এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ১৩
Chadny islam
ঈশান কাজি কে বাসাই পাঠিয়ে দিয়ে চলে এসেছে! উপরে আদিলের রুমে যাবে বলে তখনি দেখে রিফাত আর আদিল নিচে নামছে। তাই ঈশান আর উপরে না গিয়ে ড্রয়িংরুমে থাকা সোফায় গিয়ে বসে। আদিল আর রিফাত ও ঈশান এর পাশে গিয়ে বসলো। আদিলের মন টা বেশ ফুরফুরা হাসি হাসি মুখ করে বসে আছে। রিফাত আদিল কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
__ভাই ক্ষমা দৃষ্টি তে দেখবেন দয়া করে! একটা ছোট প্রশ্ন করতে চাই আপনাকে!!
আদিল সম্মতি জানিয়ে বললো বলো!!
__আচ্ছা ভাই বিয়ে করলে কি সবার মন আপনার মনের মতোন ফুরফুরা হয়।না মানে সব সময় তো আপনার মুখ টারে দেখি বাংলা পাঁচের মতোন করে রাখেন। কিন্তু আজকে তো দেখতেছি না। যদি পরামর্শ দিতেন তাহলে অতি দ্রুত আমি ও হালাল কাজ টা সেরে ফেললাম।
রিফাত এর এই রকম কথা শুনে ঈশান ৩২ পাটি বের করে হাসতে শুরু করলো। সে কি হাসি আদিল কয়েকটা লাথি দিয়ে বললো!!
__ চুপ কর সালা! এমনি তেই লোকে এই বাড়ির নাম শুনলে ভয় পাই! আর তোর এমন হাসির শব্দ ভুল করে ও কারোর কানে গেলে এক সেকেন্ডে ও সময় নিবে না সাথে সাথে স্টোক করবে।
রিফাত আদিল কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
__ভাই ভাবি মনে হয় আপনার জন্য ওয়েট করতাছে! ভাই রাত তো শেষের দিকে বাসর টা কি কালকে সকালে করবেন??
আদিল তো এদের কথার চক্করে পরে ভুলেই গিয়ে ছিলো সে সবে মাএ বিয়ে করছে একটি যুবতি মেয়ে কে। আদিল এক লাফে সোফা থেকে উঠে দাড়িয়ে ঈশান কে বললো!!
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
__দেখ সম্মুদির বাচ্চা! বিয়ে করে ফেলেছি তোর বোন কে! এখন তোর বোনের সাথে বাসর টা ও করমো। দেখবি আর জলবি রুচির মতোন ফুলবি। আদিল ঈশান কে খুব করে কয়েক টা কথা শুনিয়ে উপরে নিজের রুমের সামনে চলে গেলো।
আর এই দিকে বেচারা ঈশান আর রিফাত বসে বসে লাল পানি খাওয়ার প্লান করছে। আজকে যদি একটা বেচারি বউ থাকতো তাহলে হয়তো এত গুলা রাত নষ্ট করতে হতো না। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কাজে লাগানোর যেতো।তাই ঈশান রিফাত কে বললো!!
__আমি চাইলে আজকে একটা বউ তুলে নিয়ে আসতে পারতাম।
রিফাত কৌতূহল নিয়ে প্রশ্ন করলো!!
__কার বউ তুলে আনতে পারতেন ভাই।
ঈশান দাঁতে দাঁত পিসে বললো!!
__কুওা কপাল! বলি একটা সালা শুনিস আরেক টা।
আদিল দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বার বার ডাকছে ইরা কে। কিন্তু ভেতর থেকে কোনো শব্দ না আাসাই আদিল বেশ জুরে জুরে কয়েক টা লাথী দেই দরজাই। তারপর ও কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখে কয়েক শো বকা দিয়ে নেয় নিজের হবু বউকে। আদিল ভালো করেই বুঝতে পারছে ইরা জেগে আছে! ইচ্ছা করেই রুমের দরজা বন্ধ করে রেখেছে। খুলবে না জীবনেও না।আদিল মাথাই হাত দিয়ে বসে পরলো আর ভাবলো তাহলে কি আমার বাসর টা করা হবে না আজ। আদিল রেগে ফুসফাস করতে লাগলো।বেশ বিরক্ত হলো। অনেক ভালোবাসা নিয়ে ডাকলো কিন্তু ইরা দরজা খুলতে ছেই না। আদিল মন মরা হয়ে কিছু সময় বসে রইলো। তার পর কোনে উপায় না পেয়ে নিচে চলে এলো। আদিল এসে ঈশান পাশে বসলো। আর বললো আমার জন্য এক প্যাক করা করে বানা!!
ঈশান আর রিফাত বেশ অভাক হলো!আদিল বাসর করা বাদ দিয়ে এখানে এসে বসলো কেনো। কি হয়েছে জানতে চাইলে আদিল বলে!!
__আমার হবু বউ আমাকে রুমের ভেতরে যাইতে দেই না! দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পরেছে। আমার বাসর করা হলো না।
ঈশান আর রিফাত আদিলের কথা শুনে হাসতে হাসতে ফ্লোরে সুয়ে ঘরাগরি দিতে থাকলো। আর ৩২ পাটি দাত বের করে হাসতে থাকে।বেচারা আদিল বাসর করার জন্য এত কিছু করলো শেষে কিনা বউ রুমের ভেতরেই প্রবেশ করতে দিলো না। আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে!!!
আজাদ চৌধুরী এর পাশে এসে বসে আছেন সুলতানা চৌধুরী বসে বসে আহাজারি করে কান্না করছেন। ইরা কে তারা বেশ ভালো করেই জানে ইরা তাদের না বলে কোথাও কখনো যায় নি কখনো! তবে আজ কেনো গেলো বুঝতে পারছে না কেউ।
রোশান সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে সুয়ে আছে। তার মাথাটা নষ্ট হওয়ার উপক্রম! এত রাগারাগি চেঁচামেচি করে সারা বাড়ি ঘর মাথাই তুলে রেখেছে তাকে বুঝানোর সাধ্য কারোর নেই। গভীর রাত বডিগার্ড দের মধ্যে এক জন লোক এসে রোশান এর বলা সিসিটিভি ফোটেজ ক্যালেক্ট করে নিয়ে এসেছে। রোশান এর হাতে ক্যামেরা গুলল দিয়ে তারা চলে যায়। রোশান সব কিছু নিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। তার পর কম্পিউটার এর সাথে ডিভাইস কানেক্টেড করে দেখে বিকালের ঘটে যাওয়া সব সি.সি ক্যামেরাই। রোশান নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছে না।রোশান ইরার সাথে দেখা হওয়ার পরেই আজাদ চৌধুরীর বাড়ির চারপাশে ক্যামেরা সেটআপ করিয়ে রেখে ছিলো।সবার উপর নজর রাখার জন্য!কিন্তু আক ঠিক একটা কাজে লেগে গেলো!রোশান আর এর এক মিনিট দাঁড়ালো না হাতের ফোন টা বের করে কল করলো আশরাফ সিকদার এর নাম্বারে ।বেশ কিছু খন পর আশরাফ সিকদার কল রিসিভ করলেন। রোশান নিজেকে বেশ শান্ত করে বললেন!!!
__কেমন আছেন সিকদার সাহেব।
এত রাতে রোশান এর কল করার কারন না আশরাফ সিকদার বুঝতে পারলেন না। তবে তিনি ঘুম ঘুম জড়ানো কন্ঠে বললেন!!
__আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। এত রাতে কল করেছো কেনো!! কোনো সমস্যা হয়েছে নাকি!
রোশান বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে শান্ত গলাই বললো!!
__সিকদার সাহেব আপনার ছেলে তো আমার কলিজায় হাত দিয়েছে। এখন কি হবে আপনার ছেলের।।।
আশরাফ সিকদার রোশান এর এমন অদ্ভুত কথার মানে টা বুঝতে পারলো না আর চেষ্টা ও করলো না তবে রোশান কে শান্ত করার জন্য বললো!!
__আমার ছেলে তে এখন মারামারি কাটাকাটি করে না। সে যেহেতু তোমার কলিজাই হাত দিয়েছে। তুমি বরং ভালো ডাক্তার দেখাও। সব বিল আমি প্রি করে দিবো।
রোশান এর প্রচন্ড রাগ হলো এই মূহুর্তে আশরাফ সিকদার এর উপর। মনে হলো বাপ ছেলে দুই টাই এক।এদের কে মুখে বলে কোনো লাভ নেই। এদের জান টা হাতে নিয়ে আমি বরং ডুকডকি বানাবো। রোশান কে চুপ থাকতে থেকে আশরাফ সিকদার বললেন!!
__ডক্টর এর কাছ পযর্ন্ত যেতে পারবে নাকি এখানেই পরে মরে যাবে!!!হ্যালো রেশান???
রোশান আর শান্ত মেজাজে রইলো না! বরং দাঁতে দাঁত পিসে কিরমির করতে লাগলো আর বললো!!
__আমি আপনার সাথে ফাজলামু করার জন্য কল করিনি । আপনার ছেলে আমার হবু বউ কে তুলে নিয়ে গেছে। আপনার ছেলে কোথাই।
রোশান এর কথা শুনে আশরাফ সিকদার এক লাফে বিছানার পাশে থাকা অহনা সিকদার এর থেকে বেশ দূরে গিয়ে ফিসফিস করে বললেন!!!
__তোমার হবু বউ কে নিয়ে পালিয়ে গেছে! কি বলছো এসব।
__হ্যা! আপনার ছেলে কই।
আমার ছেলের কথা বাদ দাও!তুমি বরং আমাকে মেয়ে টার কথা বলো!!! মেয়ে টা দেখতে কেমন সিকদার বাড়ির যোগ্য বউ হবে তো।
আশরাফ সিকদার এর কথা শুনে রোশান রাগে কটমট করতে লাগলো তার হাতের একপাশে থাকা বড় ট্রি _টেবিলে এক লাথি মারলো! সাথে সাথে কয়েক টুকরো হয়ে গড়িয়ে পরলো ফ্লোরে। আশরাফ সিকদার কে বেশ আচ্ছা করে কত গুলা বকা দিয়ে ফোন কেটে দিলো রোশান। আশরাফ সিকদার বার বার অহনা সিকদার কে লখ্য করে দেখলেন সে জেগে আছে কি না। থাকলে একশো টা প্রশ্ন করবে। তার থেকে বরং আমি চুপচাপ সুয়ে পরি। যে বিয়ে করেছে সে সামলাক সব কিছু। আমি তো কিছুই জানি না! আমি নিশ্বপাপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এটা সবাই জানে!!!!
আজকে সারা রাত বাড়ির দারোয়ান সহ বাড়ির মহিলা কাজের লোক কেউ ঘুমাতে পারে নি। আদিল ঈশান রিফাত সবাই অনেক সাউন্ড জুরে বক্স বাজিয়ে লাল পানি সেবন করেছে।আর সাথে সেকি নাচ!!!!
___Lal Pari Lal Pari….
___**Magao mojea lal pari…!!
একটা সময় অনেক ক্লান্ত হয়ে কেউ সোফায় আবার কেউ ফ্লোরে সুয়ে পরেছে। এতটা বিরক্ত করার পর ও ইরা রুমের দরজা খোলে নি। ইরা প্রতিদিন এর মতোন সকালে ঘুম থেকে ওঠেছে। কিন্তু আজকের সকাল টা সব থেকে আলাদা! অনুভূতি অনেক টাই বাজে। প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গে মায়ের আদরের ডাকে কিন্তু আজ কেউ তাকে ডাকছে না। ইরা বিছানা থেকে দীড় পায়ে রুমে দরজা খোলে বাইরে বের হয়ে আসে। রুমের সামনে কাউকে না দেখে ইরা ছোট্ট ছোট্ট পা ফেলে এগিয়ে আসে বাইরের দিকে। এসে দেখে সবাই বিভোর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পরে আছে।দেখে মনে হচ্ছে মরে গেছে।ইরা কাউকে ডাকে না বরং কিচেন এর দিকে যায়। তার ভিষণ খোদা লেগেছে। সে কালকে থেকে এক ফোঁটা পানি ও পান করে নি। কেচিনে পা রাখতেই দেখে। একজন মহিলা রান্না করছে। ইরা বেশ কিছুটা এগিয়ে যায়। কাজের মহিলা ইরা কে দেখে বেশ ভয় পেয়ে এগিয়ে গিয়ে বললো!!
__ম্যাডাম আপনার কিছু লাকবো আমাকে কন!! আপনি এত কষ্ট কইরা রান্না ঘরে আসতে গেলেন কেনো!!!
কাজের মহিলা কথা বলছে আর বার বার দরজার দিকে তাকিয়ে দেখছে। কেউ আসছে নাকি এত বার দরজার দিকে তাকাতে দেখে ইরা জিজ্ঞেস করলো!!
__ওই দিকে কি দেখছেন! কিছু বললেন???
কাজের মহিলা মাথা নত করে বেশ ভয় পেয়ে বলে! __না ম্যাডাম আমি তো কি কিছু কমু না। আপনে রুমে গিয়া বহেন। আমি খাওয়ন লইয়া আইতাছি।
ইরা গেলো না বরং দাড়িয়ে বাড়ির চারপাশে টা বেশ খেয়াল করে দেখলো। তেমন কিছু চোখে পরছে না আশে পাশে গাছপালা ছাড়া। দেখতে বেশ অনেক টাই ভয়ংকর। কোথাই আছে ইরা জানে না। ইরা রান্না ঘর থেকে বের হয়ে উপরে নিজের রুমে চলে যায়।ইরার রুমের যাওয়ার পাঁচ মিনিট পর কাজের মহিলা ট্রে_ভরতি করে বেশ অনেক রকমের খাবার নিয়ে আসে।ইরার সামনে খাবার টা এগিয়ে দিয়ে বলে!!
__ম্যাডাম এহন তো সব রান্ধা শেষ করা পারি নাই।এহন কষ্ট কইরা এই গুলা খান। আমি একটু পরে আবারো আইরা আপনারে খাওয়ন দিয়া যামু নি।
কাজের মহিলার কথা শুনে ইরার মনে হলো। মেয়ে টা হয়তো কোনো গরিব গরের! হয়তো পড়াশোনা টাও করে নি। তবে অনেক সহজ সরল। ইরা কাজের মহিলা কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
__আচ্ছা তোমার নাম কি???
কাজের মহিলা টি নিজ সংকোচ কাটিয়ে টপ করে নাম টা বলে দিলো!!!
__আমার নাম পারুল।
ওহহ!!কত দিন দরে এই বাড়িতে আছো??
অনেক বছর ম্যাডাম! প্রায় দশ বছর হইবো। আপনে খাওন ডা খান আমি একটু পর আবারো আমু। ইরা সম্মতি জানিয়ে বললো ঠিক আছে।
নিচে সবাই সুয়ে আছে! গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন এর মধ্যেই কয়েক বার কল আসলো ঈশান এর ফোনে কিন্তু ঈশান ফোন দরলো না ফোন টাকে সোফার উপর রেখে দিলো। ফোন থামার কোনো নাম নেই বরং আরও বেশি বাজতে শুরু করলো আদিল ঘুমের গুরে চেতে গিয়ে বললো!!
__এই সেটার ফোন ডারে বন্ধ কর!
ঈশান নিজে ও বেশ বিরক্ত হয়ে আছে এত বেশি কল আসাই।ঈশান ফোন রিসিভ করে ঘুম জড়ানো কন্ঠে বললো!!
__হ্যালো??
__হ্যালো ঈশান ভাইয়া??
ঈশান ভাইয়া ডাকটা শোনার পর তারাতাড়ি ফোনের নাম্বার টা চেক করে ইশান! আর বেশ অভাক হয় নাম্বার টা দেখে কার নাম্বার কে তাকে ভাইয়া বলে ডাকছে এই অসময়ে। ঈশান কপাল কুঁচকে বললো!!
__এই অসভ্য নারী! তুই আমার কেমন বোন!
ওপর প্রান্তের মেয়েলি কন্ঠের নারী কাঁপা কাঁপা গলায় বললো!!
__ভাইয়া আমি জুথী!!!
ঈশান এক লাফে সোফায় থেকে উঠে সোজা দাড়িয়ে পরলো। নাম্বার কোথাই পেলো এই রমনী!এই মেয়ে টা কে তো আমি বোনের চোখের তো দেখি না! ঈশান বেশ বিরক্ত হলো জুথীর উপর! আর দাঁতে দাঁত পিসে বললেন!!
__সকাল সকাল ভাইয়া বলে মন টা ভেঙে না দিয়ে!আংকেল বলে জীবন টাকে চুরমার করে দাও!তোমরা মেয়েরা তো এই কাজ টাই ভালো পারল।আমার আরেক টু হলেই স্টোক হয়ে যেতো। আর ভাইয়া বলবা না আমাকে!
জুথী ঈশান এর কথার পরে আর কিছু বলে না।বরং জিজ্ঞেস করে ইরা কোথাই!! ঈশান জানাই স্বামীর সংসার করছে। জুথী বলে আমি ইরার সাথে দেখা করতে চাই! প্লিজ আমাকে একটু নিয়ে যাবেন ইরার কাছে৷ ঈশান মনে মনে বেশ খুশি হলো আজ জেনো মেঘ না চাইতেই জল। ঈশান সম্মতি জানিয়ে বললো লোকেশন পাঠিয়ে দিচ্ছি। তুমি ওখানেই যাও আমি আসছি। বলেই কল কেটে দিয়ে ঈশান ফ্রেশ হতে যায়। আর রিফাত কে বলে যাই!!
__বউ আনতে যাচ্ছি ! ওই ডিলা মার্কা কাজি আনবি না কিন্তু। সব রিক্স আদিলের।
__কার বউ ভাই???
ঈশান দাঁতে দাঁত কিরমির করতে করতে বললো!!
__সালা আমার বউ! তোর ভাবী!!
ওহহহহ তাহলে ওকে ভাই। যদি ভাবী না আসতে চাই আপনার সাথে! তবু ও একাই ফিরবেন না! দরকার হলে রাস্তা থেকে একটা রে তুলে আনবেন! নয়তো অন্যের বউরে নিয়ে আসবেন। আজকে বিয়ে করতেই হবে ভাই।
রিফাত এর কথা শুনে ঈশান পায়ের জুতা খোলে মুছা,দিয়ে ডেল মারে আর বলে!!
__মন ডাই চাইতাছে তোরে জুতা খুইলা মুজা দিয়া পিঠাই!!
রিফাত দাঁত বের করে হাসতে হাসতে বলে!!
__ভাই আপনি বরং জুতা দিয়েই মারেন। আপনার মুজাই যে গন্ধ সয়ং মীর জাফর ও স্টোক করবো।
আদিল অতিরিক্ত লাল পানি সেবন করাই চোখ মেলে তাকাতে পারছে না। এদের কথা শুনে বেশ বিরক্ত হয়ে ডলতে ডলতে নিজের রুমে চলে গেলো। আদিলের এমন ডলা ডলি দেখে ইরা বুঝতে পারলো না! বরং সাইড দিলো আদিল বিছানার উপর ঠাস করে সুয়ে পরলো!
সকাল সকাল সয়ে সয়ে মিডিয়া প্রেস চলে এসেছে সিকদার বাড়িতে। সিকদার বাড়ির কেউ জানতো না আদিল এর বিয়ে করার বিষয় টা। তারা সকালে টিভি তে দেখছে। চার পাশে ছরিয়ে পরছে আদিলের বিয়ের বিষয় টা।আশরাফ সিকদার স্টোক এর নাটক করে সুয়ে আছে। সেই বিকেল থেকে অহনা সিকদার ভেবে ছিলো হয়তো সত্যি অসুস্থ। কিন্তু আদিলের বিয়ের কথা শোনার পর তার বেশ ডাউট হচ্ছে সে কি সত্যি অসুস্থ নাকি ড্রামা করছে। আদিল এর আগেও বেশ কয়েক বার ইশারা ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়ে ছিলো আইরা কে বিয়ে করতে চাই না । বাইরে অনেক চেচামেচি হচ্ছে দেখে আশরাফ সিকদার বুকে হাত দিয়ে দীড়ে দীড়ে নিচে নামছে অহনা সিকদার চোখ বর বড় করে তাকিয়ে আছে আশরাফ সিকদার এর দিকে মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই এই মানুষ টিকে বর্ষ করে দিবে আজ।
অহনা সিকদার এর সাথে চোখা চোখি হতেই আশরাফ সিকদার চোখ নামিয়ে এগোলো প্রেস মিডিয়ার উদ্দেশ্য!! আশরাফ সিকদার যথেষ্ট শান্ত মস্তিষ্কের মানুষ তাই তিনি বেশ শান্ত ভাবে বললেন!!
__এত সকাল সকাল আপনারা এই সিকদার বাড়িতে
কি করছেন!! আপনাদের কে কি দাওয়া করে আনা হয়েছে এই বাড়িতে না মানে আমার বউ কি আমার চল্লিশা খাওয়াবে বলে আপনাদের কে আসতে বলেছে।
অহনা সিকদার রাগে কটমট করতে লাগলেন। সিরিয়াজ মুডে ও এদের ফাজলামো করার স্বভাব গেলো না। বাপ ছেলে একটাই৷ অহনা সিকদার মিডিয়ার উদ্দেশ্য কর্কট গলাই বললেন!!!
__আপনাদের এত সকালে সিকদার বাড়িতে আসার যথেষ্ট কারন আমি দেখছি না।
একজন লোক আদিলের বিয়ের সম্পকে জানতে চাইলে অহনা সিকদার নিজের চোয়াল শক্ত করে বললেন!
__যদি ওই রকম কিছু করে আমার ছেলে! তাহলে আপনাদের কষ্ট করে আমাদের বাড়িতে আসার প্রয়োজন পরবে না। আমরা নিজেরাই আপনাদের কে জানিয়ে দিবো। আপনারা দয়া করে আসতে পারেন।
অহনা সিকদার এর কথা টা বেশ তিতু লাগলো সবার কাছে। তবে আশরাফ সিকদার মুচকি মুচকি হাসলেন বউয়ের এমন রাগি রাগি মুখ দেখে। আশরাফ সিকদার বউকে উদ্দেশ্য করে বললেন!!
___মিসেস অহনা সিকদার আমি তো তোমার বিগ ফ্যান হয়ে গেলাম!!!
অহনা সিকদার বিরক্তি প্রকাশ করে বললেন!!!
এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ১২
__তাহলে ফান হয়ে গুরে আমাকে একটু বাতাস করেন! আপনার দ্বারা এর থেকে বেশি কিছু তো আর সম্ভব নই। আর আশা ও করাও যাই না।
আশরাফ সিকদার বুকে হাত দিয়ে সোফায় বসে
পরলো।আজ সত্যি সত্যি স্টোক হবে বউয়ের এমন তেতু কথা শুনে! এই বাড়িতে সে আর থাকবে না নতুন বিয়ে করে সংসার করবে যদি সেখানে একটু সম্মান পাওয়া যাই। এই জিবনে সম্মানের বড্ড অভাব!!!!
