এমপি তামিম সরকার পর্ব ২১

এমপি তামিম সরকার পর্ব ২১
কাফাতুন নেছা কবিতা

” আমি তামিম সরকার! আইন মানি না, আইন তৈরি করি!”
তামিম বৈদেশিক কর্মীদের সামনে দাড়িয়ে চা’পাতিটি অপর হাত দিয়ে ভালোমতো মালিশ করতে থাকে!!
” আর আমার আইন এটায় বলে, যেই কু’ত্তার বাচ্চা আমার আব্বাজানরে মা’রার প্ল্যান করছে তার মা’থা সিনা থাইকা আলাদা করতে হইবো!”
তামিম এক কো’পে সামনে দাড়ানো লোকটির মাথায় চাপা’তি চালিয়ে দেয় আর ঘাড় বাকিয়ে অপর পাশের লোকটির দিকে তাকায়! তামিমের তাকানো মাত্র লোকটি প্যান্ট ভরে মু’তে দেয়। তামিমের মুখে র’ক্তের সিটা ফোঁটা দেখে লোকটির প্রাণ যায় যায় অবস্থা!

” শা*লা মরার আগেই মু’তে দিলি। যাহ তোর সাথির সাথে যা! Jahannam is calling! ”
তামিম অপর জনকে ও একই ভাবে চাপা’তি দিয়ে পরপারে পাঠায়।
উপস্থিত সকল নেতারা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে যায়। তার মধ্যে কয়েকজন বুঝে গেছে তাদের উপরে যাওয়ার টিকিট ও কনফার্ম হয়ে গেছে।।
” এই মাহিরররর!! দরজা লাগা!”
তামিমের নির্দেশ শুনে কয়েকজন তাদের কদম পিছিয়ে নেই আর ভিরের মধ্যে মিশে যায়!
তামিম: ” ডিআইজি! ”
ডিআইজি :” জ্বী তামিম বাবা!”
তামিম:” ১২ জন নেতার লা’শের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বানাতে দেন। ”
ডিআইজি: ” ঠিক আছে তামিম বাবা!”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” কর্নেল ওসমানী! ”
কর্নেল ওসমানী :” জ্বী তামিম বাবা! ”
তামিম:” বিকালের প্রেস ব্রিফিং মুখস্থ করেন!”
কর্নেল ওসমানী :” তামিম বাবা স্ক্রিপ্ট যদি দিতেন!”
তামিম কর্নেল ওসমানীর সামনে যেয়ে তার টুপি সরিয়ে টাক মাথায় ফুঁ দিয়ে পিছনে তাকিয়ে একটি বিশ্রী হাসি দেয়! আর এক পা এক পা করে এগিয়ে যেতে যেতে বলে,,
” লেখেন, প্রধানমন্ত্রী তানভির সরকারের নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করতে সেতু মন্ত্রী, পানি মন্ত্রী ও আরো নেতারা যুক্ত হয়ে তানভির সরকারকে মারতে এসে ধরা পড়ার ভয়ে নিজ হাতে বি’ষ পান করিয়া পরপারে চলে গেছে। এতে কয়েকজন মন্ত্রী তানভির সরকারকে বাচাতে এসে আহত হন!”
তামিম অন্য মন্ত্রীদের আহত হওয়ার কথা বলতেই আশেপাশে তাকায়! তামিমের তাকানোর সাথে সাথে কয়েকজন নেতা নিজেদের জামাকাপড় নিজেরাই ছিড়ে ফেলে আর দেওয়ালে বা হাতের কাছে যা পায় তা দিয়ে নিজেদের আঘাত করে।

তামিমের নির্দেশ মতো নেতাদের এমন কান্ড দেখে পিছিয়ে যাওয়া নেতারা যে যার মতো দৌড় লাগায় সরকার বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিজেদের জীবন বাঁচাতে।
কিন্তু তামিমের নির্দেশ মতো আগেই সকল দরজা লাগানো ছিলো।তাই কেউ বাইরে যেতে পারেনি।
তামিমের পঞ্চ পান্ডব এক এক করে সকলকে সামনে এনে বসায়! আর তামিম এক পা এক পা করে তখন ও সেতু মন্ত্রীর কাছে এগিয়ে যেতে থাকে।
” তোর চুল, বা*ল সবই তো পেকে গেছে রে। এই পাকনা চুল দিয়া তুই আমার আব্বাজানরে পরপারে পাঠানোর কথা ভাবোস!”

তামিম এক কো’পে সেতু মন্ত্রীর মাথা আলাদা করে দেয়। আর পিছনে ফিরে হিংস্র বাঘের মতো মেঝেতে বসা নেতাদের উপরে ঝাপিয়ে পড়ে।
এভাবে প্রায় এক ঘন্টা ২০ মিনিট যাবত চলে তামিমের হ’ত্যা কান্ড!
এক পর্যায়ে তামিম ডিআইজির সামনে এসে দাড়ায়!
” এই কা’টা ছিড়া লা”শগুলা কীভাবে বিষ পানে মরছে এটা আপনার চিন্তার বিষয়। এটা নিয়ে যেনো আমার না ভাবতে হয়!”
তামিমের কথায় তাল মিলিয়ে সব সামলে নিবে বলে তাকে জানায় ডিআইজি সাহেব!
সব কিছু শেষে তামিম এসে দাড়ায় তার আব্বাজানের সামনে!
” এইবার চোখ খুলেন আব্বাজান!”
তামিম বলার সাথে সাথে তানভির সরকার চোখ খুলে।তামিমের পুরো শরীরে র’ক্ত দিয়ে ভরা! মানুষের তাজা র’ক্ত লেগে আছে তার শরীরে।

” আপনি বাইরে যান বাবাজান! আমি আসছি!”
” জ্বী আব্বা! ”
তানভির সরকারের কথা মতো তামিম এবং তার পঞ্চ পান্ডব সরকার বাড়ির বিশাল বড় বাগানে চলে যায়। আর মাঝ বরাবর দাড়ায় তামিম।
” শমশের! ”
” জ্বী কর্তা!”
” তামিম ভিতরে আসার আগেই পুরো বাড়ি সাফ করে দেয়। র’ক্তের একটি দানা ও যেনো না পরে থাকে মেঝেতে।
তানভির সরকার একটি সোনার বালতি ভর্তি দুধ নিয়ে আসে। তানভির সরকারকে আসতে দেখে তামিম মাটিতে বসে পরে। তানভির সরকার এসে বালতি ভর্তি দুধ তামিমের মাথায় ঢালে।পরপর তিন বালতি দুধ ঢাকা হয় তামিমের মাথায়।
” রুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে আসেন বাবাজান!”
” জ্বী আব্বা! ”

তানভির সরকারের কথা মতো তামিম নিজের রুমে চলে যায়। আর তানভির সরকার বাগানেই দাড়িয়ে থাকে।
” আমার সকল পাপের শাস্তি আমি পাচ্ছি নিজের ছেলের মাধ্যমে! ”
তানভির সরকার চোখ বন্ধ করে দু-ফোটা চোখের পানি ফেলে।
” পাপ তো আমার ও কিছু কম নাই কর্তা! ”
পিছন থেকে আয়েশা সরকারের কথা শুনে তাকায় তানভির সরকার!
” সেদিন যদি আপনারে এই রাজনৈতিকতায় না যেতে বলতাম তাহলে হয়তো আমার ছেলেটা ও সাধারণ মানুষের মতোই মানুষ হতো!”

নিজের সহধর্মিণীর কথা শুনে বুকটা কেঁপে উঠে তানভির সরকারের। সে আয়েশা সরকারের সামনে দাড়ায় আর চোখের পানি মুছে দেয়।
” আমার আয়শা ঠিক ততটায় পবিত্র! যতটা পবিত্র বৃষ্টির পানি হয়! আপনার কথায় আমার মতো মানুষ যদি নিরীহ মানুষে পরিনত হয়, তাহলে নিশ্চয়ই তামিম ও আপনার মতোই কারো কথায় নিরীহ মানুষে পরিনত হবে! ”
” কিন্তু আপনি তো আমার জন্যই রাজনীতিতে জড়ায়ছিলেন কর্তা!”
” আপনার জন্য আমি রাজনীতি জড়াতে ও পারি আবার ছাড়তে ও পারি! ”
তানভির সরকার আয়েশাকে হাজারটা কথা বলে বোঝাতে গেলে ও। যৈবতী বয়সে রাগের মাথায় করা ভুলের জন্য যে তার স্বামী সন্তান এই নোংরা রাজনীতিতে জড়িয়েছে সেটার আফসোস সারাজীবনে ও ভুলবে না!

———–শিকদার বাড়ি——-
” শোনো সুবহার মা! কাল-পরশুর মধ্যে সুবহাকে চিটাগং পাঠিয়ে দিবো।”
” হঠাৎ চিটাগং কেন?”
” সুবহার বিয়ে তাই! ”
” মানে?”
” যদি সুবহার বিয়ে হয়ে যায়, তামিম নিশ্চয়ই তাকে আর গ্রহণ করবে না!”
” মাথা ঠিক আছে তো আপনার? যেখানে ২৪ ঘন্টা সুবহার উপরে নজর রাখা হয়। সেখানে বিয়ে দিবেন আর তামিম সরকার তা জানবে না? ”
” এতো চিন্তা করে লাভ নেই সুবহার মা! একটায় একমাত্র পথ!”
সুবহার মা স্বামীর এমন চিন্তার কথা জেনে আরো বেশি ভয় পেয়ে যায়। যেখানে পুরো দেশটায় তাদের কথায় চলে সেখানে তার চোখে ফাঁকি দিয়ে কীভাবে বিয়ে দেবে সুবহার অন্য কারো সাথে! এটা কী এতোটায় সোজা?।

——-সরকার বাড়ি——-
তামিম উপরে থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে নিচে নামতে থাকে। ততক্ষণে নিউজ রিপোর্ট সমস্ত কিছু শুরু হয়ে গেছিলো। দেশের ১২ জন নেতা মা’রা গেছেন।এটা রীতিমতো দ্বিতীয় বি’শ্ব যু’দ্ধ হওয়ার মতোই।
তামিম নিচে নামতেই তানভির সরকার তাকে ডাকে!
” কোথাও বের হবেন বাবাজান!”
” জ্বী আব্বা জান! ”
” আজকে না বের হলে হয় না?”
” আপনার বৌ-মা আমার অপেক্ষাতে আছে আব্বা! কিন্তু আপনি বললে আমি এক কদম ও বাইরে ফেলবো না!”
ছেলের কথা শুনে মুখে হাসি ফুটে উঠে তানভির সরকারের।
” সাবধানে যান!”
তামিম তার আব্বা জানের গালে চু’মু দিয়ে সুন্দর মতো বেরিয়ে পরে। তামিম বয়সে ২৮ বছরের যুবক হলে ও তার আব্বাজানের সামনে এখনো ১২-১৩ বছরের কিশোর দের মতো আচরণ করে!!

——– সময় রাত ৮ টা ৪৫ মিমিট—————–
তামিম তার জীপ নিয়ে সোজা রিসোর্টের দিকে রওনা দেয়। এতো কিছুর পর নিজের মনকে একটু সুস্থ করা উচিত। আর তামিমের মন এখন শুধু সুবহাকে দেখলেই শান্ত হয়!
তামিম যাওয়ার পর সুবহা রুমে বসে থাকে অনেক ক্ষণ। এক পর্যায়ে সোফাতে বসে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পরে সুবহা।
তামিম এসে উপরে উঠে পড়ে। আর নিজের রুমে ঢুকে পরে।
তামিম লক খুলতেই সামনে সুবহাকে না দেখতে পেয়ে এদিক ওদিক তাকাতেই দেখে সোফাতে গুটিসুটি হয়ে বসে ঘুমাচ্ছে সুবহা!

তামিম এক পা এক পা করে সুবহার সামনে গিয়ে হাটু পেরে বসে। ঘুমন্ত সুবহাকে দেখে ঢোক গিলে তামিম।
তামিম নিজের মুখ সুবহার মুখের কাছাকাছি নিয়ে যায়।তামিমের হার্টবিট বাড়তে থাকে আরো জড়ালো গতিতে।
মুখে গরম নিঃশ্বাস পড়তেই চোখ খুলে সুবহা।
চোখ খুলে তামিমকে নিজের এতো কাছে দেখা মাত্র তাড়াতাড়ি সরে বসে সুবহা।আর নিজের ওড়না ঠিক করতে থাকে।
” উঠলা কেন!”
” এম..এমনি! ”
তামিম সুবহার পাশে গা ঘেসে বসে। আর সুবহার হাত সরিয়ে তার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ে।
তামিমের এমন কাজে সুবহা একটু চমকে উঠে। তামিম সুবহার মাথায় হাত দিয়ে তার মুখের সামনে হেলিয়ে ধরে।
” মাথায় হাত বুলাতে থাকো!”

এমপি তামিম সরকার পর্ব ২০

তামিমের গরম নিঃশ্বাস সুবহার মুখে আছড়ে আছড়ে পরে। শুকনো ঢোক গিলতে থাকে সুবহা! তামিম সুবহার মাথা থেকে হাত সরিয়ে তার কোলে সুন্দর মতো মাথা দিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখে। আর সুবহা তামিমের কথামতো তার মাথাতে হাত বুলাতে থাকে। বেশ অনেক ক্ষণ পর তামিম চোখ খুলে সামনে তাকায়।
” সুবহা!”
“জ্বী!”

এমপি তামিম সরকার পর্ব ২২