তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ৩
তাবাস্সুম খাতুন
সিমি, জারা, সামিয়া, রাত্রি চার জনে ছাদ থেকে নেমে সিমির রুমে ঢুকলো। রুমে ঢুকতেই সামিয়া আর জারা সিমি কে ধরে বললো,,
“জানু তুই ঠিক আছিস তো?”
সিমি উচ্ছাসিত কন্ঠে বললো,,
“সামু, জারা আজকে আমি খুব খুব খুশি?”
সামিয়া আর জারা সিমির খুশির কারণ বুজতে পারলোনা। তাই তারা দুইজনে একসাথে বললো,,
“কেন?”
সিমি — “এইযে নিশান ভাই আমাকে ভুলে গেছে?”
সিমির কথা শুনে রাত্রি, সামিয়া, জারা কেউ বুজলো নাহ কিছু সামিয়া বললো,,
“বইন আমার খোলসা ভাবে বল সবকিছু? মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে তো সব!”
সিমি হাসি মুখে বললো,,
“শোন তাহলে,নিশান ভাই কত বছর আগে বিদেশগিয়েছে দশ বছর। আচ্ছা দশ বছর আগে কি হয়েছে কিনা হয়নি তার কি মনে আছে? হয়তো নেই। আর এই দশ বছরে আমি তাকে দেখি নি সে আমাকে দেখে নি। তাহলে বুজবে কিভাবে আমিই সেই সিমি। আর যাই হোক সে এখন আমাকে কেনই বা মারবে? নাহ নিশান ভাই আমাকে আর কিছু বলবে নাহ দেখিস। কারণ আমিও নিশান ভাই কে চিনি নাহ সেও কোন সিমি কে চেনে নাহ সিম্পল বিষয়।”
সিমির কথা শুনে সামিয়া আর জারা কি বলবে বুজতে পারছেনা। কিন্তূ রাত্রি বললো,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“আপাতত আমি বোবা বুজতে পারছিনা, আমাকে কি বুজিয়ে বলা যাবে?”
সিমি — “কেন নই? আমার কাহিনী আমিই বলি।”
বলে সিমি সেই দশ বছর আগের কথা রাত্রি কে বললো যে নিশান ভাই তাকে বেঁধে রাখছিলো হাত কাটছিলো। আর তার পরেই নিশান ভাই ইতালি চলে যাই। সিমির প্রতিদিন স্বপ্নে এইগুলো আসে ভয়ে থাকা এখন ভয় মিটে যাওয়া সবকিছু বললো। সবকিছু শুনে রাত্রি সিমি কে জড়িয়ে ধরে বললো,,
“উপস আমার বোনটা কত কষ্ট পেয়েছে, আমি বকা দিয়ে দিবো ঠিকাছে?”
রাত্রি আর সিমির কথার মধ্যে জারা বললো,,
“হয়েছে হয়েছে থাম, এখন শোন, ঐযে ওদের ওতো কঠিন নাম আমি ডাকতে পারবোনা।”
সামিয়া — “সেম সেম ওদের ও সুন্দর সুন্দর নাম দিতে হবে।”
রাত্রি আর সিমি বললো,,
“ওদের ও ছাড়বি নাহ?”
সামিয়া আর জারা একসাথে বললো,,
“No..!”
এরপর সামিয়া বললো,,
“প্রথমে এই নিশান ভাই কে কি নাম দেওয়া যাই?”
জারা ও ভাবতে লাগলো। এর মধ্যে সিমি বলে উঠলো,,,
“একটা ফল আছে নাহ, ফলের নামটার প্রথম অক্ষর ন থাকে। বাল আমার মনে পড়ছে নাহ।”
সিমির কথা শুনে সামিয়া বলে উঠলো,,
“ন্যাসপাতি।”
সিমি — “ইয়া ন্যাসপাতি ভাই।”
রাত্রি হাসতে হাসতে বললো,,
— “বাহ্ ন্যাসপাতি ভাই। সেইইইই তো?”
জারা ও একই ভঙ্গিতে বললো,,
“আমার ভাইয়ের নাম টার ইজ্জত মেরে দিলি রে।”
জারার কথা শুনে সবাই হেসে দিলো। এইবার জারা বললো,,
“এইবার জিহান ভাই এর পালা।”
জিহান কে কি নাম দেওয়া যাই ভাবতে লাগলো। সামিয়া বললো,,
“জিহান, জোহান, জবেদা।”
জারা — “জবেদা, জবেদার ভাতার জিহান।”
সামিয়া — “হ্যা হ্যা জবেদার ভাতার।”
সিমি আর রাত্রি উচ্চসরে হেসে উঠলো রাত্রি বললো,,
“ন্যাসপাতি ভাই এর ইজ্জত মেরে দিয়েছিলো। আর আমার ভাই ইচ্ছে ming এই জবেদার ভাতার এর নিক নেম কে রেপ করে ছেড়ে দিলি তোরা।”
রাত্রির কথা শুনে ওরা তিনজন হেসে দিলো। সামিয়া বললো,,
“এইবার আয়ান আর অভি।”
জারা — “অভি কে অভিশাপ বলা যাই চুন্দুল আছে?”
সিমি, সামিয়া আর রাত্রি মাথা নাড়ালো। সামিয়া বললো,,
“তাহলে আয়ান কে আয়না। দারুন।”
সবাই একসাথে হেসে দিলো। সিমি আর রাত্রি এই জারা আর সামিয়ার কান্ড দেখে হাসতে হাসতে শেষ। সিমি বলে উঠলো,,
“কারোর নামের ইজ্জত ছিনিয়ে নিলি, তো কারোর নাম কে রেপ করে ছেড়ে দিলি how ফানি।”
রাত দশটা বেজে চার মিনিট। পরিত্যক্ত একটা বিল্ডিং এ। হাত পা বাঁধা অবস্থায় চেয়ার এ বসে আছে আয়ান আর অভি। তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। নিশান আর জিহান। অভি কাঁদো কাঁদো সরে বললো,,
“মাফ চাচ্ছি তো ভাই, তাহলে এইসব কি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড না তুই এমন করিস নাহ সোনা আমার।”
নিশান বাঁকা হেসে বললো,,
“বেস্ট ফ্রেন্ড, আমার সাথেই সীমাবদ্ধতা থাকবে, এখন আমাকে রেখে যদি আমার পার্সোনাল প্রপার্টি তে নজর দেই, তাহলে এর ফল কি হতে পারে?”
আয়ান — “অনেক খারাপ but আমরা কৌতূহল হয়ে গেছিলাম মাফ কর ভাই।”
নিশান — “কৌতূহল থাকা টা ভালো সবকিছু তেই, but আমার পার্সোনাল প্রপার্টির কাছে আসলে এইসব কৌতূহল ফিকে পরে যাবে।”
জিহান গম্ভীর কণ্ঠে বললো,,
“তোদের প্রথম থেকেই আমি সাবধান করতাম but তোরা তো শুনতিস না এখন বোজ ঠেলা।
জিহানের কথার মধ্যে নিশান একটা মোটা লোহার পাইপ দিয়ে একবার আয়ানের বাম হাতে। সেম ভাবে আর একবার অভির বাম হাতে মারলো। দুইজনে চিৎকার দিয়ে উঠলো। একই ভাবে ডান হাতেও মারলো। খুব জোরেই মেরেছে হাত মনে হয় ভেঙে গেছে। নিশান পাইপ টা ফেলে দিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে বললো,,
“বেস্ট ফ্রেন্ড বলে শাস্তি টা এই পযন্ত। অন্য কেউ হলে আমার হাতে খুন হয়ে যেত।”
তারপর জিহানের দিকে তাকিয়ে বললো,,
“এই দুটোকে হাসপাতালে ভর্তি করে বাড়ি আয়। আমি চলে যাচ্ছি বাড়িতে।”
জিহান মাথা নাড়ালো। অভি আর আয়ান ব্যাথায় ছটফট করছে। জিহান ওদের ধরে নিয়ে গাড়িতে বসালো। তারপর গাড়ি হাসপাতালের দিকে নিয়ে গেলো।
নিশান বাড়িতে এসে পৌঁছাতে রাত সাড়ে বারোটা বেজে গেলো। তার কাছে ডুপ্লিকেট চাবি ছিলো। সেই চাবি দিয়ে সদর দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলো। ড্রইং রুমের পাস দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলো তার মা সেলিনা চৌধুরী বসে আছে। নিশান কে দেখে সেলিনা চৌধুরী বললো,,
“এত রাত করে কোথায় ছিলিস? জিহান ও মাত্র বাড়ি ফিরলো।”
নিশান — “কাজ ছিলো একটা। But তুমি এত রাত পযন্ত জেগে আছো কেন?”
সেলিনা মলিন হেসে বললো,,
“তোর জন্য জেগে ছিলাম খাবি তো আমি তরকারি গরম করছি।”
নিশান — “নাহ আমি খাবো নাহ। আর আজকে বলে দিলাম। আমার জন্য এইভাবে রাত জেগে অপেক্ষা করবে নাহ। তোমার শরীর খারাপ করবে। আমার মতো আমি ঠিকই চলে আসবো। ঘুমাতে যাও।”
বলে নিশান সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলো। সেলিনা চৌধুরী একটা দীর্ঘ শ্বাস
ছাড়লেন তারপর নিজের রুমে চলে গেলো। নিশান রুমে ঢুকেই ওয়াশরুম এ চলে যাই। লম্বা একটা সাওয়ার নিয়ে বেড়িয়ে আসলো। পরনে সাদা টি শার্ট আর কালো টাউজার। চুলের পানি গুলো সুন্দর করে মুছে শুকিয়ে নিলো। জেল দিয়ে সেট আপ করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। তার রুমের দুই রুম বাদেই সিমির রুম। নিশান সিমির রুমের দরজার সামনে দাঁড়ালো। হাতে থাকা ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে লক খুললো। লক খুলতেই নিশান ভিতরে ঢুকলো। ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো। বাহিরে ল্যাম্প পোস্ট থেকে হলদেতে আলো রুমে আসছে। বেডে দুইজন শুয়ে আছে। নিশান দুই জনের দিকে ভালো ভাবে দেখে। ডান পাশের সাইট এ গেলো। হাঁটু মুড়ে বসলো। সিমি গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে আছে। নিশান সিমির মুখের দিকে কিছু পল তাকিয়ে বিড়বিড় করে বললো,,
“তুই হয়তো ভাবছিস আমি তোকে ভুলে গেছি? কিন্তূ এইটা সম্ভব নাহ কখনো ইশু। নিশান হয়তো মরে যাবে ঠিকই কিন্তূ তার মন থেকে ইশু নামটা মরবে নাহ কখনো ঐভাবে বেঁচে থাকবে। ছোট বেলায় রুড হয়েছিলাম তোর উপরে। যার কারণ তুই জানিস। সেম কাহিনী যদি এখন করিস I Sure তোকে জ্যান্ত কবর দিতে আমার হাত কাঁপবে নাহ ইশু।”
বলে সিমির দিকে তাকিয়ে রইলো। হুট্ করে সিমির ঠোঁট জোড়া নিশান তার শুষ্ক ঠোঁট এর ভাজে নিয়ে নিলো। পরপর ঠোঁটে তিনটা জোরে কামড় দিলো। সিমি ঘুমের ঘোরেই অনুভব করছে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করছে কিন্তূ ঘুম ভাঙে নি। এক একটা মানুষের ঘুম আছে নাহ এমন যে তাকে ঘুম অবস্থায় তুলে নিয়ে গিয়ে যদি পাচার করা হয় তাও তার ঘুম ভাঙে নাহ ঠিক তেমনি সিমির ও একই অবস্থা। নিশান সিমির ঠোঁট এ কামড় দিয়ে ছেড়ে দিলো। সিমির গায়ে থাকা উড়না দিয়ে নিজের ঠোঁট মুছলো। তারপর সিমির দিকে তাকিয়ে বললো,,
তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ২
“আমি তোকে ভুলে গেছি এমন বলার জন্য সামান্য শাস্তি এইটা। পরের বার এমন কিছু হলে শাস্তিটা একটু বড়ো আকারের হবে।”
তারপর নিশান সিমির মাথায় হাত বুলিয়ে যেইভাবে আসছে ঠিক সেইভাবেই চলে গেলো সিমির রুম থেকে। নিশান নিজের রুমে গিয়ে। টি শার্ট খুলে ফেলে। এসির পাওয়ার অধিক বাড়িয়ে কোমর পযন্ত ব্লাঙ্কেট টেনে ঘুমের রাজ্যে পারি জমালো।