তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ৫০

তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ৫০
ফারহানা নিঝুম

পৃথা খুব অসুস্থ,নিহাল সকাল সকাল তাকে দেখতেই গিয়েছে। বাড়িতে কেউ নেই,তার চাচা চাচী সেই ছেলেটাকেই দেখতে গিয়েছে, যার সাথে পৃথার বিয়ে ঠিক করেছে।
ঘরে ঢুকেই দেখল বসার ঘরে এলোমেলো ভাবে বসে আছে পৃথা। চোখ মুখ কেমন শুকিয়ে গেছে মেয়েটার। মেয়েটা নিজের বড্ড অযত্ন করে। আচ্ছা নিহাল কেন পারছে না তাকে ভালোবাসতে? কেন পারছে না একটুখানি মনে জায়গা দিতে?
দরজায় কড়া নাড়তেই হকচকিয়ে উঠে বসলো পৃথা। চোখের সামনে নিহাল কে দেখে পিলে চমকে উঠে তার।

“আপনি? আপনি এখানে?”
নিহাল উপর নিচে মাথা দোলায়। জ্বরদগ্ধ শরীরে উঠে দাঁড়ালো পৃথা। চওড়া হেসে বলে।
“ভেতরে আসুন।”
ধীর পায়ে ভেতরে প্রবেশ করলো নিহাল, সূক্ষ্ম নিঃশ্বাস ফেলে শুধোয়।
“চোখে মুখে এমন অবস্থা কেন? শুনলাম জ্বর এসেছে?”
নিহালের কথায় ভড়কালো পৃথা। শুকনো ঠোঁট জোড়া আলতোভাবে ভিজিয়ে বড় আবদার করে বলল।
“আমার একটা আবদার আছে,রাখবেন?”
ভ্রু বাঁকালো নিহাল। সন্দিহান কন্ঠে শুধোয়।
“কি আবদার?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

পৃথা নিজেদের মধ্যে দূরত্ব ঘুচিয়ে সাহস করে হাতটা ধরে নিহালের।‌ অশ্রুসিক্ত নয়নে ফিসফিসিয়ে বলল।
“আমাকে বিয়ে করবেন নিহাল? আমার বিয়ে ঠিক হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি যে আপনি ছাড়া কাউকে কল্পনা করতে পারি না। আমার ভীষণ দম বন্ধ লাগে। প্লিজ আমাকে বিয়ে করে নিন। আমি কখনো স্ত্রীর অধিকার চাইব না, শুধু আপনার সাথে থাকতে চাই।‌ আপনার আশেপাশে থাকতে চাই।”‌
কর্ণ গোচরে বাক্য গুলো স্পর্শ করা করা মাত্র ছিটকে দূরে সরে এলো নিহাল।
“মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোমার? কি আজেবাজে কথা বলছো? ”
“প্লিজ প্লিজ আপনি আমাকে বিয়ে করে নিন। আমি কথা দিচ্ছি কখনো আপনার কাছে ভালোবাসা চাইবো না।”
নিহাল আশ্চর্য হচ্ছে, শরীর কাঁপছে তার প্রচন্ড রাগে। কিড়মিড়িয়ে বলল।
“আমার ভুল হয়েছে এখানে আসা। আমার মোটেও আসা উচিত হয়নি।”
কথাটা তীরের ফলার মতো বুকে এসে বিঁধে পৃথার। কিন্তু নিহাল তা দেখে না। রাগ নিয়ে বেরিয়ে গেল দরজা থেকেই।
ফ্লোরে বসে হো হো শব্দে কেঁদে উঠে মেয়েটা। এক তরফা ভালোবাসা গুলো এত কষ্টের হয় কেন?

গাড়ি চলছে আপন গতিতে অবিরাম, অকুতোভয়ে।
পথের ধারে জমে থাকা ধুলোবালি ।চাকা ঘূর্ণায়মান, বাতাসে উড়ে যাচ্ছে ধুলোর পরত, পেছনে রয়ে যাচ্ছে অস্পষ্ট এক স্মৃতি মাখা রেখা।জীবনের মতোই, এই চলার মাঝে কোথাও কোনো থেমে থাকার নাম নেই।আকাশে সূর্য যেন এক নীরব সাথি, তার আলোয় গাড়ির ধাতব গায়ে পড়ছে সোনালি ঝিলিক। চারপাশে নীরব প্রকৃতি, মাঝে মাঝে এক-আধটা পাখির ডাক, আর রাস্তায় সেই গাড়ির একটানা গতিতে। কোথায় যাওয়া হচ্ছে জানা নেই ফারাহর। এই তো সকালের খাবার শেষ হতে না হতেই তাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে তাশফিন।বলছেই না কোথায় যাচ্ছে?

“আপনি কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে?”
“জাহা’ন্নামে!”
তাশফিনের প্রত্যুত্তর শুনে ঘাবড়ে গেল ফারাহ।
“একটু ভালো করে কথা বলতে পারেন না?এমন করেন কেন?”
“কাছে আসো এত ভালো করে কথা বলব যে কেঁদে ফেলবে!”
মুখখানি চুপসে গেল ফারাহর, মিনমিনে গলায় বলল।
“সদা এমন করেন কেন আপনি?”
ভ্রুদ্বয় কুঞ্চিত করে তাকালো তাশফিন, প্রশ্নবিদ্ধ চোখে শুধোয়।
“কেমন করি?”

প্রত্যুত্তরে কিছু বললো না ফারাহ,চুপটি করে বসে রইল। কোথায় যাচ্ছে তা জানা নেই কিন্তু যেতে যেতে এই সফরটা তো একটু উপভোগ করাই যায়। জানালার কাচ নামিয়ে দিলো ফারাহ। স্বচ্ছ আকাশ টা তার সামনে ভেসে উঠেছে।কি সুন্দর চারিদিকটা। সারি সারি গাছপালা পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে তারা।
“উফ্ কিছু না করাতেই খালি বলে এমন করি! কিছু করলে তো রক্ষা থাকবে না।”
কথাটা বলেই চোখ টিপে তাশফিন। লজ্জা পেয়ে গেল ফারাহ। খুব বেফাঁস কথা বলে দুষ্টু কমান্ডার তার।

সাইফুল বেঁচে নেই খবরটা ইতিমধ্যেই শেখ বাড়িতে ঝড় তুলেছে রীতিমতো। স্তম্ভ হয়ে বসে রইলো নূপুর। নিঃশ্বাস যেনো বন্ধ হয়ে আসছে তার।নিহাল এসেছে কিয়ৎ সময় পূর্বে।তাশফিন নিজেই বলেছে তাকে এসে সবটা বলতে এবং পরপরই যেনো নূপুর কে সামলায়। তাকে সামলানোর দায়িত্ব তার।
নিজের স্বামী কে নিজ হাতে শাস্তি দিয়েছে তারই ভাই।
“কেনো এসব করেছে তাশফিন ভাইয়া ?”

নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে রুবেনা শেখের।নিহাল একে একে সবটা বললো। কিভাবে সাইফুল সৌহার্দ্যের সাহায্যে অস্ত্র পাচা’র করেছে এত বছর ধরে।শুধু এসব নয় আরো অনেক খারাপ কাজকর্মের সাথে যুক্ত সে। এবং কি সে ফারাহর সাথে ঠিক কি করেছে। কোনো কিছুই আর শুনতে পারছে না নূপুর, চটজলদি উঠে ছুটে চলে গেল নিজ কক্ষে,দরজাটা বন্ধ করে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল তৎক্ষণাৎ।চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে অবাধ অশ্রু কণা।কাকে ভালোবেসেছিল সে?এমন একটা নিষ্ঠুর মানুষ কে যে কিনা তার কথা বাদ দিক,তার ছোট্ট বাচ্চাটার কথাও ভাবেনি! বুকের ভেতর টা হো হো করে কেঁদে উঠলো নূপুরের।গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে উঠে সে। ড্রয়িং রুমে বসে থাকা প্রতিটি সদস্য কেঁপে উঠলো তার কান্নায়। চমকালো নিহাল।রুবেনা শেখ, রিজুয়ান শেখ উপরের দিকে যেতে চাইলে বাঁধা প্রধান করে সে।

“আপনারা যাবেন না কেউ, কাঁদতে দিন ওকে।বুক ভার হয়ে আছে।একটু কাঁদলে চোখের পানির সাথে সাথে ভেতরের কষ্ট গুলো বেরিয়ে আসবে।”
“আমার মেয়েটার সাথে এমন না হলেও পারতো।”
হো হো করে কেঁদে উঠলেন রুবেনা শেখ
স্ত্রীর কান্নায় বুকে ব্যথা অনুভব করছে রিজুয়ান শেখ। হঠাৎ করে কি হয়ে গেলো তাদের পরিবারের সাথে?

ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি পড়ছে বাইরে, অবস্থা খুব একটা ভালো নয়।বাইরের ঝড় কিছুই নয় নূপুরের মনের ঝড়ের থেকে! ছোট্ট মাহির কে বুকে জড়িয়ে চুপচাপ বসে আছে সে। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটার সাথে সাথে নিজের চোখের পানি টা পড়ছে টপটপ করে।
ঠকঠক আওয়াজ হতেই চমকে উঠে নূপুর।বসে থাকা মাহির চট করে গিয়ে দরজাটা খুলে দিলো।
“আঙ্কেল।”
নিহাল কে দেখেই কোলে উঠে গেল মাহির। মৃদু স্বরে হাসলো নিহাল, পেটে সুরসুরি দিয়ে মাহির কে হাসাতে হাসাতে অস্থির করে তুলল।
“আম্মু কোথায়?”

“ভেতরে আছে। জানো আঙ্কেল আম্মু খুব কাঁদছে, আমাকে বলছেও না কেনো কান্না করে?আর বলছে আমার আব্বু নাকি আর কখনো আসবে না!”
বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠলো নিহালের। ছেলেটা নিষ্পাপ, ছোট্ট একটা বাচ্চা।তার তো কোনো দোষ ছিলো না। তবে কেন এমন হলো? কোনো কিছু জানা নেই তার।
“মাহির নিচে নানু আছে উনার কাছে যাও।উনি কিন্তু তোমার জন্য দই এনেছেন।”
দইয়ের কথা শুনে চোখ দুটো চকচক করে উঠলো মাহির
ত্রস্তবেগে ছুটে যায় নিচের দিকে।মলিন হাসে নিহাল
ভেতরে ঢুকে দেখে নূপুর একই ভঙ্গিতে বসে আছে,নিহাল ক্ষীণ দ্বিধা নিয়ে এগিয়ে গিয়ে বসলো তার পাশে।
“নূপুর!”

হকচকিয়ে গেল নূপুর, ফিরে তাকালো ত্বরিতে।চোখ মুখ কেমন ফ্যাকাসে হয়ে আছে তার! দীর্ঘ শ্বাস ফেললো নিহাল।
“জানো জীবনে কিছু কিছু কঠিন মূহুর্ত আসে যখন আমাদের তা সামলে উঠতে সময় লাগে। কিন্তু তারপরেও সেই কঠিন মুহূর্তে আমাদের শক্ত থাকতে হয়
নিজেকে। তুমি যদি এভাবে ভেঙ্গে পড়ো তাহলে মাহিরের কি হবে বলো তো? তুমি সাইফুল কে ভালোবাসো তাই হয়তো ওর জন্য…
“না বাসি না ভালো। আমি ওই শয়’তানের জন্য কাঁদছি না। আমি কাঁদছি মাহিরের জন্য। আমার ছেলেটা যেনো ওমন না হয়।”

চোখে হাসে নিহাল, নূপুরের পাশেই ফ্লোরে বসে পড়ে সে। লম্বা নিঃশ্বাস ফেলে বললো।
“আমি কখনো ভাবিনি সাইফুল এত নিষ্ঠুর একজন মানুষ। এতটা খারাপ এতটা নিচ কখনোই ভাবিনি। ফারাহ আমাদের সবার খুব আদরের। আমি কখনোই ভাবিনি নরপি’শাচ ওর দিকে এভাবে খারাপ নজর দিবে!”
“হুস চুপ যাও, কথা বলো না নূপুর।সবটা ভুলে যাও। ভুলে যাও সেই শ’য়তা’ন কে। ওরকম কেউ তোমার জীবনে ছিলো তাও ভুলে যাও।”
ফিরে তাকালো ঝুমুর, মুচকি হেসে বলল।
“ভুলে গেছি।সেই কখন!”
“কষ্ট হচ্ছে খুব?”
“না আফসোস হচ্ছে খুব।”

দুজনের মধ্যে পিনপতন নীরবতা। অকস্মাৎ সেই নিরবতা ভেঙ্গে নূপুর ফিসফিসিয়ে বললো।
“আচ্ছা আপনি আমার জন্য এখনো একা রয়ে গেছেন তাই না নিহাল ভাইয়া? আপনি আজও আমাকে ভালোবাসেন?”
থমকে রইলো নিহাল।কিছু বলার মতো ভাষা নেই তার।কি করে বলবেন হ্যা আমি আজকেও তোমাকে ভালোবাসি আগামীতেও ভালোবাসবো।
“হয়তো হ্যাঁ।”
নির্বিকার ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছে নূপুর।এতটা ভালোবাসা সেদিন পায়ে ঠেলে দিয়েছিল।আজ বড্ড আফসোস হচ্ছে তার।তবে সে কখনোই চাইবে না তার মতো বোকা, নির্বোধ মেয়ে নিহালের জীবনে আসুক। আসবে কি বলছে? এসে গেছে,পৃথা।‌ মেয়েটাকে দেখেছে নূপুর,নিহাল কে প্রচন্ড ভালোবাসে। কিন্তু নিহাল? সে কেন ভালোবাসে না?
ধ্যাত কি বোকা নূপুর, সে-ই তো কাঁটা হয়ে আছে নিহালের জীবনে।

“অনেকের কি অবস্থা?”
আরিয়ান ফোন করেছে। তাশফিন কে।‌ তাশফিন বাড়িতে থাকেনি,তার কারণ আছে। সে ফেইস করতে পারত না তার বোন কে। অবশ্য এটাও জানে নিহাল, আরিয়ান সবটা সামলে নেবে।
আরিয়ান চিন্তিত কন্ঠে বলল।
“নূপুরের অবস্থা এখন ঠিক আছে। নিহাল সবটা সামলে নিয়েছে।”
স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল তাশফিন।
“আমি খুব শীঘ্রই ফিরব, ততদিন তোরা ওদের খেয়াল রাখিস প্লিজ।”
আরিয়ান নির্বিকার কন্ঠে বলে।
“তুই চিন্তা করিস না,আমরা আছি। আমরা এদিকটা সামলে নেব।”

ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছে। বৃষ্টি নেমেছে সারাদিন ধরে পাহাড়ের গায়ে যেন মেঘ ছুঁয়ে থাকা এক অলস দুপুর। দিগন্তজোড়া সবুজে ভেজা পাহাড়গুলো ঢেকে গেছে ধোঁয়াটে কুয়াশায়, দূরের দৃষ্টিটুকুও আবছা হয়ে আসে বৃষ্টির পর্দায়। ঝরনাধারার শব্দ মিশে গেছে দূরের কোন পাহাড়ি নদীর কলকল ধ্বনিতে প্রকৃতি যেন আজ গভীর প্রেমে মগ্ন।ছিমছাম, কাঠের তৈরি ছোট এক রিসোর্টে উঠেছে তাশফিন শেখ ও ফারাহ। পাহাড়ের গায়ে দাঁড়িয়ে থাকা সেই রিসোর্ট যেন প্রকৃতির বুকের এক নিঃশব্দ আশ্রয়। জানালার কাচের ওপাশে টুপটাপ বৃষ্টির ছোঁয়া, আর ভেতরে উষ্ণ চা আর নিঃশব্দ দৃষ্টি বিনিময়ের মুহূর্ত। চারদিকে পাখির ডাক থেমে গেছে, কেবল ঝরা পাতার শব্দ, আর দূরে কোথাও হারমোনিয়ামের মতো বেজে ওঠে বাতাসের গুঞ্জন।অবাক নেত্রে পল্লব ঝাপটায় ফারাহ।কি সুন্দর চারিদিকটা।
“কি সুন্দর জায়গা লেফটেন্যান্ট সাহেব!”
“পছন্দ হয়েছে?”
“খুউউব।”

মৃদু স্বরে হাসলো তাশফিন।ছোট কাঠের চেয়ারে এসে বসলো ফারাহ।এই যে বসেছে এখন আর নড়বে না সে।এত সুন্দর বৃষ্টি পড়ার দৃশ্য মিস করতে চায় না কোনো ভাবেই!
সাপের মতো গলা পেঁ’চিয়ে ধরে পিছন থেকে তাশফিন। হকচকিয়ে গেল ফারাহ, শুকনো ঢোক গিলে সে।কানের লতিতে আঙ্গুল ছুঁইয়ে নেশাতুর কন্ঠে বলে তাশফিন।
“এখানে তোমাকে নিয়ে আসার কারণ অন্য কিছু মিসেস শেখ। এখানে আমার ভিন্ন রূপটা দেখবে তুমি! আমি যে ভীষণ বাজে, তোমার ধারণার থেকেও বেশী!
ভয়ে মৃদু কেঁপে উঠলো ফারাহর অন্তঃপুর। দু’হাতে চট করে তাকে কোলে তুলে নিল তাশফিন, ভারসাম্য বজায় রাখতে পা দিয়ে আঁকড়ে ধরে ফারাহ তাশফিন কে। ভয়ে আড়ষ্ট হলো সে। এখুনি যদি পড়ে যেতো?

“ক..কি করছেন এসব?”
“করিনি, করব। ভেতরে যাই।”
তাশফিনের লাগামহীন কথায় নিঃশ্বাস আটকে আসছে ফারাহর।
“দেখুন ছাড়ুন আমায়, আমার ভীষণ ভয় করছে আপনাকে।”
“ভয় পাওয়া ভালো মিসেস শেখ।”
কথাটা বলে ভেতরের দিকে পা বাড়ায় তাশফিন। ফারাহ অস্থির কন্ঠে বলে।
“কেউ দেখে ফেললে খারাপ বলবে। দয়া করে ছাড়ুন।”
“কেউ দেখবে না।এখানে কেউ নেই।এই পুরো রিসোর্ট আমি একা বুক করছি।”
চমকে তাকালো ফারাহ। রিসোর্ট টা খুব একটা বড় না তবে তাশফিন একাই বুক করেছে শুনে বেশ অবাক হয়েছে সে।

“প্লিজ ছাড়ুন। আমি বাইরে বৃষ্টি দেখবো।”
তাশফিন ঘোর লাগা কন্ঠে বলে উঠে।
“হেই আগে আমাকে দেখো, আমি তোমাকে দেখে তৃষ্ণা মেটাই। আইম গোইং টু টেক অল অফ ইউ টুনাইট, এভরি ইঞ্চ, মাই লাভ।”
ফারাহ ছটপট করে,কাঁপতে কাঁপতে বলল।
“না প্লিজ!’
তাশফিন মুচকি হাসে।
“ইয়েস, আই অ্যাম!”
লজ্জায় কান গরম হয়ে আসছে ফারাহর। কিন্তু তাশফিন থামে না। এগিয়ে যেতে লাগলো রুমের দিকে। ফাঁকা ঢোক গিলে ফারাহ।খুব ভয় করছে লোকটাকে।কি হবে এখন?

তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ৪৯

“সেদিন তো এরকম করেন নি?এখন এমন করছেন কেন?”
ঘো’র লাগা দৃষ্টিতে তাকালো তাশফিন, মাদ’কতা মেশানো কন্ঠে বলে।
“তোমার ফার্স্ট টাইম ছিলো তাই জেন্টেলম্যান ছিলাম,বাট নাও দ্য জেন্টলম্যান ইজ গন, অ্যান্ড দ্য ফায়ার হ্যাজ জাস্ট বেগান।”

তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ৫১