চেকমেট পর্ব ৩২
সারিকা হোসাইন
কিছুক্ষন আগেই মানুষের যেই চাপা গলার স্বর পাওয়া যাচ্ছিলো ওয়াশ রুমের ভেতর থেকে তা এখন আর নেই।চারপাশ নীরব,নিশ্চুপ।সবাই বোধ করি বিয়ের আনন্দ রোশনাইয়ে মত্ত হয়েছে।
এদিকে সারফরাজ এর কথাকে উপেক্ষা করে তাকে যেতে দিলো না রূপকথা।নিজের সবটুকু শক্তি দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে সারফরাজ এর বুকে মুখ ডুবিয়ে লম্বা শ্বাস টানলো সে।এরপর জড়িয়ে যাওয়া মুগ্ধ গলায় বললো
“এই বুকটা আমার এতোটাই নিরাপদ স্থান মনে হয়, যেমনটি মায়ের পেটে গুটিয়ে থাকে ছোট নরম তুলতুলে ভ্রূণ।তোমার বুকে মাথা রাখলে মনে হয় পৃথিবী থেমে গিয়েছে।কোনো হতাশা,দুশ্চিন্তা, ভয় আমাকে তাড়া করতে পারে না।মনে হয় এর চাইতে নিরাপদ শান্তিময় স্থান পৃথিবীর আর কোত্থাও নেই ।তোমার বুকের হৃদ গতি আমার সব কিছু এলোমেলো করে ।আমি পাগল হয়ে যাই।
আচ্ছা এই হৃদয়ে কি আর কখনো কারো আধিপত্য চলতে দেবে তুমি?
প্রশ্নটি করে উত্তরের অপেক্ষায় সারফরাজ এর মুখ পানে চঞ্চল পলকে তাকিয়ে রইলো রূপকথা।রূপকথার ঝলমলে চুল গুলো চোখের বড় বড় পাপড়ির নিকট হুটোপুটি খাচ্ছে।সেই চুল আলগোছে কানের পিঠে গুঁজে সারফরাজ রূপকথার চোখের কোনে চুমু খেলো।এরপর আদুরে গলায় বলল
“এই মন শহরের মালকিন তুমি আর আমি তোমার ভৃত্য।তোমাকে হটিয়ে এখানে আধিপত্য বিস্তার করবে কার সাধ্যি?
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রূপকথা আবেশে চোখ বুঝে শক্ত করলো হাতের আলিঙ্গন।এরপর চাপা গলায় বললো
“পরম শান্তিতে পুরো রাত তোমার প্রশস্ত বুকে ঘুমুতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু হার্টবিট গুলো খুব জ্বালাচ্ছে।
সারফরাজ রূপকথার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে মাদকতা মিশ্রিত গলায় বলে উঠলো
“তুমি চাইলেই তারা আর তোমাকে জ্বালাবে না।আমি তাদের রুখে দেবো ।
তড়িৎ নিজের সরু নরম তুলতুলে তর্জনী আঙ্গুল সারফরাজ এর ঠোঁটে আলতো ছুঁইয়ে রূপকথা ফিস ফিস করে বলে উঠলো
“হুশ এসব পঁচা কথা বলে না।তুমি তো দেখছি বিয়ের আগেই আমাকে বিধবা করতে চাইছো বজ্জাত লোক।
সারফরাজ বাকা হেসে রূপকথার আঙ্গুলি কামড়ে ধরলো।অল্প ব্যথায় মিহি আর্তনাদ করলো রূপকথা।এতে আরেকটু হাসলো সারফরাজ।এরপর কানের কাছে মুখ এনে হাস্কি স্বরে বললো
“আমার বউ হলে এমন এমন আর্তনাদ যুক্ত ব্যথা প্রতি মুহূর্তে মুহূর্তে সইতে হবে তোমায় ।আগেই বলেছি আমি নিষ্ঠুর।
বলেই রূপকথার কাঁধে লাভ বাইট ছোয়ালো সারফরাজ।ব্যাথায় চোখ মুখ খিচে সারফরাজ এর পিঠ খামচে ধরলো রূপকথা।কিন্তু বিন্দু মাত্র অনুতপ্ত হলো না সারফরাজ। ব্যাথায় রূপকথার চোখ গড়িয়ে জল ঝড়লো।সেই জল চুমু একে শুষে নিয়ে সারফরাজ ফিসফিস করে বলে উঠলো
“জন্ত্রনা মিশ্রিত ভালোবাসা ।সইতে পারবে?
রূপকথা চট করে সারফরাজ এর হাত তুলে ধরে শক্ত এক কামড় বসিয়ে সব গুলো দাঁত বিধিয়ে দিলো।কিন্তু চোখ মুখের সামান্যতম পরিবর্তন হলো না সারফরাজ এর।দীর্ঘ সময় পর নিজেই ছেড়ে দিলো রূপকথা।সারফরাজ এর ফর্সা হাত ধারালো দাঁতের আঘাতে রক্তাক্ত হলো।সেই দৃশ্যে রূপকথা ভড়কে গেলো ।রক্তাক্ত হাত চোখের সামনে ধরে সারফরাজ ঠোঁট উল্টালো
“সি,ইউ বিট মি লাইক অ্যা ওয়াইল্ড ক্যাট মাই প্রিন্সেস।বাট ট্রাস্ট মি বেইব,ইটস ফাকিং বিউটিফুল।আজ থেকে আমার শরীরের প্রতিটি ইঞ্চিতে তোমার বাইট চাই রূপকথা।প্লিজ লাভ মি রাফলি।আই লাভ দ্যা ওয়ে ইউ হার্ট মি।
সারফরাজ মুখের এহেন অদ্ভুত কথায় রূপকথার ক্ষণ কালের জন্য মনে হলো সারফরাজ পাগল হয়ে গেছে।নচেৎ এমন কামড় কেউ বার বার খেতে চায়?সারফরাজ এর ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিতে আরেক হাতে ঠিক একই ভাবে কামড় বসালো রূপকথা।এবারও কোন প্রতিক্রিয়া দেখালো না সারফরাজ।বরং অবিশ্বাস্য চোখে রূপকথার পানে তাকিয়ে নেশা ধরানো গলায় বলে উঠলো
“ইউ মেইক পেইন ফিল লাইক প্লেজার।তোমার কামড়ের আঘাতে আমার ভেতরের ক্ষুদ্ধ জানোয়ারটা পর্যন্ত খিলখিলিয়ে হেসে উঠেছে।একদিন এই কামড়েই মরে যাবো আমি তুমি দেখে নিও।কিন্তু হাসতে হাসতে মরবো কসম।
এরপর সারফরাজ খানিকটা ঝুকে রূপকথার সামনে মুখ এনে বললো
“কারণ তোমাকে ঘায়েল করতে পারা মানে দুনিয়া টাকে জয় করে নেওয়া ।ভেবেছিলাম আর পাঁচটা সাধারণ প্রেমিকার মতো বোকা সোকা গাঁধী হবে।বাট ফাকিং হেল রূপকথা, তুই তো আগুন রে জান।
সারফরাজ এর লাগামহীন কথায় লজ্জায় রূপকথার মরে যেতে ইচ্ছে করছে এই মুহূর্তে।মানুষটা তাকে কেমন বেকাবু করে ছাড়ছে।ভেতরে যেই উন্মাদনা বইছে অসভ্য পুরুষ কি তা জানে?হয়তো জানে।জানে দেখেই আরো আগুনে ঘি ঢালছে।
রূপকথা খানিক আড়ষ্ট হয়ে মিইয়ে আসা গলায় সারফরাজ এর চোখে চোখ রেখে জবাব দিলো
“শোধ তুলব দেখে নিও।কাঁদিয়ে ছাড়বো তোমাকে।
সারফরাজ দুস্টু হেসে বলে উঠলো
“কেঁদে কেঁদে তোমার নাম ই উচ্চারণ করবো আমি ডিয়ার ফেইরি টেইল।তাও কখন জানো?মধ্যরাতে!
দূর থেকে কেউ একজন সারফরাজ আর রূপকথাকে আলিঙ্গন অবস্থায় দেখে জ্বলে উঠলো।তার চোখ জোড়া শিকারি খুঁজে পাবার পর চিতা বাঘের দৃষ্টি যেমন জ্বলজ্বল করে তেমন হিংস্র হয়ে উঠলো।ঘাড়ের রগ ফুলে কেমন নীল হয়ে উঠলো সেই সাথে কুঞ্চিত হলো ভ্রু জোড়া।নিজের হিংস্র রূপ বারবার গলা চিড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে।কিন্তু নিজেকে দমিয়ে রাখলো সে।অতঃপর লাগাম হীন ক্রোধ কোনো ভাবেই আয়ত্তে আনতে পারলো না।শেষমেশ হাতে থাকা জুসের গ্লাস মুঠো পাকিয়ে ধরে দাঁতে দাঁত পিষে সয়ে নিলো সবটা।কিন্তু দানবীয় হাতের পিস্টনে মুহূর্তেই চূর্ণবিচূর্ণ হলো কাঁচের পাতলা সরু গ্লাস।হিংস্র মানবের হাতের মুঠো থেকে ঝরঝর করে সেই টুকরো খসে পড়লো দামি টাইলসে।কাঁচ ভাঙার ঠুনকো শব্দে সারফরাজ কে ছেড়ে সরে দাঁড়ালো রূপকথা।আকস্মিক শব্দের উৎস খুঁজতে আশেপাশে নজর বুলালো সারফরাজ।কিন্তু তেমন কিছুই নজর এড়ালো না।কিন্তু সারফরাজ এর চতুর মস্তিষ্ক অন্য কিছুর ইঙ্গিত দিলো।রূপকথাকে চোখের ইশারায় বেরিয়ে যেতে বলে নিজেও ছুটলো অন্য পথে।
ভারী ছড়ানো গাউন দুই হাতে উঁচু করে ধরে হল রুম ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এলো রূপকথা।আশেপাশে কতিপয় ওয়াইটার ছাড়া আর কেউ নেই।সকলেই বোধ হয় কনেকে যেখানে বসানো হয়েছে সেখানে জটলা পাকিয়েছে।চারপাশে উচ্চ স্বরে মিউজিক বাজছে আর অল্প বয়সী ছেলেমেয়েদের আনন্দ চিৎকার।
এই মুহূর্তে এসব ভালো ঠেকলো না রূপকথার।সে নির্জন একটা জায়গায় খানিক সময় নিয়ে বসতে চাইলো।এরপর দৃষ্টি মেলে চারপাশে খুজলো এমন স্থান।মুহূর্তেই সুইমিং পুলের এরিয়ায় একটা ফাঁকা বসার স্থান নজরে আটকালো তার।ঠোটে অল্প হাসি ফুটিয়ে সেখানে পা বাড়ালো।কিন্তু হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা খেলো রূপকথা।সামনে দাঁড়ানো মানুষটির উদ্দেশ্যে সরি বলতেই অমায়িক হাসলো সে।এরপর ভরাট গলায় বলে উঠলো
“নাইস টু মিট ইউ মিস রূপ …..উপ্স সরি,রূপকথা চৌধুরী।
যুবকের কন্ঠে জামা ছেড়ে বিস্ফারিত নজরে উপরে তাকালো রূপকথা।ঠোঁটে রহস্য ময় হাসি ঝোলানো রুদ্ররাজ কে দেখে শরীর কেমন ঝাকুনি দিয়ে উঠলো সেই সাথে মেরুদন্ড বেয়ে হিমস্রোত নেমে গেলো।পা দুটো অসাড় হলো কেঁপে উঠলো ঠোঁট।ভীত রূপকথা মাথা নিচু করে চলে যেতে পা বাড়ালো।কিন্তু খপ করে রূপকথার হাত টেনে ধরলো রুদ্র।
রুদ্রের এহেন ধৃষ্টতায় রূপকথার চোখ কপালে উঠলো।সে হাত ছড়ানোর কঠিন প্রয়াস করে শক্ত গলায় বলে উঠলো
“এসব কি ধরনের অসভ্যতামি?হাত কেনো ধরেছেন?স্টুডেন্ট এর সাথে এহেন নোংরামি আপনাকে মানাচ্ছে না ডক্টর রুদ্র।
রুদ্র রূপকথার কথায় তাচ্ছিল্য হাসলো।এরপর হাস্কি গলায় বললো
“যখন গভীর রাতে আমাকে মেসেঞ্জারে নক করেছিলে তখন এসব নীতিবাক্য কোথায় ছিলো?
রুদ্রের কথাখানা বজ্র আঘাত হয়ে পড়লো রূপকথার মাথায়।মেসেঞ্জারে অদ্ভুত যুবকের গলার স্বর,ট্রেনে একই কেবিনে রুদ্ররাজ এর আগমন ক্লাসে তাকে ইচ্ছে করে টিজ করা সব কেমন দিনের আলোর ন্যয় ফকফকে হলো রূপকথার সামনে।নিজেকে কোনো মতে ধাতস্থ করে রূপকথা জবাব দিলো
“নিছক মজা ছিলো ওতো দ্যাটস ইট।আর আমি জেনে বুঝে করিনি।যদি জানতাম ও পাশের ব্যক্তি আপনি তাহলে এমন মজা করার কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবতাম না আমি।
রুদ্র রূপকথার কথার কোনো তোয়াক্কা করলো না।সে আরো শক্ত হাতে চেপে ধরে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রইলো।
রুদ্রের হাতের চাপে রূপকথার হাত জ্বলে উঠলো।ব্যথায় নাকের ডগা পর্যন্ত লাল হয়ে উঠলো রূপকথার।চোখ হলো টলটলে।তার মধ্যে অযাচিত স্পর্শ কাটা হয়ে বিধলো শরীরে।অসহায় চোখে সারফরাজ কে খুজলো রূপকথা।কোথাও সারফরাজ নেই।চোখ বুজে রূপকথা মনে মনে আওড়ালো
“প্লিজ সেভ মি ফ্রম দিজ ডেভিল সারফরাজ।আদারওয়াইজ হি উইল ডিস্ট্রয় এভরি পিচ অফ মি।
বন্ধুদের সাথে আড্ডাবাজির মুহূর্তে হুট করে সুফিয়ান চৌধুরীর মনে পরলো রূপকথাকে দীর্ঘ সময় ধরে কোত্থাও দেখা যাচ্ছে না।তাই আড্ডা ফেলে হন্যে হয়ে এদিক সেদিক মেয়েকে খুঁজতে লাগলেন তিনি।স্ত্রী রেখাও গায়েব।একপ্রকার রাগে রক্ত ফুটে উঠলো তার।দিকবিদিক রূপকথাকে খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ সারফরাজ কে দেখে থমকে দাড়ালেন তিনি।হাত ঝাড়তে ঝাড়তে লম্বা লম্বা পা ফেলে ধেয়ে আসছে কালো পোশাক ধারী সুদর্শন পুরুষ।সারফরাজ এর শরীর,হাঁটার স্টাইল,চুলের কাটিং,চেহারা মাধুর্য,চোখের গভীরতা সব কেমন মুগ্ধ করলো সুফিয়ান চৌধুরী কে।কিন্তু মানুষটার কাজকর্ম মনে পড়তেই সমস্ত ভালো লাগা দৌড়ে পালালো।
সারফরাজ যখন সুফিয়ান চৌধুরীর সামনে এসে দাড়ালো তখন গলা খাকরি দিয়ে সুফিয়ান রাগী ভান ধরে বলে উঠলেন
“পিঁপড়ের মতো চিনির গন্ধ শুকে শুকে চলে এসেছিস নাহ?মানে বুড়ো বয়সে আমাকে এক বিন্দু শান্তি দিবি না?
আকস্মিক সুফিয়ান চৌধুরীর প্রশ্নে সারফরাজ বিরক্তি সূচক শব্দ করলো।এরপর পকেট থেকে ইনভাইটেশন কার্ড বের করে সুফিয়ান চৌধুরীর সামনে ধরে বলে উঠলো
“আপনার আগে এসেছি আমি।বিনা দাওয়াতে নয়।বন্ধুর মামাতো বোনের বিয়ে।
কার্ড দেখে চুপসে গেলো সুফিয়ান।হঠাৎই সারফরাজ এর হাতে রক্ত দেখে সুফিয়ান ভয়ার্ত গলায় শুধালেন
“পাগলা কুকুরে কামড়েছে তোকে?বেশ হয়েছে।খুশি হয়েছি।
বলেই হো হো করে এক চোট হাসলেন সুফিয়ান চৌধুরী।সারফরাজ ও তাল মিলিয়ে ব্যাঙ্গ করে হাসলো।এরপর বলে উঠলো
“খুশি হবার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি কমিশনার সাহেব।পাগলা কুকুরে কামড়ায় নি আমাকে। আপনার মেয়ে কামড়েছে।বলতে পারেন ভালোবাসার সাইড এফেক্ট।
মুহূর্তেই হাসি থেমে গেল সুফিয়ান চৌধুরীর ।সে তাৎক্ষণিক বুক চেপে ধরে চোখ উল্টিয়ে বলে উঠলেন
“নাউজুবিল্লাহ,ইন্নালিল্লাহ।
সারফরাজ ঠোঁটের কোণে দুস্টু হাসি ঝুলিয়ে আরো রসিয়ে রসিয়ে বলে উঠলো
“আপনার মেয়ের একটু এগ্রেসিভ এফেকশন আছে,এই যা।তাতে অবশ্য আমার কোনো আপত্তি নেই।আই টেইক মাই ইনজুরিস উইথ প্রাইড স্যার।কজ হার টিথ চুজ মি।
সুফিয়ান কটমট চোখে সারফরাজ এর পানে তাকিয়ে দাঁত চিবিয়ে বললো
“একটু তো সম্মান দে।রূপকথার বাপ আমি।তোর কাছে পুরো ছবির কাহিনী শুনতে চাইনি আমি।
বলেই পকেট থেকে রুমাল বের করে কপালে জমা বিন্দু বিন্দু ঘাম মুছলেন সুফিয়ান।এরপর আঙ্গুল তুলে সারফরাজ এর উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন
“ওখানে ঘা হয়ে তোর দুই হাত খসে পড়ুক নাদান ছেলে মানুষ কোথাকার।
“হাত খসলে আপনার মেয়ের ই কপাল পুড়বে।
বলেই চোখ টিপে শব্দ করে হেসে ফেললো সারফরাজ।সুফিয়ান চৌধুরী নিজের কানের গুনাহ আর করতে চাইলেন না এই ঠোঁট কাটা ছেলের সামনে দাঁড়িয়ে।তিনি তরতর করে হেটে রূপকথাকে খুঁজতে লাগলেন।
যাবার আগে পিছন ফিরে শুধালেন
“তা আমার মেয়ে কোথায় এখন?
“আমি কি জানি?
“না জানলে কামড় খেলি কি করে হতচ্ছাড়া!
সারফরাজ দুস্টুমি করতে করতে সুফিয়ান চৌধুরীর সাথে সাথে হাটতে লাগলো আর সুর তুলে ডাকতে লাগলো
“রূপকথা সোনা মনি!
“আমি কিন্তু এখন চিৎকার করবো রুদ্ররাজ।এতে কিন্তু আপনার ই মান যাবে।আর আমার বাবা সম্পর্কে নিশ্চয়ই জানেন।এমনি এমনি ছাড়বে না আপনাকে।
রুদ্র বাঁকা হেসে বলে উঠলো
“ওসব থানা পুলিশের ভয় আমাকে দেখিয়ে লাভ নেই সুইটহার্ট।থানা পুলিশ অল টাইম পকেটে নিয়ে ঘুরি আমি।
রূপকথা যে খুব বাজে ভাবে ফেঁসে গেছে এটা সে বুঝলো।তাই নিরুপায় হয়ে নিজেকে বাঁচানোর প্রয়াস চালিয়ে যেতে লাগলো।
এদিকে হাটতে হাটতে সারফরাজ আর সুফিয়ান চৌধুরী সুইমিং পুলের নিকট এসে দাড়ালেন।জায়গাটা নিরিবিলি।আলো নেই বললেই চলে।হঠাৎ সুফিয়ান রূপকথার চাপা গলার আওয়াজ শুনতে পেলেন।আরেকটু এগিয়ে গিয়ে সারফরাজ কে শুধালেন
চেকমেট পর্ব ৩১
“এখানে কার সাথে কথা বলছে আমার মেয়ে?
মুহূর্তেই ধস্তাধস্তির আভাস ফুটে উঠলো।সারফরাজ এর চোয়াল কেঁপে উঠলো রূপকথার অস্পষ্ট কথার আওয়াজে সেই সাথে চোখে ফুটে উঠলো নীলচে ক্রোধ।সুফিয়ান ঘটনা অনুমান করলেন।নিশ্চিত বর যাত্রীর সাথে আসা কোনো লাফাঙ্গা ছেলে সুযোগ বুঝে তার মেয়ের সাথে বাজে আচরণ করার চেষ্টা করছে।হনহন করে সামনে এগুতে এগুতে সুফিয়ান চৌধুরী সারফরাজ এর উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন
“সারফরাজ ন’ টি র পোলাকে পুঁতে ফেল।