আমার হায়াতি পর্ব ৩১
Nahar Adrita
চৌধুরী বাড়িতে সকাল সকালই জমে উঠেছে আসিফের হলুদের আয়োজন। বিয়েটা ছোট পরিসরে হলেও, শুরু থেকেই প্রেস ও মিডিয়ার ক্যামেরার ফ্ল্যাশে ভরে উঠেছে আঙিনা।
হায়াত, নুপুর, মিনহাজা, রিয়া আর আরাবিরা মিলে হাসিঠাট্টার মধ্যে হাতে মেহেদি পরছে।
ওদিকে রাজ আর আদিব ব্যস্ত আসিফকে গোসল করাচ্ছে। আসিব ফাজলামো স্বরে আদিবকে বললো,
– ভাইয়া আমাকে পরিষ্কার করে দে ভালো মতো,কালকে বাসর করতে হবে।
রাজ বাকা হাসলো,
– কেনো ভাই,বিয়ে না হলে কি আর পরিষ্কার হতে না কখনো।
আদিব হো হো করে হেসে বললো,
– হাহ আমি সব সময় ফ্রেশ থাকি, যাতে আমার বউ কোনো অভিযোগ করতে না পারে।
আমার বউ কথাটা শুনে খানিকটা বিব্রত হলো রাজ। রাগে মাথায় যেন সপ্তম আসমান ভেঙে পরলো। তবুও নিজের রাগকে আড়াল করে চুপচাপ হাসি ঠাট্টায় নিজেকে মাতিয়ে রাখলো।
ড্রইংরুমে বসে আদিবের মা, চাচী আর ফুপুরা যত্ন করে হলুদ বাটছেন। আর বাড়ির কর্তারা অবসর ভঙ্গিতে চা চুমুক দিয়ে সবকিছু উপভোগ করছেন।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
হায়াতরা মিলে ঠিক করেছে সবাই আজ লাল টুকটুকে গায়ে হলুদের শাড়িতে সাজবে, আর ছেলেরা সাদা পাঞ্জাবি পরবে । অনলাইনে অর্ডার করা শাড়িগুলো একে একে হায়াত সবার হাতে তুলে দিলো। ঠিক তখনই আদিব আর রাজ নিচে নেমে এলো।
হায়াতের পাশে এসে বসতেই আদিব দুষ্টুমি করে তাকে কোলে তুলে নিলো। চারপাশে থাকা সবাই হেসে উঠলো, আর হায়াত লজ্জায় সরে যেতে চাইলো। কিন্তু আদিব শক্ত করে ধরে রাখলো হায়াতকে।
ওদিকে রাজের চোখে হঠাৎ অদ্ভুত দৃষ্টি ভেসে উঠলো। মনে মনে বললো,
– আজ রাতেই তোর সুখের সংসার শেষ করবো আমি সাদাদ। হায়াতকে নিয়েই আমি শুরু করবো আমার চাল। তোর এতো টাকা সম্পত্তি কই আমার তো কিছু নেই, আমি আজ রাতেই হায়াতকে নিজের করে নিবো। তোর বউয়ের সর্বনাশ করবো আমি, আর তুই কিছু জানতেও পারবি না।
দুপুর একটা…….
সকলকে শাড়ি বুঝিয়ে দেওয়ার পর আরাবি আর হায়াতরা বসে ঠিক করলো, একটু পরেই তারা কনের বাড়ি যাবে। পরিবারের অন্যরাও এতে সম্মতি জানালো। ঠিক হলো,আসিফের মামাতো ভাই তৌসিফ গাড়ি নিয়ে মেয়েদের পৌঁছে দেবে মানিকগঞ্জে।
আদিব একটু চিন্তিত গলায় বললো,
– আম্মু ওদের কি একা….. মানে তৌসিফ কি পারবে নাকি আমি যাবো।
সিফাত একটু হেসে বললো,
– ভাইয়া তুই কি এক বেলার জন্যও বউকে ছাড়া থাকতে পারিস না।
হাসি ঠাট্টার পর্ব চুকিয়ে, এরপর আরাবি ও বাকিরা গোসল করতে গেলো। যেহেতু কনের বাড়ি মানিকগঞ্জ, তাই সাভার থেকে রওনা হলে কিছুটা সময় লাগবেই। সেজন্য সবাই ঠিক করলো দুপুরের মধ্যেই রওনা দেওয়া হবে, যাতে সন্ধ্যার আগেই পৌঁছে কনের হলুদ সন্ধ্যায় যাওয়া যায়।
হায়াত সিড়ি বেয়ে ধীরে ধীরে ওপরে উঠে গেলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই আদিবও নিঃশব্দে তার পেছন পেছন রওনা হলো।
রুমে এসে হায়াত হাতে থাকা কাঁচা ফুলের গহনা ড্রেসিং টেবিলের ওপর আলতো করে রাখলো। ঠিক তখনই পেছন থেকে দরজা খোলার মৃদু শব্দ কানে এলো।
চমকে উঠে ঘাড় ফিরাতেই চোখে পড়লো আদিবকে। হায়াত ছোট ছোট চোখ করে কটমট করে তাকালো তার দিকে।
আদিব ঠোঁট কামড়ে এক চিলতে দুষ্টু হাসি ফুটিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো হায়াতের দিকে…হায়াতের কাধের উপরে দুই হাত রেখে, নেশালো চোখে তাকালো। হায়াত চোখ নিচে নামিয়ে ফেললো। আদিব একটু ঝুকে লাজুকপাখির থুতনিতে হাত রেখে মৃদু আওয়াজে বললো,
– আজকে ভাবছি, আ…..হ্যা আমার লাজুক পাখিকে নিয়ে গোসল করবো। অনেকদিন হলো আমরা এক সাথে গোসল করি না, তাইনা জান ?
– সরুন তো, অযথা বাজে বকা বন্ধ করুন। সব সময় লুচু গিরি করতে আসেন।
– বউ এটা তুমি বলতে পারলে, তুমি ছাড়া আর কে আছে আমার বলো। কার সাথে আমি লুচু গিরি করবো। আর হ্যাঁ এটাকে লুচু গিরি বলে না।
হায়াত আদিবের বুকে মাথা রেখে বললো,
– তাহলে কি বলে শুনি ?
আদিব হায়াতের গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো। জুড়ে জুড়ে ঠোঁট দিয়ে চেপে ধরলো। আস্তে আস্তে নিচের দিকে মুখ ডুবিয়ে দিলো। হায়াত আদিবের চুল খামচে ধরলো,শার্টের বোতাম খুলতে লাগলো । আদিব মুচকি হেসে বোতাম খুলতে সাহায্য করলো।এরপর হায়াত আদিবের লোম দিয়ে ঢাকা বুকে অসংখ্য চুমু খেতে লাগলো। আদির হায়াতের ওষ্ঠে নিজের ওষ্ঠে পুড়ে নিল। প্রায় মিনিট বিশেক ধরে ওষ্ঠের সাধ নিতে লাগলো।
হায়াতের গলায় থেকে ওড়না টেনে নিচে ফেলে দিলো। কোলে তুলে নিয়ে ডিভানের ওপর শুইয়ে দিল। হায়াতও আদিবের সাথে সমান তালে তাল মিলাচ্ছে।আবারও দশ মিনিট ওষ্ঠের সাধ নিতে লাগলো। একটুপর আদিব হায়াতের ওষ্ঠে উত্তজনা পূর্বক কামড় বসিয়ে দিলো। সঙ্গে সঙ্গে হায়াতের ওষ্ঠ থেকে রক্ত বের হতে লাগলো। ব্যথায় অস্পষ্ট স্বরে ” আহহহহহ ” শব্দ করে ওঠলো। আদিব সাথে সাথে ওষ্ঠ ছেড়ে দিলো। সেখান থেকে দুই ফোটা রক্ত গড়িয়ে পরলো।
আদিব ডিভানের পাশে থাকা দই আর মিষ্টি প্লেট থেকে কিছুটা দই হায়াতের ওষ্ঠে লাগিয়ে আস্তে আস্তে চুমু খেতে লাগলো। হায়াত চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস ফুঁকছে।
এদিকে আরাবির ফুলের টিকলিটা পরতে গিয়ে ছিঁড়ে গিয়েছে। তাই হায়াতের রুমের দিকে আসলো। দরজা খুলা আছে বলে নক না করেই ভেতরে প্রবেশ করলো। কিন্তু চোখের সামনে দুজনকে রোমাঞ্চ করতে দেখে হা হয়ে গেলো। দুজনই সমান তালে রেসপন্স করছে। অন্যদিকে আরাবি যে রুমে এসে দাড়িয়ে আছে সে দিকে তাদের কোনো খেয়াল নেই।
আরাবির পা যেন পাথর হয়ে গিয়েছে। চোখ খুলে আস্তে করে রুম থেকে বের হয়ে গেল।দরজাটা হালকা করে চাপিয়ে দিয়ে পেছন ঘুরতেই সামনে দেখলো আসিফ দাড়িয়ে আছে। আসিফ হালকা গম্ভীর স্বরে বললো,
– ভাইয়া কি রুমে আছে ?
আরাবি আনমনেই বললো,
– হ্যা রুমেই।
আরাবির কথা শেষ হতেই আসিফ দরজা ধাক্কা দিতে যাবে তখন আরাবি ব্যপারটা বুঝতে পেরে দরজার সামনে এসে দাড়ালো।
– না না ভেতরে কেউ নেই চলুন এখান থেকে ভাইয়া।
আসিফ খানিকটা কপাল কুঁচকে আরাবির ব্যাপার সেপার বুঝার চেষ্টা করছে,
– তুমি আমাকে আটকাচ্ছো কেন, সরো সামনে থেকে।
– না না প্লিজ ভেতরে যাবেন না। নাহলে আমি যা দেখেছি আপনিও তা দেখে ফেলবেন।
আসিফ খানিকটা সিরিয়াস ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করলো,
– ভাইয়া আর হায়াত কি ঝগড়া করছে ? সামথিং রং আরু …?
– হ্যা হ্যা রং চা দুধ চা সবই হবে, ভেতরে যাওয়া যাবে না এখন।
– মানে ? কি সব উল্টা পাল্টা বকছো তুমি।
আরাবি চোখ বন্ধ করে দরজার সামনে থেকে সরে গিয়ে বললো,
– হায়াত আর ভাইয়া এখন রোমাঞ্চ করছে, চলুন এখান থেকে
এই বলে আরাবি ভো দৌড় মারলো। আসিফ হা হয়ে গিয়েছে আারাবির কথায়। ব্যাপারটা মাথায় ঢুকতেই মনে মনে আসতাগফিরুল্লাহ বলতে বলতে নিজের রুমে চলে গেলো।
হায়াতের পরনের জামাটা খুলে ফেললো আদিব। বক্ষস্থল জুড়ে হাত দিয়ে চাপতে লাগলো। হায়াত একটু একটু ব্যথায় চোখ মুখ কুঁচকে ফেললো। এরপর পরম আবেশে সুধা পান করতে লাগলো। পাশে থাকা খানিকটা দই হায়াতের শরীরে ঢেলে দিলো, আর আদিব তা রসনা দিয়ে লেহন করতে লাগলো। হায়াত প্রত্যেক নিশ্বাসে কেঁপে কেঁপে ওঠতে লাগলো। আদিব জুড়ে জুড়ে উদরে কামড় দিতে লাগলো।
হায়াত আদিবের দুষ্টুমি বুঝতে পেরে পিঠের ওপর জুড়ে জুড়ে কিল ঘুষি দিতে লাগলো। হায়াতের দুই হাত বেল্ট দিয়ে বেধে নিলো। হায়াত অসহায় মুখ করে আদিবের দিকে তাকালো।
– এখন না প্লিজ দেরি হয়ে যাবে।
– হুসস, আমি আছি তো। আমি পৌঁছে দিয়ে আসবো।
আর কিছু বলতে না দিয়ে হায়াতের ওষ্ঠে নিজের ওষ্ঠ পুড়ে দিলো। হায়াত উমমম উমমম করতে করতে বললো,
– আব্ উমমম আমি সবার সাথে যাবো।
আদিব ওষ্ঠ ছেড়ে দিয়ে আবারো উদরের থেকে চার আঙ্গুল নিচে মুখ ডুবিয়ে বললো,
– আচ্ছা যাবে,তবে এখন আর কোনো ডিস্টার্ব করবে না, আমাকে আমার কাজ করতে দাও।
হায়াত যেন কথা বলতে ভুলে গেলো আদিব জুড়ে জুড়ে জিহ্বা দিয়ে রসনা করছে। হায়াত আদিবের চুলে হাত বুলাতে লাগলো। একটুপর হায়াতকে আদিব পরম আবেশে বিভিন্ন প্রসেস করে তা খেতে লাগলো। হায়াত নিমিষেই কেঁপে ওঠে বসে পরলো।
আদিব বাকা হাসলো। হায়াত এখন খেয়াল করলো দরজা বন্ধ করা হয় নি। আদিবকে ইশারা করতেই, আদিব গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো।
হায়াত একটা কালো মিষ্টি নিজের মুখে পুড়ে নিল, আদিব এসে হায়াতের মুখ থেকে নিয়ে কিস করতে করতে খেতে লাগলো। একটু মিষ্টি নিয়ে হায়াতের মুখে পুড়ে দিলো।
হায়াত ফাজলামো স্বরে বললো,
– স্টোবেরি দিয়ে খেলে আরো ভালো লাগতো।
– তোমার ইচ্ছা আমি কালই পূরণ করবো জান,এখন মিষ্টি দিয়ে খাও,সোনা।
পাঁচ মিনিট পর হায়াতকে কোলে তুলে নিল। এরপর ওয়াশরুমে গিয়ে ঝর্ণা ছেড়ে দিলো। হায়াতকে জড়িয়ে ধরে জুড়ে জুড়ে চুম্বন করতে লাগলো। হায়াত উন্মাদনায় সারা শরীরে হাত বুলাতে লাগলো। আদিব হায়াতের দিকে কোমল চোখে তাকালো,
– আজকে দিই,ঔষধ খাবে না তো …!!
– না আর কিছুদিন পর।
– ওকে,যা বলবেন মেডাম,আপনারই সব।
আদিব আবারো কোলে তুলে নিল, আর কানে ফিসফিস করে বললো,
-রেডি তো আমার লোড সামলানোর জন্য।
– আব্,,,,,,কিন্তু একটু ধীরে ধীরে।
হায়াত যেন ব্যথায় সুখে দুইভাবেই পুরো সুখের সাগরে ভেসে যাচ্ছে। আদিব হাস্কি স্বরে বললো, জান শান্তি পাচ্ছো তো।
এভাবেই পুরো দুই ঘন্টা দুটি হৃদয় সম্পুর্ন পরিপূরক হয়ে গেলো। আত্নার অশেষ মিলনে প্রশান্তি ভরা চোখে দুজন দুজনের গায়ে হেলান দিয়ে ওয়াশরুমের ফ্লোরে বসে আছে। হায়াত বালতি থেকে একটু পানি নিয়ে শরীরে ঢেলে দিলো।
আদিব যেনো হায়াতের মোহে ডুবে গেলো। তবে হায়াত আদিবকে সুযোগ না দিয়ে শরীরে তোয়ালে পেঁচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে গেলো। আদিব কপাল স্লাইড করে বললো,
– এই লাজুকপাখি কোথায় যাচ্ছো, এখনে আরেক রাউন্ড বাকি আছে। উফ বউ চলে যাও কেনো।
– চুপ, আমার শরীর জুড়ে ব্যথা হচ্ছে। আর না রাতে আবার, এখন পারবো না।
– রাতে দিবে তো ?
– জানি না।
আদিব কিছু না বলে হায়াতকে আলমারির সামনে থেকে কোলে তুলে নিয়ে বারান্দার সোফায় শুইয়ে দিলো। এরপর আবারও আত্নার আকাঙ্ক্ষা ইচ্ছাকে পূরণ করতে মেতে ওঠলো অসিম সাগরের ঢেউয়ে।
হায়াত একটু পরই ব্যথায় কান্না করতে লাগলো,
– আদির বাচ্চাআআআআআআআআআআআআআআআআ,আমার কোমড় গেলো রেএএএএএএএ।
– বউ আস্তেই তো……..
– চুপ,এ্যাাা আমার কোমড়, উফফ।
– বউ এতো উফ উফ করো না প্লিজ, নাহলে তোমার আবার গোসল করতে হবে।
– চোখের সামনে থেকে সরুন আপনি।
সন্ধ্যা ছয়টা। হায়াতরা মাত্রই কনের বাড়ি থেকে ফিরে এসেছে। এদিকে চৌধুরী বাড়ির ছাদে আসিফের হলুদের স্টেজে আলো-ঝলমলে সাজসজ্জা। গায়ে হলুদের গান ভেসে আসছে স্পিকারে, চারদিকে রঙিন বাতি ও ফুলের ছড়াছড়ি।
আসিফকে ঘিরে আদিবরা ইতিমধ্যেই পাগলাটে নাচ শুরু করেছে। একের পর এক মজার স্টেপে তারা সবাইকে মাতিয়ে তুলছে। হায়াতরা খিলখিলিয়ে হাসছে, তালি দিয়ে উচ্ছ্বাস বাড়িয়ে দিচ্ছে। পুরো ছাদটা যেন উৎসবের আনন্দে কেঁপে উঠছে।
কিন্তু সেই আনন্দমুখর দৃশ্যের আড়ালে রাজের চোখে অন্যরকম ঝড়। একপাশে নাচ থামিয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে,
– কীভাবে হায়াতকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো যায় ? এতো মানুষের মধ্যে আজ যদি না পারি, কালকের দিন তো হাতের মুঠোয় আছেই। যেভাবেই হোক, একটা না একটা ফাঁদ আমি ফেলবই…
এরপর হায়াতরা সকলে মিলে নাচতে শুরু করলো। হায়াতকে এভাবে নাচতে দেখে আদিব উন্মাদ হয়ে গেলো। সকল মানুষের মধ্যে থেকে হায়াতকে নিয়ে স্টেজের পেছনে গেলো। হায়াত বিরক্তি মাখা মুখ করে আদিবের দিকে তাকালো,
– কি হয়েছে এভাবে নিয়ে আসলেন কেনো।
আদিব কিছু না বলেই হায়াতের উদর থেকে শাড়িটা একটু সরিয়ে জুড়ে জুড়ে চুমু খেতে লাগলো । পেছনে তেমন একটা আলো নেই বলে হায়াত আর আদিবকে থামালো না।
মিনিট পাঁচেক পর ওষ্ঠে ওষ্ঠ পুড়ে নিলো। হায়াতও সমান তালে রেসপন্স করতে লাগলো। একটু পরই ওইদিক থেকে নুপুর ভাবি ভাবি বলে ডাকতে লাগলো। হায়াত আদিবকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে শাড়ি ঠিক করতে করতে স্টেজে চলে গেলো।
আকষ্মিক ধাক্কায় আদিব সরে গিয়েছে, নাহলে এতো ছোট ধাক্কায় আদিব তার লাজুকপাখিকে ছাড়ার মানুষ নও। এদিকে দূরে থেকে সবটায় লক্ষ করছিলো রাজ। রাগে মাথায় আগুন জ্বলছে তার।
আজকে বাড়ির সকল মেয়েরা পরেছে লাল শাড়ি, আর ছেলেরা সাদা পাঞ্জাবি। সকলেই দেখতেই মোহনীয় লাগছে। মিসেস অরোরা হায়াতকে সিঁড়ির সাইডে নিয়ে আসলেন,হায়াত একটু ইনোসেন্ট মুখ করে বললো,
– কি হয়েছে আম্মু, কিছু বলবে স্যরি স্যরি কিছু বলবেন।
হায়াতের কপালে চুপু দিলেন মিসের অরোরা , তারপর বললেন,,
– হয়েছে তুমি করেই বলবে এর পর থেকে,তোমার শাড়ির কুঁচি গুলো খুলে গিয়েছে জলদি ঠিক করে নাও, নাহলে আমি করে দিচ্ছি।
এই বলে মিসেস অরোরা হায়াতের শাড়িটা ঠিক করে দিলো। শেষ করে হায়াতের দিকে তাকিয়ে বললো,
– রাজের থেকে দূরে থাকবে মনে যেনো থাকে।
– হু আম্মু।
– হ্যা যাও এখন,আর এখন মেহমানরা আসবে একটুপর নিচে আসবে, যতই হোক বাড়ির বড় বউ তুমি, তাই টুকটাক কাজ করবে আমাদের সাথে।
– আচ্ছা আম্মু কোনো চিন্তাই করবেন না।
”
”
একে একে কনের বাড়ি থেকে অতিথিরা আসতে শুরু করলো। কয়েকজন ছাদে উঠতেই হাসি-আনন্দে জমে উঠলো আসিফের হলুদের আয়োজন।
এমন সময় এক ঘটক মহিলা পান চিবোতে চিবোতে হায়াতের পাশে এসে বসলো। চোখ বুলিয়ে বললো,
– মা, তোমার বাড়ি কোন দিকে ?
হায়াত ভদ্রভাবে উত্তর দিলো,
– জ্বি আন্টি, ধামরাইয়ের ওই দিকেই…..
কথা শেষ করার আগেই ঘটক হেসে উঠলো,
– মা, তুমি এনো পড়বার আইছো ? তুমি দেখতে মেলা সুন্দর তো! তোমার জন্য একটা ভালো পাত্র আছে। তুমি রাজি হলে তোমার আব্বা-আম্মার সাথে আলাপ করি।
হায়াত যেনো মহিলার কথা শুনে তাজ্জব বনে চলে গেলো, মনে মনে বললো,
– হায়রে, কি দিনকাল এলো ! আমি বিবাহিত, অথচ আমাকেই আবার বিয়ে দিতে চাইছে ! আচ্ছা আমাকে দেখতে কি বিবাহিতদের মতো লাগে না।
ওদিকে আদিব দূর থেকে হায়াতের মুখ দেখে এগিয়ে এলো। মুচকি হেসে বললো,
– কি আন্টি, আপনিই সেই ঘটক না ?
ঘটক পানের পিক ফেলে গম্ভীরভাবে বললো,
– হ বাজান, আমিই আসিফের বিয়ের ঘটক। তা তোমার বউ কই বাজান ?
আদিব ভ্রু কুঁচকে হায়াতের দিকে তাকালো,
– আমার বউয়ের পাশেই বসে আছেন, আর সামনেই আমাকে জিজ্ঞেস করছেন,আমার বউ কোথায় ?
মহিলা হায়াতের দিকে তাকিয়ে বিস্ময়ে বললো,
– তুমি সত্যিই এই ছ্যামরার বউ ?
হায়াত হি হি করে হেসে মাথা নাড়লো। মহিলা চুপচাপ উঠে চলে গেলেন। আর আদিব আর হায়াত হেসে লুটোপুটি খেতে লাগলো।
তখনই আরাবি এগিয়ে এসে কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলো কী হলো। আদিব সব খুলে বলতেই সেও হাসিতে যোগ দিলো।
মেহমানরা একে একে খাওয়া-দাওয়া সেরে এবার আসিফকে হলুদ ছোঁয়াতে শুরু করলো। চারপাশে হাসি-ঠাট্টার রোল পড়ে গেলো।
এদিকে আরাবি ক্যামেরা হাতে কিছু ছবি তুলে দিলো আদিব আর হায়াতকে। দু’জনেই মজার ছলে কয়েকটা পোজ দিলো।
অল্প কিছুক্ষণ পর আরাবি স্টেজে উঠলো আসিফকে হলুদ ছোঁয়াতে। কিন্তু আসিফ বারবার মুখ সরিয়ে নিচ্ছিলো। মজার ছলে এড়িয়ে যেতে চাইছিলো, কিন্তু তাতে আরাবির চোখ ভিজে আসছিলো,মনে হচ্ছিলো এবারই হয়তো কান্না করে দেবে সে।
ঠিক তখনই রাজ এগিয়ে এসে আসিফকে শক্ত করে ধরে ফেললো। আরাবি সুযোগ বুঝে আসিফের গালে হলুদ ছোঁয়াল, আর সেই সঙ্গে ঠোঁটে খেলে গেলো এক বিজয়ী হাসি। চারপাশে হাসাহাসি আর হাততালিতে মুহূর্তটা প্রাণবন্ত হয়ে উঠলো।
এরপর আদিব ও হায়াতও এগিয়ে গিয়ে আসিফকে স্নেহভরে হলুদ মাখিয়ে দিলো। উৎসবের আনন্দে ভরে উঠলো পুরো ছাদ।
হায়াত আসিফকে ফল খাইয়ে দিচ্ছিলো আর সকলে সেই দিকেই তাকিয়ে ছিলো, আদিব পাশে বসে টেবিলে থেকে একটু হলুদ নিয়ে শাড়ি ভেদ করে উদরে ছুঁইয়ে দিলো। হায়াত বিষয়টা আন্দাজ করে লজ্জায় হেসে ফেললো।
হায়াত আর মিসেস অরোরার সাথে আরাবিও একসাথে সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছিলো। ঠিক তখনই আদিবের চাচী, সোফিয়া চৌধুরী ( নাম ভুলে গেছি) এসে বললেন,
– হায়াত, একটু চা দিয়ে আসো তোমার চাচ্চুকে। আমি ওপরে থাকা সব জিনিস নিচে নামাচ্ছি।
হায়াত মাথা নাড়লো, তবে সে তখন বেঁচে যাওয়া খাবার আত্মীয়দের দেওয়ার জন্য বক্সে গোছাচ্ছিলো। তাই আরাবি মিসেস অরোরাকে বলেই নিজেই ট্রে হাতে নিলো।
সিড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার সময় হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে প্রায় নিচে পড়ে যাচ্ছিলো সে। ঠিক তখনই একজোড়া শক্ত হাত তাকে ধরে ফেললো। কিন্তু সেই ধাক্কায় ট্রের গরম চা ছলকে গিয়ে আরাবির পায়ে পড়ে গেলো।
ব্যথায় আরাবি চিৎকার করে উঠলো,
– আল্লাহ গো ! আমার পা….
আসিফ সঙ্গে সঙ্গেই আরুকে আঁকড়ে ধরে নিজের রুমে নিয়ে এলো। আরাবির চোখ তখনো ব্যথায় শক্ত করে বন্ধ করে রেখেছে। । আসিফ তাড়াহুড়ো করে ওয়াশরুমে গিয়ে মগে পানি ভরে এনে তার পা ডুবিয়ে দিলো ঠান্ডা পানিতে।
কিছুক্ষণ পর আরাবি চোখ মেলে তাকাতেই সামনে আসিফকে দেখতে পেলো। সে একটু সরতে চাইছিলো, কিন্তু তার আগেই আসিফ কঠিন গলায় ধমক দিলো,
– চুপ করে বসে থাকো। একটুও নড়াচড়া করবে না মেয়ে।
তারপর নিজেই মেডিসিন বক্স থেকে মল এনে ধীরে ধীরে আরাবির পায়ে লাগিয়ে দিলো। ঘরটিতে হঠাৎ এক অদ্ভুত নীরবতা নেমে এলো—যেন সবার অগোচরে এখানে অন্যরকম এক অধ্যায় শুরু হয়ে গেলো।
আত্মীয়-স্বজন ভরে যাওয়ায় বাড়ির একটা রুম ফাঁকা নেই। ঠিক হলো,মেয়েরা একসাথে হায়াতদের রুমেই ঘুমাবে, আর ছেলেরা ছাদে।
তা শুনেই আদিব ভুরু কুঁচকে অসহায় ভঙ্গিতে হায়াতের দিকে তাকিয়ে বললো,
– বউ, চলো না আমরা একটা রিসোর্ট বুক করি। কাল সকালে এসে পড়বো।
হায়াত চারপাশে তাকাতেই দেখলো, সবাই মুখ চেপে মিটি মিটি হাসছে। সে কপাল কুঁচকে উত্তর দিলো,
– কেনো ? আমি তো এখানেই ঘুমাবো। চাইলে আপনি আসিফ ভাইয়াদের নিয়ে যেতে পারেন।
মিনহাজা মজা করে বললো,
– ভাবি, লাইট অফ করো, ঘুমাতে হবে তো।
আদিব এবার আরও অসহায় মুখ করে হায়াতের কাছে এগিয়ে গেলো,
– আমার বউটাকে আমাকে একটু দাও না… বউ, আসো প্লিজ!
তার কথা শুনে সবাই হেসে গড়িয়ে পড়লো। হায়াত লজ্জায় আর রাগে কী করবে বুঝে উঠতে পারছিলো না।
আদিব হায়াতকে দরজার পাশে দাড়িয়েই কয়েকটা ফ্লাইং কিস করলো।
– বউ চলো যাই ..! নাহলে তুমি চাইলে আমরা বেলকনিতে গিয়েও ঘুমাতে পারি, ক্লিওকে নিয়ে।
হায়াত রাগে ফুসতে ফুঁসতে বললো,
আমার হায়াতি পর্ব ৩০
– আপনি যাবেন নাকি আপনাকে ধাক্কা দিয়ে বের করবো সবাই।
বেচারা আদিব অসহায় মুখ করে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। মনে মনে বলতে থাকলো,
– ধুর কতো আসা করেছিলাম আজ রাতে আমাদের বাচ্চার প্রসেসিং শুরু করবো, শালার লাইফ, ধুর নিজের বউটাকে একটু শান্তিতে আদর করতে পারি না।
