ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ২৬

ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ২৬
Arishan Nur

আয়না জামা-কাপড় প্যাকিং করছে। আজকে বৃহস্পতিবার বিকেল। আজকে রাতে বাসে করে শ্রীমঙ্গল যাচ্ছে তারা। সে ভীষণ এক্সাইটেড। যদিও বা সমুদ্রের একদম ইচ্ছা ছিলো না যাওয়ার। ও নাকি এ’দুদিন বিছানায় পরে পরে ঘুমাতে চাচ্ছিলো। কিন্তু আয়নার জোড়াজুড়িতে ওনার না ‘হ্যা’ তে রুপান্তর হয়৷ আয়না কেন জানো খুব শখ করে একটা লাল জর্জেটের শাড়ি সঙ্গে নেয়। চা-বাগানে কেউ শাড়ি পরে বলে মনে হয় না কিন্তু তবুও সে সঙ্গে রাখে শাড়ি। অপেক্ষায় থাকে সমুদ্রের আসার। ও অফিস সেরে একবারে এ’বাসায় আসবে। ফোন হাতে নিলো।
খানিক বাদেই আয়নার রুমে টোকা পরে৷ আয়না বুঝলো এটা বাবা। বাবা-ই এভাবে টোকা দেয় দরজায়৷ সে নিশ্চুপ থাকে। কয়েকবার নক করে বাবা দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। আয়না একবারও তাকায় না বাবার দিকে৷
ফাহাদ সাহেব গলা খাকারি দিয়ে বলে, ” যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শেষ।”

–” দেখতে-ই তো পারছো।”
ফাহাদ সাহেব হতাশ হয়ে মেয়ের দিকে তাকালো। আয়নার একটা বদ অভ্যাস আছে। সে রেগে গেলে বা কষ্ট হলে কখনোই গলায় স্বর চরাও করে চিৎকার দিতে পারে না। তার জায়গায় অন্যকেউ হলে নিশ্চয়ই বাবার সঙ্গে এখন ঝগড়াঝাটি, চিল্লা-পাল্লা শুরু করে দিতো। কিন্তু সে পারে না। মনের মধ্যে সব কষ্ট চাপা দিয়ে রাখে। এভাবে মনকে আর কতোদিন চাপে রাখবে কে জানে?
ফাহাদ সাহেব বলেন,” সকালে নাস্তা খেতে ডাইনিং টেবিলে আসো না কেনো? রুমে কেন খাচ্ছো? তোমাদের সঙ্গে একবেলাই খাই। দুপুর আর রাত তো পেরিয়ে যায় কাজেই।”
আয়না কিছু বলে না। নিশ্চুপ থাকে৷ ফাহাদ সাহেব পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে টেবিলে রেখে বললো, ” বাইরে যাচ্ছো, টাকা সবসময় কাছে রাখবে। সাবধানে থাকবা।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আয়না বলে উঠে, ” টাকা লাগবে না। নিয়ে যাও তোমার টাকা।”
ফাহাদ সাহেব রাগলেন না। ছোট থেকে মেয়েদের এতো আদরে-যত্নে মানুষ করেছেন যে বকা দিলে নিজেরই খারাপ লাগে। তার উপর মেয়েটার বিয়ে হয়েছে। দু’দিন বাদে শ্বশুড়বাড়ি যাবে। এমন দিনে রাগারাগি করতে চান না আর।
সে আয়নার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,” বাবার উপর রাগ করে কতোদিন থাকবে মা? ক্ষুদ্র একটা জীবন। তোমরা রেগে থাকলে আমি তো থাকতে পারি না। কষ্ট হয় অনেক। বাবাকে মাফ করা যায় না?”
আয়না ওর বাবার হাত সরিয়ে দিয়ে বলে, ” যাও তো বাবা এখান থেকে। ভালো লাগে না৷ তুমি কখনো ভাবো আমাকে নিয়ে?”

–” সবসময় ভাবি, মা। তোমাদের জন্য ভাববো না তো কার জন্য ভাববো বলো?”
–” তুমি সবসময় তোমার দ্বিতীয় স্ত্রীর কথা ভাবো।”
ফাহাদ সাহেব কিছুটা থমকালেন। এরপর কিছু বললেন না। তিনি আসলে জানেন না কি করবে এমন পরিস্থিতিতে? আয়না কোনোভাবেই তার সঙ্গে স্বাভাবিক হচ্ছে না৷ অপরদিকে শায়লা চাচ্ছে এ’বাসায় এসে থাকতে। ওর নাকি একা দমবন্ধ লাগে। ওর ঘর-সংসার চাই। একদিকে মেয়ের রাগ-জেদ, অন্যদিকে শায়লার প্রাপ্ত অধিকার। কীভাবে দুটো’বিষয় একসঙ্গে সামলাবেন তিনি? সে ফোঁস করে দম ফেলেন। আয়নাকে জানাতেই পারলেন না শায়লা আসবে খুব দ্রুত এ’বাসায়।

সমুদ্র সন্ধ্যার পর আয়নার বাসায় আসে। সে আসতেই আয়না খুব সুন্দর করে হাসলো তাকে দেখে। এতোক্ষণের জমে থাকা সব কষ্ট মুহুর্তের মধ্যে উবে যায়। সমুদ্রও ফিরতি হাসি ফেরত দেয়। দু’জনের মধ্যে এখন সবটা বেশ গোছালো। মনোমালিন্যর ছিটেফোঁটাও নেই। অথচ দু’দিন আগেই দু’জন দু’দিকের সড়কে পা মাড়াচ্ছিলো।
সমুদ্র এসেই আয়নার এক হাত ধরে টান মেরে বললো, ” কী ব্যাপার? রেডি হয়ে বসো আছো দেখছি? ও বুঝেছি হানিমুনে যাওয়া জন্য তর সইছে না?”

–” এই হানিমুনে কে যাচ্ছে?”
–” তুমি আর আমি।”
–” মোটেও হানিমুনে যাচ্ছি না। ”
–” বিয়ের পর ঘুরতে যাওয়াকেই হানিমুন বলে। বুঝছো?”
আয়না বলে উঠে, ” না। এটা হানিমুন না। আপনার সব ফ্রেন্ডের সঙ্গে যাচ্ছি। সো ইউ ক্যান সে ”ইটস ফ্রেন্ডমুন বাট প্লিজ হানিমুন নাহ।”
সমুদ্র হতাশ চোখে তাকায় এরপর বলে, ” চা দেও, চা খেয়ে মনের ব্যথা দূর করি।”

–” মনের ব্যথা মানে?”
–যার বউ হানিমুনকে ফ্রেন্ডমুন বানায় তাকে তো চা খেয়েই মনের দুঃখ-ব্যথা সারাতে হবে। বুঝলে আয়না, আমার লাভ-ক্ষতি নাই। জীবনটাই ক্ষতির খাতা।”
আয়না ওকে একবার ভেংচি কাটলো।

রাত আটটার মধ্যেই সমুদ্র আয়নাকে নিয়ে বের হয়। ওর অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়েকজন ফ্রেন্ড-সিনিয়র, জুনিয়র এসেছে। যার বিয়েতে গিয়েছিলো ওর সাথে স্কুল থেকে পরিচয় হলেও দু’জন অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে গিয়েছিলো। ওভারওল দশ-বারো জন ফ্রেন্ড তাদের স্পাউজ নিয়ে একটা রিসোর্টে গেট টুগেদার আয়োজন করেছে। মেডিকেলের ফ্রেন্ড বাদেও আরোও কয়েকজন আছে, কারা কারা আছে সমুদ্র খোঁজ নেয়নি। কিন্তু দেখা গেলো ওর ফ্রেন্ডরা বিশাল আয়োজন করেছে। অস্টেলিয়ায় এ’সময় ভ্যাকেশন চলছে। ওদের ব্যাচের বাঙ্গালী বেশ ক’জন এসেছে দেশে। সবাইকে নাকি জানানো হয়েছে। ধারণা করা যাচ্ছে বিশজন পার হয়ে যাবে। মিনি বাস নেওয়া হয়েছে৷ সমুদ্র আয়নাকে নিয়ে শেষের দিকের বামপাশের’রো তে বসে। আয়না জানালার ধারের সীটে বসবে বললো। সমুদ্র নিজে সবসময় জানালার ধারে বসে৷ ইন ফ্যাক্ট ফ্লাই করার সময়ও উইন্ডসীটে বসার ট্রাই করে। তবে আজ আর বসলো না। আয়নাকে সীট দিলো৷

আয়নাকে বেশ হাসি-খুশি দেখাচ্ছে। ওকে আনন্দিত হতে দেখে সমুদ্রেরও ভালো লাগছিলো। তারা আগেভাগেই এসে পড়েছে৷ অনেক ফ্রেন্ডরা এখনো এসে পৌঁছে নি। যারা আসছে সবার সঙ্গে কথাবার্তা বলছে। একটু পর নীলা আর ওর হাসবেন্ড আসলো। সমুদ্র আয়না দু’জনে অবাক হলো। ওর আসার কথা ছিলো না। হুট করে কেন আসলো?
সমুদ্র জিজ্ঞেস করে, ” কিরে তুই না বললি যাবি না?”
নীলা চোখ-মুখ শক্ত করে বলে, ” তোরা আনন্দ করবি আর বসে থাকবো আমি? এটা হয় না৷ তাছাড়া তোরে কল দিলাম কল ধরিস না কেন? এট লিস্ট ম্যাসেজ তো দেখবি।”
–” ফোনে চার্জ নাই।”

সমুদ্রের নীলার ভাবমূর্তি দেখে মনে হলো ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলতে চাচ্ছে৷ কিন্তু সুযোগ পাচ্ছে না৷ সে আমলে নেয় না৷ আয়নার গা ঘেঁষে বসে পরে৷ খানিক বাদে বাস শ্রীমঙ্গলের দিকে যাত্রা শুরু করে। কিছুক্ষণ গান বাজানো হল। রাত বাড়লে যাত্রীদের ঘুমের ডিস্টার্ব যেন না হয় সেজন্য গান বন্ধ করে দিয়ে লাইট নিভিয়ে দেওয়া হলো।
লাইট নেভানোর সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের দুষ্টামি বাড়ে। সে সোজাসোজি একদম আয়নার কোমড় প্যাচিয়ে ধরে নিজের বুকের দিকে টেনে নেয় ওকে। কিন্তু খুব একটা সুবিধা করতে পারেনা সীটের হ্যান্ডেল থাকার জন্য।
বিরক্তি মুখে বলে উঠে, ” বা–লের হ্যান্ডেল।”
আয়না ফিক করে হেসে ফেলে এরপর বলে, ” ইদানীং আপনি অসভ্য ম্যাক্স প্রো হয়ে গেছেন। আগে তো এমন ছিলেন না।”

–” আগে কেমন ছিলাম?”
–” আগে শুধু অসভ্যই ছিলেন, যেটা তাও সামলানো যাচ্ছিলো কিন্তু এখন একদম আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে যাচ্ছেন।”
সমুদ্র ওর কানের কাছটার চুলের গোছা সরিয়ে দিয়ে নিজের মুখ ওর কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বললো, ” এক্সট্রিম লেভেলের রোমান্টিক হওয়ার আগেই আউট অফ কন্ট্রোল বলছো। এক্সট্রিম হলে তো বলবে কন্ট্রোল আউট অফ আর্থ!”
আয়না ক্ষণেক কেঁপে সরে যেতে চায়। কিন্তু সমুদ্র ওর কোমড় আঁকড়ে ধরে ছিলো। ওকে সরতে দেখে সমুদ্র ওকে টেনে নিজের বুকের কাছে হেলিয়ে শু’ইয়ে দিয়ে বলে, ” মিসেস. আয়না, সরে গেলে তো হবে না। এখন তো কাছের আসার গল্প চলছে।”
আয়না চুপ থেকে ওর বুকে কিল বসায়৷
–” এইযে বুকে খালি সুযোগ পাইলেই কিল বসাও, হৃদয়টা তো ভেঙেচুড়ে যায়।”

শ্রীমঙ্গল যখন পৌঁছে তারা তখন ভোর চারটা। অন্ধকার ই আছে এখনো। বাস একদম রিসোর্টের সামনে এসে থেমেছে৷ আয়না তখন সমুদ্রের বুকে গুটিসুটি মেরে ঘুমাচ্ছে। একদম আরামের ঘুম। এমন আরামের ঘুম অনিদ্রায় ভোগা মানুষদের চোখ দিয়ে দেখেই শান্তি মিলে। ওর একদম তাকে ডাকতে মন চায় না৷ সে আরেকটু শক্ত করে ওকে জড়িয়ে ধরে, ওর ফোলা ফোলা গালে হাত ছো’য়ালো এরপর কপালে চুমু দিতেই পেছনে থেকে নীলা এসে সামনে দাঁড়িয়ে বলে, ” কারো নজর না লাগুক। থু।”

সমুদ্র খানিক লজ্জা পায় এভাবে বন্ধুর সামনে ধরা খাওয়ায়। সে স্মিত হাসে কেবল।
রিসোর্টে যেতে হবে কিন্তু আয়না ঘুমে, উপায় নেই বিধায় আস্তে করে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে, ” আয়না, উঠো। দেখো পৌঁছে গেছি। আয়না?”
আয়না চোখ পিটপিট করে তাকায়। সঙ্গে সঙ্গে চোখের সামনে সমুদ্রের চেহারা ভেসে আসে। ও মুচকি হেসে তাকে ‘ শুভ সকাল” বলে।

সে মাত্র জাগ্রত হতেই নিজেকে সমুদ্রের বুকে দেখে৷ একদম বুকে গুটিসুটি মেরে কোলে শু’য়ে থাকার মতো অবস্থায় আছে। ইতিমধ্যে বাস থেকে ওর সব ফ্রেন্ডরা স্পাউজদের নিয়ে বাস থেকে নামছে। এদিকটা ক্রস করেই বেরিয়ে যাচ্ছে। যারা যাচ্ছে সবাই এই দৃশ্য দেখতে পাচ্ছে। এতোগুলা মানুষের সামনে কোন আক্কেলে তাকে বুকে নিয়ে বসে থাকে। মানে এনার আর কোনো কাণ্ডজ্ঞান হবে না!
সে উঠে বসেই সবার আগে বললো, ” এভাবে সবার সামনেই আপনি আমাকে কোলে নিয়ে বসে ছিলেন? লজ্জা নাই কোনো?”

–” সমস্যা কোথায়? আমার বউকেই তো কোলে নিয়েছি। অন্যের বউকে নিলে সমস্যা ছিলো।”
আয়না রুঢ় কন্ঠে বলে, ” আমি কী বাচ্চা নাকি যে কোলে নিয়ে থাকবেন? আর শখ কতো অন্যের বউকে কোলে নিতে চান? আরেকবার এই কথা বললে মাথার সব চুল টেনে ছিঁড়ে ফেলবো।”
সমুদ্র চোখ টিপ মেরে বললো, ” বাচ্চা না বাট বেবিগার্ল তো তাই না? সেইম বাট ডিফারেন্ট।”

হোটেল রুমে যাওয়ার পর সমুদ্র দেখলো তাদেরকে একটা হানিমুন প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে। হানিমুন প্যাকেজে শুধু রুম স্পেশালি ডেকোরেশন করা থাকে৷ সে যেন এতেই আকাশের চাঁদ হাতে পায়। এতো খুশি হলো রুমে ঢুকে। আয়না কিছুটা অবাক নয়নে রুমের ডেকোরেশন দেখছে। কি সুন্দর ফুল দিয়ে সাজানো। জানালার ভিউ এত্তো সুন্দর! বারান্দায় একটা ঝুলানো নেটের দোলনা টাইপ আছে৷ বেড টাইপের দোলনা। একদম শুয়ে পড়া যাবে সেখানে। ও দৌড়ে গিয়ে বারান্দার দোলনার মতো জায়গায় শুয়ে পরে। হাত-পা ছড়িয়ে দিয়ে সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকে।
সমুদ্র ওর কাণ্ড দেখে হাসে। ফাহাদ সাহেব জানিয়েছে তার মেয়েরা খুব একটা বাইরের পরিবেশে যায়নি। স্কুল-বাসা এভাবেই দিন পার করেছে৷ এজন্য বুঝি মুক্ত প্রজাপতির মতো উড়াউড়ি করছে এখন।

আয়না একদম ছোটবাচ্চার মতো দোলনায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। সে বারান্দায় দাঁড়াতেই মুগ্ধ হলো। এতো নির্মুল বাতাস। তার উপর আয়নার খিলখিল হাসি৷ সে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। এরপর কি ভেবে একদম আয়নার পাশে গিয়ে সেও শু’য়ে পরে।
আয়না ভ্রু কুচকে বলে, ” আপনার ভারে মনে হচ্ছে রশি ছিড়ে পড়বে।”
–” কিহ! আমাকে তুমি ইনডাইরেক্টলি ভারী বলছো?”

আয়না মাথা নাড়ায়। সমুদ্র সঙ্গে সঙ্গে ওর উপর শু’য়ে পরে। আয়না নড়েচড়ে উঠলো। সমুদ্র নিজের মুখ ওর কাছে আনতেই আয়না দ্রুত ওর ঠোঁটে নিজের হাত রেখে কিছু করা থেকে আটকে রেখে বললো, ” মিষ্টার ওশেন, এটা আপনার বেডরুম না!”
সমুদ্র ভ্রু কুচকে মুখ দিয়ে ‘আম্ম’ শব্দ করে। আয়না দ্রুত হাত সরিয়ে নেয়। সমুদ্রর ঠোঁট ছাড়া পেতেই ও জবাব দিলো,

–” বেডরুমের চেয়েও অধম হলো হানিমুন কটেজ।”
সমুদ্র নিচু হতে ধরলে আয়না হাসতে হাসতে ওকে ধাক্কাতে লাগে এরপর বলে উঠে, ” চলেন নিচে ব্রেকফাস্ট করবো।”
–” ব্রেকফাস্ট ই তো করতে দিচ্ছো না। খালি বাঁধা দেও।”

আয়না দ্রুত ওকে সরিয়ে দিয়ে কেটে পরে। ওনাকে ফেলে রেখেই সে নিচে চলে যায়। সমুদ্র দু’মিনিট টি-গার্ডেন ভিউসহ বারান্দায় শুয়ে আরাম করে। এরপর আস্তেধীরে টি-শার্ট চেঞ্জ করে একটা শার্ট আর ট্রাউজার গায়ে দিয়ে বের হয় সকালের নাস্তার জন্য। ব্যুফে ব্রেকফাস্ট। সবাই নিশ্চয়ই ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করছে৷

সে নিচের ফ্লোরে এসে এদিকে-ওদিকে তাকাতেই দেখলো লম্বা এক টেবিলে তার বন্ধুরা বসে আছে। নীলা-আয়নাও আছে। সে এগিয়ে যেতে লাগে। কয়েক কদম আগাতেই চোখ সামনের দিকে পড়ে, ক্ষণেই পা আসাড় হয়ে আসে। স্তব্ধ হয়ে এক’পল থমকে দাঁড়ায়। কাকে দেখলো সে মাত্র? চোখের ভুল নাতো! চোখ আপনা-আপনি বড় হয়ে আসে। ওর অভিব্যক্তি দেখে যেকেউ বলে দিতে পারবে যে ওর ভেতর দিয়ে বড়সড় ঝড় বয়ে গেলো। কেমন শূন্য কিন্তু গরম চোখে তাকিয়ে থাকে। চেয়ার সামনে থাকা সত্তেও বসে না। ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। চোখের পলক ফেলে না। আয়না একবার তার দিকে তাকিয়ে বসতে বলে তবুও বসে না সমুদ্র।

ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ২৫

গোল টেবিলের একদম আয়নার বিপরীতে বসে থাকা ব্যক্তি তার নারী কণ্ঠে রিনরিন সুর তুলে বলে,” হাই, কেমন আছো সমু….আ সমুদ্র। অনেকদিন পর দেখা।”
সমুদ্র প্রত্যুত্তরে নিশ্চুপ থাকে।

ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ২৭