তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ৩৭
ফারহানা নিঝুম
সূর্যের কোমল আলো ধীরে ধীরে জানালার ফাঁক গলে ঘরে ঢুকে পড়ছে হলুদ আভায় ভরে যাচ্ছে প্রতিটি কোণা। পাখিরা গাছে গাছে ডেকে উঠছে সুরে সুরে, তাদের ডানার ছায়া মাটির উপর নাচছে হাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে। বাতাসে কুয়াশার শেষ কণা ভেসে বেড়ায়, যেন রাতের অবশিষ্ট চুমু।দূরের রাস্তায় মানুষের চলাফেরা শুরু হয়েছে, কিন্তু হইচই নয় একটা শান্ত, ছন্দময় গতি।
কিছু ঘর থেকে ভেসে আসছে ধোঁয়া-ওঠা চায়ের গন্ধ, কারো রান্নাঘর থেকে কষানো মসলার গন্ধে ভরে উঠছে চারপাশ।আকাশটা স্বচ্ছ নীল, মেঘের তুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা যেন।গাছের পাতাগুলোও যেন হাসছে রোদের ছোঁয়ায়, শিশির কণাগুলোতে সূর্যের আলো ঠিকরে পড়ছে হীরের মতো।
রুবেনা শেখ ঠায় বসে আছেন সোফায়। সৌহার্দ্য এরকম আচরণ করবে তা মোটেও আশা করেন নি তিনি। নিজের ছেলের মতোই ভালোবেসে বড় করেছেন। রাইমা শেখ যতটা তার ছেলেকে ভালবাসে ঠিক ততটাই রুবেনা শেখ ভালোবাসে। কিন্তু সেই ছেলে তাদের সঙ্গে এমন করলো।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মিনিট দশেক আগেই সৌহার্দ্য কে ফোন করেছে তাশফিন,ফোন রিসিভ করতেই রুবেনা শেখের হাতে ধরিয়ে দিলেন। স্নেহার সাথে তার বিয়ের কথাটা বলতেই তেতে উঠল সৌহার্দ্য।
“তুমি ভাবলে কি করে চাচী আমি ওর মতো মেয়ে কে বিয়ে করব? তাও এখন তো সেই অবস্থাও নেই ওর!”
কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলেন রুবেনা শেখ, বিস্ময় নিয়ে বললেন।
“কি বলছিস এগুলো সৌহার্দ্য? স্নেহা খুব ভালো মেয়ে।”
ক্ষিপ্ত হলো সৌহার্দ্য, চেঁচিয়ে উঠলো সে।
“তো কি করব? বেশী ভালো বলেই আজকে এই অবস্থা! মায়ের কাছে ফোন দাও আমি মায়ের সাথে কথা বলব।আর চাচী তোমাদের আমি রাইট দেইনি আমার জীবনের সিন্ধান্ত নেবে।”
রাইমা শেখ সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনিও সৌহার্দ্যের সঙ্গে স্নেহার বিয়ে দিবেন না।আলাফ শেখ চাইলেও কিছু করতে পারেন নি। যেখানে ছেলেই বিয়ে করবে না বলে জানিয়েছে সেখানে উনি আর কি বা করবেন?
নিস্তব্ধ দুপুর। চারদিকে এক ধরণের থমথমে নীরবতা। আকাশটা ঘন কালো মেঘে ঢাকা যেন কেউ তুলোর মতো মেঘগুলোকে গুছিয়ে রেখে একসাথে জড়ো করে দিয়েছে। সূর্যের আলো আর নেই, কেবল ছায়া আর আঁধারের খেলা। বাতাস থমকে গেছে, গাছে পাখিরা নীরব শুধু মাঝে মাঝে হালকা করে পাতা কাঁপছে, যেন প্রকৃতি নিজেই নিঃশব্দে প্রস্তুতি নিচ্ছে এক প্রবল বর্ষণের।পৃথিবীটা যেন নিঃশ্বাস ধরে আছে। চারদিকের রং ধূসর হয়ে এসেছে, কুয়াশার মতো একটা অনুভূতি। যে কোনো মুহূর্তে বৃষ্টি নেমে আসতে পারে টুপটাপ করে ছাদের টিনে এবং মাটির ভেজা গন্ধ মিশে যাচ্ছে বাতাসে। একটা গভীর প্রশান্তি আর এক চিলতে অজানা অপেক্ষা মিশে আছে এই মুহূর্তে।টুপ টুপ শব্দ করে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছে ধীরে ধীরে।
“বড় আব্বু আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।”
কন্ঠস্বর গম্ভীর,তাশফিন কে বেশ গম্ভীর মনে হচ্ছে। জয়নাল আহমেদ কিঞ্চিৎ অবাক হলেন।কি কথা বলবে তাশফিন? সকাল বেলা রুবেনা শেখ এবং সৌহার্দ্যের কথোপকথন জানতে পেরেছেন তিনি।তিনি তো আগেই জানতেন সৌহার্দ্য কখনোই স্নেহা কে বিয়ে করতে রাজি হবেন না।উনার তাতে কোনো দুঃখ নেই, কিন্তু তার মেয়েটাকে সবাই আকারে ইঙ্গিতে এবং কি প্রকাশ্যে খারাপ মন্তব্য করে চলছে যা মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
“কি বলবে তাশফিন? কোনো জরুরি কথা?”
“জি বড় আব্বু, আপনি আসুন।”
রুমের দিকে এগিয়ে গেলো তাশফিন, জয়নাল আহমেদ ধীরে ধীরে যেতে লাগেন। হঠাৎ করে কি এমন বলবে তাশফিন যে আলাদা ভাবে ডেকে নিয়ে গেছে!
উপস্থিত সবাই চিন্তিত মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে। ফারাহ হাত কচলাতে লাগলো এটা তার বরাবরের স্বভাব।কি হয়েছে জানা নেই।তবে তার কমান্ডারের উপর এটুকু ভরসা আছে। সৌহার্দ্য যে এমন তা ফারাহ কল্পনা করতেও পারেনি। ইতিমধ্যেই নবীন কে কোথায় একটা পাঠিয়েছে সে। তবে বলেনি কোথায় পাঠিয়েছে!
“ফারাহ তুমি কি জানো ভাইয়া কি বলবে?”
নূপুরের কথা শুনে ভিমড়ি খেল ফারাহ,এই লোকটা তো তাকে কিছুই বলে না।মলিন মুখ করে প্রত্যুত্তরে বলল।
“না আপু আমি কিছুই জানি না।”
নূপুর হতাশ হলো। ঝুমুর এসে বলল বাইরে সাইফুলের গাড়ি দেখেছে।
সাইফুল এসেছে মিনিট দশেক হলো, সেই সবচেয়ে লেইট হয়েছে আসতে। নূপুর অনেক বার জিজ্ঞেস করেছে তারই কেনো সব কিছুতে দেরি হয়!মাহির কাঁদছে কখন থেকে,বাবার কোলে যাবে বলে অথচ সাইফুল এসে থেকেই ফোনে কথা বলে যাচ্ছে।
“সাইফুল তোমার প্রবলেম টা কোথায়? সবসময় এরকম বিহেভ করছো কেন?”
রাগান্বিত স্বরে বলল, নূপুর।তেতে উঠল সাইফুল।
“সো হোয়্যাট?কি করব হ্যাঁ? সারাদিন কি বাড়িতে বসে বসে তোমাদের সাথে আড্ডা দেব?লিসেন নূপুর আমার অনেক কাজ থাকে বুঝতে পেরেছো?”
নূপুর সাইফুল কে একদম চিনতে পারছে না।কি করে একটা মানুষ এতটা বদলে যেতে পারে?
“মাহির কখন থেকে তোমার কাছে আসবে বলে কাঁদছে।”
চেঁচিয়ে উঠলো সাইফুল।
“তোমার দায়িত্ব ছেলে কে সামলানো নূপুর।ফর গডস সেক একটু ফোনে কথা বলতে দাও। যাও এখান থেকে।”
নূপুর মাহির কে নিয়ে বেরিয়ে গেল, রাগে দুঃখে সপাটে একটা থা’প্পর বসিয়ে দিল মাহিরের গালে।
“নূপুর কি হচ্ছে টা কি?”
চিরচেনা কন্ঠস্বর।নিহাল কে থমকে যায় নূপুর। মাহির উচ্চ স্বরে কেঁদেই চলেছে।নিহাল কে দেখা মাত্রই তার কাছে চলে যায়।
নিহাল কোলে তুলে নেয় মাহির কে, হেঁচকি উঠে গেছে ছেলেটার।পকেট থেকে বের করে দিলো দুটো ডাই মিল্ক চকলেট।এতেই গদগদ মাহির।
“কি হচ্ছে এসব নূপুর? পাঁচ বছর মাহিরের! তুমি ওকে এভাবে..
নূপুর অপরাধী কন্ঠে বলল,
“রাগ উঠে গিয়েছিল। তাই হঠাৎ করে..
“হঠাৎ করে মে রে দিলে! এটা কোনো কথা? ”
নূপুর অনুশোচনায় দগ্ধ, কিন্তু বুঝতে পারছে না হঠাৎ নিহাল এখানে কেন!যদি নিহাল এখানে থাকে তাহলে তো অবশ্যই আরিয়ান আসবে।
“কিন্তু নিহাল ভাইয়া আপনি এখানে কেন?”
মাহির কে নামিয়ে দিতেই সে ছুটে গেল।নিহাল বলে উঠে,
“আসলে তাশফিন আমাকে আর আরিয়ান কে এখানে ডেকেছে।”
“কিন্তু কেন?”
“চমক আছে তাই।”
শেষের কথাটি রহস্যে মুড়িয়ে বলল নিহাল। নূপুর কিছুই বুঝতে পারছে না।কি হচ্ছে আসলে?খট শব্দ করে ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন জয়নাল আহমেদ এবং তাশফিন শেখ। উপস্থিত সবাই উদগ্রীব হয়ে আছে জানার জন্য। সবাই কে অবাক করে দিয়ে জয়নাল আহমেদ শান্ত কন্ঠে বললেন,
“বিয়ের সব কিছু তৈরি করো,আজকেই স্নেহার বিয়ে হবে।”
চমকে উঠে সবাই, আঁতকে উঠলেন শায়লা আহমেদ। তড়িঘড়ি করে এগিয়ে এসে বললেন,
“আজকেই বিয়ে?কার সাথে? ছেলে কে?”
রুবেনা শেখ এবং রিজুয়ান শেখ দু’জনেই অবাক।তারাও বিস্মিত হয়ে শুধোয়,
“হ্যা ভাইজান কে ছেলে?”
রাইমা শেখ অবাক নেত্রে তাকিয়ে আছেন,কোন ছেলে বিয়ে করবে এই মেয়ে কে?
“আরিয়ান। আরিয়ান আর স্নেহার বিয়ে।”
তাশফিনের মুখে উত্তর শুনে বিস্ময়কর তৈরি হয় সবার মাঝে। আরিয়ান? নূপুর আড় চোখে তাকায় নিহালের দিকে, হয়তো নিহাল তার দিকেই তাকিয়ে ছিলো। বাঁকা হাসলো সে।
ছোট পরিসরে, নীরবতা মোড়ানো এক বিকেলের বুকে স্নেহা আর আরিয়ানের বিয়ে সম্পন্ন হলো। অতিথিদের কোলাহলহীন উপস্থিতি, মৃদু গুঞ্জন, আর ধূপের গন্ধ মিলে যেন এক গভীর গোপনতার আবরণে ঢাকা পড়ে রইলো সেই মুহূর্ত।ছোটখাটো বিয়ের অনুষ্ঠান, খয়েরি রঙের লেহেঙ্গা পড়েছে স্নেহা। চুপচাপ সে,মুখে কোনো কথা নেই তার।তাশফিনের এক কথায় বিয়েতে রাজি হয়েছে সে, কোনো কথা বলেনি।তাদের বিয়ে যেন আড়ম্বরহীন এক প্রতিজ্ঞা জীবনের ঘূর্ণিতে দু’জন মানুষ হঠাৎ করেই এক ছায়ার নিচে এসে দাঁড়িয়েছে। অথচ আশেপাশের সবাই যেন বিস্মিত তাশফিনের নাম উঠে আসে ফিসফিসে কথোপকথনে।তাশফিন ওর আর স্নেহার বিয়ে হলো!তা কেউই মেনে নিতে পারছে না।
বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হতেই বর আর কনে কে আলাদা ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।ছোটরা চেপে ধরেছে আরিয়ান কে রীতিমতো।
“আরিয়ান ভাইয়া এটা কিন্তু ঠিক নয়, আপনি বিয়ে করতে এসেছেন আমার বোন কে অথচ আমিই জানলাম না!”
ফারাহর কথায় সায় জানালো ঝুমুর।
“হ্যা একদম।এটা কিন্তু ঠিক হলো না আরিয়ান ভাইয়া।”
বেচারা আরিয়ান পড়ে গেল বিপাকে।সে কি আর জানতো তাশফিন তাকে এখানে ফোন করে আনিয়ে বিয়ে দিয়ে দেব।মানলো তার কেউ নেই তাই বলো এত বড় ধোঁকা! কাঁদো কাঁদো ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে আরিয়ান। আগমন ঘটে তাশফিনের।টান টান ভঙ্গিতে দাঁড়ালো।
“ব্রো ফিলিংস কেমন?”
আরিয়ান পারছে না কেঁদে দিতে, কিন্তু এখানে থাকলে তার মান ইজ্জত থাকবে না।মুখ কুঁচকে তাকিয়ে আছে ফারাহ, চোখাচোখি হয় দু’জনের। অকস্মাৎ সবার সামনে কুঁচকে থাকা নাক টা টেনে দিল তাশফিন। তেতে উঠল ফারাহ।
“লাগছেন কেন?”
হেসে ফেলল তাশফিন, সে বেশ বুঝতে পারছে প্রিয় তমার রাগটুকু। অকস্মাৎ তার ওড়না আঙ্গুলে পেঁচিয়ে ফারাহ কে নিয়ে যেতে লাগলো। থতমত খেয়ে গেল বাকিরা। নূপুর চিৎকার করে পিছু ডাকলো।
“আরে ভাইয়া ফারাহ কে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো?”
“পাঁচ মিনিট পর আসবে..
ফারাহ কে জোরপূর্বক নিয়ে এলো তাশফিন।ফারাহার চোখে জ্বলছে অভিমান আর ক্রোধের শিখা। ঠোঁট দুটো শক্ত করে এক রেখায় চেপে রেখেছে সে একটুও কথা বলবে না, এই দৃঢ় সিদ্ধান্তে অনড়। তাশফিন তার পাশে দাঁড়িয়ে, চুপচাপ। মুখে কোনো কথা নেই, চোখে একরাশ অপরাধবোধ আর অনুচ্চারিত অনুভব।তাশফিন জানে, ফারাহ কেন এতটা অভিমানী হয়ে আছে। তার মনে হয় প্রিয় মানুষটির মন বুঝতে না পারলে, জীবনের সব যুদ্ধই বৃথা। কিন্তু সব কথা বলা যায় না, কিছু কথা থেকে যায় দায়িত্বের সীমারেখায়।ফারাহ পিছন ফিরে তাকায় না, তাকালেই চোখে জল এসে যাবে সে জানে। আর তখন তাশফিনের নীরবতাই সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেবে।
হঠাৎ করেই তাশফিন ফারাহর পেছনে এসে দাঁড়ায়। তার বুকের গভীর থেকে নিঃশব্দ একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে, যেন হাজারো অজানা কথা এক মুহূর্তে হারিয়ে যাচ্ছে বাতাসে। কোনো পূর্ব সূচনা না দিয়েই, সে ফারাহকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।ফারাহ কেঁপে ওঠে। রাগ, অবিশ্বাস আর ভালোবাসা সব মিশে এক অদ্ভুত অনুভূতির সৃষ্টি হয়। তাশফিনের হাতের স্পর্শে তার সমস্ত অভিমান এক পলকে নরম হয়ে আসে। কিন্তু মুখে সে কিছুই বলে না। জবাবহীন ভালোবাসা যেন আরও গভীর হয়ে ছড়িয়ে পড়ে দুইজনের নিঃশব্দ হৃদয়ে।ফারাহর দুচোখ জলে ভরে এসেছে, কিন্তু সে চায় না তাশফিন তা বুঝুক। অভিমানী মনটাকে আঁকড়ে ধরে আছে সে, তবু বুকের ভেতরে কোথাও একটা কাঁপন লেগে গেছে তাশফিনের স্পর্শে।নিঃশব্দে তাশফিন তার পাশে এসে দাঁড়ায়। একটুও না বলেই, ধীরে ধীরে ফারাহর কনিষ্ঠ আঙুলে নিজের আঙুলটা ছুঁয়ে দেয় সে। যেন সেই ছোঁয়াতেই বলে দেয়,
“তুমি আমার, সবসময়।”
আঙ্গুলের সেই মৃদু আদরে ফারাহর ভিতরটা ভেঙে পড়ে। সে আর নিজেকে সামলাতে পারে না। চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে গালে, কিন্তু মুখ ঘুরিয়ে রাখে তাশফিনের দিক থেকে।তাশফিন জানে, এই মেয়েটার হৃদয়টা কতটা নরম, কতটা ভাঙে তার কথায়, আবার গলে যায় একটু আদরে। ফারাহ জানে, লোকটা হুট করে কষ্ট দেয়, আচমকা দূরে সরে যায়, আবার হঠাৎ একটু আদর করে ভুলিয়ে দেয় সব কষ্ট।
“আপনি একটুও ভালো নন কমান্ডার। সবসময় এমন করেন।”
“কেমন করি?”
নে’শাতুর কন্ঠে শুধোয় তাশফিন। ফারাহ অভিমানী হয়ে বলল,
“যখন ইচ্ছা ফেলে চলে যান আবার ফিরে আসেন। কিছু বলেন না,সব কিছু গোপন করেন।”
কাঁধে থুতনি ঠেকিয়ে রাখলো তাশফিন, অকস্মাৎ চুমুতে ভরিয়ে দিল সে।ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে উঠছে ফারাহ।তাশফিন আরো খানিকটা গভীর স্পর্শে ছুঁয়ে দেয় তার সুখ কে।
“সুখ?”
“জি।”
বাধ্য মেয়ের মত জবাব দিয়ে দেয় ফারাহ, পরক্ষণেই জিভ কা টে। নৈঃশব্দ্যে হাসলো তাশফিন, ফিসফিসিয়ে হাস্কিটুনে বলল,
❝”ভালোবাসি সুখ।”❞
বিদ্যুৎ বেগে কেঁপে উঠলো ফারাহ। এভাবে তো সে কখনোই বলেনি ভালোবাসি? লজ্জায় আড়ষ্ট হয় সর্বাঙ্গ। নত হয় মস্তক।
“এবার চুমু খাও।”
সরাসরি এরকম চুম্বনের প্রস্তাবে আরেক দফা চমকে উঠে ফারাহ। দু কদম পিছিয়ে গিয়ে বলে উঠে।
“ছিহ্ লেফটেন্যান্ট সাহেব আপনি তো ভারি অসভ্য!”
চোখ ছোট ছোট করে তাকালো তাশফিন। আচানক কোমর টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে ফারাহ কে।রুক্ষ স্বরে বলে উঠে।
“পাঁচ পর্যন্ত গুনব,এর মধ্যে চুমু না খেলে পরের টার্ন কিন্তু আমার।”
ভড়কালো ফারাহ,আমতা আমতা করে সে।
তাশফিন নিমিষেই বলে উঠে।
“এক,দুই… পাঁচ।”
কথাটা বলেই ওষ্ঠো জোড়া আঁকড়ে ধরে তাশফিন। আঁখি পল্লব বুঁজে নিল ফারাহ। চিটিং করলো কমান্ডার? এক দুই বলল শুধু বাকি গুলো তো বলে নি!
তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ৩৬
ওষ্ঠো ছেড়ে গলদেশে হামলে পড়ে তাশফিন। তার আচানক এমনতর স্পর্শে সর্বাঙ্গ যেন স্রোতে ভেসে যাচ্ছে ফারাহর।
গভীর নিঃশ্বাস ফেলে হাঁপাতে হাঁপাতে ফিসফিসিয়ে বলে উঠে ফারাহ।
“চিটার লেফটেন্যান্ট সাহেব।”
“উঁহু , ওয়াইল্ড লেফটেন্যান্ট।”