আযদাহা সিজন ২ পর্ব ৪৮
সাবিলা সাবি
এক মাস কেটে গেছে।
ফিওনার পেটে এখন তিন মাসের শিশু।
জ্যাসপার প্রতিটি মুহূর্তে ফিওনার পাশে থেকেছে। তার যত্নে কোনো ত্রুটি রাখছে না। ফিওনার যখন যা খেতে ইচ্ছে করে—মাটির নিচের ফল হোক বা এলড্র রাজ্যের বিশেষ খাবার—জ্যাসপার তা-ই বানিয়ে হাজির করে, যত রাতই হোক না কেনো।
তবে আজ এলড্র রাজ্য কিছুটা ফাঁকা। এথিরিয়ন, সিলভা, থারিনিয়াস আর আলবিরা—চারজনই আজ পৃথিবীতে আছে।
কারণ আজ লিউ ঝান আর অ্যাকুয়ারার বিয়ে।
ফিওনা নিজের শারীরিক অবস্থার কারণে ড্রাগন রূপ ধারণ করে পৃথিবীতে যেতে পারেনি, আর সেই কারণেই জ্যাসপারও থেকে গেছে ওর পাশে।
বেইজিং এর লিউ ম্যানশনে আজকের দিনটা উৎসবের। চারদিক আলোয় ভরা। লাল–সোনালি ফুলে ফুলে সজ্জিত বাগানজুড়ে অতিথিদের ভিড়। লিউ ঝান আর অ্যাকুয়ারার বিয়ে আজ।
লিউ ঝান—চীনের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক, যে কিছুদিন আগেই পেয়েছেন “বেস্ট ডক্টর অফ চায়না” অ্যাওয়ার্ড। স্বাভাবিকভাবেই, তার বিয়েতে সাংবাদিক, মিডিয়া ও প্রেস কনফারেন্সের ব্যস্ততা থাকবে তুঙ্গে।
কিন্তু আজকের বিয়ের সবচেয়ে আলোচনার বিষয় হলো কনে—অ্যাকুয়ারা।
তার রূপ যেন বাস্তব কোনো রূপকথার চরিত্র থেকে উঠে এসেছে। আকাশী রঙের ঢেউখেলা চুল, দীপ্ত নীল চোখ, আর হাতে তৈরি হালকা রূপালী কাজের ব্রাইডাল গাউন। তার হাঁটায়, হাসিতে, চোখের চাহনিতে যেন অন্য কোনো জগৎ লুকানো রয়েছে।
মিডিয়াতে একটাই শিরোনাম ঘুরছে: “চীনের ডক্টরের বিয়ে স্বপ্নের রাজকুমারী সাথে, অপরিচিত সৌন্দর্য… কে এই অ্যাকুয়ারা?”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
লিউ ঝান আজ বর হিসেবে কালো রেশমি স্যুটেষ পড়েছে—চুপচাপ, গম্ভীর, আর গর্বিত মুখাবয়ব। তার পাশে তার মা-বাবা, আত্মীয়স্বজন—সবার মুখেই আনন্দ আর বিস্ময়ের ছাপ।
আর অন্য পাশে… অ্যাকুয়ারার পরিবার পক্ষ থেকে এসেছে চারজন বিশেষ প্রতিনিধি—এথিরিয়ন, থারিনিয়াস ,সিলভা আর আলবিরা।
তাদের পরিচয় শুধুই অ্যাকুয়ারার “কাজিন”, কিন্তু উপস্থিত সকলেই টের পাচ্ছে—এই চারজনেঈ যেন এক রহস্যময় জগৎ থেকে এসেছে তাদের রুপ অন্য সবার থেকেই আলাদা।
তারা নিঃশব্দে, অথচ প্রভাবশালী উপস্থিতিতে পুরো জায়গাটা অন্যরকম এক পরিমণ্ডলে পরিণত করেছে।
আজ বেইজিং যেন এলড্রের ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে। লিউ ম্যানশনের আঙিনা আজ একটুখানি স্বর্গ। ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে ছাদ, লণ্ঠনের নরম আলোয় দিগন্ত রাঙা। রেশমের জোড়া চায়নিজ লাল-সোনালি ব্যানারে লেখা—
“Wedding Moments: Liu Zhan and Aquara”
সকাল দশটা প্রায়—দুজনেই সই করলো সরকারি কাগজে।
লিউ ঝানের হাতে ধরা অ্যাকুয়ারার কোমল আঙুল, আর দুজনের চোখে চোখ রাখা।
একজন চীনা সরকার অনুমোদিত রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা তাঁদের সামনে দাঁড়িয়ে, গম্ভীর কণ্ঠে ঘোষণা করলেন:
“আপনারা এখন আইনের দৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রী।”
অ্যাকুয়ারার চোখে পানি এসে গেল। নতুন একটি পৃথিবীর শুরু, এক অন্যরকম স্বপ্নের বাস্তব রূপ।
তারপর এল সেই হৃদয় কাঁপানো মুহূর্ত।
লাল মখমলের বাক্স খুলে, লিউ ঝান হাঁটু গেড়ে বসল।
বক্সের ভিতরে ছিল দুটো সাদা সোনা আর স্যাফায়ার বসানো আংটি।
– “Will you be mine… forever?” — লিউ ঝান জিজ্ঞেস করলো।
অ্যাকুয়ারা হেসে মাথা ঝাঁকালো।তারপর ধীরে ধীরে আংটিটা তুলে পরিয়ে দিল লিউ ঝানের অনামিকায়। আর লিউ ঝান নিজে পরিয়ে দিলো অ্যাকুয়ারার আঙুলে।
চারদিকে হাততালি,হাসির গুঞ্জন ভেসে এলো।
বিয়ের পর, নবদম্পতি দাঁড়ালো ম্যানশনের পেছনের বাগানে, চেরি ব্লসম গাছের ছায়ায়।
অ্যাকুয়ারার রুপালি ব্রাইডাল গাউনে, আকাশী চুলে, হালকা রক্তিম লিপস্টিকে ঠিক যেন রূপকথার নায়িকা মনে হচ্ছে তাকে আর – লিউ ঝান স্লিম কাট স্যুটে, চশমার ফ্রেমে ঠাণ্ডা আত্মবিশ্বাসী হাসিতে অনেকটাই সুদর্শন দেখাচ্ছে আজকে।
একটার পর একটা শট—বরের কাঁধে কনের মাথা, অ্যাকুয়ারা চোখ বুজে আছে, লিউ ঝান তার কপালে চুমু দিচ্ছে,পিছন থেকে হাত জড়িয়ে দুজনের হাসিমুখ নিয়ে সুট করলো।
সবার মাঝে থারিনিয়াস আর এথিরিয়ন একদম সামনে—
তারা জানে এই বিয়েটা শুধু দুই জাতের মিল নয়, দুই গ্রহের বন্ধনও।
বিকালে শুরু হলো চা অনুষ্ঠানের রীতি। এটা চীনের বিয়ের একটি ধর্মীয় রীতি।
নবদম্পতি লাল সিল্কের পোশাকপ পরিহিত— অ্যাকুয়ারা পরেছে ঐতিহ্যবাহী কুআ। লিউ ঝান পরেছে লাল সোনার ডিজাইনের চায়নিজ চংসাম
তারা একে একে লিউ ঝানের মা-বাবা ও বয়োজ্যেষ্ঠদের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে চা পরিবেশন করলো।
“পিতা-মাতা, আপনারা আশীর্বাদ দিন।”
লিউ ঝানের মা চোখ মুছলেন। চায়ের কাপ নিয়ে আশীর্বাদ করলেন— “তোমরা সুখী হও, দীর্ঘজীবী হও।”
আনুষ্ঠানিকতা শেষে অতিথিদের পরিবেশন করা হলো ড্রাগন ফল কেক, লিচি জুস ও পারিবারিক হান মুন কুকিজ।
পরের দিন…….
বেইজিংয়ের বিলাসবহুল “ইম্পেরিয়াল প্যাভিলিয়ন”
সময় তখন রাত ছয়টা পঁয়তাল্লিশ। একটি রাত্রি—যেখানে আলো আর ছায়া একসঙ্গে প্রেমের গল্প লিখে যাচ্ছিলো। চারদিকে ফুলের সুবাস, সুর আর শতশত ক্যামেরার ফ্ল্যাশ—এমন রাতে কেবল দুজনের নাম উচ্চারিত হচ্ছিল বারবার—লিউ ঝান এবং অ্যাকুয়ারা।
ঘড়ির কাঁটা যখন সাত ছুঁলো, ভেন্যুর বিশাল সোনালী গেট খুলে গেল ধীরে।
প্রথমে এল অ্যাকুয়ারা— নীলচে ধাতব টোনে শাইনিং স্লিক স্যাটিন গাউন, পেছনে হালকা ট্রেইন, খোলা চুল, গালে হালকা ব্লাশ। তার চোখদুটো এমন উজ্জ্বল—যেন কেউ নীল সমুদ্রকে বন্দী করেছে সেই চোখজোড়ায়।
তারপর প্রবেশ করলো লিউ ঝান— হালকা পিংক স্যুট, হাতে সিলভার রিস্টওয়াচ, আর চোখে সেই শান্ত অথচ সজাগ আত্মবিশ্বাস। আজকের রাতে সে শুধু একজন সুদর্শন ডাক্তার নয়— সে একজন স্বপ্নপূরণকারী।
আকাশে চাঁদ ছিল, কিন্তু হলরুমে আলো জ্বলছিলো ওদের চোখে।লিউ ঝান সোজা হেঁটে এলো, যেন কারও দিকে নয়—শুধু অ্যাকুয়ারার পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে।
অ্যাকুয়ারা দাঁড়িয়ে, নিঃশ্বাস নিতে ভুলে গেছে—তার ডানহাতের আঙুলে হালকা কাঁপন, চোখে একটা তীব্র আকাঙ্ক্ষা— যেন বহুদিন পর একটা হারিয়ে যাওয়া ঘ্রাণ ফিরে এসেছে।
ক্যামেরার ঝলকানিতে কিছু ছিল না,আসল আলো ছিল লিউ ঝানের ঠোঁটে থাকা সেই হালকা হাসিতে।
লাইটের নিচে দাঁড়িয়ে তারা যখন একে অপরের চোখে চোখ রাখলো, পুরো ভেন্যু মুহূর্তের জন্য নিঃশব্দ হয়ে গেল।
হলরুমে বাজতে লাগলো ধীর, আবেগভরা সুর—
“When the Moon Touched the Ocean” গানটা।
লিউ ঝান ধীরে হাত বাড়িয়ে দিলো, অ্যাকুয়ারা হাত রাখলো তার তালুর মধ্যে। তারা ঘুরছে, ধীরে… নিঃশব্দে… একটি পৃথিবীর মতো—যেখানে শব্দ নেই, শুধু অনুভূতির গতি আছে।
সাংবাদিকরা প্রশ্ন করে যাচ্ছে একের পর এক— “এই নারীর চোখ এমন কেন? এই হাসি এত শুদ্ধ কীভাবে?” অ্যাকুয়ারা হেসে উত্তর দিলো না, শুধু একবার লিউ ঝানের কাঁধে মাথা রাখলো। সেটাই হয়ে গেল তাদের উত্তর।
বিদেশি চিকিৎসক, রাষ্ট্রদূত, প্রাক্তন শিক্ষকেরা সবাই উপস্থিত। তারা জানে আজকের রাতে কিছু ইতিহাস লেখা হচ্ছে—একজন মহান সার্জনের বিয়ে নয় কেবল,
এটা হচ্ছে এক রাজ্য আর এক হৃদয়ের সংযুক্তি।
প্রতিটি অতিথিকে উপহার দেওয়া হলো একটি ছোট বাক্স— ভেতরে ছিল নীলজলপাথরে খোদাই করা দুটো নাম: “Liu & Aqua” আর পাশে একটি সাদা পার্চমেন্টে লেখা ছোট্ট বার্তা—
“Thank you for witnessing our light.”
রাতের আকাশে ছোট্ট আতশবাজি জ্বলে উঠলো। নীল-সোনালী রঙে। অ্যাকুয়ারা এক মুহূর্ত চেয়ে দেখলো তার দিকে—চোখে জল, তবু ঠোঁটে সেই অদ্ভুত শান্ত হাসি।
লিউ ঝান তার কানে ফিসফিসিয়ে বললো— “আজ রাতটা শুধু শুরু, অ্যাকু। রিসেপশন শেষ, কিন্তু আমাদের পথচলা হবে মাত্র শুরু হলো।”
এথিরিয়নের নেতৃত্বে কয়েকটা ছোট আকাশ-ড্রাগন ড্রোন দিয়ে আকাশে আঁকা হলো “stay together forever ” সমস্ত অতিথিরা হাততালি দিলো, শিশুরা খুশিতে চেঁচিয়ে উঠলো।
রাত দশটা পেরিয়ে গেলেও আলো নিভেনি।
আরো একটা চমৎকার গান বাজছে—“Til the Stars Sleep” আর লিউ ঝান ধীরে ধীরে অ্যাকুয়ারার হাত ধরে বললো— “এই রাত, এই জীবন, শুধুই তোমার জন্য।”
রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে লিউ ম্যানশন ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে আসে। সিলভা, আলবিরা, থারিনিয়াস ও এথিরিয়ন ফিরে যাচ্ছে ভেনাসে— তাদের বিদায় জানাতে দাঁড়িয়ে ছিলো অ্যাকুয়ারা, হাত নাড়ছিলো মৃদু হাসি আর কষ্টের ছায়া নিয়ে।
লিউ ঝানের কক্ষ আজ রাতের জন্য এক রাজপ্রাসাদের মতো সাজানো হয়েছে। ফুলে ঢাকা বিছানা—নীল কসমস ফুল ও সাদা গোলাপ দিয়ে। জানালার পাশে আকাশ ঝলমলে, আর মৃদু বাতাসে উড়ছে নীল পর্দা। অ্যাকুয়ারা পরেছে হালকা নীল সিল্ক ড্রেস, মাথায় নীলে রেশমের ওড়না
সে আয়নার সামনে বসে, একটু নার্ভাস হয়ে নিজের চুল গুছাচ্ছিল। আর তখনই দরজার বাইরে ধীরে ধীরে পা ফেলে ঘরে ঢুকলো লিউ ঝান।
তার চোখে আজ এক অন্য আলো— চোখ সরাতে পারছিল না অ্যাকুয়ারার মুখ থেকে।
“তুমি কি জানো অ্যাকু, তোমাকে আজ সত্যিই আমার স্বপ্নের মতো লাগছে..” লিউ ঝান ধীরে ধীরে কাছে গিয়ে অ্যাকুয়ারার হাতে হাত রাখলো।
কিন্তু ঠিক তখনই… হঠাৎ করেই বাজতে শুরু করলো লিউ ঝানের ফোন। সে বিরক্তভাবে স্ক্রিনের দিকে তাকালো— Beijing Central Hospital – URGENT
লিউ ঝানের মুখ মুহূর্তেই থমকে গেলো।
“একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে… অনেক আহত রোগী আসছে…আমাকে এখনই যেতে হবে, অ্যাকুয়ারা।”
অ্যাকুয়ারা কেঁপে উঠলো। “এখন? এই রাতেই?”
সে চোখ নামিয়ে বললো, “তুমি যাও। আমি তোমার জন্যে অপেক্ষা করবো। কারণ, এই শহরের মানুষ তোমার অপেক্ষায় আছে এখন।”
লিউ ঝান দ্রুত তার কোট পরলো, আবার ফিরে এসে অ্যাকুয়ারার কপালে চুমু দিয়ে বললো, “আমার না ফিরে আসা পর্যন্ত তুমি ঘুমিও না।”
আর অ্যাকুয়ারা নিঃশব্দে মাথা নাড়লো…ঘরের সব আলো নিভে গেলো, শুধু জানালার বাইরে চাঁদের আলো পড়ে থাকলো তাদের শূন্য ফুলের বিছানায়।
টানা তিনদিন কেটে গেছে।লিউ ঝান ছিলো হাসপাতালে—
ঘুমহীন, বিশ্রামহীন… কেবল অসংখ্য আহত মানুষদের প্রাণ রক্ষায় একটার পর একটা অপারেশন করে গেছে।
আজ রাতে অবশেষে, লিউ ঝানের মা-বাবা আর অ্যাকুয়ারাএকসাথে বসেছে ডাইনিং টেবিলে। ডাইনিং টেবিলে এক অদ্ভুত নীরবতা। আজকের রাতটা যেন কিছুটা শান্ত।
অ্যাকুয়ারা, লিউ ঝানের মা আর বাবা—একসাথে বসে আছে, কিন্তু প্রত্যেকেই চুপ। বোঝা যায়, অপেক্ষার ক্লান্তি কতটা গভীর হলে মানুষ চুপ করে ফেলে।
টেবিলের ওপর রাখা স্যুপ থেকে হালকা ধোঁয়া উঠছে,
আর জানালার বাইরে হিমেল বাতাস আসছে… নিস্তব্ধ, গভীর, ছোঁয়ার মতো।
ঠিক তখনই, একটা ফোন কল আসে। লিউ ঝানের মায়ের ফোন বেজে উঠলো।
_“হ্যালো…?”
– “আপনার ছেলের গাড়িটি এক্সিডেন্ট করেছে… আমরা দুঃখিত, হয়তো তিনি…”
এক মুহূর্তের জন্য সময় থেমে গেল।লিউ ঝানের মায়ের হাতে ধরা ফোনটা যেন গলতে শুরু করলো, তারপর হঠাৎ নিচে পড়ে গেলো মেঝেতে।
আর একই সঙ্গে তিনজনের চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।
অ্যাকুয়ারার মুখ থেকে রক্ত সরে গেলো— সে শুধু তাকিয়ে আছে ফোনের দিকে। তার ঠোঁট কাঁপে… কিন্তু কোনো শব্দ বের হয় না।
ঠিক তখনই— বাইরে আরেকটা গাড়ির শব্দ।
একটা পরিচিত হর্ন।অ্যাকুয়ারা চমকে উঠে দাঁড়ায়,
তার শরীর যেন নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই। চেয়ারটা ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায় পেছনে।
সে দৌড়ে বেরিয়ে যায় বাইরে।খালি পায়ে, সাদা সিল্কের পোশাক উড়ছে বাতাসে। তার চুলগুলো এলোমেলো, চোখ জ্বলছে আতঙ্কে।
বাগানের দিকে ছুটে যায় সে, বুকের ভেতরে বেজে চলেছে হাজারটা প্রশ্ন। তার চোখ শুধু দরজার দিকে।
আর ঠিক তখনই—গাড়ির দরজা খুলে
অন্ধকার থেকে আলোয় পা রাখলো…
লিউ ঝান।
তার মুখে ক্লান্তি, চোখে অবসাদ… তবু তাকে দেখে মনে হয় যেন হাজারটা যুদ্ধ জিতে ফিরেছে কোনো সেনাপতি।
অ্যাকুয়ারা থমকে দাঁড়ায়।তার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে, কিন্তু সে হাসে। সে বিশ্বাস করতে পারছিলো না…
– “তুমি…?”
কোনো কথা না বলে, সে ছুটে যায় লিউ ঝানের দিকে।
এক নিঃশ্বাসে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।
তার মুখ লিউ ঝানের বুকে,আর বুকের স্পন্দনে সে বুঝে নেয়—সে বেঁচে আছে।
লিউ ঝান ধরা গলায় বলে— – “আমার গাড়িটা আজ আমি চালাইনি… আমি জানতাম না এমন কিছু হবে। “তবে জানতাম… তুমি অপেক্ষা করবে।”
সে অ্যাকুয়ারার কপালে একটা চুমু রাখে,গভীর, নিরব, আশ্বাসভরা।
আর বেইজিংয়ের ঠান্ডা রাতে, বাগানের মাঝখানে,
দুজন দাঁড়িয়ে থাকে…আকাশ নীচু হয়ে আসে যেন,আর বাতাসে শুধু ভেসে বেড়ায়—ভালোবাসার ফিরে আসা।
বাগান পেরিয়ে, হাত ধরে অ্যাকুয়ারাকে নিয়ে লিউ ঝান যখন ভেতরে ঢুকলো, তখন ঘরের বাতাস থেমে গেল যেন।
তার মা সোফায় বসে আছেন—চোখে জল, ঠোঁট কাঁপছে।
তিনি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, এই মুহূর্তটা সত্যি।
এক পা… দু’পা… তারপর হঠাৎ উঠে দাঁড়িয়ে ছেলেকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি।
“তুই… তুই যে বেঁচে আছিস! “আমরা ভাবলাম… তুই—”
কথা শেষ হলো না, কণ্ঠটা ধরে এলো।
লিউ ঝান তার মায়ের কাঁধে হাত রাখে, গভীর গলায় বলে— “আমার কিছু হয়নি মম… তোমাদের আশির্বাদে আমি ফিরে এসেছি।”
তার বাবা একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন, চোখে দৃঢ়তা, মুখে চাপা ব্যথা। কিন্তু যখন লিউ ঝান তার দিকে তাকিয়ে বললো— – “ড্যাড…”
তখনই তিনিও এগিয়ে এসে ছেলেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন। “কতোটা চিন্তা হচ্ছিলো জানিস তোর মতো ডাক্তার ছেলে, মানুষ বাঁচাতে গেলেই নিজের খবর থাকে না!”
তিনজন—বাবা, মা, ছেলে—এক আবেগে মিলিয়ে গেলো।
আর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাকুয়ারা, চোখের জল লুকাতে পারলো না। তবে এ জল আজ আনন্দের, সাহসের, ফিরে পাওয়ার।
কিছুক্ষণ পর— ডাইনিং টেবিল আবার সাজানো হলো।
অ্যাকুয়ারা নিজের হাতে স্যুপ গরম করলো, লিউ ঝান চুপচাপ এক কোণে বসে তার প্রিয় মাছের আইটেমের দিকে তাকিয়ে হাসছিল।
তার মা হাসিমুখে বললেন— – “আজ আর তুই খাওয়াস না, আজ তোর খাওয়ার দিন!”
বাবা বললেন— – “আরেকটা এক্সিডেন্ট হলে গাড়ির,তোর লাইসেন্স বাতিল করে ফেলবো!”
সবাই হেসে উঠলো। তাদের হাসির শব্দ যেন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়লো— বেইজিংয়ের ঠান্ডা রাতে, ছোট্ট একটা ঘরেভরপুর ছিলো ভালোবাসা, মমতা, আর ফিরে পাওয়ার উষ্ণতা।
রাত গভীর।
গোসল সেরে, চুপচাপ ঘরে ফিরে এসেছে দু’জনেই।
ঘরটা সেই আগের মতোই সাজানো— হালকা হলুদ আলো, পর্দার আড়ালে নরম চাঁদের আলো, সাদা বেডশিট, আর পাশে রাখা ল্যাভেন্ডার সেন্টেড মোমবাতির উষ্ণ গন্ধ।
সবকিছু যেন বলে দিচ্ছে—ৎতিনদিন আগের সেই রাত্রিটাই আবার ফিরে এসেছে।
অ্যাকুয়ারা ধীরে বিছানায় উঠে শুয়ে পড়লো—পিঠ ঘুরিয়ে রাখলো, চোখ বন্ধ।কিন্তু তার বুকের ভেতরটা তখনও ছটফট করছিলো— আনন্দে, আশ্বস্ততায়, আর এক অনামী উত্তেজনায়।
বেডরুমের আলো নিভে গেছে। শুধু জানালার ফাঁক গলে ঢুকে পড়া চাঁদের নরম আলো ছুঁয়ে যাচ্ছে তাদের মুখের রেখা।অ্যাকুয়ারা চুপচাপ শুয়ে ছিলো পিঠ ফিরে।তার মনে হচ্ছিলো— সে যেন এখনো স্বপ্নের মধ্যে আছে।
লিউ ঝান ফিরে এসেছে… সত্যিই ফিরে এসেছে।
তখনই—
পেছন থেকে এক জোড়া শক্ত হাত তাকে ঘিরে ধরলো।
তার নগ্ন ঘাড়ে এক নিঃশ্বাসের উষ্ণতা নামলো, তারপর লিউ ঝানের ঠোঁট এসে ঠেকলো ঘাড়ের ঠিক নিচে। সে ধীরে ধীরে নাক ঘষলো, ঠোঁট ছোঁয়ালো—প্রথমে হালকা, তারপর একটু সাহসীভাবে।
অ্যাকুয়ারা চোখ বন্ধ করে বললো,“তুমি ক্লান্ত,” অ্যাকুয়ারা কাঁপা গলায় বললো,– “তোমার রেস্ট নেওয়া দরকার…”
লিউ ঝানের ঠোঁটে হালকা হাসি। সে গভীর গলায় ফিসফিস করে বললো— “আমার যথেষ্ট এনার্জি আছে,… আর আজ রাতে আমি কোনোভাবেই রেস্ট নিতে চাই না। এটা আমাদের বিয়ের পর প্রথম একসাথে কাটানো রাত… এটা মিস করা যাবে না।”
সে তখন অ্যাকুয়ারার মুখ ঘুরিয়ে নিলো নিজের দিকে।
দুজনের চোখ এক মুহূর্তের জন্য আটকে গেলো।
তারপর, কোন কিছু না বলেই—তার ঠোঁট নেমে এলো অ্যাকুয়ারার ঠোঁটে।প্রথমে শান্ত, ভিজে ঠোঁটের আলতো ছোঁয়া।তারপর… এক গভীর চুমু—যেখানে ছিলো ফিরে আসার তাড়না, বেঁচে থাকার প্রমাণ,আর সবচেয়ে বড় কথা—তাকে পাওয়ার তৃষ্ণা।
লিউ ঝানের হাত তখন ধীরে ধীরে খুঁজে নিচ্ছিল অ্যাকুয়ারার শরীরের প্রতিটি পরিচিত বাঁক—যেন সে নিশ্চিত হতে চাইছিলো,এই নারী, এই কোমল উষ্ণতা—সবকিছু এখন শুধুই তার।
অ্যাকুয়ারা কখন নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলো সে জানে না।শুধু জানে—আজ রাতে, তার হৃদয়ের সব দেয়াল ভেঙে গেছে।চাদরের নিচে ভালোবাসা নামলো নিঃশব্দে, ধীরে ধীরে।
বাহিরে শীতল হাওয়া বইছিলো,আর ভেতরে…তারা দুজনে,একসাথে, এক অবিরাম আবেগের ঢেউয়ে ভেসে যাচ্ছিলো।
চাঁদের আলোয় ধোয়া ঘরটি একেবারে নিস্তব্ধ।
লিউ ঝান ধীরে ধীরে তার শার্টের বোতাম খুলতে লাগলো,চোখে তীব্র এক আগুনের দীপ্তি, যেটা অ্যাকুয়ারাকে কাঁপিয়ে দিচ্ছিল ভেতর থেকে।
তারপর অ্যাকুয়ারার কাছে এসে থামলো সে।
এক মুহূর্ত চোখে চোখ রেখে,নরম হাতে তার কাঁধ ছুঁয়ে বললো—“তোমাকে আজ… সমস্তটা চাই। কোনো পর্দা নয়, কোনো দূরত্ব নয়…”
অ্যাকুয়ারা নিঃশ্বাস আটকে তাকিয়ে ছিলো ওর দিকে।
তার শরীর ঢেকে রাখা সাদা গাউনটাও ধীরে ধীরে নিচে নেমে গেলো… চুপচাপ, অবাধ্য কুন্তলের মতো।
সেই মুহূর্তে—কোনো লজ্জা ছিলো না, ছিলো শুধু নির্ভরতা, আত্মসমর্পণ।
লিউ ঝানের ঠোঁট নেমে এলো তার গলার কাছটায়,
তারপর ধীরে ধীরে… বুকে, কাঁধে, বাহুতে, পেটের বাঁকে—
প্রতিটি স্পর্শে যেন আগুন ছড়িয়ে দিচ্ছিলো সে।
অ্যাকুয়ারা নিজেকে আর আটকে রাখতে পারছিলো না।প্রথম কোনো পুরুষের এমন স্পর্শ, যেটা তাকে যেন জাগিয়ে তুলছিল ভেতর থেকে। সে কেঁপে উঠলো—তৃপ্তির নয়, তীব্র আবেগের কারণে।
চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছিল বিছানার চারপাশ,
আর সেই আলোয়, লিউ ঝান ধীরে ধীরে নামিয়ে আনলো তার ঠোঁট—অ্যাকুয়ারা যেন নিঃশ্বাস নিতে ভুলে গেলো।
তার নাভিতে এক নরম চুমু, যেটা শরীর জুড়ে বিদ্যুতের মতো বয়ে গেল।তারপরে সেই ঠোঁট আর থামলো না—
নেমে এলো পিঠের বাঁকে, প্রতিটি চুমুতে যেন আঁকা হচ্ছিল এক প্রেমের প্রতিমা।
অ্যাকুয়ারা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না—
তার চোখে আবেশ, ঠোঁটে চাপা কাঁপুনি।
লিউ ঝান তার মুখে না বলে, স্পর্শে বলছিল—“তুমি আমার… এখন, চিরকালের জন্য।”
সেই চূড়ান্ত মুহূর্তে,যখন তাদের দুজনের আত্মা এক হয়ে গেলো—ঘরের নিস্তব্ধতা ভেঙে ছড়িয়ে পড়লো অ্যাকুয়ারার গলার মৃদু সুর… যা ছিলো গভীর ভালোবাসার নিঃশব্দ স্বীকৃতি। তাদের ভালোবাসা সেদিন শুধু শরীরে নয়,
প্রাণে, বিশ্বাসে, প্রতিজ্ঞায় লিপিবদ্ধ হয়ে গেলো—
চিরদিনের জন্য।
আরো এক মাস পেরিয়ে গেছে…
ফিওনার পেট এখন সুন্দরভাবে গোল হয়ে উঠেছে। চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা সে। ওজন বেড়ে এখন ৬০ কেজির কাছাকাছি। তার চোখেমুখে মায়া জমে উঠেছে, চুলে এক ঝলক চাঁদের আলো যেন।আজ এলড্র রাজ্যে হচ্ছে ইতিহাসে প্রথম বেবি শাওয়ার। এল্ড্র রাজ্যের মহারাজপ্রাসাদে , সাজানো হয়েছে “ডায়মন্ড প্যাভিলিয়ন”—যেখানে মেঝে পর্যন্ত সাদা হীরার টুকরো বিছানো, দেয়ালজুড়ে বিশাল ঝাড়বাতি, আর চারপাশে অসংখ্য ভাসমান জাদুকরী প্রদীপ।
আজকের সন্ধ্যাটা শুধু এক গর্ভবতী নারীর জন্য নয়,
আজকের সন্ধ্যা এক নতুন যুগের সূচনা— যেখানে মানুষের রক্ত আর ড্রাগনের আগুন এক হয়ে এক নতুন উত্তরসূরির জন্ম দিতে চলেছে।
ফিওনা হাঁটছে ধীর পায়ে তার পরনে গোলাপি রঙের রাজকীয় গাউন,গর্ভবতী পেটকে ঘিরে হালকা হীরার নকশা,চুলের ভাঁজে গোলাপ ফুল গাঁথা।
জ্যাসপার রাজসিংহাসন থেকে উঠে এসে নিজ হাতে তার হাত ধরে নিয়ে আসে সকল অতিথির সামনে।
ঘোষণা করা হয়—ডায়মন্ড ওজন পাল্লার ঐতিহাসিক সেই অনুষ্ঠান।
দুটি সুবর্ণ পাল্লা রাজপ্রাসাদের ঠিক মাঝখানে রাখা হয়।একটিতে বসানো হয় ফিওনাকে। সাদা রেশমে মোড়ানো ওজন পরিমাপক চেম্বার—যেটা জাদুবলে ফিওনার প্রকৃত ওজন এক মুহূর্তে হিসাব করে দিবে।
ফিওনার ওজন দাঁড়ায় ৬০ কেজি।
অন্য পাল্লায় ধীরে ধীরে রাখা হতে থাকে ছোট ছোট পিংক ভিভিড ডায়মন্ড।
প্রতিটি হীরা ওজনে ঠিক ১ কেজি করে। এগুলো আকারে ছোট হলেও ঘনত্বে অত্যন্ত ভারী। জাদুবলে প্রতিটি হীরা একসাথে ঝিকিমিকি করে উঠছে— আর একসময় পাল্লা দুইটি সমান হয়ে যায়।
তখনই ঘোষিত হয়: “যত ওজন আমার রাণীর, ততটি হীরা উপহার দেয়া হবে প্রতিটি অতিথিকে। তার রক্ত, তার গর্ভ, তার সাহস—এই রাজ্যের সবচেয়ে মহার্ঘ্য রত্ন।”
অতিথিরা একে একে এসে সেই হীরা থেকে সংগ্রহ করছেন—তাদের প্রতিটি প্যাকেটে ১ কেজির ছোট ছোট হীরা, সাথে একটি বাক্য লেখা— “From the Womb of Flame & Flesh.”
একজন ড্রাগন সদস্য হালনাথ চোখে জল এনে বলেন “এমন রাজরানী আগে কখনো দেখিনি… যে আগুনকেও কোমলতা শিখিয়েছে।”
সন্ধ্যার আলো যখন ধীরে ধীরে হালকা গোলাপি হয়ে আসে,ফিওনা পেটের ওপর হাত রাখে, এবং মৃদু হাসে। তার পাশে জ্যাসপার এসে দাঁড়ায় তারপর বলে “এই রাজ্য একদিন ওর হবে…কিন্তু তুমি, ফিওনা—তুমি তারও আগে আমার ছিলে। আর থাকবে।”
দূরে বেজে ওঠে লাইট হার্প ও ক্রিস্টাল বীণার সুর,
আর হাওয়ায় ভেসে বেড়ায় পুষ্পের ঘ্রাণ আর আগাম ভালোবাসার গল্প।
রাত গভীর। ডায়মন্ড প্যাভিলিয়নের সব প্রদীপ নিভে এসেছে। শুধু রাজপ্রাসাদের ছাদে, একটিমাত্র আগুনের ফুলকি জ্বলছে— ফিওনা আর জ্যাসপারের মাঝখানে।তার দুজনেই বসে আছে রাজকীয় দোলনায়
জ্যাসপার তার রাজকীয় পোশাকের ভারমুক্ত হয়ে এখন কেবল এক সাদা শার্ট জড়ানো। ফিওনার মাথা তার কাঁধে।
চাঁদের আলোয় ঝিলমিল করছে ফিওনার মুখের আবেগ।
এক মুহূর্ত নীরবতার পর জ্যাসপার তার পেটের ওপর হাত রাখে। হাতের নিচে হালকা নড়াচড়া টের পায় সে।
তার চোখ কেঁপে ওঠে।
“তুমি কি ভেবেছো প্রিন্স! কী নাম রাখবো ওর?” – ফিওনা জিজ্ঞেস করলো।
জ্যাসপার হঠাৎ পেছনে তাকিয়ে চাঁদের দিকে দেখলো।
তারপর বললো— “তোমার নামে আছে পৃথিবীর কোমলতা আর সৌন্দর্য। আমার নামে আছে আগুনের গর্ব আর মুল্যবান পাথর। আমরা তো একসাথে আকাশ ছুঁয়েছি… তাহলে আমাদের সন্তানের নামও হওয়া উচিত সেই আকাশের মতো—অবিনাশী, মিশ্র।”
তারপর সে ফিওনার কানে কানে বললো— “জ্যাফিওন।”
ফিওনা থমকে গেল। চোখে জল এসে গেল।
আযদাহা সিজন ২ পর্ব ৪৭
সে মাথা নেড়ে বললো— “জ্যাফিওন… এটাতো যেনো আমাদের দুই হৃদয়ের সম্মিলিত স্পন্দন।”
তারা দুজনেই পেটের ওপর হাত রাখে। তখনই আবার শিশুটি নড়েচড়ে ওঠে।
ফিওনা ফিসফিস করে বলে— “ও বুঝেছে, বাবামার দেওয়া নাম পেয়েছে। “জ্যাফিওন… এল্ড্রর ভবিষ্যৎ নতুন ছোট প্রিন্স।
তখন দূরে এক জাদুকরী বাঁশির সুর ভেসে আসে।আকাশে তারা একে একে জ্বলে উঠতে থাকে— আর কৃত্রিম চাঁদ যেন মাথা নুইয়ে আশীর্বাদ করে এক অনাগত ড্রাগন যোদ্ধাকে।