ষ আলভী, রবি এবং নয়ন। তৃপ্তি এবং লুৎফা বেগম নামলেন এটো বাসন কোসন গুছাতে। রবি চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। হাত ধুতে যাবে। বেসিনের দিকে এক পা বাড়াতেই তৃপ্তি হঠাৎ নিজের এক পা বাড়িয়ে দিল। রবি অতটা খেয়াল করল না। বেখেয়ালিতে পরের কদম বাড়াতেই তার পা বাঁধল তৃপ্তির পায়ের সাথে। মুহূর্তেই শরীরের ভারসাম্য হারালো সে। সামনে ছিল চেয়ার। সেই চেয়ারের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়লো। ফলস্বরূপ চেয়ারের এক কোনা ঢুকে পড়লো রবির কপালে। সাথে সাথে লাল রক্তের দেখা মিলল সে স্থান থেকে।
আকস্মিক ঘটনায় চমকে উঠল উপস্থিত সকলে। শীর্ষ, আলভী এবং নয়ন ছুটে গেল তাকে ধরতে। কিন্তু যা ঘটার তার আগেই ঘটে গেছে। শীর্ষ এবং আলভী হন্তদন্ত হয়ে ধরল রবির দুই বাহু। টেনে উপরের দিকে তুলতে তুলতে শুধাল,
“তুই ঠিক আছিস তো? পড়লি কিভাবে?”
রবি সোজা হয়ে দাঁড়াতেই ফের চমকাল সবাই। লুৎফা বেগম তাড়াহুড়ো করে বললেন,
“একি তোমার তো কপাল কেটেছে। ইস কত রক্ত বেরিয়েছে।”
রবি হাত দিল কপালে। ততক্ষণে রক্ত তার কপাল বেয়ে নাক অব্দি গড়িয়েছে। ব্যথাও লাগছে ভীষণ, মাথাটা ঝিমঝিম করছে। তবুও জোরপূর্বক ওষ্ঠে হাসি ফুটিয়ে তুললো সে। অতঃপর বলল,
“ঐ একটু কেটেছে। সমস্যা নেই।”
“তা বললে হবে কি করে? কতখানি কেটে গেছে। রক্তও বেরিয়েছে।”
কথাটা বলেই তিনি তাকালেন তৃপ্তির দিকে। তাড়া দিয়ে বললেন,
“ফাস্ট এইড বাক্সটা নিয়ে আয় তো তাড়াতাড়ি। রক্ত পড়া বন্ধ করতে হবে এখনই।”
তৃপ্তি এতক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল এক কোনে। ভীষণ খারাপ লাগছে তার। অপরাধ বোধে ভিতরটা মু’ষ’ড়ে পড়েছে। আজ তার জন্যই রবির কপাল কাটলো, এতটা রক্ত গড়ালো। সে এতকিছু ভেবেও পা বাড়ায়নি তখন। সব সময় রবি শুধু তাকে অপমান করে। তাই সে রবিকে একটু শিক্ষা দিতে চেয়েছিল। সে ভেবেছিল পা বাড়াবে, রবি তার পায়ে বেঁধে হোঁচট খাবে। আর তারপর সবাই রবির উপরে হাসবে। কিন্তু সেখানে যে এত বড়ো একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাবে সে বুঝতেই পারেনি। তৃপ্তি আর দাঁড়াল না ওখানে। ছুটে গিয়ে ফাস্ট এইড বাক্সটা নিয়ে এলো।
ততক্ষণে রবি, শীর্ষরাও হাত ধুয়ে চেয়ারে বসেছে। তৃপ্তি ফাস্ট এইড বাক্স আনতেই শীর্ষ তা নিয়ে নিল। বসলো রবির কপালে ঔষধ লাগাতে।
কিছুটা সময় গড়ালো। ত্রয়ী কাঁধে কলেজ ব্যাগ নিয়ে কেবলই বেরুলো বাড়ি থেকে। শীর্ষও তার পিছু পিছু বেরিয়ে এলো। পিছন থেকে ডেকে বলল,
“বালির বস্তা, দাঁড়া।”
ত্রয়ী যেন শুনেও শুনলো না শীর্ষের কথা। সে নিজের ভাবে হেঁটে চলল সামনের দিকে। শীর্ষ দাঁতে দাঁত পিষলো। কটমট করে বলল,
“তোকে দাঁড়াতে বলেছি বালির বস্তা, দাঁড়া।”
ত্রয়ী এবারেও দাঁড়াল না। শীর্ষের রাগ লাগলো ভীষণ। লম্বা লম্বা পা ফেলে গিয়ে দাঁড়াল মেয়েটার পথ আগলে। ত্রয়ী ভ্রু কোঁচকাল। কণ্ঠে বিরক্তি নিয়ে বলল,
“সমস্যা কি? এভাবে বখাটেদের মতো আমার পথ আগলে দাঁড়িয়েছেন কেন?”
“ইচ্ছে হয়েছে তাই। তোকে দাঁড়াতে বলেছিলাম না দাঁড়ালি না কেন?”
ত্রয়ী ভেংচি কাটলো। মুখ বাঁকিয়ে বলল,
“আমারও ইচ্ছে হয়েছে তাই।”
শীর্ষ অবাক হলো। ত্রয়ী আর আগের মতো নেই। আগে ত্রয়ীকে যা বলতো মেয়েটা তাই করতো। কখনো কথার পৃষ্ঠে একটা জবাব দিতো না। আর এখন! মুখে যেন খই ফুটছে এই মেয়ের। প্রতিটি কথায় তার জবাব দেওয়া চাই ই চাই। শীর্ষের মুখশ্রী থমথমে রূপ ধারণ করল। গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“তুই বদলে গেছিস, বালির বস্তা। আগের থেকে চালাক হয়ে গেছিস।”
“তো সারাজীবন বলদ থাকবো নাকি?”
“বাপের বাড়ি এসে সাপের পাঁচ পা দেখেছিস?”
“সাপের কোনো পা নেই।”
“এখন কিন্তু তুই বেশি কথা বলছিস, বালির বস্তা।”
“আপনি আমার পথ ছাড়ুন তাহলেই আর বেশি কথা বলব না।”
শীর্ষ থেমে গেল। বুঝলো এই মেয়েকে আর কিছু বলে লাভ নেই। এখন আর ত্রয়ীকে রাগ দেখিয়ে বা ধমকে সামলানো যাবে না। ফোঁস ফোঁস করে কয়েকটা নিঃশ্বাস ফেললো সে অতঃপর বলল,
“দেখ বালির বস্তা, বিগত দিনে কি হয়েছে না হয়েছে তুই ও সব জানিস আর আমিও। আমি মানছি আমার মা বোন অন্যায় করেছে। এবং তার জন্য তাদের আমি যথেষ্ট শাস্তি দিয়েছি। তোকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল বলে আমিও বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছি। গত ছয় মাস ধরে আমি বাড়ি ফিরি না, মা বোনের সাথে কথা বলি না।”
“তো…”
শীর্ষ একটু সময় নিল। ছোট একটি শ্বাস ফেলে বলল,
“বিগত দিনে কি হয়েছে না হয়েছে ভুলে যা। কম তো কষ্ট দিলি না আমাকে। গত ছয়টা মাস আমার থেকে দূরে থাকলি। এখনো কি তোর আমকে শাস্তি দেওয়া শেষ হয়নি?”
ত্রয়ী চুপ করে রইল। জবাব দিল না কোনো। শীর্ষ একটু এগিয়ে এসে ত্রয়ীর একটা হাত ধরল। মোলায়েম কণ্ঠে বলল,
“এখন আমার সাথে ফিরে চল, আমার বাড়িতে।”
ত্রয়ী শীর্ষের হাতের বাঁধন থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিল। কঠিন কণ্ঠে বলল,
“আমি কোথাও যাব না। এখানেই থাকব।”
“না, তুই আমার সাথে যাবি।”
“না।”
শীর্ষের মেজাজ বিগড়ালো। দাঁতে দাঁত পিষে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
“শেষ বারের মতো বলছি বাড়ি ফিরে চল, বালির বস্তা।”
“যাব না আমি।”
ত্রয়ীর শক্ত কণ্ঠস্বর। শীর্ষের হঠাৎ খেয়ালে এলো ত্রয়ী অভিশাপে ভয় পায়। এর আগেও অভিশাপের ভয় দেখিয়ে তাকে দিয়ে বেশ কিছু কাজ করিয়ে নিয়েছে সে। শীর্ষ বাঁকা হাসলো। এরপর বলল,
“বাড়িতে ফিরবি নাকি অভিশাপ দেব?”
ত্রয়ীও হাসলো শীর্ষের কথায়। এই লোক ভেবেছে তাকে অভিশাপের কথা বলবে আর সে দৌড়ে বাড়ি চলে যাবে। এখন সময় বদলেছে, ত্রয়ী শক্ত হয়েছে। সে এখন আর ভয় পায় না ঐসব অ’ভিশা’প টবিশাপে। আগে তার ভিতরে হারানোর ভয় ছিল। তাই অভি’শাপে ভয় পেত। এখন আর জীবনে হারানোর মতো কিছু নেই। আর অভিশাপের ভয় ও নেই। ত্রয়ী মুখ বাকালো। তাচ্ছিল্য করে বলল,
“দিন অভিশাপ, আপনার অভি’শাপকে ভয় পায় কে?”
“সত্যি সত্যি কিন্তু অভিশাপ দেব।”
“দিন না, তাড়াতাড়ি দিন। আর যদি আপনি অভিশাপ দিতে ভয় পান তাহলে আমাকে বলুন। আমি আপনাকে অভিশাপ দেই। বত্রিশটা দাঁত আমার মুখে। এ মুখ থেকে দেওয়া অভি’শাপ বিফলে যাওয়ার চান্স খুবই কম।”
শীর্ষের ক্রোধ আরও বাড়লো। কটমট করে বলল,
“কি অভিশাপ দিবি। দে তো দেখি কত বড়ো সাহস তোর।”
ত্রয়ী এলোমেলো দৃষ্টি ফেললো। কি অভিশাপ দেবে ভেবে পেল না সে। শেষে এক প্রকার হুজুগের বশেই বলে ফেললো,
অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১২
“আপনার মাথায় গু* পড়ুক।”
ত্রয়ীর কথাটা বলতে দেরি তবে শীর্ষের মাথায় সাদা বর্ণের এক দলা ঘন তরল এসে পড়তে দেরি লাগল না খুব বেশি। শুধু মাথায় না, মাথার উপর থেকে কিছুটা তরল ছিটকে কপালেও লাগলো তার। সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে নিল শীর্ষ। সম্ভবত মাথার উপরে থাকা গাছ থেকে কোনো পাখি তার মল ত্যাগ করেছে। আর সেটাই এসে পড়েছে শীর্ষের মাথায়, কপালে। ত্রয়ী হতবাক হয়ে পড়ল। সত্যি সত্যি তার অভিশাপ এভাবে লেগে গেল? ত্রয়ী চোখ বড়ো বড়ো করল। বিস্মিত কণ্ঠে বলল,
“সত্যি সত্যি আপনার মাথায় গু* এসে পড়ল?”