আত্মার আগলে পর্ব ৯
সানজিদা আক্তার মুন্নী
মেহনূর দৃঢ় গলায় বলে,
— “আমি পারব না খাইয়ে দিতে। নিজ হাতেই খান।”
এহসান চোখ রাঙিয়ে তাকায়, কণ্ঠ তার ধারালো ও তীক্ষ্ণ,
— “সকালে রান্নাঘরে যে বেয়াদবি করেছিস, সেটা ভুলিনি। কেটে দেব নাকি তোর জিভ খানাও ঐ কুকুরের মতো! চুপচাপ খাইয়ে দে, বেয়াদ্দব নারী!”
মেহনূর আর কিছু বলার সাহস পায় না। হাত কাঁপতে থাকে তার, কিন্তু সে বাধ্য। আলগোছে হাতের ভাত মাখিয়ে এহসানের মুখের সামনে ধরে। এহসান এক পলক চেয়ে থাকে তার হাতে, মুচকি হেসে মুখে তুলে নেয় প্রথম লোকমা। ভাত চিবুতে চিবুতে বলে,
— “তোর মেহেদী রাঙা হাতে ভাত খাব, কখনো কল্পনাও করিনি। আহা, কী শান্তি!”
মেহনূর বিরক্তি নিয়ে বলে,
— “দয়া করে ভণ্ডামি বাদ দিন, আর ভাতগুলো গিলে আমায় উদ্ধার করুন, বাবা!”
এহসান নিরাশ কণ্ঠে বলে,
— “একটু তো সুন্দর কথা বের কর আমার জন্য তোর এই জবান থেকে!”
মেহনূর বিরক্তি মাখা কণ্ঠে উত্তর দেয়,
— “তা সম্ভব নয়!”
এহসান ভ্রু নাচিয়ে বলে,
— “কেন?”
মেহনূর আরেক লোকমা ভাত তার মুখে তুলে দিতে দিতে বলে,
— “আপনার জন্য আমার গলা আর জবান থেকে শুধু ঘৃণার কথাই বের হবে।”
এহসান মৃদু হাসে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
— “কেন? সুন্দর আর মিষ্টি কথা বের হলে কি তোর জবানে গজব পড়বে?”
মেহনূর দাঁত চেপে আরেক লোকমা ভাত তার মুখে তুলে দিয়ে বলে,
— “জ্বি, গজব পড়বে। শুধু গজব না, মুখ ঘা হয়ে যেতে পারে!”
এহসান হতাশ গলায় বলে,
— “ইয়া রাব্বে কারীম! তুমি কী জিনিস জুটাইলে আমার কপালে?”
মেহনূর কাটকাট কণ্ঠে বলে,
— “খবরদার! আমার রবকে দোষারোপ করবেন না। আপনি নিজেই আমাকে জোর করে আপনার কাছে রেখে দিয়েছেন!”
এমন বিতর্ক করতে করতে একসময় মেহনূর এহসানকে খাইয়ে দেয়। খাবার শেষ হলে সে হাত ধুয়ে, পানি এগিয়ে দিয়ে চলে আসতে নেয় তখনি
এহসান হঠাৎ ধমক দিয়ে বলে,
— “এই বেয়াদ্দব নারী! জানিস না, স্বামীকে খাইয়ে দিলে মুখ আঁচল দিয়ে মুছে দিতে হয়?”
এমন ধমকে মেহনূর কেঁপে ওঠে। তার গায়ের রক্ত যেন জমে যায়। এহসানের আচমকা ধমকে যে কেউ হার্টফেল করে মারা যাবে—এতে কোনো সন্দেহ নেই!
মেহনূর পিছনে ফিরে কটমট করে বলে,
— “আঁচল কোথায় পাব? চোখ কি কোথায় রেখে এসেছেন? দেখতে পাচ্ছেন না, থ্রি-পিস পরেছি!”
এহসান ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি এনে বলে,
— “তো ওড়না তো আছে, আর ওড়না দিয়ে তো সারা শরীর ঠিকই ঢেকে রেখেছিস।”
মেহনূর দাঁত চেপে বলে,
— “তাহলে কি ওড়না খুলে হাঁটব আপনার সামনে?”
এহসান মৃদু হাসে, কণ্ঠ তার গভীর,
— “শুধু ওড়না কেনো?, কাপড়ও খুলে হাঁটতে পারিস! এতে আমার কোনো সমস্যা নেই।”
মেহনূর এহসানের কথা শুনে তীব্র ক্ষোভে বাজখাঁই গলায় বলে,
— “গজব পড়ুক এই বেশরম জবানে! নাউজুবিল্লাহ! আস্তাগফিরুল্লাহ! মাবুদ, তুমি আশ্রয় দাও আমায়!”
এহসান নির্লিপ্তভাবে বলে,
— “এসব বাদ দিয়ে মুখ মুছিয়ে দে। নয়তো সত্যি কাপড়…”
কথা শেষ করার আগেই মেহনূর এক ঝটকায় এগিয়ে গিয়ে নিজের ওড়না দিয়ে তার মুখ মুছে দেয় এহসানের”!
ঠিক তখনই দরজায় ঠকঠক আওয়াজ হয়।
মেহনূর দ্রুত দরজার দিকে এগিয়ে গিয়ে খুলে দেয়।
মেহনূর দরজা খুলতেই এক মুহূর্তের জন্য থমকে যায়। এনিসা বেগম দরজার সামনে দাঁড়িয়ে, হাতে একখানা বড় কিসের থালা, যার ওপরে মখমলের লাল কাপড় ঢাকা। তাঁর ঠোঁটে এক রহস্যময় হাসি খেলা করছে। মেহনূর একপাশে সরে দাঁড়াতেই, তিনি ধীর পায়ে কক্ষে প্রবেশ করেন।
ঘরের মৃদু আলোয় তাঁর চলার প্রতিটি ভঙ্গিমায় একটা আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট। মাথার ওপরে শালীনভাবে ওড়না টানা, হাতে ভারী রেশমি চুড়ির খটখট শব্দ, আর চোখেমুখে এক অদ্ভুত প্রশান্তি—কিন্তু গভীরে যেন কিছু লুকিয়ে আছে।
তিনি সোজা বিছানার দিকে এগিয়ে এসে থালাখানা যত্ন করে নামিয়ে রাখেন, তারপর ধীরে পিছনে ঘুরে দাঁড়ান।
মেহনূর অবাক হয়ে চেয়ে থাকে। এক অজানা শঙ্কায় বুক ধকধক করছে। কেন যেন মনে হচ্ছে, এই মুহূর্তটার পর তার জীবনে কিছু একটা পরিবর্তন আসতে চলেছে।
এনিসা বেগম নরম হাতে মেহনূরের কবজি স্পর্শ করেন, যেন কোনো স্পর্শকাতর জিনিসকে ছুঁয়েছেন।
“বস মেহনূর আমার সামনে বস,” তাঁর কণ্ঠে আদেশ কম, মমতা বেশি।
মেহনূর নিষ্পলক তাকিয়ে থাকে, কিন্তু বাধ্য মেয়ের মতো ধীরে বিছানায় বসে। এনিসা বেগমও তার ঠিক সামনে জায়গা করে নেন, হাত বুলিয়ে দেন তার মাথায়।
তারপর আস্তে করে লাল মখমলের কাপড়টা সরিয়ে দেন।
মুহূর্তেই ঘরের আলোয় জ্বলে ওঠে স্বর্ণের দীপ্তি—এক জোড়া চিকন সোনার বালা আর একখানা নকশা করা স্বর্ণের আংটি!
মেহনূর থমকে যায়। চোখ বিস্ময়ে বড় হয়ে ওঠে।
এই বালা আর আংটি তো সে চেনে! এগুলো তালুকদার বংশের ঐতিহ্য! তার নিজের বাড়ির চাচিদের হাতে এমন অলংকার দেখা যায়। দাদুর কাছে রয়েছে অসংখ্য, আর এহসানের বাড়িতে? সেখানে তো শত শত, হাজার হাজার! তাদের পূর্বপুরুষ লক্ষ লক্ষ স্বর্ণালঙ্কার রেখে গেছেন তালুকদার বংশের বউদের জন্য।
এগুলো দেওয়া হয় শুধুমাত্র তালুকদার পরিবারের বউদের।
তাহলে…? তাহলে তাকেও স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে? এই সম্পর্ক, যে সম্পর্ক সে কখনো মেনে নিতে চায়নি, সেটাকে আজ সুন্দর মোড়কে সাজানো হচ্ছে?
তার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে। সে কি করবে? কী বলা উচিত এই মুহূর্তে?
এনিসা বেগম এবার এহসানের দিকে তাকিয়ে হাসেন।তারপর বলেন
—-“আব্বা, এদিকে আয়।”
এহসান নীরবে এগিয়ে আসে, মুখে কোনো অনুভূতি নেই। যেন তার জন্য এটাই স্বাভাবিক ছিল।
এনিসা বেগম আংটি আর বালাগুলো ওর হাতে তুলে দিয়ে বলেন,
+—“নে, বিসমিল্লাহ বলে ওর হাতে পড়িয়ে দে।”
তার কণ্ঠ দৃঢ়, কিন্তু কোমল।
—-“এই অলংকার শুধু স্বর্ণ নয়, এটা আমাদের বংশের ইতিহাস। এটা পরানোর মানে, ও এখন আর এ বংশের মেয়ে নয় বউও।”
এনিসা বেগম ধীর হাতে এগিয়ে এহসানের হাতে স্বর্ণের বালা আর আংটি দিলেন, তারপর সামনে রাখা থালাখানা আলতো করে মেহনূরের দিকে ঠেলে দিলেন।
মেহনূর বিস্মিত চোখে তাকিয়ে দেখল—থালার ওপর এক খানা পুরোনো হাফিজি কোরআন শরীফ। তার মলাটজোড়া পুরোনো হলেও মর্যাদার আভা ঠিকই বিদ্যমান। যেন শত বছর আগেও কেউ এটিকে একইভাবে যত্নে রেখেছিল।
এনিসা বেগম কোরআনের ওপর হাত বুলিয়ে ধীরে ধীরে বললেন,
—-“এটা আমি ভেবেছিলাম, আমার ছেলের বউদের মধ্যে যে কোরআনের হাফেজা হবে, তাকেই দেব।
কথা থামিয়ে মেহনূরের মুখের দিকে একবার গভীর দৃষ্টিতে তাকালেন। তারপর নরম অথচ দৃঢ় কণ্ঠে বললেন,
—-“আর এখন তুই তো যেমন করেই হোক, আমার এহসানের বেগম। তুই তো হাফেজা! তাই এই কোরআন শরীফখানা তোর যত্নে রাখবি। এটা শত বছরের পুরোনো, আমাদের পূর্বপুরুষের আমানত।”
এক পলকের জন্য ঘরে নিস্তব্ধতা নেমে এলো।
মেহনূর বোঝার চেষ্টা করল, এ মুহূর্তের মানে কী? এই কোরআন তার হাতে তোলা মানে কি সত্যিই সে এই এহসান তালুকদারের অংশ হয়ে গেল?
কিন্তু কিছু বলার আগেই, এনিসা বেগম নিঃশব্দে উঠে দাঁড়ালেন।
—“মেহনূর এহসান বেরিয়ে গেলে নিচে চলে আসিস খাবার খেতে হবে কিচ্ছু খাসনি,”—কেবল এটুকু বলে দরজা খুলে ধীর পায়ে কক্ষ ত্যাগ করলেন।
মেহনূর নির্বিকার মুখে বসে আছে , মনে একরাশ তীব্র বেদনা।
এহসান ধীর ধীরে ওর সামনে এসে বসল, তারপর গভীর চোখে তাকিয়ে বলল,
“—হাত দে।”
স্বরে আদেশ, অথচ কোথাও যেন এক অদ্ভুত কোমলতা লুকিয়ে।
মেহনূর দৃঢ় গলায় বলল,
“—-আমি পড়ব না! আমি এই তালুকদার বংশের মেয়ে বউ না!”
এহসান হাসল না, বিরক্তও হলো না। শুধু ঠান্ডা গলায় বলল,
“—-ভুলে যাস না, আমি কিন্তু খুব নিকৃষ্ট। তাই ভালোয় ভালোয় হাত বাড়িয়ে দে।”
মেহনূর অসহায়ের মতো বসে রইল, চোখেমুখে কষ্টের ছায়া”!এহসান কোনো অপেক্ষা না করেই ওর হাত ধরে টেনে নিল।
“বিসমিল্লাহ”! শব্দটা উচ্চারণ করেই মেহনূরের কোমল হাতে সাবধানে পরিয়ে দিল চিকন সোনার বালা। তারপর, নিখুঁত মাপে বানানো স্বর্ণের আংটিটা।
মেহনূর স্থির হয়ে তাকিয়ে থাকল নিজের হাতে।চোখের সামনে তালুকদার বংশের পরিচয় জ্বলজ্বল করছে।আজ সে সম্পূর্ণ কারো বেগম হয়ে গেল!
কিন্তু এ সম্পর্ক কি ভালোবাসার? নাকি নিছকই এক কলঙ্ক?গলা কাঁপিয়ে সে তাকাল এহসানের দিকে, ফিসফিস করে বলে,
—-“কেনো বিয়ে করলেন আমায়? কেনো শেষ করে দিলেন আমার সব?”
এহসান শান্ত চোখে তাকাল, গভীর গলায় বলে,
—“ভালোবাসি। তাই। ভীষণ ভালোবাসি তাই করেছি বিয়ে ।”
মেহনূর হতভম্ব হয়ে গেল। এক মুহূর্ত চুপ থেকে, প্রচণ্ড ঘৃণায় ফুঁসে উঠল, আর দাঁত চেপে বলে
—“এই ভালোবাসা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ! এই ভালোবাসা কলঙ্কের! এটা ভালোবাসা নয়, এটা ঘৃণা!”
এহসানের চোখের কোণায় একটা রাগের ঝিলিক খেলল। কিন্তু গলাটা কাঠের মতো শক্ত রেখেই বলল,
–“কোথায় লেখা আছে এটা নিষিদ্ধ? কোথায় লেখা আছে এই ভালোবাসা কলঙ্ক? বল, আমাদের ধর্মে আছে কোথাও? বল!”
মেহনূর স্তব্ধ হয়ে গেল।সত্যিই তো, কোথাও কি এটা নিষিদ্ধ?কিন্তু না! সে হাল ছাড়বে না! দাঁত চেপে বলল,
—“এটা সমাজে নিষিদ্ধ! এটা সমাজের চোখে কলঙ্ক!”
এহসান তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে
—-“লাতি মারি তোর সমাজের মুখে! আমি এহসান—ধর্মে বিশ্বাসী, এই নোংরা সমাজে নয়!”
মেহনূর বিস্ফোরিত চোখে তাকাল ওর দিকে।
—“নিজেই একটা নোংরা হয়ে সমাজকে নোংরা বলছেন! লজ্জা করে না?”
এহসান নিঃসঙ্কোচে বলল,
—“নাহ! লজ্জা করে না! আমি আগেই বলেছি, আমার লজ্জা করে না “! তাই বারবার জিজ্ঞেস করবি না “!
তারপর, আর এক মুহূর্তও দাঁড়াল না। উঠে গিয়ে বিছানা থেকে পাঞ্জাবিটা তুলে নিল, ধীর গায়ে চড়িয়ে নিল পাঞ্জাবি তারপর লুঙ্গির নিচে পায়জামা পড়ে নেয় তাও মেহনূরের সামনেই। লুঙ্গিটা খুলে মেহনূরের দিকে ছুড়ে মারে। আর আদেশ করে বলে
—“যা, এটা বেলকনিতে মেলে আয়।”
মেহনূর হতভম্ব হয়ে গেল!
এহসান ওর ফুঁসে ওঠা মুখের দিকে তাকিয়েই হুকুমের স্বরে বলল,
—-“আর নিচে গিয়ে চুপচাপ খাবার খেয়ে নিবি! আমি এসে যেন শুনি খাসনি—তা হলে অবস্থা খারাপ করে দেব!”
মেহনূর বসে রইল, মাথায় ঝড় বইতে লাগল।
এই মানুষটা কি সত্যিই তাকে ভালোবাসে? নাকি এ সম্পর্ক কেবলই এক বাধ্যবাধকতা?
এহসান বেরিয়ে আসে, উদ্দেশ্য একটি অনুষ্ঠানে যাওয়া। সামনে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে, তাই এখানে ওখানে যেতে হয়।
রাত ১১টা 🌸🌸🌸
মেহনূর কক্ষে এশার নামাজ শেষে জায়নামাজে বসে আছে আর এহসানের অপেক্ষা করছে, কারণ এনিসা বেগম বলেছেন, এহসান এলে যেনো তাকে খাবার দেয়। মেহনূর এখন থেকে এহসানের সব দায়িত্ব নেবে।
তখনি গাড়ির শব্দ কানে আসে, বুঝে যায়, এহসান চলে এসেছে।
এহসান গাড়ি থেকে নেমে বাড়ি ভিতর ঢোকে ক্লান্ত শরীরে সিড়ি বেয়ে উঠেছে, উদ্দেশ্য কক্ষে গিয়ে বিছানায় এলিয়ে দেওয়া।
এহসান কক্ষের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করতে গিয়ে, অন্যদিকের বেলকনি দিয়ে কেউ গোপনে ভেতরে ঢুকে। মেহনূর এক সেকেন্ডের মধ্যে আঁতকে ওঠে। কারণ সে ঠিকই বুঝতে পেরেছে কেউ কক্ষে এসেছে বেলকনি দিয়ে তাই তাড়াতাড়ি জায়নামাজ থেকে উঠে দাঁড়ায় ‘!
জায়নামাজ থেকে উঠে পেছনে ফিরে তাকাতেই তার কলিজার পানি শুকিয়ে আসে মেহনূর। তার চোখের সামনে রায়ান দাঁড়িয়ে, আর তার হৃদয়ে এক অজানা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রায়ান এখানে কি করছে আর কেনো কিভাবে? আর অন্য ভাবনাও মনে উঁকি দেয়
আজ হয়তো রায়ান শেষ হয়ে যাবে— কারণ এহসান চলে এসেছে আর যদি এহসান রায়ান কে দেখে নেয় তো শেষ করে দিবে এতটুকু এহসান কে চিনেছে মেহনূর।
এদিক রায়ান অবাক হয়ে মেহনূরের দিকে তাকিয়ে আছে । এতটা ভয়ংকর, এতটা মায়াবী মানুষ হতে পারে, সে ভাবেনি কখনো। কিন্তু এখন এসব কিছু ভাবা তার সময় নেই। সে মেহনূরের কাছে গিয়ে মেহনূর কে কিছু বলতে না দিয়ে , দ্রুত বলে,
আত্মার আগলে পর্ব ৮
-;-“তাড়াতাড়ি চলো, তোমায় নিয়ে আমি এখান থেকে পালিয়ে যাব।”
এবলে রায়ান মেহনূরের হাত ধরতে যাবে, ঠিক তখনই এহসানের গলা ফাটানো চিৎকারে মেহনূর আর রায়ান যেন একে অপর থেকে ছিটকে পড়ে। মেহনূর তার শিরদাঁড়া পর্যন্ত শিউরে ওঠে।
এহসান তীব্র রাগে চিৎকার করে বলে, “—কুত্তার বাচ্চা, তোর সাহস হলো কী করে আমার নারীর মুখ দেখা? আমার নারীর হাত ধরার জন্য হাত বাড়ানোর এত সাহস কিভাবে পেলে?”