তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ২৯
তাবাস্সুম খাতুন
রাত দুইটা বেজে দুই মিনিট। নিশান অফিসের কাজ শেষ করে ল্যাপটপ রেখে উঠে দাঁড়ালো। সোজা ওয়াশরুমের দিকে গেলো। খট করে ওয়াশরুমের দরজা খুললো, লাইট অন করলো। নিশান গম্ভীর মুখে ভিতরে ঢুকলো, সে বার্থটব এর কাছে গিয়ে দেখলো সিমি সেন্সলেন্স হয়ে পরে আছে। নিশান নিচু হয়ে সিমির হাত পায়ের বাঁধন আর মুখে থাকা টেপ খুলে দিলো। সিমি কে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেলো। সোফার উপরে শুয়ে কাভার্ড থেকে নিশান নিজের একটা শার্ট বাহির করে সিমির ভেজা জামাকাপড় খুলে পড়িয়ে দিলো। পরে আবারো কোলে নিয়ে বেডে শুয়ে দিলো। এসি অফ করে দিলো গায়ে ব্লাঙ্কেট ভালো ভাবে জড়িয়ে দিলো। সিমির মাথায় হাত দিয়ে দেখলো জ্বর আসছে। নিশান ওয়াশরুম থেকে একটা মগে করে পানি আনলো নিজের রুমাল ভিজিয়ে সিমির কপালে জলপট্টি দিতে লাগলো। সিমির পাশে বসে সিমির ডান হাত নিজের হাতের মধ্যে নিলো। সিমির মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো ঘোর লাগা দৃষ্টিতে। হুট্ করে বলে উঠলো,,,
“কেন বুজিস না ইশু তুই আমাকে? বল কেন বুজিস না? কেউ তোর ভালো চাই না। তোকে যত প্রটেক্ট করতে চাই তুই তত বাহানা খুঁজে হারিয়ে যাস। কি পেয়েছিস কি আমাকে? তোকে কষ্ট দিয়ে যে আমি নিজেও ভালো নেই বুজিস তুই এইটা? তুই আমার কাছে কতটা ইম্পরট্যান্ট সেইটা তুই কখনো জানতে পারবি না। কারণ তুই তো আমাকে বোঝার চেষ্টা করিস না কখনো? আমার জীবন তাও অতটাও দামি নয় যতটা তুই আমার কাছে দামি। আমার দুনিয়া এক দিকে তো তুই একদিকে। তুই বুজবি কবে আমাকে? আমার ব্যাক্তিগত সম্পদ তুই, সেইটা আজ থেকে নয় তোর পাঁচ বছর বয়স থেকেই তুই আমার ব্যাক্তিগত সম্পত্তি হয়ে গেছিস।”
নিশান থামলো কিছুক্ষন পরে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“আজকেই লাস্ট আমার কথার একটুও অবাধ্য হলে god প্রমিস তোকে মেরে দাফন করে নিজেও মরে দাফন হবো।”
বলে নিশান উঠে দাঁড়ালো। বেলকুনিতে চলে গেলো। সেখানে গিয়ে সিগারেট ধরিয়ে টান দিতে লাগলো। রাগ হচ্ছে তার প্রচুর। এই ইডিয়েট আগেও শুনি নি কথা এখনো শোনে না। রাগে মাথা ফেঁটে যাচ্ছে। সিগারেট এ টান দিতেই আছে পরপর ছয়টা সিগারেট শেষ করলো সে। এখনো ধরিয়ে টান দিচ্ছে। মাথা কিছু তেই ঠান্ডা করতে পারছেনা সে।
এইদিকে রুমের ভিতরে সিমির জ্ঞান ফিরলো। মাথা ভার হয়ে আছে চোখের পাতা গুলো যেন দশ কেজি ওজন খুলতে পারছেনা। কথা বাহির হচ্ছে না মুখ থেকে। সারা দেহ অবাস হয়ে আছে। সিমি বহু কষ্টে চোখ খুললো। চোখ খুলে বড়ো ববড়ো নিশ্বাস নিতে লাগলো। ধীরে ধীরে উঠে বসলো। দেহে বল ও নেই, সেই দুপুরে খাওয়া হয়েছে আর কিছু খাই নি সে। সিমি খেয়াল করলো বেলকুনি থেকে আওয়াজ আসছে কিছুর। সিমি উঠে দাঁড়ালো। আশেপাশে তাকিয়ে নিশান কে খুঁজলো নেই নিশান। সিমি ধীরে ধীরে বেলকুনিতে গেলো। গিয়ে দেখলো নিশান সিগারেট টানছে। সিমি অবাক হয়ে বললো,,,
“আ.. আপনি সিগারেট খান?”
সিমির আওয়াজ পেয়ে নিশান সিমির দিকে ফিরলো। সিমির কোমর ছোঁয়া চুলগুলো এলোমেলো হয়ে ছেড়ে দেওয়া। নিশানের পড়িয়ে দেওয়া শার্ট হাঁটুর একটু উপরে উঠে আছে। শার্ট বোতাম উপরের দিক থেকে দুই তিনটা খোলা। মেয়েলি সর্বাঙ্গ বোঝা যাচ্ছে ভালো ভাবে। নিশান কিছু ক্ষণ তাকিয়ে সিগারেট এ একটা টান দিয়ে বললো,,,
“তুই এইখানে কি করছিস?”
সিমি আগের মতোই বললো,,,
“আপনি সিগারেট খান?”
নিশান ভ্রু কুঁচকে বললো,,,
“আমি প্রশ্ন আর প্রশ্নের উত্তর দিতে পছন্দ করি না।”
সিমি নাক চেপে ধরে বললো,,,
“তাহলে পরীক্ষার প্রশ্নে কোনদিন আনসার লিখেন নি? তার মানে আপনি ফেল্টুস?”
সিমির কথা শুনে নিশান সিগারেট এ আরেকটা টান দিয়ে সিমির কাছে গেলো সিমি পিছাতে পিছাতে দেয়াল এ পিঠ ঠেকলো। সিমি নাক মুখ চেপে আছে।নিশান সিমির একদম কাছে গেলো তাঁদের মধ্যে কোন দূরত্ব নেই। নিশান সিমির মুখ থেকে হাত সরিয়ে সিমির হাত শক্ত করে চেপে ধরলো। সিমির কোমর ও শক্ত করে চেপে ধরলো সিমির ঠোঁটের কাছে নিজের ঠোঁট নিয়ে গেলো। সিমির ঠোঁট নিজের দখলে করে নিয়ে মুখের ভিতরে থাকা সিগারেট এর ধোয়া সিমির মুখের ভিতরে ঢুকিয়ে দিলো। সিমির দম বন্ধ হয়ে আসলো কাশি লাগছে। নিশানের থেকে ছাড়া পেতে চাচ্ছে কিন্তূ নিশান ছাড়লো না নিজের মতো কাজ করতে লাগলো। সিমির নিশ্বাস আটকে আসছে নিভু নিভু চোখে তাকিয়ে আছে। এমন সময় নিশান ছেড়ে দিলো সিমি ছাড়া পেতেই বড়ো বড়ো নিশ্বাস নিলো। কাশতে লাগলো। নিশান নিজের ঠোঁট মুছে নিয়ে বাঁকা হেসে বলল,,,
“এত ওভার পজেজিভ কিছু আমি like করি না। তাই হালকার উপরে ঝাঁপসা দেখলাম তোকে। দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করার আগে যেন এই কথা মনে থাকে।”
বলে সিমি কে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেলো। সিমি কে বেডে ফেলে দিয়ে নিজেও সিমির কাছে গেলো। সিমির গলায় মুখ ডুবালো। ঘাড়ে কামড় দিলো জোরে। সিমি চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে নিলো। নিশান সিমির কানের লতিতে কামড় দিলো চুমু দিলো। সিমির মুখে ছোট ছোট চুমুতে ভরিয়ে দিলো। নিশান উঠলো নিজের গায়ে থাকা টিশার্ট খুলে ফেলে দিলো। সিমির কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ফিসফিস কণ্ঠে বললো,,,
“আমি মারবো, আবার আমি নিজেই কাছে টেনে আদর করবো। আমার বিষাক্ত ময় অত্যাচার আর আদর সয্য করে নে জানবাচ্চা।”
বলে নিশান নিজের সম্পূর্ণ ভর ছেড়ে দিলো সিমির উপরে। সিমি প্রথম প্রথম বাঁধা দিলেও নিশানের কথা শুনে সে আর কিছু বললো না। সেও হারিয়ে গেলো নিশানের মাঝে।
রাত সাড়ে তিনটা বাজে। নিশান সিমি কে কোলে করে ওয়াশরুমে ঢুকে গোসল করিয়ে আবারো। কোলে করে রুমে এনে নিজের জামা পড়িয়ে ব্লাঙ্কেট জড়িয়ে দিলো গায়ে। নিজেও টিশার্ট আর টাউজার পরে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। সিমির শীত লাগছে। প্রায় তিন চার ঘন্টা ধরে সে পানির ভিতরে ছিলো। আবার এখন গোসল করলো। নিশান বললো চুপচাপ বসে থাকতে তাই ও বসে আছে। নিশান সোজা কিচেন এ গেলো। ফ্রিজ থেকে ভাত আর তরকারি বাহির করে গরম করলো।তারপর প্লেটে নিয়ে আবার রুমে ঢুকলো। সিমির পাশে বসে লোকমা মাখিয়ে সিমি কে গালে তুলে খাইয়ে দিলো, সাথে নিজেও খেলো। খাবার শেষ করে নিশান সিমিকে পেইন কিলার আর একটা এন্টিবায়টিক দিলো। ডাক্তারের কাছে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করলে এইটা বলাই তাই নিশান সেইটা দিলো। নিশান বেডে গেলো লাইট অফ করে সিমিকে নিজের বুকের মাঝে নিয়ে বললো,,,
“ঘুমিয়ে পর।”
সিমি বিড়াল ছানার মতো নিশানের বুকে ঘুমিয়ে পড়লো। নিশান ও সিমি কে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো।
রাতের আঁধার কেটে ধরণীতে সূর্যের আগমন ঘটলো। চারিদিকে পাখি কিচির – মিচির করে বেড়াচ্ছে। চৌধুরী ম্যানশনে ভোর হতেই সবাই কাজে লেগে পড়েছে। সন্ধ্যায় বিজনেস পার্টি আছে সেইজন্য সবাই গুছাচ্ছে। ছাদে সবকিছু ঠিক করা হয়েছে। নিশান ও উঠে পড়েছে।সাথে জিহান ও দুইজন মিলে একরুমে বসে অফিসের কাজ করছে। সিমি এখনো ঘুমিয়ে আছে। বাড়ির গিন্নিরা সকালের নাস্তা রেডি করছে। মিষ্টি এসে দাঁড়ালো সেলিনার পাশে। সেলিনা হেসে বললো,,,
“কিছু খাবি মামুনি?”
মিষ্টি বললো,,,
“উহুম খালাআম্মু একটু এইদিকে আসো কথা বলবো একটু।”
সেলিনা হাতের কাজ ফেলে রেখে মিষ্টি কে নিয়ে চলে গেলো। কেয়া এইটা দেখে রোজিনা কে বললো,,,
“দেখছো মেজো আফা বড়ো আফা এই মেয়েটারে কত ভালোবাসে। এর মেয়ের জন্য আমাদের সিমি কেউ মারতে চাই। ছি কতটা জঘন্যতম কাজ।”
রোজিনা কেয়া কে শাসিয়ে বললো,,,
“কেয়া এইসব বড়ো দের সম্পর্কে বলা উচিত নয়। বড়ো আফা আমাদের বড়ো। আমাদের ঢাল উনি থেকে পরিবার টা এইভাবে শক্তপক্ত করে ধরে রেখেছে। এইভাবে বলা উচিত নয়।”
কেয়া — “তুমি এত সরল কেন মেজ আফা? তোমার মেয়েকে সে মারতে চাই। এরপর ও তুমি তাকে ভালো বলছো। সন্মান করছো।”
রোজিনা কেয়া কে বুজিয়ে বললো,,,
“দেখ কেয়া বড়ো আফা অন্যায় করছে। আমাদের উচিত তাকে অন্যায় থেকে বাহির করে আনা। এইভাবে অসম্মান করা উচিত নয়। উনি খুব ভালো মানুষ আমি জানি আমার য্খন পনেরো বছর বয়স তখন আমার বিয়ে হয় আর সেই থেকেই বড়ো আফা রুপী একটা মা পেয়েছি। আমাকে আগলিয়ে রেখেছে সবসময়। হয়তো তার ভাবনাতে একটু ভুল হয়েছে। এই বলে আমাকেও যে সেই সাথে তাল মেলাতে হবে এমনটা কথা না।”
কেয়া মাথা নাড়িয়ে হাতের কাজ করতে করতে বললো,,,
“তুমি যা বলছো টা ঠিক। তবে বড়ো আফা বুজলে ভালো। না বুজলে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারবে। আমাদের নিশান সিমি কে অনেক ভালোবাসে। সিমি কে দ্বিতীয়বার আঘাত করতে চাইলে নিশ্চই কিছু করবে।”
রোজিনা কিছু বললো না শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলালো।
এইদিকে সেলিনা মিষ্টি কে নিয়ে ড্রইং রুমের সোফায় বসলো। এইদিকে আপাতত কেউ নেই। মিষ্টি ফিসফিস করে বললো,,,
“খালাআম্মু সবকিছু ঠিক থাক করে ফেলেছি আমি। সে চলে আসবে সন্ধ্যায়।”
সেলিনা ও ফিসফিস করে বললো,,,
“খুব ভালো করেছিস মামুনি। এখন শুধু সন্ধ্যার অপেক্ষা। তারপর বাকিটা নিশান বুজে নেবে। কে ওর যোগ্য আর কে অযোগ্য।”
মিষ্টি হাসলো। তারপর উঠে নিজের রুমে গেলো। সেলিনা ও উঠে কিচেন এ গিয়ে নিজের মতো কাজ করতে লাগলো।
সামিয়া, জারা আর রাত্রি তিনজনে নিশানের রুমে ঢুকলো। দেখলো সিমি এখনো ঘুমিয়ে আছে। সামিয়া গিয়ে সিমির মাথায় চাটি মারলো সিমি ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠলো। বুকে হাত দিয়ে নিশ্বাস নিয়ে ওদের তিনজনের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললো,,,
“সমস্যা কি মারলি কেন?”
সামিয়া — “রানিসাহেবা কত আর ঘুমাবেন? সেই বিকাল থেকেই তো ঘুমিয়ে আছেন!”
সিমি বালিশে হেলাম দিয়ে বসলো বললো,,,
“কি করতে এসেছিস সেইটা বল?”
জারা একটা শপিং ব্যাগ সিমির দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,,
“ভাবিজান কালকে তো আপনি ঘুমিয়ে পড়ছিলেন। তাই আপনার জন্য এই সুন্দর ড্রেস টা কিনেছি। পরে ভাইয়া কে পাগল করে দিও।”
সিমি মন খারাপ করে বললো,,
“পার্টি তে আমি যেতে পারবোনা। তোর ভাই আমাকে যেতে দেবে না বিকালেই রুম লক করে রেখে দেবে।”
জারা ভ্রু কুঁচকে বললো,,,
“কেন?”
সিমি — “জানিনা শুধু যেতে বারণ করছে আমি এইটাই জানি।”
বলে সিমি শপিং ব্যাগ ওদের দিয়ে দিতে গেলে জারা বললো,,,
“উহুম ফিরিয়ে দিস না। পার্টি তে যেতে না পারিস রুমে থাকিস। ভাইয়া য্খন আসবে তখন পরিস। দুটো ড্রেস আছে বুজেছিস? পরে ভাইয়াকে পাগল বানিয়ে দিস।”
সিমি কিছু বললো না। ওরা তিনজন চলে গেলো। সিমি উঠে ওয়াশরুমে গেলো ফ্রেশ হয়ে আসলো জ্বর টা পরে গেছে গা থেকে। সিমি নিজের ড্রেস পরে নিয়ে নিচে গেলো নাস্তা করার জন্য। সবার সাথে নাস্তা করা শেষে রোজিনা সিমি কে বললো,,,
“সিমি তুই একটু নিশান আর জিহান কে দিয়ে আয় নাস্তা। ওরা রুমের ভিতরে কাজ করছে na দিয়ে আসলে ওরা খেতেও আসবে না।”
সিমি কিছু বললো না মাথায় সুন্দর করে ঘোমটা টেনে ট্রে হাতে নিয়ে উপরে উঠলো যাওয়ার আগে সামিয়া কে বললো,,,
“এই ছেমরি আয় আমার সাথে।”
সামিয়া মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে বললো,,,
“আমি যাবো না তুই যা।”
সিমি — “কুত্তি ঐখানে তোর ভাতার ও আছে। ”
সামিয়া দাঁত কেলিয়ে হেসে বললো,,,
“হ্যাঁ একটা তোর ভাতার আরেকটা তোর দুলাভাই। যা যা দুলাভাই আর ভাতার কে নাস্তা দিয়ে আয়।”
সিমি আর কোন কথা না বলে উপরে গেলো। নিশানরা যেই রুমে গেছে সেই রুমে নক করে ভিতরে ঢুকলো ট্রে রেখে দিয়ে বললো,,,
“খাবার খেয়ে আবার কাজ করেন।”
বলে সিমি চলে যেতে নিলে নিশান বলে উঠলো,,,
“তোকে বাইরে বেরোতে কে বলেছে?”
সিমি একটা ঢোক গিলে বললো,,
“নাস্তা করতে বেড়িয়েছিলাম।”
নিশান এইবার ধমকের সুরে বললো,,
“ইডিয়েট রুমে যা। তোকে যেন আর বেরোতে না দেখি।”
সিমি কিছু না বলে দৌড়ে রুমে গিয়ে বেডে বসে নিশান কে গালি দিতে দিতে বললো,,,
“শালা বিদেশি কুত্তা আমি কি অন্যের সাথে পালিয়ে যাচ্ছি নাকি হুউউউ হুনুমান, ইঁদুরের বাচ্চা, গরুর দশ নাম্বার বাচ্চা, আস্ত একটা গাধা।”
বলে সিমি বেডে শুয়ে ফোন বাহির করে কোরিয়ান ড্রামা দেখতে লাগলো।
দেখতে দেখতে দুপুর পেড়িয়ে বিকাল হয়ে আসলো। চারটা বেজে ত্রিশ মিনিট হয়েছে। বাড়িতে এইবার বিজনেস ম্যান রা এক একজন আশা ধরেছে। তাজউদ্দিন, সালাউদ্দিন ওদের ওয়েলকাম জানাচ্ছে। জামালউদ্দিন রান্নার দিকে দেখছে। নিশান আর জিহান মাত্র কাজ শেষ করে উঠলো। জিহান নিজের রুমে ঢুকে দেখলো সামিয়া আলমারিতে কি যেন খুঁজছে। জিহান আস্তে আস্তে রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে সামিয়ার একদম কাছাকাছি দাঁড়িয়ে বললো,,,
“বউ কি খুঁজছো এইভাবে?”
হুট্ করে এমন কণ্ঠ শুনে সামিয়া ভয় পেয়ে লাফিয়ে উঠে পিছে ফিরে যেতে নিলেই জিহানের বুকে ধাক্কা লাগে। জিহান মুচকি হেসে বললো,,
“আরো একটু উপরে লাফ দিতে খুব সুন্দর দেখাচ্ছিল।”
সামিয়া ভয় একপাশে রেখে বললো,,,,
“আপনি এইখানে কি করছেন?”
জিহান — “প্রশ্ন টা আমার, তুমি এই রুমে কি কর?”
সামিয়া হেসে বললো,,,
“রুমটা তো আমার তাই আসছিলাম। এখন সরেন আমার কাজ শেষ এই রুমের পরে আসবো আবার।”
বলে যেতে নিলেই জিহান সিমির কোমরে হাত দিয়ে নিজের কাছাকাছি এনে বললো,,,
“রুম টা নিজের বলে দাবি করছো তো রুমের এই মানুষটা কে কেন নিজের বলে দাবি করছো না বউ?”
সামিয়া — “কারণ আপনাকে আমার লাগবে না।”
বলে ছাড়াতে লাগলে জিহান আরো শক্ত করে চেপে ধরে বললো,,,
“তোমার লাগবে না, তবে আমার লাগবে বিয়ে করেছি কাল থেকে বউ কে কাছে পাই নি।এখন পেয়েছি মনটা আনচান করে বউ এর আঁচল ধরে বেড়ানোর জন্য।”
সামিয়া দাঁত কেলিয়ে হেসে বললো,,,
“আপনার মনে দশ বালতি পানি, কারণ আমি শাড়ি পরি না।”
জিহান — “পড়ো না পড়বে। পরে আমার হাত তোমার শাড়ির আঁচলে বেঁধে দিয়ে এই গান গাইবে,,,
“আঁচলে বান্ধিয়া রাখিব গো তোমারে…
আঁচলে বান্ধিয়া রাখিব গো তোমারে…!”
সামিয়া জিহানের থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য নড়াচড়া করতে করতে বললো,,
“সেগুড়ে বালি, আমি কখনো এইটা বলবো না। সরে যান।”
জিহান অবাক হয়ে বললো,,,
“বউ তুমি আমাকে জান বললে?”
সামিয়া বিরক্তি কণ্ঠে বললো,,,
“যেতে বলেছি আমার কাছ থেকে।”
সামিয়ার বিরক্তি মুখ দেখে জিহান টুপ্ করে সামিয়ার ঠোঁটে শব্দ করে চুমু খেয়ে সামিয়া কে ছেড়ে দিয়ে বললো,,,
“তোমার বিরক্তি মুখটা দেখতে দারুন। তাই সামলাতে পারলাম না আরকি।”
বলে জিহান ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। এইদিকে সামিয়া নিজের ঠোঁটে হাত দিয়ে কিছু সময়ের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেলো। হুসে ফিরতে সে ওয়াশরুমের দরজার দিকে তাকিয়ে গালি দিতে দিতে চলে গেলো রুম থেকে।
নিশান রুমে এসে আগে সাওয়ার নিয়ে নিলো। সে নিজেকে রেডি করে নিলো একেবারে। সে কালো শুট পড়েছে। সিমি চুপচাপ বসে ফোন দেখছে কিন্তূ আরচোখে নিশান কে ঠিকই দেখছে। নিশান নিজের চুল সেটআপ করতে করতে বললো,,,
“এত আরচোখে না দেখে সরাসরি দেখ। তোর হাসবেন্ড এত সুন্দর দেখতে থাক তুই।”
সিমি চোখ নামিয়ে ফোন দেখতে দেখতে বিড়বিড় করলো,,,
“সুন্দর না ছায়। বিদেশি কুত্তা আমি দেখছি তো কিভাবে বুজলো?”
নিশান এইবার সিমির কাছে আসলো সিমির বাহু ধরে টেনে তুললো সিমির কপালে গভীর চুম্বন দিয়ে বললো,,,
“আমি রুমে খাবার পাঠিয়ে দেবো। রুম থেকে একদম বেরোবে না যতক্ষণ না পযন্ত আমি আসছি। চুপচাপ বসে ফোন দেখো।”
সিমি কিছু বললো না। নিশান এইবার সিমির ঠোঁটে শব্দ করে চুমু খেয়ে বাইরে থেকে রুম লক করে বেড়িয়ে গেলো। সব গেস্ট দের ওয়েলকাম জানানোর জন্য। সিমি উঠে ফ্রিজ থেকে আইসক্রিম নিয়ে আসলো সে বেডে বসে আইসক্রিম খেতে খেতে ফোন দেখতে লাগলো।
মিষ্টি ফোন হাতে নিয়ে কাউকে কল দিলো দুই তিনবার রিং হতেই কল রিসিভ হলো মিষ্টি গম্ভীর কণ্ঠে বললো,,,
“কোথায় আছো তুমি?”
ওইপাস থেকে,,,
“আমি চলে এসেছি, নিশানের সাথে আপাতত এখনো দেখা হয় নি। ওর সাথে দেখা করার পরেই আমি আসবো।”
মিষ্টি — “হুম আমি দ্বিতীয় তলায় থাকবো। আমাকে কল দেবে। খুব রিক্স এর কাজ কিন্তূ সাবধানে করতে হবে।”
ওইপাস থেকে,,,
তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ২৮
“আমি জানি তোমার চিন্তা করতে হবে না। রাখছি।”
বলে কল কেটে দিলো। মিষ্টি বাঁকা হেসে বললো,,,
“শুধু কিছু সময়ের অপেক্ষা তারপর ধামাকা।”
সেও আর দাঁড়ালো না রুমে গিয়ে সুন্দর ড্রেস পরে পার্টি তে জয়েন হলো।