এমপি তামিম সরকার পর্ব ৫৩
কাফাতুন নেছা কবিতা
” আর এক পা সামনে এগিয়ে আসবেন তো, মে’রে ফেলবো আপনাকে!”
” লিখবো..তোমার..হাতে.. আমি.. আমার মরণ…!”
তামিম খুব শক্ত করে সুবহার হাত ধরে তাকে ঘুড়িয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেই!
” মরে তো আমি অনেক দিন আগেই গেছি পরী! এখন শুধু বাচার জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন! ”
” আমি ঘৃণা করি আপনাকে!”
” আজকের পর থেকে তোর ঘৃণার মাত্রা আরো এক ধাপ বেড়ে যাবে রে সকাল!”
প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে তামিমের বুকেই ঢোলে পরে সুবহা!তামিম ও কোনো রিয়েকশন দেয় না! আজকে তার শখের বউয়ের কষ্টে একটু ও তার মন গলেনি! বরং প্রচন্ড বিরক্ত হলো সে!
” ৪৫ টা ধীরে থাপ্প’ড় দিয়েছি, তাতেই এতো নাটক! আরো ৫ টা বেশি দিলে তো খুঁজে পাওয়া যেতো না একে!”
” আপনার ধীরে থাপ্প’ড় ও চাপার দাঁত ভেঙে ফেলার জন্য যথেষ্ট ভাই!”
তামিম খুব রাগি দৃষ্টিতে তাকায় সাকিবের দিকে! সাকিব ও কিছু না বলে চুপচাপ মাথা নিচু করে ফেলে!
” কিছু কইলেন খালি চেত্তা যায়!”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
গাড়ি চলতে থাকে তার নিদিষ্ট গতিতে! তামিমের রাগ ও কিছুতেই কমে না! এতোদিন পর সুবহা তামিমের কাছে এলো, তাও মাত্র ৪৫ টি থাপ্প’ড়েই সেন্সলেস হয়ে গেলো! বিষয়টি তামিমের একদমই পছন্দ হয়নি! সে চুপচাপ নিজের রাগ কন্ট্রোল করে বসে আছে! বাকি ভয়েই কিছু বলছে না! সাকিব মুখ ফোসকে এক-দুই টা কথা বললেও সাথে সাথে চুপসে যায়! কারণ তামিমের রাগ কেমন তারা সবাই জানে!
সুবহাকে যে তামিম ৪৫ টুক’রো করেনি এটাই অনেক বড় ব্যাপার!
গাড়ি সোজা, তামিমের ভিলাতে যেয়ে থামে! লোকালয় থেকে একটু দূরে! অবশ্য ভিলাটি তানভির সরকার, আয়েশা সরকারের জন্য তৈরি করেছিলো, পরে আয়েশা ভিলাটি তামিমের নামে দিয়ে দেই! তামিম বছরে এক-দুই বার সুইজারল্যান্ডে আসতো, তাও পুরো পরিবার নিয়েই! বিশেষ করে তানভীর সরকারেট যখন কোনো কাজ থাকতো! আর বেশিরভাগ সময় থাকতো লন্ডনে! লন্ডনে একটি বাঙ্গালিদের অভিজাত এলাকা রয়েছে! যেখানে দেশের বিভিন্ন মন্ত্রী এবং নেতাদের বসত ভবন!! তামিম বছরের বেশিরভাগ সময়ই সেখানে থাকতো। কিন্তু এমপি হওয়ার পর থেকে দেশেই যুব আইডল হিসেবে থাকে তামিম!
গাড়ি থেকে নেমেই তামিম সুবহাকে নিয়ে সোজা ভিলার পিছনের সাইটে চলে যায়! আর তার নিদের্শ মতো বডিগার্ডরা সব এরেন্জ করতে থাকে! তামিমের নির্দেশ শুনে তার পঞ্চ পান্ডব ও মোটামুটি ভয় পেয়ে যায়! তামিম সরকার ভয়ংকর এটা সবাই জানে! কিন্তু আজকের পর থেকে সে যে কতোটা নির্দয় সেটা ও সবাই জানবে!
১৭ মিনিট পর……!
প্রচন্ড ঠান্ডা পানি মুখে পড়তেই ধড়ফড়িয়ে উঠে সুবহা! রাতের দিকে এমনিতেই এখন মোটামুটি শীত শীত ভাব, তার উপরে এতো ঠান্ডা পানি! সুবহা উঠে বসে হাঁপাতে থাকে! হাত দিয়ে মুখের পানি মুছতেই সামনে বসা তামিমকে দেখে তার আত্মা বের হয়ে আসার উপক্রম হয়ে উঠে!
তামিম পায়ের উপরে পা তুলে চেয়ারে বসে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সুবহার দিকে! সুবহা পালিয়েছিলো তাতে যতটা না রাগ হয়েছিলো তামিমের, তার থেকে ও দ্বিগুণ রাগ হচ্ছে সুবহার চলাফেরা দেখে! যেখানে সুবহার দিকে তাকাতে ও সবাইকে নিষেধ করেছে তামিম, সেখানে এমন আল্ট্রা মর্ডান ড্রেস পরে হাত পা বের করে শুধু ফ্রক পরে ঘুরেছে সুবহা, এটা ভাবতে ও তামিমের রাগের মাত্রা বেড়ে যায়! তার যদি মন চায় তামিমের সামনে এভাবে ঘুরবে, বাইরের দশ জনের সামনে কেন এভাবে ঘুরতে গেলো সে! তামিম খুব রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সুবহার দিকে! সুবহা ও শুকনো ঢোক গিলে! আজকে তামিমকে তার পূরানো ভয়ংকর তামিমের মতো লাগছে!
” শরীরে কী বেশি চর্বি হয়ছে না-কি বউ? ”
তামিম উঠে সুবহার দিকে আসতে থাকে! সুবহা ও খুব ভয় পেয়ে যায়! সে উঠে তামিম আসার আগে এদিক ওদিক তাকাতে থাকে! যদি নিজেকে বাঁচাতে পারে! তামিমের আর তার দূরত্ব যতটা কমে যাচ্ছিল সুবহার ভয় ঠিক ততটাই বেড়ে যাচ্ছিলো!
সুবহা অন্য দিকে দৌড়ে চলে যেতে চায়! কিন্তু তার আগেই কালো চশমা পরিহিত তামিমের লোকেরা পথ আটকে দাড়ায়!
সুবহা ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখে তামিম তার দিকে আসছে, সুবহা আবার ও অন্যদিকে দৌড় দেই,কিন্তু সেদিকে ও তামিমের লোকরা দাড়িয়ে পড়ে!
মানুষের পিঠ যখন দেওয়ালে ঠেকে যায়! বাঁচার মতো কোনো আর পথ খোলা থাকে না, তখন মনে হয় দুনিয়াতে তার থেকে অসহায় আর অভাগা ব্যক্তটি বোধ হয় আর একটি নেই! যেমন টি সুবহার নিজের জন্য মনে হচ্ছিল!!
তামিম এসে একদম সুবহার পিঠ বরাবর দাড়ায়! তামিমের উপস্থিতি সুবহার শরীরের কম্পন আরো বাড়িয়ে দেয়! পিছনে ঘোড়ার মতো সাহস ও পায় না সে!তামিম আস্তে আস্তে সুবহার কোমরে হাত রাখে! সুবহার কানের কাছে নিজের মুখ নিয়ে যায়! তামিমের নিঃশ্বাস অনুভব করতে পারে সুবহা!
” তুমি কী আমার স্টেমিনা পরীক্ষা করছো বউ? আই হ্যাভ এনাফ স্টেমিনা বেইবি! ভবিষ্যতে তোমাকে পরকীয়া করতে করতে হবে না!”
সুবহা ঘৃণায় চোখ বন্ধ করে ফেলে! আর অন্য দিকে তাকিয়ে দেখে কয়েকজন পুলিশের পোশাক ধারি লোক দাড়িয়ে আছে! তাদের দূরত্ব খুব একটা দূরে নয়! সুবহার মনে আশার আলো আবারো জলে উঠলো!
সে এক ঝটকাতে তামিমের হাত সরিয়ে সেদিকে দৌড় লাগায়! তামিম সুবহার এমন বোকামি দেখে পকেটে হাত ঢুকিয়ে হাসতে থাকে!
” বোকা বউ আমার!”
সুবহা দৌড়ে সেই লোকদের কাছে গিয়ে হাঁপাতে থাকে! বেশ অনেক ক্ষণ পর সুবহার নিঃশ্বাস স্বাভাবিক হয়! তারপর সে সেই লোকদের কাছে আকুতি মিনতি করতে থাকে! ভয়ে সুবহা এটা ও ভুলে যায় যে লোকগুলো বাঙ্গালী ছিলো না!
” প্লিজ! ওই লোকটার হাত থেকে আমাকে বাঁচান! প্লিজ একটু সাহায্য করুন!”
লোকগুলো জড়বস্তুর মতো দাড়িয়ে থাকে! সুবহার কোনো কথার উত্তর তারা দেই না!
”এই যে আপ…আপনি… আপনি তো সাহায্য করুন! ”
একপাশে দাড়ানো লোকটার কাছে ও সুবহা প্রচন্ড অনুরোধ করে।কিন্তু সেই লোকটা ও তেমন কোনো রিয়েকশন দেয় না!
কিছু ক্ষণ পর তামিমের পারফিউমের ঘ্রাণ সুবহার নাকে আসতে থাকে! পরিবেশ টা ও কেমন যেনো থমথমে!
তামিম একদম সুবহার ঘা ঘেসে দাড়ায়!
” কেউ সাহায্য করলো না বউ? আহারে খুব কষ্ট লাগলো!”
তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে উঠে তামিম! পরক্ষণেই তার চোয়াল শক্ত হয়ে যায়! তামিম সুবহার বাহু ধরে তাকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নেই! খুব শক্ত সুবহার গাল চেপে ধরে!
” মাঝে মাঝে ভাবি! বিশ্বে এতো সুন্দর সুন্দর মেয়ে থাকতে, তোর মতো বেইমান নারীর কেন প্রেমে পড়লাম, পড়লাম তো পড়লাম, এমন ভাবেই পড়লাম,নিজের সুখ, শান্তি সব শেষ! ”
” আমি তো আপনাকে জোর করে পড়াইনি!”
এমপি তামিম সরকার পর্ব ৫২
তামিম সুবহার কোমর খুব জোরে ধরে। এতোটাই জোরে ধরে যে সুবহার মেরুদণ্ডের হাড় প্রায় ভেঙে যাওয়ার পরিক্রম! জোর চিৎকার দিয়ে উঠে সুবহা! আর বার বার তামিমকে ছাড়তে বলে! কিন্তু না! তামিম তাকে ছাড়ে না!
” তেজ দেখাস! আমার সাথে তেজ দেখাস! তোর তেজ আজকে বের করবো!”
তামিম সুবহার হাত ধরে তাকে টেনে-হিছড়ে নিয়ে যায় সামনে!
তারপর এক ঝটকায় মাটিতে ফেলে দেই! সামনে তাকাতেই সুবহার নিঃশ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে আসছিলো! একটা মানুষ এতোটা ভয়ংকর কীভাবে হতে পারে??