উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ৩১
আফিয়া আফরোজ আহি
ব্যাস্ত শহরে ব্যাস্ততায় মগ্ন প্রতিটা মানুষ। ব্যাস্ততার যেন শেষ নেই। বিগত কয়েক দিন যাবত ঈশিতা আপুর বিয়ের ব্যাস্ততায় কাটছে সবার দিন। এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে ডেট ঠিক হওয়ায় সবাইকে খাটতে হচ্ছে। পুরো বাড়ি ভর্তি কাজিন মহল। সবার মাঝে একজন মিসিং সে হলো ইভান ভাই। ওনার দেখা পাওয়া যায়না বললেই চলে। ভাইয়াকে ফোন দিলে রিসিভ করে বলবে হয়তো ব্যাস্ত আছে নয়তো ফোন রিসিভ হবে না। দেশ ছাড়ার পর মানুষটা আরো বদলে গেছে। কারো সাথেই তার তেমন যোগাযোগ নেই। সেদিন ঈশিতা আপু ভিডিও কলে অনেক জোরাজুড়ি করছিলো দেশে আসার জন্য। ইভান ভাই সামান্য ঠোঁট এলিয়ে হেসে বলেছিল,
“সরি রে। কাজের অনেক প্রেসার। আসতে পারবো না”
ঈশিতা আপু মুখ ভার করে বলল,
“বুঝেছি আমি তো তোমার নিজের বোন না, তাই না! আমায় বিয়েতে আসববে কেন?”
“ইভা কি একাই আমার বোন? তোরা বাকিরাও তো আমার বোন। আমি তোদের কখনো আলাদা নজরে দেখিনি। তোরা সবাই সমান আমার কাছে। তবে বিশ্বাস কর সত্যিই কাজের চাপ অনেক বেশি। চিন্তা নেই দেখবি কোনো একদিন হুট করে এসে চমকে দিবো তোদের”
“সেই অপেক্ষায় আমরা সবাই বসে আছি”
হই হুল্লোড়ে কেটে যাচ্ছে সময়। শপিং মলে ঘুর ঘুর করছি সবাই। যার যেটা পছন্দ হচ্ছে সে সেটা নিচ্ছে। এদিকে আমার কিছুই পছন্দ হচ্ছে না। মুখ ভার হয়ে এলো। সবার শপিং প্রায় শেষ। আর এদিকে আমি একটা ড্রেস ও পছন্দ করতে পারিনি। ঈশিতা আপু শেষমেষ বিরক্ত হয়ে বলল,
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
“তুই কি আমার বিয়েতে এটেন্ড করবি না ভেবেছিস?”
“তোমার এমন মনে হলো কেন?”
“সবার কেনা শেষ আর তুই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিস। এতো এতো কালেকশন। একটাও পছন্দ হচ্ছে না?”
মাথা দুদিকে নাড়িয়ে নাকোচ করলাম। ঈশিতা আপুও মুখ ভার করল। তার মুখ ভার দেখে পাশ থেকে শিহাব ভাইয়া বলে উঠলো,
“রোদ বোন আমার কিছু তো একটা নিবে নাকি? দেখো তোমার বোনের ও মন খারাপ হয়ে গেছে। এভাবে দুজনে মন খারাপ করে বসে থাকলে হবে? বিয়ের আনন্দ টাই মাটি হয়ে যাবে। জীবনে বিয়ে একবারই করবো। এতেও যদি বউ মুখ ভার করে বসে থাকে তাহলে কি আমার ভালো লাগবে? তুমিই বলো”
আমার জন্য খামোখা আপুর মন খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু আমারই বা কি করার? পছন্দ না হলে নিবো কিভাবে? সব চেয়ে বড় কথা পছন্দ টা ফ্যাক্ট না। ফ্যাক্ট হলো শপিংয়ে সবাই এলেও আদ্র ভাই আসেনি। ওনার নাকি জরুরি মিটিং পড়ে গেছে। কথাটা শুনেই মন খারাপ হয়ে গিয়েছে। এখন কিছুই ভালো লাগছে না। সব কেমন বিষাদ বিষাদ লাগছে। হুট্ করে মনে হলো এই মানুষ আমার হৃদয় জুড়ে বিচরণ করছে। ওনাকে ছাড়া কিছু ভালো লাগছে না। সব কেমন বিষাদময়। আশেপাশে সবাই আছে তাও যেন কেউ নেই, কেউ নেই। আদ্র ভাই গোটা মানুষটা আমায় জ্বালিয়ে মা*রছে ইদানিং। ওনাকে ছাড়া কিছুই ভালো লাগে না। ইচ্ছে করে সারাদিন ওনাকে চোখের সামনে বসিয়ে রাখি। উনি আমার সামনে বসে থাকবে আর আমি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মানুষটাকে দেখবো। ততক্ষন অবধি দেখবো যতক্ষণ না আমার তাকে দেখার তৃষ্ণা মিটবে। নিজের ভাবনায় নিজেই চমকালাম। এমন ভাবনার কারণ কি? শুনেছি মানুষ প্রেমে পড়লে তার ভালোবাসার মানুষটাকে সারাদিন দেখতে চায়, তার সাথে সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত কাটাতে চায়। আমার অবস্থাও এখন তেমনি। তবে কি আমি আদ্র ভাইকে ভালোবাসতে শুরু করেছি? নাকি অন্য কিছু? মাথা হ্যাং হয়ে আসছে। কিছুই ভালো লাগছে না। শাড়ির দোকানে ঢুকেছে সবাই মিলে। আম্মু, বড় আম্মু, মেঝ আম্মু, ছোটো আম্মু, ঈশিতা আপু, প্রিয়ম ভাবি সবাই যে যার পছন্দ মতো শাড়ি দেখছে। এদিকে আমি এক কোণে বসে রয়েছি মুখ ভার করে। রোশনি এসে বলল,
“আপু চলো তুমি আর আমি ঘুরে আসি। এখানে আমাদের কোনো কাজ নেই”
বসে বসে বোর ফিল হচ্ছি তার চেয়ে বেটার একটু ঘুরে আসি। রোশনি, আমি শাড়ির দোকান থেকে বেরিয়ে এদিক সেদিক হাঁটতে থাকলাম। কিছুক্ষণ ঘুরে আপুদের কাছে চলে এলাম। এসেই আমি চমকে উঠলাম। আদ্র ভাই এসেছে। টুলে বসে মোবাইল টিপছে। আমায় আসতে দেখে না তাকিয়েই জিজ্ঞেস করলো,
“কোথায় গিয়েছিলি?”
“ভালো লাগছিলো না তাই একটু হেঁটে আসলাম”
আদ্র ভাই পকেটে ফোন পুড়ে উঠে দাঁড়ালো। ভ্রু কুচকে বলল,
“তুই নাকি কিছুই কিনিস নি?”
মুখ ভার করে বললাম,
“কিছুই পছন্দ হচ্ছে না। এতে আমার কি করার আছে বলো?”
ঈশিতা আপু অভিযোগের স্বরে বলল,
“আদ্র ভাই দেখো তোমার বউয়ের ঢং বেড়েছে। সবার কেনা প্রায় শেষের দিকে আর ও এখনো কিছুই পছন্দ করেনি। ওর নাকি কিছুই ভালো লাগছে না”
আদ্র ভাই একবার হাত ঘড়ি দেখলো। অতঃপর এগিয়ে এসে আমার হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলল,
“আমি দেখছি। তুই তোর বিয়ের কেনা কাঁটা কর আমার বউয়ের টা আমিই দেখে নিচ্ছি”
কথাটা বলে গট গট পায়ে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে এলো সেই দোকান থেকে। আমিও কাঙ্খিত মানুষটাকে পেয়ে ওনার বাহু জড়িয়ে ধরলাম। আদ্র ভাই সোজা এগিয়ে গিয়ে প্রথমে ঢুকলো গাউনের দোকানে। আমায় নিয়ে ঘেটে ঘেটে বিভিন্ন গাউন দেখছে। দেখা শেষ হলে দুটো গাউন হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,
“যা ট্রায়াল দিয়ে আয়”
আমি করুণ চোখে তাকালাম ওনার দিকে। উনি তাড়া দিয়ে বলল,
“ওভাবে তাকিয়ে লাভ নেই। যেটা বলছি সেটা কর। বিয়েতে সবাই নতুন নতুন ড্রেস পড়ে ঘুরবে আর আমার বউ মুখ লটকে বসে থাকবে সেটা তো হবে না”
কথা না বাড়িয়ে ট্রায়াল দিতে চলে গেলাম প্রথম গাউন টা যেমন তেমন পরের টা সুন্দর। সেটাই নেওয়া হলো। লেহেঙ্গার পুরো দোকান ঘুরে আদ্র ভাই একটা লেহেঙ্গা চুজ করলো। একবার দেখেই বলল,
“এটাই ফাইনাল কি বলিস?”
সত্যি বলতে উনি যে কোন চিপা চাঁপা, কোনা থেকে খুঁজে আনছেন কে জানে? এই দোকানে আমি একটু আগেও এসেছি তবে এটা দেখিনি। সত্যি বলতে আমি খুঁজিই নি। তাই হয়তো পাইও নি। লেহেঙ্গাটা দেখতেও বেশ সুন্দর। আধা ঘন্টার মাঝে আমাদের শপিং শেষ। আপুদের কাছে ফিরে আসতেই ঈশিতা আপু জিজ্ঞেস করলো,
“হলো তোমাদের শপিং?”
“হবে না কেন? আলবাদ হয়েছে। তোরা আমার বউকে পাত্তা দিসনি। তাই বেচারি কিছুই কিনতে পারেনি। সব দোষ তোদের”
“বাহ্ কি সুন্দর? এখন সব দোষ আমাদের হয়ে গেল? তা দেখি কি কিনে উদ্ধার করে ফেলেছো?”
“তোকে দেখাবো কেন? তুই নিজের টা কেন। আমার বউয়ের টা সবার চেয়ে এক্সক্লুসিভ হবে। তোদের সবার নজর লাগবে তাই তোদের দেখানো যাবে না”
ঈশিতা আপু ভেংচি কাটলো। আদ্র ভাই সেসব পাত্তাও দিলো না। দোকানের অন্য পাশে গিয়ে শাড়ি দেখতে শুরু করলো। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওনার পা*গলামো দেখছি। আসলেই এই মানুষটা ছাড়া আমি অস্তিত্বহীন। নিজের শপিংয়ের খবর নেই সে এসেছে আমার টা করতে। বেছে বেছে কয়েকটা শাড়ি বের করলো। শাড়ি গুলো বেশ সুন্দর। ডিজাইন ও ইউনিক। ঈশিতা আপু দেখে বলল,
“ভাই তুমি এতক্ষন কোথায় ছিলে? তোমার অভাবে এতো সুন্দর সুন্দর শাড়ি মিস হয়ে গেল”
আদ্র ভাই সাবধান করে বলল,
“এই একদম আমার বউয়েরটায় নজর দিবি না। নজর সরা”
প্রিয়ম ভাবি সাইড থেকে খোঁচা মেরে বলল,
“ভাইয়া কি আজ তার বউকেই পছন্দ করে দিবে নাকি আমাদেরও একটু দিবে। ভাইয়া আপনার পছন্দ কিন্তু ভীষণ সুন্দর”
“পাম দিয়ে লাভ নেই ভাবি। এগুলো থেকে একটাও আপনাদের দেওয়া হবে না”
“সব শুধু বউকে দিলেই হবে? আমরা বোন, ভাবি আছি আমাদেরও কয়েকটা পছন্দ করে দেন”
“আপনাদের পছন্দ করে দেওয়ার জন্য আপনাদের হাজবেন্ড আছে। আমার পিচ্চিকে এতক্ষন আপনারা পছন্দ করে দেন নি তাই আপনাদের ও দিবো না। হিসাব বরাবর, কি বলিস পিচ্চি?”
পিচ্চি? ভ্রু কুঁচকে এলো। ওনার আমাকে পিচ্চি মনে হলো।
“এই তোমার আমাকে পিচ্চি মনে হচ্ছে?”
আদ্র ভাই মাথায় টোকা দিয়ে বলল,
“পিচ্চি নাতো কি? এইটুকু একটা মেয়ে”
ঠোঁট উল্টে নিলাম। ভেংচি কেটে বললাম,
“ভাবি আর আপুকেও শাড়ি পছন্দ করে দেও”
“বলছিস? তুই যেহেতু বলেছিস তাহলে তো দিতেই হবে”
হাসি মজা, আড্ডা সব মিলে শেষ হলো আমাদের শপিং। শপিং শেষে সবাই রেস্টুরেন্টে ঢুকেছে। খাওয়া দাওয়া শেষে সোজা বাড়ি। সবাই যার যার মতো বাড়ির ভেতরে চলে যাচ্ছে। আদ্র ভাই দাঁড়িয়ে আছে। তার পাশে আমি। অপেক্ষা করছি কখন সবাই যাবে। সবাই চলে যেতেই হুট্ করে জড়িয়ে ধরলাম তাকে। আদ্র ভাই চমকে গেছে। ওনাকে কিছু বলতে না দিয়ে পা উঁচু করে ফিসফিস করে বলে উঠলাম,
“তোমায় খুব মিস করছিলাম মিস্টার। তোমার বিরহে বিরহিনী হয়ে মন বসাতে পারিনি অন্য কিছুতে। সেই জন্যই তো কিছু কেনা হয়নি আমার। ইচ্ছে ছিলো তোমার পছন্দে নিজেকে সাজাবো। আমার সেই ইচ্ছে পূরণ হয়েছে। থ্যাংকু”
কথা শেষ করে টুপ্ করে চুমু বসিয়ে দিলাম আদ্র ভাইয়ের খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি যুক্ত গালে। অতঃপর লজ্জা দৌড়ে চলে এলাম। আসার আগে খেয়াল করলাম উনি গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
রুমে এসে সোজা ব্যালকনিতে ছুটলাম। আমার বিশ্বাস আদ্র ভাই এখনো যায় নি। ব্যালকনিতে যেতেই নজরে এলো উনি গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমার দেখে চিৎকার করে বলল,
“কি শুনালি রে রৌদ্রময়ী? এখন যে সারারাত আমার ঘুম আসবে না। আমার ঘুম না এলে তোকে জেলে পুরবো আমি। আমার হৃদ কঠোরের স্পেশাল জেলে”
“সেই জেল খানায় আমি বন্দি হয়ে থাকতে চাই আজীবন। এখন বাড়ি যাও রোমিও সাহেব”
বলে ফ্লায়িং কিস ছুড়ে দিলাম। আদ্র ভাই হেসে কিস কুড়িয়ে নিলো। অতঃপর বিদায় দিয়ে চলে গেল। আমি ওনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। মনের মধ্যে কেমন অদ্ভুত ফিলিংস হচ্ছে। নতুন নতুন প্রেম করলে যেমন হয় ঠিক তেমনটাই। নিজের পা*গলামো চিন্তা ভাবনায় নিজেই হাসলাম।
পুরো বাড়ি জুড়ে আনন্দের শেষ নেই। আজ ঈশিতা আপুর বিয়ে। সবাই যার যার কাজে ব্যাস্ত। আমার রুমে সবাই রেডি হচ্ছি। ঈশিতা আপু ওর রুমে রেডি হচ্ছে। আয়নার সামনে ঠেলাঠেলি করছে ইভা আর রোশনি। আমি আরাম সে বসে সাজচ্ছি। সাজা শেষ হলে সবাই ছুটলাম ঈশিতা আপুর রুমে। আপুকে দেখে তিন জনেরই মুখ হা হয়ে গেল। আপুকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। মুখ ফস্কে বেরিয়ে এলো,
“আপু তোমাকে কি সুন্দর লাগছে গো? দেখবে শিহাব ভাইয়া আজকে লাজ লজ্জা ভুলে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকবে”
ঈশিতা আপু লজ্জা পেল। লাজুক ভঙ্গিতে বলল,
“এতটাও বলিস না”
রোশনি বলল,
“আপু চলো এক কাজ করি। শিহাব ভাইয়া আসলে বলবো আপু নেই পালিয়ে গেছে তখন দেখবো ভাইয়ার রিয়েকশন কেমন হয়”
ইভা বলল,
“এমন করিস না বেচারা হার্ট ফেল করবে। আপু দুদিন কথা বলেনি বলে এতেই সোজা বাড়ি চলে এসেছে। আর এখন যদি এগুলো শোনে তাহলে কি যে করবে আল্লাহ মালুম”
ঈশিতা আপু আমাদের চোখ রাঙাচ্ছে। আমরা কি শোনার মতো মানুষ? তিনজন মিলে আপুর লেগপুল করতে শুরু করে দিলাম। এর মাঝে বর যাত্রী চলে এলো। বাড়িতে হই চৈ শুরু হয়ে গেছে। সবাই ব্যাস্ত বর যাত্রী আপ্পায়নে। ঈশিতা আপুকে নিয়ে যাওয়া হলো স্টেজে। ইভা আর আমি একপাশে বসে আছি। শুরু হলো এক ছেলের জ্বালাতন। দেখে মনে হচ্ছে শিহাব ভাইয়ের বাড়ির কেউ। ছেলেটা ছেচড়াদের মতো পিছু ঘুরছে। ইগনোর করছি তাও ঘুর ঘুর করছে। আদ্র ভাই দূরে থেকে বিষয়টা খেয়াল করলো। কাছে এসে হাত ধরে বলল,
“দুটো এখানে একা একা কি করছিস? ইভা তুই ওদিকে যা”
উনি হাত ধরে ঘুরছে। এর পড়েও ছেলেটা পিছু ছাড়ছে না। আদ্র ভাই পিছনে ফিরে জোরেই বলে উঠলো,
“কি রে ভাই? পিছু পিছু ঘুরছিস কেন? দুনিয়ায় কি মেয়ের অভাব পড়েছে? যে সবাই আমার বউয়ের পিছনেই পড়েছিস?”
ছেলেটা লজ্জা পেল। কোনো মতে “সরি” বলে সরে গেল। এদিকে আমি হেসে কুটি কুটি হচ্ছি।
কাজী সাহেব বিয়ে পড়াচ্ছেন। ঈশিতা আপু মাথা নিচু করে বসে আছে। অপর দিকে শিহাব ভাইয়া নিলজ্জের মতো আপুর দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ মনে আক্ষেপ জমলো। বিয়ে তো আমার ও হয়েছে তবে এমন ভাবে বউ সাজা হয়নি। টকটকে লাল রঙা লেহেঙ্গা, হাত ভর্তি চুড়ি, ব্রাইডাল সাজ কিছুই হয়নি। বিয়েটা ছিলো একদম সাদা মাটা। পাশ থেকে আদ্র ভাই হাল্কা ধাক্কা দিয়ে বলল,
“কিরে অমন করে চেয়ে কি দেখছিস?”
“ঈশিতা আপুকে কি সুন্দর লাগছে না বলো? একদম লাল টুকটুকে বউ লাগছে”
“তো?”
উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ৩০
“আমার আক্ষেপ হচ্ছে। আমি কেন আমাদের বিয়েতে বউ সাজতে পারিনি। আমাদের বিয়েটা স্বাভাবিক ভাবে হলে আমাদের এমন আয়োজন করে বিয়ে হতো তাই না আদ্র ভাই? লাল রঙা লেহেঙ্গা পড়ে আমিও আপুর মতো লাল টুকটুকে বউ সাজতাম তুমি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে আমার দিকে। কিন্তু এসব কিছুই হয়নি আমাদের বিয়েতে”
বুক চিরে বেরিয়ে এলো দীর্ঘশ্বাস। আদ্র ভাই কথা ঘুরাতে আমায় এটা সেটা বলছিলো। আমি বুঝলাম মানুষটা আমার ধ্যান অন্য দিকে নিতে চাইছে। তাই ওনার কথায় তাল মেললাম।
