এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২২

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২২
Chadny islam

“”বলো মা কবুল!!!
“”না আমি এই বিয়ে টা করতে পারবো না। প্লিজ আমাকে যেতে দিন! আমি আর বেয়াদবি করবো না আপনার সাথে!! কান্নারত জুথী ভয়ে টুকরে কান্না করতে করতে ঈশান কে খুব আকুতি মিনুতি করে বললো।
ঈশান রাগী গম্ভীর গলাই বললো!!
__তোমার ড্রামা দেখার জন্য আমি এখানে আসি নি!তাড়াতাড়ি কবুল বলো আর আমার সাথে চলো। টাইম ওয়েষ্ট করো না আমার!
ঈশান এর কথাই জুথী আরও প্রচন্ড রেগে ঈশান কে গাল বরাবর একটা থাপ্পড় মারলো। আর রাগে কটমট করতে করতে বললো!!

__লাফাঙ্গা লোক আমাকে এখানে নিয়ে এলি কেনো আমার বাবা জানতে পারলে তোকে জানে মেরে দিবে!! জানের মায়া থাকলে আমাকে যেতে দে!!
কাজী অফিসে থাকা চারজন লোকের সামনে চড়টা মারাই ঈশান বেশ অপমানিত বোধ করলো। ঈশান রাগে জুথীর দিকে এগিয়ে যেতেই পেছন থেকে রিফাত ডেকে বললো!
__ভাই আপনি শান্ত হন ।বিয়েটা তো স্বাভাবিক মতোন হচ্ছে না কিছুটা জোর পূর্বক ভাবীর রাগ করা টাই স্বাভাবিক শান্ত হন ভাই।
রিফাত এর কথাই ঈশান এর ভয়ংকর রাগ কিছু টা হলে ও আপাতত কমেছে। এই মধ্যে কাজী বলে উঠলো!!
__আপনারা যান এখান থেকে। আমি জোড় জবরদস্তি করে কারোর বিয়ে পরাবো না।
ঈশান এর শান্ত মস্তিষ্ক টা মূহুর্তেই রেগে গিয়ে দ্বিগুণ রাগান্বিত হয়ে কাজির পাঞ্জাবির কলার চেপে দরে হিসহিসেয়ে বললো!!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

__কুওার বাচ্চা তোর কাজ বিয়ে পরানো তুই বিয়ে পরাবি।তুই কেনো কে জুর করে বিয়ে করছে বা কে ইচ্ছা কৃত ভাবে বিয়ে করছে এটা দেখবি।
ইশান হাত উঠিয়ে ফেলেছে কাজি কে একটা পান্স মারবে বলে নাক বরাবর একটা প্যান্স মারতে পারলে হয়তো মনটা ফ্রেশ লাগতো। রিফাত পকেট থেকে বিশ হাজার টাকার একটা বান্ডিল টেবিলের উপর রেখে কাজী কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
__এতে হবে নাকি আরও লাগবে।
কাজী এই মূহুর্তে ঈশান এর থেকে নিজে কে ছাড়িয়ে টাকাই হাত বুলিয়ে দেখলো! বাহ অনেক গুলো টাকা মনে হচ্ছে আজকে পুরো মাসের থেকে ও বেশি ইনকাম হলো!
কাজী খুশিতে গদগদ হয়ে ঈশান কে বললো!!

__বাবা বসো বিয়েটা তাড়াতাড়ি করে পরিয়ে দেই! শুভ কাজে দেরি করতে নেই।
“””কাজী জুথীকে বললো!! বলো মা কবুল!
জুথী চুপ করে বসে বসে কান্না করছে। কাজী বেশ কয়েক বার জুথী কে বললো কবুল বলার জন্য কিন্তু জুথী বললো না। ঈশান সোজা দাড়িয়ে রিফাত কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
__এই মেয়ের বাড়ী কোথাই আছে!লোকেশন বের করে এমিডেটলি বাড়িতে আগুন লাগানোর ব্যাবস্থা কর! সবাই মরে যাক তার পর আমি ওকে বিয়ে করবো। যা কুইক..!
“”ওকে ভাই! রিফাত বলেই কাজী অফিস থেকে বের হতেই গেলে তার আগেই যদি একবার দুইবার নয় পুরো বিশ বারের বেশি কবুল বলে ফেলেছে। কাজী আলহামদুলিল্লাহ বলে শুভ কাজ টা শেষ করলেন।রিফাত দৌড়ে পাশের দোকান থেকে মিষ্টি এনে সবাই কে দিল!
ইশান মুচকি মুচকি হেসে আদুরে গলাই জুথী কে বললো!!

__নতুন জীবনের শুভেচ্ছা বেবস! মিসেস ঈশান হয়ে সারাজীবন আমার পাশে থাকার জন্য প্রস্তুতি নাও!!
বিয়ের কাজ শেষ করে সবাই যখন বের হতে যাবে তার আগে কাজী রিফাত কে ডেকে বললেন!!
__আচ্ছা বাবা আবার ও যদি এইরকম বড় লোক বিয়ে পরাতে হয়! তাহলে কিন্তু অবশ্যই আমার এখানে নিয়ে আসবা।
অবশ্যই নিয়ে আসবো কেনো না। রিফাত এগিয়ে গিয়ে টেবিল এর ড্রয়ার থেকে টাকা গুলো বের করে কাজীর হাতে দুই হাজার টাকা দড়িয়ে দিয়ে বললো!!
__একশো টাকা বেশি দিলাম। এখন সময় স্বল্পতার কারনে ভাঙ্গা করে নিয়ে যেতে পারছি না ত!বে আমি যে কোনো দিন আসতে পারি অবশ্যই ভাঙা করে রাখবেন।
কাজীর মুখটা ফেকাসে করে বললো।!!

__কি হলো এটা!!
রিফাত বাঁকা হেসে বললো!!
__আপনি একটি অনুবাদ হয়তো পরেন নি।আমি বলছি আপনি শুনুন “””” লোভে পাপ পাপে মৃত্যু “”অতিরিক্ত লোভ করা ভালো নয় স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ওমা আপনার তো দেখি স্বাস্থ্যই নাই!
আচ্ছা রাত পরী তোমাকে এত কষ্ট করে কে অফিসে আসতে বলে বলতো আমাকে!! তুমি এত কাজ করলে তোমার সৌন্দর্য তো রোদে পুড়ে নষ্ট হয়ে যাবে। তখন তোমাকে বিয়ে করবে কে!! আইরা প্রিয়াশ এর কথাই অদ্ভুত ভঙ্গিতে হাসলো আর বললো!!
__আবার কেনো এসেছেন আপনি! আমি মম এর সাথে বাসাই চলে যেতে পারতাম!
প্রিয়াশ গম্ভীর গলাই বললো!!
__আমি কি তাহলে আপনাকে বিরক্ত করলাম রাত পরী!
আইরা শান্ত গলাই বললো!!
__আরে এমন কিছু নয়! আপনি আমাকে একদমি বিরক্ত করছেন না! আপনার কষ্ট হবে বলে আমি নিষেধ করছি আপনাকে।

“”না মিস রাত পরী আমার কোনো কষ্ট হয় না!! আমার বেশ ভালোই লাগে!
ইরা সোফায় বসে বসে গেমস খেলছে আদিল এর দেয়া প্যাকেট এর ভেতরে দামী একটা আইফোন ছিলো!আদিল দেশের বাইরে চলে গেল তো ইরার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না ফোন ছাড়া! ইরার তো এই বাড়িতে কোনো প্যারসোনাল ফোন নেই।সেসব দিক চিন্তা করে ইরা কে নতুন একটি ফোন কিনে দেয়া হয়েছে!
আদিল আমেরিকা চলে যাবে! তাই নিজের জামাকাপড় লাগেজে তুলছে। আদিল এর মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি এসে উদয় হলো তাই ইরা কে উদ্দেশ্য করে আদিল বললো!!

__জান বাচ্চা দেখো তো আমার ওয়ারড্রব এর ভেতরে কালো রংঙের একটা জামা আছে নিয়ে আসো।
আদিল কে এমন শান্ত ভাবে কথা বলতে দেখে ইরা চুপচাপ এগিয়ে গেলো ওয়ারড্রব এর দিকে। ওয়ারড্রব খুলে দেখে সব জামাকাপড় সুন্দর ভাবে গুছানো! যেখানে কালো রংঙের এর শার্ট এর সংখ্যা অনেক বেশি তবে যে টিশার্ট এর সংখ্যা কম এমন নয়। টিশার্ট গুলাও কালো! ইরা বুঝতে পারছে না আদিল কোন কালো রংঙের এর জামার কথা বলছে। ইরা আদিল কে বললো!!
__এখানো তো অনেক গুলা শার্ট ওর টিশার্ট আছে কোনটা নিয়ে আসবো!
আদিল দুষ্ট হাসি হেসে বললো!!
__দেখো ড্রয়ারে আমার ছোট মিয়ার জন্য ছোট ছোট জামা আছে ওই গুলা নিয়ে আসো।
ছোট মিয়া কাকে বলেছে ইরা বুঝতে পারে নি। তাই ড্রয়ার খোলে হাত লাগাতেই দেখে!!!

__ছি বাজে লোক!!
“”আরে নিয়ে আসো ওইটা আমার ছোট মিয়া পরে। আমার বউয়ের দায়িত্ব পালন করতে শিখো!!
“”ছিছি! কি বাজে নোংরা আপনে।
“”ছি এর কি আছে! ওহহ তুমি তো এখনো ছোট মিয়ার অবদান টা সম্পূর্ণ ভাবে পাওনি তাই ছি বললে! যখন পাবা তখন আমার ঠিক কোলে এসে বসে থাকবা..!প্রমাণ লাগবে দেখাবো!
“”ছি কি বাজে নোংরা আপনে!! যান যান দূরে যান।
আদিল দুষ্ট হাসি হেসে বললো!!
__চলো জানবাচ্চা! ছোট মিয়ার সাথে তোমাকে ও একটু সাক্ষাৎ করিয়ে দেই।ছোট মিয়া খুব মিস করতেছে তোমাকে!! আমাকে এখন কানে কানে বললো!
“”অসভ্য লোক বেহায়া লোক বাজে লোক!! জীবনে ও ভালো হবেন না তাই!
“”না! আমি ভালো হবো না!পৃথিবীতে ভালো মানুষের দাম নাই!
“”তার মানে আপনি বুঝাতে চাইছেন আপনি খারাপ!!
“”ইয়েস আই এম ব্যাড বয় “”

“”ভালো মানুষের দাম এত কম হলে হয়তো খারাপ মানুষের দাম একটু বেশি। তাহলে চলেন আপনাকে বরং বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিয়ে আসি ।
“”এটা কোনো কথা বউ। সামান্য কইটা টাকার জন্য জামাই কে বিক্রি করে দিবা! সালি তুমি বিশ্ব জাহান্নামি!
“”হ্যা আপনার মতোন স্বামী কে পেয়ে তো আমি জান্নাতে যাওয়ার আশা টা তো করতে পারি না তাই না!
“”কেনো পারো না!!! আমি কি খুবি খারাপ??
“”এই যে কথাই কথাই আমাকে জাহান্নামী বলেন। তাছাড়া আপনাকে আমি কখনো পশ্চিম দিকে ঘুড়ে একটা আচার পরতেও দেখি না! নামাজ তো দূরেই থাক।
“”তুমি কি কোনো ভাবে আমাকে ইনসাল্ড করলা!!
“”না তো ইনসাল্ড কীভাবে করে আমি তো জানিই না। আমি তো শুধু অপমান করতে জানি! আর আপনি ওই টারি যোগ্য!!

“”তবে রে…! আদিল কথা শেষ করে ইরার দিকে তেরে গেলে। তখনি রুমের ভেতরে প্রবেশ করলো আদিব। যেনো হাসি থামছেই না। আদিব আদিল এবং ইরা উদেশ্য করে বললো!!
__সরি ভাই এন্ড ভাবী। রুমে নক না করে আসার জন্য!নক করে আসলে হয়তো তোমাদের ঝগড়া দেখা টা মিস হয়ে যেতো।বাই দ্যা ওয়ে! তোমরা বেশি করে ঝগড়া করো আমি বরং বসে বসে দেখি।
ইরা আদিব কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
__তেমন কিছু না ভাইয়া!!
আদিব কিছুটা রেগে আর কিছুটা হেসে আদিল কে বললো!
__ভাই তুমি না লাভ ম্যারেজ করেছো! তাহলে ভাবীর পেছনে এত লাগো কেনো! দশটা পাঁচ টা একটা মাএ কিউট এর ডিব্বা আমাদের ভাবী। যাও ভাই ভাবীর থেকে দূরে যাও। তোমাকে ভাবীর পাশে একদম মানাই না । যাও একবার গিয়ে দেখো আয়নাই।
আদিব এর কথাই যেনো বেশ অপমানিত বোধ করলো আদিল! তবে ইরার বেশ ভালো লাগলো! আদিব তো ঠিকি বলছে তবে একটি কথা ভুল বলেছে তাদের তো লাভ ম্যারেজ নয়! তাই ইরা আদিব কে বললো!!

__ভাইয়া আপনি হয়তো জানেন না! আমাদের লাভ ম্যারেজ নয়! আপনার ভাই আমাকে কিডনাপ করে বিয়ে করেছে।
ইরার কথা শুনে আদিব বেশ অভাক হওয়ার মতোন নাটক করে বললো!!
__কি বলেন ভাবী!! আপনাদের কি তাহলে কিডনাপ ম্যারেজ ভাবী??
“”হ্যা!!
__আপনি এখনো ভাইয়ের নামে পুলিশ কমপ্লেন করেন নি ভাবী!!
এর মধ্যে আদিল রাগে ফুসফুস করতে লাগলো। রাগের গতিবেগ প্রচন্ড আদিব কোনো মতে বুঝতে পেরে আদিল কে বললো!!
__ভাই মম পাঠিয়ে ছিলো!! বের হওয়ার টাইম হয়েছে তো তাই। তুমি আসো আমরা নিচে অপেক্ষা করছি তোমার জন্য।আদিব বলেই এক দৌড়ে ছুটে রুম থেকে পালিয়ে গেলো।
আদিল প্রোপার ভাবে রেডি হয়ে নিলো আয়নার সামনে গিয়ে নিজের চুল সোজা সাপটা করে নিলো। ইরা এক পাশে দাড়িয়ে দেখছে সব টাই! আদিল এগিয়ে গেলো ইরার দিকে ইরা কে বেশ শান্ত ভাবে বুঝাতে লাগলো!!!!

__আমার ছোট্ট একটা জান বাচ্চা! আমি তিনদিন পর ঠিক চলে আসবো। আমার জন্য একদম মন খারাপ করবা না। বাড়ীর বাইরে যাওয়া তোমার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে নিষেধ! আর আমি কল করার সাথে সাথে দরবা এক সেকেন্ড ও যেনো লেট না হয়৷ এখন সব থেকে ইমপোর্টেন্স একটি কথা তুমি চাইলে এই মূহুর্তে আমি তোমাকে কয়েক টা চুমু দিয়ে যেতে পারি আমি কিন্তু একদমি কিপটে নয় তোমার মতোন! ।তাহলে তুমি আমাকে মিস কম করবা বুঝছো!! আসো এই দিকে আসো! বেশি না ডজন খানেক চুমু দিয়েই চলে যাবো!
ইরা বাকা হেঁসে দাতে দাঁত পিসে বললো!!

__আমার এতটাও বাজে দিন আসে নাই সিকদার সাহেব!যে আপনার মতোন ইডিয়েট কে মিস করবো! মানুষ বলে না পাগলের সুখ মনে মনে আপনার ও ঠিক এই অবস্থা দেখা যাচ্ছে।
শুভ কাজে দেরি করিয়ে দিলা! থাক থাক আর জড়িয়ে দরতে হবে না! আদিল এর কথাই ইরার বেশ হাসি পেলো তাদের মাঝে এত টাই দুরত্ব যে কেউ চাইলে এসে ফুটবল খেলতে পারবে। আর কিনা বলছে জড়িয়ে দরার কথা!
আদিল আর কথা বাড়ালো না সানগ্লাস টা চোখে দিয়ে বের হয়ে গেলো। অহনা সিকদার আদিব সহ পরিবাররে সবাই অপেক্ষা করছে আদিল এর জন্য! আদিল নামছে দুতলা থেকে তার বেশ কিছুটা পেছনে ইরা। বাইরে রিফাত গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে! সবাই এক এক করে গাড়িতে উঠলো!রিফাত গাড়ি স্টারিং দিলো এখন সোজা এয়ারপোর্টে চলে যাবে।
কলি ইরার দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো!!

__ভাবী জানো! আমাদের কলেজে একটা নবীন বরনের অনুষ্ঠান আছে। আমি সেখানে নাচ করবো! তোমাকে কিন্তু আমি আমার সাথে করে নিয়ে যাবো।
ইরা হ্যা বা না কিছুই বলে না কলি ইরা কে টেনে নিজের রুমে নিয়ে যায়। নাচের রিয়্যারসেল করবে বলে। কলি বক্স এ গান বাজালো আর নাচতে শুরু করলো নাচের মধ্যে ইরা কে জিজ্ঞেস করলো কেমন হচ্ছে ভাবী!!
“অসাধারণ!!
ইরা বক্স এর গান টা বন্ধ করে নিজের পছন্দ মতোন একটা গান জুরলো!! আর উড়া দুরা নাচতে শুরু করলো! তিন দিন খব শান্তি তে কাটবে। আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে!! গানের লাইন…………..
Hobea To Log Lacchi ” terea piccea Aga bascci “” Teri Isqea bea marei qure “””””
ঈশান জুথী কে নিয়ে ঠিক জুথীর বাড়ীর সামনে নামিয়ে দিতে চাইলে জুথী জানাই সে বাসাই যাবে না। ঈশান জুথী শান্ত ভাবে জিজ্ঞেস করে!!

__বাসাই যাবে না তাহলে কোথাই যাবে??
জুথী নিজের চোয়াল শক্ত করে বলে!!
__আপনার সাথে আপনার বাসায় যাবো!!
“‘মানে!!
”হ্যা এখন আমার বিয়ে হয়ে গেছে! আপনি আমার স্বামী আমি আপনার বাড়িতেই আপনার সাথেই থাকবো!!
“” ওমা এ কাকে দেখি!! আবেগ ছেড়ে বিবেকে আসো! এত খন তো বিয়ে করতেই চাই ছিলে না। আর এখন স্বামী কে ছাড়া থাকতে পারছো না। এই অদ্ভুত এই মেয়ে গুলা!!
“”বিয়ে করতে চাই নি তো করে ফেলছি! আমার কোচিন এর টাইম আরও পাচ ঘন্টা আগে ওভার হয়ে গেছে। এখন বাড়িতে গেলে অনেক প্রবলেম হবে আমার! তাছাড়া আমি তো আমার স্বামীর বাড়িতেই যাচ্ছি তাই না।
“”হুম বেবস! আপনি আপনার স্বামীর বাড়িতেই যাবেন। তবে যে একটা সমস্যা আছে।
“”কি সমস্যা??
আমার যে আরেক টা বউ আছে না! সে যদি দেখে আমি আরেক টা বিয়ে করে নিয়ে এসেছি। তাহলে তো আমাদের দুই জন কেই ঝাড়ু পিটনি দিবে। এখন এই ভয়াবহ যুদ্ধের জন্য আপনি প্রস্তুত!
জুথী বেশ ভয়ে ভয়ে বললো!!

__হুম…!
ঈশান গাড়ি ঘুরালো এখন তারা চলে যাবে নিজের বাড়িতে। সেখানে যে কি অপেক্ষা করেছে। আল্লাহই ভালো জানে!
“পরের দিন সকাল বেলা ______★
আশরাফ সিকদার খাবার টেবিলে খাবার খাচ্ছেন! ইরা এবং মাইমুনা সিকদার মিলে সকলের খাবার সামনে নিয়ে এগিয়ে দিলো। কলি বার বার ইশারা করছে ইরা কে আজকে জেনো সে ও নবীন বরন অনুষ্ঠানে কলির সাথে যায়। ইরা বেশ ভয় পাচ্ছে কি ভাবে বলবে সে যদি মুখের উপর না করে দেই।তাছাড়া কালকে তো সিকদার সাহেব ও বলে গেলেন আমি যেনো তিন দিন বাড়ির বাইরে না যায়।হয়তো আব্বু কেও বলে গেছে। ইরা দ্বিধার মধ্যে পরে আছে কি বলবে বুঝতে পারচে না! এর মধ্যে কলি বুকে সাহস নিয়ে আশরাফ সিকদার কে বললো!!

__বড় আব্বু আজকে আমাদের কলেজে নবীন বরন অনুষ্ঠান আমি কিন্তু সাথে করে ভাবী কে নিয়ে যাবো। তুমি কিন্তু নিষেধ করবা না বড় আব্বু!
ছোট মেয়ের এমন ভাবে আবদার কি কেনো বাবা ফেলতে পারে। আশরাফ সিকদার নিজেও একজন নরম মনের মানুষ। তিনি এক মূহুর্তের জন্য ভুলেই গেছেন ইরার বাইরে যাওয়া নিষেধ! আশরাফ সিকদার ইরা কে জিজ্ঞেস করলেন!!

__তুমি যেতে চাও আম্মু!
ইরা কিছু বললো না মাথা নত করে রেখেছে। হয়তো এর মানে ইরা যেতে চাইছে কিন্তু বলতে পারছে না। তাই আশরাফ সিকদার বললেন!!
__আমার ছোট আম্মু তোমার ভাবী কে সাথে করে নিয়ে যেতে পারো তবে একটি শর্ত আছে! মানতে হবে কিন্তু!!
“”হ্যা বড় আব্বু বলো!! সব শর্ত মানতেই রাজি আছি!
তোমাদের কে প্রিয়াশ ভাইয়া কলেজে নামিয়ে দিয়ে আসবে আবার যখন শেষ হয়ে যাবে অনুষ্ঠান তখন গিয়ে গিয়ে আসবে রাজি কিনা বলো!!

হ্যা আব্বু আমি রাজি! থ্যাংক কিউ বড় আব্বু। কথা শেষ করে কলি ইরা কে নিয়ে রুমে চলে আসলো। সবাই শাড়ি পরে যাবে এখন রেডি না হলে অনেক দেরি হয়ে যাবে। তাই কলি একটা নীল রংঙের শাড়ীর বের করে নিলো পরবে বলে। কলি শাড়ি পরে রেডি হতে হতে ইরা গিয়ে একটা দামী থ্রি পিস পড়ে নিলো। তার পর কলির রুমে এলো ইরা।থ্রি পিস টা পরে খুব বেশি আনেয়েজি লাগছে তাই ইরা কলি কে বললো!!
__আমার তো এই বাসায় তেমন কোনো বোরকা নেই! যদি তোমার বোরকা টা আমাকে আজকের জন্য দিতা!!
ইরার এমন সংকোচ বোধ দেখে কলি এগিয়ে গিয়ে বললো!!
__ভাবী তুমি এত আনেয়েজী ফিল করছো কেনো। আমি বোরকা নিয়ে আসতেছি। বলে কলি নিজের কার্বাড থেকে একটা কালো রংঙের বোরকা ইরার হাতে দরিয়ে দিয়ে বললো!!

__ভাবী আমি কিছু দিন আগে আম্মুর সাথে গিয়ে এই বোরকা টা নিয়ে এসেছি। তুমি নিরদ্বিধায় পরতে পারো। আর হ্যা ভুল করে ও আমাকে ফেরত দেয়ার চেষ্টা করবা না। এটা আমার পক্ষ থেকে তোমার বিয়ের গিফট!
ইরা কলি কে ধন্যবাদ দিয়ে বোরকা টা কলির রুমেই পরলো! বোরকা টা পরে একদম শেহজাদী দের মতোন লাগছে। আপাতত চোখ ছাড়া কোনো কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ওয়াও ভাবী মাশাল্লাহ তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে!
প্রিয়াশ কালকের মতোন আজকেও ডাইভার কে এক্সটা টাকা দরিয়ে দিয়ে বলেছে!! আজকে কোনো আরেক টা নতুন নাটক করে যেনো চলে যাই।আইরা কে গত কালের মতোন আজকেও নামিয়ে দিয়ে আসবে।গতকালের মতোন ডাইবার সত্যি সত্যি নাটক করে চলে গেলো। আইরা ও আর কোনো ওপাই না পেয়ে প্রিয়াশ কে নিয়ে অফিসে চলে গেলো।

রিফাত কোম্পানির কিছু কাগজ পএ নিয়ে এসেছে আজকে আদিল এবং অহনা সিকদার না থাকাই প্রেপারে সিগনেচার টা আশরাফ সিকদার কে দিয়েই করানো হবে। রিফাত বাসার ভেতরে অতিদ্রত প্রবেশ করতেই এক ধাক্কা লাগে কলির সাথে সে ও তাড়াতাড়ি করে নিচে নাম ছিলো শাড়ির আঁচল ঠিক করতে করতে হুটহাট ধাক্কা খাওয়াই তাল সামলাতে না পেয়ে ফ্লোরে ধপাস করে পরে গিয়ে চেচিয়ে উঠলো ওমা গো বলে। রিফাত হাতের ফাইল গুলো রেখে কলি কে টেনে তুলতে চাইলে কলি এক থমকে দূরে সরিয়ে দেয়। রাগে কটমট করতে করতে বলে!!
__চোখের মাথা খেয়ে নিয়েছেন নাকি! চোখে দেখতে পান না!!
রিফাত শান্ত গলাই বললো!!

__না তো ম্যাম! আমি তো দিন কানা আপনি হয়তো জানেন না। আমি দিনে ঠিক মতোন চোখে দেখতে পাই না। বিশ্বাস না হলে স্যার কে জিজ্ঞেস করতে পারেন।
রিফাত এর এমন নমনীয় কথাই কলি খুব করে বিশ্বাস হলো রিফাত এর কথা!আহারে বেচারা এত সুন্দর স্মার্ট দেখতে শেষ কিনা দিন কানা। মায়া হচ্ছে এই দিন কানার জন্য।তাই কলি কিছুটা এগিয়ে গিয়ে রিফাত এর কাগজ গুলো কে হাতে তুলে দিয়ে বললো!!
__সরি! আমি বুঝতে পারি নি যে আপনি দিন কানা!
ইট’স ওকে ম্যাম! আপনাকে সরি বলতে হবে না।মেয়েরা নাকি সরি বলে না এই মেয়ে যে হুট করে সরি বললো এটা কি মেয়ে নাকি অন্যকিছু চিন্তার বিষয়!!বলে কলি বাইরের দিকে চলে গেলো!আর রিফাত কাগজ গুলো নিয়ে এগিয়ে গেলো আশরাফ সিকদার এর দিকে। কলির ঠিক দুই মিনিট পর ইরা ও নিচে আসলো! ফোন টা নিজের রুম থেকে আনতে গিয়ে ছিলো। বাইরে কলি দাঁড়িয়ে আছে প্রিয়াশ কে কোথাও দেখতে পাচ্ছে না। প্রিয়াশ কোথাই বাগানে দাড়িয়ে থাকা মালি বললো!!!!

__ম্যাডাম আপনারা কাউরে খুজতাচেন!!
ইরা নিজ সংকোচে বললো!!
__হ্যা মালি কাকা প্রিয়াশ ভাইয়া কে কোথাও দেখেছেন।
“”হো ম্যাডাম! স্যার তো ঘন্টা খানেক আগে দলা মেডাম রে সাথে কইরা নিয়া কই যেনো গেলো।
“‘ওহহ আচ্ছা!!
কলি ডাকলো মাইমুনা সিকদার কে!! ডাকার সাথে সাথে মাইমুনা সিকদার চলে আসলেন। কলি বললো প্রিয়াশ ভাইয়া তো বাড়িতে নেই কিভাবে যাবো আম্মু। তুমি দাড়াও আমি ভাই জান কে বলছি তোমাদের কে কলেজের সামনে নামিয়ে দিয়ে আসবে। বলেই মাইমুনা সিকদার হাঁটলেন আশরাফ সিকদার এর রুমের দিকে। আশরাফ সিকদার এবং রিফাত কাজ করছে। মাইমুনা সিকদার রুমে গিয়ে বললেন প্রিয়াশ তো বাসাই না ভাই জান! ওদের কে নামিয়ে দিয়ে আসলে ভালো হতো। কলেজের নবীন বরন অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। আশরাফ সিকদার এর সাথে দেখা করতে ঘন্টা খানেক পর লোক আসবে। এখন গেলে কিভাবে হবে। তাই আশরাফ সিকদার রিফাত কে বললো!! ওদের কে কলেজে পৌঁছে দিয়ে আসতে। রিফাত কোনো কথা না বলে চলে গেলো নিচে। বাইরের যাওয়ার মাঝেই দেখা হয় ইরার সাথে রিফাত ইরা কে!!

__আসসালামু আলাইকুম ভাবী! কেমন আছেন??
“”জ্বি ভাইয়া ভালো আছি আপনি কেমন আছেন!
“‘আলহামদুলিল্লাহ ভাবী ভালো আছি! স্যারের তো ইমপোর্টার্স কাজ আছে! আমি আপনাদের কে কি নামিয়ে দিয়ে আসবো।
কলি বিরক্তি নিয়ে বললো!!
__আপনি না দিনা কানা! তাহলে কিভাবে পৌঁছে দিয়ে আসবেন! আমাদের কে!!
রিফাত দুষ্ট হাসি হেসে বললো!!
__আরে ম্যাম! কোনো সমস্যা হবে না আমি যে মোটা চশমা পরেছি এতে করে দশ মাইল দূর পযর্ন্ত খুব ভালো করে দেখতে পারি। নির ভয়ে আসতে পারেন।
রিফাত গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো পেছনের সিটে ইরা এবং কলি বসে আছে। গাড়ির ছোট কাচের মধ্যে কলির ছোট মুখ টাকে রিফাত বার বার লক্ষ্য করে দেখছে। দেখতে কি ওয়াও। প্রায় ঘন্টা খানেক পর চলে আসে কলেজের সামনে। রিফাত কলি আর ইরা কে নামিয়ে দেই। আর বলে!!

__ আমি ঘন্টা খানেক পর আপনাদের কে নিতে আসবো ভাবী। একা একা বাসাই যাবেন না ভাইয়া জানতে পারলে অনেক রাগ করবে!!!
রিফাত কলেজের সামনে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে আসলো সিকদার মহলে! কলি আর ইরা ভেতরে প্রবেশ করবে ঠিক তখনি পেছন থেকে একটা চেনা কন্ঠের ডাক শুনে ইরা পেছনে তাকাতেই দেখে ইয়ান রোশান!! ইয়ান রোশান এগিয়ে গেলো ইরার দিকে সাথেই কলি তাড়া দিচ্ছে ভেতরে যাওয়ার জন্য। ইয়ান রেশান খুব আবদার করে ইরা কে বললো!!!

__আমি আপনার সাথে একটু কথা বলতে চাই কিছু ইমপোর্টেন্স কথা আছে।
কলি ইয়ান রোশান এর দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে ইরা কে জিজ্ঞেস করলো!!
__ভাবী এই লোকটা কে??
ইয়ান রোশান ইরার আগেই বলে দেয়! আমি ওনার কাজিন হয়! তুমি ভেতরে যাও কিছু খন পর তোমার ভাবী কে তোমার কাছে পৌঁছে দিয়ে আসবো। কলি যেতে না চাইলে ইরা স্বাভাবিক ভাবে বুঝিয়ে বলে!! __তুমি যাও আমি কিছু খন এর ভেতরে চলে আসছি!!
রোশান ইরা কে বললো!! পাশেই একটা রেস্টুরেন্ট আছে তোমার কোনো সমস্যা না হলে আমরা ওই খানে গিয়ে বসি। ইরা কিছু বললো না হয়তো বা যেতে চাইছে। কলেজ থেকে পাচ মিনিট দূরে একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসলো! রোশান কফি ওডার দিয়ে ইরার দিকে তাকিয়ে বললো!!

__আমার সাথে এক কাফ কফি তো শেয়ার করাই যায় তাই না পূনিমার চাঁদ!!
ইরা কিছু সংকোচ নিয়ে বললো!!
__প্লিজ আমাকে এই সব নামে ডাকবেন না! আমার একটি নাম আছে ইরা! আপনি এই নামেই আমাকে ডাকবেন।
“””কেনো এই নামে ডাকলে কি খুব বেশি অসুবিধা হয়ে যায়!!
“”হ্যা অনেক! আমি যেহেতু মানুষটি আপনার নয় তাহলে কেনো আপনি আমাকে ওই রকম নামে ডাকবেন!!
আমি তো তোমাকে আমার করেই নিতে চেয়ে ছিলাম! কিন্তু মাঝখান থেকে ছক্কা মেরে নিলো আদিল। আমার হতেই দিলো না তোমাকে!!

“”থাক সেসব অতীত! আমাকে কেনো নিয়ে আসলেন এখানে!
“”কিছু বলতে চাই তোমাকে! তোমার স্বামীর বিষয়ে!!
“”ওনার বিষয়ে কোনো কিছু শুনতে আমি আগ্রহী নয়!
“”যদি বলি তোমার বোনের বিষয়ে কিছু বলতে চাই আমি!!
ইরা বেশ অভাক হয়ে দেখলো রোশান কে সে কি করে জানে তার একটি বোন ছিলো।ইরা বেশ রাগান্বিত আর ভয়ংকর ভাবে বললো!!
__মানে কি বলতে চাইছেন আপনি??
তেমন কিছুই না আমার মনে হয় তোমার “””””Black Rose”””” ভয়ংকর বাড়িটা থেকে গুরে আসা উঠিত। সেখানে তুমি চাইলে অনেক রহস্যের কুপকাত করতে সক্ষম হবে! আই মিন তোমার স্বামীর ভয়ংকর অতীত সম্পর্কে জানতে পারবে..!
যদি অতীত টা আমার স্বামীর সম্পর্কে হয় তাহলে আমি বলবো!

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২১

__ সেসব বিষয়ে আমি কোনো কিছু জানার ইচ্ছা পোষণ করছি না।তবে যদি হয় আমার আপুর বিষয়ে তাহলে সেটা অন্য বিষয়! আর যদি কোনো ভাবে আমার আপুর সাথে মিলেমিশে যাই! তবে আমি কাউকেই ছারবো না। একেক জনকে একেক ভাবে ভয়ংকর মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করিয়ে ছারবো…..!

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here