ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ৯
Arishan Nur
আয়নার কোলে তখন মিলি আদুরে ভঙ্গিমায় বসে বসে লেজ নাড়াচ্ছে। মিলিকে অনুষ্ঠান উপলক্ষে একটা লাল রঙের বেবি ড্রেসও পড়ানো হয়েছে। সাদা গায়ে লাল জামায় কি অসম্ভব কিউট লাগছিলো মিলিকে৷ সবাই সুন্দর সুন্দর জামা পড়ে আসবে। মিলি কেন পড়বে না?
কিন্তু মিলিকে দৌঁড়ে আসতে দেখে, সমুদ্রের রিয়্যাকশন দেখবার মতো ছিলো। ওনার মতো ওমন রাশভারি, গাম্ভীর্যপূর্ণ মানুষটা বিড়াল দেখে এমন ভাবে লাফালাফি শুরু করবে কেউ ভাবতে পারবে কোনদিন? সমুদ্রের ভয়ে কাচুমাচু মুখ, প্লাস্টিকের চেয়ারের উপর দু’পা তুলে বসে অস্থিরচিত্তে মিলিকে দূরে যেতে বলা সবটা দেখে আয়না না হেসে পারলো না। সে খিলখিল করে হাসতে লাগলো। সমুদ্র মুখ তখন দেখার মতো হয়েছিল। মিলিটাও ভারী দুষ্টু একবার লাফ দিয়ে আয়নার কোলে আসছে, অপরদিকে আয়েসী ভঙ্গিমায় ঠিক সমুদ্রের চেয়ারের দিকে গিয়ে ঘুরে আসছে। যতোবারই মিলি ওনার দিকে আসছে,সমুদ্র পা গুটিয়ে বসে পড়ে আর মুখে বলে, ” এই বিড়ালটা এখানে কেন আসছে? যেতে বলো ওকে।আমার কাছে কেন আসছে? ”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সমুদ্রের কীর্তিকলাপ দেখে আয়নার হাসি থামে না। একটা মানুষ বিড়ালকেও ভয় পায়? হাস্যকর ব্যাপার!
একটু পর মিলিকে নিয়ে আলিয়া চলে যায়। সমুদ্রের যেন জানে পানি আসলো। সে চেয়ার থেকে পা ফ্লোরে নামিয়ে ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে, ” বিড়াল কে এনেছে এখানে?”
আয়না বললো, ” ও এখানেই থাকে।”
সমুদ্র বিড়ালটার ভাব-সাব দেখেই বুঝেছে ওটা কারো গৃহপালিত আদরের পেট। সে বললো, ” কার বিড়াল?”
–” আমার বিড়াল। ওর নাম মিলি।”
সমুদ্র যেন এবারে ফের অশান্ত অনুভব করলো। বিড়ালটা ফের যদি আয়নার কাছে এসে পড়ে? আবার বেইজ্জতি সে নিতে পারবে না৷ ওদিকে বিড়াল দেখলেই তার কেমন জানি লাগে! ইতিমধ্যেই আয়নার কাছে সে হাসির পাত্র বনে গেছে।
আয়নার হাতের মেহেদী দেওয়া শেষ তখন। এখন শুকানোর পালা। সমুদ্র চুপচাপ বসেই আছে৷ তবে সচেতন আছে হুট করে যদি আবার বিড়ালটা এসে তাকে কামড় মারে। কি এক জ্বালা! আর ভালো লাগে না। সে আয়নার পানে তাকালো। মেহেদী রাঙ্গা হাত দুটো মেলে বসে আছে। একটু পর পর মুখ দিয়ে ফুঁ দিয়ে মেহেদী শুকাচ্ছে। সমুদ্র উঠে দাড়াঁলো। তখন আয়না একবার তার দিকে জিজ্ঞাসু চোখে তাকায়। সমুদ্র জবাব না দিয়ে দ্রুত বেগে একটু সামনে এসে ছাদে সেট করে রাখা টেবিল ফ্যানটা আয়নার দিকে ঘুরিয়ে আনলো। ফলে ফ্যানের মিহি বাতাসে আয়নার গরম ভাব কমলো। বেশ স্বস্তি লাগে তার৷
সে বলে, ” ফ্যানের বাতাসে মেহেদী শুকাও।”
আয়না কিছু বললো না। তবে ফ্যানের সম্মুখ বরাবর হাত দুটো বেশ আনন্দের সঙ্গে এগিয়ে দেয়। টেবিল ফ্যানের বাতাসে তার চুল ওড়ে, অরগ্যাঞ্জা দোপাট্টা কাঁধ বেয়ে আজও হাতে এসে কাঁচা মেহেদীর উপর পড়তে ধরবে তার আগে সমুদ্র এসে ওড়না সরিয়ে দিয়ে বলে, ” ওড়নাটাই সামলাতে পারো না ঠিকঠাক, বিয়ের পর স্বামী-সংসার কীভাবে সামলাবে?”
আয়না তার দিকে একটু উঁচু হয়ে তাকালো, সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্র সটান হয়ে দাঁড়ালো। বেশ কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকলেন উনি যার ফলে সেই পরিচিত পারফিউমের সুঘ্রাণ নাকে এসে লাগলো। আজ কি উনি অন্যদিনের চেয়ে বেশি পারফিউম গায়ে মেখেছে? এতো তীব্র কেন ঘ্রাণটা?
এমন সময় ছাদের অনুষ্ঠানে শায়লা চৌধুরী এসে দাঁড়ালেন৷ আয়নার তাকে দেখামাত্র ভ্রু কুচকে আসে। সে হতবিহ্বল হয়ে শায়লা চৌধুরীকে দেখলো। মহিলাকে আজ বেশ সুন্দর লাগছে। ঘিয়ে রঙের একটা দামী জামদানী শাড়ি পরে এসেছেন। আচ্ছা উনি এসেছেন কেন? ওনাকে কেন বাবা দাওয়াত দিলো? ধ্যাত বাবার উপর বেশ রাগ হচ্ছে আয়নার। এখন সমুদ্র ওনার সম্পর্কে কিছু জানতে চাইলে সবটা ভেঙে বলতে পারবে না সে। তবে আজ একটা বিষ্ময়কর ঘটনা ঘটলো, আয়না যখন শায়লা চৌধুরীকে সমুদ্রের সামনে কি বলে পরিচয় দিবে সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলো, সেই মুহূর্তে শায়লা তাদের দিকেই এগিয়ে আসে। এবং সমুদ্র তাকে দেখে খুব খুশি হলো বলে মনে হয়।
শায়লাকে জড়িয়ে ধরে খুব সুন্দর স্পষ্ট, পটু ইংলিশ একসেন্টে বলে উঠে, ” কেমন আছো? কতোদিন পর দেখা।” আরোও কিছু কথোপকথন হলো দুইজনের মধ্যে। আয়নার কানে শুধু বেজে উঠলো সমুদ্রের বলা একটা কথা– আই মিসড ইউ সো মাচ ।”
তবে ওনারা কি পূর্বপরিচিত? সমুদ্র কোনোভাবে শায়লা চৌধুরীর সঙ্গে কানেক্টেড!
শায়লা এবারে বলে উঠে সমুদ্র কে উদ্দেশ্য করে , ” আমার মনে হয় তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে হ্যান্ডসাম গ্রুম।” এরপর আয়নার দিকে তাকিয়ে বলে, “এবং আয়ু সবচেয়ে প্রিটিয়েস্ট ব্রাইড।”
সমুদ্র তার কথায় মুচকি হাসে শুধু। আয়না একপলক সমুদ্রের দিকে তাকায় আবার অপর পলক ফেলছে শায়লা চৌধুরীকে দেখে৷ সত্যি কথা বলতে, ওনাকে এই অনুষ্ঠানে দেখে আয়নার একদম ভালো লাগেনি। অবশ্য বিয়ে বাড়িতে মেহমান হিসেবে অনেক মানুষই আসবে এটা ভেবে নিজেকে বুঝ দিয়ে শান্ত থাকলো৷ আজকের মতো স্পেশাল দিনে কোনোরকম ঝামেলা কাম্য নয়৷
সেসময় ছাদের এ প্রান্তে আলিয়া-পিউকে আসতে দেখা গেলো। আলিয়াও শায়লাকে দেখে অবাক হয় তবে অভিব্যক্তিতে প্রকাশ ঘটে না৷ পিউ তাকে দেখে হাসিমুখে কথা বলতে লাগে৷
শায়লা চৌধুরী বলে উঠে, ” তোমাদের দুই’জনকেই বেশ সুন্দর লাগছে। ”
কোনো মেয়েকে যদি এমন কথা শক্রুও বলে তাও মেয়েরা খুশিতে নেচে শক্রুকে ধন্যবাদ দিবে সেখানে শায়লা চৌধুরীর মতো স্মার্ট মহিলা প্রশংসা করায় আলিয়া খুশিই হয়। অবশ্য শায়লাকে নিয়ে আলিয়ার বিশেষ কোনো মতামত নেই৷ আপা পছন্দ করে না বিধায় সেও কম কথা বলে৷
আলিয়া জানালো, ” গেস্টরা সবাই খেয়ে নিচ্ছে। ভাইয়া আপনারাও খেয়ে নেন।”
শায়লা তখন বলেন,” সমুদ্র আয়নাকে নিয়ে যাও, গিয়ে ডিনার করো।”
এমন সময় সবার খেয়াল হলো আয়নার তো হাত ভর্তি মেহেদী দেওয়া।
আলিয়া বলে, ” আপা সেই দুপুর একটায় খেয়েছে৷ এরপর ব্যস্ততার জন্য খায়নি কিছু।”
শায়লা তখন সমুদ্রের দিকে তাকায়। সমুদ্র বেশ স্বাভাবিকভাবে বলে উঠে, ” তাহলে তো মুশকিল হলো। আগেই ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করায় দিবে না!”
আলিয়া অনুতপ্ত বোধ করে বলে, ” একদম ই খেয়াল ছিলো না ভাইয়া।”
–” এখন আর কি করবে? মেহেদী শুকিয়ে যাক৷ এরপর ডিনার করব৷ অপেক্ষা করি ততোক্ষণে। ”
শায়লা চৌধুরী প্রস্তাব দিলেন, ” এক কাজ করো সমুদ্র, তুমি খাওয়ার সময় আয়নাকেও খাইয়ে দাও। তাহলে আর না খেয়ে বসে থাকতে হচ্ছে না।”
সমুদ্রের উত্তর শোনার আশা বাদ দিয়ে আয়না নিজ থেকে বললো, ” না, না সমস্যা নেই তো। আমি চামচ দিয়ে খেতে পারব৷ আবার পরে খেলেও চলবে আমার। আই ক্যান ম্যানেজ।”
সমুদ্র বলে, ” এখানেই খাবার এনে দাও।”
আলিয়া-পিউ জলদি করে দু’টো বিরিয়ানির প্লেট আনলো, চামচসহ৷ ওরা ভেবেছে আয়না নিজ হাতে চামচ দিয়ে খাবে। যেহেতু ভাইয়া ওইসময় কিছুই বলেনি।
পিউ যখন আয়নাকে খাবার প্লেটটা ধরার জন্য এগিয়ে দেয়, আয়না কেবল হাত বাড়াচ্ছিলো, সেই ক্ষণে সমুদ্র প্লেটটা নিজের হাতে কেড়ে নিয়ে বললো, ” আমি দিচ্ছি খাইয়ে।”
আয়না ওর দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকালো। কিন্তু সমুদ্রের দৃষ্টি ছিলো চামচ আর খাওয়ার প্লেটের দিকে। ও ব্যস্ত আয়নাকে খাইয়ে দেওয়ার আগ প্রস্তুতিতে। চামচে করে এক লোকমা মুখের সামনে ধরতেই আয়নার এতো পরিমাণ লজ্জা লাগলো। এই লজ্জা পরিমাণ করা গেলে কয়েক পাউন্ড লজ্জা পাওয়া যেত! দুই গালে লাল আভার ফুটে উঠে তার।
সমুদ্র তাড়া দিতেই আয়না ছোট করে মুখ খুলে খাবার মুখে নেয়। হবু দম্পতিকে একাকী টাইম স্পেন্ড করতে দেওয়া উচিত মনে করে শায়লা আলিয়া আর পিউকে অপরপ্রান্তে নিয়ে যান। ছাদের এ’পাশটায় সমুদ্র আয়না একদম একা হয়ে যায়। সাউন্ডবক্সটা তখন বন্ধ ছিলো। আয়নার বুকে ভীষণ জোড়ে হৃদস্পন্দনের ওঠা-নামা করা শুরু করলো৷
দুই লোকমা খাওয়ার পর আয়না সমুদ্রর প্লেটের দিকে তাকিয়ে বলে, ” একটু অল্প করে দেন। এত্তোগুলো একবারে খাওয়া যায় নাকি?”
সমুদ্র চামচে উঠানো অর্ধেক বিরিয়ানি সরিয়ে দিলো। চামচের উপর একটা কিশমিশ দেখতেই আয়না বলে উঠে, “কিশমিশ সরান৷ আমি কিশমিশ খাই না।”
সমুদ্র সঙ্গে সঙ্গে কিশমিশ সরিয়ে দিলো। এরপর আয়না বলে, ” আমি ভাজা লাল পিয়াঁজও খাই না ওটাও সরিয়ে দিন প্লিজ।”
সমুদ্র প্লেট থেকে বেরেস্তা খুঁজে বের করে সরাতে লাগলো৷
দশটার আগেই সবার ডিনার করা শেষ হয়ে গেলো। ডিনার টাইম শেষ হওয়ার পর ফাহাদ সাহেব ছাদে আসলেন। এতোক্ষণ নিচেই বসে ছিলেন। ছাদে ছোটরা হৈচৈ করছে, উনি আর আসেননি। ফাহাদ সাহেব সবার খাওয়া ঠিকমতো হলে কিনা খোঁজ নিতে এসেছেন। কিন্তু শ্রাবণ, পিউ আলিয়া সহ আরোও কয়েকজন ওদের কাজিন বায়না ধরলো, রাতে ওরা সমুদ্রের বাসার ছাদে মুভি পার্টি করবে। চিপস,চকলেট, আইসক্রিম খাবে আর মুভি দেখবে৷ কিন্তু বিয়ের আগের রাতে মেয়েকে কোনোদিন শ্বশুড়বাড়ি পার্টি করতে দেওয়ার মতো বাবা নন তিনি। তিনি আপত্তিও করলেন, রাজীও হলেন না। সমুদ্রও চায় না এসব করতে। সে সুযোগ বুঝে ফাহাদ সাহেবের সঙ্গে তাল মেলায়। ফলে সকল প্ল্যান ভেস্তে যায়৷
তবে পিউরা ভীষণ মন খারাপ করছিলো জন্য শায়লা চৌধুরী বলে উঠে, ” তোমরা এখানেই আরোও কিছুক্ষণ ইনজয় করো। ল্যাপটপ এনে মুভি দেখো। সাউন্ডবক্সও আছে। আমি পিজ্জা অর্ডার করে দিচ্ছি।”
নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো এই প্রবাদ মেনে ওরা রাজী হয়ে যায়। বড়রা সব চলে গেলে জোড়ে গান বাজানো হলো। আয়নার অবশ্য একটু অসুস্থ বোধ হতে লাগে, তবুও সে সবার সঙ্গে ছাদেই রয়ে যায়৷
সমুদ্র বলে উঠে, ” আমি নিচে গেলাম। একটা কাজ আছে।”
সমুদ্রের এসব আলগা জিনিসপত্র বেশ বিরক্ত লাগে। সে ফাহাদ সাহেবের সঙ্গে কালকের অনুষ্ঠান নিয়ে কিছু আলোচনা করবে। একা মানুষ সব সামলাচ্ছে। মেয়েগুলোও ছোট-ছোট ওরা কি বা সাহায্য করবে? ওনাকে একটু হেল্প করলে তাও যা কাজ হওয়ার হবে৷
সদর দরজা খোলার আওয়াজে সমুদ্র সিগারেট পায়ে পিষে ফেলে বারান্দা থেকে উঁকি মারলো। আয়না ছাদ থেকে এসেছে। সে দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে বললো, ” ব্যাচেলর পার্টি শেষ? ”
আয়না বলে , ” আমার শরীর খারাপ লাগছে।”
তখনই পিউ, আলিয়া, শ্রাবণ এসে ঢুকলো। শ্রাবণ বলে উঠে, ” ডাক্তার ভাই দেখো, রুগী আনছি। প্লিজ ভাবীকে ঔষধ খাইয়ে সুস্থ করে দাও।”
সমুদ্র তাকে অবলোকন করে বলে, ” রুমে গিয়ে এসি ছেড়ে বসো।”
আয়না নিজের রুমে এসেই ভারী লেহেঙ্গা পালটে সুতির জামা পড়ে ফ্রেশ হতে গিয়ে একবার বমি করে দেয়। মাথা ভীষণ ব্যথা করছে। মনে হচ্ছে অজ্ঞান হয়ে যাবে সে।
পিউ-আলিয়া, শ্রাবণ ড্রয়িংরুমে অপেক্ষায় আছে। ফাহাদ সাহেব নিজের রুমের দরজা লাগিয়ে ঘুমাতে গেছেন। আর এদিকে সমুদ্র নিচে গেলো।
একটু পর ফিরে এসে ও সুধালো, ” আয়না কোথায়?”
আলিয়া উত্তর দিলো, ” আপা রুমে। ভালোই অসুস্থ। বমি করেছে। প্লিজ দেখেন আপার কি হলো!”
সমুদ্র আয়নার রুমে ঢুকে যায়৷ ওরা কেউই ঢুকলো না। বাইরেই বসে থাকলো। সবার ভেতর চাপা দুশ্চিন্তা কাজ করছে৷
আয়না নিস্তেজ-কাহিল হয়ে বেডে পা তুলে বসে আছে। সমুদ্র আসায় সে নড়েচড়ে উঠলো। এরপর বলে, “আমার প্রচুর মাথাব্যথা করছে৷ মনে হচ্ছে মাথা ব্যথাতেই ছিঁড়ে যাবে।”
–” আর কোনো সমস্যা?”
–” হিল পড়ার জন্য পাও ব্যথা।”
সমুদ্রর হাতে একটা কালো ব্যাগ ছিলো। সে দু’টো মেডিসিন বের করে বলে, ” খাও।”
আয়না বিনাবাক্য ব্যয়ে, এমনকি ঔষধের নাম অব্দি না দেখে খেয়ে ফেলে বিছানায় শুয়ে পড়লো। সমুদ্র বের হয়ে যায়। আধা ঘণ্টা পরে আবার আসবে৷
সত্যি যখন সে আধাঘন্টা পর আয়নাকে দেখার জন্য যায়, তখন সে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সমুদ্র রিলিফ ফিল করে। যাক ঘুমের ঔষধ খেয়ে আরামে ঘুমাচ্ছে। ফিরে যাওয়ার আগ মুহূর্তে খেয়াল হলো ওর পা ব্যথা ছিলো। কালো ব্যাগটা থেকে একটা পেইন রিলিফ ক্রিম বের করে আয়নার সামনে এসে ফ্লোরে হাঁটু গেড়ে বসে। এরপর পায়ে মলম লাগিয়ে দিয়ে উঠে আসবার সময় দেখলো, হাতের মেহেদী শুকিয়ে ঝরে পড়ছে।
সমুদ্র হাতের উপর নকশা করা একটুখানি শুকনো মেহেদী সরিয়ে দেখলো, মেহেদী একদম রঙ হয়নি। কেমন খুব মৃদ্যু কমলা রঙের হয়েছে৷
ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ৮
কোথায় যেন পড়েছিলো, মেয়েদের বিয়ের মেহেদীর গাঢ় রঙ তখনই হয়, যখন স্বামী ভালোবাসে অনেক। তবে কী প্রাচীনকালীন কুসংস্কারও কখনো কখনো সঠিক বলে? কে জানে?