অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৭

অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৭
সাদিয়া শওকত বাবলি

রাতের আঁধারে ছেয়ে গেছে চারপাশ। সোডিয়ামের কৃত্রিম আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে শহরের বুক। দীর্ঘ জার্নির পর কেবই শীর্ষ, রবি, আলভী এবং নয়ন ঢাকায় এসে পৌঁছাল। অবশ্য গতকাল রাতে সোহরাব হোসেনের সাথে কথা বলেই তারা রওনা দিতে চেয়েছিল ঢাকার উদ্দেশে কিন্তু সোহরাব হোসেন এবং তামিমরা তা হতে দেয়নি। তারা আজ সকালে খাইয়ে দাইয়ে তবেই ছেড়েছে।

রাত প্রায় আটটা। শীর্ষদের বাড়ির অভিমুখে একটি ট্যাক্সি এসে থামল। সেখান থেকে নেমে এলো শীর্ষ নিজেই। ট্যাক্সি চালকের ভাঁড়া মিটিয়ে বিদায় দিল তাকে। অতঃপর ঘুরে দাঁড়াল বাড়ির দিকে। কতদিন পর আবার নিজ বাসভবনে ফিরেছে সে। সেই ছয় মাস পূর্বে মা-বোনের উপরে রাগ করে যে বাড়ি ছেড়েছিল শীর্ষ তারপর আর এ মুখো হওয়া হয়নি। আজ হলো তাও ছয় মাস পূর্বে করা তার মা-বোনের করা ভুলের সংশোধন করতে। কিন্তু সে কি পারবে সে ভুলের সংশোধন করতে? ফাহমিদা বেগম কি রাজি হবে ত্রয়ীকে আবার বাড়ি ফিরিয়ে আনতে? মনের মধ্যে বিভিন্ন কথা চিন্তা করতে করতেই শীর্ষ হাত উঁচিয়ে কলিং বেল বাজালো। প্রায় সাথে সাথেই খুলে গেল দরজাটা। দরজা খুলেছে নুড়ি। দরজা খুলেই মেয়েটা শীর্ষকে দেখে অবাক হলো। পর উত্তেজিত হয়ে ডাকল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“বড়ো সাহেব, আম্মা! কই আপনেরা? দেখে যান কে আসছে। ছোট সাহেব আবার ফিরা আসছে।”
নুড়ির হাঁক ডাকে ফাহমিদা বেগম, আব্দুর রহমান খান, পন্না এবং রিমা কক্ষ থেকে বেরিয়ে এলো। ততক্ষণে শীর্ষও গৃহে প্রবেশ করেছে। বসার কক্ষে আসতেই ভাইকে দেখে ছুটে গেল পন্না। উচ্ছাস নিয়ে বলল,
“ভাইয়া তুমি ফিরে এসেছো? কতদিন দেখি না তোমায়।”
এতদিন পর ছেলেকে দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়লেন ফাহমিদা বেগমও। আঁখি দ্বয় ভরে উঠল তার। ব্যস্ত পায়ে সে এসে দাঁড়ালেন শীর্ষের অভিমুখে। ধরা গলায় বললেন,
“তুই এসেছিস বাবু! অবশেষে মায়ের কথা মনে পড়ল তোর?”

এতদিন পর মাকে দেখে, তার কণ্ঠস্বর শ্রবণে শীর্ষও আবেগী হয়ে পড়ল। মায়ের উপরে থাকা তার অভিমান গুলো যেন একটু হলেও সরে গেল। গলাটা কেমন ধরে এলো। হাজার হলেও এই নারী তার মা। দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাকে জন্ম দিয়েছেন। এনার সামনে এলে, এনার মমতাময়ী মুখের দিকে তাকালে এনার সকল অন্যায়, ভুল ভুলে যেতে ইচ্ছে হয় শীর্ষের। তখন মনে হয় এই নারী কখনো কোনো অন্যায় করতে পারে না। করলেও তা খুব বেশি গুরুতর নয়।‌ শীর্ষ মূলত এই কারণেই এই কয় মাস বাড়িতে ফিরেনি। কারণ তার হৃদয়ে মা-বোনের প্রতি যত ক্রোধ, অভিমানই থাকুক না কেন এদের অভিমুখে এলে, এদের কণ্ঠস্বর শুনলে সবটা সে ভুলে যেতে পারে। এদের সামনে এলেই ইচ্ছা হবে এদের ক্ষমা করে দিতে। শীর্ষ যেমন ত্রয়ীকে ভালোবাসে তেমন তার মা বোনকেও তো ভালোবাসে। সেই ভালোবাসার মায়ায় সে যেকোনো সময় অন্ধ হয়ে যেতে পারতো যা ত্রয়ীর সাথে অন্যায় হতো। তাই সে সবার থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিল। শীর্ষ তাকাল মায়ের অশ্রুসিক্ত মুখপানে। ধীর গলায় শুধাল,

“কেমন আছো, মা?”
ফাহমিদা বেগম নাক টানলেন। ছেলের গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললেন,
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুই কেমন আছিস? নিশ্চয়ই খাওয়া দাওয়া ঠিকভাবে করিস না। আগের থেকে কতটা শুকিয়ে গেছিস।”
শীর্ষ হালকা হাসলো। তার মা কেমন সামান্য একটু সময়ের দেখাতেই বুঝে নিয়েছে তার ওজন কমেছে। অথচ এই মা-ই সেদিন তার সুখের চিন্তা করল না। কি হতো ত্রয়ীর কথাগুলো একটু বিশ্বাস করলে? তারপর বিশ্বাস না করতে পারলে তার আসার অপেক্ষা করতো বা তাকে কল করে জিজ্ঞেস করতো সবটা। সেদিন যদি ফাহমিদা বেগম নিজের মেয়ের কথায় না নেচে শীর্ষকে অন্তত একটা কল করতো তাহলে আজকের এই দিন দেখতে হতো না। আজ হয়তো মা, বাবা, স্ত্রী এবং বোনদের নিয়ে একটি সুখের সংসার থাকতো তার। শীর্ষ দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। এর মধ্যে আব্দুর রহমান খানও এগিয়ে এলেন ছেলের দিকে। চারদিকে নজর বুলিয়ে বললেন,

“ত্রয়ী কোথায়? ওকে নিয়ে আসো নি?”
শীর্ষ বরিশাল থাকাকালীন বেশ কয়েকবারই অফিসের বিভিন্ন কাজের বিষয়ে কথা বলেছিল আব্দুর রহমান খানের সাথে। তখনই সে বাবাকে জানিয়েছিল ত্রয়ীকে খুঁজে পেয়েছে। তাকেই আনতে গেছে সে। তবে আব্দুর রহমান খান এ কথা জানাননি বাড়ির কাউকেই। ফলস্বরূপ ত্রয়ীর কথা শুনে অবাক হলেন বাড়ির বাকি সকলে। ফাহমিদা বেগম কণ্ঠে বিস্ময় নিয়ে শুধালেন,
“ত্রয়ী! তুই খুঁজে পেয়েছিস ত্রয়ীকে?”
শীর্ষ মাথা ঝাঁকাল। ছোট করে জবাব দিল,
“হুম।”
“কোথায় ত্রয়ী? ওকে নিয়ে আসিসনি কেন?”

ফাহমিদা বেগমের কণ্ঠে তীব্র উৎকণ্ঠা। ভদ্রমহিলা আগেই তার নিজের বুঝতে পেরেছেন। বুঝতে পেরেছেন মেয়ের কথায় প্ররোচিত হয়ে ত্রয়ীকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তিনি কত বড়ো অন্যায় করেছেন। তিনি অনেকবার চেয়েছেন ত্রয়ীর নিকট ক্ষমা চাইতে। তাকে আবার এ বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু মেয়েটিকে কোথাও খুঁজে পায়নি। শীর্ষ ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলল। এগিয়ে গিয়ে সোফায় বসতে বসতে শুধাল,
“ও আসেনি।”
“ত্রয়ী নিশ্চয়ই এখনো আমার উপরে রেগে আছে তাই আসেনি। ও কোথায় আমাকে বল। আমি যাব ওর কাছে। আমার কৃতকর্মের জন্য মাফ চাইবো। ও নিশ্চয়ই আমাকে ফিরিয়ে দিতে পারবে না।”

মায়ের কথায় একটু হলেও ভরসা পেল শীর্ষ। যাক মা-কে ত্রয়ীর কথা বললে সে বুঝবে। তার সাথে মেয়েটাকে ফিরিয়ে আনতে যেতে রাজি হবে। আর বাবা তো আগে থেকেই রাজি। শীর্ষ চোখ তুলে তাকাল। আস্তে ধীরে বলতে শুরু করল সবটা। সবটা শুনে ফাহমিদা বেগমের হৃদয়ে আরও অপরাধবোধ জাগলো। তার জন্য মেয়েটাকে কতটা কষ্ট পেতে হয়েছে, কতটা কঠিন সময়ের মধ্যে থেকে যেতে হয়েছে। তিনিও তো একজন মা। একজন মা হয়ে আরেকজনের সন্তানের সাথে কিভাবে তিনি এত বড়ো একটি অন্যায় করে ফেলেছিলেন। আসলে প্ররোচনা এবং ক্রোধ দুটোই মানুষের মনুষ্যত্ববোধকে নষ্ট করে দেয়। ফাহমিদা বেগমের বেলায়ও তাই ঘটেছিল। রিমার প্ররোচনা এবং ক্রোধ তার ভিতরকার মনুষ্যত্ববোধকে গিলে খেয়েছিল। আঁখিদ্বয় ভরে উঠল ফাহমিদা বেগমের। ধরা গলায় তিনি বললেন,

“আমি যাব। আমাকে কালই নিয়ে চল ত্রয়ীর কাছে।”
শীর্ষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। ছোট করে জবাব দিল,
“হুম।”
তবে এই এতটা সময় ধরে চুপ ছিল রিমা। সে শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনছিল সবার কথা। কারোরই কোনো কথার জবাব দেয়নি, দিতে ইচ্ছাও হয়নি। নিজের ভালোবাসা হারানোর দহনেই এই মুহূর্তে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে সে। আবার অন্যের ঘর ভাঙার মতো কথা বলবে কখন? রিমা আজ একটু হলেও নিজের ভুল বুঝতে পারছে। একটু হলেও তার ভিতরে অনুতাপ জাগছে ত্রয়ীর সাথে করা অধ্যায়গুলোর জন্য। তবে সেই শাস্তিই কি সে পাচ্ছে? একদিন রিমা ত্রয়ীর থেকে তার স্বামী, সংসার, ভালোবাসা কেড়ে নিয়েছিল। আজ সৃষ্টিকর্তা তার ভালোবাসার মানুষটাকেই কেড়ে নিচ্ছেন।

সুদীর্ঘ এক রাত কেটে আবার দিনের দেখা মিলেছে। সূর্যটা আকাশে জেগে উঠেছে বিপুল উজ্জ্বলতা নিয়ে। রিমা আজ একটু তাড়াতাড়িই কলেজে এসেছে। সাহেদের সাথে কথা বলতে হবে তাকে। যত যাই হোক না কেন সাহেদ তো এখনো জানে না সে ভালোবাসে তাকে। রিমার একবার অন্তত সাহেদকে নিজের মনের কথা জনানো উচিত। এতদিন মেয়েটা ভয় পেয়েছে। ভেবেছে সাহেদ যদি তাকে ফিরিয়ে দেয়, শীর্ষকে বলে দেয় কিংবা কলেজের উপরোক্ত অধ্যাপকদের নিকট নালিশ জানায়। কিন্তু আজ কোনো ভয় নেই। অবশ্য যেখানে নিজের ভালোবাসা হারানোর কঠিন অনলে সে পড়েছে সেখানে এত ভয় রেখেও বা লাভ কি? আজ সে সাহেদকে নিজের মনের কথা জানাবে। তারপর যা হয় হোক। বেশি হলে বাড়িতে দুই চারটা মা’র’ই খাবে অথবা কলেজে তার মান সম্মান যাবে। রিমা অস্থির হয়ে পায়চারী শুরু করল সাহেদের কেবিনের অভিমুখে। লোকটা এখনো আসছে না কেন? দশটা তো প্রায় বাজতে চললো।
রিমার এদিক ওদিক হাঁটার মধ্যেই লক্ষ্য করল সাহেদ এসেছে। তার দিকেই হেঁটে আসছে। মেয়েটা এক মুহূর্তও সময় নষ্ট করল না। ব্যস্ত পায়ে গিয়ে দাঁড়াল সাহেদের মুখোমুখি। অধৈর্য গলায় বলল,

“স্যার আপনি এসেছেন? সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি আপনার জন্য।”
সাহেদ ভ্রু কোঁচকাল। কপালে ভাঁজ ফেলে শুধাল,
“কেন অপেক্ষা করছো?”
রিমা ইতস্তত করল। এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে জবাব দিল,
“আপনার সাথে কিছু জরুরি কথা ছিল স্যার।”
সাহেদ হয়তো বুঝলো রিমা কি বলতে চাইছে। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলল সে। নিজের কেবিনের দিকে যেতে যেতে বলল,
“কেবিনে এসো।”
সাহেদ কেবিনে ঢুকে বসলো নিজের চেয়ারে। রিমাও এলো তার পিছু পিছু। তবে সে বসলো না কোথাও। বুকে চড়ম উৎকণ্ঠা নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল চুপচাপ। সাহেদ একটু সময় নিল। এরপর বলল,
“এবার বলো তুমি কি বলতে চাইছিলে।”

আসার সময় তো অনেক সাহস নিয়ে এসেছিল রিমা। কিন্তু এখন সাহেদের অভিমুখে এসে সব যেন কেমন এলোমেলো হয়ে গেছে। নিজেকে ভীষণ ভীত মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে। কিন্তু না, এভাবে পিছু হটলে হবে না। আজ যেভাবেই হোক সাহেদকে সবটা বলতে হবে। নয়তো এমনও হতে পারে এরপর আর সে সাহেদকে নিজের মনের কথা বলারই সুযোগ পেল না। তার আগেই সাহেদ বিয়ে করে নিল। তারপর সারা জীবন ভালোবাসা হারানোর অ’ন’লে পুড়ে ম’র’তে হবে তাকে। সাহেদের সামনে এসেও তাকে নিজের মনের কথা না জানাতে পারার আফসোসে ধুঁকে যেতে হবে। রিমা জোরে জোরে কয়েকটা নিঃশ্বাস নিয়ে নিজেকে ধাতস্থ করল। অতঃপর হুট করেই বলল,

“আমি তো আপনাকে ভালোবাসি, স্যার।”
সাহেদ কিঞ্চিৎ সময় নিয়ে শীতল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল রিমার দিকে। এরপর নির্বিকার ভঙ্গিতে বলল,
“জানি।”
রিমা অবাক হলো। কণ্ঠে বিস্ময় নিয়ে বলল,
“আপনি জানতেন!”
“হ্যা, তোমার বান্ধবী শিলা বলেছিল। অবশ্য সে বলেছে আমি তোমার ভালোবাসা না জেদ।”

রিমার আবাকতা বাড়লো আরও। সাহেদকে শিলা জানিয়েছিল এ কথা? আর কি বলল লোকটা? শিলা বলেছে সাহেদ তার ভালোবাসা না জেদ! এই মেয়েটা এভাবে তার পিঠ পিছে ছু’রি মা’র’ল? অথচ এক সময় শিলার সাথে তার কত ভালো সম্পর্ক ছিল। সে নিজের বোনের মতো মনে করতো মেয়েটাকে। এর জন্যই তো সে একদিন ত্রয়ীকে বাড়ি ছাড়া করেছিল। এই যে সেদিন শিলার সাথে তার‌ ঝগড়া হলো তখন রাগের মাথায় মেয়েটাকে দুই চার কথা শুনিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু কখনো তার কোনো ক্ষতির কথা ভাবেনি। রিমার হৃদয় ভারী হলো। চোখ ফেটে অশ্রুর দেখা মিলল। শিলা এভাবে তার বিশ্বাসের প্রতিদান দিল? কিন্তু না, এসব ভেবে এখন সময় নষ্ট করলে চলবে না। সাহেদকে বুঝাতে হবে শিলা মিথ্যা বলেছে। সে তার জেদ নয় বরং ভালোবাসা। রিমা ব্যস্ত হলো। তাড়াহুড়ো করে বলল,

“শিলা মিথ্যা বলেছে, স্যার। আপনি আমার জেদ নন, আপনি আমার ভালোবাসা। আমি সত্যিই আপনাকে ভীষণ ভালোবাসি‌। আর তা এখন থেকে নয়, অনেক আগে থেকেই। যেদিন আমি প্রথম আপনাকে দেখেছিলাম সেদিন থেকেই আপনার প্রতি দুর্বলতা অনুভব করেছিলাম‌। তারপর ধীরে ধীরে তা ভালোবাসায় পরিণত হলো।”
“এসব কথা এখন আর বলে কোনো লাভ নেই। আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।”
সাহেদের বিয়ে ঠিক হওয়ার কথা আবার স্মরণে আসতে রিমার হৃদয় যেন চিৎকার করে উঠল। কেমন দম বন্ধ হয়ে আসতে চাইল তার। না, না সাহেদের অন্য কোথাও বিয়ে হতে পারে না। তার অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেলে রিমা বাঁচবে কি করে। মেয়েটা ডুকরে কেঁদে উঠল। কান্না বিজরিত কণ্ঠে বলল,

“আপনি অন্য কোথাও বিয়ে করতে পারেন না, স্যার। আপনি অন্য কোথাও বিয়ে করলে আমার কি হবে? আমি আপনাকে ভালোবাসি ভীষণ।”
রিমার কান্না দেখে সাহেদেরও খারাপ লাগলো। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেছে। এখন করার কিছুই নেই। সাহেদ ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলল। ধীর কণ্ঠে বলল,
“সত্যি কথা বলতে আমিও তোমার প্রতি এক সময় দুর্বল ছিলাম। ভালোবাসি কিনা জানি না তবে ভীষণ পছন্দ করতাম। তোমার প্রতি আলাদা একটি আকর্ষণ অনুভব করতাম। এবং এই বিষয়েই ত্রয়ীর সাথে কথা বলতাম। তুমি আমাকে নিয়ে ত্রয়ীকে সন্দেহ করতে অথচ ওর সাথে আমার প্রতিটি কথার মূল বিষয়বস্তুই ছিলে তুমি।”
এই টুকু বলে থামল সাহেদ। একটু সময় নিয়ে ফের বলল,

অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৬

“আমাকে নিয়ে সন্দেহ করতে করতে তুমি ঐ অসহায় এতিম মেয়েটাকে বাড়ি থেকেই বের করে দিলে। কিন্তু ঐ মেয়েটা তোমার নামে আমাকে কখনো খারাপ কিছু বলেনি। তুমি ওর সাথে আমার জন্য হাজারটা খারাপ ব্যবহার করেছো। ও তার একটা কথাও আমাকে বলেনি। উলটো তুমি যাকে সবথেকে কাছের মনে করতে, নিজের সর্বোচ্চ ভালো বান্ধবী মনে করতে সেই শিলাই আমাকে এ কথা গুলো বলে গেছে। সে চায়নি তুমি আমাকে পাও।”

অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৮