তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ৪২
ভূমিকা তালুকদার
প্রায় সপ্তাখানিক যাবৎ লিয়ানা “Psychiatrist” এর চিকিৎসারত। সেদিনের ঘটনার পর লিয়ানার মানসিক অবস্থা করুণ হয়ে গিয়েছে।যদিও লিয়ানার পুরোপুরি হুঁশ ফিরার আগেই জায়ান লিয়ানাকে নিয়ে প্যারিসে চলে এসেছিলো।তবে জীবনের এ প্রথম হঠাৎ এমন বিপদজনক ভয়ানক পরিস্থিতির মুখে পড়ে লিয়ানা মানসিকভাবে ক্ষতিগস্ত্র হয়েছে। শহরের সবচেয়ে বড় মনোরোগ বিশেষজ্ঞের থেরাপি মাধ্যেমে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠলেও পুরোপুরি ট্রমা, অস্থিরতা থেকে বের হতে পারেনি।ছন্নছাড়া মেয়েটা একদমি চুপচাপ কেমন হয়ে গিয়েছে। লিয়ানাকে আজকেই ডক্টর ডিস’চার্জ করে দিবে।চুল গুলো দু-বেনি করা কেবিনের বেডের উপর গাঁ হেলিয়ে বসে আছে।জায়ান পাশের টোলের উপর বসে লিয়ানার হাতে নিজের রুক্ষ নাক স্পর্শ করে বসে আছে।লিয়ানার হঠাৎ এমন পরিবর্তন জায়ানের মেনে নিতে এক প্রকার কষ্ট হচ্ছিলো। জায়ান যেই লিয়ানাকে চিনে সে কখনোই এমন শান্ত স্বভাবের ছিলোই না।মূহুর্তেই সাদা এ’প্রোন পরিহিতা একজন নার্স একটা সু’পের বো’ল নিয়ে এসে জায়ানের হাতে দিলো।জায়ান আলতো হাতে লিয়ানাকে সু’প খাওয়াতে হাত বাড়ালে। লিয়ানা মুখ সরিয়ে নেয়।
“কি সমস্যা জান।খেয়ে নে।”
লিয়ানা জায়ানের হাত থেকে সু’পের বা’টিটা নিয়ে পাশে রেখে দিলো।এ-সব খাওয়া যায় না-কি। লিয়ানার আগে ছোট্টবেলায় যখন জ্বর হতো তার মা এ-সব বিচ্ছিরি স্বাদের সু’প টুপ বানিয়ে আনতো। তখনি তো সে খেতো না এখন কি করে খাবে।বমি আসে এ-সব খেতে গেলে তার।লিয়ানা আঁড়চোখে জায়ানের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,
“আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলুন,আমাকে না ডিস’চার্জ করার কথা। ডক্টর তো চেক্ আপ করে দিয়েছেনই তো আর কি ।”
“হুম।বে’ব।এতো অস্থির হচ্ছিস কেনো।”
” আমাকে নিয়ে একটু ঘুরতে বের হবেন? ”
“কোথায় যেতে চাস বল।পৃথিবীর যেই প্রান্তেই যেতে চাস তোর স্বামী তোকে সেই প্রান্তেই নিয়ে যাবে।একবার হুকুম করেই দেখ”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
জায়ান উঠে লিয়ানার চুলে আঙুল ঢুকিয়ে মাথায় চু’মু খেয়ে নেয়।লিয়ানা জায়ানের কোমড় জড়িয়ে ধরে নাক ঘষতে থাকে।লিয়ানার শীতল স্পর্শে পেয়ে জায়ানের শরীর শক্ত হয়ে উঠতেই শুকনো ঢুক গিলে লিয়ানার থুতনিতে মধ্য তর্জনী ঠেকিয়ে ধরে গভীর চুমু খেয়ে নেয়। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে জায়ান চোখ সরু করে।
“ফ্লেভার এতো জোস্ কেন।মিষ্টি মিষ্টি।লিপ’সে কি চিনি লাগাস নাকি মধু।ম্যাগনেটের মতো টানে শুধু। ”
লিয়ানা ঠোঁট কামড়িয়ে মৃদু হেসে উঠে।
“সরুন তো। চিনি ও না মধুও না।It’s called lip gloss power”
জায়ান লিয়ানার অঁধরে আঙুল ছুঁয়ালো। ভ্রু কুচকিয়ে ব’লে,
“কই এতোদিন তো দিস নি।তাহলে।না!না!এটা আমার বউয়ের নরম ঠোঁটের পাওয়ার।টেস্ট ই’জ সো ইয়া’ম্মী”
“আপনি আসলেই একটা অসভ্য লোক।একবারে P.H.D করা।”
জায়ান লিয়ানাকে পাঁজা কোলে তুলে নিতেই লিয়ানা হাত পাঁ ছুড়তে শুরু করে।
“মানুষ দেখলে কি ভাববে বলুন তো।নামান বলছি।”
“ফা’ক।who Care’s! Wifey”
“আপনার মুড আজকে এতো তাজা কেনো? ”
“প্রেম প্রেম পেয়েছে তাই”
“ওহহ গড।গজব পড়ুক এই লোকের মুখে।”
“ওহহ গড।চু’মু বর্ষণ পড়ুক আমার কোলের সুন্দরী নারীর হাসবেন্ডের মুখে”
“উফ!চুপ করুন।এভাবে তাকাবেন না আমার লজ্জা পায়।”
“ইউ ফা’কিং ব্লাডি বিউটিফুল। তোকে দেখলে আমার সিস্টেমে আগুন ধরে যায়।”
“সিস্টেমে ঝং ধরে যায় না কেন?”
“কতো বড় স্টুপিড তুই।নিজেই নিজের ভবিষ্যত অন্ধকার কামনা করছিস”
লিয়ানা হঠাৎ উচ্চশব্দে হেসে উঠে। জায়ানের বুকে ঘুষি মারতে থাকে। লিয়ানাকে ফুরফুরা হয়ে হাসতে দেখে জায়ান মৃদু হাসে।জায়ান তো এভাবে হাসতে শিখে নি।উচ্চশব্দে হাসা তার অপছন্দ। জন্মের পর মনে হয় না কখনো সে হেসেছে এভাবে। জায়ান খানের তো ডিজগাস্টিং লাগে এমন হাসি।তবে এই মিস্টারের এখন বেশ্ ভালো লাগছে।শান্তি লাগছে।লিয়ানাকে এভাবে হাসতে দেখে। জায়ান লিয়ানাকে কোলে করে ডক্টরের চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসে।আজকে লাস্ট থেরাপি ছিলো লিয়ানার।জায়ান লিয়ানাকে গাড়িতে বসিয়ে দেয়।সিটবেল্ট লাগিয়ে হালকা ঝুঁকে গম্ভীর কণ্ঠে ব’লে উঠে,
“পাহাড় নাকি সমুদ্র? ”
“Obviously! সমুদ্র। i like sea beach ”
“And i like you bbe”
জায়ান লিয়ানার নাকে নাক ঘষে গাড়ির চাবি আঙুলে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে ড্রাইবিং সিটে বসে পড়ে।গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দেয়।কিন্তুু পিছন থেকে একজন আগুন্তক তাদের ছবি তুলে ক্যামেরা বন্দি করে ফেলে।জায়ানের চতুর চোখ ফাঁকি দিয়ে।আগুন্তক ব্যক্তিটা ছবি তুলেই কোনো একটা নাম্বারে কল করে স্থান ত্যাগ করে।
প্যারিসের শেষ সীমানায় কুবরা হাউস আঁটসাঁট বেধে দাঁড়িয়ে আছে।বাড়িটা বিশাল আকৃতির হলেও দেখতে একেবারেই বিদঘুটে ।পুরো বাড়ি কুবরা সাপের প্যান্টিং করা।গেইট বাড়ির সদর দরজা সব সাপের সেইপ দেয়া।সামনের গার্ডেনটাতেও পাঁচছয়টা কিং কুবরার মূর্তি দিয়ে সাজানো।ডোরাকাটা সবুজ বাংলো বাড়ি।ভিতরে উচ্চশব্দে ডিজে মিউজিকের সুর ভেসে আসছে।কুখ্যাত গ্যাং লিডার ডন কুবরার বাড়িই এটা।ভিতরে লাল নীল বাতির জ্বলছে।হুইস্কি, ওয়াইন মুখে পুড়ে কালো পোশাকধারী লোকজন মাতাল হয়ে কোমড় নাড়িয়ে নাড়িয়ে নাচ করে যাচ্ছে।পাশেই সিংহাসনের মতো একটা কিং কোবরা সাপের মূর্তির উপর অর্ধ/নগ্ন হয়ে বসে আছে ডন কুবরা।দু পাশো দুইটা কাটাছেঁড়া জামা পড়া রমণী।পুরো শরীর ভাসমান বিশেষ জায়গাগুলো বাদে।দুই রমণী ডন কুবরার ন*গ্ন বুকে তাদের বুকে হাত বিচলন করছে আর ম’দ ঢেলে যাচ্ছে।
ভিতরের বেডরুম থেকে বোল্ড ড্রেস পরিহিতা নারী, কুব্রার গার্লফ্রেন্ড বেরিয়ে আসে। কুব্রার পাশের দুই রমণীকে হাতের আঙুল নাড়িয়ে চলে যেতে বলে।নামরা এসেই কুব্রার উরুর উপর বসে পড়ে।মাতাল কুব্রার ব’ক্ষে ওষ্ঠ স্পর্শ করতে থাকে। কুব্রা নামরার বোল্ড ড্রেসের ফাঁকে কোমড় ধরে অশ্লী*ল ভঙ্গিমায় চুমু খেতে যাবে তখনি কুব্রার হিডেন স্পাই কুব্রার কাছে এসে, কয়েকটা ছবি এগিয়ে দেয়।ডন কুব্রা নিজের প্যান্টের পকেট থেকে দু বান্ডিল কচকচা নোট বের করে স্পাই এর মুখে ছুঁড়ে মারে।লোকটা চলে যেতেই কুব্রা ছবি গুলো হাতে নিয়ে উচ্চশব্দে হেসে উঠে। শয়তানি হাসিতে ফেটে পড়ে।ছবিগুলোতে পরপর চু’মু খেতে থাকে। যেনো ছবিগুলো গিলে খেয়ে নিবে।আত্মা শান্তি লাগছে। ছবিগুলোতে হাত বুলাতে থাকে, নামরা কিছুটা আশ্চর্য হয়ে ছবিগুলো উঁকি মেরে দেখে হতবাক হয়ে যায়।কুব্রার এক চোখ নেই।এক চোখে কালো কাপড় বাঁধা অবস্থায় থাকে সর্বদা।কুব্রা নিজের চোখের উপর আঙুল রেখে ছবি গুলো হাত দিয়ে পিষে ফেলে অবচেতন মনে কর্কশ গলায় বলে উঠে,
“Mister Mafia lawyer ” Motherb*ard “i will catch you!Hide and seek তো অনেক হলো।”
নামরা কুব্রার দিকে তাকিয়ে আঁতকে উঠে, ঠোঁট গলে শব্দ বেরিয়ে আসে।
“মাফি….য়া”
আকষ্মিকভাবে পিছন থেকে নামরার গলা কে/’টে দেয় কুব্রা।নামরার গলা দিয়ে ফিনকি দিয়ে র’*ক্তের শ্রুতধারা বইতে থাকে,কুব্রার মুখে রক্ত ছিটকে পুরো মুখ র’ক্তে লাল হয়ে ভিজে উঠে। গলা থেকে গোঙানি শব্দ বেরিয়ে আসতেই কুব্রা নামরাকে সিংহাসনে ঠেলে ধরে, নামরার ঠোঁটের ফাঁকে আঙুল চেপে ধরে, হুশশশশশশশশশ!
“সাট আপ ই’উর মাউ’থ ডার্লিং।”
কুব্রা যে পশুর চেয়েও অধম।দিনরাত মানুষ মারা তার পেশা।মানুষের র’ক্তে গোসল করা শয়তানের পক্ষে নামরা কেন, কাউকে মা*রাই বা হাতের খেল।নামরাকে তো নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে গিয়েছে। তবে মারার উদ্দেশ্য ছিলো না।তবে নামরা একটা শব্দাউচ্চারণ করে নিজের মৃত্যু ডেকে আনলো।তাও নিজের ভালোবাসার মানুষের হাতে। ম’রার আগে শেষবারের মতো কুব্রার গলাটা চেপে ধরলো।কুব্রা নামরার ঠোঁটে চু’মু খেয়ে পুনরায় নামরার গলাটা কে’/টে দিলো।এতোটাই চাপ প্রয়োগ করে যে গলার হাড় ভাঙ্গার মটমট শব্দ ভেসে আসলো।কুব্রা লাভা দৃষ্টি নিক্ষেপ করে নামরার মুখটা আবার চেপে ধরলো।
“সরি ডার্লিং, সরি।”
বেশ্ এখন নিজের প্রেয়শীর তাজা র/ক্তেই গাঁ ভিজাবে কুখ্যাতো গ্যাং লিডার সাপের বিশেষ পদবি প্রাপ্ত ডন কুব্রা।
ডেওভিল (Deauville) ফ্রান্সের নরম্যান্ডি অঞ্চলে অবস্থিত একটা সমুদ্র সৈকত।প্যারিস থেকে প্রায় ২০০ কি.মি দূরে। প্রায় দু-ঘন্টা খানিকের মতো জার্নি শেষ করে লিয়ানাকে জায়ান সমুদ্র দেখাতে নিয়ে এসেছে।প্যারিস থেকে কিছু শপিং করেছে। জায়ানের দুইটা ক্রেডিটই জায়ান লিয়ানাকে দিয়ে দিয়েছে।এতো এতো শপিং করে লিয়ানা বেশ্ খুশি।একটা ডায়মন্ডের বাটারফ্লাইয়ের নেক’লেস জায়ান নিজে চু’জ করে কিনে দিয়েছে। লিয়ানা সেটাই জায়ানের ফোন ক্যামেরাতে হাত বুলিয়ে বুলিয়ে দেখছে।জায়ান যেহেতু সর্বদাই হাতে রিচ্ ওয়াচ্ পড়ে থাকে,লিয়ানাও জায়ানকে জায়ানের টাকা দিয়ে একটা গোল্ডেন কালারের রোলেক্স ঘড়ি কিনে দিয়েছে। লিয়ানা জায়ানের হাত এর দিকে তাকিয়ে মিটমিটিয়ে হেসে ব’লে,
“সব সময় পড়ে থাকবেন তো”
জায়ান গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে হাত ঘুড়িয়ে আরেক হাতে লিয়ানার হাতের পিঠে চু’মু ভিজিয়ে ব’লে,
“জো হুকুম মেরি জান”
Ferrari সমুদ্র বিচে্র পাথরমিশ্রিত বালির উপর এসে থামতেই। লিয়ানা আঁটসাঁট বেধে পড়নের ফ্লোরার প্রিন্টের স্কার্টটা হাত দিয়ে উঠিয়ে সস্ফূর্তো নয়নে গাড়ি থেকে নেমেই সমুদ্রোর কাছে গিয়ে পাঁ ভিজাতে থাকে।অনেকদিন পর যেনো লিয়ানা প্রানখুলে হাসতে পারছে।সমুদ্রের কাঁচের মতো সচ্ছ নীল পানিতে হাত ভিজিয়ে নেয়।পাশে একটা বড় কালো পাথরে বসে জায়ানের দিকে হাত বাড়িয়ে তার কাছে আসার ইশারা করে।বাতাসে লিয়ানার চুল গুলো উড়ে মুখে এসে পড়ছে।লিয়ানা দু-হাত মেলে পাথরের উপর শুয়ে জায়ানের দিকে রোমান্টিক দৃষ্টি ফেলে মধুমিশিয়ে সুরেলা কন্ঠে গেয়ে উঠে,
নীল অন্ধকার প্রেম বারেবার,
এই বুকে ঢেউ তোলে,
জায়ান শরীরের কালো কোর্ট জড়িয়ে গাড়ি থেকে নেমে।শান্ত আথচ ধীর পায়ে লিয়ানার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। সমুদ্রর পানি পায়ে স্পর্শ করতে জায়ান লিয়ানার সাথে সুর তুলে,
বাঁধা ভাঙ্গাসুর লাজে রাঙা মুখ,
দোলে সপ্নেরি কোণে……..
জায়ানকে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে সেই মুহূর্তেই হঠাৎ লিয়ানা খেয়ালি হাসি দিয়ে জুতোর ফিতা খুলে খালি পায়ে দৌড় দিতে শুরু করে ভেজা বালুর উপর। বালু নরম, পায়ের নিচে ঠান্ডা নীল জল উঠে এসে আবার সরে যায়।লিয়ানা দুষ্টু ভঙ্গিমায় উঠে দৌড় লাগায়।
জায়ান হতভম্ব হয়ে লিয়ানার পিছন পিছন ভ্রু কুচকিয়ে হালকা দৌড় দেয়।লিয়ানা পিছন ফিরে তাকালো।তারপর আরও জোরে দৌড়াল, ঠিক ঢেউয়ের পাশে দিয়ে। সূর্যের শেষ আলো তার মুখে পড়ে তাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলছে। দু’জনের হাসির শব্দ বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছে।
প্রেম আমার,
ও ও প্রেম আমার…..
এ যেনো এক নিষিক্তনেশার প্রনয় বিষ।জায়ান ছুটে চলছে তার অর্ধাঙ্গিনী পিছু।সমুদ্রের উত্তাল করা ঢেউকে সাক্ষী করে জায়ান পুরুষালীর শীতল কন্ঠে ব’লে উঠে,
আকাশ,পাতাল, সমুদ্রের প্রবল স্রোত কে সাক্ষী রেখে বলছি।
তুই আমার বুকের সেই জোয়ার,
যার ডাকে আমি সবকিছু ফেলে
ছুটে যাই আবার,আবার।…আবার…বারবার।
“না আমার জীবনে কখনো কোনো দ্বিতীয় নারীর ছিলো।না আছে।আর না ভবিষ্যতে থাকবে।এই জায়ান চিরকাল মগ্ন থাকবে তার সাদা গোলাপে মোহে।”
বালির উপর পরপর তিনটে গাড়ি এসে থামে।সেখান থেকে নাদিয়া, এলেনা,মার্কো নামে।জায়ান তাদের সবাইকে আসতে বলেছে।সবাই মিলে দু’দিন সমুদ্র পারে সময় কাটালে ভালো লাগবে।লিয়ানার জোরাজোরিতেই জায়ান নাদিয়াদের লোকেশন পাঠিয়ে দিয়েছিলো।যেহেতু লিয়ানা বে কিছুদিন অসুস্থ ছিলো। নাদিয়াদের কাছে পেলে হয়তোবা মনটা প্রানবন্তর হয়ে উঠবে আগের মতো।এলেনা গাড়ি থেকে নেমেই তার চোখ জায়ান লিয়ানার দিকে পড়ে।জায়ান লিয়ানার কোমড় জরিয়ে ধরে ঘুড়িয়ে কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়। দৃশ্যটা যে কারোর দেখলে ভালো লাগলেও এলেনার হজম করতে পারলো না।বুকটা কেমন আচমকা চিন চিন করে উঠলো।এসব যেনো দেখতে না হয় সহ্য করতে না হয় কিছুদিনের জন্যে আমেরিকাও গেলো।জায়ান অসুস্থ হসপিটাল খবর পেয়ে নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারলো না।কেমন বেহায়ার মতো ছুটে এলো।দূরে রাখতে চায়।তবে চাইলেই কি সব কিছু এড়িয়ে চলা যায়।
নাদিয়ার রিকোয়েস্টে ডেওভিলে এলো।সামনে এগুলোনা আর।এখানেই দাঁড়িয়ে সমুদ্রে গোধূলি সূর্যের পানে তাকিয়ে রইলো।বুকের ভিতরটা বারবার জ্বলে জ্বলে উঠছে। নিজেকে সংযত করতে হাত দিয়ে চুল গুলো কানের ভাজে পুড়ে নেয়।হঠাৎ এলেনাকে এভাবে দাঁড়িয়ে পড়তে দেখে নাদিয়া এলেনার কাঁধে হাত রেখে সামনে নাদিয়াকে নিজের দিকে ফিরাতেই দেখলো এলেনার চোখের কোণে জল জমে উঠেছে। এলেনাকে শেষ কবে কাঁদতে দেখেছে নাদিয়ার মনে পড়ে না।নাদিয়া এলেনার চোখে চল মুছে ব’লে উঠে,
“এই তোর আবার কি হলো।”
এলেনা চ’ট করে নাদিয়াকে জড়িয়ে ধরলো।গোঙিয়ে উঠলো।নিজের শরীরের সমস্ত ভার ছেড়ে দিলো নাদিয়ার কাঁধে।
“আমি না আমার অতৃপ্ত আত্মাকে শক্ত করে বেঁধে রেখেছি।সে আমাকে ভালোবাসে না, অন্যে গ্রহের চাঁদ। এটা যেনেও আমি তাকে কেনো নিঃস্বার্থভাবে শুধু ভালোবেসেই গেলাম।”
নাদিয়া কিছু বললোনা।কি বা বলবে।এলেনার ফিলিং’সের কথা কে না জানে।এলেনা যে সেই শুরু থেকে জায়ানকে মন দিয়ে বসে আছে।দশবছর যাবৎ এক তরফা ভালোবেসে এসেছে।ধর্ম পরিবর্তন করতেও রাজি ছিলো।এলেনা কেঁদে উঠলো।দম বন্ধ করে বললো।
ধরেই নিয়েছিলাম কিছু যায় আসবে না।কিন্তুু বারবার বুকের ভেতরটা ব্যথা করে উঠে।আমায় কেন ভালোবাসলো না বলতে পারবি।ভালোবাসা কি পাপ? ”
“না পাপ না ভুল মানুষকে ভালোবাসা অবশ্যই পাপ।তুই তো সব জানতি। ই’ভেন আমরা তো শুরু থেকে সবটা জানতাম”
“কিন্তুু পাশে তো আমিই ছিলাম তাই না।আমি নাহয় অসয়ম গুলো ভেবেই চিরকাল অমরত্বের স্বাদ অনুভব করে যাবো।”
নাদিয়া দু-হাত দিয়ে এলেনার চোখের জল মুছে দিলো।এলেনার মুড ঠিক করতে এলেনার চুলে হাত রেখে এক ভ্রু উঁচিয়ে ব’লে,
“চুলে কি করিয়েছিস।এতো হেল’দি দেখাচ্ছে কেনো।আমারও করা দরকার নাহলে বিয়ের আগেই চুল পড়ে টাক হয়ে যাবো।”
এলেনা নাদিয়ার কথায় কান্নার মাঝে হেসে উঠে।
“বোটক্স, তোকেও করিয়ে দিবো।তোর চুল গুলো আসলেই অনেক রা’ফ হয়ে গিয়েছে। ”
নাদিয়া মৃদু হাসলো।এলেনার পেটে গুতো দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরে বালির উপর দিয়ে হেঁটে সামনে এগুতে লাগলো।
“এলেক্স এলে মজা হতো তাই না বল।”
“শা”লার পেট খারাপ”
“উল্টো পাল্টা জিনিস খেলে পেট তো খারাপ হবেই।”
রাত হ’য়ে গিয়েছে। কনকনে শীত। এখনের ডেওভিলের দৃশ্যেটা আরও মনোমুগ্ধকর।সূর্যটা কেমন ঢেউয়ের সাথে মিলিয়ে যাচ্ছে এমন লালআভা ফেলে রেখেছে।জায়ান রাতে লিভিং এর জন্যে পাশের পাঁচ তারকা হোটেল বুক করে নিয়েছিলো।তবে লিয়ানা বায়না ধরলো কিছুতেই হোটেলে গিয়ে থাকবে না মানে না।লিয়ানা চায় এখানেই সি বিচ্ এই তাবু টাঙিয়ে সকলে একসাথে পাড়েই রাত কাটাবে।জায়ান প্রথমে কিছুতেই রাজি হবে না মানে না।জায়ান খান এসব তাবু টাঙিয়ে কখনোই থাকতে পারে নাকি।তবে লিয়ানা নাছোরবান্দা স্বভাবের কাছে হার মেনে।শেষমেশ জায়ানরা তিনটে তাবু টাঙাচ্ছে।একটাতে জায়ান লিয়ানা।আরেকটাতে নাদিয়া এলেনা।আরেকটাতে মার্কো।বালির উপর কাঠ দিয়ে আগুন জ্বালানো।একটা গাছের গুড়ির উপর জায়ান বসে আছে তার উরুর উপরে বসে জায়ানের কালো লেদার জ্যাকেটের ভিতর ঢুকে লিয়ানা বসে আগুনের তাপে হাত পোহাচ্ছে।
লিয়ানার কাঁধে উপর জায়ান থুতনি রেখে। গালে নাক ঘষলো।আচমকা টুপ করে একটা চুমু খেয়ে নিতেই লিয়ানা উঠে যেতে নিলে।জায়ান ধপ্ করে বসিয়ে দেয়।হাস্কি স্বরে ব’লে,
“উহু।ফিল করতে দে একটু।ছুঁতে গেলেই এমন মুচড়া মুচড়ি শুরু করে দিস কেনো।”
লিয়ানা দু ঠোঁট চেপে মৃদু হাসলো।জায়ান লিয়ানার কানের লতিতে ওষ্ঠ ছুঁইয়ে কানে মুখ নিয়ে হিসহিসিয়ে বলে,
“সব কথাই তো শুনলাম।এখন আমারও তো কিছু চাই”
“ক…কি চাই”
“আয় তোকে প্রেগন্যান্ট বানিয়ে দি।”
“উফফ!”-লিয়ানা লজ্জায় জায়ানের জ্যাকেটে মুখ গুজে দেয়। লিয়ানা হাতের পাঁচ আঙুল দেখায়।জায়ান জিভ দিয়ে গাল স্পর্শ করে ব’লে
“বিসমিল্লাহ বলার আগে লাফালাফি বন্ধ করে দিস।পাঁচটা কেন। দশটা হবে।”
অনেকক্ষণ ধরে খুঁজেও মার্কোকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না নাদিয়া।খুব রাগ হচ্ছে সবাই ফি’শ ফ্রাই খাচ্ছে। আর মার্কো কোন চুলোয় গিয়ে বসে আছে কে জানে।খালি পায়ে তাবুর পিছনে গিয়ে দেখলো। মার্কো তাবুর পিছনে ঘাপটি মেরে দাঁড়িয়ে আছে। নাদিয়া নাকের পাটা ফুলিয়ে আস্তে আস্তে হেঁটে গিয়ে মার্কোর পিছনের ঘাড় অব্দি চুলগুলো টেনে ধরলো।কিন্তুু কোনো লাভ হলো না।মার্কো এক বিন্দু নড়লোনা।নাদিয়া আরও জোরে টেনে ধরলো।মার্কোর চোখে মুখে পে’ইনের কোনো চিহ্নঅব্দি নেই।এক মনে সিগারেট ধরিয়ে তামাটে ঠোঁটে পুড়ে নেয়।মার্কোর থেকে কোনো পাত্তা না পেয়ে নাদিয়া ডিরেক্ট মার্কোট মুখ থেকে সিগারেট নিয়ে নিজের মুখে দিয়ে নেয়।মার্কো এবার নাদিয়ার দিকে ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকাতেই নাদিয়া ভরকে উঠে।তাও ভাবলেশহীন ভঙ্গিমায় সিগারেট টানতে থাকে।
মার্কো আচমকা নাদিয়ার চুলের পিছনে হাত রেখে সিগারেট টা হেঁচকা টানে সরিয়ে নেয়।নাদিয়ার উ’ন্মুক্ত ভাসমান হাঁটুতে সিগারেটের আগুন লাগিয়ে দিয়ে দাগ টানে।নাদিয়ার বুক মুচড়ে উঠে,আহহ।উহু।শব্দ করে লাফিয়ে উঠে। মার্কো সিগারেটটা ফেলে পা দিয়ে পিষে নেয়।গম্ভীর কন্ঠে নাদিয়ার চুল ছেড়ে ব’লে,
“ড্রেস যেনো হাঁটুর উপরে না যায়।It’s my last warning ”
নাদিয়া দাঁতে দাঁত পিষে মুখ বাকায়।
“মামার বাড়ির আবদার নাকি।কি ভেবেছিস তোর কথায় আমি চলবো?…….আসলেই চলবো।”
মার্কো এক সেকেন্ডও না দাঁড়িয়ে নাদিয়াকে পাশ কাটিয়ে সরে যায়।নাদিয়া নাদিয়া বড় বড় পাঁ পেলে মার্কোর জ্যাকেটের পকেটে হাত ডুকিয়ে হাঁটতে থাকে।
রাতের ডিনার শেষ করে যে যার যার মতো তাবুতে ডুকে শুয়ে পড়েছে। জায়ান একটু বড়সর করেই তাবু টাঙিয়েছে।তাবুর ভিতরটা একেবারে গুটগুটে অন্ধকার তেমনটাও না।লিয়ানা ছোট্ট কুশনের উপর উল্টো হয়ে শুয়ে পাপকর্ন খাচ্ছে।জায়ান তাবুর ভিতরে ঢুকে তাবুর চেইনটা লাগিয়ে দেয়।পড়নের লেদার জ্যাকেটটা খুলে ফেলে দেয়।কেমন অস্থির হয়ে উঠেছে।আচমকা লিয়ানা অনুভব করে তার পিঠ উন্মু’ক্ত হয়ে শীতল ঠোঁটের স্পর্শ। কেমন ঠান্ডা অনুভূতি সৃষ্টি হতেই শরীরটা শিরশির করে উঠলো।জায়ান লিয়ানার ই’নার ওষ্ঠাদয় দিয়ে খুলে পুরুষালীর নরম নেশালো স্বরে ব’লে,
“ই’নার পড়বি না আমার সাথে থাকলে।তোকে এমনিতেই হ’ট লাগে।”
লিয়ানা আঁতকে উঠে সরে সরে যেতে নিলে জায়ান লিয়ানার দু-পা টেনে নিজের দিকে নিয়ে আসে।লিয়ানা জায়ানের উরুর উপর বসে ঠোঁট কামড়িয়ে হেসে ফেলে।জায়ানের অ্যাডাম’স অ্যাপলে আঙুল ছুঁয়ে ব’লে উঠে
“আপনাকে নিজের বশে্ আনতে আমার দু সেকেন্ডও লাগবে না মিস্টার”
জায়ান লিয়ানার পেট খামচে ধরে ঘাড়ে ওষ্ঠ স্পর্শ করে ব’লে,
“রিয়েলি। আই ওয়ান’ না সি।সেটি’সফাইং মি বেবিগার্ল। ”
লিয়ানা জায়ানের প্রশস্ত বুকের উপর থেকে শার্টের গুতোম খুলতে থাকে। দুজনের মাঝে দূরত্ব চুকিয়ে জায়ানের কোমড় আঁকড়ে ধরলো দুপা দিয়ে।জায়ানের দিকে কিছুক্ষণ ঝুঁকে রইলো।পুরো বুক উ’ন্মুক্ত করে ঠোঁট ছুঁয়া তেই তীব্র শিহরণে শরীর নড়ে উঠলো জায়ানে।লিয়ানার চুল খামচে ধরতেি।লিয়ানার নারীমূর্তির জায়ানের স্পর্শ’কাতর স্থানে স্পর্শ করতেই।সমস্ত শরীর যেনো বরফের ন্যায় জমে উঠলো জায়ানের।শুকনো ঢুক গিলে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিলো।শরীর বেয়ে যেনো শুধু শিহরণ খেলে যাচ্ছে।জায়ান লিয়ানার হাত চেপে ধরে। তার ওষ্ঠ পরপর ছুঁয়ে যায় লিয়ানার সংবেদনশীল স্থানে।লিয়ানার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসতেই জায়ান লিয়ানার অঁধর স্পর্শ করে ব’লে,
তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ৪১
“তিব্র নেশালো আদর দিবো তোকে।ডুন্ট মুভ”
জায়ানের কপাল ছুঁই চুল লিয়ানার স্পর্শকাতর স্থানে ছুঁয়ে যেতেই।লিয়ানা গোঙিয়ে উঠে। জায়ান মধুমিশানো স্বরে ব’লে,
“একটু আমার নাম ধরে ডাকবি, জান।ফিল আসবে বেশি।”
তবে আচমকা বাহির থেকে একটা গুলির শব্দ ভেসে আসতেই…
