এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৬
Chadny islam
আইরা ফ্রেশ হয়ে আদিলের রুমে গিয়ে আদিল কে এসেছে। আদিল কে না পেয়ে খুজতে খুজতে চলে এসেছে অহনা সিকদার এর রুমে। আইরা শহরের মেয়ে দের মতোন পোশাক পরেছে প্যান্ট আর টি-শার্ট গায়ের রং দবদবে ফর্সা।
আইরা আদিল কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
__বেবি তুমি এই খানে আমি তোমাকে সারা ঘর খুঁজে আসলাম।
আইরা বেবি বলে সম্মোধন করাই আশরাফ সিকদার এর কাশি শুরু হয়ে গেলো। সাথে অহনা সিকদার এর ও।
ঈশান আদিলকে উদ্দেশ্য করে বললো!!
__শুধু দলা বিড়াল না সাথে সরম ছাড়া বেডি মানুষ। বাসর রাতে লাইম ওয়েষ্ট করে হবে না তোর।
আইরা গিয়ে আদিলের পাশে বসলো!!
__চলো না বেবি কোথা ও গিয়ে গুরে আসি।
সময় নেই আমার ব্যাস্ত আছি বলে আদিল চলে যেতে চাইলে। অহনা সিকদার নিজের চোয়াল শক্ত করে বললো বিকেলের দিকে ব্যাস্ততা শেষ করে আইরা কে নিয়ে যাও মেয়ে টাকে শহর টা ঘুরিয়ে দেখাও। আদিলের বেশ বিরক্ত লাগলো তবুও উল্টো কিছু বললো না। চুপচাপ রুমে থেকে বেবিয়ে আসলো।এই মেয়ে টা যে তার জন্য পারফেক্ট না সে ভালো ভাবে বুঝতে পারছে তবে কেনো তার মম বুঝতে পারছে না।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
চৌধুরী বাড়ীর চারপাশে গিরে আছে কালো সুট বুট পড়া বডিগার্ডরা! যারা রাতে থেকে শুরু করে সারাদিন গার্ড দিচ্ছে এই বাড়ি চারপাশে । যদি চেয়ারম্যান সাহেব তার মেয়ে কে নিয়ে এলাকা থেকে চলে যায় তার ভয়ে। আজাদ চৌধুরী নিজে গিয়ে কলেজে নামিয়ে দিয়ে আসলেন ইরা কে। ইরা কে একা আর কোথাও যেতে দেয়া হয় না। আর মাএ দুইদিন। তার পর হয়তো তার মেয়ের জীবন টাকে জাহান্নামে ফেলে দেয়া হবে। আজাদ চৌধুরীর মতোন শক্ত মানুষ টাও ভয়ে কুকরে আছে। ইরা কে কলেজের সামনে নামিয়ে দিয়ে আজাদ চৌধুরী বাড়িতে ফিরে আসেন।
ইরা কলেজের ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখে জুথী ক্যাম্পাসে বসে আছে একা একা পাশে সাজিদ নেই। হয়তো টিউশনি করাচ্ছে তাই আসতে লেট হবে।ইরা গিয়ে জুথীর পাশে বসলো!!
জুথী ইরা কে দেখে বেশ খুশি হয়ে ইরার কাছে গিয়ে জড়িয়ে দরে বললো খুব মিস করেছি তোকে! আর কলেজে আসাটা মিস করবি না!!
__ইরা সম্মতি জানিয়ে বলে!! ঠিক আছে!!
ইরা সাজিদ এর কথা জিজ্ঞেস করলে! জুথী জানায় আসেনি। কালকের ঘটে যাওয়া সব টাই জুথী লুকিয়ে ফেলে। জুথীর মনে হলো সাজিদ এর ভালো লাগা থাকলে বরং সাজিদ প্রকাশ করুক।
ইরা কিছুটা অসহায় সুরে বলে!!
__আগামী শুক্রবার আমার এনগেজমেন্ট তুই অবশ্যই আসবি!
জুথীর মাথায় বাজ পড়ার মতোন অভাক হয় এই মেয়ে কি বলে এসব!!!
__মানে??
__হ্যা
__ছেলে কে??
__জানি না
জুথী ইরার কপালে হাত দিয়ে চেক করে শরীরে এখন ও জ্বর আছে কিনা। কিন্তু শরীরে তো জ্বর নেই তাহলে কি বলছে এসব পাগলের মতোন!!! জুথী আরেকটু কাছে গিয়ে বললো!!
__ইরা তুই কি অসুস্থ!! তোকে দেখতে এমন লাখছে কেনো??
ইরা চোখের কোনে পানি এক হাত দিয়ে মুচছে মুছতে বলে!!!
__না আমি ঠিক আছি।
আংঙ্গেল তো বলে ছিলো এত আগে কোনো ভাবে তোকে বিয়ে দিবে না। আজকে হঠাৎ করে এই ডিসিশন কেনো???
__আব্বু এখনো চাই না এনগেজমেন্ট হোক। কিন্তু আমি চাই??
__মানে!!!
মানে এইটাই যে লোক টাকে আমি চিনি না জানি না দেখনি পযর্ন্ত। তাকে কখনো কোনো দিন! সে কিভাবে আমাকে ছাড়া আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলে একা একা । আমার বাড়ি ভয়ে এসে আবার হুমকি ও দিয়ে গেছে সইচ্ছাই রাজি না হলে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে।তাহলে আমার ও দেখতে হবে না সে কেমন সুপুরুষ।
জুথী বেশ অভাক হয় ইরার সাথে ঘটে যাওয়া এই বিষয় টা নিয়ে।সে এই মূহুর্তে ইরা কে টেনশন না দিয়ে বরং সাহস যোগাই।
__তুই ঠিক বলেছিস ইরা! সে চাইলে রিলেশনের প্রপোজাল দিতে পারতো কিন্তু টা না করে ডিরেক্টর বিয়ের প্রপোজাল দিয়ে দিলো। হয়তো এক বলেই ছয় হাতিয়ে নেয়ার ধান্দা।
ইরা বেশ কৌতুহল হয়ে??
__মানে!!!
জুথী শান্ত ভাবে ইরা কে বুঝাই!!
__এখন ও মানে জিজ্ঞেস করছিস। তুই দেখতে যথেষ্ট সুন্দরী। সাহসী ভালো একটা পরিবারের মেয়ে তোকে পাওয়া মানে সাত কপালের ভাগ্য। তাই হয়তো ছেলে টা ভয়ের আশংখা করেছিলো রিলেশন এর প্রপোজাল রাখলে তুই ১০০% না বলে দিতি তাই ডিরেক্ট বিয়ের অফার করলো তাও আবার ব্যাল্কমেইল করে। হয়তো মাফিয়া কারোর হাতে পরেছিস।
আইরা বিদেশি দের মতোন সর্ট ড্রেস পরছে। শরীরের বেশ কিছু জায়গা অনুমুক্ত!সর্ট হেয়ার দবদবে ফর্সা মুখ। দেখতে বেমানান লাগছে না ভালো লাগছে। তবে বাংলাদেশের মানুষ এই গুলো কে চয়েস করে না। বরং বিভিন্ন গালি গালাস করে সম্মদোন করেন।
আদিল বিছানাই গা এলিয়ে দিয়ে সুয়ে আছে আজকাল খুব বেশি কাজের চাপ নেই।অফিেস বেশির ভাগ কাজ সামলাতে হয় অহনা সিকদার কে আদিল মাঝে মাঝে যায়।
__বেবি আসবো???
__এসেই তো পরেছে! আর এক কর আসলে আমার উপরে এসে পরবে আর আসার দরকার নেই। দূরে থাকো।
আইরার বেশ রাগ হলো আদিলের এমন শক্ত কথাই!!আইরা গায়ে না মেখে বললো!!
__চলো বের হয়!!
আদিল বেশ রেগে গিয়ে বললো!!
__কোথাই যাবো এই অসময়ে!!
__জানি না
__জানো না তাহলে ডাকতে এসেছো কেনো??
আইরা বেশ রাগ হলো!!!
__রেডি হবা কিনা??
__না
আইরা সাথে সাথে অহনা সিকদার কে ডাকতে শুরু করলো! _আন্টি
আদিল বেশ হকচকিয়ে গেলো এখানে মম কে ডাকার কি আছে।বেশ বিরক্ত হয়ে বললো!! তুমি যাও আমি রেডি হয়ে আসছি।
আইরা আদিলে বিছানায় বসে পরলো!
__তুমি রেডি হও আমি ওয়েট করছি!!
__বাইরে গিয়ে ওয়েট করো আমি আসছি!! গেট লস্ট!!
আইরা বিরক্তি নিয়ে বললো!!
__কেনো??
আইরা আদিলের গা ঘেসিয়ে দাড়ালো!
__এত লজ্জা কিসের আদিল বেবি কিছু পর তো আমরা…..
__গেট লস্ট! ”
আইরা আর কিছু না বলে রুমে বাইরে চলে গেলো। এতে বেশ অপমানিত বোধ করলো আইরা
আদিল কপালে হাত ঠেকিয়ে বললো!!
__ হাই আল্লাহ জীবনে কি এমন বড় পাপ করে ছিলাম! যে এই রকম একটা লজ্জা হীন মেয়ে কে আমার জীবনে পাঠালে। আল্লাহ হয়তো মাফ করে দাও নয়তো তুলে নাও এই মেয়ে আমাকে অতিষ্ঠ করে তুলছে।
আদিল ঝড়ের গতিতে কল করে ঈশান কে। আদিল ভালো ভাবে বুঝতে পারছে এই আইরা মেয়েটা কে একা একা সামলানো বেশ ট্রাফ হয়ে যাবে।
আদিল একটা টিশার্ট পরেছে ব্লাক রংঙের। সাথে দামি সুসচ আয়নার সামনে গিয়ে মাথার চুল আচড়ে নিয়ে দামি পারফিউম! গায়ে জড়ালো হাতে গড়ি আর সানগ্লাস নিয়ে বের হয়ে গেলো। আইরা সোফায় বসে ফোন দেখছে সাথে বসে আছে কলি। কিছুটা দূরে বসে আছে অহনা সিকদার প্রেপার পরছে।
আদিল কে এই স্টাইলে বেশ হ্যান্ডসাম লাগছে। আইরা বার বার ফিদা হয়ে যাচ্ছে আদিল কে দেখে! মানুষ যাকে সব থেকে বেশি ভালোবাসে তাকে সব রুপেই ভালোবাসে। আর ভালোবাসা যদি টা এক জায়গায় হয় এক জনের প্রতি! তাহলে সব রুপেই তাকে সুন্দর লাগে। ভালোবাসা মন থেকে হয় সৌন্দর্য দেখে নয়।
আদিল গাড়ির চাবি হাতে নিয়ে দোলাতে দোলাতে বের হয়ে যাচ্ছে পাশে থেকে অহনা সিকদার ডেকে বলে কই যাও এই অসময়ে???
আইরা ৩২ পাটি দাত বের করে বললো!!!
__লং ড্রাইভে যাচ্ছি আন্টি /??
কলি বেশ লজ্জা পেয়ে ওঠে চলে গেলো রুমে। তার এই মূহুর্তে বড়দের মাঝে থাকা বেমানান।
অহনা সিকদার আর কিছু বললেন না?? আদিল মনে মনে এক আকাশ পরিমান হাসি হেসে নিলো আর বলতে চাইলো Your Choice Is Wrong Mon.
আজকে সাজিদ আসে নি কেনো আসে নি কেউ যানে না। তারা তো কলেজে ফোন নিয়ে আসেনি নয়তো কল করতো সাজিদ কে। কলেজের বাইরে ছোট খাটো একটা কফি সফপ আছে ইরা আর জুথী সেখানে বসেছে। কফি খাচ্ছে আর কথা বলছে নিজেদের মতোন করে। আর মাএ দশ মিনিট আছে তার পর আবার ক্লাস শুরু হবে। তাই ইরা আর জুথী উঠে আসলো ক্লাসে চলে যাবে বলে। আজ কাল ইরার জন্য কোনো জায়গা সেফ নয়। আশেপাশে কিছু লোক তাকে করা নজরে রাখছে।
আদিল ডাইভ করছে পাশেই বসে আছে আইরা কথা বলতে বলতে কানের পোকা নাড়িয়ে দিচ্ছে। আদিল দপাস করে গাড়ি দাড় করিয়ে দিলো। আইরা একটু জন্য গাড়ীর গ্লাসে সাথে ধাক্কা লাগছিলো। আইরা বুকের থুথু দিয়ে আদিলে রেগে প্রশ্ন করলো!!!
__এভাবে গাড়ি থামালে কেনো হোয়াটস হ্যাপেন্ড???.
আদিল উওর করার প্রয়োজন মনে করলো না! বরং আইরা কে বললো পেছনে গিয়ে বসতে আইরা বেশ রেগে গেলো সে পেছনের সিটে বসবে না।কিন্তু কিছুটা রাগান্বিত হয়ে বলা তে আইরা পেছনে গিয়ে বসলো।প্রায় দুই মিনিট পর ঈশান এসে বসলো আদিলের পাশের সিটে।
আইরা বেশ রেগে গিয়ে বললো!!
__আমাকে পেছনে বসানোর এই টাই কারন।
ঈশান পাওা না দিয়ে বরং জিজ্ঞেস করলো!!
__দলা বিড়াল কই যাবে আমাদের সঙ্গে???
আইরা থমথমে গলাই বললো!!
__মাইন্ড ইউর লাঙ্গগোয়েছ!! কে দলা বিড়াল??
ঈশান মুখ ফসকে বলে ফেলেছে এখন কি হবে?? ঈশান কথা গুরানোর জন্য বললো!!
__ কোথাই যাবেন মিস. ইউএস!!
আইরা দমদমে গলাই বললো!!
__জাহান্নামে যাবো !!
__আদিল গাড়ি ব্যাক কর! আমি এখনি জাহান্নামে যাবো না!! আমার বউ আমাকে ছাড়া এতিম হয়ে যাবে।
আদিল কিছুটা ভাব নিয়ে বললো!!
__চিন্তা করিস তুই মরে যা রিলাক্সে! তোর বউয়ের জন্য আমি আছি।
আইরা বিরক্তি নিয়ে বললো!!
__তাহলে আমার কি হবে আদিল বেবি???
তোমার আর কি হবে সব তো আমারি হবে! আমার এক সাথে দুই বউ কে সামলাতে হবে। পরের বছর আরও দুইটা করবো ইসলামে চারটা বিয়ে জায়েজ আছে। আমার ছোট বেলার ইচ্ছা আমি বড় হয়ে চার টা বিয়ে করবো।মনে হচ্ছে এখন সময় এসে গেছে।
__অসম্ভব! আমি থাকতে তোমাকে কখনো বাকি তিনটা বিয়ে করতে দিবো না।
ঈশান শান্ত ভঙ্গিতে ফিসফিস করে বললো।
__বাকি তিনটা টা কে কেনো শুধুলাষ্ট মোমেন্ট এ তুমি ও থাকবে না দলা বিড়াল! Just Wait and watch!!
ইশান প্রশ্ন করলো আদিল কে??
__আমাদের গন্তব্য এখন কোথাই তোর শশুর বাড়ী নাকি???
হঠাৎ করে ব্রেক করলো আদিল সামনে দুইটা মেয়ে প্রায় একটু জন্য লেগে গিয়ে ছিল।এক ধাক্কা লাগলে হয়তো সাথে সাথে প্রান টাও বের হয়ে যেতে। সামনে থাকা দুইরা মেয়ে বেশ রেগে গেলো! সাথে ঈশান আর আইরা।
ইশান শক্ত পোক্ত হয়ে কিছুটা জুরে বললো!
__সত্যিই মনে হয় জাহান্নামে যাচ্ছি। প্লিজ গোড সেভ মি!
গাড়ির গ্লাসে এসে নক করলো মেয়ে টি!!গ্লাস খোলার সাথে সাথে আদিলের চোখে চোখ পরতেই ইরা মেজাজ হারিয়ে ফেলে!
__হেই ইসটুপিড!! চোখে দেখেন না অন্ধ নাকি???
আদিল কিছুটা ভাব নিয়ে বললো!!
__তোমার মতোন সুন্দর দেমাকি মেয়ে দেখার জন্য আল্লাহ নিজ হাতে দুই টা কালো কালো চোখ দিয়েছে। টাস্ট মি আমি অন্ধ নয়।
ইরা রেগে গিয়ে বললো!!
_চোখ চোখের জাগায়ই রাখেন। বরং দেখে গাড়ি চালান সুন্দরী মেয়ে দেখতে দেখতে গাড়ি চালালে সোজা টপ করে উপরে চলে যাবেন।
__ওপস কেউ একজন আছে! এত বড় পৃথিবীতে যার আমার মতোন ইস্টুপিট এর জন্য একটু মায়া হয়। টেক লাভ বেবি!
এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৫
__ইস্টুপিট।
ইরা যানে লোকটা সত্যি বেহায়া তাই আর কথা বাড়ালো না বরং কলেজে চলে যেতে চাইলো। তখনি ঈশান পেছন থেকে ডাকে ইরা কে???
__ইরা!!
ইরা বেশ অভাক হয় এখনে ঈশান কে দেখে??
__ভাইয়া তুমি এখানে???
