কালকুঠুরি পর্ব ১৭
sumona khatun mollika
রাগিব দেওয়ান সামনে বসে। তিহান মাথায় হাত দিয়ে মাটির দিকে মাথা নিচু করে বসে আছে। সোমা তার পাশে বসে আছে চুপচাপ। দুপুরের রোদের তাপ ফ্যানের বাতাসের বাধা মানছেনা। সামির ভেতরে ঢুকতেই তিহান ঝাপিয়ে উঠে তার লাল শার্টের কলার চেপে ধরে চোখ গরম করে বলল,,
– শুয়োরের বাচ্চা,, তুইনা কারো দলে না? আমার পেছন মারলি কেন ,? আরে ভোটের গুষ্টি মারি,, যদি বলতি নিজ উদ্যোগে রাস্তা থেকে সরে যেতাম ,, গোরস্থানে বোমা মারলি ক্যান,,
সামির আস্তে করে কলার ছাড়িয়ে বলল,,
– ওহহও সরি ভাইয়া আমি জানতাম না ওখানে আপনার পশ্চাৎদেশ আছে,, ভুল করে মেরে দিয়েছি খুমা করে দেন।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তিহান ধপ করে পাশের চেয়ারে বসে পরল। সোমা বলল,
– নটকির পুতে ইচ্ছে করে মারছে। সালার সিকান্দার কইছিল ঝামেলা করত না। তুই কিজন্য বোম মারলি?
সামির একটা চেয়ার টেনে সামনে বসতে বসতে বলল,,
– ফ্যামিলি ম্যাটার। ।
রাগিব দেওয়ান ঠোঁটের সিগারেট নামিয়ে বলল,,
– কয় কোটি ট্যাকার গার মারছস জানস?
– কত আর হবে ৩০ কি ৪০?? তোমার কি যায় আসে? তোমারতো কিছু যায় নাই।।
রাগিব বাকা হেসে বলল,,
– প্রতিপক্ষের ডেরায় বোম মেরে উড়িয়ে দেয়া সামির সিকান্দার রে আর কি কমু। নে দর এডা টেস্ট কইরা ক,,
সামির সামনে রাখা একটা বাটির মধ্যের সাদা রঙ মতো গুঁড়া একবার হাত দিয়ে নাড়লো। তারপর কাগজটা ভদ্রলোক এর মতো সামনে এগিয়ে বলর,,
– আমারে কি বোকাচোদা মনে হয়? যে তুমি এর মধ্যে আমারে কোডিন মিশাইয়া গেলাবা,, আমার বালডাও জানতে পারবোনা তাইতো?
রাগিব বাঁকা হেসে বলল,,,
– এর জন্যই সামির সিকান্দার সবার সেরা রে ভাই!! চতুর হায়না।
– আমি নিতান্তই একজন কামলা বেডা। জের যেদিকে বেশি আমার উপস্থিতি সেদিকে। তাছাড়া তুহিন ভাই,, আমিতো আপনের উপকার কইরা আইছি। হিরো মাহবুব আপনের ওই জায়গা খুইজা পাইছে,, সাসপেন্ড শেষ হওয়ার পরেরদিনি আপনারে ভরতো এক্কের রেড মারতো বুঝলেন,,। লাভ কিন্তু দুই পক্ষেরি হইছে।
আর কোনো কথা না বলে সামির সোজা বেরিয়ে গেল।
নিঃসন্দেহে সাফিন বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছে। ভোটের দিন,,
বোরখা পরিহিত বিশালদেহী এক মহিলাকে ডেকে মেধার বাবা পুলিশ রাসেল শিকদার জিজ্ঞেস করলেন,,
– আম্মারা,, আপনেরা ওইদিকে কোই যান,, মহিলাদের সিরিয়ালতো এইদিকে। তাছাড়া ভোট তো শেষ। আপনেগো কাড দেহি,,
পাতলা গড়নের লম্বা তালগাছ মতো মহিলা মাথা নাড়িয়ে জবাব দিল,
– আমরা ভোট দিয়া আইছি কাকা ।
– বে,,, বেডা মানুষ!! এই ছুড়া কে বে তুই? মুখ দেখা নইলে,,
-শুভদৃষ্টি পেছনে ভরব বাঙ্গি সর,, ভিতরে যাইবার দে।
– সা… সামির !!
-না তিতুমীর,, আবে সর না,, যাতে দে,, ভোট কে দেবে ভিতরে যাম,, সামান্য একটু ডানবাম ঘুইরা চইলা আসব।
সামিরকে দেখে রাসেল শিকদার দ্রুত দ্রুত ভিতরে যেতে দিলেন। দুইজন বোরখা পড়া পুরুষ। সামির আর সার্বক্ষণিক চেলা কাইশসা। ভেতরে গিয়ে নিকাব তুলতেই ,, গণনাকারী রা সব দাড়িয়ে গেল। সামির ইশারা করতেই কাশেম এগিয়ে গিয়ে কাউন্ট করা দেখে বলল,,
– সাফিন ভাই জিতছে ভাই। তাওকি?
– আরে মার।
সাফিন মাত্র ১৬ ভোটের জন্য জিতেছে। সামির সুন্দর করে হুমকি মেরে দিল,,, সংখ্যাটা যেন ১৬০ হয়েযায়।
উপস্হিত একজন বলল,,
– কিন্তু,, ভা,, ভা,, ভাই,, নির্বাচন সভাপতি রাগিব দেওয়ান যদি,,
– কইবি এক বাঙ্গির নাতি আইছেলো। কারচুপি কইরা গেছে।
সামির আর কাশেম বাইরে বেরিয়ে গেলে,, একজন ঘাম মুছে বলে,,
– শালা হেব্বি জিনিস,, কি যেন আছে না,, খালি পাশে চলবেনা। গোল্ডেন প্লাস লাগবে। সেই জাত বলা যায়। রাগিব দেওয়ান রে কল দিয়া খবর দিছ।
ভার্সিটি প্রাঙ্গনে ,,, স্টুডেন্ট দের ভির হয়েছে মোটামুটি।।
কাশেমসহ বাকি ছেলেগুলো সাফিনরে নিয়ে ব্যাস্ত। রোদ, গরম কিচ্ছু বাছ বাছাই করছেনা। হইচই করছে। সামির বাইকে হেলান দিয়ে বসে আছে। কাশেম এসে সামনে দাড়াতেই সামির হুড়মুড়িয়ে বলে,,
– এই এই এই দাড়া দাড়া। এ রানু,, বান্টি,, ঘন্টি এদিক আয়,,,
সামিরের ডাক শুনে রনি, বান্টি, লিমনসহ আরো কয়েকজন এগিয়ে এলো। সামির বলল,,
– সব এক সিরিয়ালে দাড়িয়ে চোখটা সূর্যের দিকে ঘোরা,,,
এক এক করে সবার মণি চেক করছিল সামির। রনি শেষ প্রান্ত থেকে বলল,,
– চোখ ঝইলসা গেল ভাই।
– চোপ বাঙ্গির নাতি ওপরে তাকা,,
সবার চোখ চেক করেও সামির কারো সাথে কাশেমের চোখের মিল পেলনা। তারপর পাগলের মতো নিজেই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে খেতে বলল,,
– ওয়া ভাই ,, ও কাইশসা , তোর চোখ কি বেডি ভার্সন?
কাশেম ঘাড় চুলকে কিছুু না বুঝে জবাব করল,,
– ক্যান ভাই, আমার চোখে কি অপরাধ করছে।
– তর চোখের মণি বুজছস কারো সাথে মিললনা। খালি একটা ছুড়ির সাথে মিলল।
কাশেম রনির সানগ্লাসে চোখের মণি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বলল,
– কোই ভাই,, কালাইতো।
– তুমি বাঙ্গি কালা ছাড়া কিছু দেখতে পাও? যাহ সর সামনেতথে,, ।
সামিরের আচরণের কারণ ধরন কিছুই বুঝলনা কেও। সামির সোজা চলে গেল লাইব্রেরিতে। লাইব্রেরি ম্যাম তার চেহারা দেখেই বিরক্তি প্রকাশ করলেন। একটা খাতা হাতে নিয়ে ম্যামের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় লাইব্রেরি ম্যাম তাকে পিছু ডেকে বললেন,,
– এই ছেলে,, তোমার হুলিয়ার এই অবস্হা কেন? চুল টুল কাটতে পারোনা,, পোশাক এমন আজগুবি কেন, বিধবা তুমি?? সাদা লুঙ্গি পড়ে কে ভার্সিটি আসে,, দেখতে যেমনি হও,, নিজেকে একটু পরিবর্তন তো করতে পারো নাকি,
সামির আলগা হাতে চুল ঠিক করে সানগ্লাস নামিয়ে বলল,,
– কেন মেডাম?? মেয়ে বিয়ে দেবেন নাকি? দিলে দিতে পারেন কিন্তু। বাড়িত কইছিলাম বিয়া করুম পাত্তাই দিলনা। আপনে দিয়ে দেন,, শিক্ষক তো পিতা মাতার সমানি হয়।
– তোমার মতো বেকার বখাটের কাছে কোন বাপ তার মেয়ে কে দেবে??
– যদি না দেয় তাইলে অনাথ বিয়া করুম। নো ঝামেলা ডাইরেক্ট ফুলের মালা,
– বাহ বুদ্ধিমান।
– জ্বি ধন্যবাদ। আর যদি কেও নাইই দেয়, আপনার মেয়ে তো আছে,, আপনি মেডাম মানুষ,, দিয়ে দিয়েন দয়া ময়া করে।
বলেই সেখান থেকে বেরিয়ে যায় সামির। লাইব্রেরি ম্যাম হা করে তাকিয়ে দেখেন আর মনে মনে ভাবেন,, মানুষ এমন বেয়ারা কি করে হয়। বেয়াদব একটা ছেলে,,
বাড়ি ফিরে ওপর তলায় যেতেই কানে এলো,, সুফি বেগম,, (সাথির মা) কান্নাকাটি করছেন। আর বারবার বলছেন,,
– একটু ধৈর্য ধর মা। মে মানুষের জীবন এমনি হয়।। সব ঠিক হয়ে যাবে। ।।। ।
রাগ করে কল কেটে দিল সাথি। সামির ভেতরে না গিয়ে সোজা সাফিনের ঘরে চলে গেল। সাফিন ব্যাবসার কিছু কাগজপত্র দেখছে। শুধু রাজনীতি নয়। পারিবারিক ভাবে তারা বড়সড় গার্মেন্টস এর মালিক। সিয়াম বেশির ভাগ সময় ওইদিকেই ঝোঁক দেয়। সাফিন দুই দিকেই। আর সামির কোনোদিকেইনা। সে সারাদিন ভন্ডামি করে বেরায়। এটাই তার কাজ । আর কোনো কাজ নাই।
সাফিন চোখ তুলে সামিরের দিকে তাকিয়ে বলল,,
– কি চাই?? বিয়া এহন দিয়া পারবনা।
– ইতি আর সাথিরে নিয়াসো,,, ওই শোরের বাইচ্চা ইতি রে ধইরাও মারছে।
– তোকে বলল??
– চাচি কথা বলছিল শুনছি।
তখন ঘরের ভেতরে সিয়ামের আগমন হয়। সিয়াম বিছানার ওপর বসে বলে,,
– ওদের ফ্যামিলি ম্যাটার হাত ঢোকানো খুব জরুরি? । তোর আবার কবে থেকে অন্যের জন্য অন্তর পুড়তে শুরু করল??
সামির টেবিলের ওপর চড়ে বসে বলল,,
– তোমরা ওর নিজের ভাই। যা মন চায় কইরো। এমনিও চাচি আসতো, আমিই বলে দিলাম এই টুকুই।
কথাটুকু শেষ করে সামির নিজের ঘরে চলে গেল। সাফিন একঢোক পানি খেয়ে বলল,,
– সত্যি কি আনতে হবে নাকি?
– চুপ করো তো ভাই। বিয়া দিয়া দিছি আবার আনবো ক্যান। ভেতরে ভেতরে দলাদলির সম্পর্ক না থাকলে হুট করে গিয়ে আনা যেত। আব্বা যা করে করবে। ।
সিয়ামের কথাটা দড়জার বাইরে দাড়িয়ে নুসরাত শুনতে পায়। নুসরাত পুরো ঘটনাটা জানতে সুফি বেগম কে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান,,,
“” কিছুবছর আগে,, এক দাঙ্গার ভেতর সাফিন, সাথির দেবর ইফতি প্রধানকে খুন করে। সিকান্দার আর প্রধানরা ক্ষমতার দিক দিয়ে সমানে সমান। কেও কারো চেয়ে কম বা বেশি না। সামির তখন সম্ভবত ইন্টারমিডিয়েট এর ছাত্র। দুইদলের মারামারি ঠেকানো প্রায় ভয়ানক হয়ে উঠে। কিন্তু এর মধ্যে ইতির বাপ ইমন প্রধান, সাথিকে দেখে পছন্দ করে। সালার সিকান্দার রে বলা হলে তিনি পুরোপুরি না করে দেন। বিরোধীদের সাথে সম্পর্কে জড়াতে চান না।
ইমনের জেদের কারণে প্রস্তাব এলো,, বিয়েটা হলে, মাঝের সব দাঙ্গা শেস করে দেয়া হবে। তাদের কোনো দাবিদাওয়া নেই। সাফিনের বিরুদ্ধে রিপোর্ট ও তুলে নেবে। সালার সিকান্দার মানা করলেও সাফিন রাজি হয়ে যায়। যেহেতু সাথির বাপ নাই, তাই ওরা যা সিদ্ধান্ত নিল তাই হলো। মেযেটা আমার বিয়ে করতে চায়নি। পড়তে চেয়েছিল। আমাকে পায়ে ধরে বলেছিল “” মাগো আমায় এদের দাবার গুটি বানিওনা । আমি পড়তে চাই। চলোনা মা, আমরা সিকান্দার বাড়ি ছেড়ে চলে যাই “”
মেয়ের কথা টা যে কানে তুলিনি তা না। কিন্তু সালার সিকান্দার রাজি হলোনা। আমাকে আমার বাপের বাড়ি চলে যেতে বলল আর বাচ্চাদের এখানেই ফেলে যেতে বলল। কিছুই করার রইলনা। সাথির সাথে ইমনের বিয়ে হলো। সামিরকে বললাম সে কানে তুলেও লাভ হলোনা। জবাব পেল,, তাতে তোর কি? তোরতো কেও হয়না ও। সামিরও আর কিছু বলেনি। প্রথম দেড় দু বছর ভালোই ছিল,, তবে শাশুড়ী, ননদ, স্বামী মিলে মেয়েটাকে অসহনীয় অত্যাচার করে। ঠিকমতো খেতে দেয়না। আবার নেশা করে মারধর করে,,
বাইরের মেলোক নিয়ে ওইটুকু দুদের শিশুর সামনে,, “””
সুফি বেগম আর কিছু বললনা। নুসরাত চোখের পানি মুছে বলল,, আপনাকে বলেনা?
– বলেইতো। খালি ধৈর্য ধরে থাকতে বলি। জানো আজ ওইটুকুনা গ্যাদা ছুড়িডারেও মারছে।
নুসরাত তাকে শান্তনা দিতে লাগলো। একটু পর ঘরে গিয়ে সিয়ামকে বলল,,
– শোনো,,, সাথি আপুকে নিয়ে এসো। উনিও মানুষ। এত অত্যাচার কিভাবে সহ্য করে,, আল্লাহ জানে! একটুও মায়া হয়না?
– শোনো, এসব বিষয়ে নাক গলিওনা। ভাই আছে,, আব্বা আছে যা ভালো মনে করে তারা করুক।
নুসরাত আর কোনো কথা বললেও সিয়াম তাতে কর্ণপাত করলনা।
পরেরদিন,,,,
সালার সিকান্দার সামিরকে মাহাদের বাড়ি পাঠিয়েছে মফিদ উদ্দিন এর কাছ থেকে ব্যাবসার কিছু কাগজ আনার জন্য। সামির আর কাশেম গাড়ি থেকে নেমে ভেতরে ঢুকতেই দেখল বাড়িতে কিছু লোকজন। কথায় কথায় জানা হলো তারা রাফির বাড়ির লোকজন। । বেশিরভাগি মহিলা।
ড্রয়িং রুমে মাহা অপরাধীর ন্যায় দাড়িয়ে। সামির আর কাশেম বাইরে দাড়িয়েই শুনতে লাগল,,
একজন মহিলা বলছে,,
– নাটকের পদ্দা করো,, আচরন এমন রাক্ষসীর মতো ক্যান? কুন সাউসে আমার ছুড়ার গায়ে হাত তুইলেছ?? কিসব আচরন এগ্লা?!
আরো অনেকে অনেক কথা বললেন। তারপর বেশ মোটাসোটা উগ্র মেজাজি এক মহিলা বললেন,,
– হাত কুব লম্বা হয়ে গেছেনা তোমার,, সত্যি তুমি মাইরেছ?
মাহা নীলরঙা সুতির হিজাবের নিকাবের ওপাশ থেকেই বলল,,
– জ্বি আমিই মেরেছি।
কথাটা বলতেই উক্ত মহিলা বেশ জোড়েই চড় মারার জন্য হাত ওঠালে মাহা ডান হাত দিয়ে খপ করে তার হাত ধরে ফেলল। এতখন ভদ্রতার খাতিরে চোখ নামিয়ে কথা বলছিল। এখন একদম মহিলার চোখ বরাবর তাকাতেই মহিলা কপাল চওড়া করে ফেলল,,
সোফায় বসে থাকা ৪জন সহ মাহার চাচি উঠে দাড়ালেন। মাহবুব উদ্দিন, মুহিব ওপর থেকে দাড়িয়ে দাড়িয়ে মজা দেখছে। ওদের নিচে আসা বারণ। পাশে মধু আর মেধা দাড়িয়ে। দড়জার কাছে দাড়িয়েই কাশেম ভ্রু উচিয়ে বলল,,
-আরেব বাপরে,, কাম সারছে !!
সামির দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে চুপচাপ দেখতে থাকলো।
মাহার চাচি বললেন,,
– হাত নামা।
উক্ত মহিলা বললেন,,
– বেযাদব মেয়ে, তুমি আমার হাত ধরলে!! একেইতো হবু দেবরকে মেরেছ। লজ্জা লাগলো না?
মাহা হাত ছেড়ে দিয়ে বলল,
– জ্বি না লাগলো না। এবং তাকে চড় মেরে আমি কোনো অন্যায় করিনি। উনি আমার সাথে অভদ্রতা করেছেন গায়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। আমি সেল্ফ ডিফেন্স করেছি। আপনাদের আমাকে নয়। উনাকে জিজ্ঞেস করা উচিৎ। বেয়াদব আমি নই উনি।
– তুমি বড়দের বলতে পারতে, মারলে কেন,, শিক্ষা দক্ষা নাই?
-শিক্ষা আছে জন্যই নিজের পক্ষে যুক্তি দিচ্ছি। নিঃসন্দেহে আমি কোনো অন্যায় করিনি।
মাহার চাচি এগিয়ে গিয়ে তার গালে চড় বসিয়ে দেবে তখনি পেছন থেকে মাহবুব উদ্দিন তার হতে ধরে ফেলল। অতিদ্রুত হাত ছেড়ে দিয়ে বলল,
– ক্ষমা করবেন। আমি একজন পুলিশ কর্মকর্তা। এবং এখানে আসলেই মিস মাহার কোনো দোষ নাই। আপনারা একটু বিষয়টা ভালো করে বিবেচনা করলে বুঝবেন।
উপস্হিত সকলে একে একে বেরিয়ে গেল। মাহার চাচি রেগে বোম হয়ে ওপরে চলে গেলে,, মুহিব, মধু, মেধা নিচে নেমে এলে সামির বাহির থেকে এসে বলল,
– বাহ ভাই আপনে আসলেই হিরো,,, আহাগো ডিপজলের মা, তোমার কোন জায়গায় বিয়া ঠিক করছে,, ছাপরির দল শালীরা,,
সামিরকে দেখে মাহার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। চুপচাপ ওপরে চলে যায়। সামির মেধাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
– এ কাইলানী কি হইছে বে?
মেধা৷ একবার কাশেম এর দিকে তাকালো তারপর বলল,
-রাফি ভাইয়ের চাচাতো ভাই রবি, মাহার সাথে বেয়াদবি করেছে। জবরদস্তি মাহার হাত ধরার জন্য মাহা ঠাস করে চড় বসাই দিয়েছে। এটা নিয়েই ওর হবু চাচি শাশুড়ীর এত মাথা খারাপ।
কালকুঠুরি পর্ব ১৬
সামির বাহাতে ঘাড় চুলকে বলে,
– চড়ওয়ালী তাইলে আমি বাদে অন্য কারো গালেও ছোঁয়া দেয় ।
প্রয়োজনীয় কাগজ নিয়ে সামির আর কাশেম চলে যায়।
