আত্মার অঙ্গীকারে অভিমোহ পর্ব ৩৩

আত্মার অঙ্গীকারে অভিমোহ পর্ব ৩৩
অরাত্রিকা রহমান

মিরায়া ভয়ে শিটিয়ে গিয়ে বিরক্ত হয়ে বলল-
“আপনি এত অশ্লীল কেন? আমাকে একটু বলেন তো।”
রায়ান ঠোঁট কামড়ে হেসে মিরায়ার ভয়ের মজা নিতে বলে-
“হাসপাতালে ল্যাংটো হয়ে জন্ম নিয়েছিলাম তো তাই।”
মিরায়া রায়ানের জবাবে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। তার মুখটা আপনা আপনি বেঁকে গেল যেন উত্তর শুনে তার অসহ্য লাগছে। রায়ান এর উত্তরের ধারাবাহিকতায় মিরায়া বলে ওঠে-

“তো আপনার কি মনে হয় বাকি সবাই শাড়ি পাঞ্জাবি পরে জন্ম নিয়েছিল?”
রায়ান ঠোঁট কামড়ে হেঁসে মিরায়ার কোমরে নিজের হাত আরো দৃঢ় করে নিল। মিরায়া আবার এক ধাক্কায় রায়ানের আরো কাছে চলে আসলো। তার মুখে লজ্জার ভাব স্পষ্ট কিন্তু ওই পরিস্থিতিতে লজ্জা ভাবটা প্রকাশ করার ফুরসত টুকু পাচ্ছে না সে।
রায়ান মিরায়ার প্রশ্নের উত্তরে বলল-

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” না তো। এমন কেন মনে হবে আমার। তুমি আর বাকি সবাইও আমার মতই অশ্লীল। যেভাবে নিজের ছোট বোনের সাথে বর বউয়ের খাওয়া খাওয়ি নিয়ে কথা বলছিলে, তারপর তোমাকে আর ভদ্র ভাবার ভুল আমি করব না বেইবি। মানুষ অশ্লীল হয় সামনে কে আছে তা দেখে। আর আমি তোমার জন্য অশ্লীল।”
মিরায়া এক মুহূর্তের জন্য রায়ানের এত কাছে থাকার বিষয়টা ভুলে গেল হঠাৎ অসহায় মুখ করে নিচে তাকিয়ে তখন সোরায়াকে বলা কথাগুলো মাথায় আসলো সে লজ্জায় পড়ে সাথে সাথে রায়ানকে তার কথাগুলো নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে যাবে এমন সময়ে রায়ান মিরায়াকে থামিয়ে দিয়ে কোমরে আরো শক্ত করে ধরে বলল-
“এখন যাই বলবে সেটা শুধু মাত্র সময় নষ্ট। তার চেয়ে বরং এটা বলল- ডু ইউ ওয়ানা ট্রাই হুয়াট ইউ জাস্ট সো, মাই ফাঁকিং লিটল হার্ট-বার্ড?”

মিরায়া রেগে রায়ানের হাত তার কোমর থেকে সরাতে চেষ্টা করতে করতে বলল-
“নিজের নির্লজ্জ মুখ বন্ধ করতে কি নিবেন আপনি বলেন তো?”
রায়ান হেঁসে মিরায়ার কানের কাছে ঝুঁকে বলল-
“তোমাকে। দিয়ে দেও চুপ হয়ে যাচ্ছি।”
বলেই রায়ান মিরায়ার ঠোঁটের কাছে নিজের ঠোঁট আনতে থাকে। মিরায়া চোখ বড় বড় করে নিয়ে হাতে থাকা টয় গুলোর একা রায়ানের মুখে ধরে। রায়ান দুষ্টু হেঁসে মিরায়ার কোমর ছেড়ে দেয় ইচ্ছা করেই। রায়ানের থেকে ছাড়া পেয়ে মিরায়া এক মূহুর্ত দেরি না করে রায়ানের ঘর থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
রায়ান মিরায়ার দৌড়ে বের হওয়ার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো- “উফ্! কি কিউট লাগে আমার বউটা লজ্জা পেলে।”
মিরায়া ঘর থেকে চলে যাওয়ার পরই রায়ান আবার মুভি দেখতে থাকলো আর কফি খেতে থাকলো। শেষ হলেই ঘুমিয়ে পরবে।

মিরায়া এক দৌড়ে নিজের ঘরে এসে দরজা লাগিয়ে নিজের বিছানায় ঝাঁপিয়ে পরলো। লজ্জায় বিছানায় শুয়ে হাওয়াতে কিছু কখন হাত পা ছুড়ে রায়ানকে গালাগালি করতে লাগলো-
“বজ্জাত বেডা, নির্লজ্জের হাড্ডি, বদ-দোয়া দিচ্ছি তোর কপালে একদম ভদ্র, লজ্জাশীল মেয়ে জুটবে ঠিক মতো রোমান্সও করতে দিবে না দেখিস।”
তারপর আপন মনে বিছানা ঠিক করে ঘুমিয়ে গেল। মাথাতে রায়ানই ঘুরছে। তবু সারাদিনের ক্লান্তির কাছে হার মানতে বাধ্য মানবদেহের মস্তিষ্ক। কিছু সময়ের ব্যবধানেই ঘুমিয়ে পড়লো।

একই সময়ে অন্য ঘরে সোরায়া এখনো রাত জাগছে। বারবার ফোন চেক করছে। মনে এক চিন্তা এতগুলো মেসেজ আন-সেন্ড করার পর কি মাহির একবারো জিজ্ঞেস করবে না যে সে কি লিখেছিল। কিন্তু কই কি! মাহির তার ফোনও দেখে নি মেসেজ যে আন-সেন্ড হয়েছে সেটাও জানে না।
সোরায়া মাহিরের ছবি দেখতে আবার ফেসবুক খুলে মাহিরের আইডিতে ঢুকলো। সে মাহিরে প্রোফাইল পিকটা বের করে জুম করে দেখতে লাগল মাহিরের ছবিটা। একটু জুম করে নিয়ে ছোট ছোট আদুরে ঠোঁটের স্পর্শ করল মোবাইল স্ক্রিনে ঠিক তখনই তার ফোন বেজে উঠলো- জুঁই ফোন করেছে। এত রাতে কেন ফোন করেছে সেটা সোরায়া অনুমান করতে পারল না কিন্তু বেশ বিরক্ত হলো তার আর তার মাহিরের সময়ে বাঁধা পড়ার কারণে।
সোরায়া কল ধরে-

“ওই কি হয়েছে তোর? এত রাতে কেউ কল দেয়?”
জুঁই অপর পাশ থেকে বলল-
“দোস্ত একটা কথা জানতে পারলাম চিন্তায় তো ঘুম আসছে না তাই তোকে কল করেছি বলতে।”
সোরায়া অবাক হয়ে-
“কেন কি হয়েছে ? কি এমন শুনলি তুই যে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে!”
জুঁই একটু আবেগে বলল-
“আমাদের এখনো নবীনবরণ হয়নি কিন্তু বাকিদের কাছে শুনলাম কিছুদিন পরে নাকি সিটি পরীক্ষার রুটিন দিয়ে দিবে।”
সোরায়া জুইঁয়ের মুখে পরীক্ষার রুটিনের কথা শুনেই-

“কিহ্! নবীন বরণের আগেই পরীক্ষার রুটিন? কি বলিস?”
জুঁই একই সুরে-
“হুম, তাই তো শুনলাম। তোর পড়াশোনার কি অবস্থা দোস্ত?”
সোরায়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে-
“পড়াশোনা পড়াশোনার মতোই আছে। আমার পড়াশোনা এই দেশের সরকারের মতো- পরিকল্পনা আছে কিন্তু বাস্তবায়ন নাই।”
জুঁই সোরায়ার কথায় মজা পেয়ে হেসে ওঠে। তার পরই আবার মুখ গম্ভীর করে বলল-
“কি এক বালের কলেজে ভর্তি হলাম। একমাস হয়ে যাচ্ছে নবীন বরণের খবর নেই তার আগেই পরীক্ষা। ধুরু।”
সোরায়া জুঁইকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল-

“থাক দোস্ত চিন্তা করিস না। সব সিলেবাস ঠিক কমপ্লিট হয়ে যাবে। এবার ঘুমানোর চেষ্টা কর, আমিও ঘুমাই।”
জুঁই ও কথা শেষে ফোন কেটে দিল। সোরায়া আবার মাহিরের আইডি খুলে ঘাঁটতে লাগলো। হঠাৎ তার চোখে পড়ল মাহিরের আইডিতে তার ইনস্টাগ্রাম আইডির লিংক দেওয়া। সোরায়া উৎসাহ নিয়ে সেই লিংকে ক্লিক করে ইনস্টাগ্রাম আইডিতে প্রবেশ করল। আর মাহির কে ফোলো দিয়েই সাথে সাথে ম্যাসেজ করলো একটা-
“আসসালামুয়ালাইকুম স্যার। আমি সোরায়া।”
এই ভেবে হয়তো ফেইসবুকে না দেখলেও এইখানে দেখবেন আর হলোও তাই।
খান বাড়ি~

মাহির পারিবারিক ব্যবসার সব কাজ শেষ করে বিছানায় গা এলিয়ে দেয় ক্লান্তিতে। ঘুমোনোর আগে সে একবার তার অনলাইন অ্যাকাউন্টগুলো চেক করে দেখে কোন কিছু নতুন আপডেট এসেছে কিনা। সেই সূত্রেই সে সোরায়ার ম্যাসেজটা আসার সাথে সাথে একই সময়ে ইনস্টাগ্রামে প্রবেশ করতেই সোরায়ার ম্যাসেজটা চোখে পরে।
মাহির ভুল বসোত ম্যাসেজটা দেখে ফেলার পর সেটার রিপ্লাই না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়াটাকে অভদ্রতা মনে করে স্বাভাবিক রিপ্লাই পাঠায়-
“ওয়ালাইকুম আসসালাম।”

সোরায়া মাহিরের দিক থেকে রিপ্লাই পেয়ে খুশিতে চিৎকার করে লাফিয়ে ওঠে। -“আআআআআ!”
তারপরে নিজের আবেগ সামলে নিয়ে আবার টাইপ করতে থাকে-
“আমাকে চিনতে পেরেছেন স্যার?আজকে আপনার সাথে ধাক্কা খেয়েছিলাম সেই সোরায়া।”
মাহির সোরায়ার পাল্টা ম্যাসেজে বিরক্ত হলো-
“এ কেমন মেয়ে কোনো লজ্জা নেই আবার দিনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।” (মনে মনে)
সোরায়া মাহিরে রিপ্লাই পাওয়ার পর নিজের আবেগ কন্ট্রোল করতে না পেরে পরপর অনেকগুলো মেসেজ দিয়ে বসে-

“স্যার আপনি কি করেন?”
“ব্যস্ত?”
“এখন কি আপনার কোনো কাজ আছে?”
“অনেক রাত হয়েছে ঘুমাবেন না?”
মাহির সরাসরি মেসেজগুলো না দেখলেও মেসেজগুলো যে উপরে ভাস ছিল সেখান থেকেই পড়ে নিয়েছে। মাহির বেজায় বিরক্ত। ও বাধ্য হয়ে সোরায়া কে শান্ত ভাবে রিপ্লাই করে-
“হুম, রাত হয়েছে এবার ঘুমিয়ে পড়ো। বেশি রাত জাগা ভালো না। গুড নাইট।”
এই বলে মাহির অনলাইন থেকে বের হয়ে গেল- সে ভালোই বুঝতে পারছিল যদি তাকে সোরায়া এক্টিভ দেখে তাহলে ম্যাসেজ দিতেই থাকবে।

সোরায়া মাহিরের থেকে ঘুমিয়ে পড়ার মেসেজ পেয়ে সামান্য মন খারাপ করল তবে নিজের মনকে সান্ত্বনা দিতে মন গড়া অর্থ বের করে নিল মাহিরের মেসেজের-
“আমাকে রাত জাগতে না করে কি স্যার আমার প্রতি যত্ন দেখালেন। উফ্! কি কিউট।”
তারপর সোরায়া – “গুড নাইট।” মেসেজ সেন্ড করে। ফোনটা বালিশের পাশে রেখে নিজের বিছানা ঘুমানোর জন্য ঠিক করতে করতে বলতে লাগলো-
“ঠিক আছে স্যার, আপনি বলেছেন আমি ঘুমিয়ে পড়বো একদম রাত জাগবো না। গুড নাইট।”
তারপর খুশি মনে নিজের বিছানায় কোলবালিশ জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ল।

পরের দিন সকালে~
সকালটা সুন্দর। নির্মল ও নরম আলো ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। সবার নিজের মতো খেতে নেমেছে। রায়ান মিরায়া নিচে নামতেই পিছন পিছন সোরায়া আর রুদ্রও নেমে এলো। সবাই সবাইকে- “গুড মর্নিং।” বলে চারপাশটা দেখলো অনেক চুপচাপ।
রামিলা চৌধুরী একা রান্নাঘরে কাজ করছেন দেখে মিরায়া রান্নাঘরে গিয়ে হাসি মুখে কথা বলা শুরু করে-
“গুড মর্নিং, মামণি। কোনো কাজে হেল্প লাগবে? বলো আমাকে আমি আরে দিই।”
রামিলা চৌধুরী গোমরা মুখ পরিবর্তন করে হাসিমুখে মিরায়াকে বলেন-
“না, মা। তুই টেবিলে গিয়ে বস আমি নাস্তা সার্ভ করছি।”

মিরায়া তবুও রামিলা চৌধুরীর কথা তোয়াক্কা না করে রান্নাঘর থেকে নাস্তার খাবার এক এক করে টেবিলে নিয়ে গিয়ে সাজাতে থাকে আর এই কাজে সোরায়াও সাহায্য করতে লাগলো। খাবার সব টেবিলে এনে সবাই খেতে বসে যায় আর তখনই গেস্ট রুমের দরজা খুলে রায়হান চৌধুরী বের হয়ে আসেন। সবাই দরজার আওয়াজ শুনে সেই রুমের দিকে তাকাতেই রায়হান চৌধুরীকে দেখে অবাক ভাবে চোখাচোখি করে। একবার রায়ান মিরায়ার দিকে তাকায় আবার মিরায়া রায়ানের দিকে তাকায়। আবার রুদ্র রায়ানের দিকে তাকায় রায়ান রুদ্রর দিকে তাকায় আর সোরায়া সবার দিকে একবার একবার করে তাকিয়ে একসাথে সবাই রামিলা চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে রইল।
রামিলা চৌধুরী নিজের মতো নাস্তা তার জন্য নিয়ে সবার উদ্দেশ্যে বললেন –

“কি হলো? এভাবে কি দেখছিস সবাই? নাস্তা করবি না সব উঠিয়ে নেবে?”
পরিস্থিতি সুবিধার নয় বুঝতে পেরে সবাই নিজেদের নাস্তা নিতে হুড়মুড়িয়ে পরে টেবিলের খাবারের উপর। রায়ান নিজের আর মিরায়ার খাবার নিয়ে মিরায়ার সামনে দেয়। মিরায়াও চুপচাপ খেতে শুরু করে।
রামিলা চৌধুরী রায়হান চৌধুরীকে এখন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে একটু জোরে তাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতে থাকেন –
“এখন সকাল সকাল কি খাবার খাওয়ার জন্য মানুষদের দাওয়াত দিয়ে টেবিলে বসাতে হবে?”
সবাই বুঝলো কথাটা কার উদ্দেশ্যে বলা কিন্তু রুদ্র বাদে‌। রুদ্র মায়ের কথায় বলে উঠে-

“কেন আম্মু সবাই তো..আআআ!”
রুদ্র কথা শেষ করার আগেই রায়ান টেবিলের নিচে দিয়ে তার পায়ে লাথি মেরে চুপ করিয়ে তার কাছে হেলে বলল-
“গর্ধব এত কম বুঝিস কেনো? চুপচাপ খাঁ।”
রুদ্র চুপ করে গেল। রায়হান চৌধুরী ও একটু শুকনো কেঁশে গলার আর নিজের অবস্থা ঠিক করে বসে খেতে লাগলেন।

মিরায়া এসবের আগা মাথা না বুঝতে পেরে রায়ানকে হাতের কনুই দিয়ে একটু গুঁতো মারল।
রায়ান মিরায়ার দিকে তাকাতেই মিরায়া রায়ানের কাছে হেলে বলল-
“আমি কিছু বুঝতে পারছি না। মামণি আর বাবার মধ্যে আবার কি হলো? আপনি কিছু জানেন?”
রায়ান মিরায়ার প্রশ্ন শুনে শ্বাস নিয়ে বলল-
“আম্মু রাগ করেছে আব্বুর উপর। এইটাই।”
মিরায়া অবাক হয়ে-
“কেন কি করেছেন বাবা?”
রায়ান মিরায়ার দিকে এগিয়ে বলল-
“খাওয়া শেষ করে ছাদে এসো বলছি।”

মিরায়া চোখ বাঁকিয়ে তাকালো রায়ানের দিকে। রায়ান মিরায়ার মনের ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে বলল-
“আরে চোখ বাঁকাও কেন! খেয়ে ফেলব নাকি একা পেলে। শুধু কথাই তো বলব।”
মিরায়া চোখ নামিয়ে নিয়ে বলল- “আচ্ছা, আসবো।”
রায়ান খুশি হয় শুনে। কিন্তু রায়ান আর মিরায়ার গুনগুন আওয়াজে রামিলা চৌধুরী চেঁচিয়ে বললেন-
“এটা খাবার সময় চুপচাপ খাবার খাওয়া শেষ করে যে যার কাজে যা। এইখানে এত কথা কিসের।”
মিরায়া রায়ান নিজেদের বসার জায়গায় সোজা হয়ে খাবার শেষ করে নেয়। রায়ান খাওয়া শেষ করেই ছাদে চলে যায় আর যাওয়ার সময় মিরায়াকে ইশারায় ছাদে যাওয়ার ইঙ্গিত করে যায়। মিরায়াও সেটা বুঝতে পেরে ছাদে যায় হাতের কাজ শেষ করে।

রায়ান মিরায়ার জন্যই অপেক্ষা করছিল ছাদের দরজার পিছনে। মিরায়া ছাদে এসে পা ফেলে ডাকলো- “রায়ান ভাইয়া…!” হঠাৎ পিছন থেকে রায়ানের হেঁচকা টানে মিরায়া সোজা রায়ানের বুকের উপর এসে পড়ে। রায়ান মিরায়াকে বুকে আগলে নিজে ঘুরে গিয়ে মিরায়ার পিঠ দেয়ালের সাথে ঠেকায়। ঘটনার আকস্মিকতা এত বেশি ছিল যে মিরায়া কিছু বুঝে উঠতে পাড়ার আগেই নিজেকে রায়ানের কব্জায় আবিষ্কার করল।
মিরায়া মিটিমিটি চোখ খুলে রায়ানের দিকে তাকিয়ে ভয়ার্ত কন্ঠে বলল- “আ আপনি বলেছিলেন কিছু করবেন না, শুধু কথাই বলবেন। তাহলে এখন এটা কি হচ্ছে?”

রায়ান মিরায়াকে ছেড়ে দিয়ে বলল-“কই কি হচ্ছে। শুধু কথাই বলব। ভয় পেতে হবে না। একটু ধরলেই এই হাল হয়, আর একটু ধরলে খুঁজেই পাওয়া যাবেনা। ওই রিস্ক আমি নিচ্ছি না, চিল।”
মিরায়া রায়ানের ছেড়ে দেওয়াতে শান্ত হলো কিন্তু এই শান্ত ভাব তাকে শান্তি দিচ্ছে না। মনে মনে ভাবতে লাগলো- “উনি ছেড়ে দেওয়াতে খারাপ কেন লাগছে আমার, কালও এমনি খালি খালি লাগছিল। আমি কি উনার উপস্থিতি আর ছোঁয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছি?” রায়ান মিরায়ার মুখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলল-
“এই যে ম্যাডাম, কথা বলতে এসেছেন তো বলুন কিছু।”
মিরায়া চটজলদি বাস্তবে ফিরে প্রশ্ন করে-

“হ্যাঁ, এবার বলুন তো, মামণি এমন কেন করছে? বাবা কি করেছেন?”
রায়ান-“আব্বু আমাকে সাপোর্ট করেছে এইটাই সমস্যা।”
মিরায়া-“মানে? আপনাকে সাপোর্ট করার জন্য? কিসে?”
রায়ান-” বাইক রেস এর জন্য।”
মিরায়া অবাক হয়ে জোরে বলল- “কিহ্! বাইক রেস?”
রায়ান কান আটকে- “চিৎকার করো কেন? ইট’স জাস্ট আ বাইক রেস। নাও ডোন্ট টেল মি, ইউ ডোন্ট ওয়ান্ট মি টু ডু ইট। কজ আই লাভ রাইডিং, এ্যান্ড টোটালি অবসেসড ওভার উইনিং রেসেস‌। এখন তুমি অন্তত্য পক্ষে না করো না।”

মিরায়া বাইক রেসের কথা শুনেই হতবাক হয়ে গেছে। সে বুঝতে পারলো না বাকি রেস বলতে রায়ান কোন রেসে অংশগ্রহণ করার কথা বলছে। মিরায়া রায়ানের কথা আদতে শুনছে কিনা রায়ান তা নিয়ে সন্দিহান তাই সে মিরায়ার কাঁধ দুই হাতে ধরে ঝাঁকিয়ে বলল-“এই.. শুনতে পাচ্ছো নাকি কি বলছি।”
মিরায়া হকচকিয়ে -“হ্যাঁ?.. হ্যাঁ, শুনছি তো আপনি বলুন।”
রায়ান উৎসাহ নিয়ে-“তুমি জানো আব্বু আগে রাইড করতো। পরে কাজের চাপে ছেড়েছেন আর আম্মুও ভয় করতো তাই। আমি বাইক চালানো শিখেছি আব্বুর কাছেই। আজ পর্যন্ত আমি কোনো বাইক রেসে হারিনি জানো। আমেরিকায় আই এম দ্যা বেস্ট রাইডার ইন মাই সিটি। বাংলাদেশে এইটা প্রথম রেস, অ্যান্ড আই হেভ টু উইন ইট।”
মিরায়া সব শুনেও যেন শুনলো না। সে সোজা প্রশ্ন করল-

“কবে এই রেসটা? আর কোথায়?”
রায়ান-“এই তো আর কিছু দিন পরই। হয়তো আর এক সপ্তাহ পর। ঢাকাতেই হচ্ছে। শুনেছি ছেলে আর মেয়ে দুই দলের রেস হবে। আর তার পর দুই দলের চেম্পিয়নদের। তবে আমার কোনো মেয়ের সাথে রেস করার ইচ্ছা নাই তাই কুইট করবো ভেবে রেখেছি।”
মিরায়া মেয়ের সাথে রায়ানের রেস করতে না চাওয়ার দিকটা পছন্দ করল না-
“কেন? মেয়ের সাথে রেস এ নামলে আপনার জাত যাবে ?নাকি ভয় পান যদি হেরে যেতে হয়।”
রায়ান হেঁসে বলল-“বেইব বাইক রাইডিং আর রেস করা যাতা বিষয় নয়। যেই জিতবে দুই দল থেকে অবশ্যই সেরার সেরা হবে। আমার কারো সাথে রেস করা আর না করা দিয়ে অন্যের যোগ্যতা যাচাই হবে না বুঝেছ?”
মিরায়া রায়ানের উত্তরে খুশি হলো তবে মন মানছে না তাই আবার পাল্টা প্রশ্ন করল-

“তাহলে মেয়ে মানুষের সাথে রেস করবেন না কেন শুনি।”
রায়ান-“কারণ একটাই , আমার মেয়েদের সাথে জাড়ানোর ইচ্ছা নেই। আর ছেলে মেয়ে রেস করলে সেটা যথেষ্ট আন-ফেয়ার হবে। রায়ান চৌধুরী আন-ফেয়ার গেম খেলে না।”
মিরায়া এই নিয়ে আর কথা বাড়াল না। কিন্তু ঠিক মতো বুঝতেও পারছে না সে নিজে যেই রেসে অংশ নিয়েছে রায়ান আসলে সেইটার কথাই বলছে কি না। ঢাকায় একটা রেসই হয়। আর সামনের সপ্তাহে সেটাই হচ্ছে। মনের দ্বন্দ্ব আর পরিষ্কার হচ্ছে না। হঠাৎই রায়ান আর মিরায়ার ফোন একসাথে বেজে উঠলো। তারা অবাক হয়ে একে অপরের দিকে তাকিয়ে আবার ফোনের দিকে তাকাল তারপর দুই জনি ফোন ধরে একটু দূরে সরে গিয়ে কথা বলতে শুরু করল।
মিরায়ার দিক~

কলার (রেস আয়োজক কমিটির সদস্য) : “হ্যালো, আমি কি মিস রায়ার সাথে কথা বলছি?”
মিরায়া: (একটু থেমে গেল অনেকদিন পর হঠাৎ ‘রায়া’ নামটা তার কানে বাজলো। আসলে লুকিয়ে বাইক চালানোর জন্য মিরায়া নিজের নামের শেষের অংশটাকে ছদ্মনাম হিসেবে ব্যবহার করে ছিল। এখন সে বাইক রাইডার রায়া হিসেবেই পরিচিত।)…”জি, হ্যাঁ বলুন।”
কলার: “আমি Dhaka National Street Racing Championship 2025 এর কো-অর্ডিনেটর বলছি। আপনাকে কনফার্মেশন দেওয়ার জন্য কল করা হয়েছে। আপনার বাইক, Yamaha R15 V3 (রেজিস্ট্রেশন নাম্বার CTG-4521) চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পৌঁছে গেছে। রেসের জন্য সব ব্যবস্থা সম্পন্ন।”
মিরায়া: “বাইক চলে এসেছে! ওকে ওকে বুঝেছি।”
কলার: ” জ্বি, রেসের তারিখ হচ্ছে ৩ অক্টোবর, শুক্রবার রাত ৯টা, ভেন্যু—ঢাকা আরবান সার্কিট। রেসের দিন রাত ৮টার মধ্যে আপনাকে বাইকের কাগজপত্র ও লাইসেন্সসহ ভেন্যু অফিসে রিপোর্ট করতে হবে।”
মিরায়া: ” জ্বি, বুঝতে পেরেছি । নোট করে নিলাম। ধন্যবাদ কনফার্ম করার জন্য।”
কলার:” আপনাকেও ধন্যবাদ, মিস রায়া। শুভ দিন।”

রায়ানের দিক~
কলার: “হ্যালো, আমি কি মিস্টার রায়ান চৌধুরীর সাথে কথা বলছি?”
রায়ান: “জি, বলুন।”
কলার: “আমি Dhaka National Street Racing Championship 2025 এর কো-অর্ডিনেটর বলছি। আপনার রেজিস্ট্রেশন কনফার্মেশনের জন্য বাইকের তথ্য প্রয়োজন। দয়া করে মডেল আর রেজিস্ট্রেশন নাম্বার বলবেন।”
রায়ান: “ওকে। আমার বাইক Ducati Panigale V4, নাম্বার DHK-7896।”
কলার: “ধন্যবাদ। আপনার নাম অফিসিয়ালি রেজিস্টার হয়েছে। রেসের তারিখ ৩ অক্টোবর, শুক্রবার রাত ৯টা, ভেন্যু—ঢাকা আরবান সার্কিট। অনুগ্রহ করে রেসের দিন রাত ৮টার মধ্যে কাগজপত্র ও লাইসেন্সসহ রিপোর্ট করবেন।”
রায়ান: “ঠিক আছে। ধন্যবাদ।”
কলার: “ধন্যবাদ, মিস্টার রায়ান। শুভ দিন।”
(ফোনে কথা বলা শেষ)

ফোনে কথা বলা শেষ করে রায়ান মিরায়া আবার কাছাকাছি এসে দাঁড়ায় দুইজনেই খুব বেশি খুশি। রায়ান হঠাৎ মিরায়াকে হাসতে দেখে প্রশ্ন করল-” কি হলো হৃদপাখি! একটা ফোনেই এতো খুশি! কে কল করেছিল?”
রায়ানের প্রশ্নের ধার ধারছে না মিরায়া সে নিজের মতো তার বাইক টার কথা ভাবছে কত দিন হলো ধরে নি এবার পারবে। মিরায়া কথা এড়াতে পাল্টা প্রশ্ন করলো-“আপনিও তো খুবই খুশি। কে কল করেছিল শুনি?”
রায়ান হেঁসে বলল- “তোমার সতিন।”
মিরায়া রেগে উঠে বলল-“কি? কে কল করেছে?”
রায়ান আর মিরায়াকে না রাগিয়ে বলল- “রেস ম্যানেজমেন্টের মেম্বার কল করেছিল। বাইকের ইনফরমেশন কনফার্ম করতে। ৩রা অক্টোবর রেস ডেট।”

মিরায়া রায়ান তার সাথে একই রেসে অংশ নিয়েছে বুঝতে পেরে কাঁদতে শুরু করে। রায়ান হরবড়িয়ে মিরায়ার মাথায় হাত দিয়ে বলতে থাকে-“কি হলো বেইবি? পানি খাবে?”
মিরায়া তৎক্ষণাৎ মাথা নাড়িয়ে “না” বলল। রায়ান মিরায়াকে শান্ত করে প্রশ্ন করল-“হার্ট-বার্ড এইটা বাংলাদেশে আমার প্রথম রেস তুমি আমার সাথে যাবে? আমাকে চিয়ার আপ করতে?”
মিরায়া হা হয়ে তাকিয়ে রইল রায়ানের মুখের দিকে কিভাবে কি বলবে কিছুই বুঝতে পারলো না। রায়ানের সাথে গেলে সে নিজে বাইক রেস কিভাবে করবে। আবার রায়হানকে মিথ্যে বলার পর বাইক রেসে গিয়ে ধরা পরলে কিভাবে সামলাবে!
রায়ান আবার মিরায়াকে প্রশ্ন করলো-“হৃদপাখি? যাবে?”
মিরায়া সোজা মাথা নেড়ে বলল- “না না আমি যাব না। আমার ভয় করে ওইসবে। আমি দেখতে পারি না । আপনিই যান।”

মিরায়া পরিস্থিতি সামাল দিতে কি বলল নিজেও বুঝলো না। পরে নিজের বলা কথাই মাথায় বারি মারলো- “কিহ্ বললাম এইটা নিজেই তো রেস করতে যাচ্ছি আবার এইসবে ভয় হয় বললাম। উফ্ খোদা ধরা পরলে আর রক্ষা নাই।”
তারপর মিরায়া ছাদে আর দাঁড়ালো না রায়ানকে সামনে থেকে সরিয়ে এক দৌড়ে নিচে নামলো।
রায়ান ও কিছু বলল না আর মিরায়াকে জোর ও করলো না কারণ বাইক রেস সত্যিই খুব বিপদজনক মিরায়ার ভয় পাওয়া আর না যাওয়াটাই স্বাভাবিক। রায়ান ও নিচে নেমে গেলো নিজের ঘরে ।
আজ শুক্রবার। জুম্মার নামাজের সময় হয়ে আসবে একটু পরই তাই বাড়ির সব ছেলেরা একসাথে মসজিদে যাবে। রায়ান রুদ্র আর রায়হান চৌধুরী নিজেদের মতো তৈরি হচ্ছে আর রান্নাঘরে মিরায়া রামিলা চৌধুরীর কাজে সাহায্য করছে।

যোহরের আযান দিয়েছে কিছুক্ষণ হলো এর মধ্যেই বাড়ির পুরুষ সদস্যরা নামাজের জন্য সাদা পাঞ্জাবি পড়ে তৈরি হয়ে নেমেছে। ছেলেরা যাওয়ার পর মেয়েরা বাড়িতে নামাজ পরবে। মিরায়া রান্নাঘরের কাজ শেষে সব খাবার টেবিলে সাজিয়ে রাখছিল। এমন সময় রায়ান সিঁড়ি দিয়ে নামে। ড্রয়িং রুমের খাবার টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মিরায়ার চোখ আচমকা তার ওপর পড়ে।

রায়ান সাদা পাঞ্জাবির ওপর হালকা সুগন্ধ ছড়ানো আতর মেখেছে, আধভেজা চুল পরিপাটি করে আঁচড়ানো। পাঞ্জাবির সরলতায় তার প্রশস্ত কাঁধ, লম্বা গড়ন আর ফর্সা গায়ের রঙ যেন আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শান্ত অথচ দৃঢ় উপস্থিতি—যেন আলাদা এক আকর্ষণ বহন করছে। শুভ্রতায় সকল সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে সেই দৃশ্য।
মিরায়া মুহূর্তের জন্য থেমে যায়। এত কাছ থেকে তাকে এভাবে সাদায় দেখেনি কোনোদিন। চোখের ভেতরে এক ঝলক আলো খেলে যায়—অবাকের সঙ্গে সঙ্গে ভেতর থেকে একধরনের টান অনুভব করে। নিজের অজান্তেই দৃষ্টি আটকে থাকে রায়ানের ওপর।
সে মুহূর্তে মিরায়ার মনে হয়—রায়ানকে এমনভাবে দেখলে তাকে এড়ানো অসম্ভব। মিরায়া হঠাৎ চোখ সরিয়ে নিয়ে রায়ানের সৌন্দর্যের বিদ্রুপ করল-“বেডা মানুষ, বেডা মানুষের মতো থাকলেই তো হয়, এতো সুন্দর হওয়া লাগে নাকি।”

রায়ান বুঝতে পারে মিরায়া তাকেই দেখছিল। সে মুচকি হেঁসে মিরায়ার কাছে এসে ফিসফিস করে বলল- “জুম্মা মোবারক, মাই হার্ট-বার্ড।”
মিরায়া একটু সরে গিয়ে উত্তর করল- “জ্বি, জুম্মা মোবারক আপনাকেও।” তারপরই আবার রান্না ঘরে চলে গেল। রায়ান ঠোঁট কামড়ে হাসলো মিরায়াকে লজ্জা পেতে দেখে। পরক্ষণেই রুদ্র আর রায়হান চৌধুরী পাঞ্জাবিতে বাইরে আসেন। রায়হান চৌধুরী রায়ান আর রুদ্রর সাথে কোলাকুলি করে জুম্মার শুভেচ্ছা বিনিময় করে রান্নাঘরে রামিলা চৌধুরীর কাছে যান। সেটা দেখে মিরায়া ধীরে রান্নাঘর থেকে বের হয়ে যায় মুচকি হেসে।
রায়হান চৌধুরী রামিলা চৌধুরীর কাছে গিয়ে বলেন-“জুম্মা মোবারক আমার মহারানি।”
রামিলা চৌধুরী শুকনো মুখে উত্তর দেন- “হুম, আপনাকেও জুম্মা মোবারক।” তিনি আর তাকালেন না রায়হান চৌধুরীর দিকে। ড্রয়িং রুম থেকে মিরায়া , রায়ান আর রুদ্র সবটা দেখে মিটি মিটি হাসছে। রায়ান মিরায়ার হাসি দেখে তাকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্য বলে-

“এইসব দেখে এত মজা পাওয়ার কিছু নেই। আমি আমার আব্বুর মতো এতো ধৈর্যশীল না। রাগ করে থাকা আমার সাথে চলবে না।”
মিরায়া আড় চোখে তাকিয়ে বলল-“আপনার সাথে রাগ করতে আমার বয়েই গেছে।” তারপর পরই নিজের চোখ সরিয়ে নেয়।
এই দিকে রান্নাঘরে রামিলা চৌধুরীকে রায়হান চৌধুরী বুঝতে লাগলেন -” মহারানি আজকের দিনেও রাগ করে থাকবে? আমি কষ্ট পাচ্ছি। সরি তো বলেছি ।”

রামিলা চৌধুরী নিজেও রাগ করে থাকতে চাননি আর। সংসার জীবন এমনি একটু রাগ অভিমান থাকে তাই বলে কি স্বাভাবিক হবে না। রামিলা চৌধুরী রায়হান চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে তার আধাপাকা চুলগুলো একটু গুছিয়ে দিয়ে পাঞ্জাবি টা ঝেড়ে দিয়ৈ বললেন -” দুই ছেলেদের নিয়ে অনেক বছর পর নামাজ আদায় করতে যাচ্ছেন। সাবধানে যাবেন আর সাবধানে আসবে। এখন যান দেরি হয়ে যাবে।”

আত্মার অঙ্গীকারে অভিমোহ পর্ব ৩২

রায়হান চৌধুরী রামিলা চৌধুরীর রাগ চলে গেছে বুঝতে পেরে খুশি মনে ভেসে ওঠে পাশাপাশি ড্রয়িং রুমের থেকেও রায়ান, মিরায়া, রুদ্র হাততালিতে ওঠে। সবাই খুশিতে আপ্লুত। এক অদ্ভুত সুন্দর শুক্রবার সকাল কাটলো। ছেলেরা নামাজে যাওয়ার পর বাড়ির মেয়েরা ফ্রেশ হয়ে একসাথে নামাজ পড়ে নিলো।

আত্মার অঙ্গীকারে অভিমোহ পর্ব ৩৪

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here