তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ২
ভূমিকা তালুকদার
রাত প্রায় এগারোটা বাজে। “খান বাড়ি “তে তখন এক অদ্ভুত টান টান নিস্তব্ধতা।হঠাৎ বাড়ির সামনের গেটের কাছে গাড়ির ব্রেক কষার শব্দ। মূল দরজার কড়া আওয়াজ। সাথে সাথে সবাই উঠে দাঁড়ায়। দরজা খুলতেই দেখা যায়—জায়ান দাঁড়িয়ে আছে, কুচকানো ভ্রু, চোখ লাল। পাশে দাঁড়িয়ে আছে লিয়ানা, চুপচাপ, মাথা নিচু।সবাই ছুটে যায়। নাফিসা খান ছেলের গাড়ি দেখে দরজার সামনে দাঁড়ায়। মুখে চিন্তার রেখা।মাইশা,আরিশা,রিহান সবার মুখে আতঙ্ক মিশ্রিত কৌতূহল।জায়ান দরজা খুলে নামে। পাশে গাড়ির ভিতর থেকে ধীরে ধীরে নামে লিয়ানা।তাকে দেখে সবাই চমকে ওঠে।চুল এলো- মেলো, গালে লাল দাগ, চোখে জল। তার চোখ দুটো অদ্ভুত ভাবে শূন্য, আর মুখটা যেন ভাঙা কাচের মতো কাঁপছে।
হঠাৎই সে দৌঁড়ে এসে জায়ান এর মায়ের দিকে ছুটে যায়।
“বড়ো আম্মু!”কাঁদতে কাঁদতে আঁচল ধরে জড়িয়ে ধরে বলে, তোমার ছেলে,, বাপরে,বিদেশ থেকে এসেই আমাকে, মারলো!এক থাপ্পরে পুরো মঙ্গল গ্রহ ঘুরিয়ে এনেছে!লম্বা করে কেঁদে ওঠে
এ্যাঁএএএ!এ্যাঁএএএ!
সবাই হতবাক।
জায়ান পিছনে দাঁড়িয়ে আছে, মুখে কোন অভিব্যক্তি নেই। তার চেহারা বরং কঠিন, যেন এই কাণ্ডটা স্বাভাবিক!
নাফিসা খান তীব্র কণ্ঠে বলে ওঠে,
কি করলি জায়ান! এইটা কি করলি তুই! তুই ওকে মারলি?!কি করেছে আমার লিয়ানা।
জায়ান ঠাণ্ডা গলায় বলে,
বেঁচে আছে।এইটাই অনেক।তোমাদের গুনোধর মেয়ের কাহিনী কিছু জানো? কার সাথে মিশে কোথায় যায়?,এত রাত পর্যন্ত বাহিরে থাকার সাহস পেলো কোথায়, মন চাচ্ছে আরও কয়টা থাপ্পড় কষিয়ে দিতে।
রুকসানা খান-
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
ভালই করেছে! ঠিকই করেছে।এই মেয়েকে নিয়ে আমি আর পারিনা,কোনো কথাই শুনে না আমার।বাদর হয়েছে! নিশ্চয়ই কিছু করেছে, নাহলে জায়ান মারবে কেনো?
মাইশা:
ভাইয়া তোমার তো মাথা গেছে! আপি তো শুধু তার বান্ধুবির জন্মদিনে গিয়েছিলো, এইটুকুতেই এই হাল করলে।
রিহান:
আরে ভাই! মারার কী দরকার ছিলো? একবার ভালো করে জিগ্যেস করতে পারতে না? গলা এত চড়ানোর কী দরকার!
এক পলক চুপচাপ নিরবতা ঘড়ির টিকটিক শব্দ শোনা যায়
নাফিসা খান-
জায়ান.,তুমি দেশের বাইরে থেকেছো অনেক দিন। আমাদের মেয়েটা অনেক আদরের আর তোমার ছোট বোন হয়,,,এভাবে বাড়ির মেয়েদের গায়ে হাত তুলতে পারো না।
enough!অনেক হয়েছে আর একটা কথাও শুনতে চাচ্ছি না আমি!না মানে না।
এই কথায় লিয়ানার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। বাকি সবাই একসাথে চুপচাপ তাকিয়ে থাকে। কারো কিছু বলার সাহস হয় না। বসার ঘরে এক ভয়ানক আবহ ছেয়ে যায়।পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সবাই থ হয়ে তাকিয়ে আছে। কেউ জায়ানের সামনে কিছু বলার সাহস পায় না আর। কিন্তু জায়ান শুধু চুপচাপ তাকিয়ে থাকে, হঠাৎই তার চোখের ভেতরে যেন বিদ্যুৎ খেলে যায়।
এক পলক চাহনি।
আর সেই চাহনিতে যেন সারা বাড়ি থমকে যায়।পর মুহূর্তেই সে একটানে লিয়ানার হাত ধরে নাফিসা খানের বুক থেকে টেনে সরিয়ে নেয়।
জায়ান! কি করছিস বাবা?
ভাইয়া! ছারুন! আমি কোথায় যাবো না!— চেঁচিয়ে উঠে লিয়ানা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে।
জায়ানের চোখ ফেটে রাগ ঝরে।
সে কিছু না শুনেই লিয়ানাকে টেনে নিয়ে সিঁড়ির দিকে চলে যায়। সবাই থ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে—কেউ জায়ানকে থামাতে সাহস করে না।
দোতলার ঘরে ঢুকেই দরজা বন্ধ।ঘরের দরজা বন্ধ হতে না হতেই লিয়ানার হৃদস্পন্দন যেন কয়েক সেকেন্ডের জন্য থমকে যায়। চিৎকার করে উঠতে চেয়েছিল, কিন্তু গলার স্বর আটকে গিয়েছিল নিঃশব্দে। পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা জায়ানের শরীরের উত্তাপ যেন হঠাৎ করেই ঘরটাকে ভারি করে তুলেছে। চোখে লালচে রাগ, চোয়াল শক্ত করে দাঁড়িয়ে সে শুধু একটুকু হেসে বলল,
“এবার পালা তো দেখি, ”
ভ..ভাইয়া আপনি এমন করছেন কেন!দরজা খুলেন! তা না হলে আমি চিৎকার করে দেবো!”আমাকে যেতে দিন! বলেই দরজার দিকে ছুটতে যায়, কিন্তু জায়ান তার হাতটা এক টানে টেনে আবার নিজের দিকে নিয়ে আসে।জায়ান আস্তে আস্তে পেছন থেকে এগিয়ে আসে। চোখে আগুন, কিন্তু ঠোঁটে এক চিলতে হাসি।
“চিৎকার করবি?” কি বলবি সবাইকে যে আমি তোকে ছুঁয়ে ফেলেছি। কেউ বিশ্বাস করবে,তোর কি মনে হয়??
রুমের ভেতর নিঃশব্দ। একটা ধকধকে উত্তাপ যেন রুমের বাতাসেই জমে আছে।দরজা বন্ধ। আকাশের চাদেঁর আলো রুমে প্রবেশ করেছে।জায়ান ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে আসে, নিঃশব্দে.. ঠিক যেন এক বন্যা, যাকে কেউ থামাতে পারে না।লিয়ানা পেছাতে থাকে… নিঃশ্বাস কেঁপে কেঁপে ওঠে।
সে ফিসফিস করে, গলায় কাঁপুনি—
“ভাইয়া..আপনি থামুন.”
জায়ান থামে না। বরং, তার আঙুল উঠে যায় নিজের শার্টের দিকে।সে একটার পর একটা বোতাম খুলতে থাকে,একটা, দুটো। চোখে ভয়ংকর এক স্থিরতা।লিয়ানা আর পেছাতে পারে না।পিঠ ঠেকে যায় দেয়ালে।তার নিঃশ্বাস কাঁপে। হৃদস্পন্দন যেন পাঁজর ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসতে চায়।জায়ান ঠিক সামনে এসে দাঁড়ায়।তার দুই হাত দেয়ালের উপর এসে ঠেকে,লিয়ানার দুই পাশে।সে এখন পুরোপুরি তাকে ঘিরে রেখেছে। কোনো রাস্তা নেই। কোনো পালানোর পথ নেই।জায়ানের নিঃশ্বাস ছুঁয়ে যাচ্ছে লিয়ানার গাল।জায়ান ঠিক তার সামনে, দু’হাত দিয়ে দেয়াল চেপে ধরে রেখেছে।তার চোখে ভয়ানক নীরব আগুন,অবদমিত কিছু যেন ফুটে উঠতে চাইছে।লিয়ানার পিঠটা তখন ঠেকে আছে ঠান্ডা দেয়ালের সঙ্গে, আর সামনেটা ঘিরে রেখেছে জায়ানের লম্বা শরীর।
তার দুই হাত দেয়ালে,লিয়ানার মুখের দুপাশে গেঁথে আছে যেন পালানোর সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।লিয়ানা থরথর করে কাঁপছিল, নিঃশ্বাস গলার কাছে আটকে যাচ্ছিল বারবার।ভয়ে গিলে ফেলল জোরে একটা ঢোঁক।কিন্তু তার চোখ যখন একটু করে ওপরে উঠল সরাসরি চোখে চোখ পড়ল জায়ানের।এক মুহূর্তেই যেন নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেল।তাঁর শার্টের খোলা বোতামের ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে হালকা ঘামে ভেজা শক্ত বুকের রেখা।একটা নিঃশব্দ টান টের পেল লিয়ানা,ভয় পাচ্ছে, সত্যি,কিন্তু কোথাও যেন সেই ভয়ের ফাঁকে লুকিয়ে আছে এক ধরণের টান,যা সে নিজেই বুঝে উঠতে পারছে না।তার চোখ দুটো নিজের অজান্তেই সরে গেল জায়ানের ঘাড় থেকে বুকের দিকে,তাকে যেন জড়িয়ে ধরেছে কোনো অদৃশ্য চুম্বক।লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেলল সঙ্গে সঙ্গে।
নিঃশ্বাস ভারী হয়ে এল।
গলাটা শুকিয়ে গেল…
তবু বুকের ভেতর ধুকপুকানি থামছে না।
তখনই জায়ান গা ঘেঁষে ফিসফিস করে বলে,
পার্টিতে ঐই ছেলেটার সঙ্গে দাঁড়িয়ে হেসে হেসে কী বলছিলি, বল তো?আমিও শুনি।
joke?নাকি, flirt করছিলি?পছন্দ করিস ঐ বাস্ট*টার্ড কে?
লিয়ানার চোখ ছলছল করে ওঠে, কিন্তু মুখে দৃঢ়তা-
আমি কার সঙ্গে কথা বলবো, সেটা আপনি ঠিক করে দিবেন নাকি। সামান্য একটা ব্যাপারকে এত বড় করছেন কেনো??আজব তো কি মহামুশকিল এ পড়লাম রে বাপ রে বাপ!
লিয়ানার এমন কথা শুনে জায়ান এর চোখ লাল হয়ে ওঠে।
এক পলক লিয়ানার দিকে তাকিয়ে, সে হঠাৎ হাতটা দেয়াল থেকে সরিয়ে নেয়। এক ধাক্কায় সে পেছিয়ে গিয়ে দরজার দিকে ইশারা করে-
বের হ! এখুনি
লিয়ানা অবাক, তবু গলা শক্ত করে বলে-
বের হবো মানে! আমি কি নিজের ইচ্ছায় এসেছি আপনার রুমে, নাকি আপনি জোর করে এনেছেন।আপনার রুমে আসার জন্যে কি আমি মরে যাই নাকি।
জায়ান আর সহ্য করতে পারে না।
সে গর্জে ওঠে-
Get Out!
তার গলায় এমন কিছু ছিল—ভাঙা, দহনজ্বালা, আর… এক অদ্ভুত আতঙ্ক।
লিয়ানা চুপচাপ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে তার চোখে।তার চোখও জ্বলজ্বল করছে—আঘাত, অপমান আর মনের গভীরে জমে থাকা সেই এক ভয়, যে ভয়টা জায়ানের কাছে আসতে দেয় না।কয়েক মুহূর্ত নিঃশব্দে তাকিয়ে থেকে, সে ধীরে ধীরে পেছন ফিরে দরজার দিকে হাঁটতে থাকে।
জায়ান তাকে থামায় না।
কিন্তু দরজা বন্ধ হওয়ার মুহূর্তে, জায়ান নিজের গলা চেপে ধরে দেয়ালে জোরে ঘুসি দিতে থাকে।লিয়ানা দরজার ঝাঁপটা দিয়ে চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘরটা যেন স্তব্ধ হয়ে গেল।জায়ান খান মুহূর্তখানেক স্থির দাঁড়িয়ে রইল, গলার শিরাগুলো ফেটে বেরোতে চাইছে যেন।তার চোখের পাতা কাঁপল না, কিন্তু নিঃশ্বাসটা ভারী হয়ে উঠলো। সে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল নিজের রুমের এক কোণে রাখাপুরোনো, গিটারটার দিকে।গিটারটা হাতে নিয়ে সে পেছনের সোফায় গিয়ে বসে পড়ল।গলার দুটো বোতাম খোলা, ঘাড়টা পেছনে হেলে আছে। তার দুটো হাত ছড়িয়ে পড়েছে সোফার দুই দিকে, যেন সে নিজেকেই শূন্যতার সামনে তুলে ধরেছে।একটা সিগারেট ঠোঁটে নিয়ে ধীরে ধীরে আগুন ধরালো সে। টান দিল এক নিঃশ্বাসে, চোখ বন্ধ।ঘরটা ধোঁয়ার মতো নিঃশব্দ।তারপর হঠাৎই, গিটারের তারগুলোতে আঙুল বুলিয়ে খুব আস্তে, যেন এক মনভাঙা সুরে জায়ান গুনগুন করে উঠলো,
যা চাওয়ার চেয়ে নে…
যা পাওয়ার নিয়ে নে…
যা হওয়ার, হয়ে নে আজকে,,,,
এই দিন বেসামাল,
তোর ষষ্ঠী নাজেহাল,,
দেখে কষ্ট হলো কাল ঝড়টাকে।,,,..
ওওও তাই তো প্রেমের গান লিখেছি ,….
আর তাতে তোর নাম লিখেছি,
মাঝরাতে বদনাম হয়েছে মন।,,
যেই না চোখের ইচ্ছে হলো,,
তোর পাড়াতেই থাকতে গেলো,,,,
ডাক নামে তোর ডাকতে,
গেলো মন,,,,,,
কি করি এমন অসুখে,,,,,,
জমেছে মরণ এ বুকে,,,
তার কণ্ঠ এক ধরনের বেদনায় ভারী, যেন এই গানের মধ্যে লুকিয়ে আছে কোনো অভিমান। সে থেমে যায়। সে আরেক টান দেয় সিগারেটে। অন্ধকারে তার চোখজোড়া যেন আরও ধূসর হয়ে ওঠে।তারপর গিটারটা কোলের ওপর রাখে, নিচু স্বরে ফিসফিস করে বলে-
আমি তোকে খুঁজিনি…বরং, চলেই তো গিয়েছিলাম, সব ছেড়ে, দূর অজানা দেশে।কিন্তুু, তুই নিজেই বারবার এসে দাঁড়িয়েছিস আমার নিঃশব্দে রচিত ভাগ্যের দোরগোড়ায়।এবার দরজা খোলা আছে। ভিতরে আসবি কিনা, সেটা তোর ইচ্ছা।কিন্তু বের হওয়ার পথটা আমি বন্ধ করে দিয়েছি।”
জায়ান ধীরে, গম্ভীর সুরে বলে,
এত বছর ভেবেছি তুই একটা বাচ্চা মেয়ে… ভয় পায়, পালায়, ভুল বোঝে।
কিন্তু এখন দেখি, তুই তো খেলোয়াড়,আমার মন নিয়েই খেলতে চাস?
হাতে থাকা সিগারেট এক টানে টেনে, ধোঁয়া ছেড়ে দেয় বাতাসে,
আমি তোকে ধরব না, জোর করব না।
আমি কিছুই করব না,,,তুই নিজে থেকেই আসবি।নিজের ইচ্ছায়, নিজের পায়ে আমার কাছে।আর সেদিন আমি শুধু দেখব।দেখব কতদিন পালাতে পারিস আমার থেকে।
জায়ান খান এর মন নিয়ে খেলনার মত ব্যবহার করতে পারবি না, বুঝলি
আর আপরদিকে লিয়ানা সেই যে নিজের রুমে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করে গায়ের ওপর পড়ে থাকা ওড়নাটা ছুঁড়ে দিল বিছানার ওপর।আার গভীর ভাবনায় মগ্ন হয়ে পড়ে আাছে,,,শ্বাসটা এখনও ঠিকঠাক হচ্ছিল না।
ঘটনাটা এত তাড়াতাড়ি ঘটল যে বুঝে উঠার আগেই যেন একটা ঝড় বয়ে গেল শরীরের ওপর দিয়ে।তারপর উঠেই,আয়নার সামনে দাঁড়াল।নিজের চোখের দিকে তাকাল।চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে অজানা আবেগে, মুখে লজ্জার ছায়া আর নিঃশব্দ ধুকপুকানি।সে নিজের মাথা ঝাঁকিয়ে সব কিছু উড়িয়ে দিতে চাইল, যেন কিছুই হয়নি।তারপর ধীরে ধীরে বাথরুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে এল।চুলটা তোয়ালে দিয়ে মুছতে মুছতেই ফোনটা হাতে নিল।
মেরিন বেবি কলিং
লিয়ানা ফোন ধরল।ওপাশ থেকে মেরিন হাসতে হাসতে বলে,
আরেহ, লিয়ো জান, তোকে নিয়ে যা gossi শুরু হইছে! বলেই দিচ্ছি, পার্টিতে যে হ্যান্ডসাম বস টাইপের ছেলেটা তোকে হালকা চেক দিলো, সবাই বলতেছে!তোর সাথে নাকি ওনার চক্কর চলে।
লিয়ানা চোখ বড় বড় করে বলল,
“তুই তো সব জানিস! কিছু বলিসনি??যে ওই দামড়া রাগী লোকটা, আমার কাজিন হয়,,জায়ান ভাইয়া।
কিহহহ!জায়ান খান??ফ্রান্স থাকতেন যিনি, চলে এসেছেন??বললি না কেনো।,,বললে কি নিয়ে নিতাম নাকি তোর কাছ থেকে। যাই বলিস তোর ভাই কিন্তুু সেই একটা চিজ্,,,
চুপ একদম চুপ তোর ঐ লুচ্ছা চোখে একদম এই নজর দিবি না,,তা না হলে চোখ তুলে মার্বেল বসিয়ে দিবো।আর হ্যাঁ আমিও জানতাম না ওনি যে আজকেই আসবেন,সত্যি।
মেরিন একটু দুষ্টু হেসে বলল-
আরেহ!বাহহহ!কি চলে হুমম,, আর উ ফিলিং জেলাস বেবি??রুহানের সাথে কথা বলায় জায়ান খান যা ক্ষ্যাপে ছিলো মনেই হচ্ছিলো যেনো তুই উনার বউ।আর এখন তোর শরীরয়েও জালা পোড়া লেগে যাচ্ছে। সামথিং সামথিং??
নাথিং,নাথিং,,চুপ! তুই থাম, এমন কিছুই না।ফালতু বকিস নাতো।
হ্যাঁ, হ্যাঁ,, আমিতো কচি খোকা কিছু বুঝিনা।
লিয়ানা বিছানার ওপরে পেছন হয়ে শুয়ে পড়ল, মাথায় তোয়ালে, ফোন কানে।তোরে আমি একদিন মেরে ফেলব, মেরিন! আর কিছু বলবি না।তবে “জায়ান ভাইকে দেখলেই আমার কি মনে হয় জানিস, বিপদ শুধু ছায়া না, full HD তেও আসে!-বলেই হু হু করে হেসে উঠে লিয়ানা
মেরিন একটু চুপ করে থেকে বলল,
তুই সাবধানে থাকিস,বিপদ এখন তোর আশে পাশেই সারাদিন।
তারপর মেরিন ও হেসে ফেললো
আবার দেখিস বিপদেরই প্রেমে পড়ে যাস না।
তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ১
ঘড়ির কাঁটা তখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে।মেরিনের সঙ্গে গল্প করতে করতে কখন যে রাত গড়িয়ে গেছে, টেরই পায়নি লিয়ানা।হাসতে হাসতে ক্লান্ত হয়ে সে একসময় চোখ বন্ধ করে ফেলেছিল,ফোনটা তখনও কানে লেগে ছিল, স্ক্রিনে নিঃশব্দে ভেসে ছিল— “Call ended 02:43 AM”
রাতটা নিস্তব্ধ।
