চেকমেট পর্ব ২

চেকমেট পর্ব ২
সারিকা হোসাইন

দুটো শুকনো রুটি আর একটা ডিমের অমলেট সামনে নিয়ে বিষন্ন মুখে বসে আছে রূপকথা।এই খাবার সে খাবেনা।কিন্তু সারফরাজ এর চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতেও পারছে না।এদিকে খিদের যন্ত্রনায় পেট ছিঁড়ে যায়।নিজের মা বাবা কাউকে কাছে না পেয়ে মাথা নিচু করে হঠাৎই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো সে।মেয়েটির আকস্মিক কান্নায় ভ্যাবাচ্যাকা খেলো সারফরাজ।ব্যতিব্যস্ত হয়ে ভরাট ফ্যাসফ্যাসে গলায় শুধালো
“কাঁদছো কেনো?একটু আগেই না খাবার খেতে চাইলে?
মাথা তুললো না রূপকথা।ছোট ছোট হাত দিয়ে চোখের জল মুছে নিভু নিভু স্বরে বললো
“এসব আমি খাই না।
রূপকথার মুখে এমন কথা শুনে মহা মুশকিলে পরলো সারফরাজ।এই মেয়ের খাদ্যাভ্যাস সে জানে না।আর মেয়ে মানুষ হীন এই বিশাল বাড়িতে এর চাইতে বেশি কিছু আয়োজন করাও সম্ভব নয়।তবুও রূপকথার কান্না থামাতে কোমল কন্ঠে সারফরাজ শুধালো
“কি খেতে পছন্দ করো তুমি?
রূপকথা নিজেও ওই খাবারের নাম জানে না।তার মা সকাল বেলা উষ্ণ দুধের সাথে চকলেট চিপস মিশিয়ে খাওয়াতো তাকে।খুবই সুস্বাদু আর ইয়াম্মি।ওটাই প্রতিদিনের খাবার ছিলো তার।নয়তো মুরগির মাংস দিয়ে সফট খিচুড়ি।

সারফরাজ কে মনের কথা বুঝাতে না পেরে আরো খানিক কাঁদলো রূপকথা।মেয়েটির কান্নায় টিকতে না পেরে বেরিয়ে গেলো সরফরাজ।ফিরলো দীর্ঘ সময় পর।হাতে এক বাটি নুডলস।ধোয়া উঠা নুডলস রূপকথার সামনে রাখতেই কান্না থেমে গেলো।ঝকঝকে দাঁত বের করে মুহূর্তেই অমায়িক হাসলো।এরপর অল্প অল্প ফু দিয়ে তা খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।এদিকে সারফরাজ এর মাথায় হাজারো প্রশ্ন ঘুরছে।রূপকথাদের গাড়ি নিজ চোখে ভালো করে দেখেছে সে।গাড়ির ভঙ্গুর দশা দেখেই সে বুঝতে পেরেছে কেউ ইচ্ছে করেই ধাক্কা দিয়েছে।কিন্তু মানুষটির শত্রুতা কি ছিলো রূপকথার বাবার সাথে?আর এইটুকুন মেয়ে তাকে কতটুকু তথ্যই বা দিতে পারবে?তবুও নিজের কৌতূহল দমাতে না পেরে রয়ে সয়ে জিজ্ঞেস করলো
“তোমার বাবা কোথায় চাকরি করতেন?
বাবার কথা মনে পড়তেই ঠোঁট টিপে নাকের পাতা ফুলালো রূপকথা।বড় বড় গোল গোল চোখ দুটোও ঝাপসা হলো তার।তবুও মেয়েটি কাঁদলো না।সারফরাজ এর প্রশ্নে কিছুক্ষন কি যেনো ভাবলো।এরপর ভাঙা ভাঙা স্বরে রূপকথা বললো

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“বিশাল বড় জাহাজে।
সারফরাজের ধারনাই ঠিক।ভদ্রলোক জাহাজের ক্যাপ্টেন।কিন্তু এভাবে কেনো তাকে প্রাণ হারাতে হলো?
তর্জনী আঙ্গুলি দিয়ে ভ্রু চুলকে সারফরাজ আবার জিজ্ঞেস করলো
“তোমার বাবার নাম কি ছিলো?
এবার ঝটপট উত্তর দিলো রূপকথা।খাবার খেতে খেতে বললো
“সায়েম রিয়াজি।ক্যাপ্টেন সায়েম রিয়াজি।
আর কোনো প্রশ্ন করলো না সারফরাজ।বাকি তথ্য সে নিজেই পোর্ট থেকে হাতিয়ে নিবে।তার আগে দেখতে হবে ক্যাপ্টেন এর নিখোঁজ হবার ব্যাপারে কেউ কোনো সংবাদ প্রচার করে কি না?
রূপকথার খাওয়া শেষ হতেই সারফরাজ জিজ্ঞেস করলো
“বাড়িতে মা বাবা ছাড়া কে আছেন তোমার?
“কেউ নেই
সরল উত্তর রূপকথার

তপ্ত শ্বাস ফেললো সারফরাজ।মেয়েটাকে এখানে সে রাখতে পারবে না।এই টুকু মেয়ে কার কাছে রেখেই বা সে নিজের কাজে যাবে?এই বাড়ির একজন মানুষকেও সে বিশ্বাস করে না।এরা কেউ মানুষ নয়।প্রত্যেকটা রক্ত খেঁকো পিশাচ।সুবহান গং ঠিকই বলেছে ।রাস্তার বিড়াল ও এখানে নিরাপদ নয়।সেখানে রূপকথা ছোট বাচ্চা মাত্র।মেয়েটার পানে কালো হাতের থাবা মেলতে এক মুহূর্ত ভাৱবে না কেউ।চিন্তা ভাবনার কোনো সুরাহা না করতে পেরে সারফরাজ সতর্ক বাণী ছুঁড়লো
“শুনো রূপকথা।এটা একটা রাক্ষস পুরী।আমি না ফেরা পর্যন্ত এই ঘরের বাইরে পা ফেলবে না ঠিক আছে?
মাথা কাত করে সম্মতি জানিয়ে রূপকথা মিষ্টি হেসে শুধায়
,তুমি কি রাক্ষস বধ কারী রাজকুমার?ফেইরি টেইল এর মতো?
শুকনো হাসে সারফরাজ।কোনো প্রত্যুত্তর করে না।এরপর নিঃশব্দে উঠে যায়।
যাবার আগে পুনরায় কড়া স্বরে আদেশ করে
“আমি ব্যতীত কেউ এলে দরজা খুলবে না।এখানে কিন্তু হিংস্র রাক্ষসের বসবাস।দরজা খুললেই তোমাকে এসে খেয়ে নেবে।বুঝেছো কি বলেছি?
সারফরাজ এর কথায় ভীত হয়ে মাথা ঝাঁকায় রূপকথা।আর কোন বাক্য ব্যয় করেনা সারফরাজ।সারফরাজ বেরিয়ে যেতেই নির্দেশ অনুযায়ী দরজার সিটকিনি আটকে দেয় রূপকথা।এখানে কিভাবে তার সময় কাটবে সে জানেনা।কোত্থাও কোনো টিভি নেই।কোনো বুকস নেই।ড্রয়িং খাতাও নেই।তাহলে উপায়?

ডাইনিং টেবিলে বসে আয়েশ করে লাল আটার শুকনো রুটি চিবুচ্ছেন সুবহান গং।মনে তার বিশাল এক আনন্দ ধরা দিয়েছে।সেই আনন্দের খবর কেউ জানেনা।সুবহান গং জানাতেও চায়না।সব খুশি সবার মধ্যে ভাগ করতে নেই।নজর লেগে যায়।আর তার কাছে কুলে যারা আছে সব গুলোই একেকটা ভয়ংকর পশু।নিজের স্বার্থ গুছিয়ে নিতে সুবহান এর পিঠ পিছে ছুড়ি বসাতে এক মুহূর্ত ভাববে না তারা।ক্ষমতার লোভ প্রত্যেকটা মানুষের চোখে দেখেছে সুবহান।একেবারে জিভ যেনো লকলক করছে।সুবহান এর মৃতুই তাদের একান্ত কাম্য।সুবহান সব জানে।তবুও না জানার ভান করে চোখ বুজে পরে থাকে।তিল তিল করে যেই সাম্রাজ্য সুবহান গড়েছে এতো সহজে তা কারো হাতে সোপর্দ করবে না সে।আর যদি করতেই হয় তবে সারফরাজ হবে এর যোগ্য উত্তরসূরি।রক্তের সম্পর্ক না থাকুক।এই সারফরাজ তাকে যা দিয়েছে দলের একটা গাধাও তা দিতে পারেনি।সুবহান গং এর কাছে সারফরাজ সোনার ডিম পাড়া হাস।যদি সারফরাজ ও কোনো দিন তার বিপক্ষে গিয়ে শত্রুতার রূপ নেয় সুবহান বিনা ভাবনায় সারফরাজ কে দুনিয়া ছাড়া করতে সময় নেবে না।

সিডি বেয়ে কারো নামার শব্দে সম্বিৎ ফিরে পেলেন সুবহান।মাথার ঝলমলে ঘাড় সম চুল গুলো ব্যাকব্রাশ করতে করতে নেমে আসছে সারফরাজ।কি ফর্সা গায়ের বর্ণ!একদম চোখ ধাঁধিয়ে যায়।চেহারা একদম রাজা জমিদারের ছেলেদের মতো।উচ্চতা দেখেই বোঝা যায় বাপ কতো বড় জোয়ান ছিলো।সুবহান যখন তাকে রাস্তায় পেয়েছিলো পোশাক আশাক ছিলো বড়লোক বাচ্চাদের মতো।চেহারায় ছিলো আভিজাত্যের ছোয়া।এমন একটা ছেলে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ট্রেন স্টেশনের বাহিরে কেনো বসে ছিলো সুবহান আজো ভেবে পায়না।হয়তো ছেলেটি হারিয়ে গেছে ভেবে বহু বার সারফরাজ এর বাবা মা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সুবহান।কিন্তু এই ছেলে কখনো মুখ খোলেনি।এতো ছোট বয়সে এমন ধূর্ত ছেলে নিজের বয়সে দেখেনি সুবহান।ছেলেটির চেহারা দেখে মনে গভীর মায়া জন্মানোর কারনে আর ফেলে রেখে আসতে পারেনি সুবহান।সঙ্গে করে এনে ঠাঁয় দিয়েছিলেন নিজের বাড়িতে।সামান্য একটা রুটির জন্য যেদিন সারফরাজ বাপের বয়সী এক লোকের গলা টিপে ধরেছিলো সেদিনই সুবহান বুঝে গিয়ে ছিলেন তিনি আগুনের গোলা তুলে এনেছেন বাড়িতে।সেদিন থেকেই নিজের অপরাধের অর্ধেক বোঝা সারফরাজ এর উপর অর্পণ করে ছিলেন তিনি।এরপর থেকে এখনো নিশচিন্তে সারফরাজ এর উপর ভরসা করে নাকে তেল দিয়ে ঘুমান তিনি।খুন খারাবীর দায়িত্ব টাও ধীরে ধীরে সারফরাজ এর কাঁধে চাপাবেন।বয়স ছোট তাই অপেক্ষা।সারফরাজ যেদিন প্রাপ্ত বয়স্ক যুবক হবে সেদিন আর অপেক্ষা করবেন না সুবহান।

সুবহান এর ধ্যান ভাঙলো সরফরাজ এর ভারী মোটা স্বরে
“পোর্টে যাচ্ছি দাদাজান।ফিরতে অনেক রাত হবে।
কথাটি বলে থামলো সারফরাজ।এরপর দুতলায় নিজের কক্ষের দিকে নজর দিলো।নাকের পাটা ফুলিয়ে ফস করে শ্বাস ছেড়ে হিম শীতল কন্ঠে বললো
“সিংহের খাঁচায় যেনো কারো হাত না পরে দাদাজান।তাহলে কি হবে জানেন তো?
রুটি চিবুনো ছেড়ে নির্লিপ্ত চোখে সারফরাজ এর ভয়ানক চোখের পানে তাকিয়ে রইলেন সুবহান।সারফরাজ আরেকটু এগিয়ে এসে সুবহান এর টেবিলে দুই হাত ভর দিয়ে ঝুকে বললো
“কলিজা খুবলে নেবো।সে যেই হোক না কেনো।
সুবহন দীর্ঘ শ্বাস ফেলে শুধালেন
“কুড়িয়ে পাওয়া বাচ্চার জন্য এতো ঝামেলা কেনো করছিস?বাবা মা না থাকলে কোনো এতিম খানায় দিয়ে দিলেই তো ল্যাটা চুকে যায়।

সুবহান এর কথায় কেমন যেনো শরীর জ্বলে উঠলো সারফরাজ এর।তবুও কন্ঠে খানিক মাধুর্য ঢেলে উত্তর করলো
“বাঁচার আশায় আমাকে ভরসযোগ্য স্থান ভেবে ও আমাকে আঁকড়ে ধরেছে দাদাজান।খুব শক্ত সেই হাতের বাধন।যেমন করে আপনি আমাকে ধরেছেন।
কথা বলার আর কোনো মাধ্যম পেলো না সুবহান।শেষ কথা সারফরাজ তাকে খোঁচা দিয়ে বলেছে এটা সুবহান বেশ টের পেয়েছি।ছেলেটা সুযোগ পেলেই কেমন এক হাত ঢুকিয়ে দেয়।সারফরাজ এর কথাটা খুক খুক করে কেশে হজম করে নিলো সুবহান ।এরপর বললো
“এখন কি সারাদিন বাড়িতে বসে এই বাচ্চা পাহাড়া দেবো আমি?
ফট করে তাচ্ছিল্য হেসে সারফরাজ বললো
“নয়তো আর কাজ কি?সব তো আমিই করছি।আপনার দায়িত্ব যদি কোনো প্রকার চোট পৌঁছানো ছাড়া আমি নিখুঁত ভাবে সম্পন্ন করতে পারি তবে আমার একটা জিনিস আপনি দেখে রাখতে পারবেন না?
ছেলেটির মার প্যাচ ওয়ালা কথায় খাওয়ার রুচি উঠে গেলো সুবহান এর।ধাক্কা দিয়ে রুটির থালা সরিয়ে বললো
“ঠিক আছে দেখে রাখবো।এবার যেখানে যাচ্ছিস সেখানে যা।
কিন্তু নড়লো না সারফরাজ।ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রইলো।পানি খেতে খেতে সুবহান শুধালো
“আর কি?
“কিছু টাকা লাগবে দাদাজান
“কেনো?

“বাচ্চা টা এসব খাবারে অভ্যস্ত নয়।বড়লোকের বাচ্চা।এসব শুকনো রুটি ওদের গলা দিয়ে নামেনা।
“তুই ও তো বড়লোকের বাচ্চা ছিলি।তোর গলা দিয়ে কিভাবে নেমেছে?
“মেয়ে মানুষ বড্ড নাজুক দাদাজান।পুরোটাই তাদের তুলতুলে মোলায়েম নরম।ওই শক্ত রুটি অমন নরম মুখে কিভাবে গলাধঃকরণ করা যায়?
কথা বাড়ালেন না সুবহান।পাঞ্জাবির পকেট হাতড়ে মানিব্যাগ বের করে চারটে পাঁচশত টাকার নোট এগিয়ে বললেন
“নে ধর।
“এতে কিছুই হবে না দাদাজান।
“খাবার কিনতে কতো টাকা লাগে?
“ওর পোশাক কেনাও জরুরি।আমার গেঞ্জি পরে সে বার বার পায়ে বেঁধে হুমড়ি খেয়ে পরছে।
কপাল কুঁচকে ঠোঁট কামড়ে মনে মনে আপদ গালাগাল দিয়ে আরো কিছু নোট বের করে এগিয়ে দিলেন সুবহান।এরপর বললেন
“আর দেরি করলে আমার মাল খালাস না করেই জাহাজ চলে যাবে।তখন তুই বাচ্চার খাবার আর পোশাক ভালো করে কিনিস।
খানিক মেপে হাসলো সারফরাজ।এরপর কলার ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বললো
“এই সারফরাজ এর মাল খালাস না করে জাহাজ সমুদ্রে গা ভাসাবে এমন বুকের পাটা ওয়ালা নাবিক একটাও আছে নাকি?
প্রত্যুত্তর করলেন না সুবহান।নিঃশব্দে টেবিল ছেড়ে উঠে গেলেন।সারফরাজ নিজের কাজে যাবার আগে আরেকবার বললো

“আপনার ছোট ভাগিনা মাসুদ কিন্তু একটা জানোয়ারের বাচ্চা।তার চরিত্র কিন্তু আমার নখের ডগায়।সে যেনো সিঁড়ির ধাপ গুলোতে গুনে গুনে পা রাখে।আর মানিক কে আমি বলে দিয়েছি ওই বাচ্চা দুপুরে এবং রাতে কি খাবে।খাবার টা আপনি নিজে গিয়ে আমার ঘরে দিয়ে আসবেন।আসি…
লম্বা লম্বা পা ফেলে চলে গেলো সারফরাজ।সুবহান সেই যাওয়ার পানে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।ছেলেটা দিনে দিনে কেমন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।কোনো কিছুতেই ডর ভয় নেই।শেষ মেষ না জানি কোন অঘটন ঘটে।

দিনের আলো ফুরিয়ে সন্ধ্যার আঁধার এসে ঘিরে ফেললো চারপাশ।নিজের কাজ শেষ করে একটা সুপার শপে এলো সারফরাজ।এরপর কিছু খুজলো।সারফরাজ এর খোঁজাখুঁজি টের পেয়ে একজন সেলসম্যান এগিয়ে এসে বললো
“কি লাগবে স্যার?
সেলসম্যান এর প্রশ্নে কিছুক্ষন স্তম্ভিত রইল সারফরাজ।এরপর ইতস্তত করে বললো
“বড় লোকের বাচ্চারা সকাল বিকালের নাস্তায় কি খায়?
সারফরাজ এর পা থেকে মাথা পর্যন্ত পরখ করলো সেলসম্যান।এরপর জিজ্ঞেস করলো
“বেবির বয়স?
প্রথমে হাত এরপর নিজের কোমর এর নিচে নির্দেশ করে সারফরাজ বললো
“এতো টুকু।
ঠোঁট গোল করে তপ্ত শ্বাস ফেললো সেলসম্যান।এরপর কিছু কর্ন ফ্লেক্স,নিউট্রিশন আর আয়রন যুক্ত কিছু প্যাকেট জাত খাবার এগিয়ে বললো
“এগুলো।

সারফরাজ মাথা ঝাকিয়ে সব প্যাক করতে বললো।এরপর হঠাৎ একটা ছোট বাচ্চা আর তার মায়ের উপর নজর গেলো সারফরাজ এর।বাচ্চাটা নিজের খুশি মতো এটা সেটা শপিং ঝুড়িতে ভরছে।চকলেটস, চিপস,এসব।সেগুলো দেখে সারফরাজ নিজেও কিনলো সেসব।এরপর বিল মিটিয়ে বেরিয়ে এলো।পোশাক কেনাও জরুরি।সময় যেনো দ্রুত চলে যাচ্ছে।প্রথম বারের মতো বাড়ি ফেরার তাড়া ফুটে উঠলো সারফরাজ এর চোখে মুখে।

ঘরে শুয়ে বসে সময় কাটলো না রূপকথার।ছোট মনে ভুলে গেলো সারফরাজ এর সতর্ক বাণী।গুটি গুটি পায়ে বিছানা থেকে নেমে খুলে ফেললো দরজা এরপর বেরিয়ে এলো বাইরে।ড্রয়িং রূম ডাইনিং রুমে কেউ নেই।চারপাশ নীরব নিস্তব্ধ।সদর দরজা খোলা।চোখে মুখে কৌতূহল ফুটিয়ে সেই দরজা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো রূপকথা।হঠাৎ টলতে টলতে একজন লোক কে এগিয়ে আসতে দেখে দৌড়ে তার কাছে গিয়ে শুধালো
“তুমি এভাবে হাটছো কেনো?তোমার ঘুম পেয়েছে?

চেকমেট পর্ব ১

আকস্মিক লোকটি তার পায়ের গতি থামালো।এরপর ভালো করে কথার আওয়াজ অনুসরণ করে রূপকথার পানে নজর দিলো।এলকোহলের নেশাটা বড্ড চড়েছে আজ।শরীর মাথা দুই ই উত্তপ্ত।রূপকথা এখনো কোমরে দুই হাত গুঁজে পিটপিট করে লোকটির পানে তাকিয়ে আছে।
বিশ্ৰী হেসে মানুষটি ঝুঁকলো।এরপর এলকোহলের গন্ধ মেশানো হাত রূপকথার গালের পানে বাড়িয়ে দিলো।রূপকথার মুখ স্পর্শ করার আগেই ঝড়ের বেগে কেউ টেনে নিলো রূপকথাকে।এরপর হিসিসিয়ে বলে উঠলো
“দ্বিতীয় বার এমন ভুল করলে হাত কে*-টে নেবো মাসুদ ভাই।আজই ফার্স্ট এন্ড লাস্ট ওয়ার্নিং দিয়ে গেলাম।

চেকমেট পর্ব ৩