খেয়ালি আমি হেয়ালি তুমি পর্ব ২৩
আনিকা আয়াত
চৈতীর চোখ-মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। আজকের মতো নিরুপায় হয়তো কখনোই হয়নি সে। না পারছে চিৎকার করেতে, না পারছে পালাতে। বিপদের সময় নাকি বুদ্ধি পালিয়ে যায়? চৈতীর সঙ্গেও তাই ঘটছে। মেয়েটা পিছাতে পিছাতে হঠাৎ পায়ের সাথে কিছু লেগে থেমে পড়লো। দেহটা গুটিশুটি মে/রে চিপকে থাকে দেয়ালের সঙ্গে। সামনের ব্যক্তি শয়*তানি হেঁসে একদম তার গা ঘেঁষে দাঁড়ায়। চৈতী এবার দিক হারালো। চারপাশ হন্নে হয়ে খুঁজেও নিজের সম্মান বাঁচানোর মতো কিছু পেলো না। এই খারাপ ব্যাটাকে আক্রমণ করে পালাবে কিভাবে আজ? কল্পনার মাঝেই, লোকটা চোখের পলকেই তার হাত শক্ত করে চেপে ধরে। ভয়ার্ত চৈতীর বুক ধ্বক করে উঠে। হাত ছাড়ানোর জন্য মুচড়া মুচড়ি করে চিল্লিয়ে বলল,
“ হাত ছাড়ুন। আপনাকে আমি জে/লের ভাত খাওয়াবো।”
কথাটা বলা শেষ কিন্তু ওর ওড়নায় টান পড়তে সময় লাগলো না। শালীনতায় বুকে-পিঠে সুন্দর মতো জড়িয়ে রাখা ওড়নার এক অংশ হিংস্র পশুর মতো টেনে ছিঁড়ে ফোঁসে উঠে বলল,
“ বেঁচে থাকলে তো জে/লের ভাত খাওয়াবি। জ্যান্ত ক/বর দেবো। শা/লী!”
লোকটার ব্যবহারে চৈতীর গা গুলিয়ে আসলো। চোখের পানিতে তৎক্ষনাৎ গাল ভেসে যেতেই লোকটা শক্ত হাতে নরম, কোমল চোয়াল শক্ত করে ধরে দাঁতে দাঁত পিষে। ব্যথায় চৈতী চোখ বন্ধ করে। সামনের শক্তিবল লোকটির সঙ্গে, ধস্তাধস্তি করা চৈতী অসহায়ের মতো নিজেকে ছুটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু বরাবরই ব্যর্থ। মনে হচ্ছে, ও যত ছটফট করছে লোকটা ততই যেনো আনন্দ পেয়ে আরোও এগিয়ে আসছে। হঠাৎ মেয়েটার মস্তিষ্ক সচল হলো। পরক্ষণেই সংবিৎ ফিরে আসতেই শান্ত হয়ে আসলো। নিজের বোকামীতে ছিহ!ছিহ! করে ভাবলো, দূর্বলতা প্রকাশ করলে, মানুষ আরোও সুযোগ খুঁজে। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। চুপচাপ দেখে গেলে সর্বনাশ হওয়া কেউ থামাতে পারবে না।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তার থেকে শান্ত মাথায় বুদ্ধি করে পালাতে হবে। মেয়েটা শক্তি সঞ্চয় করে, বারকয়েক লম্বা শ্বাস ফেলে আশেপাশে তাকায়। ডাইনিং টেবিলে নজর যেতেই দুচোখ চকচক করে উঠে।
লোকটা ততক্ষনে ওর হাত দেয়ালে চেপে ওড়নাটা সরানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু চৈতী বামহাতে সর্বশক্তি দিয়ে নিজেকে রক্ষা করার জন্য বুকে আড়াআড়ি ভাবে রাখলো। লোকটা খেঁকিয়ে উঠে শক্ত থাবায় ওড়না নিজহাতে নিয়ে ফ্লোরে ফেলে দেয়। চৈতীর তৎক্ষনাৎ কি হলো কে জানে? লজ্জায় আড়ষ্ট হওয়ার বদলে রণমুর্তি ধারন করে রক্তচক্ষু মেলে তাকায়। লোকটা হাঁসলো বিশ্রী করে। মেয়েটার দুহাত-ই শক্ত হাতের মুঠোয় বন্দী। সেকেন্ডের ব্যবধাণেই খারাপ উদ্দেশ্য ওর ঠোঁটের নিকট এগিয়ে আসতেই চৈতী গলা কাঁপিয়ে চিৎকার করলো। লোকটা ভরকে যায়। কপাল কুঁচকে ভাবুক নয়নে মাথা তুলতেই, মেয়েটা এই সুযোগে নিজের মুখ খানিক নামিয়ে ওর চেপে রাখা হাতে সর্বোচ্চ শক্তিতে কামড় বসালো।
আকস্মিক ঘটনায় চমকে উঠে আহিতের বাবা। এক ঝটকায় ওর হাত ছেঁড়ে দিয়ে চোখের সামনে কামড়ে দেওয়া নিজের হাত দেখলো। ফের ব্যথাতুর শব্দ করলো মুখ দিয়ে। এবার তিনগুণ হিংস্র হয়ে ঝাঁপিয়ে আসতেই দৌঁড়ে পালালো চৈতী। সামনের টেবিলের উপর কাঁচের জগ ছুঁড়ে মা/রলো লোকটার মুখের উপর। তৎক্ষনাৎ লোকটা কপালে আঘাত পাওয়া স্থানে হাত চেপে দু কদম পিছিয়ে যায়। গ্রামের মেয়ে সে। তার নিশানা ভুল হওয়ার নয়। মেয়েটার জেনো জিদ চেপেছে আজ। টেবিলের সমস্ত প্লেট, গ্লাস সব জিনিসপত্র ওর মুখের উপর ছুটতে লাগলো একেক করে । লোকটা নিজেকে বাঁচানোর জন্য এপাশ ওপাশ গিয়ে চেঁচিয়ে যাচ্ছে।
“ খান/কি। তোরে হাতের কাছে পাই। ছিঁড়ে খাবো। ”
চৈতী দাঁতে দাঁত চেপে শেষ বারের মতো কাঁচের প্লেট ছুঁড়ে মারলো একদম চোখ বরাবর। তৎক্ষনাৎ বসে পড়লেন তিনি। ওড়না বিহীন চৈতী প্রথমবারের মতো নিজের শরীরের দিকে না তাকিয়ে পা/গলের মতো হাঁটতে লাগলো দরজার দিকে। হড়বড়িয়ে যেতেই পেছনের লোকটা চোখ-মুখে ক্রোধ, আক্রোশ নিয়ে হনহনিয়ে যায় তার নিকট। চৈতী একবার পেছন ঘুরলো। লোকটাকে দাঁড়াতে দেখে আবারও কাঁপা কাঁপি শুরু হলো। কম্পিত হাতে চটপট দরজার খুলতে গেলে প্রথমে কাজ হলো না।
“ শু*য়ো*রের বাচ্চা । আমারে আঘাত করে খুব বড় ভুল করলি। ”
বলেই চৈতীর হাত যেই ধরতে যাবে ওমনি দরজা খুলে গেলো। পেছনে না তাকিয়ে মেয়েটা এক দৌঁড়ে পা-গলা কুকুরের মতো হিংস্র হয়ে দৌঁড়াতে থাকে। তার পেছন পেছন লোকটা বিশ্রী ভাষা অশ্রাব্য সব গা/লা গা/লি করতে করতে আসছে। চৈতী দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে কেঁদে উঠলো। মনে মনে বলল,
“ আল্লাহ বাঁচাও।”
বলেই গেইটে আসতেই লোকটা চিল্লিয়ে চমকে উঠা দারোয়ানের উদ্দেশ্যে বলল,
“ ওই খা/নকিরে ধর। পালাইতে দিস না। আমার সর্বনাশ করছে।”
লোকটা হতভম্বের ন্যায় কয়েক সেকেন্ড চেয়ে রইলো। এরপর এগিয়ে যেতেই চৈতী চেঁচিয়ে উঠে,
“ মিথ্যে কথা। ”
বলেই দারোয়ানকে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে ধাক্কা দিলো। খালি পা,এলোমেলো কাপড়, আধখোলা চুল এবং ওড়না বিহীন চৈতী গেইট পেরিয়ে যানবাহনে ভরা রাস্তায় নামতেই, ভয়ে দিকবিদিকশুন্য হয়ে দৌঁড়ানোর সময় ভুলবশত মুখ থুবড়ে হুঁচট খেলো বড় ইটের সাথে। তৎক্ষনাৎ উপর হয়ে পড়ে রয় ধুলোমাখা রাস্তায়। হাতে -পায়ে সহ সারা দেহ মাখামাখি ময়লায়। লোকটা খানিক দূরেই তার নিকট আসছে। ওকে পড়তে দেখে হাঁসলো।
চৈতীর গাল বেয়ে অঝোর ধারায় পানি পড়ছে। ও পিছন ফিরে আবারও উঠার চেষ্টা করে। আশেপাশের লোকজন কৌতুহল বশত তাকে দেখছে। চৈতী এতক্ষণ দৌঁড়ানোর ফলে ক্লান্ত। হাঁটতেও বেগ পেতে হচ্ছে। সে জলদি উঠে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতেই তৎক্ষনাৎ আকস্মিক ভাবে আবির্ভাব ঘটে প্রচন্ড স্পিডে চালানো বাইকের। চেতী সামনে তাকাতেই অজানা এক উত্তেজনায় চিৎকার করে উঠল,
“ অর্পণ.. অর্পণ…! ”
চৈতী থেমে যেতেই খপ করে ওর চুলের মুঠি ধরে লোকটা চিবিয়ে চিবিয়ে কিছু বলবে তৎক্ষনাৎ একটু আগে চোখের আড়াল হওয়া বাইকটি দ্বিগুণ স্পিডে তাদের সামনে এসে থামলো। চৈতীর অশ্রুভেজা কাজল চোখ খুশিতে চিকচিক করে উঠল। অর্পণ স্তব্ধ, হতভম্ব চোখে নামলো। সামনের দৃশ্য টি দেখার জন্য হয়তো কখনোই প্রস্তুত ছিল না। তার দুনয়নে হাজার অবিশ্বাস। চোখ অস্বাভাবিক বড় করে হাত মুষ্টিবদ্ধ করলো। লোকটা ওদের দেখে হাত আগলা করতেই চৈতী দূর্বল হাতে ধাক্কা দিয়ে এক লাফে ঝাঁপিয়ে পড়লো অর্পণের বুকে। ময়লা দেহে, বিধস্ত অবস্থায় দুহাতে জাপ্টে ধরে এতক্ষণের কান্না সব হাউমাউ করে বের করে দেয়।
অর্পণের বলার আগেই, তুষিব, রনির চোখ-মুখ খেপাটে বাঘের মতো হয়ে গেলো। বাইক থেকে এক লাফে নেমে হামলে পড়লো লোকটার উপর। অর্পণ মাথা নুইয়ে রোষানল, অগ্নি এবং রাগান্বিত চোখে একপলক মেয়েটার বিপর্যস্ত শরীর এবং কাপড় দেখে নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
তুষিব ও রনির লাগাতার ঘুষি এবং লাত্থিতে মুহূর্তেই লোকটার দেহ নিস্তেজ হয়ে আসে। এমনিতেই চৈতীর পক্ষ থেকেও আঘাত তার উপর এই দুটো টগবগে যুবকের শক্ত মা/র। সামলাতে না পেরে গড়গড়িয়ে বমি করে । নাক-মুখ দিয়ে অনবরত র*ক্ত পড়ছে। তৎক্ষনাৎ আশেপাশের সমস্ত মানুষ জড়ো হয়ে যায়। সকলের মধ্যে চললো কানাঘুঁষা, এক প্রকার উত্তেজনা। কৌতুহল বশত অনেকে বিভিন্ন কিছু রটিয়েও ফেললো। ভেবেই নিলো, চৈতী অর্পণকে ভালোবাসে।
অথচ, এতক্ষণ সাহসী হয়ে লড়ে যাওয়া চৈতী ওর বুকে মুখ গুঁজে বাধভাঙ্গা কান্নায় কেঁপে কেঁপে উঠছে। অর্পণ চোখ বন্ধ করে দুইহাতে আগলে নিলো মেয়েটাকে। বুক থেকে নরম মুখখানা তুলে গালে ভিজে উঠা পানি চেপে চেপে মুছে দিলো। এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে পেছনে ঠেলে, পিঠে হাত বুলিয়ে ধুলো ঝেড়ে বলল,
“ কিচ্ছু হয়নি। কিচ্ছু না। ”
এ কথায় চৈতী আরোও ভেঙে পড়ে। জ্যাকেট খামচে ধরে আবারও মুখ লুকালো। ভাঙা কণ্ঠে বলল,
“ আমাকে রক্ষা করুন।ও আমার সর্বনাশ করতে চেয়েছিল। আমি পালিয়েছি। কিন্তু আজ থেকে আমি মুখ দেখাবো কিভাবে? সবাই খারাপ চোখে দেখবে।”
মুখ থেকে একনাগাড়ে উল্টাপাল্টা প্রলেপ গেয়ে পা-গলের মতো আচরণ করতে লাগলো চৈতী। তার দেহ শিউরে ওঠছে ক্ষণে ক্ষণে। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে একটু আগের ঘটনা। ফাঁকা বাসা দেখে সে আরোও ভয়ে গুটিয়ে গেছিল। ভাবতেই পারেনি, পালাতে পারবে। কষ্টে, দুঃখে ম/রতে ইচ্ছে করছে। এরকম বিব্রত পরিস্থিতি কখনও ঘটেনি যে। সামলে উঠতে তো সময় লাগবেই। আরেকটু হলেই সর্বনাশ হয়ে যেতো। ভাবতেই দেহের সমস্ত লোমকূপ দাঁড়িয়ে গেলো। এতক্ষণ যতটা শক্তি ছিল এই মুহুর্তে অর্পণকে দেখে সে আবেগাপ্লুত হয়ে জীবনের বড় ভুলটা করে ফেললো। নিজ ইচ্ছেয় সামনের মানুষটার হৃদয়ে ভয়ংকর ভাবে আঘাত হানলো। অর্পণের হৃৎস্পন্দন যে বাড়িয়ে দিলো জড়িয়ে ধরে তার কি খেয়াল আছে? ছেলেটার হৃৎস্পন্দনের মাত্রা অস্বাভাবিক বেড়ে যেতেই হাঁসফাঁস করে উঠল। শুকনো গলা ঢোক গিয়ে ভিজিয়ে স্বাভাবিক হলো। কিন্তু তুষিবের মে/রে চলা ওই কুৎসিত শয়*তানকে দেখেই চোয়াল শক্ত হয়ে যায়।
অর্পণ ওর কাঁধ শক্ত করে ধরে সামনা সামনি দাঁড় করালো। চৈতীর চোখ-মুখ ভীত। বারবার হেঁচকি তুলছে। এতবড় ঘটনা সে এখনও সামলে উঠে স্বাভাবিক হতে পারছে না। তার গায়ে ওড়না না থাকায় আরোও ওর বুকে লুকিয়ে থাকতে চাইছে। অর্পণ বুঝলো হয়তো। দম বন্ধ করে লম্বা শ্বাস নিলো। এরপর বাইকের সঙ্গে দাঁড় করিয়ে চটপট জ্যাকেট খুলে নিজের লম্বা, ঘন চুল দিয়ে গা ঢাকার চেষ্টা করা রমনীকে সযত্নে পড়িয়ে দিলো। মেয়েটার হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। মনে হচ্ছে এই বুঝি পড়ে যাবে। তবুও খুব কষ্টে দাঁড়াল সে। আশেপাশের নাক ছিটকানি মানুষগুলোর কথা ভাবতেই কান্না পাচ্ছে।
অর্পণ আশেপাশে তাকিয়ে হন্ন হয়ে কিছু খুঁজছে। তুষিব ওই লোকটার গায়ের শার্ট ছুঁড়ে মা/রলো দূরে। এতক্ষণে একপ্রকার জ্যাম লেগে গেছে। ওদের দুজনকে সবাই মিলে আটকাতে চাইলে অর্পণ গর্জে উঠে,
“ খবরদার! আর এক পা কেউ এগুলে ওই মাদারবোর্ডের মতোই অবস্থা হবে। সব কু*ত্তার বাচ্চাকে আমি খু/ন করবো। কতবড় সাহস আমার কলিজায় হাত দেয়। তোকে! তোকে আমি..!”
বলেই হুংকার ছেড়ে ফের চিৎকার ছুঁড়ল,
“ তুষিব কু*ত্তার বাচ্চার প্যান্ট খুলে বস্ত্রহরণ কর। কোন সাহসে ওর গায়ে হাত দিলো? ”
কথা বলতে দেরী কিন্তু তুষিবের কাজ করতে দেরী হলো না। ছটফটে রাস্তায় গড়াগড়ি খাওয়া আহিতের বাবার প্যান্ট খুলে উ-লঙ্গ করে ফেললো। পড়ণে শুধু আন্ডা/রওয়্যার! লোকটার বেহাল অবস্থা দেখে মহিলা মানুষগুলো লজ্জায় চলে যেতে লাগলো। জায়গাটায় ধীরে ধীরে ভীর কমে। ব্যস্ত রাস্তায় গাড়িগুলোও জ্যামে পড়েছে মানুষের ভীরে।
অর্পণ উত্তেজিত হয়ে, পা*গলের মতো এলোমেলো পায়ে মা/রার জন্য অস্ত্র খুঁজতে থাকে। কিছু না পেয়ে বড় ইট হাতে নিয়েই চিল্লিয়ে দৌঁড়ে গেলো। প্রথম আঘাতে আহিতের বাবার মুখ থেঁতলে যেতেই তাকে ধরে ফেললো কিছু মানুষ। অর্পণ তখন আরোও হিংস্র হলো। নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য যে আটকাচ্ছে, তাকেই আক্রমণ করে বসে। হাতের ইটের বারি খেয়ে অনেকে সরে গেলো। তৎক্ষনাৎ অর্পণ তেড়েমেরে গিয়ে শয়*তানটার অ/ন্ড/কোষ বরাবর লাগাতার বারি মা/রতে থাকে। লোকটা বিকট করে চিৎকার করে নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। তবুও থামলো না। আরোও কয়েক ঘা হাতে, মুখে দিয়ে সেই ইট ছুঁড়ে মারলো দূরে। আলুথালু পায়ে চৈতীর সামনে এসে নিজেই আচমকা জড়িয়ে ধরলো।
মেয়েটির কান্না এবার থেমেছে। কিন্তু অর্পণের আক্রমণে সে দ্বিগুণ হতভাগ্য। বিস্ময়ে চোখ অস্বাভাবিক বড়। এভাবে কখনও হিংস্র হয়ে সে কাউকেই মা/রতে দেখেনি। তাই খানিক সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে। কি ভয়ংকর মানুষ অর্পণ। চৈতী ভয়ে হালকা ঢোক গিলে চুপচাপ তার বুকে মাথা গুঁজে রইলো। উত্তেজিত অর্পণ দুহাতে শক্ত করে চেপে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। মনে হচ্ছে, হাত আলগা করলেই মেয়েটার বড়সড় ক্ষতি হয়ে যাবে। চৈতীর মাথায় বেশ কয়েকবার খরখরে পিপাসিত ঠোঁট চেপে ধরে ভরসা কণ্ঠে বলল,
“ তুমি ঠিক আছ। কিচ্ছু হয়নি। যে হাতে তোমার চুল স্পর্শ করেছে ওই হাত ভেঙে দিয়েছি। যে তোমার গায়ে হাত দিবে তাকে আমি জানে মে/রে ফেলবো। ওই কু-ত্তার বাচ্চার মূল্যবান জিনিস থেঁতলে দিয়েছি। যাতে ভবিষ্যতে ভুলেও চোখ তুলে তাকাতে সাহস না পায়। ”
খেয়ালি আমি হেয়ালি তুমি পর্ব ২২
চৈতী শান্ত হয়ে ঘাপটি মেরে রইলো। তার কণ্ঠনালী থেকে একটা কথাও আসছে না। শুধু কান্নাগুলো দলা পাকিয়ে আসছে। একটু আগের ঘটনা চোখে ভাসতেই ভয়ে থরথর করে কেঁপে অর্পণের পিঠ খামচে ধরলো। কেঁদে উঠেলো হু হু করে। অর্পণ মেয়েকে শান্ত করতে না পেরে অনবরত মাথায় হাত বুলিয়ে অস্থির কণ্ঠে বলল,
“ কান্না থামাও। আমাকে অস্থির করো না মেয়ে! নইলে, ওকে আমি এখনই গাড়ির নিচে চাপা দিবো। ”