আত্মার অঙ্গীকারে অভিমোহ পর্ব ৩৯ (২)
অরাত্রিকা রহমান
শফিক রহমান বললেন গম্ভীর গলায়-
“সোরায়া নিজের ঘরে গিয়ে ব্যাগ গুছানো শুরু করো আর রুদ্র তোমায় বলছি কাল সকালে সোরায়াকে বাড়িতে চাই আমি।”
এই বলে কল কেটে দিলেন। সবাই থ মেরে রইল কিছু সময়।
সোরায়া মাথা নিচু করে বসে আছে। দোষ না করেও শাস্তি পেতে হচ্ছে তাই তার আরো বেশি খারাপ লাগছে । ওই মুহূর্তে উপস্থিত বাকিরা কে কি বলবে , বা কি বললে সোরায়া আরো কষ্ট পাবে না সেই চিন্তা করছিল। হঠাৎ সোরায়া উঠে তার ঘরে দৌড়ে চলে গেল তার আর সবার মাঝে থাকতে ভালো লাগছিল না। সবার ওর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল শুধু।
বাংলাদেশ এর সময় তখন বিকেল ৪টা আর আমেরিকায় রাত ২টার মতো। রায়ান এখনো ঘুমায় নি। বাড়ি ফেরার পর কাজই করছিল এতক্ষন ধরে, এই কিছু সময় হলো সে নিজের ল্যাপটপের সামনে থেকে উঠেছে। কাছাকাছি না থেকেও এই কয়দিনে মিরায়ার সাথে কথা বলার এতো বাজে অভ্যাস তৈরি হয়েছে রায়ানের যে এখন রাতে মিরায়ার সাথে একদন্ড কথা না হলে ঘুমাতেও পারে না মন খচখচ করে যদিও ব্যাপারটা যে শুধু একদিক থেকে তৈরি হয়েছে তা একদমই নয়। তবে এই বাজে অভ্যাসে রায়ানের কোনো সমস্যা নেই বরং তার ভালো লাগে যে তার বউ তার জীবনের একটা অংশে পরিণত হয়েছে এই কিছু দিনের মধ্যেই।
রায়ান নিজের ফোনটা হাতে নিয়ে মিরায়াকে কল করলো। কিন্তু কলটা রিসিভ হলো না। কিভাবে হবে! মিরায়া যে এখন সোরায়ার ঘরে ওকে সান্তনা দিচ্ছে। রায়ান পরপর ৫টা কল দেওয়ার পরও কল রিসিভ না হওয়ায় খানিকটা চিন্তায় পড়ে গেলো- “মিরা… তো এমন করে না।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রায়ান ততক্ষণাৎ রুদ্র কে কল করল। রুদ্র তখন ওই মুহূর্তে রিমির জন্য ক্যাফের দিকে যাচ্ছিল। রুদ্রর ফোনটা বাজতেই সে রায়ানের নাম্বার দেখে কল রিসিভ করে।
রায়ান বিচলিত গলায়-“হ্যালো রুদ্র? তুই কোথায় রে? তোর ভাবির কি হয়েছে? কল ধরছে না কেন আমার?
রুদ্র মনে মনে কয়েকবার চিন্তা করলো বাড়ির এখনকার পরিস্থিতি রায়ানকে বলবে কিনা। এক মুহুর্তে তার কিছু জানাতে ইচ্ছে না করলেও পড়ে রায়ান জানতে পারলে তাকে এই সম্পর্কে বলা হয়নি কেন তা নিয়ে রাগারাগি করবে তাই রুদ্র রায়ান কে সত্য কথাটাই বলল-
“আসলে ভাইয়া হয়েছে কী… বাড়িতে একটু সমস্যা হয়েছে তাই হয়তো খেয়াল করে নি মিরা ভাবি।”
রায়ান কৌতুহল নিয়ে রুদ্র কে পাল্টা প্রশ্ন করলো-“বাড়িতে সমস্যা? কি সমস্যা? বাড়ির সমস্যা তে তোর ভাবি জড়ায় কিভাবে তুই আছিস কেন ওখানে?”
রুদ্র রায়ান করার ভুল মানে বুঝছে বলে তাকে সম্পূর্ণ টা ব্যাখ্যা করে-
“না ভাইয়া বাড়ির বলতে আসলে সমস্যা টা সোরাকে নিয়ে তাই হয়তো মিরা ভাবির মন খারাপ করে সোরার ঘরেই বসে আছে সোরাকে সামাল দিতে।”
রায়ান আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করল -“বনুর আবার কি হলো? চড়ুই কে কি কেউ কিছু বলেছে?”
রুদ্র আবার বলল-“তেমন কিছু না ভাইয়া। আসলে… হয়েছে কি! সোরার তো আজ নবীন বরণ ছিল তাই সেখানে সবার জোড়াজুড়িতে নাচ করছছিল আর তখন কেউ নাচের ভিডিও নিয়ে অনলাইনে ছাড়ার পর রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে। এইদিকে সেটা চট্টগ্রামে খালামণি আর খালু দেখার পর থেকে ফায়ার হয়ে সোরাকে কালকের মধ্যে চট্টগ্রামে ফিরে যেতে বলেছেন। এই নিয়ে যত সমস্যা এখন। বাড়িতে সবারই মন খারাপ।”
রায়ান রুদ্রর সম্পূর্ণ কথা শুনে রাগে ফুঁসতে লাগলো-“তুই কি আহাম্মক? ভিডিও টা চট্টগ্রাম পর্যন্ত গেল কি করে এর আগে সব অনলাইন থেকে সরাতে পারলি না? কোন হারামজাদার এতো সাহস হয়েছে আমার বাড়ির মেয়ের ভিডিও করেছে তাও আবার অনুমতি ছাড়া সেটা অনলাইনেও দিয়েছে! দেশে থাকলে এতক্ষণে জেন্ত পুঁতে ফেলতাম।”
রুদ্র রায়ানের কথার কি উত্তর দিবে বুঝলো না কারণ সত্যি তার দায়িত্ব ছিল ব্যাপার টা সামাল দেওয়া কিন্তু কি করবে তার সামাল দেওয়ার জন্য যে সময় লাগতো তার অনেক আগেই ভিডিও টা ছড়িয়ে গেছিল। রুদ্র শান্ত গলায় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল-
“সরি ভাইয়া আসলে আমি এসবের ব্যাপারে জানতাম না, জানলে হয় তো কিছু করতে পারতাম। ”
রায়ান রুদ্র কে আবার মিরায়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলো-
“তোর ভাবির কি খুব মন খারাপ নাকি বনুর জন্য?”
রুদ্র উত্তর করল-“হুম। মন খারাপ করাটাই স্বাভাবিক। দুই বোন বাড়িতে তো আঠার মতো চিপ্কাই থাকে দেখ না!”
রায়ান এবার এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। মিরায়ার মন খারাপ এটা আরো জ্বালা দিচ্ছে তাকে। রায়ান রুদ্রর কলটা কেটে দিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিল। চোখ বন্ধ করে কিছু সময় স্থির থাকলো। কিন্তু না মনে শান্তি পাচ্ছে না ক্লান্ত শরীর আরো খারাপ ভাবে জেকে ধরছে তাকে। রায়ান আনমনে বিড়বিড় করলো-
“হৃদপাখি প্লিজ মন খারাপ করে থাকিস না তুই। আমার হৃদয়টা যে ছিঁড়ে যায় তুই ভালো নেই শুনলে।”
সাইড টেবিলের উপর থেকে পানিটা নিয়ে রায়ান একটা ঘুমের ঔষধ খায়- কালকের দিনটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তার জন্য, জীবনের সবচেয়ে বড় ডিল ক্লোজিং হবে তার। ঘুমটা খুব প্রয়োজন এই দিকে তার পার্সোনাল ঘুমের ঔষধ (বউটা) কল ধরছে না। অগত্যা কোনো কিছু করার না থাকায় রায়ান ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমিয়ে পরল। মিরায়ার সাথে তার আজ আর কোনো কথা হলো না।
আমেরিকা~
সকাল হয়েছে অনেক আগেই কিন্তু ঘুমের ঔষধ সেবন করার জন্য রায়ানের এখনো ঘুম ভাঙে নি কেবল হালকা হালকা ঘুমের রেশ কাটছে এখন। হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠতেই শব্দের তীব্রতায় রায়ান চট জলদি ঘুম থেকে ধরফড়িয়ে উঠলো। ফোনটার দিকে তাকিয়ে শ্বাস ছেড়ে ফোনটা হাতে নিয়ে কল টা রিসিভ করলো সে তার ম্যানেজার এর কল ছিল।
ম্যানেজার-“গুড মর্নিং স্যার।”
রায়ান ঘুম জড়ানো গলায়-“গুড মর্নিং আর রইল কই। এনি ওয়ে গুড মর্নিং। ইজ দ্যায়ার এনি প্রবলেম?”
ম্যানেজার -“স্যার, ইট’স 9 ওক্লোক । আওয়ার মেইন কনফারেন্স গোয়িং টু স্টার্ট এ্যাট 10। ইউ হেভ ওনলি ওয়ান আওয়ার টু গেট রেডি এ্যান্ড রিচ হেয়ার।”
রায়ানের সময় জ্ঞান বরাবরই ভালো কিন্তু কালকের ঘুমের ঔষধ এর ফলই এটা। রায়ান হকচকালো না বরং গম্ভীর আর শক্ত গলায় বলল-
“দ্যাট’স এনাফ। ড্রপ দ্যা কল। আই এম কামিং।”
ম্যানেজার কলটা কাটার সাথে সাথে রায়ানের মুখ থেকে গম্ভীরভাবে উধাউ হয়ে গেলো। রায়ান দ্রুত বিছানা থেকে নামতে নামতে আহাজারি করলো-
“দেরি হইয়া গেছে রে…! জলদি রেডি হ রায়ান। কি করতে যে মরার ঔষধ খাইতে গেছিলাম। সময় করে বউটাকে একটু ঝাড়তে হবে কালকে ওর সাথে কথা হয়নি বলেই সব হয়েছে।”
রায়ান তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে ফরমাল ড্রেসে নিজেকে তৈরি করে গাড়ি বের করে অফিসের জন্য বের হয়।
রায়ান ঠিক সময় অফিসে পৌঁছে যায়। যাওয়ার কথাও যেই না স্পিডে গাড়ি ছুটিয়েছে সে! রায়ান অফিসে পৌঁছাতেই চারপাশে হল্লা শুরু হলো। সবাই একসিথে রায়ানকে দেখতে পেলেই ‘গুড মর্নিং ‘ উইশ করছে। রায়ান সোজা কনফারেন্স রুমেই গেলো।
আজকে ঠিক রাতে তাদের বিল ক্লোজিং। আর এখন সবাই একসাথে শেষ মিটিং এ বসেছে সব ঠিক আছে কি না আর প্রোপজাল এর প্রেজেন্টেশন কিভাবে করলে বেস্ট হবে তা নিয়ে একটা ছোট আলোচনা করা হবে সবার মতামতের ভিত্তিতে।”
টেবিলের মাঝখানে একটি বিশাল প্রজেক্টর স্ক্রিনে লেখা —
“Project Phoenix – Final Review Meeting”
(প্রজেক্ট ফিনিক্স – ফাইনাল রিভিউ মিটিং)
১৭০০ কোটি টাকার রিয়েল এস্টেট প্রজেক্ট — যা একবার সফল হলে পুরো “Rayan Industry’s” (রায়ান ইন্ডাস্ট্রিস) একধাপ উপরে উঠে যাবে আন্তর্জাতিক মার্কেটে।
রায়ান কনফারেন্স রুমে ঢুকতেই পুরো টিম একসাথে উঠে দাঁড়াল।
— “Good Morning, Sir!” (গুড মর্নিং স্যার!)
রায়ান হালকা হাসল, একবার চারপাশে তাকিয়ে সোজা চেয়ারে বসল। সামনে তার সেকেন্ড ইন কমান্ড — ড্রেক রিপোর্ট নিয়ে বসে আছে।
রায়ান বলল শান্ত অথচ কর্তৃত্বপূর্ণ কণ্ঠে,
— “Alright everyone, let’s start. Tonight’s the deal closure. We can’t afford even a single flaw.”
(অলরাইট এভরিওয়ান, লেটস স্টার্ট। টুনাইটস দা ডিল ক্লোজার। উই ক্যান্ট অ্যাফোর্ড ইভেন আ সিঙ্গেল ফ্ল‘)।
প্রজেক্টরের স্ক্রিনে বড় করে উঠে এলো একটি ডিজিটাল মডেল —
একটা বিশাল “Smart Eco Township” (স্মার্ট ইকো টাউনশিপ), নাম SunVale Heights (সানভেল হাইটস)।
৪০০ একর জমি, আধুনিক টাওয়ার, ঝুলন্ত বাগান, সোলার সিস্টেমে চালিত বিদ্যুৎ, আর পুরো প্রজেক্টটার ডিজাইন ইতোমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের চোখে পড়েছে।
রায়ান উঠে দাঁড়িয়ে প্রেজেন্টেশনের দিকে ইশারা করল —
— “This deal isn’t just about money. It’s about reputation. A 17,000 crore trust we’re about to earn or lose tonight.”
(দিস ডিল ইজন্ট জাস্ট অ্যাবাউট মানি। ইটস অ্যাবাউট রেপুটেশন। আ সেভেনটিন থাউজ্যান্ড ক্রোর ট্রাস্ট উই আর অ্যাবাউট টু আর্ন অর লুজ টুনাইট)।
সবার চোখ তার দিকে।
মার্কেটিং হেড আনিস সাহস নিয়ে বলল —
— “Sir, foreign delegates already liked the architectural proposal. Only thing they’re asking is clear projection of return in 5 years.”
(স্যার, ফরেন ডেলিগেটস অলরেডি লাইকড দা আর্কিটেকচারাল প্রপোজাল। অনলি থিং দেয়ার আস্কিং ইজ ক্লিয়ার প্রোজেকশন অফ রিটার্ন ইন ফাইভ ইয়ার্স)।
রায়ান মাথা নাড়ল —
— “And that’s exactly where we’ll win.”
(অ্যান্ড দ্যাটস একজ্যাক্টলি হোয়্যার উইল উইন)।
সে রিমোট টিপে স্ক্রিনে আরেকটা চার্ট তুলে ধরল — profit growth curve (প্রফিট গ্রোথ কার্ভ)।
চার্টে দেখা যাচ্ছে কিভাবে “SunVale Heights” (সানভেল হাইটস) আগামী পাঁচ বছরে ৩৫% লাভ এনে দেবে, দেশি ও বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারীর কাছে।
— “We’re not just building apartments,” (উই আর নট জাস্ট বিল্ডিং অ্যাপার্টমেন্টস)
রায়ান বলতে লাগল দৃঢ় কণ্ঠে,
“we’re building a lifestyle — a vision of tomorrow. Clean energy, digital security, smart connectivity — this is the future people will live in.”
(উই আর বিল্ডিং আ লাইফস্টাইল — আ ভিশন অফ টুমরো। ক্লিন এনার্জি, ডিজিটাল সিকিউরিটি, স্মার্ট কানেকটিভিটি — দিস ইজ দা ফিউচার পিপল উইল লিভ ইন)।
রুমের সবাই তার কথায় মুগ্ধ।
রিয়েল এস্টেট সেক্টরে রায়ানের নেতৃত্ব মানেই সাফল্যের সম্ভাবনা দ্বিগুণ।
নওরিন তখন মৃদু স্বরে বলল —
— “Sir, all documents are verified, client’s legal team already confirmed schedule for 8 PM. Tonight’s dinner meet at D’mont International.”
(স্যার, অল ডকুমেন্টস আর ভেরিফায়েড, ক্লায়েন্টস লিগ্যাল টিম অলরেডি কনফার্মড স্কেডিউল ফর এইট পি.এম। টুনাইটস ডিনার মিট অ্যাট ডি’মন্ট ইন্টারন্যাশনাল)।
রায়ান মাথা নাড়ল, এক গভীর নিঃশ্বাস নিল। তার চোখে ক্লান্তি আছে, কিন্তু আত্মবিশ্বাসও আছে একেবারে পাথরের মতো দৃঢ়।
— “Good. Then let’s make sure we close it like professionals. I don’t want mistakes, I don’t want hesitation. Everyone stays sharp till night. Clear?”
(গুড। দেন লেটস মেক শিওর উই ক্লোজ ইট লাইক প্রফেশনালস। আই ডোন্ট ওয়ান্ট মিস্টেকস, আই ডোন্ট ওয়ান্ট হেজিটেশন। এভরিওয়ান স্টেজ শার্প টিল নাইট। ক্লিয়ার?)
সবাই একসাথে বলল —
— “Yes, Sir!” (ইয়েস স্যার!)
রুমে করতালির মতো এক মুহূর্তের শক্তিশালী আওয়াজ উঠল।
প্রজেক্টর অফ হলো, আলোটা একটু নরম হলো। রায়ান এক মুহূর্ত চোখ বন্ধ করে ভাবল —
“১৭০০ কোটি… আজ যদি এইটা ক্লোজ হয়, তাহলে আমার সব পরিশ্রম সার্থক।”
তার ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি ফুটে উঠল, কিন্তু চোখে ক্লান্ত এক জেদ — যেন যুদ্ধের আগে শেষ নিশ্বাসে সৈনিক নিজের তরবারি ঠিক করছে। নিজের অফিসেই তার দিনের সময় টুকু কাটলো। রাতের বেলায় অফিস থেকেই সোজা ডিনার মিটিং – D’mont International Hotel (ডি’মন্ট ইন্টারন্যাশনাল হোটেল) এ যাবে।
অন্যদিকে, সোরায়া চলে যাবে বলে মিরায়া মন খারাপ করে চৌধুরী বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে একা একা কান্না করছে। এই মুহূর্তে কাকে দোষ দেবে সে ভেবে পাচ্ছে না কিন্তু বোনটাকে ছেঁড়ে থাকাটাও মাথায় এলে খুব কষ্ট পাচ্ছে সে।
মিরায়ার মাথায় হঠাৎ রায়ানের কথা এলো। আজকাল এমন পরিস্থিতি অনেক হয় যখন মিরায়ার মাথায় রায়ান ছাড়া আর কোনো উপায় মাথায় আসে না। তার কেবল মনে হয় রায়হানকে জানালে হয়তো সব ঠিক করে দেবে আর সেটা সত্যিও, রায়ান মিরায়ার জন্য যেকোনো কিছু করতে রাজি তাকে সব সময়।
মিরায়া নিজের ফোনটা ঘর থেকে দিয়েই ছাদে এসেছিল কিন্তু খুলে দেখার মুড হয়নি বলে খুলে নি। মিরায়া ফোনের পাওয়ার বাটনে ক্লিক করার পর স্ক্রিনে ভেসে উঠে রায়ানের মিসড কল।
মিরায়া রায়ান তাকে কল করেছিল দেখতে পেয়ে সাথে সাথে ফোনটা খুলে কল ব্যাক করলো। ফোনটা বাদে যাচ্ছে কিন্তু রায়ান কল তুলছে না। পরপর কয়েকবার কল দেওয়ার পর মিরায়া একটু চিন্তায় পড়ে যায় কিন্তু পরো মুহূর্তে সম। খেয়াল করতেই বুঝতে পারলো আমেরিকায় এখন গভীর রাত হয়তো কাজের পরে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে গেছে।
মিরায়া ফোনটা রেখে দিল। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে একপলক আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল যে কোনো উত্তর খুঁজেছে। মিরায়া নিজ মনে প্রশ্ন তুলল-
“খোদা আমি যদি অন্য কারো হই তবে তুমি আমার মনে কেন পর পুরুষের জন্য এতো মায়া দিচ্ছো? কেন? আমি তো এমন ছিলাম না খোদা। আমি নিজের আবেগ কেন সামলাতে পারছি না? আমি কি সত্যিই তাকে ভালোবেসে ফেলেছি?”
‘ভালোবাসা’ শব্দটা মাথায় আসতেই মিরায়ার বুক ধক করে উঠলো সাথে সাথে মাথা ডানে বামে নাড়িয়ে সে বলতে লাগলো-
“না, না এমন কিছু কেন হবে? আমার বর আছে আমি তাকে ঠকাতে পারি না। কিন্তু তবে কেন এমন হচ্ছে আমার?”
মিরায়ার মন তাকে যেন অন্য কিছু বলছে-“কিসের বর? যাকে দেখিনি, জানিনা, চিনি না, কখনো ফিরবে কিনা তারও ঠিক নেই তার জন্য আর কত নিজের সুখ বিসর্জন দেবো।”
মিরায়া ধর্ম সংকটের মধ্যে পড়ে আছে যেন। হাউমাউ করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে কিন্তু পারছে না। শুধু চোখ দিয়ে টপটপ পানি পড়ছিল তার।
বিকেল গড়িয়ে রাত হয়েছে। সোরায়া কিছু না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে। বাড়ির সবাই রাতের খাবার খেতে টেবিলে বসলেও কেউ ঠিক মতো খেল না। রুদ্র রিমিকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে বাড়িতে ফেরার সময় হাতে চকলেট নিয়ে সোরায়া কে দেবে তাই। বাচ্চা মানুষ এমনিতেই মন খারাপ যদি চকলেট পেলে একটু খুশি হয় তাও ভালো হবে এই মনে করে। কিন্তু সোরায়া আর নিচেই নামে নি নিজের ঘর থেকে।
এখন যে যার যার ঘরে। মিরায়া একা জুলিয়েট এর সাথে বিছানায় বসে আছে। রাত জাগছে ইচ্ছে করে যদি রায়ান সকালে উঠে কল করে তার আশায়। কিন্তু রায়ান একবারও কল করে নি। মিরায়া জুলিয়েট এর গায়ে হাত বুলিয়ে আদর করতে করতে বলল-
“জুলি.. আমি কেন রাত জাগছি তার ফোনের আশায় আমাকে একটু বলবি? কেন আমার ঘুম হচ্ছে না তার গলার স্বর না শুনে?”
জুলিয়েট বোবা প্রাণি তাই উত্তর দিতে অক্ষম কিন্তু তার চোখ মিরায়ার মুখে স্থির। মিরায়া নরম হাতে জুলিয়েট কে নিজের করে তুলে নিয়ে আবার জিজ্ঞেস করল-
“কি হলো বল না, মাম্মা? আচ্ছা তোর পাপা কি সত্যি তোর পাপা হতে চায়? তোর ভালো লেগেছে উনাকে পাপা হিসেবে?”
জুলিয়েট এবার আওয়াজ করলো-“মিয়াও!” যেন বোঝাতে চাইছে তার খুব পছন্দ হয়েছে তার পাপাকে। মিরায়া জুলিয়েট এর উত্তরে মুচকি হাসলো। সে সাথে আরো জিজ্ঞেস করলো- “আচ্ছা জুলি… এবার বল তো তোর পাপা আর তোর মাম্মা কে একসাথে কেমন লাগে? ভালো লাগে?”
জুলিয়েট আবার আওয়াজ করলো-“মিয়াও।”
মিরায়া এবারও হাসলো একভাবে। নিজের মধ্যে হাজার দ্বিধা দ্বন্দ্ব যেন এই বোবা প্রাণীটার সম্মতির কাছে শেষ হলো। মিলিয়া জুলিয়েট কে আদর করতে করতে বলল-
“ওরে পাকা মেয়ে, মাম্মা পাপার ভাব করাতে চাউ? তোর পাপা আসুক পরে বিচার করবো। কিন্তু মনে হয় না তোর পাপা কে বলে লাভ হবে, সে যদি বুঝতেও পারে আমি তার প্রতি দুর্বল আমি সেইদিনই শেষ। তোর পাপা খুব অশ্লীল একটা লোক জানিস? মাম্মা কে পচা পচা কথা বলে লজ্জা দেওয়ার জন্য।”
জুলিয়েটের মনে হয় রায়ানের বদনাম পছন্দ হলো না। সে মিরায়ার থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। মিরায়া অবাক চোখে তাকিয়ে জুলিয়েট কে বকলো-
“ওরে বাবা, এখন পাপা কে পেয়ে মাম্মা কে ভুলে গেলি? তোকেও কি উনি বন্ধুর মতো ঘুষ দেয় নিয়ম করে নাকি?”
জুলিয়েট এবার খাট থেকেই নেমে গেল যেন আর ভালোই লাগছে না তার এমন কথা। সে চুপচাপ নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পরলো। তারপর মিরায়া আরো একটু সময় জেগে রইল ফোন স্ক্রল করলো। তারপর চোখে ঘুম চলে এলে নিজেই ঘুমের দেশে হাড়িয়ে গেল।
চৌধুরী বাড়ি ~
২ তারিখ। সকাল বেলা সবাই নিচে মনমরা ড়য়ে দাঁড়িয়ে আছে। সোরায়া নিজের ব্যাগ হাতে নিয়ে নেমে এসে অনেক আগেই। তার মুখটা ও শুকিয়ে আছে। রাতে কিছু খায়নি, সকালে ও না চোখ ফুলে আছে, রাতে কেঁদেছে যে সেটা স্পষ্ট। মিরায়া সোরায়ার কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো। দুইজনের মন বিষন্ন কিন্তু কেউই কাঁদছে না। মিরায়া সোরায়াকে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে রাখার পর ওর পাঠে হাত বুলিয়ে বলল-
“তুই চিন্তা করিস না বনু। আমি চাচীর সাথে কথা বলেছি। তুই আপাতত যা চাচার রাগ ভাঙানো পর্যন্ত থাক ওখানে পরে আমি তোকে আবার ঢাকা নিয়ে আসবো।”
সোরায়া মাথা নাড়লো কিন্তু সেই ব্যাপারে কিছু না বলে শুধু বলল-“আপু তুমি রেসটা জিতবে কথা দেও। আমি তোমার হাতে ট্রফি দেখতে চাই।”
মিরায়া হালকা হেসে সোজা হয়ে সোরায়ার দুই গালে হাত রেখে বলল-“যো হুকুম মেরে আকা! আমি তোকে ট্রফি এনে দেব সাথে প্রাইস মানিও। তুই হ্যাপি এবার?”
সোরায়া চকচকে চোখ নিয়ে উপর নিচে মাথা নাড়িয়ে বলল-
“হুম খুব। আর তুমি চিন্তা করো না চাচাকে তো আমিই মানিয়ে নেবো। চাচার কাছে গিয়ে একটা মিষ্টি করে হাসি দিলেই হবে। হিহিহি।”
সোরায়া জানে মিরায়া তার চলে যাওয়াতে কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু সে চায়নি রেসের আগে মিরায়ার মাথায় অন্য কিছু থাকুক তাই ইচ্ছে করে হাসি মুখে বিদায় নিচ্ছে। মিরায়াও তা ঠিকই বুঝতে পারছে তাই সোরায়া যেভাবে চায় সেই অনুযায়ী আচরণ করছে।
রুদ্র গাড়ি বের করে চৌধুরী বাড়ির মেইন গেটের সামনে সোরায়ার জন্য অপেক্ষা করছে, ব্যাগ পত্র সব তোলা শেষ।
রামিলা চৌধুরী রুদ্র কে বুঝাচ্ছেন-
“খালামণি আর খালু কে একটু বুঝিয়ে আসিস কেমন যেন সোরায়া কে না বকে। আর সাবধানে গাড়ি চালাবি বুঝেছিস?”
রুদ্র মায়ের কথার উত্তর দিল-“হুঁ বুঝেছি তুমি চিন্তা করো না আমি ওকে সাবধানে পৌঁছে দেব আর খালামণি আর খালুকেও বুঝিঢয়ে বলবো সব।”
মিরায়া আর সোরায়া একসাথে গাড়ির কাছে যায়। রামিলা চৌধুরী সোরায়াকে বুকে জড়িয়ে বলেন-“বাড়িটা তোকে ছাড়া চিন্তা করলেই কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে যে মা। সাবধানে থাকিস আর এই কয়দিন চাচা-চাচির কথা শুনে চলিস। তারপর তাদের রাগ একটু কমলে আবার রুদ্র ঢাকা নিয়ে আসবে তোকে। মামণি কথা দিচ্ছি।”
সোরায়া মুচকি হেসে বলল-“আরে কি যে বল মামণি রুদ্র ভাইয়া না নিয়ে এলেও আমি ঠিকই আসবো। ওইটা নিয়ে ভেব না তো।”
রামিলা চৌধুরী হালকা হাসলেন -“আচ্ছা আচ্ছা আসিস।”
মিরায়ার চোখে পানি জলজল করছে সোরায়া হাসি মুখে সবাইকে বিদায় জানালেও মনে মনে তারও খুব কান্না পাচ্ছে। রুদ্র সোরায়ার মন খারাপ বুঝতে পেরে ওকে রাতে কিনে আনা চকলেট গুলো দিয়ে বলল-
“এতো মন খারাপ করিস না তো মনে হচ্ছে বিয়ের পর বাপের বাড়ি ঘুরতে এসেছিলি এখন তোকে ফিরত দিতে যাচ্ছি। এই নে এই চকলেট গুলো তোর। এইগুলো খাঁ আর হ্যাপি হয়ে যা।”
সোরায়া এবার সত্যি হেঁসে উঠল আর বলল-“ভাইয়া তুমি আসলেও খুঁজে খুঁজে এমন মিলিয়ে মিলিয়ে লাইন বলো..!”
রুদ্র নিজেকে নিয়ে গর্ব দেখিয়ে সোরায়ার কথা পূর্ণ করল-” যে শুধু শুনতেই মন চায়, তাই না?”
সোরায়া চকলেট গুলোর থেকে একটা নিয়ে ছিঁড়ে খেতে খেতে বলল-“আগগে না! এমন লাইন বলো যে মনে হয় কানে তুলো দিয়ে রাখি।”
রুদ্র মুচকি হেঁসে বলল-“তাতে সমস্যা নেই। বাজে বোকলে যদি আমার বন্ধুরা হাসে তাহলে আর ভুল ভাল লাইন বলতে সমস্যা কোথায় বল?”
সোরায়া রুদ্রর দিকে তাকিয়ে বলল-“সত্যি বলেছো ভাইয়া তোমার বোন হয়ে আমি ধন্য। এমন নমুনা সার্কাসে ও দেখা যায় না সচরাচর।”
রুদ্র এবার খেপে গিয়ে সোরায়াকে হুমকি দিল-“সোরার বাচ্চা বেশি বেশি হচ্ছে কিন্তু লাত্থি মেরে গাড়ি থেকে ফেলে দিবো বলে দিলাম।”
সোরায়া রুদ্র ওর কথার দু পয়সার মূল না দিয়ে ব্যঙ্গ করল-
“দাও না দাও। সমস্যা নেই। তারপর মামণি আর বাবা তুমি বাড়ি গেলে বাড়ি থেকে তোমাকেই লাত্থি মেরে বার করে দেয়।”
রুদ্র এক নজর সোরায়ার দিকে দেখলো বাচ্চাদের মতো চকলেট খাচ্ছে। সোরায়া রুদ্র কে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলল-“চকলেট গুলো সেই মজা ভাইয়া তুমি খাবে?”
রুদ্র গাড়ি চালানোতে মন দিয়ে সোজা রাস্তায় তাই তাকিয়ে বলল-“না তুই গেল। আমি এসব খাই না।”
সোরায়া আপন মনে চকলেট খেতে থাকলো এখন আর তেমন খারাপ লাগছে না তার। আর রুদ্র গাড়ি ছটালো চট্টগ্রামের দিকে।
সোরায়ার কলেজ~
সময়~৯ .৩০ মিনিট। মাহির কলেজে আসার পর আজ একবারও সোরায়াকে দেখতে পায় নি। অফিস রুমে বসে বসে নিজের মনে ভেবে যাচ্ছে এই একটা বিষয় নিয়ে।
-“কি হলো মেয়েটার? আজ কলেজে এলো না কেন? কাল কি বাড়িতে ঠিক মতো পৌঁছেছে?”
মাথায় মুহূর্তে এক চিন্তায় ব্যাথা ধরে গেল। মাহির অফিস রুমের টেবিলের উপর মাথা এলিয়ে বলতে লাগলো-
“ও মোর খোদা, এমন জ্বালা কেন হচ্ছে। মানুষ ঠিক বলে মেয়ে জাত ভয়ঙ্করী রাতের ঘুম, দিনের সুখ সব কেড়ে নেয়। তবু অন্যরা তো নিজের কাঙ্খিত জিনিস বিসর্জন দিয়ে মেয়াটাকে পায়, এইদিকে তো আমার কিছুই নেই না- মেয়েটা তো আমার ঘুম সুখ কেড়ে আর ফিরছে না। এখন আমি কি করি?”
এর মাঝেই জুঁই অফিস রুমে এলো মাথা নিচু করে হাতে এক গাধা অ্যাসাইনমেন্ট এর খাতা। জুঁই মাহির এর দিকে তাকিয়ে অনুমতি চাইল-“ভিতরে আসতে পারি স্যার?”
মাহির জুঁইকে দেখে ভাবলো সোরায়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবে কিন্তু আবার মনে হচ্ছিল যদি জুঁই খারাপ ভাবে চিন্তা করে? কিন্তু একই সময়ে নিজে বিড়বিড় করল-“খারাপ মনে করার কি আছে খারাপই তো। মনে শান্তি চাচ্ছি না খারাপ ভালো দিয়ে কি হবে আমার।”
মাহির জুঁইকে ভিতরে আস্তে বলল-“হ্যাঁ এসো।”
জুঁই ধীর গতিতে অফিস রুমে প্রবেশ করে টেবিলের উপর খাতা গুলো রেখে সাথে সাথে বের হওয়ার জন্য উদ্যত হলে মাহির তাকে আটকায়-“এই মেয়ে তোমার নাম যেন কি?”
জুঁই পিছন দিকে ঘুরে মাথা নিচু করে হালকা গলায় উত্তর দিল-” জুঁই।”
মাহির এবার সোরায়ার কথা জুঁইয়ের সামনে কিভাবে তুলবে বুঝতে পারছিল না কিন্তু তাও কোনভাবে ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করার চেষ্টা করল-“হ্যাঁ, জুঁই মনে পরেছে এখন। তোমার সঙ্গি কোথায় আজকে কলেজে কেন আসেনি ও? অ্যাসাইনমেন্ট ছিল তাই?”
জুঁই আমতা আমতা করে বলল-“স্যার আপনি সোরায়ার কথা বলছেন?”
মাহির মাথা নাড়লো- “হুঁম। আসে নি কেন আজকে?”
জুঁই একটু ভাবলো ভিডিও ভাইরাল হওয়ার কথাটা মাহির কে বলবে কিনা। একবার দুবার ভাবার পর মনে হলো কথাটা জানিয়ে রাখলে পরে আর ভুল বুঝাবুঝি বাড়বে না তাই জুঁই মাহির কে সাহস করে কথা টা বলেই দিল-
“স্যার আপনি হয়তো জানেন না। কালকের সোরায়ার নাচের ভিডিও করে কেউ আপলোড দেওয়ার পর সেটা অনেক ভাইরাল গেছে অনলাইনে। আমি নিশ্চিত নই তবে মনে হয় তাই আসে নি আজ কলেজে।”
মাহির কথাটা শুনে ধপ করে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালো- “কিহ্! ভিডিও কে করেছে আর আপলোড করে করেছে সেটা?”
জুঁই আবারো মাথা ঠায় নিচু করে রেখে বলল-“স্যার আমি জানি না। আমার ভুল আমি সোরা কে নাচ করতে বলেছিলাম। কিন্তু আমি বুঝতে পারি নি সব কিছু এতো বেশি বেশি হবে।”
মাহিরের শরীর রাগে জ্বলে উঠলো-“তুমি যা করেছো তা নিয়ে কথা হচ্ছে না। এখন সোরায়ার কি অবস্থা কথা হয়েছে তোমার ওর সাথে?”
আত্মার অঙ্গীকারে অভিমোহ পর্ব ৩৯
জুঁই মাথা নাড়লো-“না স্যার। অনেক বার ওর আইডি চৈক করেছি মেসেজ দিয়েছি একবারও যায়নি। ওর আইডির লিংক কেউ কমেন্ট বক্স এ দেওয়ায় ওটাও সবাই দেখেছে তাই হয়তো ডি অ্যাক্টিভ করে দিয়েছে। আর অনলাইনে কথা হতো তাই আমি কখনো ওর নাম্বার টা নেই নি। এখন খুব আফসোস হয় ধেয়ে রাখলে ভালো হতো।”
মাহির জুঁইয়ের কথা শোনার পর আরো চিন্তায় পড়ে গেলো কি হতে পারে সোরায়ার কলেজে না আসার কারণ তা নিয়ে।