উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ২৪

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ২৪
আফিয়া আফরোজ আহি

লাল আভায় ছেয়ে গেছে পুরো আকাশ। রক্তিম লালিমা অপূর্ব সুন্দর লাগছে দেখতে। লাল নীলের সমারোহে সেজে উঠেছে আকাশ। দীর্ঘ সময় ঘুমিয়ে সবে ঘুম থেকে উঠেছি। পরীক্ষা দিয়ে বাসায় আসতে আসতে দুটোর মতো বেজে গেছে। এসে শাওয়ার নিয়ে খেয়ে দেয়ে ঘুম। পরীক্ষা প্রায় শেষের দিকে। এখন শুধু মাত্র প্রাকটিকাল পরীক্ষা গুলো বাকি আছে। কতো গুলো দিন পর শান্তির ঘুম দিলাম। বিগত এক মাস মনে হয় জেলে বন্দি ছিলাম। পড়া, পরীক্ষার টেনশন সব মিলিয়ে দিন কেটেছে। এখন শুধু মাত্র শেষ প্রাকটিকাল পরীক্ষা হয়ে গেলে জেল থেকে ছাড়া পাবো। অতঃপর বিন্দাস কয়েকদিন ছুটি। ঘুরবো ফিরবো মজা করবো।

সন্ধ্যা বেলা নিচে নামছি। কতো গুলো দিন হয়ে গেল আড্ডা দেওয়া হয়না। নিচে ঈশিতা আপু, রোশনি, ভাবি বসে আড্ডা দিচ্ছে। এটা ওদের প্রতিদিনের নিয়ম। আড্ডা না দিলে ওদের কোনো কাজেই যেন মন বসে না। আমায় দেখে রোশনি ছুটে এলো। আমায় ধরে ঘুরাতে ঘুরাতে বলল,
“ঈশিতা আপু দেখ আমাদের আড্ডায় কে এসেছে। স্বয়ং বইয়ের মাঝে ডুবে থাকা ব্রিলিয়ান্ট আপা,রোদ আপা এসেছেন আমাদের আড্ডায়। আমাদের আড্ডা তো ধন্য হয়ে গেল। গিনিস বুকে নাম উঠবে আমাদের আড্ডার। তুমি ভাবতে পারছো?”
ঈশিতা আপু ওর সাথে তালে তাল মিলিয়ে বলল,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“তুই একদম ঠিক বলেছিস। তা মিস থুক্কু মিসেস রোদ আপনার আমাদের আড্ডায় আসতে কষ্ট হয়নি তো? আগে যদি বলতেন তাহলে আমরা আপনার জন্য যানবাহনের ব্যাবস্থা করতাম। আপনাকে এতো কষ্ট করে আসতে হতো না”
“এই তোমরা কি শুরু করেছো বলো তো? এভাবে খোঁচাচ্ছ কেন? এমন করলে কিন্তু আমি চলে যাবো”
“ওমা আমরা তোকে খোঁচাবো কেন? আমরা তো তোকে সম্মাননা দিচ্ছিলাম”
“আমার এতো সম্মাননা লাগবে না। আমি এমনি ঠিক আছি”
“পরীক্ষা কেমন হয়েছে?”
“আলহামদুলিল্লাহ ভালোই হয়েছে। ইভা কোথায়?”
“কোথায় আবার যেয়ে দেখ পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে। এই মেয়ে যে কতো ঘুমাতে পারে আল্লাহ মালুম! রাত জেগে পড়িস তুই আর পরে পরে ঘুমায় ও”
“দাড়াও আমি ওকে ডেকে নিয়ে আসছি”

ছুট লাগলাম ইভার রুমে। দরজার খুলতে নজরে এলো চাদর জড়িয়ে ঘুমিয়ে থাকা ইভার পানে। কি সুন্দর ঘুমিয়ে আছে। গভীর ঘুমে বিভোর ম্যাডাম। কি করা যায়! কি করা যায়! ভাবতে ভাবতে নজরে এলো ইভার ব্যালকনিতে হাঁটতে থাকা বিড়ালের দিকে। রোশনি ক্যাট লাভার। এই বিড়াল টা এনেছে কয়েক মাস হবে। অনেক যত্ন করে এটার। অপর দিকে আমার বিড়ালে ফোবিয়া আছে। বিড়াল দেখলে আমি অনেক ভয় পাই। ইভাও সেম। বিড়াল সহ্যই করতে পারে না। বিড়ালের আওয়াজ শুনলে লাফ মারে পাঁচ টা। ভয়ে ভয়ে এগিয়ে গেলাম বিড়াল খানার কাছে। কোনো রকম তুলে এনে টুস করে ছেড়ে দিলাম ইভার চাদরের নিচে। অতঃপর চিৎকার করে ডাকতে শুরু করলাম,

“ইভা তাড়াতাড়ি ওঠ! দেখ তোর চাদরের নিচে বিড়াল”
ইভা ঘুম ঘুম কণ্ঠে জবাব দিলো,
“দেখ বনু ঘুম পাচ্ছে ঘুমাচ্ছি ডিস্টার্ব করিস না”
“সত্যি। তুই বিশ্বাস না হলে উঠে দেখ”
“সর যাতো ভাগ এখান থেকে”
আমায় পাত্তা দিলি নাতো! এবার বোঝ মজা! বিড়ালটা চাদরের ভিতরে হাটাহাটি করছে। ইভার গাঁয়ে মোলায়েম স্পর্শ অনুভূব হতেই ওর ঘুম ছুটে গেল। ফট করে চোখ খুলে উঠে বসলো। তড়িৎ গতিতে চাদর তুলে দিলো এক লাফ। এক লাফে বিছানা থেকে ফ্লোরে। চিৎকার করতে শুরু করলো,
“আম্মু, এই আম্মু। এই বিড়াল আমার রুমে কোথা থেকে এলো”
ইভা রীতিমতো লাফাচ্ছে। ওর লাফানো দেখে হাসতে হাসতে ফ্লোরে লুটোপুটি খাচ্ছি। ওর এমন আচরণ দেখে বেচারা বিড়াল ভয়ে বিছানার এক কোণে ঘাপটি মেরে বসে আছে। এর মাঝে সবাই ছুটে এলো ইভার রুমে। বড় আম্মু তাড়াহুড়ো করে জিজ্ঞেস করলো,

“কি হয়েছে ষাঁড়ের মতো চেচাচ্ছিস কেন?”
“বিড়াল আমার রুমে কি করছ? এটাকে সরাও। তাড়াতাড়ি সরাও”
ঈশিতা আপু হাপাতে হাপাতে বলল,
“ফাজিল মেয়ে যেভাবে চিল্লিয়েছিস আমরা তো ভেবেছি বাড়িতে বুঝি ডাকাত পড়েছে। একদম ভয় পাইয়ে দিয়েছিস”
সবার মাঝে ইভার চোখ পড়লো রোশনির ওপর। আচমকা সোফা থেকে নেমে রোশনির দিকে ছুটে এলো। রোশনি ওকে তেড়ে আসতে দেখে দৌড় লাগিয়েছে। ইভা ওর পিছু ছুটতে ছুটতে বলল,
“পে*ত্নী, শা*ক*চু*ন্নি তোকে একদিন বলেছি না বিড়াল তোর রুমে আটকে রাখবি? সামলাতে না পারলে এনেছিস কেন? তোর বিড়ালকে এখন জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলে দিবো”
“আমি তো ওকে রুমে রেখে এসেছিলাম ও তোমার রুমে কি করে এলো আমি নিজেও জানি না। তুমি আমার বেচারি মিনি কে কিছু করো না প্লিজ”
কে শোনে কার কথা। ইভা থামার নামও নিচ্ছে না। ওদের কাণ্ড দেখে হাসতে হাসতে কাহিল আমরা।

সকাল সকাল ঘুম ভেঙ্গে গেল। আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে বসলাম। এসি চালু থাকায় অল্প স্বল্প ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। ভালো মতো ওড়না খানা গাঁয়ে জড়িয়ে ফ্রেশ হতে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে ব্যালকনির দিকে পা বাড়ালাম। ফুপ্পিদের বাড়ি এসেছি কাল। অনেক জোরাজুরি, ব্ল্যাকমেল করে আমায় এনেছে। আরুর ব্যালকনি টা খানিকটা ছোটো। আমার ব্যালকনির মতো বড় না। ব্যালকনির এক কোণে ছোটো টি-টেবিল সাথে দুটো চেয়ার। চেয়ারে বসে বাহিরের সৌন্দর্য উপভোগ করার চেষ্টা করছি। তবে কিছুই ভালো লাগছে না। আরুর ব্যালকনিতে না আছে কোনো ফুল গাছ আর না আছে কিছু। এখান থেকে বাগানের সামান্য অংশ দেখা যাচ্ছে তাও আবার ফাঁকা। একদম মরুভুমির ন্যায়। কোনো গাছপালা নেই।

মন খারাপ হয়ে গেল। ভাবলাম নিচে যাওয়া যাক। সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে খেয়াল করলাম ড্রয়িং রুমে কেউ নেই। নজর পড়লো ড্রয়িং রুমের ঘড়িতে। সবে সাড়ে ছয়টা বাজে। সদর দরজা পেরিয়ে এগিয়ে গেলাম বাগানের দিকে। পুরো বাগানে ঘুরেও মজা পেলাম না। ফুপ্পিদের বাগানে তেমন কিছুই নেই। আমাদের বাগানের এক পাশটা জুড়ে বড় আম্মু শাক সবজি লাগিয়েছে। তার অপর পাশে আমার লাগানো এক গাদা ফুল গাছ। অন্য পাশে সিটিং এরিয়া। আর ফুপ্পিদের বাগানে এক পাশে সিটিং এরিয়া অন্য পাশ ফাঁকা। দুই একটা গাছ আছে তাও সেগুলো আমার মন মতো না। মিনিট পাঁচের মধ্যেই বিরক্ত হয়ে উঠলাম। ভাবনায় পরে গেলাম কি করা যায়! চট করে মাথায় বুদ্ধি এলো। হেসে পা বাড়ালাম বাড়ির মধ্যে। কিচেনে প্রবেশ করতেই খেয়াল করলাম দুজন মেড কাঁটা কুটি করেছে। লতা আপা আমার দেখে সুধালো,

“কিছু লাগবে ভাবিমনি?”
“ভাবি মনি ডাকছো কেন আপা? আগে তো রোদ সোনা বলেই ডাকতে”
“তুমি আমাদের আদ্র ভাইয়ের বউ, এ বাড়ির একমাত্র বউ তোমাকে এখনো নাম ধরে ডাকলে চলবে? তুমি এখন থেকে আমাদের ভাবিমনি”
“কিন্তু আমি তো তোমাদের ছোটো”
“আমরা অতশত বুঝিনা। আমরা তোমাকে ভাবিমনি বলেই ডাকবো”
কি আর করার এদের কিছু বলে লাভ নেই। প্রয়োজনীয় সব কিছু খুঁজে খুঁজে হাতের কাছে রাখছি। নাস্তা বানানো শুরু করলে যেন হাতের কাছেই পেয়ে যাই। লতা আপা এগিয়ে এসে বলল,
“ভাবি কি করবে আমায় বলো আমি করে দিচ্ছি”
“সবার জন্য নাস্তা বানাবো। তুমি আমায় একটু হেল্প করলেই হবে। আমি বাকিটা করে নিতে পারবো”
“আম্মা যদি এসে দেখে আমি তোমায় চুলার কাছে ঘেঁষতে দিয়েছি তাহলে আমায় অনেক বকবে। তুমি সরো আমি করে দিচ্ছি”

লতা আপা ছোটো বেলা থেকেই ফুপ্পিদের বাড়িতে বড় হয়েছে। তার বয়স যখন প্রায় দশ বছরের কাছাকাছি তখন থেকেই আপা ফুপ্পিদের বাড়িতে থাকে। ফুপ্পিকে আম্মা আর ফুফা কে আব্বা ডাকে। ফুপ্পিও তাকে মেয়ের মতোই আদর করে। নাস্তা বানানো প্রায় শেষের দিকে। এমন সময় রান্নাঘরে প্রবেশ করলো ফুপ্পি। আমায় রান্না করতে দেখে চমকে উঠলো।
“কিরে তুই এখানে? এতো সকালে উঠছিস কেন? পরীক্ষা দিয়ে রাত জেগে জেগে চোখের নিচে কালী পরে গেছে। কটা দিন ঘুমাবি,রেস্ট নিবি তা না করে রান্না ঘরে কি করছিস?”
দাঁত বের হেসে বললাম,
“নাস্তা বানাতে এসেছি। নাহয় শাশুড়ি আম্মা যদি বকে। আম্মুর কাছে যদি বিচার দেয় যে আম্মুর মেয়ে কোনো কাজের না। তাঁদের বাড়ির বউ হওয়ার যোগ্য না তখন কি হবে? তাই আগে ভাগে শশুর বাড়ির সবার মন জয় করার চেষ্টা করছি আরকি”

“ওরে পাকা মেয়ে। পাকা পাকা কথা শিখেছিস দেখছি। এটা তোরও বাড়ি। কি শশুর বাড়ি, শশুর বাড়ি করছিস?”
কোমরে হাত গুঁজে পুনরায় বলল,
“তা বউমা আপনি বউ সাজতে আসছে সালোয়ার কামিজ পরে? শুশুর বাড়িতে কোনো বউকে সালোয়ার কামিজ পড়তে দেখছিস?”
ভাব নিয়ে বললাম,
“আমি স্মার্ট বউ”
ফুপ্পি হেসে দিলো। কান টেনে ধরে বলল,
“ওরে পাজি মেয়ে”
“আরে আম্মু কি করছো? কানে লাগছে তো!”
“লাগুক। একটু লাগার দরকার আছে। সকাল থেকে পাকামো করেছিস তাই এটা শাস্তি”
“মানুষ তো তোমাকে জল্লাদ শাশুড়ি মা বলবে”
ফুপ্পি হেসে চাপর দিলো। উৎসাহ নিয়ে সুধালো,

“যা এক দৌড়ে যেয়ে শাড়ি পরে আয়। শাড়ি না পড়লে বউ বউ লাগে না। তুই শাড়ি পরে আমার সামনে দিয়ে ঘুর ঘুর করবি তাহলে আমার বাড়িটা পরিপূর্ণ হবে। আমি তো চেয়েছিলাম তোর মতো একটা পুতুল ঘরে আনবো যে শাড়ি পরে টুক টুক করে আমার পুরো বাড়ি মাতিয়ে রাখবে”
মুখটা দুঃখী দুঃখী করে বললা,
“কিন্তু আমি তো শাড়ি আনিনি”

“তাতে কি? আমার শাড়ি পড়বি। চল তোকে শাড়ি বের করে দেই। তুই রুমে যা আমি শাড়ি নিয়ে আসছি”
মাথা নেড়ে সায় জানিয়ে চলে এলাম। নাস্তা বানানো শেষ এখন শুধু টেবিলে এনে পরিবেশন করা বাকি। বিছানায় বসে পা দুলাচ্ছি এমন সময় রুমে এক গাদা শাড়ি হাতে ফুপ্পি প্রবেশ করলো।
“এতো গুলো শাড়ি দিয়ে আমি কি করবো? একটা হলেই তো হতো”
“তুমি যতদিন আমার বাড়ি থাকবি ততদিন শাড়ি পড়েই থাকবি। আমার মনের ইচ্ছে পূরণ হবে”
শাড়ি গুলোর মাঝে আমার মন মতো একখানা শাড়ি খুঁজছি। সব গুলোই ভীষণ সুন্দর। সব গুলোর মাঝ থেকে জাম কালারের এক খানা শাড়ি বেঁচে নিলাম। শাড়িটা ভীষণ সুন্দর। সোনালী সুতার কাজ বিশিষ্ট শাড়ি। মুখ ভার করে বললাম,

“কিন্তু আমার সাইজের ব্লাউজ কোথায় পাবো?”
“এটার সাথে ম্যাচিং যেটা আছে ওটা তোর হবে। আমি যখন তোর মতো ছিলাম তখনকার শাড়ি এগুলো। হঠাৎ মোটা হয়ে যাওয়ায় আর পড়া হয়নি। যত্নে তুলে রেখেছিলাম। ভেবেছি ছেলের বউ হলে তাকে পড়াবো”
পুনরায় বলল,
“তুই শাড়ি পড়ে নিচে আয় আমি যাচ্ছি”
শাড়িটা নিয়ে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলাম। আমি মোটামুটি ভালো ভাবেই শাড়ি পড়তে পারি। শাড়ি আমার ভালোবাসার একটা জিনিস। শাড়িতে বড্ড বাজে ভাবে আসক্ত আমি। সেই সুবাদে অনেক আগেই শাড়ি পড়া শিখেছি। পাঁচ মিনিটের মাঝে শাড়ি পড়া শেষ। আঁচলটা পিনাপ করে রুম থেকে বের হলাম। কিচেনে যেয়ে দেখি ফুপ্পি কফি বানাচ্ছে। উঁকি ঝুঁকি দিয়ে শুধালাম,

“কফি কার জন্য?”
“কার জন্য আবার এ বাড়ির লাট সাহেবের পুত্রের জন্য”
কফি বানানো শেষ হলে ফুপ্পি আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,
“যাতো আদ্র কে কফি দিয়ে আয়”
“আমি যাবো?”
“তুই নাতো কে? এখানে অন্য কাউকে দেখতে পাচ্ছিস?”
“না”
“আমার হাতে কাজ আছে তুই যেয়ে দিয়ে আয়”

অগত্যা কফির কাপ হাতে এগিয়ে চললাম আদ্র সাহেবের রুমে। দরজার ভিরিয়ে রাখা। আলতো হাতে ধাক্কা দিতেই খুলে গেল। রুমে ঢুকতেই শরীর শিউরে উঠলো। আলো আঁধার খেলা করছে রুমে জুড়ে। লাইট সব নিভানো। জানালার পর্দা ভেদ করে স্বল্প আলো এসে আলোকিত করে তুলেছে। এগিয়ে গেলাম বিছানার দিকে। আদ্র ভাই উবু হয়ে শুয়ে আছে। বিছানার পাশে টেবিলে কফি রেখে পাশে বসলাম। মানুষটা কি সুন্দর নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে। বিগত দিন গুলোতে আমার চেয়েও বেশি ওনার খাটুনি গেছে। আমি পরীক্ষা দিয়ে এসে ঘুমাতে পারলেও উনি তো ঘুমায় নি। রাতেও আমার সাথে জেগে থাকতো। ঘুমাতে বললেও শুনতো না। ইচ্ছে করলো চুল গুলো ছুঁয়ে দিতে। আলতো হাতে চুলে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম। মিহি কণ্ঠে ডাক দিলাম,

“আদ্র ভাই ওঠো। সকাল হয়ে গেছে। অফিসে যাবে না?”
উনি ঘুম ঘুম কণ্ঠে জবাব দিলেন,
“আরু যাতো জ্বালাস না”
“আরু না আমি”
এবার বোধ হয় মিস্টারের টনক নড়লো। এক ঝটকায় চোখ মেলে চাইলো। সেকেন্ড দুই তাকিয়ে আবার চোখ বুঝে ফেলল। ঘুম ঘুম কণ্ঠে বলল,
“সারারাত স্বপ্নে জ্বালিয়ে শান্তি হয়নি? এখন বাস্তবেও জ্বালানো শুরু করে দিয়েছিস? তোর জ্বালায় কি আমি একটু শান্তিতে ঘুমাতেও পারবো না? আর কতো জ্বালাবি আমায়? না কাছে আসবি আর না আসতে দিবি। হাত বাড়িয়ে ছুঁতে গেলেই দেখি তুই নাই। আশেপাশে সব ধোয়াসা। আমায় এতো জ্বালাস কেন রৌদ্রময়ী?”

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ২৩

উনার কণ্ঠে এক আকাশ সমান অভিমান, অভিযোগ।
“চোখ মেলে দেখো এইতো আমি”
“উহু আমি চোখ মেলবো না। তুই আবার ধোয়াশায় মিলিয়ে যাবি। আমায় এই দহনে পুড়িয়ে কি শান্তি পাস বল তো রৌদ্রময়ী?

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ২৫