আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ২
ইশিকা ইসলাম ইশা
রিদির ঘুম ভাঙ্গে সকালের তীব্র রোদের ঝলকানিতে।আধো আধো চোখ খুলে নিজেকে বিশাল বড় রুমে দেখে অবাক হয়। শরীর নাড়াতেই বুঝল শরীরে বেশ ব্যাথা করছে।রিদি উঠে বসতেই মনে পড়ল কালকের ঘটনা।ভয়ে ছিটকে উঠল শরীর।জড়সর হয়ে বসে আশেপাশে তাকিয়ে হুহু করে কেদে দিল রিদি আজানা অচেনা জায়গায়। সে কোথায়??হুট করে কি হল?কেন হল?কে ছিলো?আর ঐ মানুষটা!!কে সে??রিদির মাথা ঘুরাচ্ছে।সব কিছু এলোমেলো লাগছে।তার উপর আবার পুরো শরীর ব্যাথায় টনটন করছে!
রিদির নিজের ভাবনার মাঝেই সেখানে উপস্থিত হয় সুন্দরী এক রমনী।রিদিকে কাঁদতে দেখে বলে,
“কার সাথে তোমার বিয়ে হয়েছে জানো “।
রিদি ভাবনা থেকে বের হয়ে আবারো তাকালো সুন্দরী মেয়েটার দিকে। কান্না মিশ্রিত ভয়ার্ত কন্ঠে বলল।আমি জানি না!
আমি কোথায়?এটা কোন জায়গা?আমাকে কেন এখানে এনেছে??
মেয়েটি কিছু বলার আগেই সেখানে উপস্থিত হয় একজন বয়স্ক মহিলা।বয়স বেশি হলেও বেশভুষা বেশ পরিপাটি। মহিলাটি ধীর পায়ে এগিয়ে এসে বসল রিদির কাছে।রিদি ভয়ে জড়সর হয়ে দাঁড়িয়ে গেল বেডের এক কোনায় মহিলাটি রিদির মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
কি নাম তোমার??
রিদি ভয়ে আরো একটু সিটিয়ে গেল।
ভয় পেয়ো না।আমি তোমার দাদি হয়।
রিদি কিছুটা সাহস যুগিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
আমি কোথায়??আপনারা কারা??
মহিলাটি একটু মুচকি হেসে রিদির মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
আমি নাজমা চৌধুরী।আর এটা চৌধুরী বাড়ি!!!
রিদি যেন কিছুই শুনলো না। ভয়ার্ত কন্ঠে বিরবির করে বলল,
আমি বাসায় যাব!
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
নাজমা চৌধুরী রিদির এতো ভয় পাওয়া দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলল।লাবিব তাকে কালকের ঘটনা সব বলেছে।এতে রিদির এমন ভয় পাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার।রাতে মেয়েটাকে এমন বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখে ভীষণ ভয় পেয়েছিল সে।তীব্রর উপর ভয়ংকর রাগ হলেও তীব্র কে কিছু বলতে পারে নি নাজমা চৌধুরী।
হাজার বললেও তীব্রর উপর কোন প্রভাব পড়ে না। তাছাড়া তীব্র আসেনি চৌধুরী বাড়িতে। শুধু দায়সারা ভাবে কাজটা করে গেছে। নাজমা চৌধুরী নিজের ভাবনা সাইডে রেখে বলল,
এটাই এখন তোমার বাসা।তুমি এখন চৌধুরী বাড়ির একজন!! তোমার বিয়ে হয়েছে তুমি এখন মিসেস তীব্র চৌধুরী
কথাটা রিদির মস্তিষ্কে প্রভাব না ফেললেও কারো বুকে প্রভাব ফেলল।বুকে ঠিক কাটার মতো বিধল।রুপ টলমলে চাহনিতে চাইল শ্যামকালো মেয়ের দিকে।না চাইতেও সে সেটা পেয়েছে যা রুপ মন দিয়ে চাইলেও পায়নি।
তবে কাল লাবিব যা বলল তাতে তো মনে হল শুধু নাম ই জোড়া হয়েছে তীব্র চৌধুরীর সাথে রিদির।মন জোড়া সে তো কখনো সম্ভব না। তীব্র যা করেছে তা শুধু বড়মার কথা রাখতে।
কাল যা করেছে তীব্র রিদির সাথে তা তার ধারনার বাইরে ছিল।এতোদিন শুনেছিল তীব্রর ভয়ংকর হিংস্রতা সম্পর্কে আর কাল বিধ্বস্ত অবস্থায় রিদিকে দেখে যেন হিংস্রতার প্রখরতা অনূভব করতে পারল।
তাছাড়া রিদির মধ্যে এমন কিছু নেই যা তীব্র চৌধুরীকে আকৃষ্ট করতে পারে।রুপ নিজের মনে কথাগুলো ভেবে রিদির দিকে আবারো তাকালো,
রিদি নাজমা বেগমের বিয়ের কথায় থরথর করে কেঁপে উঠলো।বিয়ে!!বিয়ের কথা মনে হতেই সেই মানুষটি তান্ডব বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠল!!!মনে পড়ল কি ভয়ংকর সেই তান্ডব!যেন হিংস্র পশু।অবছা আলোয় দেখেছিল বিশালদেহী একজন পুরুষের বুকের অনেক খানি খোলা এলোমেলো শার্ট। শুধু এইটুকুই। চেহেরা দেখে নি।দেখেনি বলতে দেখার সুযোগ ই হয় নি।এক মূহুর্তের মধ্যেই তার জীবন বদলে গেল।একটা ঝর এসে তাকে নিজের সাথে উড়িয়ে নিয়ে এলো এইখানে।রিদি হুট করেই চিৎকার করে উঠল,
না না না…ঐ লোকটা আমাকে মেরে ফেলবে।আমাকে মে…….
বলতে বলতে মাথা ঘুরে পড়ে যেতে নিলে শক্ত একটা হাত এসে ধরে ফেলে।রুপ হতভম্ব হয়ে আছে।
হেই! গাল !! দিদুন মেয়েটা তো ঙ্গান হারিয়ে ফেলেছে!মনে হচ্ছে ভীষণ দূবল!!
নাজমা ব্যস্ত কন্ঠে বলল,
ওকে শুইয়ে দে অভি।রুপ মেয়েটার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করো।আমি ডক্টর কে কল করছি। রুপ কিছুক্ষণ রিদির দিকে চেয়ে বেরিয়ে গেল।
অভি রিদিকে সুইয়ে দিয়ে তাকালো রিদির মুখের দিকে। মায়াবী একটা মুখ। কান্নার কারনে মুখে এখন মুক্তোর মত দেখাচ্ছে চোখের পানি!!অভি বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে কি মনে করে চোখ ফিরিয়ে নিল।
একটু পরেই ডক্টর এসে রিদিকে চেক আপ করে বলে,
রিদি হুট করে হয়তো কোন কিছুতে ভীষণ ভয় পেয়েছে তাই এভাবে রিয়্যাক্ট করছে!! তাছাড়া শরীর বেশ দূবল। রক্ত ও বের হয়েছে প্রচুর।পায়ের ক্ষত টাও বেশ গভীর।খাবার খেয়ে ওষুধ খাইয়ে দিতে।আর একদম ফুল বেড রেস্ট নিতে।
ডক্টর চলে যেতেই তিরা চৌধুরী বলে,
মেয়েটির জীবন এভাবে ধ্বংস না করলেও পারতেন আম্মা!দেখলেন তো কি অবস্থা মেয়েটার! আপনার নাতি নিশ্চয়ই মেয়েটাকে সুমনে বিয়ে করে আনেনি।এমন একজন মানুষের সাথে তার জীবন বেঁধে দিলেন যার এই মেয়ের প্রতি নূন্যতম আগ্রহ ও কখনো হবে না।যেখানে রুপ………বলতে গিয়েও থেমে গেলেন তিনি।
সংসার !!!হাহহ সে তো দূরের কথা!!
নাজমা চৌধুরী রিদির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,
আমি জানি না কি হবে!!আমি শুধু তিশার কথা রেখেছি। তাছাড়া মেয়েটাকে ঐ নরক থেকে চৌধুরী বাড়িতে নিয়ে আসায় আমার উদ্দেশ্য ছিল।আর এই কাজ তীব্র ছাড়া কেউ করতে পারত না।এমন তো না আমি চেষ্টা করিনি কিন্তু রুপেশ !!সে আমাকে বাধ্য করেছে তার যম কে পাঠাতে!
তিরা চৌধুরী রিদির মায়াবী মুখটা দেখে বলে,
তবে বিয়েটা কি জরুরী ছিল!!!
নাজমা চৌধুরী তিরার দিকে তাকিয়ে বলল,
বললাম তো তিশার শেষ ইচ্ছা পূরন করার চেষ্টা করছি শুধু!জানি হয়তো আকাশ মাটি কখনো মিলবে না। কিন্তু আমি দিয়ার মেয়েকে একটা সুন্দর জীবন দিতে চায়।ও আজ থেকে এই বাড়ির মেয়ে হিসেবে থাকবে। পড়ালেখা করবে। এরপর আমি আর কারো কোন কথা শুনতে চাই না।
এর মাঝে কেটে গেছে দুদিন,
রিদি এখন অনেকটা সুস্থ হলেও তার মনে ভয় এখনো শেষ হয়নি। নাজমা চৌধুরী রিদির রুমে এসে দেখে রিদি বিছানার এক কোণে বসে গুটিসুটি মেরে আছে।
রিদিতা!!!
রিদি চমকে উঠে সামনে তাকাতেই নজরে এলো নাজমা চৌধুরীকে। নাজমা নরম কন্ঠে বলল,
কেমন আছো দিদিভাই??
ভালো!!
নাজমা রিদির ভয়ার্ত মুখ দেখে বলল,
রিদিতা তোমাকে এখানে আমি কেন এনেছি জানবে না!!
রিদি মায়াভরা দৃষ্টিতে তাকালো নাজমা বেগমের দিকে। নাজমা নিজেও বেশ কিছুক্ষণ চেয়ে দেখল মিষ্টি একটা মুখ!!এরপর বলল,
ঐ নরক থেকে এখানে তুমি ভালো থাকবে তাই!বাপ নামের একটা পিশাচ সে!!
আপনি কিভাবে জানলেন !!আমার ব্যাপারে!!
রিদি অবাক হয়ে তাকাতেই নাজমা চৌধুরী বলল,
রিদিতা তুমি হয়তো এখনো ছোট।সব বলার সময় এখনো আসে নি। শুধু বলব দিয়া চেয়েছে তুমি ঐ নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্ত হও।দিয়ার স্বপ্ন ছিল খুব পড়াশুনা করার।ও তো পারে নি তুমি না হয় চেষ্টা করো মায়ের স্বপ্ন পূরন করার।
মায়ের কথা শুনে রিদির চোখ ছলছল করে উঠলো।
আপনি আমার আম্মু কে চিনেন??
নাজমা চৌধুরী মুচকি হেসে বলল,
তোমার মা আমার আরেকটা মেয়ে ছিল।
রিদি আবাক হয়ে বলল,
মানে আপনি আম্মুকে জানেন!তবে আমাদের বাসায় কখনো যান নি কেন??
রিদিকে কিছুটা স্বাভাবিক হতে দেখে নাজমা বলল,
আমি তো জানতাম ই না দিয়া কোথায় আছে?ও তো আমাদের ওপর অভিমান করে চলে গেছিল।
শোনা গেল রিদি চটপটে গলার আওয়াজ।হয়তো মা নিয়ে কথা বলতে তার ভালো লাগছে।হবেই বা না কেন আমেনা তো রিদির মায়ের কোন স্মৃতি রাখেনি তার বাড়িতে।না তার কথা কখনো ঐ বাড়িতে বলা হয়।রিদি চটপটে গলার বলল,
“আমার আম্মু কে আপনি বকেছিলেন তাই না!! আম্মু আমাকে বকলে আমিও অভিমান করতাম খুব!একদম কথা বলতাম না!
নাজমা চৌধুরী রিদির মায়াবী মুখটা হাত বুলিয়ে বলল,
তুমি একদম মায়ার সাগর।ঠিক মায়ের মতো!এতো মায়াবী মেয়েকে কেউ বকে।
রিদির মুখে ফুটে উঠল বিস্তর হাসি।নাজমা অবাক হলেও হাসলেন।মেয়েটা নিহাৎ ই বাচ্চা একটা মেয়ে।এই মেয়েটার সাথে কতোই না অত্যাচার করেছে ওরা।সে হয়তো দেরি করে ফেলেছে।মনে মনে এতদিন অনুতপ্ত হলেও সে পেরেছে তিশার কথা রাখতে!!!
এটাতো জানে না তীব্রর সাথে রিদির ভবিষ্যৎ ঠিক কি হবে ?? কিন্তু সে রিদিকে একটা সুন্দর জীবন দিতে চায়।
জানেন আম্মু ও আমাকে ডাকত এই নামে!! আম্মু বলত,
কোই রে আমার মায়াবী সাগরিকা কোথায়?কথাটা বলেই রিদি হু হু করে কেঁদে উঠলো।
নাজমা রিদিকে টেনে বুকে জড়িয়ে ধরল।তার চোখেও পাখি টলমল করছে। অভিমান করে এতোটা দূরে সরে গেল মেয়েটা যে এখন তার ধরা ছোয়ার বাইরে! কিন্তু তার অংশ কে সে আগলে রাখবে।যত্নে রাখবে।
রিদির এই বাড়িতে প্রায় ৪-৫ দিন হয়েছে।তবে সে রুম থেকে বের হয় নি।নাজমা চৌধুরী অনেকবার বললেও রিদি বের হয় নি।রুপ মাঝে মাঝে এসে তার সাথে কথা বলে যায়। যদিও রুপের রিদিকে পছন্দ করার কথা না কারন তার ভালবাসার মানুষের নাম জুড়েছে মেয়েটার সাথে কিন্তু রিদির উপর হওয়া অত্যাচার এর কথা শুনে রুপের মনটা খারাপ হয়েছে।ছোট থেকে সে বড় হয়েছে সবার আদরে আর চৌধুরী বাড়ির বিলাসিতায়।
তাছাড়া আরো একটা ছেলে আসে রিদির সাথে দেখা করতে অভি।একা না!!দাদির সাথে আসে মাঝে মাঝে।বেশ মজার কথা বলে।রিদি তখন খিলখিল করে হাসে।
আজ অনেকদিন পর রিদি রুম থেকে বের হয়েছে।রুপ অনেক বুঝিয়ে রিদি কে বের করেছে রুম থেকে।তার তথাকথিত সেই ভয়ংকর রাক্ষস মানে তীব্র এই বাসায় তেমন একটা আসে না।রিদিকে এখানে আনার পর একদিন ও আসেনি।রিদি রুপের কথা বিশ্বাস করে বাচ্চাদের মতো রুপের হাত আকরে রুম থেকে বের হতেই নজরে এলো বিশাল বড় করিডর। একসাথে বেশ কয়েকটা রুম।রিদি কয়েককদম এগুতেই থামল রুপ।বন্ধ দরজার দিকে তাকিয়ে বলল,
এটা তোমার তথাকথিত সেই ভয়ংকর রাক্ষস এর রুম!রিদি চাইলো বিশাল দরজার দিকে।
রুপ আবারো বলল,
তবে এই রুমে কারো প্রবেশ নিষিদ্ধ! নিষ্ঠুর মানব সে। অনূভুতি কি জিনিস জানে না হয়তো!!
রিদি রুপের কথায় কিছুটা কষ্টের আভাস পেল।তবে বেশি পাত্তা না দিয়ে চটপট পায়ে রুমের সামনে থেকে ভয়ে চলে যেতেই কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে চোখ বন্ধ করে নিল,
আল্লাহ পড়ে গেলাম রে!!!
রিদির কথায় রুপ আহাম্মক হয়ে বলে,
কোথায় পড়েছে!!অভিক ভাই তো তোমাকে ধরে আছে!!বলেই হেসে উঠলো।
এই যে ছোট্ট শ্যামাপাখি!চোখ খুলুন!আপনি পড়ে যান নি!!রিদি চট করে অভিকে ছেড়ে দাড়াতেই হাসল অভি।
সরি ভাইয়া!!
ইটস ওকে! সাবধানে চলাচল করবে।
রিদি মুচকি হেসে বলল,
ঠিক আছে!!রিদির অভি নামক মানুষ টাকে বেশ লাগে।বাড়িতে অভিই সবসময় হাসিখুশি মুখে কথা বলে তার সাথে। সবসময় মুখে যুক্ত থাকে মায়াবী হাসি।
রুপ বলল,
চলো এবার তোমাকে পুরো বাড়ি ঘুরিয়ে দেখায়।রিদি মুচকি হেসে রূপের হাত ধরে ধীরে ধীরে এগুতে লাগলো।
অভিক ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল।
রুপ রিদিকে পুরো বাড়ি ঘুরিয়ে দেখানোর সময় খেয়াল করল।রিদি ভীষণ চঞ্চল।হয়তো তার চঞ্চলতা কোন কারনে ঢাকা পড়ে চুপচাপ হয়ে গেছে। কিন্তু রিদি বেশ চঞ্চল বটে।হয়তো তার চঞ্চলতা প্রকাশ করার মানুষ পায় নি।হয়তো একদিন তার চঞ্চলতায় ছেয়ে যাবে পুরো বাড়ি
উপরের সবটা দেখানো শেষ করে নিচে নেমে থামল দুইজনে। রুপ রিদির হাত ছেড়ে দৌড়ে গিয়ে জরিয়ে ধরলো এক ভদ্র লোককে!
আব্বু!!!
ভদ্রলোক রুপের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দিয়ে বলল,
কেমন আছে আমার মা টা??
খুব ভালো!তুমি কেমন আছো?আজকে আসবে সেটা তো বলোনি!
সারপ্রাইজ!!কেমন দিলাম!!
সত্যি আমি ভীষণ সারপ্রাইজ হয়েছি আব্বু!!তোমাকে ভীষণ মিস করেছি!
আমিও আমার মা কে ভীষণ মিস করেছি।
দূর থেকে রিদি বাবা মেয়ের ভালবাসা দেখে ছলছল চোখে তাকালো।কি সুন্দর সম্পর্ক তাদের।রিদির ধ্যান ভাঙল নাজমা বেগমের কথায়,
এক মা পেয়ে আরেক মাকে ভুলে যাচ্ছিস দেখছি!আরফিন চৌধুরী মুচকি হেসে বলল,
কি যে বলো না আম্মু!আমি তো আমার দুই মাকেই ভীষণ মিস করেছি!!
থাক হয়েছে!!
আরফিন মুচকি হেসে জরিয়ে ধরলো নাজমা বেগম কে!আগে হয়তো কিছু বলবে তার আগেই নজর গেল রিদির দিকে।কোমর ছাড়িয়ে লম্বা খোলা চুলের গোছা দেখে থম মেরে দাঁড়াল আরফিন। এতোক্ষণের হাসি খুশি মুখটা মূহূর্তে গম্ভির হয়ে গেল।
ও কে???
আরফিনের কথায় নাজমা ছোট একটা শ্বাস ফেলে বলে,
ও রিদিতা….
নামজা আগে কিছু বলবে তার আগেই আরফিন বলল,
দিয়ু…দিয়ার মেয়ে!!!
নাজমা অবাক হলেও মুচকি হাসল।
হ্যাঁ দিয়ার মেয়ে!!
ঠিক মায়ের মতোই হয়েছে!তা আপনি ওকে নিয়েই আসলেন এই বাড়িতে আম্মা।তবে তীব্র যে সুবিধার না সেটা ভেবেছেন নিশ্চয়। ধংসলীলা শুরু করার কি দরকার ছিল!!
নাজমা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
মেয়েটা থাকাতে কি তোমাদের সমস্যা হচ্ছে আরফিন!!
আরফিন তপ্ত একটা নিঃশ্বাস ফেলল।মায়াবী মুখটা দেখে এতবছরের ঢেকে রাখা সূক্ষ্ম ব্যাথাটা আবার জলজল করে উঠল।
আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ১
তুমি দিয়া আন্টিকে চিনো আব্বু!!!
রুপের কথায় আরফিন কিছু বলবে তার আগেই ভেসে আসল একটা কন্ঠস্বর!!
মায়ের মতো আবার কি ধংস করতে এসেছে!!