এমপি তামিম সরকার পর্ব ৪৩

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৪৩
কাফাতুন নেছা কবিতা

মুখের ভাষা যখন মনের অনুভূতি বুঝাতে অক্ষম, তখন চোখের ভাষায় একমাত্র হাতিয়ার নিজের অনুভূতি গুলোকে বুঝাতে!
তামিম সুবহা আজকে নিশ্চুপ! নেই কোনো ভাষা! কিন্তু মনের গহীনে কোথাও না কোথাও চলছে উত্তেজনা! কাছে পাওয়ার টান!
তামিম না ঘুমিয়ে উপরে তাকিয়ে থাকে! সুবহা ও চুপচাপ না ঘুমিয়ে উপরে তাকিয়ে থাকে! তামিম একটু পর লক্ষ্য করে তাদের মাঝের কোলবালিশটি নেই! যেটা একটু আগে ও ছিলো! তারপর সুবহার দিকে তাকাতেই তামিম দেখতে পায় সে ও ঘুমাইনি!

” ঘুমাবানা পরী?”
” আপনি ঘুমাবেন না?”
” এতো হট মেয়ে সাথে থাকলে ঘুম কী আর হবে!১৯/২০ করতে মন চাই খালি!”
সুবহা লজ্জায় চোখ বন্ধ করে ফেলে! যদিও অন্ধকারে তার মুখশ্রী দেখা যাচ্ছে না, তাও সে নিজের চোখ খোলা রাখতে পারে না!
” তামিম সরকারের মুখে এসব অন্য রকম লাগে!”
” আমার মধ্যে রোমাঞ্চ ভরপুর, একবার শুধু সুযোগ দিয়ে দেখো, তিনদিন বিছানা থেকে উঠতে পারবা না!”
সুবহা আর কিছু না বলে চাদর নিজের মাথা অব্দি টেনে নেই! তামিম ও একপাশের চাদর ধরে নিজে ও ঢুকে পড়ে ভিতরে! তামিম সুবহার একদম কাছাকাছি চলে আসে! সুবহা তামিমের দিকে হয়ে শুয়ে থাকে!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” কবে ধরা দিবা?”
” যেদিন আপনার শরীর থেকে মদে’র ঘ্রাণ আসবে না!”
তামিম চাদর থেকে উঠে সোজা ওয়াশরুমে চলে যায়! সুবহা ও উঠে বসে। সে কী ভুল কিছু বললো? তামিম কী খুব বেশি রাগ করলো তার কথায়! এভাবে হুট করে কেন চলে গেলো সে? সুবহা উঠে দাড়িয়ে ড্রিম লাইট অন করে! আর বিছানার একপাশে যেয়ে বসে! আজকে সত্যিই খুব খারাপ লাগলো তার! তামিম এতো কাছে এসে ও চলে গেলো!
১০-১২ মিনিট পর তামিম তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে এসে সুবহার সামনে দাড়ায়!
হালকা নীল আলোয় তামিমের উদম শরীর আরো মোহনীয় লাগছিলো সুবহার কাছে! চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছিলো তামিমের মুখে! সুবহা তামিমের পা-মাথা অব্দি খুব সূক্ষ্ম নজরে তাকায়!
তামিম আসলেই অনেক সুদর্শন পুরুষ! উজ্জল শ্যামলা ছেলেদের সুন্দর্য বোধ হয় এমনই হয়! লোভনীয় আর্কষণীয়!
” এখন আর কোনো গন্ধ নেই! ”

সুবহা উঠে তামিমের শরীর ঘেসে দাড়ায়! তারপর হাত তামিমের জীম করা শরীরের অ্যাবস গুলোতে হাত রাখে!
” এতো রাতে আমার কাছে আসার জন্য গোসল করলেন?”
তামিম সুবহার ঠোঁটে হালকা স্লাইড করতে থাকে!
” যদি ভেতরটা দেখানো যেতো পরী! তবে তুমি দেখতে পারতে,কতোটা জায়গা নিয়ে আরাম করে বসে আছো!”
তামিম আর সুবহা একজন আরেকজনের মাঝে বিলিন হতে যাচ্ছিল! ঠিক সেই সময়ই তামিমের দরজার বেল বেজে উঠে! শুধু একবার নয়, একসাথে কয়েকবার! তামিমের দরজায় সচারাচর কেউ এইভাবে বেল বাজায় না দরকার ছাড়া!
তামিম দরজার কাছে যায়, আর সুবহা লাইট অন!

” তামিম….!”
” কী হয়েছে আম্মা! ”
” সুবহার ভাই কেমন যেনো করছে!”
ভাইয়ের কথা শুনতেই সুবহা দৌড়ে চলে যায় তার রুমে। সাথে তামিম আর আয়েশা বেগম ও ছিলো। তানভীর সরকার সেই রুমেই উপস্থিত ছিলো!
অক্সিজেন মাস্ক লাগালো তার ভাইয়ের মুখে, খুব ঘনঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে!
সুবহা তার ভাইয়ের কাছে গিয়েই খুব ভেঙে পড়ে।
” হঠাৎ এমন হওয়ার কারণ কী?”
” মাইল্ড এট্যাক! হসপিটালে নিতে হবে!”

তামিম সুবহার ভাইকে দু-হাতে তুলে তাড়াতাড়ি নিয়ে যেতে থাকে।এই মুহুর্তে তার ইমার্জেন্সি ট্রিটমেন্টের দরকার!
তামিম সুবহার ভাইকে নিয়ে সোজা হেলিকপ্টারে উঠে বসে। এখন যতদূর সম্ভব সময় বাঁচাতে হবে! তামিম সুবহার ভাইকে নিয়ে হেলিকপ্টারে উঠে, আর বাকিরা গাড়ি দিয়ে যেতে থাকে।
তামিম খুব তাড়াতাড়ি হসপিটালে পৌঁছে যায়, আর সুবহাদের গাড়ি যেতে ২০ মিনিট দেরি করে। সারা রাস্তা তামিমের আম্মা সুবহাকে খুব শান্তনা দেই!
সুবহার নিজের বলতে এখন শুধু একটা ভাই আছে। তাও এতো ক্রিটিকাল কন্ডিশনে। সুবহা নিজের কলিজা হাতে নিয়ে হসপিটালে পৌঁছায়, আর দোয়া করতে থাকে যেনো কোনো রকম বিপদ না হয়!
হসপিটালে পৌঁছে সুবহা দেখে তামিম ইমার্জেন্সি রুমের বাইরে উদম গায়ে দাড়িয়ে আছে! এতোক্ষণে তার ভাইয়ের ট্রিটমেন্ট ও শুরু হয়ে গেছে!

সুবহা আসতেই তামিম তার কাছে যায়!
” চিন্তা কয়ইরা না পরী! ঠিক আছে শা*লা!”
সুবহা কোনো কথা না বলে তামিমকে জড়িয়ে ধরে, তামিম ও সুবহার মাথায় হাত বুলাতে থাকে! তানভির সরকার আর আয়েশা তাদের সামনেই ছিলো! কিন্তু সুবহা তামিমের এমন ব্যক্তিগত মুহুর্তে তারা থাকতে চায়নি বেশিক্ষণ! দু-জনেই অন্য দিকে চলে যায়! আর পঞ্চ পান্ডব ও যে যার মতো এই কেবিন তো ওই কেবিনের সামনে দাড়ায়!
” ভাই না থাকলে আমার আর নিজের বলতে কেউ থাকবে না তামিম!”
তামিম সুবহার মাথায় হাত বুলাতে থাকে! পরম যত্ন সহকারে!
” তোমার স্বামী এখনো মরে নাই সকাল! তোমার অভিভাবক এখনো ও জীবিত! ”
তামিমের এই এক বাক্যের কথায় যেনো সুবহার শক্তির সঞ্চয় হলো শতগুণ!
তার ও অভিভাবক আছে! সে আর একা নেই!আর কেউ তাকে এতিম বলতে পারবে না!
তামিম সুবহাকে বসায়! আর নিজে ও পাশে বসে!
তামিম লক্ষ্য করে সুবহার শরীরে শুধু নাইটি পড়া! কোনো ওড়না বা অন্য কিছু নেই!

” তুমি একটু বসো পরী! আমি আসছি! ”
তামিম উঠে তার পঞ্চ পান্ডবদের কল লাগায়! কল করার সাথে সাথে তারা এসে হাজির হয়!
” ভাই!”
” যতদিন আমার বউ এই হসপিটালে আছে ততদিন বাকি সবার জন্য এই হসপিটাল নিষিদ্ধ! ”
শখের নারীর জন্য বাংলাদেশের বেস্ট হসপিটাল ও নিষিদ্ধ করলো তামিম!
” পাশের হসপিটালের সমস্ত কিছু ফ্রী করে দে! সব খরচ তামিম সরকার দিবে বলে জানিয়ে দে! এই হসপিটালে যেনো কেউ না আসে!
তামিম নিদর্শনা দেওয়ার সাথে সাথে তারা কাজে লেগে পড়ে! আর তামিম সুবহার কাছে যায়!
” কী-রে সাকিব্বাহ! তুই এতো হাসতাছোস ক্যালা?”
” আর কোছ নাহ! একটুর জন্য আমার পু*কি বেঁচে গেছে!”
মাহির সহ সকলে অবাক দৃষ্টিতে সাকিবের দিকে তাকায়!

” যে দিন ভাই লাল রং নিষিদ্ধ করছিলো, ওইদিন আমি লাল কালারের জা’ঙ্গিয়া পড়ছিলাম! ভাই জানলে আমার পু*কির ছাল তুলে রোদে দিতো!”
বাকিরা সাকিবের কথা শুনে হাসতে হাসতে মাটিতে বসে পড়ে। আন্ডার গ্রারমেন্টস এর জন্য সে এতো ভয়ে ছিলো সেদিন!
তামিম এসে সুবহার পাশে বসে! তামিম বসতেই সুবহা লক্ষ্য করে নার্সগুলো তামিমকে দেখে মুচকি মুচকি হেসে ভিতরে যাচ্ছে!
” আপনার কী অনেক বেশি গরম লাগছে?”
সুবহার হঠাৎ এতো ঝাঁঝালো কথার অর্থ বুঝতে পারে না তামিম!

” না পরী, কেন?”
” এভাবে উদম শরীরে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন কেন?”
তামিম এক পলক নিজের দিকে তাকায়! আসলেই তো টাওজার ছাড়া তেমন কিছুই তো নেই তামিমের শরীরে!
” ভাই মরতাছে, আর জামাইয়ের শরীরের নজর দিয়ে বেড়াছ, লজ্জা কর ছেমরি!”
” লজ্জাহীন মানুষের মুখে লজ্জার কথা মানায়না শয়তান সরকার! ”
খানিকটা ব্যাঙ্গ করেই তামিমকে কথা গুলো বললো সুবহা!
তামিম সুবহার গা ঘেসে বসে! আর তার হাত ধরে ফেলে!

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৪২

” Why so jealous mrs.Sarkar? ”
” I’m not! ”
” নাটক কম করো পিও! তুমি যে জ্বলতাছো ওইটা তোমার মুখ দেখলে বুঝা যায়! ”

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৪৪