চেকমেট পর্ব ৬৮
সারিকা হোসাইন
মনিটরের একনাগাড় বিপবিপ শব্দ বৃহৎ ওটি রুমের চারিধারে কেমন ভয়ানক গর্জন তুলেছে।অপারেশন টেবিলে অচেতন চুপকথা।ডাক্তার গন নিজেদের ইউনিফর্ম পরে ধীরে ধীরে ঢুকছেন ওটি কক্ষে।সব শেষে এলো রুদ্ররাজ।চুপকথাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখে তার কেমন ভয় লাগলো।তার পুরো শরীর অসাড় হয়ে চোখ ঝাপসা হলো।মাথাটাও আজ কাজ করছে না।সব কিছু তালগোল পাকিয়ে যেতে চাইছে।ওটির বাইরে চুপকথার বাবা তজবিহ হাতে সমানে পায়চারি করছেন।ভদ্রলোক বিশেষ অনুরোধ করেছেন হসপিটাল কতৃপক্ষ কে যাতে তাকে মেয়ের পাশে এলাউ করা হয়।কিন্তু হসপিটাল রাজি হয়নি।দীর্ঘ সময়ের জটিল অপারেশন।ডক্টরস ব্যাতিত বাইরের মানুষ না থাকাই উত্তম অপশন।
সহকারি ডক্টর সব কিছু চেক করে রুদ্রের উদ্দেশ্যে বললো
“স্যার আপনি খুলি টা ওপেন করুন।
সহকারী ডক্টর এর কথা খানা শুনে রুদ্রের সমস্ত শরীর ঝাকুনি দিলো।সে ভয় পেলো।প্রথম বারের মতো স্পেশাল দক্ষ নিউরোসার্জন ডক্টর রুদ্ররাজ চৌধুরী ভয় পেলো।তার বোধ বুদ্ধি সব হারিয়ে গেলো ।হৃদপিণ্ডের মধ্যে অসহনীয় তোলপাড়।হাত পা রীতিমতো কাঁপছে।ঘুরে উঠছে মাথা।সমস্ত ডাক্তারি বিদ্যা যেনো ভুলে গেলো সে।স্মৃতিভ্রম মানুষের ন্যয় কেমন ফাঁকা ফাঁকা অপরিচিত লাগছে সব কিছু। কিসের ভয় আজ কাবু করছে বিচক্ষণ, দক্ষ,শান্ত,সকৌশলী এই তরুণ ডাক্তার কে?
নিজেকে অল্প সামলে কম্পিত হাতে ধারালো স্ক্যালপেল তুলে নিলো রুদ্র।প্রচুর ঠান্ডায় তার শরীর উত্তপ্ত গ্রীষ্মের দুপুরের তাপমাত্রার ন্যয় ঘেমে উঠছে।হাতে যেনো শক্তি নেই।রুদ্র ফাঁকা ঢোক গিললো।এরপর স্ক্যালপেল অপর ডক্টর এর হাতে এগিয়ে বললো
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“প্লিজ ডক্টর আপনি করুন।আমি এখনো প্রিপেয়ার্ড না।আমার আরেকটু সময় লাগবে।
উক্ত ডক্টর কথাটি শুনে বিস্মিত হয়ে বলল
“এখানে এই কাজে আপনার হাত ভালো এটাই আমরা সবাই জানি।আপনি পারবেন।প্লিজ একটু কোওপারেট করুন।লম্বা শ্বাস নিন।ব্রেন শান্ত রাখুন।
রুদ্র হাত গুটিয়ে কিছুক্ষণ নিশ্চুপ রইলো।এরপর একটা কেচি দিয়ে চুপকথার বাহুতে শক্ত আঘাত করলো।কোনো নড়নচড়ন নেই মেয়েটার।গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন সে।
মনে মনে বিসমিল্লাহ বলে ধীরে ধীরে হাত চালালো রুদ্র।সতর্ক নজরে বাকি ডক্টরস নিজেদের কাজে হাত লাগালো।ধীরে ধীরে সময়ের ব্যবধানে উপড়ানো হলো মাথার উপরের অংশ।তরল রঞ্জনে রুদ্রের গ্লাভস পড়া হাত ভরে গেলো।নানান ইনজেকশন, মেডিসিন,সার্জারি টুলস ব্যাবহার করে চলতে লাগলো অপারেশন।
দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘন্টা পর লম্বা শ্বাস ফেলে নিজের মাস্ক খোলে ফেললো রুদ্র।টিউমার অপসারণ শেষ।কোনো জটিলতা তৈরি হয়নি।কিন্তু রুদ্রের মুখে হাসি নেই।চুপকথা জ্ঞান ফিরে সুস্থ হয়ে হাঁটাচলা করে হাসিখুশি স্বাভাবিক জীবনে না যাওয়া পর্যন্ত রুদ্রের মনের খচখচনি কোনো ভাবেই থামবে না।
অপারেশন লাইট বন্ধ হতেই রুদ্র আদেশ দিলো
“পেশেন্টকে আইসিইউ কেবিনে শিফট করুন।দুদিন অবজারভেশন প্রয়োজন।
নার্স আর ওয়ার্ড বয়ের সহায়তায় দক্ষ হাতে আলগোছে চুপকথা কে তোলা হলো স্ট্রেচারে এরপর ছুটলো আইসিইউ কেবিনে।
রুদ্র ক্লান্ত শরীরে বের হতেই চুপকথার বাবা দৌড়ে ক্রন্দনরত স্বরে শুধালেন
“ডক্টর আমার মেয়ে?
রুদ্র শান্ত গলায় জবাব দিলো
“ভয় নেই আংকেল।অপারেশন সকসেল ফুল হয়েছে।আমি কাল চুপকথার কেবিনে ঢুকবার ব্যবস্থা করে দেবো আপনাকে।আজ চাইলেও দেখতে পারবেন না।
ভদ্রলোক ছোট বাচ্চার ন্যয় মেনে নিলেন রুদ্রের কথা।এরপর ধপ করে বসে গেলেন ওয়েটিং চেয়ারে।
রুদ্র নিজের ড্রেস চেঞ্জ করে হাত মুখ ধুয়ে আবার ফিরে এলো চুপকথার বাবার নিকট।এরপর হাত চেপে ধরে বলে উঠলো
“চলুন লাঞ্চ টাইম হয়েছে।গত রাতেও আপনি কিছু খাননি।
ভদ্রলোক আর মানা করলো না।নিঃশব্দে উঠে দাঁড়িয়ে রুদ্রকে অনুসরণ করে চলতে লাগলো।
একদিন পর চুপকথার জ্ঞান ফিরলো।ডিউটিরত নার্স দৌড়ে গিয়ে রুদ্রকে ডেকে আনলো।সেই সাথে দৌড়ে এলো চুপকথার বাবা।রুদ্রকে দেখেই নীরবে কেঁদে উঠলো চুপকথা।এরপর হাত বাড়িয়ে রুদ্রকে নিজের কাছে ডাকলো।রুদ্র ব্যস্ত পায়ে কাছে আসতেই চুপকথা নিজের দুর্বল হাতে রুদ্রের হাত চেপে ধরলো।এরপর আবার নীরবে জল ফেললো।হাতের ইশারায় চুপকথাকে কাঁদতে বারন করে চুপকথার বাবাকে ভেতরে আসতে বললো রুদ্ররাজ।ভদ্রলোক মেয়ের হাত জড়িয়ে শব্দ করে কাঁদলেন।কিন্তু দুই মিনিটের বেশি তাকে থাকতে দেয়া হলো না।
চুপকথাকে শান্ত থাকতে বলে সমস্ত রিপোর্ট চেক করলো রুদ্র।এরপর নার্সকে ঘুমের ইনজেকশন দেবার নির্দেশ করলো।ইনজেকশন দেখে সামান্য ভীত হলো চুপকথা।রুদ্র বুঝতে পেরে নার্সের থেকে ইনজেকশন নিয়ে নিজেই হাতে লাগানো ক্যানলায় পুশ করে বলে উঠলো
“ঘুমাও ।
কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে ঘুমে তলিয়ে গেলো চুপকথা।
দশ দিন হসপিটালে কাটানোর পর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে রিলিজ নিলো চুপকথা।চুপকথার বাবা আর চুপকথা যখন গাড়িতে উঠছিলো তখন রুদ্ররাজ স্তব্ধ হয়ে পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো।গাড়িতে উঠতে গিয়ে আবার থেমে দাঁড়ালো সে।এরপর দৌড়ে গিয়ে ঝাপ্টে ধরলো রুদ্রকে।আকস্মিক এহেন পরিস্থিতিতে বিস্ময়ে হতবাক হলো রুদ্র।কিন্তু তার খালি বুকটা হঠাৎ পরিপূর্ণ মনে হলো।পা উঁচু করে রুদ্রের নাকে চুমু খেলো চুপকথা।এরপর পলক ফেলে বুঝালো নিজের অনুভূতি।
মেয়েটার স্বীকারোক্তি রুদ্রের চোখে জল এনে দিলো।মাথা নেড়ে রুদ্র শুধালো
“রিয়েলি?
চুপকথা লাজুক হেসে দৌড়ে গাড়িতে উঠে বসলো।চুপকথার বাবা দূর থেকে সব দেখলেন।গাড়ি ছাড়ার আগে মুহূর্তে ভদ্রলোক গলা উঁচিয়ে বললেন
“আগামী মাসে বাংলাদেশে এসো।একটা মাত্র মেয়ে আমার।ধুমধাম করে বিয়ে দেবো।
অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে নেলি প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলো।খবর খানা শোনা মাত্র আমজাদ হায়দার এর মাথায় বাজ পড়লো।সেলিনা হতবাক রইলেন।কিন্তু আনন্দে নেচে উঠলো অভিরূপ।বাবা হবার খুশিতে তার সবকটা দাঁত বের হয়ে খালি হাসি পেলো।সকলের সামনে নেলিকে জড়িয়ে ধরে কোলে তুলে শূন্যে ঘোরালো।এরপর নেলির কপালে কপাল ঠেকিয়ে বললো
“এতবড় সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য থ্যাঙ্কস বউ।
এরপর নেলিকে ফেলে বাইরে বেরিয়ে এলো।গ্যারেজ থেকে বাইক বের করে ছুটলো সারফরাজ এর বাড়ী।বাড়ির আঙিনাতেই পাওয়া গেলো তাকে।রূপকথার জন্য হাবিজাবি চকলেটস,চিপস,ফলমূল নিয়ে কোত্থেকে যেনো বাসায় ফিরছে সে।অসময়ে অভিকে দেখে কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো
“কিরে শালা এই সময়ে কি কাজ এই বাড়িতে তোর?
অভিরূপ কলার ঝাকিয়ে দম্ভ ভরা গলায় বললো
“ও ভাই শেষমেশ তোকে টেক্কা দিয়েই ফেললাম।
বাঁকা হেসে সারফরাজ শুধালো
“কিসের টেক্কা শুনি?
“বাপ হতে চলেছি আমি!আর তুই?আগে আগে ধেই ধেই করে বিয়ে করে কোন কচু’টা করলি শুনি?
অভিরূপ বাবা হচ্ছে শুনে সারফরাজ এর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো।এরপর ভুত দেখার মতো চমকে শুধালো
“এই ভর দুপুরে কিসব সস্তা মজা হচ্ছে?এসব বললে আমি বোকা হয়ে যাবো?উহু মোটেও নয়।ওসব বলে আমাকে চেতানো যাবে না।
অভিরূপ কিটকিটিয়ে হেসে বলে উঠলো
“মজা ভেবে উড়াস না ভাই।আগেই বলেছিলাম তোর মেশিন ঠিক নেই।অকেজো মেশিন নিয়ে ঘুরলে মানুষের মূল্যবান কথা তোমার কাছে সস্তা মজাই মনে হবে।ওকে এখন আর আমার হাতে সময় নেই।আসছি।মাইক ভাড়া করে সবাইকে জানাতে হবে।তুই বরং বউকে চকলেটস চিপস খাওয়া।আমি তো দুদিন পর বাচ্চার জন্য এসব কিনবো।আহ কি কপাল!
বলেই চোখ টিপে চলে গেলো হাওয়ায় বাইক ছুটিয়ে।
অভিরূপ এর কথায় সারফরাজ হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরলো।এরপর হনহন করে বাড়ির ভেতরে ঢুকে রূপকথার হাতে চকলেট চিপস এর ব্যাগ গুঁজে রাগ দেখিয়ে বলে উঠলো
“মানুষের বউয়ের বমি হলে বাচ্চা হয়।আর আমার বউয়ের হয় গ্যাস,বদ হজম আর ডায়রিয়া।
রূপকথা কপাল কুঁচকে রাগ দেখিয়ে শুধালো
“এতবড় সাহস?আমাকে নিয়ে এসব বলা?
“তো কি করবো?অভিরূপ বাপ হয়ে যাচ্ছে।আমার ইজজতের প্রশ্ন ওঠে এসেছে।কলার নাড়িয়ে আমাকে জং ধরা মেশিন বলেছে সে।
রূপকথা ঠোঁট উল্টে বললো
“আহারে নেলিটা ডক্টর হবে কি করে?
দাঁত চিবিয়ে সারফরাজ বললো
“আমার জন্য টেনশন না হয়ে নেলি কি করে ডক্টর হবে সে নিয়ে চিন্তা হচ্ছে তোমার?কেমন বউ তুমি?
এমন সময় সুফিয়ান চৌধুরী এসে বলে উঠলেন
“কে বলেছে ও তোর বউ?
মনে মনে সারফরাজ বলে উঠলো
“চার মাসে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে সাইনবোর্ড না মেরেছি।হাল চাষ করে জমি উর্বর পর্যন্ত করা শেষ।আর উনি এসে বলছে জমি পতিত।
“বিড়বিড় করে কি বলছিস?
“ওই বলছিলাম যে চাষ করার পরেও জমি আমার না।
“মুখ সামলে কথা বল।
“ভুল হয়ে গেছে আব্বা।
“এখনো ক্যালিফোর্নিয়া যাচ্ছিস না কেনো?রূপকথার পরীক্ষা এক সপ্তাহ পর।তুই কাল ই চলে যা।আমি ওকে নিতে এসেছি।
যাবার কথা শুনে সারফরাজ এর মন ভার হলো।তবুও রূপকথার ভালো ভবিষ্যৎ চিন্তা করে বললো
“পরশুর টিকিট কেটেছি।রাতের ফ্লাইটে চলে যাবো।
সারফরাজ এর যাবার কথা শুনে রূপকথার বুক ধক করে উঠলো।সে সুফিয়ান চৌধুরী কে বলল
“আমি আজ যাবোনা বাবা।তুমি চলে যাও।সারফরাজ গেলে তার পর যাবো।
রাতে সারফরাজ এর গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো রূপকথা।এই কয় মাসে সারফরাজ তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।সারফরাজ এর বুকে না ঘুমালে তার ঘুম হয়না।সারফরাজ পাশে থাকলে নিজেকে নিরাপদ ,নির্ভয় মনে হয়।সারফরাজ তার শক্তি।সারফরাজ চলে গেলে রূপকথা তো শক্তিহীন হয়ে মুখ থুবড়ে পড়বে।
সারফরাজ রূপকথার কপালে গভীর চুমু একে বলল
“ডোন্ট ক্রাই মাই সুইট ম্যাডনেস।আমি মাঝে মাঝে এসে তোমাকে দেখে যাবো।প্রমিস।আর তোমাকে ছাড়া থাকতে আমারও কষ্ট হবে।নিদারুণ জন্ত্রনা মিশ্রিত মুহূর্ত কাটবে প্রতিদিন।তোমাকে ছাড়া প্রতিটা শ্বাস ফেলতেও কষ্ট হয় আমার।সেখানে এতদিন থাকা ইম্পসিবল।আর তুমি তো জানো তোমার জন্য আমি কতোটা ম্যাড।
বলেই রূপকথাকে নিজের কোলে বসিয়ে শক্ত করে চেপে ধরে পিঠে মুখ গুজলো।
রূপকথা ঠোঁট উল্টে কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো
“আমার প্রতিদিন তোমাকে চাই।এসব হঠাৎ হঠাৎ আসা যাওয়া আমার পোষাবে না।এখন তুমি কি করবে তুমি জানো।
সারফরাজ ঘোর লাগানো গলায় বললো
“এতো প্রশ্রয় দিও না ওয়াইল্ড ক্যাট।একদম মেরে ফেলবো তাহলে।জানো তো তোমাকে অসহায় ভাবে খু ন করতে আমি কতোটা পছন্দ করি?
রূপকথা ফিসফিস করে বললো
“আমি তোমার হাতে প্রতিনিয়ত খু ন হতে* চাই।
“ঠিক আছে ওখানে বিজনেস ক্লোজ করে চলে আসব খুব শীঘ্রই।
“সত্যি?
সারফরাজ রূপকথার কানে ফিসফিস করে বলে উঠলো
“তিন সত্যি।
এরপর হাতের অবাধ্য বিচরণে এলোমেলো করে তুললো রূপকথাকে।ভাসালো সুখের সাগরে।
রুদ্র এস দাঁড়ালো মায়া কুঞ্জের সামনে।এরপর দুরুদুরু বক্ষে বাড়ির ভেতরে ঢুকলো।ড্রয়িং রুমে কাজ করছিলেন মায়া।মায়াকে দেখে লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে গলা খাকরি দিলো রুদ্ররাজ।এরপর ডেকে উঠলো
“ফুপি!
রুদ্রের ডাক পেয়ে চমকে উঠলেন মায়া।এরপর রুদ্রের কাছে দৌড়ে গিয়ে বুকে জড়িয়ে বলে উঠলেন
“আমার আব্বা।এতদিন পর ফুপিকে মনে পড়লো?
রুদ্র মায়াকে শক্ত করে চেপে ধরে নীরব অশ্রু বিসর্জন দিলো।এরপর ধরে আসা গলায় বলল
“আমাকে তোমার নিজ হাতে বিয়ে দেবে ফুপি?তুমি ছাড়া তো আমার কেউ নেই।আমার মা হবে ফুপি?
মায়া শব্দ করে কেঁদে মাথা ঝাকালেন।এরপর বলে উঠলেন
“সারফরাজ এর মত করেই আনন্দ ধুমধামে বিয়ে হবে তোর।আমার বউ আমার বাড়িতে উঠবে।নিয়ে চল আমায় মেয়ের বাড়িতে।
এক বছর পর ফিরলো সারফরাজ।মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে সারফরাজ আর সুফিয়ান চৌধুরী।সুফিয়ান চৌধুরী কে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে সারফরাজ বলে উঠলো
“শুদ্ধ পুরুষ হয়ে ফিরে এসেছি বাবা।আপনি আমাকে আর খারাপ মানুষ বলতে পারবেন না।সমস্ত পাপের কারবার ওখানেই দাফন করে এসেছি।
সুফিয়ান চৌধুরী শক্ত করে সারফরাজ কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বলে উঠলেন
“আমি জানতাম তুই এভাবেই ফিরবি।তোর প্রতি আমার যে অগাধ বিশ্বাস রে বাবা।যা বাড়ি যা।আমি কিন্তু শীঘ্রই নানা হতে চাই।
চেকমেট পর্ব ৬৭
সারফরাজ উচ্ছসিত চোখে মুখে ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা টেনে বেরিয়ে গেলো সুফিয়ান চৌধুরীর বাংলো থেকে।তাকে খুব দ্রুত বাড়ি ফিরতে হবে।ছোট বউ টা যে অধীর হয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছে।তাকে বুকে জড়ালে তবেই নিভবে দীর্ঘ দিন ধরে জ্বলে থাকা হুতাশন।
“আম কামিং ডিয়ার রূপকথা।মাই সুইট ম্যাডনেস!
