ছায়াস্পর্শ পর্ব ২৮
জান্নাত চৌধুরী
ইফরাহ কে পৌঁছে বাজারে এসেছে আরাধ্য। রাতের গাড়ির একখান টিকিট কাটতে হবে তাকে – পঞ্চগড় হতে ঢাকা দুরত্ব বেশ অনেক খানি। কাউন্টারে বসে গরম চা আর সামুচা খাচ্ছে। সামনেই কাউন্টারের ছেলেটা – এর সাথেই আরাধ্যের ভীষণ খাতির। আরাধ্য এলেই তাহার প্রথম কাজ কপালে হাত ঠেকিয়ে সালাম ঠুকে দেওয়া। ছেলেটা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে এমন নয়। কলেজ জীবন এক ব্যাচ আরাধ্যের সিনিয়র ছিলো। তবে আরাধ্য কোনো কালেই তাকে সিনিয়র মানে নি। একদা এই ছেলে তার উপর বড় ভাই গিরি ফলাতে গিয়েছিলো। তখন ঘটনা টা ঘটেছিলো – বিড়াল হয়ে সিংহের সাঙ্গে পাংগা নেওয়া। ওই যে আরাধ্য সিনিয়র মানে না কানের নিচে ঠাটিয়ে মেরেছিলো। মূহুর্তেই “মকবুল রহমান কলেজের মাঠ প্রাঙ্গনে সব ছাত্র – ছাত্রী জোড়ো হয়। পরবর্তীতে বিচারের আয়োজন হলে বেশ বড় এক হাঙ্গামা হয়।
আরাধ্য চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিয়ে ডাকে –
-নয়ন ভাই ;
নয়ন এক ধ্যানে কিছু একটা ভাবছে। আরাধ্য কিছু সময় তার ভাবুক মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে তার দৃষ্টি সই তাকাতেই নাক সিঁটকায়।
সামনে দাঁড়ানো এক লাস্যময়ী নারীর উন্মুক্ত সাদা ধবধবে পেট দেখা যাচ্ছে শাড়ির ফাঁক গলিয়ে। নয়নের দৃষ্টি স্থির সেদিকে। আরাধ্য বেশ জোড়ে ডেকে ওঠে এবার –
-“নয়ন ভাইইই!”
-“হ্যাঁ ..হ্যা ..কে.. কি ?”
আরাধ্য হেসে বলল- “ ওসব বাহিরের মালে কত দিন আর মুখ লুকাবেন। এবার নাহয় ঘরে একখান তুলে আনেন !
নয়ন লজ্জায় মাথা নিচে নামিয়ে নিতেই আরাধ্য আবার বলল- রাতের একখান টিকিট কাটেন ভাই , রাজধানী যাবো!
-কয়টার দিবো ?
-“দেন ৯ টার !”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
নয়ন টিকিটের বই বের করতে করতে বলল – “বাপের গাড়ি থাকতে বাসে যাতায়াত করস কে তুই ?”
-ওই টা বাপের খাজনা। আমার খাজনা হুন্ডা, আমার খাজনার বাজনা বেশি তাই বাসে যাবো !
– ছোট নবাব নাকি সাদি শুধা করেছে ; শুনলাম !
-ওই আর কি – দিলে যৌবনে লাড়া, হরি নিজেও বলে আমারে কেউ সামলা। তাই হাঙ্গা করেই নিলাম !
মুখের কথাটুকু ফুরাতেই শাইইই এক শব্দে গরম এক পিস্তলের বুলেট পাশ কাটিয়ে গিয়ে কাউন্টের বাল্বে লাগে। মূহুর্তেই বাল্ব ব্লাস্ট হয়। আরাধ্য শান্ত চোখে একবার সেদিকে তাকিয়ে ..ঘাড় কাত করে বাজারের দিকে তাকায়-
পরমুহূর্তেই আবার এক ছুটন্ত গুলির শব্দ হতেই আরাধ্য সরে যাবার আগেই গুলি নয়নের কপাল ফুটো করে দেওয়ালে গিয়ে আঘাত হানে !
ধীরে ধীরে নয়নের দেহ লুটিয়ে পড়লো কাচের টেবিলের উপর। আরাধ্য চেঁচিয়ে ওঠে –
-“নয়ন ভাইই !”
নয়নে সাড়া নেই , গলা ছেড়ে ডাকে আরাধ্য- সাহায্যের লাগি! বাজার কমিটির লোকজন এগিয়ে আসে, আরাধ্য একবার নয়ন তো একবার গুলির ছুটে আসার দিক নির্ধারণ করে তাকায়। মুখে কালো কাপড় প্যাঁচানো এক লোকের অবয় চোখে পড়ে।
আরাধ্যের চোখ লাল হয়ে ওঠে- দ্রুত ফোন বের করে কল করে রেজার নাম্বারে। ফোন বেজে বেজে কেটে যায়-
নয়নের নিঃশ্বাস পড়ছে না! দেয়ালে লেগে আছে রক্তের দলা। মিনিটের মধ্যে এক অটো এসে হাজির হয় সেখানে। আরাধ্য আর বাজার কমিটির দুটো লোক মিলে গাড়িতে তোলে নয়ন কে।
কাছেই এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নয়ন কে। অনেক আগেই প্রাণ ত্যাগ করেছে ছেলেটা। আরাধ্যের বুকের মাঝে মুচড়ে ওঠে। খবর পেয়ে নয়নের বাড়ির লোক এসেছে –
অতিক্রম হয় প্রায় এক ঘন্টা। নীরব হয়ে হাসপাতাল বসে আছে আরাধ্য। রেজা এসেছে , নয়নের লাশ ময়না তদন্তে নেওয়া হবে বলেই পুলিশ নিয়ে গিয়েছে। রেজা আরাধ্যের কাধে হাত রেখে ডাকে –
-“ছোট নবাব ! ”
আরাধ্য তাকলো না ! রেজা জানে আরাধ্যের এই নিশ্চুপ থাকার মানে , সে নিজেকে একটু শান্ত করে বলে –
-খন্দাকার বাড়ির লোক আজ এই আক্রমণ ঘটিয়েছে ছোট নবাব। গুলি করা ছেলেকে খুজে বের করা হয়েছে। আপনি কখ..
আরাধ্য উঠে বেড়িয়ে যায় হাসপাতাল থেকে–
রেজা অধমের মতো কিছু সময় তাকিয়ে থেকে সেও পিছু নেয়!
বেশ বড় এক হাঙ্গামা সেরে আরাধ্য ঘরে আসে। আহত শরীর টেনেটুনে টুনে এনে সোফায় গা এলিয়ে গলা ছেড়ে ডাকে –
-“মীম ,নুন , হা, !”
পরপর তিনবার একই নামে ডাকতেই মানহা এসে হাজির হয়। হাতে গরম পানি বাটি । মানহা ঘরে আসতেই – আরাধ্য বলল :
-গুমুর ধরেছিস দেখি ? আজকাল আর আরাধ্য ভাই …আরাধ্য ভাই করে মাথা চিবোস না ? কাহিনী কিহ ?
মানহা কথা বলে না ! চুপচাপ গরম পানিতে স্যাভলন ঢালে- আরাধ্য কপাল কুঁচকে তাকিয়ে থাকে। মানহা একটা সাদা সুতি কাপড় আর পানির বাটি হাতে এগিয়ে এসে কাটা ছেঁড়া জায়গার রক্ত গুলো স্বযত্নে পরিষ্কার করছে। থেকে থেকে দুই একবার ফুঁ পাড়ছে। যেন লোকটার জ্বলন না ধরে। আরাধ্য শান্ত চোখে তাকিয়ে দেখছে। তার মুখে ব্যাথার লেস মাত্র নেই। ক্ষত স্থান পরিষ্কার করে একটা মলম জাতীয় কিছু লাগিয়ে দিলো মানহা। কাজ শেষে যেতে নিবে ঠিক তখন তারে থামিয়ে দেয় আরাধ্য –
-কি সমস্যা ! মনে হচ্ছে এড়িয়ে যাচ্ছিস ?
মানহা শান্ত দৃষ্টিতে তাকালো – “ এড়িয়ে যেতে পারলে তো লেটা চুকে বুকে যেতো।”
-“ খোঁচাখুঁচি করছিস, মামলা কি ?
-“আসছি!”
মানহা ঘুরে চলে যেতে নেয়। আরাধ্য এক ঝটকা টানে সোফার ফাঁকা জায়গায় এনে বসায় তাকে। মানহা ক্ষিপ্ত চোখে তাকিয়ে বলল –
-আমি আর ছোট টি নেই আরাধ্য ভাই ! এভাবে যখন তখন ছুঁবেন না আমায়!
-“বারে দাঁড়িয়ে মার খেলে যদি পাক মেরে পড়ে যাস ! তাই তো বসিয়ে পেটানোর চিন্তা করলাম। যেনো পড়লেও ব্যথা না লাগে” আজকাল মানুষের ভালো করতে নেই।
মানহা কথা বাড়ালো না মুখ ঘুরিয়ে নিলো। আরাধ্য আঙ্গুলে কপাল চুলকে। ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে নিজেকে শান্ত করলো ।এরপর ধীরস্তে হাত বাড়িয়ে মানহার ছোটখাটো মুখটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে আদুরে স্বরে বলল –
-কি হয়েছে বুলবুলি ! ভাই কে বল ? মনে আষাঢ়ের মেঘ জমিয়ে রেখেছিস কেন? কি চাই বল দেখি ফটাফট হাজির হবে !
মানহার চোখ জোড়া ভরে উঠছে। পাতা পড়লেই হয়তো গড়িয়ে পড়বে কয়েক ফোঁটা পানি। আরাধ্য তার ছলছল চোখে তাকিয়ে গাল হতে হাত সরিয়ে। আঙ্গুলে কপাল চেপে ধরলো –
-থাবরা খেয়ে মুখ খুলতে না চাইলে – লক্ষি মেয়ের মতো বল কি চা…
-“আপনাকে চাই দিবেন ?”
আরাধ্য স্তব্ধ হয়ে যায়। ঠোঁটের কোণে এগিয়ে আসা কথাগুলো এক শক্ত ঢোকে গিলে নেয়। মানহা আবার বলল-
-কি হলো দেন, মীর ফারহান ফাইয়াজ আরাধ্য কে
“ মুবাসারাহ জান্নাত মানহার” নামে দলিল করে দেন।
আরাধ্য ছিটকে কয়েক সেন্টিমিটার দূরত্বে সরে যায়। মানহা তাচ্ছিল্যের হাসল-
-“ পারবেন না তাইনা আরাধ্য ভাই !
যে রোগে মরছি আমি, সে রোগের প্রসাধনী আপনি।
ঘেমে উঠছে আরাধ্যের শরীর , চোখ দুটো বুজে গা এলিয়ে দিলো সোফায় -“ কত দিন ধরে পুষেছিস এসব ?
-কত বছর বলুন ?
দীর্ঘ শ্বাস নিংড়ালো আরাধ্য – “ কত বছর”
-ঠিক যেবছর বাচ্চা হতে কিশোরী হলাম! বয়ঃসন্ধির সময় পেরিয়ে অনুভূতির অতলে ডুব সাঁতারি হলাম । ঠিক তখন ,
আপনি বুঝেন নি ! আপনি তো আমারে ওই নজরেই কখনো দেখেন নি ; কিন্তু আমি পারি নি আপনাকে আপনার নজরে দেখতে। কেনো পারি নি বলুন তো ? কারণ আমার ভাবনায় ছিলো; আপনি দেরিতে হলেও আমায় বুঝবেন। তবে ওই যে “ যা মনে সয় ভাগ্য তার সাথেই পাঙ্গা লয়।” হয়েছে তাই। এক অতি সুন্দর রূপবতীর কাছে আমি হেরেছি-
দম নেয় মানহা , চোখের এক কোণে পানি চিকচিক করছে। সেই পানি আঙ্গুলে মুছে আবার বলে –
-“বিধাতা আমার বেলাতেই বড্ড নিষ্ঠুর।
প্রতি ওয়াক্তের মোনাজাতে সুখ না চেয়ে শুধু আপনারেই চেয়েছিলাম।অথচ আপনাকে পেলাম না !
সুখ–পাখিটাও ধরা দিলো না।”
মানহা থামলো; আরাধ্য ছাদের দিকে দৃষ্টি রেখে বলল-
-ভাগ্য নিষ্ঠুর ?
-” হু ; ভাগ্য নিষ্ঠুর ! প্রেম দহনে পোড়াচ্ছে আমার অন্তর-
কি এমন হতো ? আপনি মানুষটা আমার হলে – খুব কি ক্ষতি হয়ে যেতো বিধাতা আমায় একটু রূপ দিলে? তাহলে অন্তত সর্বস্ব হারাতো না আমার।
-কিছু জিনিস হারিয়েও শুকরিয়া করতে হয়!
মানহা করুণ চোখে কিছু সময় তাকিয়ে দেখলো আরাধ্য কে।
আরাধ্য ধরা কন্ঠে বলল-
-কবে এতো বড় হয়ে গেলি ? জানলাম না !
-“বরাবর ছোট ছোট বলে এড়িয়ে গিয়ে; আমার ছোট এক
রমণী তুলে আনলেন ?”
-“সে ছোট তবে ,বুঝদার।”
-বুঝদার না হয়েই বুঝি ধোকা খেলাম ?
-“উত্তপ্ত লাভায় স্বইচ্ছায় নিজেকে নিক্ষেপ করে ক’জন?”
-যে পোড়া পোড়াচ্ছেন এর থেকে তীব্র জ্বলন কি সেই আগুনে?
আরাধ্য চোখ বুঝে নিলো, কাটাছেঁড়া হাতে টেনে ধরলো মাথার চুল। যে হাতে যত্নে ঔষধ লাগিয়েছে মানহা সে হাতে আবারো রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে। মানহা আবার বলল-
-“চিন্তিত হচ্ছেন? প্রয়োজন নেই !
নীরবে ধ্বংস হবো! তবুও আপনার সুখের মাঝে কাটা হবো না। আমি ধুলোবালি , আমাকে গাঁয়ে মেখে লাভ নেই।”
কথাটুকু বলে দ্রুত ছুটে বেড়িয়ে যেতে নয় মানহা। তবে দরজায় দাঁড়ানো অরুনিমা কে দেখেই পা থমকে যায় তার। আরাধ্য তখনো গা এলিয়ে বসে আছে। মানহা একবার সেদিকে তাকিয়ে পরমুহূর্তেই তাকায় অরুনিমার শান্ত চেহারায়।
অরুনিমা এসেছিলো ছেলের খোঁজ নিতে। ক্ষতবিক্ষত হয়ে ফিরেছে আরাধ্য – হাতের ঘরিয়ে পড়া রক্তে অন্দরমহলে ফোঁটা ফোঁটা দাগ পড়েছে। খবর পেয়েই দেখতে এসেছে, মানহার প্রতিটি কথা তাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। গলায় আটকে থাকা প্রতিটি শব্দ যেন দলা পাকিয়ে রয়েছে তার!
মানহা চলে যায়- অরুনিমা শান্ত স্বরে ডাকে;
-ফাইয়াজ!
আরাধ্য না ঘুরে হাত উঁচিয়ে থামিয়ে দেয় মাকে –
-“এখন না আম্মা পড়ে আসবেন !
অরুনিমা কথা বাড়ায় না চলে যায়। দরজা ভেজিয়ে রেখে যায়। আরাধ্য ধীরে ধীরে শুয়ে যায় সোফায়, চোখ জোড়ায় ছাদের দিকে স্থির রেখেছে!
একরাশ অনুশোচনা এসে ভীর করেছে মন গহ্বরে। আবারো কোথাও একটা তৃপ্তি মিলছে , তার মতো পাপি তাপি মানুষ টাকে কেউ ভালোবেসেছে?
জীবনে এই বিয়া টা ছাড়া প্রতিটি কাজ আরাধ্য পরিকল্পনা ছাড়াই করেছে। কিছু কিছু কাজ অবশ্যই না চাইতেই হয়েছে। সব কিছুর যদি প্রাপ্তি হয় ,তবে অপ্রাপ্তি যে ডুকড়ে মরবে। আরাধ্য হেসে ওঠে , ভিতরে এক উত্তাল সমুদ্র শান্ত করতে হাসতে হবে তার। উচ্চস্বরে কিছু সময় হেসে বলে-
“থেমে থাকিবে না কিছুই – বহিয়া যাবে স্রোতে।
সময়ে- সময় কাটিবে – আমার দেহ খাইবে মাটিতে।
আমায় তুমি ভুলিবে প্রিয় – ভুলিবে আমার স্বজন।
আমার লাশ দাফনে -তোমরা গুনিবে থাকিবে প্রহর।
থাকিবে না চিহ্ন, রাখিবে না মনে..!!
এই পাপিষ্ঠ আমি কে?
কি ছিলাম তোমার জীবনে।”
কিছু সময় ঠেস ধরে শুয়ে থাকলো আরাধ্য। তবে সেটাও আর হলো না, ঘড়ির কাটা চারের ঘরে। চেয়ারম্যান বাড়ি ফিরেছে, রইসুল এসে ডেকে যায়। চেয়ারম্যান সাহেব তলফ করেছে তাকে।
আরাধ্য উঠে বসলো , গায়ের গেঞ্জি টা খুলে অন্য আরেক টা গায়ে জড়ালো। পড়নের জিন্স খুলে একটা ট্রাউজার পড়ে বেড়িয়ে যায় –
চিন্তিত ভঙ্গিতে ছাদে দাঁড়িয়ে জঙ্গলের ঘরের পানে তাকিয়ে আছে চেয়ারম্যান। পড়নে সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি আর লুঙ্গি।
আরাধ্য এলো সিঁড়ি দরজা পেরিয়ে আসতেই ডাকল –
-আব্বাজান ডেকেছেন ?
চেয়ারম্যান ঘুরে তাকালো , আরাধ্য এসে একদম কাছাকাছি দাঁড়িয়ে বলল-
+প্রয়োজনীয় কিছু বলবেন?
চেয়ারম্যান আরাধ্যের হাতের দিকে একবার তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল –
-আজকাল কি করে বেড়াচ্ছো তুমি !
-চুড়ি , খুন, ছিনতাই!
-“মশকরা করা বাজে অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে তোমার !”
আরাধ্য মুখের উপর হাত রেখে অবাক ভঙ্গিতে বলল;
-তওবা , তওবা , আস্তাগফিরুল্লাহ আব্বা এসব কি বলেন ? মজা না সত্যি !
চেয়ারম্যান বেশি না ঘাটিয়ে বলল-
-হাতে লেগেছে কি করে ?
-আপনার ভায়রা ভাইয়ের লোক এসেছিলো আমারে খালাস করতে। তাই একটু ক্ষাতির করতে লেগেছে –
ওসব ছাড়ুন কি হয়েছে বলুন তো?
চেয়ারম্যান কিছু সময় নিশ্চুপ থেকে বলল “নদী পথে আসা দুই দিনে মাল চোরাই হয়েছে! লসের পরিমাণ প্রায় কয়েক লক্ষ। ভর্তুকি পড়বে অনেক –
-”এতে চিন্তিত হবার কিছুই দেখছিনা !”
চেয়ারম্যান অবাক চোখে তাকালো ছেলের দিকে আরাধ্য ছাদের রেলিংয়ে হেলান দিয়ে বলল-
-চিন্তিত হবেন না , মাল সুরক্ষিত রয়েছে। কমিশন ৬০ % দিলেই সঠিক সময়ে পৌঁছে যাবে !
আরাধ্যের ইশারা চেয়ারম্যান বুঝে। মূহুর্তেই চোখ দুটো লাল বর্ণ হয়ে ওঠে তার। ক্ষিপ্ত হয়ে ধমকে বলে-
-“এতো খারাপ দিন এসেছে তোমার! নিজের ঘরেই সিং খুড়ছো?”
-“সে আপনি যাই বলুন , মাল নিতে মানি লাগবে। ”
লাগে বলুন নয়তো পুরোটাই আমার !
ছায়াস্পর্শ পর্ব ২৭
-ফারহান;
-”আসছি আব্বাজান
আরাধ্য পাশ কাটিয়ে চলে যাবে ঠিক তখনি চেয়ারম্যান বলে – অতি বার বাড়িও নাহ , ঝড়ে মাথা ভেঙ্গে যাবে।
আরাধ্য হাসল ; – মাথা থাকলে তবে না ভাঙ্গবে !
আরাধ্য চলে গেলো। চেয়ারম্যান দাঁতে দাঁত চেপে আকাশ পানে তাকিয়ে রইলো ।
