তোমার ছোঁয়ায় আসক্ত আমি পর্ব ১
নীল মণি
কিছু সম্পর্ক জন্ম নেয় না রক্তের বন্ধন থেকে, জন্ম নেয় না কোনো সামাজিক নিয়মকানুন থেকে, কিছু সম্পর্ক কেবল জন্ম নেয় হৃদয়ের ভেতর হঠাৎ করে উঁকি মারা এক অকারণ ভালো লাগা থেকে। সেই ভালো লাগা অনেক সময় এতটাই গভীর হয় যে মানুষ ভুলে যায় যুক্তি, ভুলে যায় বাস্তবতা, শুধু হারিয়ে যায় সেই অনুভূতির জগতে। কিন্তু প্রতিটা সম্পর্কের মাঝেই থাকে ভুল বোঝাবুঝির ছায়া সেই ভুল যদি বাড়তে বাড়তে জমে যায়, তবে সেটা হয় আঘাতের মতো, কষ্টের মতো। অথচ সেই আঘাত আর কষ্টই একসময় পাল্টে যায় এক অদ্ভুত বেপরোয়া ভালোবাসায় যেখানে থাকে না কোনো বাঁধা, থাকে না কোনো নিয়ম, থাকে শুধু একে অপরকে হারিয়ে দেওয়ার পাগলামি, আর পাগলামির ভেতর থেকেও খুঁজে নেওয়ার মরিয়া আকাঙ্ক্ষা।
এভাবেই শুরু হয় এমন কিছু সম্পর্ক, যাকে সহজভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না, যাকে এক কথায় বলা যায় শুধু Dangerous Love…
দশটা বছর হ্যাঁ, পাক্কা দশটা বছর উধাও হয়ে যায় কারো কারো জীবনে। কেউ সেই বছরগুলোতে আর ফিরে আসতে পারে না, কেউ ইচ্ছা করেই আর ফেরে না, আবার কেউ কেউ সময়ের ঢেউ ভেঙে ফিরে আসে… কিন্তু ফিরে এসে আর থাকে না আগের মতো, বদলে যায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষটাও নতুন এক রূপে দাঁড়িয়ে যায়।
“১০ বছর পর” এই চারটি শব্দের ভেতরেই যেন জমে আছে চৌধুরী পরিবারের অগণিত নিঃশ্বাস চেপে রাখা অপেক্ষা, বুক ভরা ভালোবাসা আর অশ্রুসিক্ত নিঃশব্দ প্রার্থনা।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান, আর সেই গুলশান ২ নম্বর রোডের একেবারে শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে এক ঐতিহ্যবাহী সুবিশাল দোতলা ভিলা চৌধুরী ভিলা। বিশাল গেটওয়েতে ঝলমল করছে লোহার কাজ, ভেতরে প্রতিটি কোণ সেজে উঠেছে আলো আর রঙে, বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে আনন্দের গুঞ্জন। হবে নাই-বা কেন! অচিরেই বাঁধা পড়তে চলেছে এক বহু প্রতীক্ষিত সম্পর্ক, যেটি তৈরি হয়েছিল বহু বছর আগে থেকেই, আর সঙ্গে আজ ঘরে ফিরতে চলেছে এই বাড়ির প্রাণ, গর্ব, সবার নয়নের মণি।
আবরার জায়ন চৌধুরী।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আহমেদ প্রান্তিক চৌধুরীর একমাত্র ছেলে, যাকে নিয়ে এই বাড়ির প্রতিটি মুখ গর্বে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, আজ দশ বছর পর ফিরছে আমেরিকা থেকে।
যখন সে বিদেশে গিয়েছিল, তখন তার বয়স ছিল মাত্র আঠারো কাঁচা কৈশর, অসম্পূর্ণ যৌবন। আর আজ? আজ সে এক পরিণত পুরুষ, আত্মবিশ্বাসে ভরা চোখ, দৃঢ় দেহভঙ্গি, প্রতিটি পদক্ষেপে যেন শক্তির ছাপ। মায়ের চোখে এখনো ভাসে সেই দিনের ছবি, যেদিন বুক ভরা অভিমান আর চোখভরা কান্না নিয়ে মেহজাবীন বেগম ছেলেকে বিদায় দিয়েছিলেন। দশ বছর ধরে সেই বেদনাকে বুকে চেপে রেখেছিলেন তিনি। আর আজ অবশেষে সেই বুকচেরা অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে।
এবার জানা যাক এই চৌধুরী ভিলার মানুষেরা আর তাদের সম্পর্কের গল্প,
এই বাড়ির হেড অব দ্য ফ্যামিলি আহমেদ প্রান্তিক চৌধুরী, তার স্ত্রী মেহজাবীন চৌধুরী বাড়ির বড় বউ। তাদের একমাত্র সন্তান, এই বাড়ির বড় ছেলে ,আবরার জায়ন চৌধুরী। এখন বয়স ২৮, দশ বছর আগে পাড়ি জমিয়েছিল বিদেশে, পড়াশোনা আর ফ্যামিলি বিজনেস সামলাতে।
বাড়ির মেজো ভাই প্রণয় আলী চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুহেনা চৌধুরী (হার্টের রোগী)। তাদের তিন সন্তান,
প্রথম সন্তান, আসমীন ইউভান চৌধুরী (২৩)। মেজো ছেলে, ফ্যামিলি বিজনেসে জয়েন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, সঙ্গে আছে ফটোগ্রাফির প্রতি তীব্র নেশা। ছিমছাম চেহারার মধ্যেই লুকিয়ে আছে অন্যরকম আকর্ষণ। উচ্চতায় প্রায় ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি। ভাই–বোনেরা তার চোখের প্রাণ। বড় ভাই আবরার জায়নের প্রতি তার ভালোবাসা সীমাহীন, কিন্তু একজন আছে যার জন্য তার ভালোবাসা আলাদা রঙ পায়।
দ্বিতীয় সন্তান, বৃষ্টি রাইশা চৌধুরী (২১)। এই বাড়ির বড় মেয়ে। ভার্সিটির তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ফর্সা, সুন্দরী, লম্বা চুল কোমর ছুঁয়ে যায়, উচ্চতায় প্রায় ৫ ফুট ৩। শান্ত, নম্র, ভদ্র স্বভাবের। আর কয়েক দিনের মধ্যেই বাঁধা পড়তে চলেছে সেই বহু প্রতীক্ষিত সম্পর্ক আবরার জায়ন চৌধুরীর সঙ্গে বৃষ্টি রাইশার । ছোটবেলায় পারিবারিকভাবে ঠিক হওয়া সম্পর্কটা অবশেষে পেতে চলেছে পূর্ণতা।
তৃতীয় সন্তান, তিয়াশা রোদ চৌধুরী (১৬)
এই বাড়ির মেজো মেয়ে। এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দেবে। যেন আকাশ থেকে নেমে আসা কোনো পরী হলদেটে ফর্সা গায়ের রঙ, কোমর পর্যন্ত লম্বা, সিল্কের মতো মসৃণ চুল, যা ধীরে ধীরে গায়ের সঙ্গে ছুঁয়ে ঝরে পড়ে। বড় বড় মায়াময় ডাগর ডাগর চোখ, যে চোখে এক এক মুহূর্তে হাসি, কৌতূহল, রকমারি খিচিড়ি সবই ভরা। স্বভাব চঞ্চল, চলাফেরায় ঘর মাতিয়ে রাখে, আর ছোট সন্তান হওয়ায় মা বাবার আদরের একমাত্র ভরসা। প্রতি হাসি, প্রতি ঝলক যেন চারপাশের আলোকে আরো উজ্জ্বল করে তোলে, আর তার উপস্থিতিই মুহূর্তে পরিবেশে এক অদ্ভুত মায়াবী আবহ সৃষ্টি করে।
এবার আসা যাক বাড়ির ছোট ভাই তাহসান চৌধুরীর পরিবারে। তার স্ত্রী সুরাইয়া চৌধুরী। তাদের যমজ দুই সন্তান,
প্রথম সন্তান, তাসনিন রায়ান চৌধুরী (১৫)। বাড়ির ছোট ছেলে। নবম শ্রেনীর ছাত্র। বাবার মতোই দেখতে, চঞ্চলতায় ভরা। তবে পড়াশোনার ব্যাপারে ভীষণ ফাঁকিবাজ।
দ্বিতীয় সন্তান, অনন্যা রাত্রি চৌধুরী (১৫)। রায়ানের যমজ বোন। দুধে আলতা গায়ের রঙ, কোমর ছোঁয়া চুল, উচ্চতায় ৫ ফুট। নবম শ্রেনীর ছাত্রী এবং পড়াশোনায় খুবই ভালো। রায়ানের সঙ্গে প্রতিদিন ঝগড়া লেগেই থাকে, যেন সাপ আর বেজি। তবে সমবয়সী হওয়ায় তিয়াশার সঙ্গে গড়ে উঠেছে দারুণ বন্ডিং।
বাড়ির তিন ভাইয়ের একমাত্র ছোট বোন আয়েশা খান, স্বামী আশরাফ খানসহ বনানীতে থাকেন। ঢাকায় তাদের দুটো বড় হাসপাতাল রয়েছে। তাদের ছেলে আকাশ খান (১৯), ডাক্তার হওয়ার প্রিপারেশন নিচ্ছে। দেখতে এতটাই সুদর্শন যে, যেকোনো রাজপুত্রের সঙ্গে তুলনা চলে। আর ছোট মেয়ে মারিয়া খান (১১), ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। দেখতে যেন জীবন্ত বার্বি ডল। ভীষণ কিউট, লেখাপড়াতেও সেরা।
আজ চৌধুরী বাড়িতে উৎসবের আমেজ। এই যৌথ পরিবারে এক একজন যেন একেকটা সুতোয় বাঁধা, নেই কোনো বিবাদ, নেই কোনো সমালোচনার ঝড়। বড় ছেলে ফিরছে বলে রান্নাঘরে মহা ব্যস্ততা। মায়েরা, কাকিয়ারা, হেল্পিং হ্যান্ডরা সবাই মিলে বানাচ্ছে জায়নের পছন্দের খাবার। রান্নাঘর থেকে ভেসে আসছে বিরিয়ানি আর রোস্টের ঘ্রাণ।
বৃষ্টি মনে মনে লজ্জায় ভেঙে পড়ছে শৈশব থেকে জানা, সে বড় হলে জায়নের বউ হবে। তখন কিছু বোঝেনি, আজ বোঝে, আর সেই বোঝাটা তাকে ভিতর থেকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে।
তিয়াশার মনে হচ্ছে এক অজানা ভয়। দশ বছর আগে তার বয়স ছিল মাত্র পাঁচ ছয়। তেমন মনে নেই, মাঝে মাঝে ভিডিও কলে দেখেছে। কিন্তু কথা বলতে গিয়ে সবসময় লজ্জা পেয়েছে। আজ বুকের ভেতর কেমন অস্থিরতা কাজ করছে।
অনন্যা তো নেচে বেড়াচ্ছে আনন্দে তার বড় ভাই আসবে আজ!
সকাল সকাল ইউভান, রায়ান আর আকাশ চলে গেছে এয়ারপোর্টে। জায়নকে দেখে ভাইয়েরা একে একে জড়িয়ে ধরল, চোখে ভিজে উঠল ভালোবাসা।
ইউভান বলে উঠল_
__”ফাইনালি তুমি ফিরলে ভাই! উই মিসড ইউ আ লট।”
জায়নের চোখেও সেই একই ভালোবাসা
__””এবার সবাই একসাথে, এক ছাদের নিচে থাকব।”
রায়ান আর আকাশও তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
এদিকে বাড়িতে অপেক্ষা বাড়ছে। দুপুরের রোদ নেমে এসেছে, সবাই ছুটে গেল বাইরে যখন মার্সিডিজটা ঢুকল বড় গেট দিয়ে।
কিন্তু একজন চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল দোতলার বারান্দায়
তিয়াশা।
গাড়ি থেকে একে একে নামল আকাশ, ইউভান, রায়ান। আর তারপর নামল সেই লম্বা, সুদর্শন, শ্যামবর্ণ ফর্সা পুরুষ উচ্চতায় ছয় ফুটের ওপরে, চোখে সানগ্লাস, হাতে দামী রিস্ট ওয়াচ, সাদা শার্ট আর কালো ট্রাউজারে যেন জীবন্ত হিরো। আবরার জায়ন চৌধুরী।
নীচে বৃষ্টি মুচকি হাসল। কিন্তু ওপরে দাঁড়ানো তিয়াশার বুক ধড়ফড় করে উঠল। তার মনে হলো দুনিয়াই থমকে গেছে। তাড়াতাড়ি সে নিজের ঘরে পালিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল।
নীচে মা, মেজো মা, ছোট মা, ফুফি সবাই জায়নকে জড়িয়ে ধরল, কান্না আর ভালোবাসায় ভিজে গেল আঙিনা। সালাম করতে ভুলল না জায়ন। বাবা আর চাচুরাও বুকে টেনে নিল।
জায়ন বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে হেসে বলল
__”কি রে, এত লজ্জা পাচ্ছিস কেন? মনে হচ্ছে যেন প্রথম দেখলি।”
বৃষ্টি লজ্জায় দৌড়ে রান্নাঘরে চলে গেল।
মেহজাবীন বেগম বৃষ্টি কে বললেন
__”এই বৃষ্টি, আবরারকে শরবত দিয়ে আয়।”
বৃষ্টি শরবত এর ট্রে টা থেকে গ্লাস টা নিয়ে মাথা নিচু করে আবরারকে দিতে দিতে বলল,
__”আপনার শরবত টা বড় আম্মু পাঠিয়েছে, আর ফ্রেশ হয়ে আসেন, খাবার দেওয়া হবে সবাইকে।”
বলেই মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল…
জায়নও একটু ঠোঁট উল্টে হাসলো, চোখে ভেসে উঠল নরম আনন্দের ঝিলিক।
ইউভান, আকাশ, রায়ান পাশে বসে হেসে উঠল, খেয়াল রাখছিল একে অপরের খুনসুটি আর নানান খুনসুটি মজা।
হঠাৎ অনন্যা আর মারিয়া এসে বলল,
“গিফটগুলো কোথায়, ভাই?”
আবরার বলল,
“দাদা, ফ্রেশ তো হয়নি এখনো, তারপর সন্ধ্যায় সব বের করব।”
রায়ান কৌতুক করে চিৎকার করে উঠলো অনু ও মারিয়াকে,
“তোদের সবসময় গিফট, গিফট… যা তো পানি আন, পানি খাব! তোরা তো এই বাড়ির বুয়া, গিফট দিয়ে কী করবি বলেই হা হা।”
এতে আকাশ, রায়ান আর জায়ন একসাথে হেসে উঠলো, পুরো ঘরটা যেন হাসিতে ভরে গেল।
কিন্তু এদিকে ইউভান চুপচাপ দেখেই যাচ্ছে অনু’কে, চোখে মৃদু হাসি, যা জায়নের চোখ এড়ায়নি।
চোখে লুকানো সেই নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, এক অদ্ভুত মৃদু আশঙ্কা সব মিলেমিশে ঘরে এক অদ্ভুত আবেগের স্রোত তৈরি করল।
এই দেখে মারিয়া ভ্যা ভ্যা করতে লাগলো, আর অনু কাদতে কাদতে ইউভানের হাত ধরে বলল,
__”দেখো না ইউভি ভাইয়া, কিছু বল তো ওকে!”
বলেই দৌড় দিল, ইউভিও রায়ান এর দিকে কটমট করে তাকাল।
রায়ান চুপ হয়ে গেল, মুহূর্তের জন্য হঠাৎই স্থির হয়ে গেল পুরো হাসি মজার কোলাহল।
হঠাৎ জায়নের নজর পড়তেই, সে রুহেনা বেগম আর বাকি সবার উদ্দেশ্যে বলল,
__”মেজো মা, তিয়াশ কোথায়?”
প্রণয় আলী সাহেব অবাক হয়ে বললেন,
__””ওকে তো অনেকক্ষণ ধরেই দেখতে পারছি না।”
রুহেনা বেগম অনু’কে বললেন,
__”এই অনু, তিয়াশকে ডাকো, মেয়েটাকে কাজের সময় মোটেই পাবে না, এই তিয়াশ নিচে নাম।”
অনু তাড়াহুড়ো করে তিয়াশকে ডেকে আনতে গেল।
সবার সঙ্গে কথা বলতে বলতে জায়ন জুইস খাচ্ছিল, কিন্তু হঠাৎ চোখ চলে গেলো সিঁড়ির দিকে , মনে হলো চোখের দৃষ্টি সেদিকেই টেনে নিচ্ছে কেউ ,সিঁড়ি বেয়ে নামছে ডার্ক নীল রঙের লং ফ্রক চুড়িদার পড়া এক কিশোরী।
হাঁটু ছুঁয়ে দেওয়া চুলগুলো লাফিয়ে উঠছিল, যেন প্রতিটি কণার সঙ্গে বাতাস নাচছে।
মায়াবী চোখগুলো যেখানে অদ্ভুত কোনো আলো ঝিলমিল করছে দৃঢ়ভাবে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
প্রতিটি ধাপ, প্রতিটি নড়াচড়া, প্রতিটি মুচকি হাসি
মনের গভীরে ঢুকে যাচ্ছে, হৃদয়কে থমকে দিচ্ছে।
ডাগর ডাগর চোখে এক অদ্ভুত জাদু, এক অজানা আকর্ষণ, যা এক মুহূর্তে সমস্ত মন জুড়ে নিয়েছে।
জুইসের হাতে থাকা গ্লাস হঠাৎ পড়ে গেল।
চোখ বড় বড় হয়ে, অচেতনভাবে শুধু তাকিয়ে রইল,
মুখে না বলতে পারা বিস্ময়, হৃদয়ে কেঁপে ওঠা অস্থিরতা, চোখে সেই অনির্বচনীয় মোহ।
মনে মনে সে শুধু বলল,
__” ওহ গড , সি ইজ এঞ্জেল দ্যাটস সি কেম ফ্রম দা স্কাই ?…”
হৃদয়টা অচেনা তরে কেঁপে উঠল, শ্বাস আটকে গেলো।
দশ বছর দূরত্ব, প্রতীক্ষার সময়, সমস্ত অপেক্ষা এক মুহূর্তে ঝলমল করে চোখের সামনে ভেসে উঠল।
এই এক মুহূর্তে সে বুঝল, শুধু চোখ নয় পুরো মন, হৃদয়, সত্তা যেন দাউ দাউ জ্বলে উঠেছে।
একটি স্বপ্ন, যা কখনো দেখেনি, এখন তার সামনে প্রতিটি নিঃশ্বাস, প্রতিটি স্পর্শের মতো মনে হলো,
এই মুহূর্তটাই সমস্ত কিছু নতুন করে শুরু করছে।