ডার্কসাইড পর্ব ৩৪
জাবিন ফোরকান
– আম্মু আম্মু, আমার পুরো নাম কি?
– পুরো নাম আবার কি আব্বু?তুমি আমার সোনা আসমান।
– না না,শুধু আসমান কি কোনো নাম হলো?
– কেনো হলো না?আমি আয়েশা,আর তুমি আমার রাজপুত্র আসমান।
– উহু! ওদের সবার সুন্দর সুন্দর নাম আছে।একেকটা নামে কতগুলো অংশ!কিন্তু আমার নামটা…শুধু একটুখানি!এক শব্দে,কেনো?ওদের নামের শেষে নাকি ওদের আব্বুর নাম আছে,আমার আব্বুর নাম কি আম্মু?
নৈঃশব্দ্য। উদগিরিত অনুভূতি।বাকরুদ্ধ সময়ক্ষেপন।
– আম্মু?বলো না।আসমান নামটা আমার একদম পছন্দ হয়নি।আমার আব্বুর নাম কি?
– তুমি শুধু আসমান আব্বু,আমার ছেলে।এটুকুই তোমার পরিচয়।
অবুঝ সন্তানকে বক্ষে আগলে নিলেন জন্মদাত্রী, দৃঢ় আলিঙ্গনে উপচে দিলেন ভালোবাসা।তবুও নিষ্পাপ অবোধ শিশু মানতে নারাজ।
– না না,আম্মু!বলো,আমার আব্বুর নাম কি?আমার পুরো নাম কি?
– কায়সার।
ভেসে এলো একটি পুরুষালী কন্ঠস্বর।জন্মদাত্রী এবং সন্তান উভয়ে হতচকিত হয়ে তাকালো।দুয়ারে দন্ডায়মান এক বলিষ্ঠ পুরুষ অবয়ব।
– আসমান কায়সার।তোমার সম্পূর্ণ নাম।
পুনরায় ধ্বনিত হলো কন্ঠস্বরটি।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“ না! ”
হাহাকার করে উঠলো অন্তর।বিক্ষোভের জোয়ারে উপচে পড়লো হৃদয়াঙ্গন।
“ আমি আসমান,শুধুমাত্র আসমান।এক মহতী নারী আয়েশার সন্তান।এটুকুই আমার পরিচয়,এতেই আমার অহংবোধ।”
স্ফুলিঙ্গ হতে জন্ম নিলো প্রতিবাদের দাবানল।দুর্বোধ্য ঢাল রুখে দিলো ধ্বংসের ধারালো তরবারিকে।থেমে নেই অন্তর,দৃপ্ত আবহে ঘোষণা করে চলেছে,
“ আসমান কায়সার নই, নই আসমান রেমান।আমি শুধুমাত্র আসমান।যে আসমানের পরিস্ফুটনে কোনো উপনামের প্রয়োজন নেই।”
——ফিনিক্স পাখির নাম শুনেছ?ঐযে পুরাণে বর্ণিত সেই অমরতার প্রতীক?নিজেকে আগুনে পু*ড়িয়ে ভষ্ম করতো সে।যে ভষ্ম থেকে পুনর্জন্ম হতো তার নব অস্তিত্বের।এক সঞ্জীবনী অধ্যায়।অন্তরাগ্নি হতে পুনরুত্থান।এই শুধুমাত্র আসমানকে হয়ত পৌরাণিক ফিনিক্স পাখির সঙ্গেই তুলনা করা সম্ভব।
নিশ্চল অবয়বটির দিকে চেয়ে আছে সাইফ।নিজেকে কিঞ্চিৎ হালকা অনুভূত হচ্ছে তার। আঁধার জগতের নিশাচর বাসিন্দা সে।সাহিত্য পুরাণের ফিনিক্স পাখির সম্বন্ধে তার কোনো ধারণা নেই।এগোলো এক পা সামনে।আসমানের নিথর দে*হকে ঘিরে ধরে দাঁড়িয়েছে সকলে।নিঃশব্দের চাদর ছিন্ন করে হঠাৎই এক অশ্রাব্য ধ্বনি হৃদয়জুড়ে প্লাবন তুললো।
ধপাস করে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ল একজন।মাথার পিছন দিয়ে প্রবেশ করে সম্মুখভাগ ফু*টো করে বেরিয়ে গিয়েছে লম্বাটে বু*লেট!অতঃপর দ্বিতীয়জন, তৃতীয়জন, আরো একজন!কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই একে একে ধরাশায়ী হয়ে মেঝেতে আছড়ে পড়লো ছয় ছয়জন!প্রত্যেকের খু*লি ফু*টো হয়ে বেরিয়ে এসেছে ম*গজ।
স্নাইপার!
– হাইড!
সাইফের উচ্চকণ্ঠের আদেশে অবশিষ্ট লোকেরা একেক দিকে ঝাঁপিয়ে পড়লো।কাহিনী তারাও ধরতে সক্ষম হয়েছে ততক্ষণে।কেউ দেয়াল,কেউ বা যন্ত্রপাতি, কেউ আবার থামের আড়ালে আশ্রয় নিলো।দ্রুতই একপাশে গড়িয়ে চেয়ার উল্টে তার পিছনে নিজেকে লোকালো সাইফ।দ্রুত হাতে তুলে নিলো পি*স্তল।তাকালো চারিপাশে।স্নাইপার কোথায়?এলো কিভাবে?
অভাবনীয় ঘটনাটি ঘটলো তখনি।ফিনিক্স পাখির আপন ভষ্ম হতে পুনর্জন্মের মতনই আসমানের নিথর অবয়বটি উত্তোলিত হলো মেঝে থেকে।বসলো এক হাঁটু তুলে,স্থাপন করলো তাতে প্রশস্ত তালু।র*ক্তস্না*ত ধূসরিত অবয়বে সম্মোহনী দৃষ্টি নিয়ে চাইলো সম্মুখে।হতবিহ্বল হয়ে সাইফ তাকিয়ে থাকলো। ওই গাঢ় আঁধারমালা খচিত নয়নজুড়ে রয়েছে পরাশক্তিধর হিং*স্রতা।
– আসমানের বিনাশ ঘটানোর ক্ষমতা এই ব্রহ্মাণ্ডে একটিমাত্র সৃষ্টির রয়েছে।সে সৃষ্টি আপন অনুপ্রাণের ধ্বংসাধিপতি…..আসমান স্বয়ং।
গর্জনরূপ হিমশীতল কণ্ঠের ঘোষণায় সাইফের সর্বাঙ্গ স্থবির হয়ে পড়লো।হৃদযন্ত্র ছাড়ালো স্পন্দনের সর্বোচ্চ সীমা।অসহনীয় ওই কৃষ্ণগহ্বরের তীব্র শোষণে সাইফের আত্মার শক্তি নিঃশেষ হয়ে আসছে ক্রমশ।সহস্র চাওয়া সত্ত্বেও সম্মোহনী সত্তাটির উপর থেকে দৃষ্টি ফেরানো অসাধ্য।
এক টানে পরিধানের জ্যাকেটটি খুলে ফেললো আসমান,উন্মুক্ত করল কালো টি শার্ট টিও।বু*লেটের দুটো ফুটো স্পষ্ট তাতে,এবং তার বক্ষজুড়ে আবৃত বু*লেটপ্রুফ ভেস্ট।সাইফের চোয়াল ঝুলে পড়লো,এক হাতে ভেস্টটি খুলে আসমান দৃপ্ত কণ্ঠে উচ্চারণ করলো,
– চেকমেট!
এক লহমায় ঘটলো ঘটনাটি।সাইফ বিন্দুমাত্র নড়চড়ের সুযোগ পেলোনা।উপর থেকে কেউ একজন ঝাঁপিয়ে পড়লো তার উপর,শক্তিশালী বাহুর বাঁধনে আটকা পড়ে সাইফের শরীর ছিটকে আ*ঘা*ত হা*নলো মেঝেতে।মৃদু আভায় সুদর্শন এক পুরুষকে ঝুঁকে থাকতে দেখলো সে,যার অধরজুড়ে প্রস্ফুটিত অশরীরী হাসির রেখা।
– ওয়েলকাম টু হেল বেইবি!
সাইফ এবং তার দলকে বিস্ময়ের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে দিয়ে একে একে দুই তলার আধাঁরে মিশে থাকা ছায়ামূর্তিসমূহ অগ্রসর হলো।ধাতব রেলিংয়ে ঠেকালো নিজেদের অ*স্ত্র।বৃত্তাকার আবর্তনে অ্যাসল্ট রাই*ফেলের মুখে ঘিরে ফেলা হয়েছে গোটা কুরুক্ষেত্রকে।যার একদম মধ্যিখানে উচ্চশিরে দন্ডায়মান আসমান,এই সমগ্র দৃশ্যপটের রচয়িতা।
সাইফকে মাটিতে ঠেসে ধরে রাখা নিহাদ হাসলো, এক ঝটকায় টেনে তুলে তার মুখে সজোরে ঘু*ষি হাঁকিয়ে আছড়ে ফেলল চেয়ারের উপর।তার কলার চেপে ধরে ব্যক্ত করলো,
– কি*লিং মেশিনকে পাকড়াও করার মতন বুকের পাটা তোর কেনো হয়েছিল জানিস?কারণ মেশিন নিজে তোকে সুযোগ দিয়েছিল….গর্ধব!
সাইফের উপলব্ধিতে কিছুই বাকি নেই।খেলার মোড় ঘুরে গিয়েছে এক মুহূর্তের ভেতর।মারাত্মক ভুল করে ফেলেছে সে।আসমানকে এত সহজেই বাগে পাওয়ার মতন লোভের ধারণার বশবর্তী হয়ে নিজেই নিজের মৃ*ত্যুনামায় স্বাক্ষর করেছে।
আসমানের ফাঁদে পড়ার নাটিকাটিও তার দ্বারা তৈরিকৃত একটি ফাঁদ!
সাইফের ক্ষুরধার মস্তিষ্ক এবং পরিকল্পনা সম্পর্কে পূর্বেই আন্দাজ করেছিল আসমান।মস্তিষ্কের খেলায় মাত দিয়েছে তাকে।সাইফ ভাবছিল আসমানকে নিজের ফাঁদে টেনে নিচ্ছে সে, তাতে ধরাশায়ী হওয়ার অভিনয় করে গিয়েছে সে অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত।কালো পোশাকের আড়ালে ব্যবহার করেছে বু*লেটপ্রুফ ভেস্ট,যার কল্যাণে র*ক্তের ধারা লক্ষ্য করা আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব।নিহাদ এবং তার প্রশিক্ষিত বাহিনী একদম শুরু থেকেই প্রস্তুত ছিলো,সাইফের বাহিনীকে নিচতলায় অবস্থান নিতে নিহাদ দুইতলার যন্ত্রপাতি ঠাসা দেয়ালের আড়াল থেকে পূর্বেই দেখেছে, অবলোকন করেছে এবং আপনমনে হেসেছে।এক সুযোগে সাইফ এবং তার গোটা বাহিনীকে নিঃশেষ করে দেয়ার দুর্দান্ত পরিকল্পনা সাধন করেছে আসমান।
সাইফের লোকজন আড়াল থেকে বেরোতেও ভয় পাচ্ছে।কারণ এই কারখানার কোনো এক প্রান্তে লোকায়িত রয়েছে গুপ্তঘা*তক স্নাইপার!তাছাড়াও রয়েছে রাই*ফেলধারী বাহিনী।শুধুমাত্র আসমানের উপস্থিতির প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল তারা।এই ধরনের সম্মুখযু*দ্ধ মোকাবেলার কোনো অবস্থানে তারা নেই।
তবুও দুঃসাহস দেখিয়ে এগোলো কয়েকজন, অ*স্ত্র তাক করলো অরক্ষিত দন্ডায়মান আসমানকে লক্ষ্য করে।এর অধিক কিছুই করা সম্ভব হলোনা।একজন স্নাইপার এবং অপরজন রাইফেলের গু*লি*তে ঝাঁঝরা হলো। অপর কয়েকজন একসঙ্গে এগোলো,বারংবার এদিক সেদিক অবস্থান পরিবর্তন করতে করতে যেন স্নাইপার ধরতে না পারে।দুই তলা থেকে নিচে ঝাঁপিয়ে পড়লো রাই*ফেলবাহিনী।আসমানের সম্মুখের ঢাল হয়ে এগিয়ে গেলো মুখোমুখি লড়াইয়ে।কয়েক সেকেন্ডের মাঝে যু*দ্ধক্ষেত্রে পরিণত হলো কারখানাটি।
অবশেষে সাইফের দিকে ফিরলো আসমান।নিহাদের আ*ঘা*তে চেয়ারে লুটায়িত সে।আসমানের সঙ্গে দৃষ্টি বিনিময় ঘটিয়ে দুহাতে স্যালুট ঠুকে নিহাদ খানিক সরে দাঁড়ালো।বুকের কাছে সংযুক্ত হোলস্টারে হাত রেখে চারিপাশে সতর্ক নজর বোলালো।পর্যবেক্ষণ করে গেলো কুরুক্ষেত্র,ইশারায় নির্দেশ প্রদান করলো নিজের বাহিনীকে।
আসমান এগোলো সাইফের দিকে।হালকা ঝাপসা দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে থাকলো সাইফ।টি শার্ট এবং ভেস্ট খুলে ফেলায় ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত তার।প্রজ্জ্বলিত শুভ্রতার মাঝে অমানিশার দাগ অঙ্গজুড়ে।প্রশস্ত বুকের একপাশ হতে অন্যপাশে প্রবাহিত হয়ে গিয়েছে কিঞ্চিৎ গভীর একটি দীর্ঘ দাগ।তার ঠিক নিচেই, তলপেটের উপরে ক্রসচিহ্নের মতন প্রায় অদৃশ্যমান ঘাত।শরীরকে সম্পূর্ণ ক্ষ*ত বিক্ষ*ত করে ফেলা হয়েছিল তার।এবং এই কলঙ্কের রচয়িতা কে তা অনুধাবনে সাইফকে বেগ পেতে হলোনা।তিন বছর আগে কায়সার পরিবারের সেই পার্টিতে রাফা কায়সারের চেহারায় যে আগ্রাসন সে লক্ষ্য করেছিল তাতে আসমানের সঙ্গে সে নেহায়েত কমই করে ফেলেছে!
চেয়ারের কাছে পৌঁছেই ঝুকলো আসমান।আশেপাশে কুরুক্ষেত্র অব্যাহত।মুহুর্মুহু গু*লির ধ্বনি,মৃ*ত্যু আর্তনাদ, ধোঁয়াটে পরিবেশ এবং র*ক্তা*ক্ত প্রাঙ্গণ।তবুও ভ্রুক্ষেপ নেই অমানিশায়।সাইফের নয়নের দৃঢ় দৃষ্টিপাত করে সে শুধু একটি বাক্যই শুধালো,
– আমার মেয়েটা কি দোষ করেছিল?
কেন যেন আর সহ্য করতে পারলোনা সাইফ।ঝটকা দিয়ে উঠে আসমানের মুখ লক্ষ্য করে ঘু*ষি হাকালো। তা পাকড়াও করে ক্ষীপ্রতায় মুচড়ে দিলো আসমান, কটকট করে আওয়াজ এলো হা*ড় ভাঙার।সাইফের বেদনাধ্বনি ছাপিয়ে হিমালয়ের কন্ঠ উদগিরিত হলো,
– দুধের শিশুটাকে কেনো মা*রলি?
শিহরণ খেলে গেলো সাইফের সমস্ত শরীরজুড়ে,একটি হ্যাঁচকা টান,তার ডান হাতটি বাকা হয়ে ঝুলে পড়ল মুহূর্তেই।এক ঝটকায় পাশের স্ট্রেচারের উপর তাকে আছ*ড়ে ফেললো আসমান। নয়নপাত হতেই ওই কৃষ্ণগহ্বরে শীতলতার মাঝেও এক টলটলে অনুভূতির রেখা স্পষ্ট হলো।
– আমার মেঘ….আমার অংশ…
– তোর অংশ?ধ্বংস করেছি তাকে!
সাইফ জানে তার অন্তিম মুহূর্ত আসন্ন।তবুও হার মানতে নারাজ সে।উল্টো বরণ করবে সে এই পরিণতি, স্বগৌরবে!তৎক্ষণাৎ সাইফের কন্ঠে পেঁচিয়ে গেলো বলিষ্ঠ হাত,অতিরিক্ত জোরে ম*টকে দিতে যেয়েও দিলো না।ঝুঁকে বিড়বিড় করলো,
– উহু….এত সহজ মৃ*ত্যু তো তোকে আমি দেবো না!
– যন্ত্রণা দিবি?নতুন নয় আমার কাছে তা।
উত্তরে শুধু এক ঝলক তাকালো আসমান।তড়িৎ গতিতে আবদ্ধ করলো সাইফের হাত এবং পা।সামান্যতম নড়াচড়ার অবকাশ না রেখে পাশে এসে দাঁড়ালো। খুললো টুলবক্স।কিছুটা দূরে পাহারায় দাঁড়িয়ে তার কার্যক্রম লক্ষ্য করে শিরশির করে উঠলো নিহাদের সর্বাঙ্গ,অদ্ভুত হলেও সত্য সে কেন যেন অবলোকন করতে পারলোনা।দৃষ্টি ফিরিয়ে অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়লো ক্রমশ কাছে এগিয়ে আসা সাইফের দুইজন লোকের উপর।
শার্ট ছিঁড়ে সাইফের বুক অনাবৃত করলো আসমান।হাতে তুলে নিলো দুইটি ধা*রা*লো বস্তু। ছু*রি দিয়ে এক জোর ঝটকায় গেঁ*থে ফে*ললো বুকের নিচ বরাবর, ছিটকে উঠলো র*ক্ত,লেপ্টে গেলো মাস্ক এবং চেহারায়।তীব্র যন্ত্রণায় কুকড়ে গেলো সাইফ। তা প্রাণভরে উপলব্ধি করে অপর হাতের কেঁ*চিটি ঢো*কালো চাম*ড়ার ফাঁকে, কা*টতে থাকলো,যেন মা*নুষের বু*ক নয় কোনো কাগজের পাতা কা*টছে!খানিকটা অপারেশনের লিপ্ত চিকিৎসকদের মতন।
– লেটস্ সি ইউ ইউ হ্যাভ আ হার্ট অওর নট।
ক্রমেই র*ক্তে ডু*বলো উভয় কব্জি, অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দৃশ্যমান হলো চা*মড়ার আড়ালে।সাইফ?সে বিলীন আপন ন*রকযন্ত্রণায়।তাকে জী*ব*ন্ত ছিঁ*ড়ে ফে*লা হচ্ছে!অসহ্যকর,তার জন্যও অতি অসহ্যকর এই য*ন্ত্রণা!
অবশেষে থামলো আসমানের হাত।ততক্ষণে র*ক্তস্নাত হয়েছে সাইফের বু*ক,সে নিজেও। ছোপ ছোপ র*ক্তিম আভায় পরিপূর্ণ হয়েছে তার অঙ্গ।শুভ্রতা ছেয়েছে রক্তিম আভায়।সাইফের বুকের ভেতর স্পন্দিত হতে থাকা হৃদয*ন্ত্রটি নজরে এলো।তাকালো আসমান, তৃপ্তিভরে।পরক্ষণে চাইলো শি*কারের দৃষ্টিমাঝে।প্রাণ বলতে তেমন কিছু অবশিষ্ট নেই আর।তবুও মিলিত হলো উভয়ের দৃষ্টি।
ঝুঁকে সাইফের বুজে আসা নেত্রে চাইলো আসমান, বিড়বিড় করলো,
– আমার রাজকন্যার নিথর দে*হটা বুকে নিয়ে কেমন অনুভূত হয়েছিল জানিস?যেন কেউ আমার হৃদপি*ণ্ডটা…..
একবার মাত্র পলক ফেললো সাইফ।ধ্বনিত হলো তার মৃ*ত্যুর দলিল।আসমানের পাঁচ আঙুল লেপ্টে গেলো তার র*ক্ত সঞ্চালন যন্ত্রজুড়ে।
– …..ছিঁ*ড়ে এভাবে বের করে এনেছে!
একটি জোরালো টান, ম*র্মান্তিক আ*র্তনাদ।সুপ্ত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ন্যায় লাভারূপী রক্তিম প্রবাহ চারিপাশে ছিটকে উঠলো।স্পন্দিত অ*ঙ্গটি ছিঁ*ড়ে এলো আসমানের হাতে,হা*হাকারের তীব্রতা ছাপিয়ে গেলো কুরুক্ষেত্রকেও।
অন্তিম নিঃশ্বাস এবং পিনপতন নীরবতা।
ঘন নৈঃশব্দ্য আবৃত করলো চারিপাশ। সাইফবাহিনীর বিনাশ ঘটেছে।কতিপয় জীবিতকে পাকড়াও করা হয়েছে।তবে জয়ের উল্লাস নয়,বরং দৃশ্যের ভয়া*নক বিভীষিকা কম্পন ধরিয়ে দিয়েছে সকলের বক্ষে।
স্ট্রেচার উপচে গড়িয়ে নামছে উষ্ণ তরল র*ক্তধারা।তার উপর শায়িত নিষ্প্রাণ শ*রীর।তার ঠিক সামনেই দন্ডায়মান….কি আখ্যা দেয়া যায় তাকে?মানব?দানব?অশরীরী?পরাশক্তি?পিশাচ?জানোয়ার?আদও কি কোনো জাগতিক শব্দে তাকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব?
নির্বিকার দাঁড়িয়ে রয়েছে কৃষ্ণগহ্বরখচিত র*ক্তা*ক্ত হিমালয়।তার হাতে উগ*ড়ে নেয়া অ*ঙ্গটি,থকথকে অভিশাপ যেন।এমন বিধ্বংসী অশরীরী আ*তঙ্কে ঘেরা অভিশপ্ত অবয়ব নিহাদের নিকটও অচেনা ঠেকলো, বড্ড অচেনা।দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো সে,মুখ চাপলো হাত। ঘৃণা অনুভূত হচ্ছে না তার,বিন্দুমাত্র নয়।কিন্তু নিজের প্রিয় মানুষটার বিষাদের পর্যায় অনুধাবন করে যন্ত্রণা হচ্ছে,মা*রাত্মক যন্ত্রণা!
অ*ঙ্গটি মেঝেতে অবহেলায় ছুঁড়ে দিলো আসমান।থপ করে পরে গড়িয়ে তা ধুলোয় আবৃত হলো।ঠিক এর অধিকারী জানো*য়ারটির মতন,ধূসরিত!নিজের শরীরে অদ্ভুত এক কম্পন অনুভূত হলো আসমানের, আবেগের কম্পন!দৃষ্টি অভিমুখে শুধুমাত্র ওই নিষ্পাপ মায়াঝড়া রাজকন্যার মুখচ্ছবি ভেসে উঠলো।যাকে ঘিরে আসমান সাজিয়েছিল নিজের পৃথিবী।যদি তাকে আসমানের অভিশপ্ত ভাগ্য গ্রাস না করতো,তবে আজ হয়ত….
“ বাবা! ”…..“ আব্বু!”……“ পাপ্পা! ”
চারিপাশে প্রতিধ্বনিত হতে থাকলো ডাকগুলো,যেন আসমানের অস্তিত্ব ঘিরে নৃত্যে মেতেছে তারা।ধপ করে মেঝেতে বসে পড়লো আসমান,ঠিকরে আসতে চাইলো তার অশ্রু,তবুও আসতে দিলোনা,জোরপূর্বক আবদ্ধ রাখলো পাথর হৃদয়কে।অশান্তি!অন্তর্জ্বালা এই বক্ষজুড়ে।নিঃশ্বাস প্রশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে।শান্তি চাই!একটুখানি শান্তি……
জৃং!
আকস্মিক আওয়াজ বিশ্রীভাবে হস্তক্ষেপ করলো অনুভবে।হাত ভরলো পকেটে, ফোনখানা টেনে বের করলো।ভাইব্রেট করেছে। পরোয়াহীন র*ক্তা*ক্ত হাতেই অন করল, লেপ্টানো স্ক্রিনজুড়ে ভেসে উঠলো একটি নামহীন মেসেজ।
“ জানি তুমি সফল হবেই।তবুও অবাধ্য প্রার্থনা এই অন্তরের।সফল হও।ওই নরপিশাচদের সাম্রাজ্য গুঁড়িয়ে দিয়ে ফিরে এসো বীরের বেশে।ম্রিয়মাণ হয়োনা চাঁদ।আমি ছিলাম,আছি,থাকবো,তোমার অস্তিত্বের অনুভবের নিরেট আবরণ হয়ে—”
তাকিয়ে থাকলো আসমান।দীর্ঘক্ষণ।তার আপন জগতের আবেশ ছিন্ন হলো নিহাদের স্পর্শে।চোখ তুলে তাকালো। অশ্রুসিক্ত নয়নে চেয়ে আছে ছেলেটি,তার জীবনের অন্যতম প্রেরণার কারণ।
– আসমান…..কায়সার?
একটি দীর্ঘশ্বাস নির্গত হলো।ফোন পকেটে ভরে উঠলো আসমান,নিহাদের দিকে দৃঢ়চিত্তে চেয়ে জানালো,
– উহুম।শুধু আসমান।
দ্বিতীয় দফায় কোনোকিছু জিজ্ঞেস করলোনা নিহাদ, শুধু হালকা মাথা দোলালো।ঠিক তখনি তার কানে সংযুক্ত এয়ারপিসে সিগন্যাল এলো,বোতাম টিপে রিসিভ করে মিনিটখানেক পর আসমানের দিকে ফিরে নিহাদ জানালো,
– লোকেশন কে বি বিল্ডিং,কে ফোর জোন।
এক মুহুর্তও সময় নিলোনা আসমান আদেশ করতে।
– কে বি গ্রুপের সময় ঘনিয়েছে।জারি হলো কায়সারের ধ্বংসনামা।
নিজের মাঝে অসম্ভব এক স্পৃহা অনুভব করলো নিহাদ।দ্রুত নিজের পরিধানের জ্যাকেটটা খুলে আসমানকে দিলো।সেটি গায়ে চড়িয়ে দ্রুত পদক্ষেপে এগোলো বিনাশক,আপন বংশের ধ্বংস রচনায়।তাকে অনুসরণ করলো গোটা মেশিন বাহিনী।
দিবাকর উঁকি দিতে আরম্ভ করেছে পূর্বপ্রান্তে,কে বি সাম্রাজ্যের পতনের সাক্ষী হতে।
আবছা আলোয় উদ্ভাসিত আবদ্ধ কক্ষে চেয়ারে বাঁধা অবস্থায়ও আপন সুরে শীষ বাজিয়ে চলেছে চারুলতা।তার সঙ্গে হালকা ধাঁচে ধরেছে নিজের বোনের কাছ থেকে শেখা কাজী নজরুলের অমর সঙ্গীত।
– কারার ঐ লৌহ কপাট, ভেঙে ফেল কররে লোপাট র*ক্ত জমাট শীকল পূজার পাষাণ বেদী ~ ও…. তারপর কি যেনো ড্যাড?
পাশ থেকে বাকি অংশ ধরলেন বিলাল রেমান।
– ওরে ও তরুণ ঈশান,বাজা তোর প্রলয় বিষাণ
ধ্বংস নিশান উড়ুক প্রাচীর প্রাচীর ভেদি…
– ইয়েস! কারার ঐ লৌহ কপাট….
ফ্যালফ্যাল করে তাদের দিকে চেয়ে আছে আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা গার্ডগুলো।বিপরীত প্রান্তে সোফায় শরীর এলিয়ে বসে থাকা বাদশাহ পর্যন্ত স্তব্ধ হয়ে রয়েছেন।এই বাবা মেয়ে জুটিকে দেখলে কে বলবে তারা বর্তমানে বন্দী?প্রান*সংশয় রয়েছে তাদের!সামান্য চিন্তা নেই,আপন জগতে মগ্ন দুজন।যেন নিজেদের বাড়ির ড্রয়িং রুমে বসে আড্ডায় মেতেছে।বিষয়টি অসহ্যকর ঠেকলো বাদশাহর নিকট।বিনা কারণেই সোফার হাতল চাপড়ে তিনি শুধালেন,
– বড্ড সুখে আছো মনে হচ্ছে রেমান?
বিলাল থমকালেন।চারুলতার উপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে তাকালেন বাদশাহর উদ্দেশ্যে।
– হুম।আছি তো।হিংসা হচ্ছে বোধ করি কায়সারের?
মৃদু হাসলেন বাদশাহ। দাড়িতে আঙুল চালিয়ে আয়েশী ভঙ্গিতে সোফায় হেলান দিয়ে বললেন,
– অধিক শোকে মানুষ যেমন পাথর হয়ে যায়,তেমনি তুমি অধিক আতঙ্কে অনুভূতিহীন হয়ে পড়েছ দেখছি।
পাল্টা হাসির ঝলক উপহার দিলেন বিলালও।
– অবশ্যই।কায়সার সাম্রাজ্যের পতন উপলব্ধির আনন্দে খানিক বিহ্বল হয়ে পড়েছিই বৈকি।
– পতন?তাও আবার আমার এই দুর্বোধ্য সাম্রাজ্যের?
– দুর্বোধ্য,নাকি দূর্বল? তা প্রমাণ হবে খুব শীঘ্রই।
– শুধুমাত্র নীলাদ্রি রেমান নীলের নিথর দে*হ উপহার দেয়ার নেশায় তোমায় এখনো জীবিত রেখেছি।
বাঁকা হাসি ফুটলো বাদশাহর অধরে।বিলাল দৃঢ় কন্ঠে জানালেন,
– আমার ছেলে ঘাটে মাঠে লুটিয়ে থাকা ঘাসফুল নয় যে তাকে মাড়িয়ে দেবে।সে কণ্টকাকীর্ণ গোলাপ,যত চেপে ধরবে,তত বেদনায় জর্জরিত হবে।
– তোমার ছেলে?
সামনে ঝুঁকলেন বাদশাহ।তার দৃষ্টিজুড়ে এক অদ্ভুত আবহ।বিলাল সেই আবহে মেলালেন নিজের বরফ কাঠিন্য।
– হ্যাঁ,আমার ছেলে।
– উহুম…আমার সৃষ্ট হাতিয়ার!
– আমার সন্তান।
কারো নিকট জড়োবস্তু অ*স্ত্র,কারো নিকট আবার আপনের চাইতেও আপন।এ কেমন দোলাচল?এমন ভাবনাই চলতে থাকলো আশেপাশে উপস্থিত গার্ডদের মস্তিষ্কজুড়ে। চারুলতার কন্ঠস্বর প্রগাঢ় চিন্তনে ছেদ ঘটালো।
– আপনার হাতিয়ারই না আবার আপনাকে গুঁড়িয়ে দেয় বাদশাহ কায়সার!আপনার পা চাটা কুকুর এই এলো বলে…
– স্যার!
চারুলতার বাক্য সমাপ্ত হতেই দরজা খুলে গেলো সশব্দে।ওপাশে দন্ডায়মান আকাশ।হাঁপাচ্ছে সে, ঘামে সিক্ত তার সর্বাঙ্গ।চিন্তিত হয়ে উঠলেন বাদশাহ,
– কি হয়েছে?
– জানিনা।
– জানোনা মানে?
– উপরে কিছু একটা হচ্ছে।কিন্তু সেখানে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ।
– মানে কি?যোগাযোগ করছোনা কেনো?
– পুরো ভবনের সিসিটিভি সিস্টেম ডাউন।জেনারেটরের ভোল্টেজ তলানিতে।সিগন্যাল পাচ্ছেনা কেউই। জ্যামার দিয়ে জ্যাম করে রাখা হয়েছে।বাইরের জগতের সঙ্গে কোনোপ্রকার যোগাযোগ সম্ভব নয়।
তৎক্ষণাৎ নিজের ফোন বের করলেন বাদশাহ।আকাশের কথা সত্যি।তার ফোনে কোনো সিগন্যাল নেই।ইন্টারনেট এবং সিম কোম্পানি দুটোই ডাউন।তরঙ্গ খেলে গেলো তার অন্তরে।
– ঐযে।তুফান এলো বলে!
তাচ্ছিল্যের হাসি তুলে বিড়বিড় করলো চারুলতা।ঠিক তখনি একটি প্রকম্পনে কেঁপে উঠল সমস্ত স্থাপনা।যেন ভূ কম্পন!বৈদ্যুতিক বাতিসমূহ জ্বলতে নিভতে লাগলো,কয়েক মুহূর্তে স্থির হলো লো ভোল্টেজে। ধোঁয়াটে কুয়াশার উৎপত্তি ঘটলো বাইরের করিডোরে।আকাশ অজান্তেই দরজা আটকে ভেতরে চলে এলো।সকলেই হতবাক।কি হচ্ছে বোঝার জো নেই।
ধাম ধাম!
প্রচণ্ড দুটি শব্দ।তারপরই দরজাটি উপড়ে এলো, ছিটকে পড়লো সামনের মেঝেতে। আঁধার ধোঁয়াশায় দৃশ্যমান হলো হিটম্যান নিহাদের সুদর্শন মুখাবয়ব। মুক্তোদানার ন্যায় দাঁতে এক ঝলক হাসি উপহার দিলো সে বাদশাহ কায়সারকে।
– হ্যালো স্যার!ইউ মিসড মি? আই মিসড ইউ সো মাচ!
কিন্তু তার মাঝে ভ্রুক্ষেপ করবার সময় বাদশাহ পেলেন না।নিষ্পলক চেয়ে লক্ষ্য করলেন নিহাদের ঠিক পিছনে ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হওয়া দানবীয় র*ক্তস্নাত অবয়বটিকে।প্রবেশ করলো সে ভেতরে।তার অস্তিত্ব থেকে নির্গমনরত অমানিশার শৃংখল যেন আবদ্ধ করে ফেললো সকলের অন্তর।জমিয়ে দিলো উপস্থিতি পরাশক্তি দাসেরা।
মুখোমুখি হলো ক্রীতদাস,তার প্রভুর।ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে প্রমাণ করলো প্রভুর চাইতেও দাসের আতঙ্ক কতটা ভীতির উৎপত্তি ঘটায় হৃদয়ে।এগোনোর দুঃসাহস করছেনা কেউই,কেউ না!
– আস….মান?
ভেঙে ভেঙে উচ্চারণ করলেন বাদশাহ।চেয়ে রইলো নির্বিকার হিমালয়।পরমুহুর্তেই নিজের মাস্কটি খুললো এক টানে।উন্মোচন করলো বিভীষিকা।হতভম্ব হয়ে চেয়ে রইলেন বাদশাহ,ওই চাঁদের কলঙ্কের দিকে।হিমশুভ্রতায় এমন দাগ পড়েছে তা তার গত ছিলোনা।নিজের মাঝে অদ্ভুত এক অনুভূতি অনুভব করলেন, ঠিক বিষাদ নাকি ঘৃণার? জানা নেই।
– নাবিলকে খতম করেছি তাই পিতার অন্তর জ্বলেছে, ক্রোধে উন্মত্ত হায়েনাতে রুপান্তরিত হয়েছে সে।
বজ্রধ্বনির বিপরীতে হতবিহ্বল চাহুনি।
– আমাকে হটাতে মরিয়া হয়েছেন,উন্মাদ বনে গিয়েছেন পুত্রশোকে।
– আসমান আমি…
এক পা এগোলো আসমান।উপস্থিত সকলে হতবাক হয়ে চেয়ে রয়েছে দৃশ্যপটে।বরফের মতন স্থির প্রত্যেক অবয়ব।
শীতলতা মুহূর্তের জন্য দূরীভূত হলো,হিমালয়ের আঁধার খচিত গহ্বরে ফুটলো টলটলে প্রবাহ। নয়নসমুদ্রমাঝে জোয়ার উঠলো উর্মীমালার।বাকরুদ্ধ দৃষ্টিপাত করে রইলেন বাদশাহ।
– আমাকে কোনোদিন এভাবে ভালোবাসলেন না কেনো…. মাস্টার?
নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না বাদশাহ,তার কর্ণকুঠরে আ*ঘাত হেনেছে এই প্রশ্ন ভীষণভাবে।ধপ করে সোফায় বসলেন,ক্রমশ অশ্রুপূর্ণ হওয়া নয়ন মেলে বাক্যহীন স্তব্ধ চেয়ে রইলেন। আরো এক পা এগোলো তার মৃত্যুদূত, উপচে পড়া অস্থির তার দৃষ্টি।
ডার্কসাইড পর্ব ৩৩
– আপনি কেনো আমার বাবা নন?আপনি কেনো আমার মাস্টার?উত্তর কি পাবো আমি আর কোনোদিন?
উত্তর নেই।
উত্তর হয়না।
উত্তর বিলীন।
উত্তর নি*হত।
………………….উত্তর অস্তিত্বহীন।
