টেরিবেল পর্ব ৪
অনুপ্রভা মেহেরিন
” আহ, এডউইন ব্যথা লাগছে।”
চাপা চিৎকারে গোঙালো আন্দ্রিয়া।এডউইন যত্ন সহকারে ঠোঁটে বরফ লাগাচ্ছে এর মাঝে থেকে থেকে আন্দ্রিয়ার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে দিচ্ছে।এডউইন ভাবতেও পারেনি সে এতটা হিংস্রক হয়ে যাবে মনের বেখেয়ালে যে ভুল করেছে তাতে সে ভীষণ অনুতপ্ত।আন্দ্রিয়াকে কোলে বসিয়ে ঠোঁটে বরফ লাগিয়ে দিচ্ছে একটু যদি ব্যথার উপশম হয়।মেয়েটার দু’ঠোট রক্তিম এবং ফুলে কলা গাছ, এডউইন পুনরায় আলতো ভাবে চুমু খেল।
” ঠিক হয়ে যাবে আন্দ্রিয়া।আমি আছি না?সব ঠিক হয়ে যাবে।”
আন্দ্রিয়া এডউইনের গলা জড়িয়ে বসে আছে।তার শরীরটা ভীষণ ক্লান্ত লাগছে সেই সাথে নিজেকে নিজেই চরম গালি দিচ্ছে।কল্পলোকে ঘুরে বেড়ানো নিজের সেই কিংকে আন্দ্রিয়া সর্বদা অনুভব করে।সে অপেক্ষায় কবে আসবে সেই কিং?এডউইনকে দেখে এক মুহূর্তে ভ্রমের জগৎ-এ ছিটকে পড়েছে সে ভেবেই নিয়েছিল এডউইন তার কিং।এডউইনের প্রতি যে সুপ্ত অনুভূতি গড়ে উঠেছে তা আর প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে না।তার প্রাক্তন ছিল বলে এতটা ডেস্পারেট হতে হবে!এডউইন একটু বেশি অদ্ভুত মানব।প্রথম পর্যায়ে এডউইনকে মেনে নিলেও পরবর্তীতে তার এতটা হিংস্রক ভাব দেখে নিজেকে আর কিছুতেই আটকাতে পারল না।আচ্ছা এডউইন তাকে হঠাৎ চুমু দিল কেন?তবে তার মনেও কি…?
” কি ভাবছো আন্দ্রিয়া?”
” আপনি আমাকে চুমু দিলেন কেন?”
এডউইন আচমকা আন্দ্রিয়াকে বিছানায় শুইয়ে দিল এবং আন্দ্রিয়ার গায়ের উপর নিজের ভর ছেড়ে হাতের মাঝে হাত পুরল।গলায় গালে কপালে ঠোঁটের কোন কিছুতেই এডউইনের আদর বাদ গেল না।
” আবার দিয়েছি চুমু।কেন ভালো লাগছে না?”
” এডউইন এসব কী হচ্ছে!”
” জানি না।তবে আমার মনে হচ্ছে তুমি আমার হতে চলেছো।”
” কক্ষনো না।আপনি অদ্ভুত মানুষ আপনার সাথে থাকা যায় না।”
” তোমার চোখ বলছে তুমি আমার উপর দূর্বল হচ্ছো।”
আন্দ্রিয়া চোখ বন্ধ করল।সে তো সত্যিই দূর্বল হয়ে পড়ছে।এডউইনের চাহনি,স্পর্শ সব কিছুই তাকে ডমিনেট করছে।আশ্চর্য এই ছেলেটা কি জাদু যানে?আন্দ্রিয়াকে বশে মা*রার জন্য এডউইনের এই বেপরোয়া আচরণ গুলোই যথেষ্ট।মেয়েটা
ঢোক গিলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে মনের বিরুদ্ধে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” ইয়ে মানে আমাকে ছাড়ুন।”
” আমাকে কামড়ে দাও প্লিজ।তবুও রাগ করো না সুইটি।”
এডউইন তার ঠোঁট বাড়িয়ে দিল।আন্দ্রিয়া ইতোমধ্যে তার ঘোর কাটিয়ে উঠেছে।এডউইনকে সরিয়ে দিয়ে বিছানা ছেড়ে নেমে দাঁড়ল।মাফিন তখন ছুটে গিয়ে বসল এডউইনের কোলে।
” দেখলে মাফিন জেলাস।দুষ্টু মাফিন তোমারো কী সঙ্গি চাই?”
আন্দ্রিয়া আড় চোখে তাকাল মাফিনের দিকে।এই বিড়ালটা এতটা আদুরে কেন?
” জানো আমার মাফিন আরেকটা বিড়ালের সাথে টি টুয়েন্টি মেচ খেলার চেষ্টা করেছিল।আমি সেই অন্য বিড়ালটাকে দিলাম পুরে একটা রুমে।তবে এবার মনে হচ্ছে মাফিনের সেই বিড়ালটাকে এনে দেওয়া দরকার।”
আন্দ্রিয়া এবারো জবাব দিল না বরং কাটকাট গলায় বলে,
” আমাকে সাহায্য করেছেন তার জন্য ধন্যবাদ এডউইন।তবে আর নয় আমি বাড়ি ফিরতে চাই আপনার ফোন নাম্বারটা দিন আমি বাড়িতে যোগাযোগ করব।”
এডউইনের বুকটা ভারী হলো।তার হাস্যোজ্জ্বল ভাবটা তৎক্ষণাৎ গায়েব হয়ে গেল।আন্দ্রিয়াকে নিয়ে অল্প অল্প করে ভেবে রেখেছে সে মেয়েটাকে কাছে পেলে মন শরীর সবটাই স্রোতের বিপরীতে যায় অথচ এই মেয়েটা তাকে ছেড়ে যাবে!এডউইন কিছুতেই মানতে পারবে না তাই তো মিথ্যার আশ্রয় নিল।
” এই জঙ্গলে নেটওয়ার্কের আশা করছো?হাস্যকর।”
” আশ্চর্য!নেটওয়ার্ক ছাড়া কিভাবে থাকেন অদ্ভুত মানুষ আপনি।”
এডউইন হাসল।তার কোলে থাকা মাফিনের মাথায় আদুরে হাত বুলিয়ে বলে,
” অন্তত এতক্ষণেও বুঝতে পারোনি আমি অদ্ভুত?”
আন্দ্রিয়া চুপ রইল।কি করবে না করবে ভেবে পাচ্ছে না অথচ এডউইনের নেশা ইতোমধ্যে তার শরীর মন উভয় কাবু করেছে।
” তুমি যখন যেতে চাইছো আমি তোমাকে সাহায্য করব।কিভাবে তোমাকে সাহায্য করতে পারি?”
” এই জঙ্গল থেকে আমাকে লোকালয়ে ছেড়ে আসবেন।”
” কিন্তু আন্দ্রিয়া তোমার প্রাণ সংশয়ে আছে সেই লোকেরা হুমকি দিয়েছিল আশা করি ভুলে যাওনি?”
” আমার কিচ্ছু হবে না।আমি ভেবেই রেখেছি এখান থেকে বের হলে ভোর হওয়ার একটু আগেই বের হব।কেননা ভোরে নিশ্চয়ই তারা পাহাড়ায় থাকবে না।ঠিক বলেছি না?”
” বেশ প্রস্তুত থেকো।”
এডউইন উঠে দাঁড়াল।যে তার কাছে থাকতে চায় না তাকে আর রেখে লাভ আছে?এডউইনের জীবন থেমে থাকবে না তার জীবন চলবে তার ছন্দে আপন গতিতে।এডউইন কক্ষ থেকে বের হতেই আন্দ্রিয়া নিজের ঠোঁট হাত রাখল।একটু আগেই এডউইনের কার্যকলাপ মনে পড়তেই লজ্জায় লাল হচ্ছে সে।এক অদ্ভুত অনুভূতি ঘিরে ধরেছে তাকে তবে মনে বিষাদিত ভাবটা তখনি এলো যখন এডউইন তাকে আঘাত করল।তার কল্পলোকের কিং তাকে কখনো আঘাত করবে না কক্ষনো না।সেখানে এডউইন প্রথম স্পর্শে তাকে আঘাত করেছে!আন্দ্রিয়া হয়তো ভ্রমে পড়ে ভুল করছে তার কিং নিশ্চয়ই আছে আর সে একদিন আসবেই।
হঠাৎ আগমন ঘটল ফেইরি শালোমীর।তার চোখে মুখে আতঙ্কের ভাব।
” কুইন আন্দ্রিয়া মেরি আপনি এটা কী করলেন?”
” কী করেছি আমি?”
” এডউইনের চোখে আপনার জন্য কাতরতা দেখেছি আপনি তার অনুভূতিকে এভাবে আঘাত করছেন!সবচেয়ে বড় কথা আপনার চোখ বলছে এডউইনের জন্য আপনার মন ব্যগ্র হয়ে আছে।দয়া করে নিজের সুপ্ত অনুভূতিটাকে গলা চেপে হ*ত্যা করবেন না।”
আন্দ্রিয়া শালোমীর কথা বুঝতে পেরেও বুঝল না।উলটো তীব্র দ্বিধাগ্রস্তে বলে,
” আমার কিং সে নয়।আমার কিং আমাকে আঘাত করতেই পারে না।”
” আপনার ভুল হচ্ছে কুইন।”
শালোমী এখান থেকে যাও।আমার মেজাজ খারাপ হচ্ছে এর থেকেও বেশি কথা বললে তোমার ডানা দুটো ছিড়ে দিতে একবারো ভাববো না।”
শালোমী বিদায় না জানিয়েই গোস্সা করে চলে গেল।আন্দ্রিয়া যখনি রেগে যায় তার ডানা ছিড়ে দেওয়ার হুমকি জানায়। এতে কি শালোমীর একটুও রাগ হয় না?হয়।সে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল আন্দ্রিয়া মেরি যা ইচ্ছে করুক সে তার মতামত কিংবা সুপরামর্শ কোন কিছুই বলবে না।।
এডউইনের হাবভাব দেখেই কিছুই বোঝার উপায় নেই সে কি বিষন্ন নাকি হতাশ আচ্ছা নাকি রেগে আছে আন্দ্রিয়ার উপর?রাত হয়েছে সারাদিনে দানাপানি পেটে পড়ল না মেয়েটার এদিকে এডউইনের স্বাভাবিক জীবনযাপনে রুটিনটা এলোমেলো হয়েছে একটা মেয়ের আগমন এডউইনের জীবনের ইতোমধ্যে এগারোটা বাজিয়ে দিয়েছে এখন শুধু বারোটা বাজার বাকি।আন্দ্রিয়া ক্ষুধা পেটে আর বসে থাকতে পারল না নিজের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসে দাড়ালো দোতলার লনে।এখান থেকে নিচের বসার স্থান এবং কিচেন রুম বেশ ভালোভাবেই দেখা যায়।এডউইন কফিতে চুমুক দিচ্ছে আর কথা বলছে একটা পাখির সহিত।পাখিটার নাম কী?আন্দ্রিয়া জহুরি চোখে পরখ করতে দেখতে পেল এটি ককাটিয়েল পাখি।আশ্চর্য এই পাখিটা কথাও বলতে পারে!প্যালেসটা ঘুরে দেখার সৌভাগ্য আন্দ্রিয়ার এখনো হয়ে উঠেনি আশপাশ তাকাতে দেখতে পেল সিলিং-এ বেশ কয়েক’শপাখি দুলছে।আন্দ্রিয়া নাম না জানা পাখিগুলোর দিকে তাকিয়ে রইল অবাক দৃষ্টিতে।আশ্চর্য এত পাখি!পাখিগুলোর জন্য সিলিং-এ বেঁধে দেওয়া হয়েছে ছোট ছোট দোলনা তারা সেখানেই দোল খেলছে।
” সুইটি কাম।”
হঠাৎ এডউইনের ডাক।স্বাভাবিক কণ্ঠস্বর অথচ এই ডাকেই আন্দ্রিয়া যেন পোষ মানতে বাধ্য।ছোট ছোট পা ফেলে সে নিচে নামল।কিচেনের সাথে এটাচ সরু ডাইনিং টেবিল আছে এডউইন সেখানেই বসে।আন্দ্রিয়া বসল এডউইনের মুখোমুখি তার আগমনে ককাটিয়েল পাখিটা মাথা ঝাঁকিয়ে সুরটেনে বলে,
” আন্দ্রিয়া মেরি।আন্দ্রিয়া মেরি।”
আন্দ্রিয়া আশ্চন্বিত চোখে তাকিয়ে রয়।এই পাখিটা এত সুন্দর করে তার নাম বলল! হলুদ রঙের ককাটিয়েল পাখিটার মাথায় বেশ সুন্দর ঝুঁটি আছে।
” তুমি আমার নাম জানো?”
” এডউইন বলেছে।”
পাখিটা পুনরায় উত্তর দিল।আন্দ্রিয়া বেশ অবাক হয়ে দেখছে সব।
“এডউইন এত পাখি আপনি একাই সামলান!আপনার কষ্ট হয় না?রাতদিন এসব পরিষ্কার করতে হয় না?”
” আমি ওদের ভালোবাসি আর ওদের জন্য এইটুকুনি করতে পারব না?সে সব ছাড়ো নিশ্চয়ই তোমার অনেক ক্ষুধা পেয়েছে পুরো বোলটা খালি করবে।”
এডউইন বোলটা এগিয়ে দিল আন্দ্রিয়ার নিকট।এতটা সময় পর খাবার পেয়ে আন্দ্রিয়া বেশ খুশি হয়ে গেল।তবে যখনি দেখলো বোলটাতে ওটস তার উপর কলা,খেজুর,বেদানা,আপেল উপরে কয়েক টুকরো চকলেটের বার।এসব খাবার মোটেও পছন্দ নয় এর পরিবর্তে ভাত আর আলুসিদ্ধ চটকে দিলে আরো আনন্দ নিয়ে খাওয়া যেত।
” আপনার ঘরে খাওয়ারের অভাব?”
” কেন?”
” এসব আমি খাই না।এককাপ ঘন দুধ চা সাথে দুইটা বিস্কুট দিন আরো ভালো ভাবে আমার চলবে তাও এসব খাব না।”
এডউইন ভ্রু কুচকালো এতে খারাপ কী আছে?ওটস শরীরের জন্য কতটা ভালো এই মেয়েটার ধারণা আছে?
” কেন খাবে না?এতে খারাপ কি আছে শুনি।”
” প্লিজ এডউইন আমাকে অন্যকিছু খেতে দিন।”
” আমি যত্ন সহকারে এই বোলটা তোমার জন্য সাজিয়েছি শুধুমাত্র তোমার জন্য।তোমাকে খেতেই হবে।”
” খাব না বলেছি না।”
” ওকে ডিল।”
” কিসের ডিল?”
এডউইন কিছুই বলল না নিস্তব্ধ প্যালেসে তার একটু আওয়াজ সারা প্যালেসের দেয়ালে বারি খায়।এডউইন বেশ জোরেই সুর টেনে শিষ বাজাল সেই সাথে দুইবার তুড়ি বাজাল।নিস্তব্ধ প্যালেসটা তার শিষের আওয়াজ ছড়িয়ে গেল চারিদিক।সঙ্গে সঙ্গে পাখির ঝাঁক এসে এডউইনের সামনে হাজির।এত এত পাখি ডানা ঝাপটানো দেখে আন্দ্রিয়া ভয়ে লাফিয়ে উঠে এডউইনের পাশে যায়।মনে হচ্ছে এখানে কোন হেলিকপ্টার ল্যান্ড করছে।
এডউইন আন্দ্রিয়ার গালে চুমু খেয়ে বলে,
” সুইটি ভয় পেলে?”
আন্দ্রিয়া প্রত্যুত্তর করল না সে অবাক চোখে সব পাখি দেখছে।এত এত পাখি একসাথে তার কখনো দেখা হয়নি।দেশি বিদেশি অনেক পাখি এখানে আছে এদের গুনে শেষ করা যাবে না।সব পাখির মাঝে দেরিতে উপস্থিত হলো বৃহৎ ম্যাকাও পাখিটি।উপরের পালক গুলো নীল এবং বুকের দিকটায় হলুদ রঙ।
“আন্দ্রিয়া মেরি জানো ম্যাকাও কিন্তু ভীষণ রাগি বাডস্।ওর ঠোঁট দেখছো এই ঠোঁটের সাহায্যে তোমার…”
” আপনি আমাকে হুমকি দিচ্ছেন এডউইন?”
” একদম না শুধু ওর কথাই একটু বললাম।যাই হোক বাকিদের ডাকব?আমার হ্যামস্টার,সাপ,ড্রাগন,বিড়াল,কু…”
” উফফ চুপ করবেন আপনি?এইতো আমি খেতে বসলাম।খাওয়া এক্ষুনি শেষ হবে।”
আন্দ্রিয়া আতঙ্কিত হয়ে খেতে বসল।মুখ ভরতি করে সব মুখে ঢুকিয়ে খাচ্ছে সে তার যেন কত তাড়া।এডউইন তুড়ি বাজাতে সঙ্গে সঙ্গে সকলেই প্রস্থান করল।নিজেকে সামলাতে চেষ্টা করলেও এডউইন নিজেকে সামাল দিতে পারে না।আন্দ্রিয়ার আদুরে কোমল চেহারা দেখলেই তার আদর করার লোভ জাগে।আন্দ্রিয়ার মুখের কোনে লেগে থাকা খাবারটা চুমুর সাহায্যে নিজের মুখে পুরে নিল সে,আর তা দেখে আন্দ্রিয়া দাঁত খিচে তাকায়।
” এসব কী?আপনি…”
কথা শেষ করার আগেই এডউইন পুনরায় ঠোঁটে ঠোঁট মেশায়।এডউইনের স্পর্ধা দিনকে দিন বেড়েই চলছে আন্দ্রিয়া যে বারবার দূর্বল হয়ে পড়ছে তা কি এডউইন বুঝে ফেলল!এভাবে চললে আন্দ্রিয়া যেকোন মুহূর্তে অঘটন ঘটিয়ে ফেলবে।আচমকা এডউইন ছেড়ে দিল আন্দ্রিয়াকে এবং চেচিয়ে বলে,
” যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এখান থেকে চলে যাও আন্দ্রিয়া মেরি।আমার সামনে থাকলে তোমাকে একটু একটু করে ভোগ করব তা নিশ্চয়ই তুমি চাও না?আমি আমার দেহকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না।নিজের ক্ষতি না চাইলে এখান থেকে চলে যাও।”
ভোর হতে আর বেশি দেরি নেই।গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করে এডউইন আন্দ্রিয়াকে ইশারায় ডাকল।আজ আর তার অডি গাড়িটি নেওয়া হলো না কেননা আন্দ্রিয়ার ভাষ্যমতে গাড়ি দেখলেই হয়তো ওই লোকেরা সন্দেহ করবে এখানে এডউইন কিংবা আন্দ্রিয়া আছে।তাই সবচেয়ে পুরাতন একটি গাড়ি বের করা হলো।এডউইন গাড়ি স্টার্ট দিল চোখে মুখে বিষণ্ণ ভাব : ভেবেছিল এই বুঝি তার জীবনে নতুন কেউ আসতে চলেছে যারপরনাই তাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে আন্দ্রিয়া চলেই যাচ্ছে।
” আন্দ্রিয়া মেরি আমাদের কি আবার দেখা হবে?”
” ভাগ্যে থাকলে নিশ্চয়ই হবে।”
” তোমার পরিবার তোমার জন্য অপেক্ষা করছে মায়ের কোলে, বাবার বুকে যখন ফিরবে তখন আমাকে ভুলেই যাবে।”
আন্দ্রিয়া আচমকা হেসে ফেলল।
” এডউইন আমার মা বাবা নেই।কিংবা ভাই বোন নেই আমি একাই।”
” একা মানে?”
” চাচাদের কাছে বড় হয়েছি তারা আমাকে ভীষণ ভালোবাসেন।তবে আমি একটা ভুল করে ফেলেছি জোর খাটিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসেই এত বড় বিপদে পড়লাম।”
এডউইনের হাত শক্ত হয়ে গেল দাঁতের কপাটি খিঁচে বলে,
” প্রেমিকের সাথে পালিয়েছো?”
” আরে না।”
আচমকাই গুলির শব্দ হলো সেই সাথে থেমে গেল গাড়িটি।এডউইনের বুঝতে বাকি নেই গাড়ির চাকায় গুলি করা হয়েছে।চারদিক থেকে শত্রু ইতোমধ্যে তাদের ঘিরে ফেলেছে আতঙ্কে মুহূর্তে এডউইনের চোয়াল ঝুলে গেছে।আন্দ্রিয়া যতটা বিপদে আছে সেও ততটাই বিপদে এরা নিশ্চয়ই তাকে মারা ছাড়া নড়বে না।
” এডউইন এখন কী হবে? ”
” জানি না।”
আশেপাশে কালো পোশাক ধারী লোকগুলো ক্রমশ এগিয়ে এলো আন্দ্রিয়া খামছে ধরলো এডউইনের হাত।হঠাৎ বাইরে থেকে দলের একজন বলল,
” আন্দ্রিয়া মেরি ভালোয় ভালোয় গাড়ি থেকে নামুন এবং আমাদের সাথে চলুন যদি তা না করেন তবে আপনার পাশে বসে থাকা ছেলেটা বেঁচে ফিরবে কি না নিশ্চয়তা দিতে পারছি না।”
আন্দ্রিয়া কেঁপে উঠল তার জন্য এডউইনের ক্ষতি সে চায় না।অপরদিকে এই লোকগুলোর সাথেও সে যাবে না।বাধ্য হয়ে এডউনকে আঁকড়ে ধরল।
টেরিবেল পর্ব ৩
” এডউইন আমাকে বাঁচান।আমি..আমি ওদের সাথে নয় আপনার সাথে যাব।”
” আন্দ্রিয়া পরিস্থিতি বোধহয় স্রোতের বিপরীতে যাচ্ছে।”
” তার মানে আপনি আমাকে বাঁচাতে পারবেন না?”
” তোমাকে বাঁচাতে গেলে আমি বাঁচতে পারবো?ওরা এক দল আর আমি একা।”
আন্দ্রিয়ার চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ল কয়েক ফোঁটা জল।তার মানে এডউইন বোঝাতে চাইছে আন্দ্রিয়া গাড়ি থেকে বিনাবাক্যে নেমে যাক?বেশ তবে তাই হবে।শুধু শুধু তার জন্য কেন এডউইন বিপদে পড়বে?
” ওকে ফাইন।এডউইন আমি চললাম।”
” হুম।”