টেরিবেল পর্ব ১৪
অনুপ্রভা মেহেরিন
বিয়ের কার্যক্রম সম্পূর্ণ হতেই এডউইন বেশ শব্দ করে শ্বাস ছাড়ল সে যেন মহা বিপদ থেকে পাশ কাটিয়ে এসেছে। আন্দ্রিয়ার চোখ মুখ আতঙ্কগ্রস্ত তবে ভোঁতা মুখ করে তাকিয়ে আছে এডউইনের পানে মেয়েটার হঠাৎ কি হলো?হয়তো বিয়ে নিয়ে নার্ভাস ছিল তাই এমন দেখাচ্ছে এসব ভেবেই নিজেকে ধাতস্থ করল এডউইন।রাত দুইটা বাজতে চলল গির্জার বাইরে গিয়ে এডউইন সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আন্দ্রিয়াকে তাড়া দিল গাড়িতে উঠতে।এডউইনের গোঁয়াতমি ভাবটা বেশ চোখে পড়ল জিসানের তিনি ভেবে পান না এডউইন এমন এড়িয়ে যাচ্ছে কেন?জিসান অমায়িক কণ্ঠে বলেন,
” তোমরা চলে যাবে?তা হয় না বাড়ি চলো।”
এডউইন আন্দ্রিয়ার হাত ধরে রেখেছে।সেই হাতটা ছাড়ার কোন তাড়া নেই।জিসানের কথা এডউইন ভ্রু কুচকে বলে,
” কোন বাড়ি?”
” আমাদের বাড়িতে।তোমার মম যেখানে থাকে।”
” সরি জিসান আঙ্কেল ওটা আদৌ আমার বাড়ি না।”
এডউইনের ভাব সাব মোটেও পছন্দ হলো না নাওমির তিনি বলেন,
” তুমি চলেই যাবে?অন্তত ডিনারটা একসাথে করা যেত না?নতুন বউয়ের সাথে আমাদের একটু মন খুলে আড্ডা দেওয়ার সুযোগ দিয়েছো?”
” মম প্লিজ টায়ার্ড লাগছে।”
এডউইন যে পারিবারিক মুহূর্তগুলো এড়িয়ে যেতে চায় তা বেশ ভালো করেই বুঝতে পারল অভ্র।এডউইনের কাছে এসব স্বাভাবিক লাগলেও আন্দ্রিয়ার কাছে নিশ্চয়ই লাগবে না বিয়ে হয়েছে অথচ কোন হইচই আনন্দ নেই সব কেমম গুরুগম্ভীর।ডিনার টেবিলে একসাথে অন্তত প্রাণ খুলে হাসা যাবে আনন্দ ফিরে পাওয়া যাবে।অভ্র এডউইনকে বুঝিয়ে বলে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” এডউইন তোমার ওই বাড়ি যেতে সমস্যা থাকতে পারে আমার বাড়ি চলো।আমার বাড়িতে কেউ নেই চলো প্লিজ।আঙ্কেল আন্টি আন্দ্রিয়া আমরা সবাই মিলে অন্তত ডিনার করতে চাই প্লিজ এডউইন তুমি বাঁধা দিও না।আন্দ্রিয়া তুমি কি চাও?”
” ইয়ে মানে মম পাপা যখন চাইছেন তখন..”
আন্দ্রিয়া কথা শেষ করার আগেই এডউইন তার হাত চেপে ধরল।অর্থাৎ আন্দ্রিয়াকে চুপ করতে আড়ালে ইশারা করল।আন্দ্রিয়া আর কথা বাড়ানোর সাহস করে না মেয়েটা চুপসে যায়।এডউইন সম্মতি জানিয়ে বলল,
” ঠিক আছে অভ্রের বাড়িতে যাওয়া যাক।”
গির্জা থেকে অভ্রের বাড়ির দূরত্ব খুব বেশি নয়।এত রাতে সব দোকান খোলা নেই ডিনার কি দিয়ে করবে ভাবতে ভাবতে শট কাট মাধ্যম একটা পিৎজার দোকান খোলা পেয়ে পিৎজা নিয়ে নিল।
অভ্রের বাড়িটায় বেশিভাগ সময় সে একাই থাকে তার মা বাবা একসাথে অন্য একটি ফ্লাটে থাকেন তারা যেহেতু দুইজনেই চাকরিজীবি নিজেদের কর্মস্থলে পৌঁছাতে যেন সহজ হয় তাই আলাদা ফ্লাট নিয়েই থাকেন।এডউইন অভ্রের বাড়িতে আগেও এসেছে এই বাড়িটা তাদের নতুন করা হয়েছে।এত বড় বাড়িতে যদি মানুষ না থাকে কেমন দেখায়?এডউইন ছাদের রেলিং ঘেষে দাঁড়াল তার চোখ ভাসছে অশ্রু : এডউইন আজ কত বছর পর কাঁদছে?উমম, এডউইনের হিসাব আছে যেদিন রিহ্যাব থেকে বেরিয়ে শুনেছিল তার পাপা মারা গেছেন সেদিন এডউইন খুব কেঁদেছে।তারপর মায়ের বিয়ের সংবাদ পেয়ে কান্না করার কথা থাকলেও সে কান্না গিলে খেয়েছে।ছোট্ট থেকে তার জীবনের ওপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গেছে সেসব মনে পড়লেও এডউইন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।পাগল পাগল লাগে নিজেকে মনে হয় নর্দমার কীট।এডউইন যখন ভেবেই নিয়েছিল তার জীবনে আর কেউ আসবে না তখন সন্ধি করল পশু পাখিদের সহিত অবলা প্রাণিগুলো অন্তত বেইমানি করবে না তার বশ্যতা স্বীকার করবে এসব ভেবেই একে একে সব প্রজাতির পশুপাখির স্থান হয় এডউইনের প্যালেসে।মানুষ নামক প্রাণিগুলো এডউইনের চোখে বালি এরা স্বার্থের লোভে কতটা নিকৃষ্ট হতে পারে তা এডউইন জানে আর তাই তো নিজেকেও গড়ে তুলেছে ঠিক সেইভাবে স্বার্থপর নিকৃষ্ঠ মানব।
এডউইন বৃদ্ধা আঙুলের সাহায্যে ভেজা গাল মুছে নিল।আকাশটা কেমন দম খিচে আছে মনে হচ্ছে মেঘ জমেছে।এডউইন পকেটে হাত পুরে শীষ বাজিয়ে বলে,
” আন্দ্রিয়া মেরি এই দু’ফোঁটা অশ্রু শুধু তোমার জন্য উৎসর্গ করলাম।আমার ভালোবাসা আমায় গ্রহণ করেছে এর থেকে সুখ আর কি হতে পারে?শরীরের শেষ রক্ত বিন্দু পর্যন্ত তুমি এই এডউইনের।তুমি যতটা নরম কোমল তোমাকে ঠিক তেমনটাই থাকতে হবে। এডউইনের মতো হিংস্র নিকৃষ্ট হলে এই এডউইনকে কে সামলাবে হুম?
অভ্র নাওমি ঝটপট ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের ব্যবস্থা করে ফেলল সেই সাথে জিসানো টুকটাক হাত লাগিয়েছে।আন্দ্রিয়ার মুখখানি এত চুপসে আছে কেন?অবশ্য সবার সাথেই হেসে হেসে কথা বললেও এডউইনের উপর রাগান্বিত ভাবটা বজায় রেখেছে।এডউইন এগিয়ে এসে আন্দ্রিয়ার চিবুক তুলে বলে,
” কুইন কি হয়েছে?”
” কই?”
” মুখটা এমন লাগছে কেন?শরীর খারাপ লাগছে?ড্রেসটা বেশি ভারি লাগছে?”
” তা নয়।”
” তবে?”
” পরে বলব।”
” এক্ষুনি বলো।কি হলো বলছো না কেন?”
এডউইন উত্তেজিত হয়ে পড়ল আন্দ্রিয়া পড়ল ভারি বিপাকে এই ছেলেটার সবকিছুতে বাড়াবাড়ি। আন্দ্রিয়া দ্রুত এডউইনের হাত চেপে বলে,
” এডউইন চুপ করুন আমার কিছু হয়নি।”
” তাহলে আমার কুইনের মুখটা কালো থাকবে কেন?সে শুধু হাসবে।”
” এই হাসছি দেখুন ইইইই।”
আন্দ্রিয়া দাঁত বের করে এক গাল হাসল।এডউইনের চিন্তা কাটল না এই মেয়েটার হঠাৎ কি হয়েছে বেশ ভাবিয়ে তুলছে তাকে।এর মাঝেই আগমণ ঘটল অভ্রের সে এসে টেনে নিয়ে গেল এডউইনকে।
” এডউইন প্লিজ আজ রাতটা থেকে যাও।”
” সম্ভব না।”
” কেন সম্ভব না?তোমার কিসের এত তাড়া বুঝিনা ভেবেছো?এই বাড়িতে রুমের অভাব আছে?যেটায় ইচ্ছা থাকবে তারপরেও থাকো।”
” মাইন্ড চেঞ্জ করো অভ্র।বললাম না থাকতে পারব না।”
” কেন পারবে না?”
” ওকে।থাকব তবে শর্ত আছে।”
” কিসের শর্ত?”
” আমার সাপদের সাথে একটা রাত তোমাকে থাকতে হবে যদি থাকতে পারো তোমার সাহসিকতার প্রমাণ দাও তবেই আমি… ”
এডউইন কথা শেষ করার আগেই অভ্র উলটা দিকে হাটা ধরল যেতে যেতে অবশ্য এডউইনকে গালি দিতে ভুলল না।অভ্র যে সাপদের ভয় পায় তা এডউইন জানে সেই জন্যই তো সুযোগ বুঝে সাপের কথা তুলে দেয়।
ডিনার শেষ করে এডউইন আন্দ্রিয়া বেরিয়ে পড়ল প্যালেসের উদ্দেশ্যে।ঘুমে নিভে আসছে আন্দ্রিয়ার দু’চোখ হাই তুলতে তুলতে সিটে মাথা এলিয়ে দিল।এত সব ব্যস্ততার মাঝেও এডউইন খেয়াল করেছে হঠাৎ আন্দ্রিয়া তাকে ইগ্নোর করছে কেন?
” কুইন?”
” হু।”
” রেগে আছো কেন?”
মুহূর্তে সাপের মতো ফোঁস ফোঁস করে উঠল আন্দ্রিয়া এডউইনের দিকে তেড়ে তাকিয়ে বলে,
” আপনি জানেন আপনি আমার এতদিনের কল্পনা জল্পনা জলে ভাসিয়ে দিলেন।”
” আমি আবার কি করলাম!”
” আপনি বিয়ের পর আমাকে যখন ফুল দিলেন তখন একটা কিস করতে পারলেন না?কত মুভিতে দেখেছি ইসস কি কিউট সিন।”
” হোয়াট দ্যা ফা.. আমি এসব পারব না ওখানে আমার মম দাঁড়িয়ে ছিল।”
“আড়ালে দিতেন তাও তো দিলেন না। আমার কাজিনের বিয়েতে আমার কাজিন তার বউকে এত কিউট ভাবে… ”
” চুপ করো।এসব কথা আর মুখেও আনবে না।”
আন্দ্রিয়া নাক টানলো।সে সবসময় আবেগের দুনিয়ায় ভেসে বেড়ায় রোমান্টিসিজমে ভুক্তভোগী আন্দ্রিয়া কখন যে কি ভেবে বসে থাকে তার জাত পাত মোটেও ভাবে না।আন্দ্রিয়ার চোখের কোনে পানি এসে গেল এডউইন তাতে বেশ বিচলিত হলো,
” কি হয়েছে কুইন?কাঁদে না।”
” আপনি আমাকে দুঃখ দিয়েছেন এডউইন।”
” সরি।সো সরি কুইন।তাকাও, তাকাও আমার দিকে।”
এডউইন গাড়ি থামাল।আন্দ্রিয়ার চোখে চুমু খেয়ে মেয়েটাকে সান্ত্বনা দিতে চাইল।
” এডউইন আপনার উপর রাগ কমবে তবে একটা শর্ত আছে।”
” কী শর্ত?”
” আজ আমাকে ড্রিংক করতে দেবেন?”
” নো ওয়ে।”
” প্লিজ এডউইন।”
” তোমার শরীর খারাপ হবে দুঃসাহস দেখিয়ে এসব আর আমার সামনে বলবে না।”
” আমার অভ্যস আছে কাজিনের বিয়েতেও আবার আরেকদিন বন্ধুদের সাথেও খেয়েছি।”
এডউইন কিছুক্ষণ নিরব থেকে বলল,
” ওকে জাস্ট ওয়ান প্যাগ।”
তারা বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রায় চারটা বেজে গেল।প্যালেসের সকল প্রাণি ঘুমিয়ে গেছে আন্দ্রিয়া ভারি গাউনটা টেনে টেনে বার সেকশনে গিয়ে বসল।নিজের পছন্দ মতো ছয়টা বোতল নামিয়ে ধরিয়ে দিল এডউইনের হাতে।
” চলুন রুমে গিয়ে মাতলামো করব।”
” এত বোতল কেন?”
” সবগুলা থেকে একটু একটু খাব।”
এডউইন চুপচাপ আন্দ্রিয়ার কাণ্ড দেখছে এই মেয়েটা এত সুন্দর রাতটাকে ভেস্তে দিতে এসব করছে বোকা মেয়ে।
এডউইন স্যুট খুলতে গেলে আন্দ্রিয়া বাঁধা দিল,
” একি আমার সাথে নাচবেন না?”
” আমি নাচতে পারিনা।”
” আমি শিখিয়ে দিচ্ছে আসুন আসুন আমি নাচব।”
এডউইন আর বারণ করল না তার ভাবতেই হাসি পাচ্ছে তার মতো মানুষ কি না নাচবে!আন্দ্রিয়া নিজেই গান চালাল এবং এডউইনকে নিয়ে নাচতে শুরু করল নাচের মাঝে মাঝে মেয়েটা এত জোরে জোরে চিৎকার করছে যে এডউইন নিজেই হকচকিয়ে যাচ্ছে।এক প্যাগের অনুমতি থাকলেও আন্দ্রিয়া চোখের পলকে দুইটা বোতল এক নিমিষে সাবাড় করে দিল।এডউইন তাকে বাঁধা দিতে চাইল অথচ মেয়েটা তাকে পাত্তাই দিল না।আন্দ্রিয়ার লাফালাফি নাচানাচা ক্রমশ বেড়ে গেল এবং তার গাওয়া এলোমেলো গানে এডউইন বুঝেই ফেলল এই মেয়ের নেশা হয়ে গেছে।
” আন্দ্রিয়া আর একটুও খাবেনা তোমার নেশা হয়ে গেছে।”
” আশ্চর্য কে বলল আমার নেশা হয়েছে?এডউইন আপনি এত কম খাচ্ছেন কেন?বেশি বেশি খান – না হয় আমি খুব রাগ করব।”
আন্দ্রিয়া এডউইনের মুখে ঠেসে দিল এক বোতল সেও আর বাঁধা দিতে পারল না আন্দ্রিয়ার পাল্লায় পড়ে নেশায় মত্ত হলো তবে এডউইনের এত সহজে নেশা ধরল না।আন্দ্রিয়া সম্পূর্ণ মাতাল হয়ে ঢলে পড়ল এডউইনের বুকে,
” এডউইন কিসি দাও।কি হলো কিসি দাও।”
” কুইন প্লিজ এভাবে মাতলামো করো না এখানে চুপচাপ বসো।”
” আপনি আমাকে বকছেন?”
” না হানি।”
“তাহলে কিসি দিন।”
এডউইন আন্দ্রিয়াকে সামলাতে বেশ হিমশিমে পড়ল বাধ্য হয়ে চুমু খেল আন্দ্রিয়ার ঠোঁটে।মেয়েটা ঘুম ঘুম চোখে চুপচাপ বিছানায় শুয়ে পড়ল যাক তাহলে ঘুমিয়ে যাচ্ছে।এডউইন দ্রুত স্যুট খুলে গোসলের উদ্দেশ্যে ওয়াশরুমে গেল ঠিক দশ মিনিট পর ফিরে এসে দেখল আন্দ্রিয়া মেঝেতে বসে আছে এবং আরেক বোতল মদ সাবাড় করে দিয়েছে নিজের ভুলে এবার নিজেকেই মারতে ইচ্ছে হলো এডউইনের কেন যে এই মেয়ের কথা শুনল সে।
এডউইন আন্দ্রিয়াকে টেনে তুলতে গেলে আন্দ্রিয়া এডউইনকে জড়িয়ে ধরে।এডউইনের ভেজা চুল উন্মুক্ত দেহ সব মিলিয়ে মাতাল আন্দ্রিয়া ঘোর হারিয়ে আবোল তাবোল বকতে শুরু করে।
” কিং আমার স্বপ্নের কিং আপনি এসেছেন?এত সুন্দর কেন আপনি?একটু কামড়ে খেয়ে দেখব?”
আন্দ্রিয়া চট করে কামড় দিল এডউইনের পেটে।এডউইন আন্দ্রিয়াকে ছাড়িয়ে জামা খোলার জন্য তাড়া দিল।
” আন্দ্রিয়া জামা খুলে হালকা কিছু পরো তোমার ঘুমাতে হবে।”
” তুমি খুলে দাও।”
” আমি খুললে আজ উলটা পালটা কিছু হবে।”
“তবে উলটা পালটা কিছু হোক।প্লিজ এডউইন উলটা পালটা কিছু হোক।”
“আন্দ্রিয়া তুমি হুশে নেই।আমাকে ছাড়ো আমি নিজেই হুশ হারাচ্ছি।”
মাতাল আন্দ্রিয়া কি এডউইনের বাঁধা মানে?মোটেও না বরং সে নিজেই এডউইনের বুকে চুমু খায় তার পাগলামোতে অপর প্রান্তের ব্যক্তিটির যে কি বেহাল দশা সে কি জানে?এডউইন অনেক চেষ্টা করল নিজেকে সংযত করতে কিন্তু আন্দ্রিয়া তার সাথে যা করছে এর পরেও সংযত থাকা যায় না।আন্দ্রিয়া এডউইনের হাত চেপে বলে,
” প্লিজ এডউইন আই নিড ইউ।প্লিজ বেইব।”
” আমাকে পাগল করে তো ঠিকি কেঁদে উঠবে তারপর বাঁধা দেবে। আগে সজ্ঞানে অনুমতি দাও তারপর যা হবার হবে।”
এডউইন সেদিনের কথার রেশ ধরে যে বলল তা হয়তো আন্দ্রিয়া বুঝেনি।আন্দ্রিয়া নাক টেনে সরে গেল কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গেল এডউইনের রুম থেকে।এডউইন চেচিয়ে বলল,
” ইসস কুইন রাগ করেছে।এই কুইন,কুইন যায় না বউ শুনো.. ”
আন্দ্রিয়া হেলে দুলে খুব বেশি দূর যেতে পারল না তার আগেই এডউইন তাকে কোলে তুলে নিল।ভারি গাউনটার দরুনে আড়াল হয়ে পড়ল আন্দ্রিয়ার শরীর।এক টানে গাউনের চেন খুলে গাউনটা সরিয়ে দিল এডউইন সেই সাথে খুলে দিল চুলের ফুল, ওড়না।আন্দ্রিয়ার ছোট্ট দেহটা এডউইন নিজের দখলে নিতে সময় লাগল কয়েক সেকেন্ড।সে যতটা না ক্ষিপ্র আন্দ্রিয়া তার থেকেও বেশি। এডউইন আন্দ্রিয়ার ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে তাকে শান্ত করতে চাইল তবে আন্দ্রিয়া কি শান্ত হয়?তার বড়ো বড়ো নখের আঁচড়ে ফালা ফালা হয়ে যায় এডউইনের পিঠ।এডউইন নিজের দখলদারির ছাপ বসিয়ে দেয় আন্দ্রিয়ার সারা শরীরে।সময়ের গতি যত ছুটে চলল এডউইন ততটাই ভালোবাসার হিংস্রতা বাড়িয়ে দেয় কিন্তু তার সাথে মোটেও পেরে উঠে না ছোট্ট আন্দ্রিয়া। মেয়েটা একটা পর্যায়ে নেতিয়ে যায় নিজের উপর থেকে সরাতে চায় ভারি দেহের অধীকারি এডউইনকে।এডউইন ততক্ষণে নিজের মর্জিতে ডুবে আছে, আন্দ্রিয়াকে পাওয়ার লোভ যখন পূর্ণ হয়েছে তখন এত সহজেই কি ছেড়ে দেবে?
টেরিবেল পর্ব ১৩
ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে এডউইন এখনো কাবু আন্দ্রিয়ার দেহে।এক ফালি তীর্যক আলো এসে আন্দ্রিয়ার মুখে বসতেই এডউইন ভীষণ রেগে যায় দ্রুত হাতে জানলার পর্দা টেনে বুকের ভেতর আড়াল করে নেয় আন্দ্রিয়াকে।
আন্দ্রিয়া যখন আলো পেয়ে চোখ খুলতে চায় তখনি এডউইন তার চোখের পাতায় চুমু খেয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,
” এখনো সকাল হয়নি আন্দ্রিয়া মেরি।এখনো রাত, আমাদের রাত।”