উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১২

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১২
আফিয়া আফরোজ আহি

রাতের আকাশ তারায় ভরা। মেঘেদের আড়াল থেকে এক ফালি চাঁদ উঁকি দিচ্ছি। মনে হচ্ছে লুকোচুরি খেলা হচ্ছে। মৃদু মন্দ বাতাস বইছে। হওয়ার ঝাপটায় গোছানো চুল গুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। উড়ছে আপন তালে, আপন ছন্দে। আরুর ব্যালকনিতে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। রুমে বসে থেকে বিরক্ত হয়ে গিয়েছি এতক্ষনে। সারাদিন বিছানায় থাকতে কার ভালো লাগে? একা একা রুমে বসে থেকে বোর লাগছে। আদ্র ভাই কিছুক্ষণ আগে এখানে বসিয়ে দিয়ে গেছে। কড়া কণ্ঠে শাসিয়ে গেছে একা একা না উঠতে। উনি এসে রুমে দিয়ে আসবে। বসে বসে ভাবছি বিকেলের কথা।

সবাই সবাই কে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে। ফুপ্পির মুখ থেকে হাসি যেন সরছেই না। হাসিতে জ্বল জ্বল করছে ফুপ্পির মুখ খানা। আব্বু, বড় আব্বু, ফুপা এরা একে অপরকে মিষ্টি মুখ করাচ্ছেন। সবার মুখেই লেগে আছে মিষ্টি হাসি। হঠাৎ চোখ পড়লো দরজার কাছে দাঁড়ানো ইভান ভাইয়ের দিকে। মানুষটা দরজায় হেলান দিয়ে বুকে হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে। তার মুখে না আছে হাসি আর না আছে কোন অনুভূতি। একদম অনুভূতিহীনের মতো। কেমন বিবশ চোখে চেয়ে আছে? চোখের পলক অবধি পড়েছে না।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আচ্ছা ইভান ভাইয়ের কি কষ্ট হচ্ছে? আমার আর আদ্র ভাইয়ের আকদ দেখে? ইভান ভাই এক মনে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। নিস্পলক চাহনি যাকে বল। তার এই চাহনির মানে আমি বুঝতে পারছি না। এভাবেই তাকিয়ে থাকার মানে কি! এমন তো নয় তিনি আমায় ভালোবাসতেন বা পছন্দ করতেন যে আমার বিয়ে হয়ে গেলে তিনি কেঁদে ভাসাবেন। তিনি নিজেও তো বিয়ে করেছে। উল্টো আমায় আশা দিয়ে তিনি অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু আমি তো এমন কিছুই করিনি। তাহলে?
ইভান ভাই এক পা ও নড়ছে না। এক জায়গায়ই দাঁড়িয়ে আছেন। এমন সময় আমার দিকে তাকালো আদ্র ভাই। আমায় দরজার দিকে তাকাতে দেখে নিজেও সেদিকে তাকালো। তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে নিলো। এর মাঝে ঈশিতা আপু বলে উঠলো,

“ইভান ভাই দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছো কেন? ভিতরে এসো। আদ্র ভাই আর রোদের আকদের মিষ্টি মুখ করে যাও”
ইভান ভাই ভরাট কণ্ঠে বললেন,
“তোরা খা। আমার ইচ্ছে করছে না”
বড় আব্বু খোঁচা দিয়ে বলল,
“ও খাবে না। ওকে সেঁধে লাভ নেই। ও ভেবেছে ও বিয়ে না করলে আমাদের বাড়ির মেয়ে বানের জলে ভেসে যাবে। তাকে আর কেউ বিয়ে করবে না। এখন আদ্রর সাথে রোদ মায়ের বিয়ে দেখে ওর হজম হচ্ছে না। মিষ্টি ওর গলা দিয়ে নামবে না”

ইভান ভাই কথার বিপরীতে কিছুই বললেন না। খালি মলিন হাসলেন। এক পা এক পা করে এগিয়ে এলেন আমার দিকে। পাশে দাঁড়িয়ে মাথায় হাত রাখলেন। আলতো হাতে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। চোখ তুলে তার দিকে তাকালাম। ইভান ভাই কোনো রকম হেসে বলল,
“দোয়া করি অনেক সুখী হো”
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে বড় বড় কদম ফেলে চলে গেলেন। আমি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। মনে হলো তিনি যেতে যেতে চোখ মুছলেন। কিন্তু কেন? ইভান ভাই কি তবে কান্না করছেন? কারণ কি? ইভার ডাকে সেদিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম। মিনিট দুই না যেতেই ভাঙচুরের শব্দ ভেসে এলো। মনে হচ্ছে কেউ জিনিস পত্র ছোড়াছুড়ি করছে। সবাই ছুটলো সেদিকে। আমি বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলে আদ্র ভাই এসে সাথে সাথে ধরে নিলেন। আগলে নিলেন নিজের সাথে।

“কি হলো উঠছিস কেন?”
“ওদিকে কি হচ্ছে? আমি যাবো”
“ওখানে মিষ্টি বিলাচ্ছে না যে তোকে যেতে হবে। তু্ই বস আমি যেয়ে দেখি”
“না, আমিও যাবো”
“রোদ জেদ করে না। এই অসুস্থ শরীরে তোর ওদিকে যাওয়ার দরকার নেই”
“আমি যাবো মানে যাবো। তুমি নিয়ে যাবে কিনা বলো?”
“তোকে কিছু বলাই বেকার। চল, নিয়ে যাচ্ছি”
আমার সাথে তর্কে না পেরে অগত্যা আদ্র ভাই আমায় ধরে নিয়ে চলল। ইভান ভাইয়ের রুমের ভিতর থেকে ভাঙচুরের শব্দ ভেসে আসছে। দরজা ভিতর থেকে আটকানো। বড় আম্মু দরজা ধাক্কাচ্ছে আর বলছে,
“ইভান বাবা দরজা টা খোল, পা*গলামো করে না”
কিন্ত কোনো সারা শব্দ নেই। একটার পর একটা জিনিস ভেঙেই যাচ্ছে। সবাই দরজা খুলতে বলছে কিন্তু দরজা খুলছে না। বড় আব্বু রাশভারী কণ্ঠে বললেন,

“ইভান দরজা খোলো। কি শুরু করেছো তুমি? দুদিন পর পর তামাশা শুরু করেছো? তোমার জন্য বাড়ির মানুষ গুলো সাফার করবে কেন? দরজা খোলো, খোলা বলছি”
খানিকক্ষণ বাদে ঠাস করে দরজা খুলে গেল। আমরা সবাই একটু সরে দাঁড়ালাম। পুরো রুমের অবস্থা খারাপ। ট্রি-টেবিল, ফুলদানি, আয়না, জিনিস পত্র, ইভান ভাইয়ের টেবিলের ওপরে থাকা বই পত্র সব ভেঙ্গে চুরে ফ্লোরে এলোমেলো হয়ে বিছিয়ে আছে। মনে হচ্ছে ঘরের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। কেউ আগানোর সাহস পাচ্ছে না। ইভান ভাইয়ের বউ এক কোণে জড় সর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
“কি সমস্যা? ঘরের এই হাল করেছো কেন? তোমার কি সমস্যা আজকে আমায় খুলে বলো। তোমার যখন যা মন চাইবে তখন তাই করবে? বাড়িটা কি তোমার কাছে রঙ মঞ্চ মনে হয়? যখন যেটা ইচ্ছে সেটাই করে বসলে? তুমি ইদানিং বড্ড বাড়াবাড়ি করছো ইভান। এর একটা বিহিত হওয়া প্রয়োজন। কি চাও তুমি? বলো?”
ইরা মেয়েটা ভীতু কণ্ঠে বলে উঠলো,

“আঙ্কেল আপনি ওকে কিছু বলুন। ও আমার কোনো কথাই শুনছে না”
ইরার এই সামান্য কথা আগুনে ঘি ঢালার কাজ করলো। ইভান ভাই সেকেন্ডের মাথায় ইরার কাছে গিয়ে ওর গলা চেপে ধরলো। চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
“তু্ই একদম কিছু বলবি না। তোর জন্য আমার সাজানো গোছানো জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেছে। তোর জন্যই এতো কিছু ঘটেছে। তোকে আমি নিজ হাতে শেষ করবো দেখে নিস্। তোর মরণ আমার হাতে লেখা আছে”
ইরার দম বন্ধ হয়ে আসছে। মেয়েটার অবস্থা খারাপ। বড় আম্মু যেয়ে ইভান ভাইকে ওর থেকে ছাড়িয়ে নিলেন। ঠাস করে চড় বসিয়ে দিলেন ইভান ভাইয়ের গালে।
“তোকে আমি এই শিক্ষা দিয়েছি? নিজের বউয়ের সাথে কিভাবে আচরণ করতে হয় জানিস না? দিন দিন অমানুষ হয়ে যাচ্ছিস তু্ই। আমরা তো তোর ঘাড়ে ওকে চাপিয়ে দেই নি। তু্ই নিজ ইচ্ছেতে বিয়ে করে নিয়ে এসেছিস। তাহলে এমন আচরণ করছিস কেন?”

ইভান ভাই কোনো উত্তর দিলেন না। সোজা রুম পেরিয়ে ব্যালকনিতে চলে গেলেন। দুম করে ব্যালকনির দরজা আটকে দিলেন। আঘাত করতে শুরু করলেন দেওয়ালে। বোঝাই যাচ্ছে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টায় আছে। ছোট বেলা থেকেই ইভান ভাইয়ের রাগ প্রচুর বেশি। যখন তার রাগ উঠতো তিনি দেওয়ালে আঘাত করতেন। অতঃপর মিনিট পাঁচেক বাদে সব শান্ত। একে একে সবাই ইভান ভাইয়ের রুম থেকে বেরিয়ে এলেন। তাকে তার মতো ছেড়ে দিলো।
ড্রয়িং রুমে সবাই চিন্তিত মুখে বসে আছে সবার চিন্তার একটাই কারণ সেটা হলো ইভান ভাই। বিগত কয়েক দিনে তার করা আচরণ। সব কেমন অদ্ভুত, উদ্ভট। এর আগে কখনো তাকে এরূপ আচরণ করতে আমরা কেউই দেখিনি। ইভান ভাই রাগী হলেও এতটা হিংস্র নয়। আজ তার যেই রূপ প্রকাশ পেয়েছে সে এক অন্য মানুষ। সবাই তাকে নিয়ে চিন্তিত। সবার মাঝে আদ্র ভাই বলে উঠলো,

“বড় মামু আমার একটা কথা ছিলো”
“হ্যাঁ বল কি বলবি”
“আমি রোদকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে চাই। এই পরিবেশে আমি ওকে রাখতে চাই না। এমনি ওর শরীরের অবস্থা বেশি ভালো না। তার ওপর ইভানের এমন আচরণ ওর ওপর ইফেক্ট করবে। ও আরো অসুস্থ হয়ে যাবে। ও আপাতত আমাদর বাড়িতে থাকুক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমি নিজে এসে ওকে দিয়ে যাবো”
“ভেবে দেখছি”
আদ্র ভাই শক্ত কণ্ঠে বলল,
“এখানে ভাবাভাবির কিছুই নেই। আমি ওকে এই পরিস্থিতিতে রেখে কখনোই যাবো না”
আদ্র ভাইয়ের সাথে তাল দিয়ে ফুপ্পিও বলল,
“হ্যাঁ ভাইজান সেটাই ভালো হবে। জায়গা পরিবর্তন হলো রোদেরও ভালো লাগবে। কয়েকদিন থেকে সুস্থ হলে চলে আসবে”

আব্বু, বড় আব্বু এই নিয়ে কথা বলছে। কথা বলা শেষে জানালো,
“রোদ তো অসুস্থ। ও যাবে কিভাবে?”
“সেটা আমি দেখে নিবো। আপনারা জাস্ট অনুমতি দিন”
আব্বু বলল,
“ঠিক আছে তাহলে তোমরা রোদকে নিয়ে যাও”

বিছানায় বসে ভাবছি ইভান ভাইয়ের অদ্ভুত আচরণের কারণ কি হতে পারে। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছি না। এর মাঝে ইভা, ঈশিতা আপু আর রোশনি এলো রুমে। তিনজন পুরো ফুরফুরে মেজাজে আছে। তাঁদের এতো খুশির কারণ কি? একটু আগেই তো সবার চেহারার বারোটা বেজে ছিলো এখন কি এমন হলো যে চেহারায় খুশি জ্বল জ্বল করছে। ঈশিতা আপু বলল,
“রোদ তোর ড্রেস প্যাকিং করতে হবে। আমি ড্রেস বের করছি। তু্ই বল কোনটা, কোনটা নিবি”
ঈশিতা আপু আলমারি খুলে একটা একটা করে ড্রেস বের করে বিছানায় রাখছে।
“প্যাকিং করতে হবে কেন? আমরা কি কোথাও যাচ্ছি?”
“আমরা না শুধু তু্ই যাচ্ছিস?”
“কোথায়?”
“শশুর বাড়ি”

“কি সব আজব কথা বলছো! আমি শশুরবাড়ি যেতে যাবো কেন? বড় আব্বু তো বলেছে আমার অনার্স শেষ না হওয়া পর্যন্ত তুলে দিবে না। তাহলে?”
“তোমার বর মহাশয় বলেছে তোমায় রেখে সে যাবে না”
“কি? আদ্র ভাই এগুলো বলেছে?”
পাশ থেকে রোশনি বলল,
“হ্যাঁ। বড় আব্বু বলেছিলো ভেবে বলবে কিন্তু আদ্র ভাই তার মুখের ওপর বলেছে আমি রোদকে না নিয়ে যাবো না। আমার বউ আমি নিয়েই যাবো। বিয়ে করেছি কি বউ রেখে যাওয়ার জন্য? ভাবা যায় আদ্র ভাই এগুলো বলেছে? তোমার জন্য আমাদের আদ্র ভাই সবার সামনে বেহায়া হয়ে যাচ্ছে। আর তুই বসে বসে আরাম করছো?”

“সত্যি? আদ্র ভাই এসব বলেছে?”
রোশনি মুখটা গম্ভীর করে বলল,
“তোমার কি আমাদের কথা মিথ্যা মনে হচ্ছে? আমি তোমাকে মিথ্যা কথা বলেছি? তুমি আমায় অবিশ্বাস করছো আপু?”
আমার মাথায় হাত। শেষ পর্যন্ত আদ্র ভাই সবার সামনে এভাবে বলেছে! এখন আমি সবার সামনে যাবো কিভাবে? নাহ! উনি আমার মান সম্মান একটুও রাখলেন না। সব ডুবিয়েই দিলেন। আমার কাঁদো কাঁদো মুখ্ দেখে তিন জনই একসাথে ফিক করে হেসে দিলো। ইভা হাসতে হাসতে বলল,
“আরে রোশনি বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলছিলো। আদ্র ভাই এতটা বলেনি। তু্ই কাঁদিস না। আদ্র ভাই বলেছে তোকে কিছুদিনের জন্য নিয়ে যাবে। তু্ই সুস্থ হলে দিয়ে যাবে”
হাফ ছেড়ে বাচলাম। বজ্জাত রোশনির বাচ্চা! আরেকটু হলে লজ্জায় আমি ডুবে মরতাম। ঈশিতা আপু বলল,

“কি কি নিবি বল। আমি গুছিয়ে দিচ্ছি”
“আম্মুকে এসে গুছিয়ে দিয়ে যেতে বলো”
“মেঝ আম্মু কাজ করছে। তু্ই বল আমি গুছিয়ে দিচ্ছি”
আমি বলে বলে দিলাম আর ঈশিতা আপু গুছিয়ে দিলো। বসে বসে তিনজন কথা বলছি সে সময় রুমে ঢুকলো আদ্র ভাই। দরজায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“সব রেডি?”
ঈশিতা আপু বলল,
“হ্যাঁ”

আদ্র ভাই কোনো কথা বলল না। এগিয়ে এসে ফট করে কোলে তুলে নিলো। হুট্ করে এমন হাওয়ায় নিজের ভারসাম্য বজায় রাখতে আদ্র ভাইয়ের গলা জড়িয়ে ধরলাম।
“কি হলো? আচমকা কোলে তুললে কেন?”
“কোলে না তুললে যাবি কিভাবে?”
“কেন? হেঁটে হেঁটে”
“তোর পায়ে যে ব্যথা সেটা কি ভুলে বসেছিস?”
“ব্যথা হলেও সমস্যা নেই। তুমি আমায় ধরে নিয়ে চলো। তাও কোল থেকে নামাও”
রোশনি হাত তালি দিয়ে বলে উঠলো,
“তোমাদের দুজনকে একসাথে হেব্বি লাগছে। মনে হচ্ছে কোনো মুভির সিন্ দেখছি। নায়ক এক ঝটকায় এসে নায়িকাকে কোলে তুলে নিয়েছে”

রোশনির কথায় লজ্জা পেয়ে গেলাম। ইভান ভাইয়ের রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় খেয়াল করলাম তিনি এই দিকেই তাকিয়ে ছিলেন। তার থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকালাম। আদ্র ভাই গট গট করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাচ্ছে। আমি তার ঘাড়ের কাছের শার্ট মুঠোয় নিয়ে নিলাম। ধীর কণ্ঠে বললাম,
“প্লিজ আমায় নামিয়ে দেও। আমি হেঁটে যাবো”
আদ্র ভাই দাঁড়িয়ে পড়লেন। ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন,
“কেন? কি হয়েছে? সমস্যা কি?”
“সবার সামনে এভাবে যেতে আমার লজ্জা লাগবে”
ওনার নির্লিপ্ত কণ্ঠ,

“লজ্জা পাওয়ার কি আছে? আমি আমার বিয়ে করা বউকে কোলে তুলেছি কোনো পর নারীকে না”
“তোমার না লাগলেও আমার লাগবে”
“তোর লাগলে তু্ই চোখ বুজে থাক”
কি আর করার উনি তো শোনার মানুষ না! তাই অগত্যা মুখ গুঁজে রইলাম আদ্র ভাইয়ের বুকে। এমন ভাব ধরলাম আমি ঘুমিয়ে আছি। এতে অন্তত লজ্জা পাওয়া থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে। আদ্র ভাই নিচে নামলে ফুপ্পি জিজ্ঞেস করে উঠলো,

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১১

“কিরে আদ্র ঘুমন্ত মেয়েটাকে নিয়ে এসেছিস?”
আদ্র ভাই অবাক হলো। আমার দিকে তাকিয়ে দেখলো আমি চোখ বুজে আছি। চোখের পাঁপড়ি কাঁপছে। উনার বুঝতে দেরি হলো না আমি ভান ধরেছি। আদ্র ভাই বলল,
“আমি যখন নিয়ে এসেছি তখন জেগেই ছিলো। আসতে আসতে হয়তো ঘুমিয়ে পড়ছে। এখন বাড়ি চলো দেরি হয়ে যাচ্ছে”
কথা গুলো বলেই সোজা হাঁটা দিলেন সদর দরজার দিকে।

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১৩