আমরণ প্রেমতৃষ্ণা পর্ব ২৮

আমরণ প্রেমতৃষ্ণা পর্ব ২৮
তানহা ইসলাম বৈশাখী

ক্যালোন্ডারের পাতায় এখন আশ্বিনের রাজ। এই মাস পরেই আসবে হেমন্তকাল। শরৎকালের মায়া ছেড়ে প্রকৃতি পা রাখবে হেমন্তে।
কেটে গেছে পুরো দুটো সপ্তাহ। গুনে গুনে চৌদ্দদিন কেটে গেছে। এই চৌদ্দদিনে কোন ঘটনা বা দূর্ঘনা কিছুই ঘটেনি। কারো কারো দিন কেটেছে সুখের ভেলায় ভেসে ভেসে। কারো কারো আবার গহীন যন্ত্রনায় ছটফট করতে করতে।
দুঃখ কষ্ট নিয়েই জীবন। দুটিরই সামঞ্জস্য বজায় রেখে দিনগুলো তার গতীতেই চলেছে। তবে আজকের বিষয়টা একটু ভিন্ন। আজ খুব বড় একটা দূর্ঘটনা ঘটেছে। প্রার্থ-পুষ্পর জীবনে নয় দূর্ঘটনা ঘটেছে প্লে-বয় খ্যাত হৃদয় নামক ছেলেটার সাথে।

ভালোবাসা ছোট একটা শব্দ হলেও এর শক্তি অনেক। এটি মানুষকে যেমন সুখ দিতে পারে তেমন দুঃখও দিতে পারে। আবার কাউকে যেমন খারাপ করতে পারে তেমনই কাউকে ভালো করতে পারে। একেকটা সংজ্ঞায় ভালোবাসা একেকরকম। এর বিবরণ দিতে চাইলে পুরো একটা উপন্যাস লিখে ফেলা যাবে।
আমরা আর সেখানে না যাই। আমরা আসি আমাদের পার্থিব জীবনে।
কোঁকড়ানো চুকগুলো উষ্কখুষ্ক। চোখ মুখের হাল বেহাল। শার্টের জায়গায় জায়গায় ছিঁড়ে তাতে র*ক্ত বেড়িয়ে এসেছে। হাত পা সব জায়গায় ছিলে গেছে। তার শরীরের ব্যাথাকে সম্পূর্ন উপেক্ষা করে সে অপেক্ষা করছে প্রিয়তমার জ্ঞান ফেরার।
পাশে বসেই প্রার্থ দেখছে বন্ধুর বিদ্ধস্ত অবস্থা। কি বলে যে তাকে শান্তনা দিবে তার ভাষা নেই। সে চুপচাপ বসে থেকে বন্ধুর করুন অবস্থা দেখছে।
পাশে বসে আছে পুষ্প। সে কোনমতে বললো

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“-হৃদয় ভাই সামলান নিজেকে। মোহ’র কিচ্ছু হবে না। আপনার শরীরের অনেক জায়গায় যখম হয়েছে। আপনি প্রার্থ ভাইয়ের সাথে একটু যান। কাটা জায়গা গুলো ভালোভাবে ড্রেসিং করে আনুন।
হৃদয় মুখ তুললো না। ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে রইলো একইভাবে । একটু পর কথা বললো করুন স্বরে।
“-লাগবে না। ব্যাথা নেই।
এরপর আর জোর করার সাহস হলো না কারোর। এমনিতেই হৃদয়ের অবস্থা ভালো নয়। কখন পাগলামো শুরু করে দেয় কে জানে।

সকাল সকাল হৃদয় বাইক নিয়ে বেরিয়েছিলো মোহ এর সাথে। কথা ছিলো মোহকে ভার্সিটি পৌঁছে দিয়ে সে যাবে স্টুডিওতে। তবে কোথাও আর যাওয়া হলো না। মাঝরাস্তায় ট্রাকের সাথে ধাক্কা লেগে দুজন ছিটকে পরে দুদিকে। সেখান থেকে মানুষজন ধরাধরি করে তাদে নিয়ে আসে হসপিটালে। হৃদয়ের জ্ঞান ছিলো তবে মোহ জ্ঞান হারিয়েছে এক্সিডেন্টের সময়ই। তখন থেকে হৃদয়ের হৃদযন্ত্রের গতি বেড়ে গেছে দ্বিগুন। ভয় কাজ করছে ভেতরে। একটা প্লে বয় খ্যাত ছেলে যার কিনা মাসে মাসে তিন চারটে করে গার্লফ্রেন্ড বদলে যায় তার একটা মেয়ের জন্য বুক পুড়ছে। এ কি আদোও সম্ভব? যার কাছে নারী মানে খেলনার বস্তু তার কাছে আজ মোহ মানে এক সুন্দর অনুভুতি। নারীরা খেলনার বস্তু নয়। নারী হচ্ছে পুরুষের হৃদয়ের গহীনে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত অনুভুতি। অপেক্ষা শুধু সেই একটি মাত্র নারীর জীবনে পদার্পন করার। তাহলেই জীবন সুন্দর।

রক্তাক্ত অবস্থায় মোহকে দেখে হৃদয়ের মনে হয়েছে, তার ভেতর থেকে কিছু একটা হারিয়ে গেলো বোধহয়। এই মেয়েটার প্রতি তার এত টান এত ভালোবাসা থাকবে সেটা সে কল্পনাও করতে পারেনি। কি আছে এই মেয়েতে? আর পাঁচটা মেয়ের মতোই তো। তবুও কেন মন বিবাগী হচ্ছে? এ প্রশ্নের উত্তর হৃদয় জানে না। শুধু জানে এই মেয়েটা তার অস্তিত্বের সাথে জুরে গেছে। প্রেমের প্রথমদিন থেকেই তার প্রতি আলাদা ভালোলাগা কাজ করে। তাকে দেখলেই মনেহয় সহজ সরল একটা মেয়ে। হৃদয়ের এক্স গার্লফ্রেন্ড গুলোতে কখনো এমন ফিল পায়নি যতটা মোহতে পেয়েছে। সে সবার থেকে আলাদা। হৃদয়ের কথার ধরন ভালো না। লুচু লুচু কথা বলে মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করে সে তবে আশ্চর্যজনক ব্যাপার মোহ’র সাথে একবারও ফ্লার্ট করতে পারেনি। সে ওমন মেয়েই নয়। কিছু তো একটা আছে তার মাঝে যার কারনে ছন্নছাড়া হৃদয়কে সে বোতল বন্দী করতে পেরেছে।
হৃদয়ের বুক ভারী হয়ে আসে মোহর কথা ভাবতে গেলে। জীবনে চলার পথে মোহ নামক মেয়েটাকে তার চাই-ই চাই।

হসপিটালে এসে হৃদয় ফোন করে প্রার্থকে। প্রার্থ বাড়িতেই ছিলো তখন। আসার সময় পুষ্পকে সব বলতে সে-ও সাথে চলে এসেছে। তাদের কথা শুনে অন্ত প্রিয়াও সাথে এসেছে। অর্নব, রকি, কার্তিককে ফোন করা হয়েছে। তারাও আসছে।
কিছুক্ষণ নিস্তব্ধতা বিরাজ করার পর করিডরে ভারি দু জোরা পয়ের শব্দ এলো। সামনে তাকাতে দেখলো অর্নব আর কার্তিক আসছে। ওরা আসতেই পুষ্প উঠে জায়গা করে দিলো। অন্ত আর প্রিয়া দাঁড়িয়েছিলো তাদের পাশে গিয়ে দাড়ালো।
অর্নবরা এসে বসলো হৃদয়ের পাশে। আশ্বাস দিলো তাকে যেন ভয় না পায়। মোহ’র কিছু হবে না। তবে তাদের শান্তনায়ও কাজ হলো না। হৃদয়ের মাঝে হেলদোল দেখা গেলো না।
একটু পর প্রার্থ হৃদয়ের পিঠে হাত রেখে বললো।

“-আমি বলবো না আমি তোর কষ্ট বুঝতে পারছি। কারন সেটা বোঝার ক্ষমতা আমার নেই। আমরা মানুষের খুশিতে সম্পূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে পারলেও দুঃখে সমান ভাবে করতে পারি না। তোর কষ্ট হচ্ছে অনেক আমি জানি কিন্তু এভাবে ভেঙে পরলে তো হবে না হৃদয়। তুই ভালো হ। তুই ঠিক থাকলে মোহও ঠিক হয়ে যাবে।
হৃদয়ের বোধহয় মন হালকা করতে ইচ্ছে হলো হঠাৎ। বন্ধুদের আশকারা পেয়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। ঝাপ দিয়ে জরিয়ে ধরলো প্রার্থকে। নোনাজলের স্রোত বয়িয়ে পাগলের মতো বিলাপ করে বললো।
“-আমার কষ্ট হচ্ছে প্রার্থ। মোহকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিতে বল। ও আমাকে রেখে কেন যাচ্ছে? ওকে ফিরে আসতে বল। একটা মেয়ে আমার জীবনে এভাবে ইফেক্ট করবে আমি কখনো ভাবিনি। তুই শুধু ওকে আমার কাছে ফিরে আসতে বল কসম লাগে আমি কোন মেয়ের দিকে ফিরেও তাকাবো না।

কান্নার জন্য কথাগুলো অস্পষ্ট শোনা গেলেও সবাই ঠিকই বুঝলো। হৃদয়ের এমন উন্মাদনায় তার বন্ধুরা অবাকও হলো বটে। এই ছেলেটা একটা মেয়ের জন্য সবার সামনে হাউমাউ করে কাদছে এটা মানতে একটু বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। যে জিনিসের মতো মেয়ে বদলায় তার জীবনেও নাকি সঠিক নারী এলো সে তার জন্য এতটা মাইনে রাখে?
প্রার্থ অবাক হলেও মনে মনে হাসলো। ভাবলো, -বন্ধুকে চিনতে বোধহয় ভুল করে ফেলেছে তারা। যার স্বভাব খারাপ বলে প্রিয়াকে ঘেসতে দিতে চাইতো না তার ধারেকাছে সে একটা মেয়ের জন্য এতটা পাগল হতে পারে তা যেন কল্পনাতীত ছিলো। অবশ্য ভালোবাসা এমনই। প্রার্থ নিজে এর স্বীকার। এটা মানুষকে কি থেকে কি করতে পারে তা প্রার্থর থেকে ভালো কে জানে?

অদূরেই দাঁড়িয়ে থেকে নিপুন চোখে প্রিয়া দেখছিলো হৃদয়ের আকুতি। মনে মনে বোধহয় একটু হিংসে হলো। এই ভালোবাসাটা তার জন্য হলে কি খুব ক্ষতি হতো? যাক যার কপালে যা নেই তা দেখে আফসোস করেও লাভ নেই। চোখের কোনে সদ্য আসা জলটুকু আঙ্গুলের ডগা দিয়ে সন্তর্পণে মুছে নিলো সে।
হঠাৎ পাশে তাকাতে দেখলো অন্ত অনুভূতিহীন চোখে তার দিকেই তাকিয়ে। ওমনি বুকটা ধ্বক করে উঠলো। চোখ নামিয়ে নিলো সাথে সাথে। মুহুর্তেই অস্বস্তিরা হানা দিলো তার মাঝে।
অন্তর চেহারা দেখলে মাঝে মাঝে মনে হয় ছেলেটাকে ফিরিয়ে দিয়ে ভুল করছে না তো? আবার মনেহয়, ভুল করবে কেন? অন্তর সাথে কখনোই এমন সম্পর্ক হবে না। যার জন্য মনে কোন অনুভুতি নেই তাকিয়ে ফিরিয়ে দেওয়ায় ভুল কি আছে?
প্রায় সময়ই এমন দোলাচলে ভুগে সে। মন কেমন করে শুধু। এই মন কেমনের ওষুধ কি? কি করলে দোলাআল কাটবে কে জানে?

মোহ’র জ্ঞান ফেরেনি। তবে ডাক্তার কিছুক্ষণের জন্য তাকে দেখার পারমিশন দিয়েছে। সবাই কেবিনে গেছে মোহকে দেখতে। শুধু যায়নি অন্ত। কেবিনের বাইরে রাখা চেয়ারে বসে আছে সে।
একটু পরে সুন্দর দুটো পা এসে থামলো অন্তর সামনে। পা দুটো দেখেই বুঝলো এটা প্রিয়া। সে চোখ তুলে তাকালো না। একইভাবে ফ্লোরে তাকিয়ে রইলো।
এমনিতেও অন্ত প্রিয়ার সামনে যায় না ইদানিং। তার থেকে অন্ততপক্ষে দশহাত দুরে থাকার চেষ্টা করে সবসময়।
প্রিয়া কিছু না বলে গিয়ে বসলো অন্তর পাশে। সামান্য দূরত্ব বজায় রাখলো। নীরবতার মাঝে হঠাৎ বলে উঠলো।
“-দেখলে তো হৃদয় ভাই খারাপ নয়। সে-ও ভালোবাসতে পারে।
অন্ত তাকালো প্রিয়ার দিকে। প্রিয়া সামনের দিকে চোখ ফিরিয়ে আছে। অন্ত ধীর কন্ঠে বললো।

“-হুম দেখলাম।
“-তুমি বলেছিলো হৃদয় ভাই ভালো না। প্লে বয়ও বলেছিলে। কিন্তু সে এতটাও খারাপ নয়। দেখলে না কেমন করে মোহ আপুর জন্য কাঁদলো।
কথাটা বলতে গিয়ে প্রিয়ার গলা খানিকটা কেপে উঠলো। অন্ত একইভাবে বললো
“-তোর ভালো লাগছে?
“-ভালো লাগছে আবার খারাপও লাগছে। ভালো লাগছে এটা যেনে যে হৃদয় ভাইও তার মনের মানুষ পেয়ে গেলো। কিন্তু তার ভালোবাসার জন্য কত কষ্ট পাচ্ছে সে। এগুলো দেখলে একটু খারাপ লাগেই। ও ব্যাপার না।
অন্ত ভাবলেশহীন আবার বললো।
“-ওহ আচ্ছা! হৃদয় ভাইয়ের কষ্টে কষ্ট হয় তো তাইনা?
“-হুম একটু তো হচ্ছে।
“-তাহলে আমি কি দোষ করলাম?

অন্তর কন্ঠ মলিন। প্রিয়া ঝট করে তাকায় তার দিকে। চোখে চোখ পরে দুজনের। সে চোখের ভাষা বুঝতে আজ আর কষ্ট করতে হলো না প্রিয়ার। চোখে তাকিয়েই তার ভেতরের ভাষা পরে ফেলা যাচ্ছে। কেমন করুন দৃষ্টি তার। অন্ত’র বলা প্রতিটা বাক্য এত গভীর হয় কেন? এত অসহায় কেন ছেলেটা? তার অসহায়ত্বের কারন কি প্রিয়া নয়? অবশ্যই সে-ই দায়ী এমন শান্ত ভদ্র ছেলেটার চোখের আকুতির মনের অসহায়ত্বের। নিজের কাছে নিজে পৃরশ্ন করে হেরে গেলো প্রিয়া। সে যে নিজেই দায়ী এসবের।
অন্ত ফের বললো।
“-তুই হৃদয় ভাইকে অনেক বুঝিস। তার মন পড়তে পারিস তাইনা? তবে আমাকে কেন বুঝিস না? আমার মন কেন পড়তে পারিস না? আমি তো তোর সামনে আমার সমস্তটা খুলে রেখেছি তবুও কেন পড়তে পারিস না আমায়?
ঠিক এই কারনে! এই কারনেই প্রিয়ার অন্তর মুখোমুখি হয় না। অন্তর প্রতিটা কথাই এখন মনে দাগ টানে। তাকে তো পড়ে ফেলা শেষ অনেক আগেই কিন্তু প্রিয়া যে মানতে চায় না সে মনের ভাষা।
সে মাথা নিচু করে বললো।

“-পড়তে পারলে কি হবে? কারো মনের ভাষা পড়ে আমার কি লাভ?
“-সেটাই। তোর কোন লাভ নেই। মনের ভাষা পড়তেই হয় লাভ লসের আশায়। সেখানে যদি লাভই না হয় তাহলে পড়ে কি করবি?
প্রিয়া বুঝলো অন্তর অভিমান। একটু নড়েচড়ে বসে নিচে তাকিয়ে বললো।
“-এমন করে কেন বলছো? আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি। আসলে…
“-আমি তো বলিনি আমার কষ্ট হচ্ছে।
“-তুমি অনেক বদলে গেছো অন্ত ভাই। এতটা বদলে গেলে কি করে?
“-যেভাবে অন্ধ বদলে অন্ত হয়ে গেলো ঠিক সেভাবেই অন্তর ভেতরটাও বদলে গেলো।
“-একটু স্বাভাবিক কেন হচ্ছো না? আমাদের মাঝে কোন সম্পর্ক হওয়া সম্ভব নয়। বুঝতে পারছো না কেন?
“-কে বললো বুঝতে পারছি না? বুঝতে পারছি তো।
“-কোথায় বুঝছো?
“-এইযে বুঝলাম।
“-তুমি বুঝছো না। আমি……
অন্ত কথা কেড়ে নিলো। কঠর গলায় বললো।
“-তুই যদি এখানে শুধু বোঝানোর জন্যই আসিস তবে যেতে পারিস আমার সময় নেই।
প্রিয়া আর কথা বাড়ালো না। আস্তে করে উঠে চলে গেলো। অন্ত চোখ বুজে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। আজকাল দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কিছুই বের হয় না ভেতর থেকে। সব কেমন জমাট বেধে থাকে। কষ্টগুলো জমাট বাঁধতে বাঁধতে বুকটা অনেক ভারী হয়ে গেছে। এই ভার বুকটা একটু হালকা হবে কবে? এই বয়সে এমন ভারাক্রান্ত মন নিয়ে সে কি করে বাচবে?

মোহ’র জ্ঞান ফিরেছে সন্ধ্যার দিকে। এখন বাজে রাত আটটা। প্রার্থ কেবলই পুষ্পকে বাড়িতে পৌছে দিয়ে গেলো আবার হসপিটালের উদ্দেশ্যে। পুষ্প অবশ্য আসতে চায়নি তবে প্রার্থও আর থাকতে দেয়নি। পুষ্পর চোখ দেখেই বুঝে ফেলেছে তার মাথা ব্যাথা করছে। চোখদুটো লাল হয়ে ছিলো। এমনিতেই দুদিন পর পর তার মাথা ব্যাথা উঠছে কিছুদিন ধরে। আজ সারাদিন হসপিটালের পরিবেশে আবার মাথা নাড়া দিয়ে উঠেছে। প্রার্থকে এখন আর বলতেও হয় না পুষ্পর কি হয়েছে বা কি প্রয়োজন। তার বলার আগেই বান্দা বুঝে ফেলে। আর বুঝেই থামে না। তার পুরোপুরি যত্ন করে।

আমরণ প্রেমতৃষ্ণা পর্ব ২৭

বাইরের কেউ এসে যদি এগুলো দেখতো তবে নির্ঘাত বউ পাগলের ট্যাগ লাগিয়ে দিতে প্রার্থর গায়ে।
প্রার্থ একবার পুষ্পকে রেখে যেতে চাইছিলো না কিন্তু বন্ধুর এমন সময় সে ঘরে বসে থাকতে পারবে না কোন মতেই। তাই ওদের নামিয়ে রেখেই আবার ছুটেছে হসপিটালের উদ্দেশ্যে। মোহ’র বাবা মাকে ফোন করে জানানোর পর তারাও এসেছে বিকেলের দিকে। তাদের দেখে মনে হয়নি তারা হৃদয়ের প্রতি খুশি বা মেনে নিবে তাকে। উল্টো হাবভাব এমন যেন হৃদয় ইচ্ছে করেই তার মেয়ের এক্সিডেন্ট করিয়েছে। এ নিয়ে আবার ঝামেলা হওয়ার আগে সব মিটমাট করতে হবে। এর আগে আর অবসর নেই প্রার্থর।

আমরণ প্রেমতৃষ্ণা পর্ব ২৯